যাহার আপাদ-মস্তক মেশক আম্বরের অতুলনীয় খনি।
রাসূল (ﷺ) এঁর ঘাম মাটিতে পড়ার আগেই সাহাবায়ে কেরাম স্বীয় হাতে নিয়ে নিতেন। হাতে নিয়ে তা স্বীয় চেহারায় এবং শরীরে মেখে ফেলতেন।
(তথ্যসূত্রঃ বুখারী-১/১০০)
“রাসূল (ﷺ) ঘাম মোবারক ছিল মেশকে আম্বরের চেয়েও অধিক সুগন্ধিময়।
[আবু নাঈম,যুরকানী ও খাসায়েসুল কুবরা]
❏ হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, এক ব্যক্তি বিশ্বকুল সরদার হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এঁর খেদমতে আরয করল- ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমাকে নিজ কন্যা বিবাহ দিতে হবে। অথচ আমার কাছে কোন সুগন্ধি নেই। আঁপনি কিছু সুগন্ধি দান করুন। তিঁনি ফরমালেন- আগামীকাল খোলা মুখ বিশিষ্ট একটি শিশি নিয়ে আসবে। দ্বিতীয় দিন লোকটি একটি শিশি নিয়ে এল। হুযুরে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর উভয় বাহু থেকে শিশিতে ঘাম ঢালতে লাগলেন। এমনকি তা ভরে যায়। অতঃপর ইরশাদ করলেন,এটা নিয়ে যাও। আর তোমার কন্যাকে বলবে যেন এ থেকে সুগন্ধি ব্যবহার করে।
فكانت إذا تطيبت به يشم اهل المدينة رائحة ذٰلك الطيب فسموا بيت المطيبين
অর্থাৎ- “যখন উক্ত মহিলা নবীজীর ঘাম মুবারক সুগন্ধি হিসেবে ব্যবহার করত,তখন সমস্ত মদীনা বাসীর কাছে তার সুগন্ধি পৌঁছে যেত। এমনকি তাঁরা ঐ ঘরকে “বায়তুল মুতায়্যেবীন” (সুবাসিতদের ঘর) নামে আখ্যায়িত করল।”
[আবু ইয়ালা,তাবরানী,যুরকানী, খাসায়েসুল কুবরা]
❏ নবী করিমের ঘাম মোবারককে সাহাবীরা আতর রূপে ব্যবহার করতেন :
মিশকাত শরীফ ৫১৭ পৃঃ হযরত উম্মে সুলাইম (রাঃ) বুখারী ও মুসলিম শরীফ), ৫১২ পৃঃ (মুসলিম শরীফ ২য় খন্ড ২৫৬ পৃষ্ঠায়)- হযরত আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত হয়েছে নাসায়ী শরীফ ২য় খন্ড ২৫৭পৃঃ
❏ রাসূল (ﷺ) এঁর পবিত্র ঘাম মুবারক মেস্ক-আম্বরের চেয়েও সুগন্ধিযুক্ত!
“হযরত আনাস বিন মালিক রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসুল (ﷺ) আমাদের ঘরে প্রবেশ করলেন। অতঃপর তিঁনি বললেন, আঁমার দেহ থেকে ঘাম বের হচ্ছে। তখন উম্মে সুলাইম একটি পাত্র নিয়ে এসে ঘাম সংগ্রহ করে পাত্রে ভরতে লাগলেন। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, হে উম্মে সুলাইম, তুমি কী করছ? উম্মে সুলাইম বললেন, এটা আঁপনার দেহের ঘাম। আমরা এটা সুগন্ধি হিসেবে ব্যবহার করব। আর এটাই সবচেয়ে উত্তম সুগন্ধি।”এ মর্মে অনেক সহীহ হাদীস রয়েছে।
*****দলিল*****
*(ক.) সহীহ বুখারী,ইস্তিযানঃ৫৮০৯
*(খ.) মুসলিম,ইস্তিযানঃ৪৩০০
*(গ.) সহীহ মুসলিমঃ৪৩০১,৪৩০২
*(ঘ.) মুসনাদে আহমাদ,মুসনাদে আনাসঃ১১৫৬২, ১১৯৪৭, ১২৮৩২,১২৯৪২,২৫৮৬৮
*(ঙ.) ফাতহুল বারী,১১ তম খন্ড,পৃ: ৯৫
*(চ.)দালাইলুন নুবুওওয়াহ,বায়হাকী, পৃ:৫৯
*(ছ.) আল বিদায়াহ ওয়ান নিহায়াহ,৬তম খন্ড,পৃ: ২৯
❏ রাসূলে পাক (ﷺ) এঁর হাত মোবারকের সুগন্ধি:
হযরত আনাস (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বর্ণ ছিল উজ্জ্বল,উঁনার ঘাম মুবারক ছিল মুক্তার ন্যায়| তিঁনি সামনের দিকে ঝুকে হাঁটতেন| উঁনার হাতের চেয়ে অধিক কোমল কোন রেশম আমি স্পর্শ করিনি।তাঁর সুঘ্রাণের চেয়ে অধিক সুগন্ধি কোন মেশক-আম্বরেও আমি পাইনি।
[সহীহ মুসলিম-২৩৩০,মুসনাদে আহমাদ- ১৩৪৩৯]
❏ হযরত আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন,রাসূলে পাক (ﷺ) ছিলেন মনি মুক্তার মতো,যখন পথ চলতেন পূর্ণ তারুন্যের সাথে চলতেন। আমি নবীজীর হাতের তালুর মতো কোমল না কোনো মোটা রেশমী কাপড় দেখেছি না কোনো পাতলা। আর আমি এমন কোনো মেশক আম্বরের খুশবো দেখিনি যা তাঁর শরীর মোবারকের সুগন্ধির চাইতে অধিক খুশবো।
[বুখারী শরীফ- ৪র্থ খন্ড,কিতাব ৫৬, হাদিস ৭৬১,মুসলিম শরীফ এবং অন্যান্য হাদিস গ্রন্থেও হাদিসটি সংকলিত হয়েছে ]
❏ হযরত জাবের ইবনে সামুরা (রাঃ)বলেন, আমি রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এঁর সাথে ফজরের নামায আদায় করলাম, অতঃপর নিঁজের হুজরা মুবারকের দিকে যাচ্ছিলেন। যাওয়ার পথে যত বাচ্চা দেখলেন সকলের মুখের উপর হাত বুলিয়ে দিলেন,এক পর্যায়ে আমার মুখের উপরও। আমি এমন কোমলতা ও সুগন্ধি অনুভব করলাম মনে হচ্ছিল যেন আতরের বক্সের ভেতর থেকে তিনি এই মাত্র হাত মুবারক বের করে এনেছেন ।
[মুসলিম শরীফ ২য় খন্ড,২৫৬ পৃঃ, মিশকাতুল মাসাবীহ, ৫১৭পৃঃ]
❏ হযরত আনাস ইবনে মালেক (রাঃ) হতে বর্ণিত,নবী করীম (ﷺ) ইরশাদ করেছেন: আল্লাহ পাক ‘লাল গোলাপ’ কে তাঁর সকল নবীগণ (আঃ)-এঁর সুগন্ধী ছড়াবার জন্য সৃষ্টি করা হয়েছে। হুযুর নবী করিম (ﷺ) ইরশাদ করেছেন:- যে ব্যক্তি আঁমি নবীর সুগন্ধী পেতে চায়, সে যেন লাল গোলাপ ফুলের সুগন্ধী গ্রহণ করে।
[নুযহাতুল মাজালিস,২য় খন্ড]