তওবার ওপর অটল থাকার প্রধান হাতিয়ার নিয়মিত দোয়া। আল্লাহ তায়ালার কাছে শয়তান থেকে আশ্রয় চাইতে হবে। আল্লাহ যদি আপনাকে হেফাজত করেন তাহলে কে আছে আপনাকে গোমরাহ করবে।
তাছাড়াও নিচে চারটি পদ্ধতি নিয়ে কথা বলব যেগুলো আপনাকে তওবার ওপর অটল থাকতে সহায়তা করবে।
১. আপনাকে খারাপ সঙ্গ পরিবর্তন করতে হবে। যাদের সাথে থাকলে বা যেখানে গেলে গুনাহ সংঘটিত হওয়ার আশংকা আছে সেসব জায়গা/মানুষ থেকে দূরে থাকতে হবে। উত্তপ্ত রোদে দাঁড়িয়ে যদি আপনি বলেন যে আমার গরম লাগবে সেটা যেমন অসম্ভব তেমনি খারাপ সাহচর্যে থেকে গুনাহ থেকে বিরত থাকাও অসম্ভব।
খারাপ সাহচর্য শুধু মানুষ নয়। মোবাইল, পিসি এগুলোও হতে পারে। একান্ত প্রয়োজন ছাড়া এগুলোর ব্যবহার করবেন না। যখন ব্যবহার করবেন তখন এমন একটি কক্ষে বসে ব্যবহার করুন যেখানে সকলের আসা-যাওয়া থাকে। একাকী থাকবেন না। আর নিজের চোখকে হিফাজত করুন।
চোখের হিফাজত আপনাকে অনেক গুণাহ থেকে বাঁচিয়ে রাখবে। চোখের হিফাজত এর জন্য আপনি আমার লেখা আর্টিকেল- ‘যিনার ধারেকাছেও যেও না!’ পড়তে পারেন। কমেন্ট বক্সে লিংক দেয়া থাকবে।
২. প্রতিদিন একটি মুবাহ কাজ থেকে বিরত থাকুন। যে কাজ করলে সাওয়াব নেই বা না করলে গুণাহ নেই সেগুলোকে মুবাহ কাজ বলে। যেমন আপনার এখন চা খেতে ইচ্ছে হচ্ছে। কিন্তু আপনি খাবেন না। ২ ঘন্টা পরে খাবেন। নফসকে কাবু করার এটা একটা পদ্ধতি।
যদিও কাজটি জায়েজ। তবুও নফসকে বুঝিয়ে দিতে হবে- ‘হে নফস! আমি তোর সব কথা কেন মানব? আমি তোর গোলাম হয়ে কেন থাকব?’ মানুষ যখন নফসের গোলাম হয়ে যায় তখন তার পরিণতি হয় ধ্বংস। এক সপ্তাহ এভাবে একটি মুবাহ কাজ থেকে বিরত থাকুন। দ্বিতীয় সপ্তাহে দুটি, তৃতীয় সপ্তাহে তিনটি। এভাবে ছয় সপ্তাহ পর্যন্ত কন্টিনিউ করুন।
ইনশাআল্লাহ আপনার নফসের ওপর কাবু চলে আসবে। এবং নফস চাইলেই আপনাকে দিয়ে গুণাহ করাতে পারবে না।
৩. এসবের পরও যদি গুনাহ হয়ে যায়, তাহলে প্রত্যেকটা গুনাহর কারণে চার রাকাত নামাজ আদায় করবেন। দুই রাকাত তওবার আর দুই রাকাত শুকরিয়ার। এটা খুবই কার্যকরী পদ্ধতি। শয়তানের মনে যখন এই বিশ্বাস চলে আসবে যে সে যতবারই আপনাকে দিয়ে গুনাহ করাচ্ছে আপনি নেকির মাধ্যমে তার প্রতিশোধ নিচ্ছেন। কারণ আপনার নেকী শয়তান সহ্য করতে পারে না।
তাই তখন সে কোনো গুনাহ করাতে গেলে ভাববে যে পরে আপনি তাকে দ্বিগুণ কষ্ট দিচ্ছেন। তাই সে তখন আর আপনাকে প্ররোচনা দিতে আসবে না।
৪. প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর পূর্বে সারাদিনের আমলের হিসাব করুন। কতটা নেক কাজ করলেন, কতটা গুণাহ করলেন! গুনাহ গুলো থেকে রবের দরবারে তওবা করুন। ক্ষমা চান। দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করুন আর কখনো এই গুণাহ না করার। ঘুমানোর পূর্বে দূরুদ ও সালাম আদায় করুন। ইনশাআল্লাহ আপনার প্রশান্তিময় ঘুমও হবে। রব তায়ালার রহমতের মধ্যে থাকবেন সারাটা রাত।
উপরোক্ত আমলগুলো নিজের সঙ্গী বানিয়ে নিতে পারলে ইনশাআল্লাহ তওবার ওপর অটল থাকতে আপনি সক্ষম হবেন। আল্লাহ আমাকে ও আপনাকে গুনাহ থেকে দূরে রাখুন। শয়তান থেকে হেফাজত করুন আমিন।
‘তওবার ওপর অটলতা!- ০২’