পাগড়ী বাঁধার ফযিলত

পোষ্টটি অন্যকে পড়ার সুযোগ করে দিতে শেয়ার করুন প্লিজ।

পাগড়ী পরিধান করে নামাজ পড়ার ফজিলতঃ

ইমাম সাখাভী (رحمة الله) এবং আল্লামা আজলুনী (رحمة الله) এ প্রসঙ্গ এর সমর্থনে দুটি হাদিস বর্ণনা করেছেন। হাদিস দুটি হলঃ

رواه الديلمي من حديث ابن عمر مرفوعا بلفظ: صلاة بعمامة تعدل بخمس و عشرين، جمة بعمامة أفضل من سبعين جمعة بلا عمامة. و من حديث أنس مرفوعا: الصلاة في العمامة عشرة ألف حسنة

-“ইমাম দায়লামী (رحمة الله) তার “আল মুসনাদে ফিরদাউস” গ্রন্থে হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (رضي الله عنه) হতে মারফু সূত্রে বর্ণনা করেছেন, রাসূল (ﷺ) ইরশাদ করেন : “পাগড়ী পড়ে নামায পড়া পাগড়ীবিহীন হতে ২৫ গুণ উত্তম, আর পাগড়ী পড়ে এক জুমার জামাতের নামায পাগড়ী ছাড়া ৭০ জুমা হতে উত্তম বা সমতুল্য। হযরত আনাস বিন মালিক (رضي الله عنه) হতে মারফু সূত্রে অন্য আরেকটি বর্ণনা রয়েছে রাসূল (ﷺ) ইরশাদ করেন, পাগড়ী পড়ে নামায পড়লে দশ হাজার নেকি রয়েছে”।

ক. দায়লামী, মুসনাদিল ফিরদাউস,২/০৬পৃ. হাদিস:৩৮০৫, হযরত আনাস (رضي الله عنه) এর বর্ণনা।

খ. দায়লামী,আল-ফিরদাউস,২১০৮পৃ হাদিস:২৫৭১, হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (رضي الله عنه) এর সূত্রে।

গ. ইমাম হাফেজ আব্দুর রহমান সাখাভী : মাকাসিদুল হাসানাহঃ ২৭১ পৃষ্ঠা।

ঘ. ইমাম আলুনী : কাশফুল খাফা : ২/২৫ হাদিস : ১৬০১

👉 ইমাম সাখাভী (رحمة الله) এবং আল্লামা আলুনী মারফু সূত্রে বর্ণনা করেছেন। কিন্তু দ্বঈফ, হাসান, সহিহ কোন কিছুই তারা উল্লেখ করেন নি। তাই বুঝা গেল। হাদিসটির ব্যাপারে কোন মুহাদ্দিস মন্তব্য করেননি। তাদের নীরবতা দ্বারা বুঝা গেল। কমপক্ষে হাদিসটি দুর্বল হলেও ফাযায়েলে আমলের জন্য গ্রহনযােগ্য। কিন্তু আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর উক্ত হাদিস দুটিকে উল্লেখ করে মিথ্যা হাদিস বলে মন্তব্য করেছে। সে ইমাম সাখাভী এবং মুহাদ্দিস আজলুনী এর নাম দিয়ে দাবী করেছেন যে তারা নাকি হাদিস দুটিকে জাল বলেছেন। মা’যা আল্লাহ।

👉 ইমাম সাখাভী ও ইমাম আলুনী মওদু বা বানােওয়াট তাদের কিতাবে বলেছেন। এমন কোন ইবারত বা কথা তাদের কিতাবে নেই। এজন্যই তারা মূল ইবারত উল্লেখ করেনি, এমন দুই ইমামের নামে মিথ্যা অপবাদ দিয়েছে মাত্র। অথচ ইমাম সাখাভী ও আল্লামা আজলুনী (رحمة الله) দুজনই হাদিসটিকে মারফু বলেছেন।

🕋 অপর দিকে আল্লামা ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ূতি (رحمة الله) পাগড়ীর ফযীলত সম্পর্কে একটি হাদিস বা সনদ বর্ণনা করেন যে হাদিসটি হচ্ছে এভাবে,

عن جابر رضي الله تعالى عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه و سلم ركعتان بعمامة خير من سبعين ركعة بلا عمامة –

-“হযরত যাবের (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত : রাসূল (ﷺ) ইরশাদ ফরমান : পাগড়ীসহ দুরাকাত নামায, পাগড়ী ছাড়া ৭০ রাকাতের চেয়ে উত্তম।”

ক. ইমাম দায়লামীঃ মুসনাদুল ফিরদাউসঃ ২/২৬৫পৃ. হাদিস:৩২৩৩।

খ. ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ূতি : জামিউস সগীর : ২/১৭ : হাদিস : ৪৪৬৮।

গ. ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ূতি : জামিউল আহাদিস : ৪/৪২৬ : হাদিস : ১২৫৭৪।

ঘ, আল্লামা শায়খ ইউসুফ নাবহানী: ফতহুল কাবির : ২/১৩০ পৃ:হাদিস:৬৬২৫।

ঙ.আল্লামা ইমাম আজলুনী : কাশফুল খাফা : ২২৩ পৃ: হাদিস : ১৬০১চ. ইমাম সাখাভী : মাকাসিদুল হাসানা : পৃ: ২৭১ হাদিস : ২৯৮।

চ. ইমাম সাখাভী : মাকাসিদুল হাসানা : পৃ: ২৭১ হাদিস : ২৯৮।

ছ, আল্লামা মােল্লা আলী ক্বারী : নেহায়া :১/১৪৩পৃ.।

জ. ইবনে হাজার মক্কী:আল-ফাওয়ায়িল আল ফিকহিয়্যাতুল কোবরাঃ১/১৭০পৃ.।

ঝ.আব্দুল্লাহ সিরাজি,শরহে মুসলিমঃ২/৩৫পৃ.।

ঞ.হাসান আবু ইসাবাহ,শরহে মুসলিমঃ২৬/২৮পৃ.

ট.মুত্তাকি হিন্দীঃ কানযুল উম্মাল:১৫/৩০৬পৃহাদিস:৪১১৬

ঠ. শাওকানী, ফাওয়াইদুল মওদুআত, ১/১৮৭পৃ. হাদিসঃ৩।

ড. দরবেশ হুত, আস-সুনানিল মুত্তালিব,১/১৭১পৃ. হাদিস: ৮২৮।

ঢ. আলুনী, কাশফুল খাফা, ৮৬পৃ. হাদিস : ১৭৮৪।

ণ. আলবানী : দ্বঈফু জামেঃ হাদিস :৩১২৯, ঘঈফ জামেউস সগীর, হাদিসঃ৩১২৯, দ্বঈফা,হাদিসঃ১২৮   

এটাই বুঝা গেলাে, উক্ত হাদীসের একজন রাবী দুর্বল হওয়াতে আমলের ব্যাপারে নিষেধ নেই। যা আমি কিতাবের শুরুতে আলােচনা করে এসেছি। অপরদিকে 

👉 আল্লামা ইমাম আজলুনী (رحمة الله) উক্ত যাবের (رضي الله عنه) এর হাদীসের ব্যাপারে সর্বশেষ রায় পেশ করে বলে فهو غير موضوع 

অর্থাৎ- উক্ত হাদিসটি জাল নয়।

[আল্লামা আলুনী : কাশফুল খাফা : ২/২৩ : হাদিস : ১৬০১]

👉 তবে ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ূতি (رحمة الله) বলেন হাদিসটির একজন রাবী দুর্বল থাকায় সনদটি দুর্বল।

[ইমাম সুয়তী : জামেউস্-সগীর : ২১৭ পৃ. হাদিস : ৪৪৬৮]

সুতরাং একাধিক তরিকায় বর্ণিত হওয়ার কারণে হাদিসটি বর্ণনায় কমপক্ষে হাসান” এর মর্যাদা রাখে। এ ব্যাপারেও কিতাবের শুরুতে বিস্ত রিত আলােচনা করেছি। তাই বুঝা গেল যে ইমাম দায়লামী (রহ.) উক্ত বিষয়টির তিনটি সূত্র বর্ণনা করেছেন। এ পর্যন্ত আমি অধম তিনটি সূত্র আলােচনা করেছি। আমি অনুসন্ধান করে দেখেছি যে, 

🕋 ইমাম ইবনে আসাকির (রহ.) হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রাঃ থেকে একটি হাদিস নিয়েছেন। যা উল্লেখিত প্রথম বর্ণনার মতই। হাদীস টি নিম্নরুপঃ

