বিষয়ঃ ‘শিয়াদের মুতা- কেন নিষিদ্ধ?’
লেখকঃ মিসবাহুল ইসলাম আকিব,
অনলাইন এক্টিভিস্ট, বাংলাদেশ।
‘পুরুষ তার অর্থের বিনিময়ে সীমিত সময়ের জন্য নারীভোগ করলে তাকে মুতা বলে। নির্দিষ্ট উক্ত সময়সীমা এক, দুই বা একমাস কিংবা দু’মাসেরও হতে পারে’।
মুতার সংজ্ঞাপ্রদানে আপন তাফসীর রাউয়ায়েউল বয়ানে একথাগুলিই বলছিলেন শাইখ মুহাম্মদ আলী সাবুনী।
(যদিও শিয়া সম্প্রদায় একে এখনো জায়েজ মনে কিন্তু ইহা সুষ্পষ্ট হারাম। যারা সিহাহ সিত্তাকে মানে না তাদের কথা আর কি বলব।-এডিটর)
‘মুমিনদের পথ ভিন্ন অন্য কিছু তালাশ করলে যেদিকে সে ফিরতে চায়, আমি তাকে সেদিকেই ফিরিয়ে দেই। অতঃপর জাহান্নামে পাঠিয়ে দেই’। (সূরা নিসা ১১৫)
মুতা নিষিদ্ধের ইজমা ঘটে সাহাবীযুগেই। ইবনে আব্বাসও রাঃ পূর্বের রায় ছেড়ে রুজু করেছেন।
কিন্তু এতে আশ্চর্যকথা হলো, আমার চোখে পড়া ডজনখানি বর্ণনা এসেছে হজরত আলী রাঃ থেকে। শিয়া মতবাদে তিনিই ওদের ইমাম। ইমামের বর্ণনা অনুসারে মুতা হারাম। স্বীয় ইমামের বরাতেই হারাম, এমন বস্তুকে জায়েজ বলাটা ‘ইমাম-বিরোধিতা’ নয় কি?
© প্রমাণাদিঃ
১. ‘যদি তাদের স্ত্রী ও অধীনস্থ দাস-দাসীদের প্রতি (স্বীয় ল্জ্জাস্থান) সংযত নাও রাখে, তবু তারা তিরস্কৃত হবে না। এঁদের (উভয়) ব্যতীত অন্য কারো প্রতি কামনা চরিতার্থ করলে, তারাই সীমালঙ্ঘনকারী হবে’।
★ (সূরাঃ মুমিনুন, আয়াতঃ ৬-৭)২. প্রিয়নবী (ﷺ ) ইরশাদ করেছেনঃ ‘হে মানবজাতি, নিশ্চয় পূর্বে আমি তোমাদেরকে মুতার অনুমতি দিয়েছিলাম। আর নিশ্চিতভাবে আল্লাহ তায়ালা একে কিয়ামত পর্যন্ত হারাম করে দিয়েছেন’।
★ সহীহ মুসলিম- হাঃ নংঃ ৩৪৮৮,
★ সুনানে ইবনে মাজাহ- হাঃনংঃ ২০৩৮৩. হযরত আলী রাঃ হতে বর্ণিত, ‘রাসুলে পাক (ﷺ) খাইবার দিবসে মুতা বিয়ে ও গৃহপালিত গাধার মাংস ভক্ষণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন’।
★ সহীহ বুখারী- ৪২৬৫,
★ সহিহ মুসলিম- ৩৪৯৭, ৩৫০০, ৩৫০১, ৫১১৬;
★ জামে তিরমিজী- ১৯০৬, ১১৪৭;
★ সুনানে নাসায়ী- ৩৩৭৯, ৩৩৮০, ৪৩৫২;
★ সুনানে ইবনে মাজাহ- ২০৩৭,
★ আল-মুয়াত্তা- ১১৩৭৪. হযরত রাবী ইবনে সাবরাহ রাঃ তার পিতা হতে বর্ণনা করেনঃ ‘নবী কারিম (ﷺ) মুতা বিয়েকে হারাম করেছেন’।
★ (সুনানে আবু দাউদ- ২০৭৫)৫. একই রাবী হতে বর্ণিত, ‘রাসুলে পাক (ﷺ) মক্কা বিজয়ের দিন (বা কালে) মুতা বিয়েকে নিষিদ্ধ করেছেন’।
★ (সহীহ মুসলিম- ৩৪৯৩, ৩৪৯৪)৬. হুবহু সনদের অপর বর্ণনায় আছে, ‘নবী কারিম (ﷺ) মুতা বিয়ে নিষিদ্ধ করেন’।
★ (সহীহ মুসলিম- ৩৪৯২)৭. তিনি আরো বর্ণনা করেনঃ ‘রাসুলে পাক (ﷺ) মক্কা বিজয়ের বছরেই মক্কা প্রবেশের সময় আমাদেরকে মুতা বিয়ের নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু মক্কা থেকে বের হবার আগেই মুতা বিয়ে নিষিদ্ধ করেন’।
★ (সহীহ মুসলিম- ৩৪৯০)৮. ইয়াস ইবনে সালামাহ আপন পিতৃসূত্রে বর্ণনা করেন, ‘রাসুলে পাক (ﷺ) আওতাসের বছরে তিনবার মুতা বিবাহের অবকাশ দেন। অতঃপর নিষিদ্ধ করেন’।
★ (সহীহ মুসলিম- ৩৪৮৪)৯. প্রিয়নবী (ﷺ) এও ইরশাদ করেছেনঃ ‘যার অধীনে মুতা বিবাহিতা কোন মহিলা থাকে, সে যেন তাকে তালাক দিয়ে দেয়’।
★ (সহীহ মুসলিম- ৩৪৭৫)১০. রাবী বলেনঃ ‘প্রথমদিকে সাহাবী হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাঃ মুতার ব্যাপারে অবকাশ দিতেন। যখনই নবী পাক (ﷺ) কতৃক নিষিদ্ধের খবর পেলেন, তড়িঘড়ি তিনি পূর্বের ফতোয়া ফিরিয়ে নিলেন। আর প্রায় সমস্ত ওলামায়ে কিরাম মুতা বিয়েকে হারাম বলেন- (ইবনে আব্বাসের) এই মতকেই প্রাধান্য দেন →
– ইমাম সুফিয়ান সাওরী,
– ইমাম আব্দুল্লাহ ইবনে মুবারক,
– ইমাম শাফেয়ী,
– ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল ও
– ইমাম ইবনে ইসহাক প্রমুখ ইমামগণ’।
★ (সুনানে তিরমিজী- ৩৪৮৪)