হযরত মুহাম্মদ সাঃ এর নাম সমূহ

পোষ্টটি অন্যকে পড়ার সুযোগ করে দিতে শেয়ার করুন প্লিজ।

মুহাম্মাদ একটি প্রতীকী নাম। অর্থ- চিরপ্রশংসিত। এই একটিমাত্র নামের মাঝে তার সকল পরিচয় বাঙময় হয়ে ওঠে। কারণ, সর্বকালের সবার কাছে প্রশংসিত হতে হলে উন্নত নীতি-নৈতিকতা, উত্তম চারিত্রিক গুণাবলি, সমুন্নত মানবিক মূল্যবোধ, অসম সাহসিকতা, অনিঃশেষ দয়া এবং ইহকালীন ও পরকালীন সংকট মুকাবেলায় অনুসারীদের যুগান্তকারী দিক-নির্দেশ প্রদানের অসামান্য যোগ্যতার প্রয়োজন হয়। তবেই একজন মানুষ সকল যুগের সবার কাছে স্মরণীয়, বরণীয় ও প্রশংসিত হতে পারে।

তার আরেকটি নাম হলো আহমাদ – এই নামটিও একটি প্রতীকী নাম। অর্থ— অত্যধিক প্রশংসিত। ‘আহমাদ’ ও ‘মুহাম্মাদ’ একই ধাতুমূল থেকে উৎসারিত দুটি শব্দ। তার প্রশংসা ও গ্রহণযোগ্যতাকে সর্বজনীনতা ও সর্বকালীনতা দেওয়ার জনাই এই নামের উদ্ভব হয়েছে। ঈসা আলাইহিস সালাম তার এই গুণবাচক নামটি উল্লেখ করে স্বজাতির উদ্দেশ্যে বলেছিলেন—

শীঘ্রই ‘আহমাদ’ নামের একজন নবী আসবেন; তিনি মানুষকে সত্যের পথে আহ্বান করবেন।

এছাড়াও নবীজি সাল্লাল্লাহ্ আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর বেশ কয়েকটি গুণবাচক নাম রয়েছে। সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ‘আল আকিব’, ‘আল হাশির’, ‘আল মাহী’, ‘আল-খলীল’, ইত্যাদি।

*আল আকিব’ বলতে সাধারণত সূত্রের শেষ অংক, অনুষ্ঠানের শেষ পর্ব এবং বংশীয় বা অন্যকোনো ধারার সর্বশেষ ব্যক্তিকে বোঝানো হয়। তিনি যেহেতু সকল নবীর পরে আগমন করেছেন এবং তার আগমনের মাধ্যমে নবুওয়াতের ধারার সুসমাপ্তি ঘটেছে, তাই তাকে ‘আল-আকিব’ বলা হয়।

“আল হাশির বলতে সাধারণত ওই ব্যক্তি বা বস্তুকে বোঝানো হয়, যাকে কেন্দ্র করে কোনো সম্মিলন বা অভ্যুত্থানের সূচনা হয়। যেহেতু হাশরের ময়দানে তিনিই প্রথমে উত্থিত হবেন এবং অন্যদের তার পরে উত্থিত করা হবে সেহেতু তাকে ‘আল-হাশির’ বলা হয়।

*আল মাহী’ নামের অর্থ হচ্ছে নিশ্চিহ্নকারী। যেহেতু নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে নবী হিসেবে প্রেরণের মাধ্যমে মহান আল্লাহ সকল প্রকার অবিশ্বাসকে দূরীভূত করেছেন সেহেতু তাকে এই নামে স্মরণ করা হয়ে থাকে।

আর ‘আল-খলীল’ নামের অর্থ হচ্ছে অন্তরঙ্গ বন্ধু ও একান্ত প্রিয়ভাজন। আরেকটু ব্যাখ্যা করে বললে, যাকে হৃদয়ের সবটুকু দিয়ে ভালোবাসলেও আশা মেটে না এবং যাকে সর্বান্তকরণে বিশ্বাস করলেও শেষ পেয়েছি বলে মনে হয় না, সে-ই হলো খলীল-অন্তরঙ্গ বন্ধু।

সুতরাং, বোঝাই যাচ্ছে, স্বয়ং আল্লাহ যাকে মানব-বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করেছেন তিনি অবশ্যই সর্বদিক থেকে প্রশংসিত হবেন। মানুষের আশ্রয়স্থল হবেন। করুণার আধার হবেন। দুস্থের সহায় হবেন। বৃদ্ধের হাতের লাঠি হবেন। অন্ধের চোখের আলো হবেন এবং সকল বিষয়ে ও জীবনের সকল পর্যায়ে ঐশী সাহায্যপ্রাপ্ত হবেন।

বাস্তবেও তাই হয়েছে। নবুওয়াতের ছোঁয়া তার এই উন্নত ব্যক্তিত্ব, ধর্মীয় ও মানবিক মূল্যবোধ এবং সৃষ্টির সেবা ও কল্যাণকামিতার অনন্য সাধারণ গুণাবলিকে পূর্ণতা দান করেছে। তিনি জনবিচ্ছিন্ন ও নিরবচ্ছিন্ন সাধক থেকে চালকের আসনে উন্নীত হয়েছেন। অনুসারী থেকে পথপ্রদর্শকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন। মহান আল্লাহর কৃপায় নিজেকে বিশ্ববাসীর জন্য করুণার আধার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন এবং এজন্য সর্বদা তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞ থেকেছেন।

সুতরাং, যতদিন আকাশের তারাগুলো দ্যুতি ছড়াবে, যতদিন প্রভাতের মৃদুসমীরণ বয়ে যাবে, যতদিন পাখ-পাখালির কল-কাকলিতে পৃথিবী মুখরিত থাকবে, ততদিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, তার পরিবার-পরিজন এবং সাহাবীদের ওপর অবিরাম শান্তি বর্ষিত হোক।

পোষ্টটি ভালো লেগে থাকলে আপনার মূল্যবান মতামত জানান প্লিজ!

Leave a Comment