صلاة بلا عمامة، وجمعة يامة ثغيل سبعين جبنة بلا عمامة

-“নফল অথবা ফরয নামাজে পাগড়ী পড়ে নামাজ পড়া পাগড়ীবিহীন হতে ২৫ গুন উত্তম,আর পাগড়ী পরে এক জুমা পাগড়ীবিহীন ৭০ জুমা থেকে উত্তম।” তাই এই সনদটি গ্রহনযােগ্য,ইবনে উমরের ছেলে হযরত সালেম (رضي الله عنه) এ হাদিসটি বর্ণনাকারী।

● ইবনে আসাকির,তারিখে দামেস্ক : ৩৭/৫৫ পৃহাদিস : ৪০১৯,

● শায়খ ইউসুফ নাৰহনী,

● শায়খ ইউসুফ নাৰহনী, ফাতহুল কাবীর,১৮৮ পৃ.হাদিসঃ৭৩২৮,

● মুত্তাকী হিন্দী,কানযুল উম্মাল, ১৫/০৬. হাদিস : ৪১১৩৯

সূত্র, প্রমানিত হাদীস কে জাল বানানোর স্বরুপ উন্মোচন

মুফতি মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ বাহাদুর

পাগড়ীর উপর কাপড় বা রুমাল প্রসঙ্গেঃ

পাগড়ীর উপর রুমাল পরিধান করা ও পাগড়ী ছাড়া রুমাল পরিধান করা উভয়টাই নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক (ﷺ) উনার পবিত্র সুন্নত। অর্থাৎ নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক (ﷺ) তিনি স্বয়ং নিজেই মাথা মুবারকে পাগড়ীর উপরে রুমাল পরিধান করতেন এবং পাগড়ী ছাড়াও রুমাল পরিধান করতেন।

যেমন, পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে উল্লেখ করা হয়েছে,

قالت عائشة رضى الله تعالى عنها فبينا نحن يوما جلوس فى بيتنا فى نحر الظهيرة قال قائل لابى بكر رضى الله تعالى عنه هذا رسول الله صلى الله عليه وسلم مقبلا متقنعا.

অর্থ: ‘উম্মুল মু’মিনীন হযরত ছিদ্দীকা আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, একদা দ্বিপ্রহরের সময় আমরা আমাদের গৃহে বসা ছিলাম। তখন একজন আফদ্বালুন নাস বা’দাল আম্বিয়অ হযরত আবূ বকর ছিদ্দীক আলাইহিস সালাম উনাকে উদ্দেশ্য করে বললেন যে, “ওই যে মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক (ﷺ) তিনি (পাগড়ীর উপর) রুমাল পরিধান করে মাথা মুবারক আবৃত করে আগমন করছেন।” [বুখারী শরীফ ২/৮৬৪, আহমদ, আবূ দাউদ শরীফ ৫৬৪, ফতহুল বারী ১০/২২৪, উমদাতুল কারী ২১/৩০৯, বযলুল মাযহুদ ৬/৫৩]

উল্লেখ্য যে, উপরোক্ত পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে متقنعا  শব্দটি تقنع শব্দ থেকে এসেছে। আর تقنع শব্দের অর্থ হলো,

وضع شيى الزائد على الرأس فوق العمامة.

অর্থ: تقنع হলো মাথায় পাগড়ীর উপরে অতিরিক্ত একটি কাপড় (রুমাল) পরিধান করা।” [বুখারী শরীফ ২/৮৬৪, ফতহুল বারী ১০/২২৪, উমদাতুল কারী ২১/৩০৯]

تقنع শব্দের ব্যাখ্যায় অনত্রে বলা হয়েছে,

تغطية الرأس واكثر الوجه برداء اوغيره.

অর্থ: “মাথা এবং চেহারার অধিকাংশ কোন চাদর অথবা অন্য কোন কাপড় (রুমাল) দিয়ে ঢেকে রাখা।” [বুখারী শরীফ ২/৮৬৪, ফতহুল বারী ১০/২২৪, উমদাতুল কারী ২১/৩০৮]

অন্য পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে উল্লেখ করা হয়েছে,

عائشة رضى الله تعالى عنها قالت مااتى رسول الله صلى الله عليه وسلم احدا من نسائه الا متقنعا يرخى الثوب على راسه حياء.

অর্থ: উম্মুল মু’মিনীন হযরত ছিদ্দীকা আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক (ﷺ) তিনি যখনই উম্মুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা কারো নিকট আসতেন তখন (রুমাল দিয়ে) মাথা মুবারক ঢেকে আসতেন। তিনি হায়ার কারণে স্বীয় মাথা মুবারকের উপর কাপড় (রুমাল) পরিধান করতেন।” [মসনদে আয়েশা, হাশীয়াদে আবূ দাউদ/২০৯]

ইমামাহ্ বা পাগড়ীর বর্ণনা ও ফযীলত

ইমামাহ্ বা পাগড়ী পরিধান করা দায়িমী সুন্নত। কেননা আখিরী রসূল, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক (ﷺ) তিনি দায়িমীভাবে পাগড়ী পরিধান করতেন। সেহেতু পাগড়ীর মধ্যে অনেক ফযীলত, মর্যাদা, মর্তবা পরিলক্ষিত হয়।

পাগড়ী পরিধানকারীগণের উপর মহান আল্লাহ্ পাক উনার খাছ রহমত এবং ফেরেশ্তাগণের খাছ দোয়া বর্ষণ হয়।  পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে উল্লেখ করা হয়েছে,

روى الطبرانى ان رسول الله صلى الله عليه وسلم قال ان الله وملائكته يصلون على صاحب العمائم يوم الجمعة. (بذل المجهود شرح ابى داؤد ج৬ ص- انوار المحمود ج২ ص اللباس والزينة ص مجمع الزوائد ج ص، الجمعة ج২ ص الميزان ج১ ص – كشف الخفاء ومزيل الالباس ج২ ص

অর্থ: “ইমাম তাবারানী (رحمة الله) থেকে বর্ণিত (তিনি বলেন) নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক (ﷺ) তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, অবশ্যই মহান আল্লাহ্ পাক তিনি পাগড়ী (দায়িমীভাবে) পরিধান কারীগণের উপর প্রতি জুমুয়ার দিবসে ছলাত বা খাছ রহমত এবং ফেরেশ্তাগণ খাছ দোয়া বর্ষণ করেন।”

[বযলুল মাজহুদ শরহে আবী দাউদ ৬ষ্ঠ জিঃ ৫১ পৃষ্ঠা, আনওয়ারুল মাহমুদ ২য় জিঃ ৪৪৬ পৃষ্ঠা, আল্ লিবাসু ওয়ায্ যীনাহ্ ১৩৫ পৃষ্ঠা, মাজমাউয্ যাওয়াইদ ৫ম জিঃ ১২০, ১২১ পৃষ্ঠা, আল জুমুয়াহ্ ২য় জিঃ ১৭৬ পৃষ্ঠা, আল মীযান ১ম জিঃ ২৯৩ পৃষ্ঠা, কাশফুল্ খফা ওয়া মুযীলুল্ ইলবাস ২য় জিঃ ৬৮ পৃষ্ঠা]

পাগড়ীসহ নামাযের ফযীলতঃ

পাগড়ীসহ এক রাকায়াত নামায পাগড়ী ছাড়া সত্তর রাকায়াত নামায অপেক্ষা উত্তম। এ ছাড়াও বিভিন্ন রেওয়ায়েতে  বিভিন্নমূখী ফযীলতের কথা বর্ণিত আছে। সেগুলো হচ্ছে,

روى انه عليه السلام قال صلاة بعمامة افضل من سبعين صلاة بغير عمامة. مرقاة ج৮ ص

অর্থ: বর্ণিত আছে, নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক (ﷺ) তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন, পাগড়ীসহ এক ওয়াক্ত নামায পাগড়ী ছাড়া সত্তর ওয়াক্ত নামাযের থেকে উত্তম।” [মিরকাত ৮ম জিঃ, ২৫০ পৃষ্ঠা]

ان ركعتين مع العمامة افضل من سبعين ركعة بدونها. حاشية سمائل الترمذى ص، هداسة العباد

অর্থ: “নিশ্চয়ই পাগড়ী পরিধান করে দু’রাকায়াত নামায আদায় করা, পাগড়ী ছাড়া সত্তর রাকায়াত নামায আদায় করার চেয়ে অধিক ফযীলতপূর্ণ।”

নামাযের বাইরে পাগড়ী পরিধান করা সুন্নত হওয়ার ব্যাপারে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার সহীহ কিতাব “তিরমিযী শরীফ-এর” হাশিয়ায় উল্লেখ আছে,

ان لبس العمامة سنة

অর্থ: “নিঃসন্দেহে পাগড়ী পরিধান করা (দায়েমী) সুন্নত।” [হাশিয়ায়ে শামায়িলে তিরমিযী/৮]

আর নামাযের মধ্যে পাগড়ী পরিধান করার ফযীলত সম্পর্কে উক্ত কিতাবে আরো বর্ণিত রয়েছে যে,

ان ركعتين مع العمامة افضل من سبعين ركعة بدونها.

