বিভিন্ন বিষয়ের উপর গুরুত্বপূর্ণ মাছআলা-৫

পোষ্টটি অন্যকে পড়ার সুযোগ করে দিতে শেয়ার করুন প্লিজ।

কৃতঃ আল্লামা আজিজুল হক আল কাদেরী (رحمة الله) মুনিয়াতুল মুছলেমীন [১ম খন্ড]

❏ মাসয়ালা: (৩৫৬)

নিয়তের ভিন্নতার কারণে বিধানে তারতম্য:

যেমন যখন কোন খতীব হাঁচি দিল অত:পর সে আলহামদুলিল্লাহ বলল, যদি তা দ্বারা সে খুতবা উদ্দেশ্য নিল তখন তা সহীহ হবে, আর যদি সে হাঁচির দু‘আ নিল তখন তা বিশুদ্ধ হবে না। তেমনি কেউ যবেহের সময় হাঁচি দিল তখন হাচির দু‘আ হিসাবে আলহামদুলিল্লাহ পড়ল তখন বিশুদ্ধ হবে না। পার্থক্য হল, যবেহের সময় তাসমিয়া পড়া ওয়াজিব।  

➥ [আল আশবাহ ওয়ান নযায়ের, খ, ১ পৃ:১৯০]

❏ মাসয়ালা: (৩৫৭)

সকল বস্তুর মূল হল মুবাহ।  

➥ [ফতওয়ায়ে কাযীখান, খ, ৪ পৃ:৩৬৩]

❏ মাসয়ালা: (৩৫৮)

যে ব্যক্তি সওয়াবের নিয়তে মাতাপিতা বা কারো কবর যিয়ারত করে তখন যিয়ারতকারী ও জাহান্নামের মাঝখানে পর্দা হবে এবং সাধারণ লোকের কবর যিয়ারত করা অন্তরের কঠোরতা দূর করেন।

হযরত ইবনে ওমর (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত, যে ব্যক্তি নিজ মাতাপিতার কবর যিয়ারত করবে বা মাতা বা শুধু পিতার কবর সওয়াবের আশায় যিয়ারত করবে তার জন্য জ্ঞান আমার থেকে পর্দা হবে।  

➥ [দসতুরুল কাযা, ১৫২]

বর্ণিত আছে যে, একজন ব্যক্তি নবী (ﷺ) এর দরবারে অন্তরের কঠোরতার অভিযোগ করলেন তখন নবী (ﷺ) বললেন, কবরের দিকে তাকাও।  

➥ [দসতুরুল কুযাত, ১৫২]

❏ মাসয়ালা: (৩৫৯)

কোরআন মজীদ উত্তম না নবী (ﷺ) উত্তম? তাতে মত্যনৈক্য রয়েছে, ফতওয়ায়ে শামীতে এসেছে সেখানে মতানৈক্য রয়েছে তবে নিশ্চুপ থাকা ভাল।

❏ মাসয়ালা: (৩৬০)

عن ابن عمر رضي الله عنهما قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: ليس للمؤمن أن يذل نفسه ، قيل: يا رسول الله! وكيف يذل نفسه قال: يتعرض من البلاء ما لا يطيق .

অর্থ: হযরত ইবনে ওমর (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত, তিনি বলে রাসূল (ﷺ) ইরশাদ  করেন, কোন মু’মিনের উচিত নয় নিজকে বে-ইজ্জত করা তখন তাকে বল হল কিভাবে সে নিজকে বে ইজ্জত করবে তিনি বলেন সে  নিজেকে এমন মসীবতের সামনে পেশ করবে, যা সে বরদাশত করতে পারবে না।  

➥ [মুসনাদে ইমাম আযম, পৃ:৩৬৪]

❏ মাসয়ালা: (৩৬১)

মানুষ যদি না বুঝার কারণে নিজকে কঠিন ইবাদতে লিপ্ত করে দেয় তখন সে অধিকাংশ সে রোগে আক্রান্ত হয়ে যায় যার কারণে অনেক সময় ধ্বংস হয়ে যায় এবং ইবাদত বন্দেগীও ছেড়ে দেয় তাই শরীয়তে তা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এরকম আমল শারীরিক ক্ষতি বহন করে।

❏ মাসয়ালা: (৩৬২)

عن جابر بن عبد الله قال جاء رجل من الأنصار إلى النبى صلّى الله عليه وسلّم فقال يا رسول الله ما رزقت ولدا قط و لا ولد لى قال النبى  صلّى الله عليه وسلّم فأين أنت من كثرة الاستغفار و كثرة الصدقة .

