আমরা যখন কোনো কাজে ব্যর্থ হই তখন আমরা আশা হারিয়ে ফেলি, হতাশ হয়ে যাই। ভাবি আমার দ্বারা এটা হবে না। মোটিভেশনাল স্পিকারদের শরণাপন্ন হই। মোটিভেশনাল স্পিকাররা, সাইকোলজিস্টরা আমাদেরকে শিখায় পজিটিভ হতে। কি আছে আমার কাছে সেটা দেখতে, কি নেই সেটা না দেখতে।
বিভিন্ন সফল ব্যক্তিদের জীবনি শুনায়। তারা কিভাবে সফল হয়েছে। কারণ পজিটিভ হওয়া আপনার আত্মবিশ্বাসকে আরও বাড়িয়ে দেয়। কিন্তু আপনি কি জানেন আপনার দ্বীন আপনাকে এমন তালিমাতই দিচ্ছে।
আমরা ভাবি ইসলাম শুধুমাত্র আক্বীদা শিখায়, ইবাদত শিখায়, মৃত্যুর পর কি হবে সেসব শিখায়। আধুনিকতা ইসলামে নেই। আমাদের এসব সমস্যার কথা উল্লেখ নেই। প্রিয় ভাই এমন যারা ভাবেন তারা সম্পূর্ণ ভুল। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘আজ তোমাদের দ্বীনকে তোমাদের জন্য পূর্ণাঙ্গ করে দিলাম।’ [১] অর্থাৎ ইসলাম একটি পূর্নাঙ্গ জীবন ব্যবস্থা। আপনার সকল সমস্যার সমাধান ইসলামে আছে।
আপনার অনুভুতি, আবেগ এসব নিয়েও ইসলামে আলোচনা আছে, সমাধান আছে। শুধু আপনাকে পড়াশোনা করতে হবে। আসুন পজিটিভিটি নিয়ে একটু কথা বলি।
রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পুত্র সন্তানগণ ইন্তেকালের পর কাফেররা যখন রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে ঠাট্টা করছিল এই বলে যে ‘মুহাম্মদের নসল অর্থাৎ বংশধারা শেষ হয়ে গেছে।’ (নাউজুবিল্লাহ) প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে হতাশ করছিল, কষ্ট দিচ্ছিল। তখন আল্লাহ তায়ালা সূরা কাউসার নাজিল করেন।
প্রথম আয়াতেই আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘হে হাবীব আপনাকে আমি আল কাউসার দান করেছি।’ অর্থাৎ সমস্ত ভালো আপনাকে দান করে দিয়েছি। দেখুন এখানে আল্লাহ তায়ালা প্রিয় হাবীবের হতাশার সময় নেগেটিভ আলোচনা সামনে আনেন নি। বলেন নি আমি আপনার পুত্রদেরকে নিয়ে নিয়েছি। বরং পজিটিভ আলোচনা করেছেন যে আমি আপনাকে সকল ভালো দান করেছি। সুতরাং কি নেই তা ভেবে দুঃখ পাবেন না বরং কি দিয়েছি তা দেখে আত্নবিশ্বাস বাড়ান।
এখানে আরেকটা তালিম পাওয়া যায়, যে সমস্ত লোক আপনাকে নেগেটিভ কথা-বার্তা বলে হতাশ করতে থাকে তাদের থেকে দূরে থাকুন। তাদের সাথে থাকুন যারা হতাশার সময় পজিটিভ মোটিভেশান দেয়।
রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবু যর গিফারী রা. কে নসিহত করেন, ‘হে আবু যর! দুনিয়ার বিষয়ে তোমার চেয়ে নগন্যকে দেখ’ [২] অর্থাৎ এটা ভেবে দুঃখি হয়ো না যে তোমার কাছে কি নেই। এটা দেখ তোমার চেয়েও খারাপ অবস্থা যাদের তারা কিভাবে জীবন অতিবাহিত করে। অর্থাৎ আল্লাহ তায়ালা যা দিয়েছেন সেটার ওপর সন্তুষ্ট থাক। এক কথায় কি নেই সেটা না দেখে কি আছে সেটা দেখ।
পজিটিভ থাকার শিক্ষা আমার রাসূলে আরাবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দিচ্ছেন। আমরা মোটিভেশনাল স্পিকারদের পিছনে দৌড়াচ্ছি। অথচ এটা জানি না পৃথিবীর সবচেয়ে বড় মোটিভেশনাল লিডার আমার প্রিয় নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সীরাত আমাদের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে অনুপ্রেরণা।
সবশেষে মনে রাখবেন ইসলাম একটি পূর্নাঙ্গ জীবন ব্যবস্থা।
Reference:
[১] সূরা মায়েদা, আয়াত- ০৩।
[২] আত তারগীব ওয়াত তারহীব, কিতাবুল কাযা, হাদীস নং- ২৪, ৩/১৩১।