অর্থ: “নিশ্চয়ই পাগড়ী পরিধান করে দু’রাকায়াত নামায আদায় করা, পাগড়ী ছাড়া ৭০ রাকায়াত নামায আদায় করার চেয়ে অধিক ফযীলতপূর্ণ।” [হাশিয়ায়ে শামায়িলে তিরমিযী/৮]

পাগড়ীর উল্লিখিত ফযীলত থেকে যেন উম্মত মাহরুম না হয় সে জন্য সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খতামুন্নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক (ﷺ) তিনি বিশেষ গুরুত্ব সহকারে উম্মতদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন যে,

فاعتموا فان العمامة سيماء الاسلام وهى الحاجز بين المسلمين والمشركين.

অর্থ: “তোমরা পাগড়ী পরিধান কর। নিশ্চয়ই পাগড়ী পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার নির্দশন এবং তা মুসলমান ও মুশরিকদের মাঝে পার্থক্যকারী।” [যারকানী ৬ষ্ঠ জি:, ২৭২ পৃষ্ঠা, উমদাতুল ক্বারী, ২১ জি:, ৩০৮ পৃষ্ঠা, খাছায়িলুন নবী ৭৮ পৃষ্ঠা, তুহফাতুল আহওয়াজী ৫ম জি, ৪১২ পৃষ্ঠা]

সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খতামুন্নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক (ﷺ) তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন,

عليكم بالعمائم فانها سيماء الملئكة.

অর্থ: “তোমাদের জন্য পাগড়ী অবধারিত, কেননা তা ফেরেশতাগণ উনাদের নিদর্শন স্বরূপ।” [মিশকাত শরীফ/৩৩৭, ফাইদুল ক্বদীর ৪র্থ জি, ৪৫৪ পৃষ্ঠা, শুয়াবুল ঈমান লিল বাইহাক্বী ৫ম জি:, ১৭৬ পৃষ্ঠা]

ইমামাহ বা পাগড়ী পরিধান করা ফেরেশতাগণ এর নিদর্শন

খালিক-মালিক, রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,

يمددكم ربكم بخمسة الاف من الملئكة مسومين.

অর্থ: “তোমাদের পালনকর্তা চিহ্নিত ঘোড়ার উপর পাঁচ হাজার ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা তোমাদের সাহায্যে পাঠাবেন।” [পবিত্র সূরা আলে ইমরান শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ১২৫]

উক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ উনার ব্যাখ্যায় ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের পাগড়ী সম্পর্কে “তাফসীরগ্রন্থসমূহে” বিশদ আলোচনা এসেছে যা নিম্নে উপস্থাপন করা হলো।

روى عن على بن ابى طالب وابن عباس وغيرهما ان الملائكة اعتمت بعمائم بيض قدارسلوها بين اكتافهم ذكره البيهقى عن ابن عباس وحكاه المهدوى عن الزجاج الا جبريل فانه كان بعمامة صفراء على مثل الزبير بن العوام. (تفسير القرطبى الجلد الثانى ص ১৯৬)

অর্থ: হযরত আলী ইবনে আবু তালিব (رضي الله عنه), হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) ও অন্যান্যদের থেকে বর্ণিত আছে- নিঃসন্দেহে ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা “সাদা পাগড়ী” পরিধান করেছিলেন যার শামলা উনাদের দু’কাধের মধ্যবর্তীস্থালে ছিল। বাইহাক্বী ইহা হযরত ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) উনার থেকে বর্ণনা করেছেন। আর হযরত মাহদুবী (رحمة الله) হযরত যুজাজ (رحمة الله) উনাদের থেকে বর্ণনা করেন, হযরত জিবরাইল আলাইহিস সালাম উনার পাগড়ী মুবারক হযরত যুবাইর ইবনে আউওয়াম (رضي الله عنه) উনার ন্যায় ঘিয়া রংয়ের ছিল।” [তাফসীরে কুরতুবী ২য় জিঃ ১৯৬ পৃষ্ঠা]

واخرج ابن اسحاق والطبرانى عن ابن عباس رضى الله عنه قال كانت سيماء الملائكة يوم بدر عمائم بيضاء قد ارسلوها فى ظهورهم ويوم حنين عمائم حمراء. (فتح القدير الجلد الاول ص ৩৭৯)

অর্থ: “হযরত ইবনে ইসহাক ও তিবরানী (رحمة الله)মা হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) হতে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, বদর যুদ্ধের দিন ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের বিশেষ চিহ্ন ছিল “সাদা পাগড়ী”। যার শ্যামলা উনাদের পিঠে ঝুলানো ছিল। আর হুনাইন যুদ্ধের দিন ছিল তাদের গন্ধম রংয়ের পাগড়ী।” [তাফসীরে ফতহুল ক্বাদীর ১ম জিঃ, ৩৭৯ পৃষ্ঠা]

পবিত্র হাদীছ শরীফ এ ইরশাদ হয়েছে,

روى الطبرانى ان رسول الله صلى الله عليه وسلم قال ان الله وملائكته يصلون على صاحب العمائم يوم الجمعة- (بذل المجهود شرح ابى داؤد ج ص انوار المحمود ج ص اللباس والزينة ص – مجمع الزوائد ج ص الجمعة ج ص الميزان ج – كشف الخفاء ومزيل الالباس ج

অর্থ: “ইমাম তিবরানী (رحمة الله) উনার থেকে বর্ণিত (তিনি বলেন) নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক (ﷺ) তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, অবশ্যই মহান আল্লাহ্ পাক তিনি পাগড়ী (দায়িমীভাবে) পরিধানকারীগণের উপর প্রতি পবিত্র জুমুয়া উনার দিবসে ছলাত বা খাছ রহমত এবং ফেরেশ্তাগণ খাছ দোয়া বর্ষণ করেন।” [বযলুল মাজহুদ শরহে আবী দাউদ ৬ষ্ঠ জিঃ ৫১ পৃষ্ঠা, আনওয়ারুল মাহমুদ ২য় জিঃ ৪৪৬ পৃষ্ঠা, আল্ লিবাসু ওয়ায্ যীনাহ্ ১৩৫ পৃষ্ঠা, মাজমাউয্ যাওয়াইদ ৫ম জিঃ ১২০, ১২১ পৃষ্ঠা, আল জুমুআহ্ ২য় জিঃ ১৭৬ পৃষ্ঠা, আল মীযান ১ম জিঃ ২৯৩ পৃষ্ঠা, কাশফুল্ খফা ওয়া মুযীলুল্ ইলবাস ২য় জিঃ ৬৮ পৃষ্ঠা]

قال النبى صلى الله عليه وسلم “تسوموا فان الملائكة قد تسومت”

অর্থ: “নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক (ﷺ) তিনি (বদর যুদ্ধের দিন হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম রদিয়াল্লাহু আনহুমগণকে) বলেছিলেন, “তোমরা চিহ্ন গ্রহণ কর অর্থাৎ পাগড়ী পরিধান কর। কেননা ফেরশ্তা আলাইহিমুস সালাম উনারা আজ বিশেষ চিহ্ন গ্রহণ করেছেন। অর্থাৎ পাগড়ী পরিধান করেছেন।” [তাফসীরে আহ্কামুল কুরআন লি ইবনিল আরাবী ১ম জিঃ ২৯৬ পৃষ্ঠা]

عن عبد الرحمن بن عدى البهرانى عن اخيه عبد الاعلى بن عدى ان رسول الله صلى الله عليه وسلم دعا على بن ابى طالب رضى الله تعالى عنه يوم غد يرخم فعممه وارخى عذبة العمامة من خلفه ثم قال هكذا فاعتموا فان العمائم سيماء الاسلام- وهى الحاجز بين المسلمين والمشركين.