অর্থ: হযরত জাবের  (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত, এক আনসারী ব্যক্তি রাসূল (ﷺ) এর দরবারে হাযির হলেন এবং বললেন হে আল্লাহর রাসূল আমার কখনো কোন সন্তান নসীব হয়নি। নবী (ﷺ) বলেন তুমি অধিকহারে ইসতিগফার কর এবং অধিকহারে সদকা কর এর বরকতে তুমি সন্তানের মালিক হবে, তখন সে অধিকহারে সদকা করা আরম্ভ করেছে এবং অধিকহারে ইসতিগফার করছে। হযরত জাবের (رضي الله عنه) বলেন তখন তার নয়টি সন্তান জন্মগ্রহণ করল।

বাস্তবে এ বিধানটি নিম্নোক্ত আয়াত থেকে নির্গত। নূহ (عليه السلام) এর আলোচনা চলছে তিনি নিজ উম্মতকে 

فَقُلْتُ اسْتَغْفِرُوا رَبَّكُمْ إِنَّهُ كَانَ غَفَّارًا(১০) يُرْسِلِ السَّمَاءَ عَلَيْكُمْ مِدْرَارًا(১১) وَيُمْدِدْكُمْ بِأَمْوَالٍ وَبَنِينَ. 

অর্থ: তোমরা রবের কাছে ক্ষমা তালাশ কর কেননা তিনি ক্ষমাশীল। তিনি তোমাদেরকে ক্ষমাশীল ও আসমান থেকে মুষলধারে বৃষ্টি বর্ষন করবেন  এবং তোমাদেরকে মাল ও সন্তান দিয়ে সাহায্য করবেন।  

➥ [নূহ:১০-১১, মুসনাদ:৩৬৫]

❏ মাসয়ালা: (৩৬৩)

জেনে রাখা উচিত হাতে চুমু খাওয়া পায়ে চুমু খাওয়া মুস্তাহাব। কখনো তা বিদা‘আত ও হারাম নয়। বরং তা সুন্নাত প্রত্যেক অবস্থায় তা সুন্নাত। তা অধিকাংশ সাহাবায়ে কেরাম, মুহাদ্দিসীন, মুফাসসিরিন, ওলামায়ে মুহাক্কিকীন ও আকাবের সূফিয়ায়ে কেরাম থেকে তা প্রমাণিত। তাতে কিছু গাইরে মুকালি­দ আলিম ছাড়া কারো মতানৈক্য নেই। তাদের হাত পা চুমু খাওয়া তাদের সম্মানের জন্য। তা সিজদা নয় বরং তা দ্বারা তার ফয়েয বরকত হাসিল করা। তাকে সিজদা আখ্যায়িত করা প্রতারণা। আল্লাহ ওয়ালা থেকে ফয়েয হাসিল করা ঈমানী নূর অর্জন। মহান আল্লাহ কোরআন, হাদিস শরীফের, আউলিয়ায়ে কেরাম, ও আলিমদের ফয়েয নবীর অসীলায় আমাদের দান করুন!

❏ মাসয়ালা: (৩৬৪)

কোন পুরুষ ওযর ব্যতীত নিজের চেহারা ঢাকা মাকরূহ।

❏ মাসয়ালা: (৩৬৫)

মদে লবণ ঢালাতে সিরকা তৈরী হয় মৃতের চামড়া দাবাগত দ্বারা পবিত্র হয়ে যায়।  

➥ [হিয়ারাতুল ফিকাহ]

❏ মাসয়ালা: (৩৬৬)

যে ব্যক্তি দু‘আয়ে কুনুত পড়তে জানে না; তার বিবাহ সহীহ না।  

➥ [হুজ্জাতুল ইসলাম]

❏ মাসয়ালা: (৩৬৭):

কোরআন মজীদ ও হাদিসের বাহ্যিক অর্থ ছেড়ে শুধু ভেতরের অর্থ নেয়া কূফরী।

❏ মাসয়ালা: (৩৬৮):

কোরআনের আয়াত ও সহীহ হাদিস ছেড়ে হালকা, গুরুত্বহীন রায় নেওয়া কূফরী।

❏ মাসয়ালা: (৩৬৯)

পাপকে হালাল বুঝা ও ভাল বুঝা কূফরী।

❏ মাসয়ালা: (৩৭০)

সত্য শরীয়তের উপর অপবাদ দেওয়া কূফরী।

❏ মাসয়ালা: (৩৭১)

আল্লাহর ভয় ছেড়ে দেওয়া কূফরী।

❏ মাসয়ালা: (৩৭২)

আল্লাহ থেকে নৈরাশ হওয়া কূফরী।

❏ মাসয়ালা: (৩৭৩)

নবীর শানে ত্রুটি তালাশ করা বা বর্ণনা করা কূফরী।

সমাপ্ত

পোষ্টটি ভালো লেগে থাকলে আপনার মূল্যবান মতামত জানান প্লিজ!

Leave a Comment