ইমাম শামিল দাগেস্তানী রাহ. যে গ্রামেই যেতেন সেই গ্রামেই মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করতেন। তিনি নিজ হাতে ছাত্র বাছাই করতেন। তাদের সম্পূর্ণ আর্থিক দায়িত্বও নিয়ে নিতেন। তিনি শতভাগ নিশ্চিত করতেন যে, এরা ইসলামী জ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় ব্যূৎপত্তি অর্জন করবে। তিনি তাঁর জীবনের যে দুই যুগ রাশিয়ানদের বিরুদ্ধে জিহাদে লিপ্ত ছিলেন এবং স্বদেশকে রক্ষা করছিলেন, সেই সময়টাতেও শিক্ষাকে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করেন নিজ এলাকাগুলোতে।
তিনি সর্বোচ্চ ডিগ্রীধারী একজন আলিমে রাব্বানি ছিলেন এবং একজন সত্যিকারের সুফি ছিলেন। শত শত বছর ধরে উলামায়ে কেরাম বলে আসছিলেন, “যে তাসাউফ (আত্মশুদ্ধি চর্চা) চর্চা করে কিন্তু ফিকহ (ইসলামী আইনশাস্ত্র) পড়ে না সে বিপথগামী হবে, আর যে ফিকহ পড়ে কিন্তু তাসাউফ চর্চা করে না সে উগ্রবাদী জালিম হবে।”
যারা আল্লাহ পাককে চেনার দাবি করেন এবং যারা প্রভাবশালী তাদের উচিত ইমাম শামিলদের মত মহামানবদের কাছ থেকে শিক্ষা নেয়া৷ তাদের উচিত ছাত্রদের আর্থিক দায়িত্ব নেয়া যারা দ্বীন জানতে চায় এবং আলিম হতে চায়। তাদের উচিত শিক্ষাখাতে বিনিয়োগ করা এবং আধুনিক স্টেন্ডার্ডে কাজ করা। নারী- পুরুষ সবার জন্য সুযোগ সৃষ্টি করা।
তাদের উচিত সামাজিক কাজে যুক্ত হওয়া। যুবকদের জন্য ক্লাব গড়া। পথশিশুদের জন্য বিনিয়োগ করা যেন তারা গুলিতে নিহত না হয় অথবা জেলে বন্দী না হয় ড্রাগ বিজনেসের কারণে। প্রত্যেকটি মসজিদ এবং প্রতিটি কমিউনিটির উচিত বয়স্কদের জন্য দ্বীন শেখার ব্যবস্থা করা। প্রত্যেক পীরের উচিত তার মুরিদদেরকে জ্ঞানার্জনে উৎসাহীত করা। প্রত্যেক মুরিদের জন্য আবশ্যক ফরজ হুকুম আহকামগুলো অন্তত স্থানীয় উলামায়ে কেরামের কাছে শিক্ষা করা।
শুধুমাত্র মিলাদুন্নবী ﷺ উদযাপন, আওলিয়াগণের মাজারে গিয়ে ওরস পালন বছরে একবার এটা যথেষ্ট নয়। বিশেষত যেই সময়ে আমরা বসবাস করছি। মুত্তাকি বা আহলে হকদেরকে তাঁদের অনুসরণের মাধ্যমে এবং দাওয়াতের কাজের মাধ্যমেই মূলতঃ তাঁদের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ পায়। হুজুর নবী করিম ﷺ বলেন, “নিশ্চয়ই আমি এবং তারা যারা আমাকে অনুসরণ করে তারা আহবান করে ও দাওয়াত দেয় আল্লাহর দিকে।”
মূলঃ শায়খ মুহাম্মদ আসলাম।
অনুবাদঃ সৈয়দ গোলাম কিবরিয়া আজহারি