অর্থ: “হযরত আব্দুর রহমান ইবনে আদিয়্যীল বাহরানী (رحمة الله) উনার ভাই হযরত আব্দুল আ’লা ইবনে আদি (رحمة الله) তিনি উনার হতে বর্ণনা করেন যে, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক (ﷺ) তিনি ইমামুল আউওয়াল মিন আহলে বাইতি রসূলিল্লাহ হযরত আলী কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনাকে এক বৃষ্টির দিনে ডেকে উনার মাথা মুবারকে পাগড়ী বেঁধে তার শামলা পিছনে পিঠের উপর ঝুলিয়ে দিলেন। অতঃপর বললেন, তোমরা অনুরূপভাবে পাগড়ী পরিধান কর। কেননা নিশ্চয়ই পাগড়ী পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার বিশেষ নিদর্শন। আর এটা (পাগড়ী) মুসলমান ও মুশরিকদের মধ্যে পার্থক্যকারী। অর্থাৎ পাগড়ী পরা মুসলমানগণের নিদর্শন আর পাগড়ী পরা ছেড়ে দেয়া মুশরিকদের নিদর্শন।” [উমদাতুল কারী ২১তম জিঃ ৩০৮ পৃষ্ঠা, যুরকানী ৬ষ্ঠ জিঃ ২৭২ পৃষ্ঠা, খছাইলে নববী ৭৮ পৃষ্ঠা, তুহফাতুল আহওয়াযী ৫ম জিঃ ৪১২পৃষ্ঠা]

عن ابى المليح بن اسامة عن ابيه رفعه اعتموا تزدادوا حلما (فتح البارى ج ১০ ص ২৮৩- خصائل النبوى ص ৭৮- المستدرك ج ৪ ص ১৯৩- كشف الغمة ج ১ ص ৯৪- اللباس والزينة ص ১২৫- مجمع الزوائد ج ৫ ص ১১৯- الكبير ج ১ ص ১৯৪- كشف الخفاء ومزيل الالباس ج ২ ص ৬৭)

অর্থ: “হযরত আবুল মুলাইহ্ ইবনে উসামাহ্ (رحمة الله) উনার পিতা থেকে বর্ণনা করেন যে, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক (ﷺ) তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, তোমরা পাগড়ী পরিধান কর। এতে সহনশলীতা ও গাম্ভীর্যতা বৃদ্ধি পাবে।” [ফতহুল বারী ১০ম জিঃ ২৮৩ পৃষ্ঠা, খছাইলে নববী ৭৮ পৃষ্ঠা, আল্ মুসতাদ্রক ৪র্থ জিঃ ১৯৩ পৃষ্ঠা, কাশফুল গুম্মাহ্ ১ম জিঃ ৯৪ পৃষ্ঠা, আল্ লিবাসু ওয়ায্ যীনাহ্ ১২৫ পৃষ্ঠা, মাজমাউয্ যাওয়াইদ ৫ম জিঃ ১১৯ পৃষ্ঠা, আল্ কবীর ১ম জিঃ ১৯৪ পৃষ্ঠা, কাশফুল খফা ওয়া মুযীলুল্ ইলবাস ২য় জিঃ ৬৭ পৃষ্ঠা]

ইমামাহ্ বা পাগড়ী বাঁধা নবী-রসূল আলাইহিমুস্ সালাম উনাদের পবিত্র খাছ সুন্নত

পাগড়ী যে শুধু ফেরেশ্তা আলাইহিমুস সালাম উনারা পরিধান করেন তা নয়, বরং মহান আল্লাহ পাক উনার সবচেয়ে প্রিয় এবং উনার নিকট সবচেয়ে বেশি সম্মানের অধিকারী নবী-রসূল আলাইহিমুস্ সালাম উনারা সকলেই পাগড়ী মুবারক পরিধান করতেন। যেমন, এ প্রসঙ্গে কিতাবে উল্লেখ আছে,

العمامة سنة الرأس وعادة الانبياء والسادة-) عارضة الاحوذى شرح ترمذى الجلد السابع ص ২৪৩)

অর্থ: পাগড়ী মাথায় পরিধান করা সুন্নত এবং সমস্ত আম্বিয়া আলাইহিমুস্ সালাম উনাদের বিশেষ অভ্যাসগত আমল। [আরিদাতুল আহওয়াজী শরহে তিরমিযী ৭ম জিঃ ২৪৩ পৃষ্ঠা]

হযরত হারুন আলাইহিস্ সালাম উনার ইমামাহ্ বা পাগড়ী মুবারক

মহান আল্লাহ পাক উনার নবী হযরত হারুন আলাইহিস্ সালাম উনার সম্পর্কে পবিত্র কুরআন শরীফে মহান আল্লাহ্ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,

ان ياتيكم التابوت فيه سكينة من ربكم وبقية مما ترك ال موسى وال هارون. سورة البقرة- ২৪৮)

অর্থ: (তালুতের নেতৃত্বের চিহ্ন হলো এই যে) “তোমাদের কাছে তোমাদের পালনকর্তার পক্ষ থেকে একটা সিন্দুক আসবে। তোমাদের সন্তুষ্টির জন্য। আর তাতে থাকবে হযরত মুসা আলাইহিস্ সালাম ও হযরত হারুন আলাইহিস্ সালাম এবং উনাদের সন্তানগণের কিছু পরিত্যক্ত সামগ্রী। [পবিত্র সূরা বাক্বারা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ২৪৮]

হযরত মুসা আলাইহিস্ সালাম উনার ইমামাহ্ বা পাগড়ী মুবারক

মহান আল্লাহ পাক উনার নবী ও রসূল হযরত মুসা আলাইহিস্ সালাম উনার সম্পর্কে পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে মহান আল্লাহ্ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,

ان ياتيكم التابوت فيه سكينة من ربكم وبقية مما ترك ال موسى وال هارون. سورة البقرة- ২৪৮)

অর্থ: (তালুতের নেতৃত্বের চিহ্ন হলো এই যে) “তোমাদের কাছে তোমাদের পালনকর্তার পক্ষ থেকে একটা সিন্দুক আসবে। তোমাদের সন্তুষ্টির জন্য। আর তাতে থাকবে হযরত মুসা আলাইহিস্ সালাম ও হযরত হারুন আলাইহিস্ সালাম এবং উনাদের সন্তানগণের কিছু পরিত্যক্ত সামগ্রী। [পবিত্র সূরা বাক্বারা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ২৪৮]

উক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ উনার তাফসীরে হযরত মুসা আলাইহিস্ সালাম তিনি যে পাগড়ী পরিধান করেছিলেন তার প্রমাণ মিলে। নিম্নে এ বিষয়ে বিশ্ব বিখ্যাত তাফসীর গ্রন্থ সমূহের সুষ্পষ্ট দলীল-আদিল্লা পেশ করা হলো-

 (فيه سكينة من ربكم وبقية مما ترك ال موسى وال هارون) وفى السكينة سبعة اقوال ………. والسادس انها رضاض الالواح وقفيز من فى طست من ذهب وعصا موسى وعمامته- قاله مقاتل- (تفسير زاد المسير فى علم التفسير الجلد الاول ص ২৫৯)

অর্থঃ (তালুতের নেতৃত্বের নিদর্শন হল- তোমাদের কাছে একটা সিন্দুক আসবে তোমাদের পালনকর্তার পক্ষ থেকে তোমাদের সন্তুষ্টির জন্য। আর তাতে থাকবে হযরত মুসা আলাইহিস্ সালাম ও হযরত হারুন আলাইহিস্ সালাম এবং উনাদের সন্তানগণের কিছু পরিত্যক্ত সামগ্রী।) এখানে فى السكينة (সিন্দুকের মধ্যে) এর ব্যাখ্যায় সাতটি মত রয়েছে, ষষ্ঠ মত হলো সেখানে ছিল লেখার সামগ্রী চূর্ণপাথর, স্বর্ণের তৈরি প্লেটে নেয়ামতপূর্ণ মান্না’র কিছু অংশ এবং হযরত হযরত মুসা আলাইহিস্ সালাম উনার লাঠি মুবারক ও ইমামাহ্ বা পাগড়ী মুবারক। [তাফসীরু যাদুল মাসীর ফী ইল্মিত তাফসীর ১ম জিঃ ২৫৯ পৃষ্ঠা]

নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক (ﷺ) উনার

সাধারণ সময়ের ইমামাহ্ বা পাগড়ী মুবারক

عن عائشة رضى الله عنها ان رجلا اتى النبى صلى الله عليه وسلم على برذون وعليه عمامة طرفها بين كتفيه فسألت النبى صلى الله عليه وسلم عنه فقال رأيته ذالك جبريل عليه السلام- (مسند احمد بن حنبل الجلد السادس ص ১৪৮-১৫২)

অর্থ: “উম্মুল মু’মিনীন হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম তিনি বর্ণনা করেন। একদা এক ব্যক্তি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক (ﷺ) উনার নিকট ‘বারজুন’ নামক স্থানে আসল, যখন উনার মাথা মুবারকে পাগড়ী ছিল, যার শামলা উনার দু’কাঁধের মাঝখানে ঝুলছিল। (উম্মুল মু’মিনীন হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম তিনি বলেন) আমি এ বিষয়ে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক (ﷺ) উনাকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি উত্তরে বললেন, আমি অনুরূপভাবে (পাগড়ী পড়তে) হযরত জিব্রাইল আলাইহিস্ সালাম উনাকে দেখেছি।” [মুসনাদে আহমদ ইবনে হাম্বল ৬ষ্ঠ জিঃ ১৪৮-১৫২ পৃষ্ঠা]

