যে রাতে মহানবী (ﷺ) শুভ আগমন করেন, সে রাতে কিসরার রাজপ্রাসাদে কম্পন ধরে। আর সেখান থেকে ১৪টি গম্ভুজ ভেঙে পড়ল। তা দ্বারা তাদের ১৪ জন ক্ষমতাবান হওয়া বোঝানো হলো। তাদের ১০ জন চার বছরে ক্ষমতায় এলো। আর বাকিরা ওসমান (রা.) শহীদ হওয়া পর্যন্ত ছিল। আর পারস্যের আগুন নিভে গেল, যা হাজার বছর ধরে নেভেনি। আর সাওয়ার ছোট নদীর পানি শুকিয়ে গেল।
[বায়হাকি,দালাইলুন নবুয়্যাহ,১ম খণ্ড পৃষ্ঠা ১২৬]
পারস্য সম্রাট কিসরার রাজ প্রাসাদের ১৪ টি গম্বুজ ভেংগে পড়ে।অন্য মতে ১৪টি পাথর খসে পড়ে।এক হাজার বছর পর্যন্ত পারস্যের অর্নিবান শিখা এক মুহূর্তের জন্য নিভেনি, অথচ রাসূলে খোদা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এঁর শুভাগমনের মুহূর্তে তা নিভে যায়।
[বায়হাকী ১২৬পৃঃ]
হযরত মুহাম্মদ (ﷺ) এঁর আগমনের দিন রাত্রে মক্কার সমস্ত মূর্তিগুলো ভেঙ্গে পড়ে এবং তিঁনি হামাগুড়ি দিয়ে বের হন।
[আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া, ইবনে কাছীর,৩য় খন্ড,৪৮৯ পৃঃ বাংলা,ই:ফা]
রাসুল (ﷺ) এর আগমনের সময় ৪ জন পূববতী নবীর মাতা/স্ত্রী স্ব-শরীয়ে উপস্থিত ছিলেন।
(ইমাম যুরকানী মালেকী (র:) এর যুরকানী শরীফ)
ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন, একসময় শয়তান আসমানে যেতে পারত। গিয়ে ফেরেশতাদের গায়েবি সংবাদ শ্রবণ করত।তা তাদের গণকদের কাছে দিত। যখন ঈসা (আ.) জন্মগ্রহণ তথা পৃথিবীতে আগমন করলেন, তখন তাদের তিন আসমান থেকে বিরত রাখা হলো।আর যখন মহানবী (ﷺ) পৃথিবীতে শুভাগমন করলেন, তখন তাদের সব আসমান থেকে বিরত রাখা হলো। তাই তাদের কেউ যখন কিছু শ্রবণ করার জন্য যেত, তখন তাদের আগুনের স্ফুলিঙ্গ নিক্ষেপ করা হতো।
(তাফসিরে কবির,খণ্ড ১৯,পৃ: ১৩০)
আবু রবি ইবনে সালিম বলেন,বাকি ইবনে মাখলাদ তাঁর তাফসিরে লেখেন, নিশ্চয়ই ইবলিশ চারবার বড় আওয়াজে চিৎকার করেছে। একবার যখন তাকে অভিশাপ দেওয়া হয়েছে।আরেকবার যখন তাকে দুনিয়ায় নামানো হয়েছে।আরেকবার যখন মহানবী (ﷺ) পৃথিবীতে আগমন করেছেন।আরেকবার যখন সুরা ফাতিহা অবতীর্ণ করেছেন।
(উইনুল আছার,১ম খণ্ড পৃষ্ঠা ৩৪)
শয়তান চারবার উচ্ছস্বরে কেঁদেছিল।যখন আল্লাহ তাআলা তাকে অভিশপ্ত আখ্যা দেন, যখন তাকে বেহেশত থেকে বের করে দেওয়া হয়,যখন রাসূল (ﷺ) এঁর পবিত্র বেলাদত তথা ধরাধামে শুভ আগমন হয় এবং যখন সূরা ফাতেহা নাযিল হয়।
(ইবনে কাসীর কৃত আল-বেদায়া ওয়ান নেহায়া,২য় খন্ড,১৬৬পৃঃ)
অন্যান্য মায়ের প্রসবকালীন সময়ে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়। কিন্তু নবীজীর মায়ের এ অবস্থা ছিলনা,বরং বের হয়েছিল একটি নূর-যা মক্কাভূমি থেকে সিরিয়া পর্যন্ত আলোকিত করেছিল।সে নূর ছিল নবী করিম (ﷺ) এ নূর মোবারক।
অন্যান্য সন্তান মায়ের নাভির মাধ্যমে গর্ভে খাদ্য গ্রহণ করে এবং ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর নাভি কাটা হয়।কিন্তু নবী করিম (ﷺ) মায়ের নাভির সাথে যুক্ত ছিলেন না,বরং নাভি কর্তিত অবস্থায় ভূমিষ্ঠ হয়েছেন তথা পৃথিবীতে শুভ আগমন করেছেন।অর্থাৎ সন্তান জমিনে আসলে মায়ের সাথে শেষ সম্পর্ক মায়ের সাথে সন্তানের নাভীর সম্পর্ক লেগে থাকে।দুনিয়ার যেকোন যন্ত্র দিয়ে সেটা কেটে দিতে হয়।কিন্তু আল্লাহর রাসূলের নাভী মোবারক কাটা অবস্থায় ছিল,এমনকি নাভী মোবারক শুকনা অবস্থায় ছিল।