হুযূর পাক (ﷺ) এর নামাযের সময় পাগড়ী মুবারক

নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক (ﷺ) তিনি দায়িমীভাবে পাগড়ী পরিধান করতেন। অর্থাৎ নামাযের বাইরে ও নামাযে উভয় অবস্থাতেই তিনি পাগড়ী ব্যবহার করতেন, তন্মধ্যে ঘরে অবস্থান কালে তিন হাত, পাঁচ ওয়াক্ত নামাযে সাত হাত এবং জুমুআ ও দুই ঈদের দিনে বার হাত পাগড়ী ব্যবহার করতেন। নিম্নে তার দলীল-আদিল্লা পেশ করা হল,

وكان عمامة النبى صلى الله عليه وسلم فى عامة الاحيان ثلاثة اذرع شرعية وفى الصلوة الخمس سبعة اذرع وفى الجمع والاعياد وحين الوفود اثنى عشر ذراعا- (اتوار المحمود الجلد الثانى ص

অর্থ: নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হযরত নবী করীম (ﷺ) উনার অধিকাংশ সময়ের (ঘরের ভিতরে) ব্যবহৃত পাগড়ী ছিল তিন হাত দীর্ঘ। পাঁচ ওয়াক্ত নামাযে ব্যবহৃত পাগড়ী ছিল সাত হাত। আর পবিত্র জুমুআ, ঈদের দিন এবং কোন দেশের প্রতিনিধির সাথে সাক্ষাতের সময় ব্যবহার করতেন বার হাত লম্বা পাগড়ী। [আনওয়ারুল মাহমুদ ২য় জিঃ ৪৪২ পৃষ্ঠা]

জিহাদ অবস্থায় ইমামাহ্ বা পাগড়ী মুবারক

নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক (ﷺ) তিনি সর্বদাই পাগড়ী পরিধান করতেন। এমনকি জিহাদ অবস্থায়ও উনার মাথা মুবারকে পাগড়ী মুবারক থাকত। যেমন, মক্কা বিজয়ের দিন, তাবুক যুদ্ধে, খন্দক যুদ্ধে, সানিইয়াতুল হানযাল এবং অপরাপর যুদ্ধে উনার মাথা মুবারকে কালো পাগড়ী বাঁধা ছিল। নিম্নে এ সম্পর্কিত দলীলসমূহ উপস্থাপন করা হলো-

عن جابربن عبد الله الانصارى رضى الله عنه ان رسول الله صلى الله عليه وسلم دخل مكة وقال قتيبة دخل يوم فتح مكة وعليه عمامة سوداء. (مسلم شريف ج ১ ص ৪৩৯- مسلم بشرح النووى ج ৫ ص ১৩৩- شرح الابى والسنوسى ج ৪ ص ৪৬৭)

অর্থ: “হযরত জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ্ আল-আনছারী রদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন যে, নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক (ﷺ) তিনি পবিত্র মক্কা শরীফে প্রবেশ করেন। কুতাইবা বলেন, যখন তিনি পবিত্র মক্কা বিজয়ের দিন পবিত্র মক্কা শরীফে প্রবেশ করেন, তখন উনার মাথা মুবারকে কালো পাগড়ী ছিল।” [মুসলিম শরীফ ১ম জিঃ ৪৩৯ পৃষ্ঠা, মুসলিম বি শরহিন নববী ৫ম জিঃ ১৩৩ পৃষ্ঠা, শরহুল উবাই ওয়াস্ সিনূসী ৪র্থ জিঃ ৪৬৭ পৃষ্ঠা]

রাসূলুল্লাহ (ﷺ) যে পদ্ধতিতে পাগড়ী মুবারক পরিধান করেছেন

নিচে এ বিষয়ে দলীলসমূহ পেশ করা হলো-

عن ابن سلام بن عبد الله بن سلام قال سألت ابن عمر كيف كان النبى صلى الله عليه وسلم يعتم؟ قال كان يدير العمامة على رأسه ويقورها من وؤائه ويرسل لها ذؤابة بين كتفبه<

অর্থ: হযরত ইবনে সালাম ইবনে আব্দুল্লাহ ইবনে সালাম রদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে উমর রদিয়াল্লাহু আনহু উনাকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম যে, “নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক (ﷺ) তিনি কিভাবে পাগড়ী মুবারক বাঁধতেন?” উত্তরে তিনি বলেছিলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক (ﷺ) তিনি পাগড়ীর একটি প্রান্ত মাথা মুবারকে পেঁচাতেন ও তারই শেষ প্রান্ত পিছনে উপরে গুঁজে দিতেন। আর পাগড়ীর শামলা উভয় কাঁধ মুবারক উনার মাঝখানে ঝুলাতেন।” [নাইলুল আউতার ২য় জিঃ ১১৩ পৃষ্ঠা, তুহফাতুল আহওয়াযী ৫ম জিঃ ৪১৩ পৃষ্ঠা]

হযরত ইমাম হাসান ইবনে আলী (রা) এর পাগড়ী মুবারক

حدثنا ديناربن عمرو قال رأيت على الحسن عمامة سوداء

অর্থ: “হযরত দীনার ইবনে আমর (رحمة الله) উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি ইমামুল ছানী মিন আহলে বাইতি রসূলিল্লাহ হযরত ইমাম হাসান আলাইহিস সালাম উনার মাথা মুবারকে কালো পাগড়ী বাঁধা দেখেছি।” [মুছান্নাফু ইবনে আবী শাইবাহ ৮ম জিঃ ২৩৫ পৃষ্ঠা]

হযরত ইমাম হুসাইন ইবনে আলী (رضي الله عنه)-এর ইমামাহ বা পাগড়ী মুবারক

عن ابى رزين قال خطبنا الحسين بن على يوم الجمعة وعليه عمامة سوداء>

অর্থ: “হযরত আবু রঝীন (رحمة الله) উনার হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা ইমামুল ছালিছ মিন আহলে বাইতি রসূলিল্লাহ হযরত ইমাম হুসাইন ইবনে আলী আলাইহিস সালাম তিনি পবিত্র জুমুয়ার দিনে আমাদের উদ্দেশ্যে খুত্ববাহ্ মুবারক দিচ্ছিলেন এমতাবস্থায় যে, উনার মাথা মুবারকে কালো পাগড়ী বাঁধা ছিল।” [মুছান্নাফু ইবনে আবী শাইবাহ ৮ম জিঃ ২৩৭ পৃষ্ঠা]

হযরত ছাহাবায়ে কিরাম (রা.) উনারা ইমামাহ্ বা পাগড়ী পরিধান করতেন

قال عبيد الله اخبرنا اشياخنا أنهم رأوا اصحاب النبى صلى الله عليه وسلم يعتمون ويرخونها بين اكتافهم.

অর্থঃ “হযরত উবাইদুল্লাহ্ (رحمة الله) তিনি বলেন, আমাকে আমার শায়খ বা উস্তাদগণ বলেছেন যে, নিশ্চয়ই উনারা হুযূর পাক (ﷺ) উনার হযরত ছাহাবায়ে কিরাম (رضي الله عنه) উনাদের মধ্যে যত জনেরই সাক্ষাত মুবারক লাভ করেছেন,  উনাদের প্রত্যেককেই পাগড়ী পরিধান করতে দেখেছেন। আর উনারা পাগড়ীর শামলা উনাদের দু’কাঁধের মাঝামাঝি ঝুলিয়ে রাখতেন।”  [মুছান্নাফু ইবনে আবী শাইবাহ্ ৮ম জিঃ ২৩৯ পৃষ্ঠা]

হযরত আবু বকর ছিদ্দীক (رضي الله عنه)-উনার ইমামাহ্ বা পাগড়ী মুবারক

عن مرثد بن عبد الله اليزنى عن حميدبن غسيلة الصنابحى قال رأيت ابا بكر يمسح على الخمار.

অর্থ: “হযরত মারসাদ ইবনে আব্দুল্লাহ্ আল্ ইয়ায্নী (رحمة الله) তিনি হযরত হুমাইদ ইবনে গুসাইলাহ্ আছ্ছনাবিহী (رحمة الله) উনার হতে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন যে, আমি আমীরুল্ মু’মিনীন, খলীফাতুল্ মুসলিমীন, খলীফাতু রসূলিল্লাহ্ হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনাকে পাগড়ীর উপর মসেহ্ করতে দেখেছি।” [মুছান্নাফু ইবনে আবূ শাইবাহ্ ১ম জিঃ ২২ পৃষ্ঠা]

হযরত ওমর ফারুক আলাইহিস সালাম উনার ইমামাহ্ বা পাগড়ী মুবারক

عن السائب بن يزيد قال رايت عمربن الخطاب يوم عيد معتما قدارخى عمامته من خلفه.

অর্থ: “হযরত সাইব ইবনে ইয়াযীদ (رحمة الله) উনার হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি ঈদের দিনে আমীরুল মু’মিনীন হযরত ফারূকে আ’যম আলাইহিস সালাম উনাকে পাগড়ী পরিহিত অবস্থায় দেখেছি যে, উনার পাগড়ী মুবারকের শামলা পিছনে (পিঠ মুবারকের উপর) প্রলম্বিত ছিল।” [শুয়াবুল ঈমান লিল্ বাইহাক্বী ৫ম জিঃ ১৭৪ পৃষ্ঠা]

হযরত উসমান যুন্ নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার ইমামাহ্ বা পাগড়ী মুবারক

عن سليمان بن ابى عبد الله قال ادركت المهاجرين الاولين يعتمون بعمائم كرابيس سود وبيض وحمر وخضر وصفر

অর্থ: “হযরত সুলাইমান ইবনে আবু আব্দুল্লাহ্ (رحمة الله) উনার হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি (পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার) প্রথম দিকের সকল মুহাজিরীন (رضي الله عنه)ম উনাদের কালো, সাদা, গন্ধম, সবুজ ও ঘিয়া রংয়ের সূতী কাপড়ের ইমামাহ্ বা পাগড়ী মুবারক পরিধান করতে দেখেছি।” [মুছান্নাফু ইবনে আবী শাইবাহ্ ৮ম জিঃ ২৪১ পৃষ্ঠা]

হযরত মাওলা আলী কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ উনার ইমামাহ্ বা পাগড়ী মুবারক

عن عبد الله بن بشر رضى الله عنه قال بعث رسول الله صلى الله عليه وسلم على بن ابى طالب رضى الله عنه يوم خيبر فعممه بعمامة سوداء ارسلوها من ورائه وعن منكبه اليسرى.

অর্থ: “হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে বাশ্শার (رضي الله عنه) উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক (ﷺ) তিনি খাইবার যুদ্ধের দিবস (খাইবারের উদ্দেশ্যে) ইমামুল আউওয়াল মিন আহলে বাইতি রসূলিল্লাহ হযরত আলী কাররমাল্লাহু ওয়াজজাহূ আলাইহিস সালাম উনাকে পাঠানোর সময়  উনাকে কালো পাগড়ী মুবারক বেঁধে দেন। যার এক প্রান্ত (শামলা) পিছনে (পিঠের উপর) আর অপর প্রান্ত (শামলা) সামনে বাম কাঁধে ঝুলিয়ে দিয়েছিলেন। [উমদাতুল ক্বারী ২১ জিঃ ৩০৭ পৃষ্ঠা, নাইলুল আউতার ২য় জিঃ ১১২ পৃষ্ঠা]

খাদিমুন্ নবী, হযরত আনাস বিন মালিক (رضي الله عنه) উনার ইমামাহ বা পাগড়ী মুবারক

عن مسلم بن زياد قال رأيت اربعة من اصحاب النبى صلى الله عليه وسلم انس بن مالك وفضالة بن عبيد وابا المنيب وفروخ بن سيار او سياربن فروخ يرخون العمائم من خلفهم وثيابهم الى الكعبين.

অর্থ: “হযরত মুসলিম ইবনে যিয়াদ (رحمة الله) উনার হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক (ﷺ) উনার চারজন ছাহাবী (১) হযরত আনাস বিন মালিক (رضي الله عنه), (২) হযরত ফুযাইল ইবনে উবাইদ (رضي الله عنه), (৩) হযরত আবুল মুনীব (رضي الله عنه) এবং (৪) হযরত ফুররুখ ইবনে সিয়ার অথবা হযরত সিয়ার ইবনে ফুররুখ (رضي الله عنه)মা উনাদের সকলকেই এ অবস্থায় দেখেছি যে, উনারা উনাদের পাগড়ী মুবারকের শামলা পিছনে (পিঠের উপর) ঝুলিয়ে রাখতেন এবং উনাদের পোশাক (কাপড়)কে দু’পায়ের গিড়ার উপর পর্যন্ত ঝুলাতেন।” [শুয়াবুল ঈমান লিল বাইহাক্বী ৫ম জিঃ ১৭৬ পৃষ্ঠা]

আশেকে সুন্নত হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (رضي الله عنه) উনার ইমামাহ্ বা পাগড়ী মুবারক

عن عبد الله بن دينار عن عبد الله بن عمر ان رجلا من الاعراب لقيه بطريق مكة فسلم عليه عبد الله وحمله على حمار كان يركبه واعطاه عمامة كانت على رأسه.

অর্থ: “হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে দীনার (رحمة الله) তিনি হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (رضي الله عنه) উনার থেকে বর্ণনা করেন যে, একদা পবিত্র মক্কা শরীফ উনার এক রাস্তায় হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (رضي الله عنه) উনার সঙ্গে এক বেদুঈন ব্যক্তির সাক্ষাত হল। হযরত আব্দুল্লাহ (رضي الله عنه) উনাকে সালাম তিনি দিলেন এবং তিনি যে গাধার পিঠে আরোহন করেছিলেন, তাকেও সেই গাধায় আরোহন করে নিলেন। অতঃপর তিনি উনার মাথার পাগড়ী উনাকে দান করলেন।” [মুসলিম শরীফ ২য় জিঃ ৩১৪ পৃষ্ঠা,  মুসলিম বি শরহিন নববী ৮ম জিঃ ১০৯ পৃষ্ঠা, শরহুল্ উবাই ওয়াস্ সিনূসী আলা মুসলিম ৮ম জিঃ ৪৯৬ পৃষ্ঠা, ফতহুল মুলহিম ৫ম জিঃ, মুসনাদু আহমদ ইবনে হাম্বল ২ম জিঃ ৯১ পৃষ্ঠা]

হযরত যায়িদ বিন্ সাবিত (رضي الله عنه) উনার ইমামাহ বা পাগড়ী মুবারক

عن ثابت ابن عبيد قال رأيت زيد بن ثابت وعليه ازار ورداء وعمامة.

অর্থ: “হযরত সাবিক ইবনে উবাইদ (رحمة الله) উনার হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি হযরত যায়িদ বিন সাবিত (رضي الله عنه) উনাকে দেখেছি যে, উনার (পড়নে) লুঙ্গি, (গায়ে) চাদর ও (মাথায়) পাগড়ী ছিল।” [মুছান্নাফু ইবনে আবী শাইবাহ ৮ম জিঃ ২৪১ পৃষ্ঠা]

ইমামাহ বা পাগড়ী পরিধানের আদব ও সুন্নত তরীক্বা

নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক (ﷺ) তিনি হচ্ছেন প্রত্যেকের জন্য প্রত্যেক আমলের ব্যাপারে আদর্শ স্বরূপ। তাই পাগড়ী পরিধানের ব্যাপারেও উনারই তরীক্বা অনুসরণ-অনুকরণ করে সে অনুযায়ী পাগড়ী বাঁধতে হবে। নিম্নে পাগড়ী পরিধানের সুন্নত তরীক্বা এবং সে সম্পর্কিত দলীল-আদিল্লাহ বর্ণিত হলো-

প্রতিটি কাজ যেরূপ ‘তাসমিয়া’ পাঠ করে করা সুন্নত তদ্রুপ ইমামাহ বা পাগড়ী বাঁধার সময়ও ‘তাসমিয়া’ পাঠ করা সুন্নত। যেমন, এ প্রসঙ্গে কিতাবে উল্লেখ আছে,

بسم الله الرحمن الرحيم.

• “বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম” বলে পাগড়ী পরা সুন্নত। [সিফরুস সায়াদাত, যুরকানী ৬ষ্ঠ জিঃ ২০৮ পৃষ্ঠা]

• পাগড়ী সূতী কাপড়ের হওয়া উত্তম (সুন্নত)। [শামাইলুন নবী (ﷺ)]

• ওজুর সহিত ইমামাহ বা পাগড়ী বাঁধা উত্তম (সুন্নত)। [হুজ্জাতুত তাম্মাহ ফী লুবসিল ইমামাহ ৫৬ পৃষ্ঠা]

• ক্বিবলামুখী হয়ে পাগড়ী বাঁধা উত্তম (সুন্নত)। [হুজ্জাতুত তাম্মাহ ফী লুবসিল ইমামাহ ৫৬ পৃষ্ঠা]

• পাগড়ী ডান দিক থেকে বাঁধা শুরু করা সুন্নত। কেননা নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক (ﷺ) তিনি প্রত্যেক কাজ ডান দিক থেকে শুরু করা পছন্দ করতেন। [বুখারী শরীফ, ফতহুল বারী, উমদাতুল ক্বারী, ইরশাদুস সারী]

ইমামাহ্ বা পাগড়ী পরিধান করে দু’য়া পাঠ করা পবিত্র সুন্নত

নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক (ﷺ) তিনি নতুন জামা ও পাগড়ী পরিধান করে দু’য়া পাঠ করতেন। যেমন পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে উল্লেখ আছে, হযরত আবু সাঈদ খুদরী (رضي الله عنه) উনার হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক (ﷺ) তিনি যখন নতুন কাপড় পরিধান করতেন। তখন তার জামা অথবা পাগড়ী ইত্যাদি উল্লেখ করে নিম্নোক্ত দোয়া পাঠ করতেন:

اللهم لك الحمد انت كسوتنيه اسألك من خيره وخير ما صنع له واعوذ بك من شره وشر ما صنع له.

অর্থ: “আয় মহান আল্লাহ্ পাক! সমস্ত প্রশংসা আপনারই, আপনিই আমাকে এই কাপড় পরিধান করিয়েছেন। আমি আপনার কাছে এর কল্যাণ এবং ওই সমস্ত কল্যাণ কামনা করছি, যে উদ্দেশ্যে একে তৈরি করা হয়েছে। অনুরূপভাবে এর অকল্যাণ এবং ওই সমস্ত অকল্যাণ থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি, যে উদ্দেশ্যে তা তৈরি করা হয়েছে।”

মহান আল্লাহ পাক রব্বুল আলামিন এবং উনার প্রিয়তম রসূল সাইয়্যিদুল মুরসালিন, ইমামুল মুরসালিন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক (ﷺ) উনারা যেন আমাদেরকে সমস্ত সুন্নতের সূক্ষ্ম অনুসরণ করার তৌফিক দান করেন। (আমীন)

পাগড়ী পরিধানের ফযিলতঃ

পুরুষের জন্যে পাগড়ি পরিধান করা “সুন্নতে মুসতামিররা” (চলমান সুন্নত)। সুন্নত বলতে মুস্তাহাব উদ্দেশ্য। কেউ পাগড়ি মাথায় দিলে সওয়াব পাবে। কেউ না পরলে গোনাহগারও হবে না।

রাসুলে কারিম (ﷺ) ও অধিকাংশ সাহাবায়ে কেরাম পাগড়ি মাথায় দিতেন।

সিরাত, ইতিহাস ও হাদিসের কিতাবে বিষয়টি সবিস্তারে উল্লেখ হয়েছে।

❏ হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (رضي الله عنه)কে কেউ প্রশ্ন করেছিলেন,

يا أبا عبد الرحمن ! العمامة سنة؟

হে আবু আব্দির রাহমান (ইবনে উমর রা.-এর উপ নাম) পাগড়ি কি সুন্নত ?

قال نعم

উত্তরে তিনি বলেন হ্যাঁ।

[সূত্রঃ উমদাতুল ক্বারী খণ্ড ১৯ পৃষ্ঠা ৭১০]।

কোন কোন আলেম এটাকে “পোশাকের সুন্নতও বলেছেন। যারা সুন্নাত বলেছেন, তারাও সুন্নাতে জায়েদা বলেছেন।

(أقرب الوسائل إلى شرح الشمائل)

❏ শওকানী বলেন,

والاحاديث يدل على استحباب لبس العمامة

একাধিক সূত্রে হাদীসের বর্ণনা পাগড়ি পরিধান মুস্তাহাব প্রমাণ করে।

( نيل الاوطار جلد٢ صفحة ١١٠)

❏ আল্লামা মুনাভী রহমাতুল্লাহি আলাইহি “ফয়যুল ক্বাদীর”এ বলেন, পাগড়ী পরিধান করা মুস্তাহাব।

(درس ترمذى كتاب إللباس جاد ٩ صفحة ٣٤٣)

❏ আল্লামা ইবনুল হাজ্জ রহমাতুল্লাহি ‘আলাইহি “মাদখাল” নামক কিতাবে পাগড়ি পরিধান করা মুবাহ বলেছেন।

(الدعامة صفحة١٠١)

সুন্নত আদায়ের যে সওয়াব রয়েছে পাগড়ী সুন্নত মনে করে পরিধান করলে সেই সওয়াব হবে।

উপরন্তু রাসুলে কারিম (ﷺ) পাগড়ি বাঁধার ব্যাপারে উদ্বুদ্ধও করেছেন।

মুবারাক এক হাদিসে এসেছে :

عَلَيْكُمْ بِالْعَمَائِمِ فَإِنَّهَا سِيمَا الْمَلَائِكَةِ

অর্থাৎঃ তোমরা পাগড়ি বাঁধো; কেননা তা ফেরেশতাদের প্রতীক।

[সূত্রঃ শুআবুল ইমান, হাদিস নং- ৫৮৫১]।

বদর যুদ্ধের দিন আল্লাহ তাআলা পাঁচ হাজার ফেরেশতা মুসলমানদের সাহায্যের জন্যে পাঠিয়েছিলেন। তাদের সবাই পাগড়িবাঁধা ছিল।

❏ অন্য একটি হাদিসে এসেছে, রাসুলে মাকবুল (ﷺ) হযরত আলি রাদ্বিয়াল্লাহু অানহুকে ডেকে পাগড়ি বেঁধে দিলেন। অতঃপর বললেন :

فاعتموا فإن العمامة سيما الإسلام وهى حاجز بين المسلمين والمشركين

অর্থাৎ: পাগড়ি বাঁধো; কারণ, পাগড়ি ইসলামের নিদর্শন এবং কুফর ও ঈমানের মাঝে পার্থক্য নিরূপণকারী।

[সূত্রঃ জামেউল আহাদিস, হাদিস নং-৩৮৩৫৪]।

অনুবাদ ছাড়া আরো হাদিস দিচ্ছি :

১ : عن ابن عباس قال: لما عمم رسول الله صلى الله عليه وسلم عليا بالسحاب قال له: “يا علي! العمائم تيجان العرب، والاحتباء حيطانها، وجلوس المؤمن في المسجد رباطه” .”الديلمي”.

كنز العمال في سنن الأقوال والأفعال – ১৫ / ৪৮৩

:  ২   إن فرق ما بيننا وبين المشركين العمائم على القلانس . كنز العمال في سنن الأقوال والأفعال – ১৫ / ৩০৬

. ৩ – … عَنْ خَالِدِ بْنِ مَعْدَانَ قَالَ: أُتِيَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِثِيَابٍ مِنَ الصَّدَقَةِ فَقَسَمَهَا بَيْنَ أَصْحَابِهِ فَقَالَ: ” اعْتَمُّوا خَالِفُوا عَلَى الْأُمَمِ قَبْلَكُمْ ” شعب الإيمان – ৮ / ২৯৫

❏ আরো অনেক হাদিস দেওয়া যাবে। হাদিসের কিছু কিছু কিতাবে পাগড়ি বিষয়ে পৃথক অনুচ্ছেদও রয়েছে। এর দ্বারাই বিষয়টির গুরুত্ব সহজেই অনুমেয়।

পাগড়িকে আরবিতে الْعِمَامَةُ বলা হয়। আর الْعَمَائِمُ হচ্ছে এর বহুবচন। তবে পাগড়ির জন্যে الْعِصَابَةُ শব্দও ব্যবহৃত হয়। الْعَصَائِبُ হল এর বহুবচন। হাদিস ও ফিকহের কিতাবে দুনো শব্দই ব্যবহার হয়েছে। এ সংক্রান্ত কোনো বিধান জানতে হলে দুনো শব্দ লিখে সার্চ দিলে ফলাফল পাওয়া যাবে।

❏ একটি হাদিসে এসেছে :

أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَمَرَهُمْ أَنْ يَمْسَحُوا عَلَى الْعَصَائِبِ .

قَال الْخَطَّابِيُّ : الْعَصَائِبُ الْعَمَائِمُ سُمِّيَتْ عَصَائِبَ ؛ لأَنَّ الرَّأْسَ يُعْصَبُ بِهَا

দেখুন : سنن أبو داود مع شرح الخطابي ১ / ১০১ ، ১০২।

কারো কারো মতে, পাগড়ি হচ্ছে রাসুলে কারিম (ﷺ) এর স্বভাবগত সুন্নত (سنة عادية)। তবে মূলনীতি হল, কেউ যদি স্বভাবগত সুন্নতকে সুন্নতে নববী হিসেবে গ্রহণ করে, নিঃসন্দেহে সওয়াব পাবে। এতে কারো দ্বিমত নেই।

বর্তমানে বাংলাদেশে পাগড়ি না পরার মহামারি দেখা দিয়েছে। অনেক সুন্নতের মতো পাগড়ির সুন্নতও উপেক্ষিত। পাগড়িকে অনেকে আধুনিক পোশাক ও সাজসজ্জার অন্তরায় মনে করে। আবার অনেকে ঝামেলা ভাবে। কারো ইচ্ছে হলে পাগড়ি পরবে না; কিন্তু পাগড়িকে খারাপ জানা ও পাগড়ি নিয়ে উপহাস করা অত্যন্ত নিন্দনীয় এবং গোনাহের কাজ। সাধারণ মানুষ তো দূরের কথা আলেম সমাজ এবং মুত্তাকী লোকেরাও পাগড়ি বাঁধছে না। এমন একটি সুপ্রমাণিত বিষয়কেও যদি অবহেলা করা হয়, তাহলে কোন্ বিষয়ের ওপর আমল করব?

কেউ নিজে পাগড়ি না পরলেও পাগড়িকে সুন্নত মনে করা আবশ্যক। সময়-সুযোগ হলে পরতে পারেন। পরতে উৎসাহ দিবেন।

❏ পাগড়ি বিষয়ে বিস্তারিত জানতে কুয়েত সরকারের অর্থায়নে ও তত্ত্বাবধানে প্রণীত বিশ্বের সর্ববৃহৎ ফিকহি বিশ্বকোষ আলমাউসুআতুল ফিকহিয়্যার عِمَامَة ভুক্তি দেখা যেতে পারে। খ- নং- ৩০, পৃষ্ঠা- ৩০০।

❏ হযরত জাবির (رضي الله عنه) বলেন, মক্কা বিজয়ের দিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (মক্কায়) প্রবেশ করলেন। তখন তাঁর মাথায় কালো পাগড়ি ছিল।

[সূত্রঃ সহীহ মুসলিম, হা/ ১৩৫৮]।

❏ হযরত মুগীরা ইবনে শুবা (رضي الله عنه) বলেন, একবার রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ওযু করলেন এবং মাথার অগ্রভাগ ও পাগড়ির উপর মাসাহ করলেন।

[সূত্রঃ সহীহ মুসলিম, হা/ ৮১]।

তাঁর পাগড়ি পরিধান সংক্রান্ত এ ধরনের আরো অনেক বর্ণনা হাদীসের বিভিন্ন কিতাবে বর্ণিত হয়েছে।

❏ সাহাবা, তাবেয়ীগণও নামাযে এবং নামাযের বাইরে বিভিন্ন সময় ব্যাপকভাবে পাগড়ি ব্যবহার করতেন।

[দ্রষ্টব্য : সহীহ বুখারী ১/৫৬]।

❏ হযরত সুলাইমান ইবনে আবি আবদিল্লাহ (رحمة الله) বলেন, আমি মুহাজির সাহাবীগণকে কালো, সাদা, হলুদ, সবুজ বিভিন্ন রঙের পাগড়ি পরতে দেখেছি।

[সূত্রঃ মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হা/ ২৫৪৮৯]।

❏ হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর (رضي الله عنه) সম্পর্কে বর্ণিত আছে, তিনি মক্কা মুকাররমার উদ্দেশে বের হলে সঙ্গে পাগড়ি নিতেন এবং তা পরিধান করতেন।

[সূত্রঃ সহীহ মুসলিম, হা/ ২৫৫২]।

❏ হযরত আবু উবাইদ (رحمة الله) বলেছেন, আমি আতা ইবনে ইয়াযিদকে পাগড়ি পরিহিত অবস্থায় নামায পড়তে দেখেছি।

[সূত্রঃ মুসনাদে আহমদ, হা/ ১১৭৮০]।

সুপ্রিয় পাঠক, আসুন জেনে নেই, পাগড়ী কত হাত হবে এবং কোন রংয়ের পাগড়ী নবীজীর খাস সুন্নাতের অন্তর্ভক্ত।

নবী পাক (ﷺ) এর ধাধানধাধপাঁচ রংয়ের পাগড়ী পরিধান করেছেন মর্মে বর্ণনা পাওয়া যায়। 

কালো, সাদা, যাফরান, হলুদ এবং ছাই বর্ণের পাগড়ী পরিধান করা নবীজীর খাছ সুন্নাতের অন্তর্ভুক্ত।

যেমন-

১/ পূর্বোক্ত হযরত জাবের বিন আব্দুল্লাহ হতে বর্ণিত, তিনি বলেন-

عن جابر بن عبد الله ان النبي صلي الله عليه وسلم دخل يوم الفتح وعليه عمامة سوداء

‘নিশ্চয় নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম মক্কা বিজয়ের দিন যখন তথায় প্রবশে করেন তাঁর মাথা মোবারকে ছিল কালো পাগড়ী।’

[সূত্রঃ মুসলিম, কিতাবুল হজ্জ, ৩/১৩৩]।

২/ ইমাম সাখাবী মা আয়েশা ছিদ্দিকা হতে বর্ণনা করেন যে-

ان عمامة رسول الله صلي الله عليه وسلم في السفر كانت بيضاء والحضر كانت سوداء

‘নিশ্চয় সফররত অবস্থায় নবী পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম সাদা পাগড়ী এবং মুকীম অবস্থায় কালো পাগড়ী পরিধান করতেন।’

[সূত্রঃ সুবুলুল হুদা ওয়ার রাশাদ, ৭/২৭৬]।

৩/ হযরত যায়দ বিন আসলাম থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন-

كان رسول الله صلي الله عليه وسلم يصبع ثيابه كلها بالزعفران حتي العمامة

‘নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম সব কাপড়কেই যাফরান দ্বারা রং করেছেন এমন কী পাগড়ীসহ।’

[সূত্রঃ সুবুলুল হুদা ওয়ার রাশাদ, ৭/২৭৩]।

৪/ হযরত আবু হুরায়রা হতে বর্ণিত, তিনি বলেন-

خرج علينا رسول الله صلي الله عليه وسلم وعليه قميص اصفر ورداء اصفر وعمامة صفراء

‘নবীজী আমাদের সাথে হলুদ জামা, হলুদ চাঁদর এবং হলুদ পাগড়ী পরিধান করে বের হলেন।’

[সূত্রঃ সুবুলুল হুদা ওয়ার রাশাদ, ৭/২৭৩]।

৫/ হযরত জাফর বিন আমর বিন হুরাইছ তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেন-

رأيت علي النبي صلي الله عليه وسلم عمامة حرقانية

‘আমি নবীজীকে ছাই রংয়ের পাগড়ি পরিহিত অবস্থায় দেখেছি।’

[সূত্রঃ নাসাঈ শরীফ, কিতাবুল যিনাত]।

এছাড়াও তাবেয়ী সুলাইমান ইবনু আব্দিল্লাহর বর্ণনায় সাহাবীগণ লাল এবং সবুজ পাগড়ী পরেছেন বলেও বর্ণনায় পাওয়া যায়।

তিনি বলেন-

ادركت المهاجرين الاولين يعتمون بعمائم كرابيس سود وبيض وحمر وخضر وصفر

‘আমি প্রথম যুগের মুহাজির সাহাবীদেরকে দেখেছি যে, তাঁরা সুতী, কালো, সাদা, লাল, সবুজ এবং হলুদ রংয়ের পাগড়ি পরিধান করতেন।’

[সূত্রঃ মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বাহ- ২৫৪৮৯]।

পাগড়ীর পরিমাপ সম্পর্কে-

০১. ‘মিরআত শরহে মিশকাত’ গ্রন্থে বর্ণিত যে, হুযুর পাকের পাগড়ী মোবারকের দৈর্ঘ্য ছিল সাত হাত এবং প্রস্থ ছিল এক বিঘত হতে কিছু বেশি।

০২. ‘মাদারেজুন নবুওয়াত’ কিতাবে এসেছে যে, পাগড়ীর সর্বোচ্চ দৈর্ঘ্য ১৪ হাত এবং সর্বনিু ৭ হাত। আর পাগড়ীর প্রান্ত সর্বোচ্চ পিঠের মাঝামাঝি ও সর্বনিম্ন চার আঙ্গুল পরিমাণ।

০৩. আ‘লা হযরত ফাতাওয়ায়ে রেজভীয়ায় পাগড়ীর দৈর্ঘ্য সম্পর্কে কয়েকটি মত উল্লেখ করেছেন:

(ক) পাগড়ির দৈর্ঘ্য সাত হাত কিংবা তার চেয়ে কিছু বেশি।

(খ) সর্বোচ্চ ১২ হাত ও সর্বনিম্ন ৫ হাত।

(গ) শায়খ আব্দুল হক মুহাদ্দেসে দেহলভী তার ‘রেসালায়ে লিবাস’ এর মধ্যে দৈর্ঘ্য ৩১ হাত পর্যন্ত বর্ণনা করেছেন।

(ঘ) সাধারণের নিকট যেরূপ প্রচলন রয়েছে এরূপ আমল করতে শরয়ী কোন ভয় নেই।

০৪. শামায়েলে নববীতে এসেছে পাগড়ীর প্রস্থ দেড় হাত এবং তা সুতী কাপড়ের ব্যবহার করা মুস্তাহাব।

পোষ্টটি ভালো লেগে থাকলে আপনার মূল্যবান মতামত জানান প্লিজ!

Leave a Comment