সাবধান! সহীহ্ হাদীসে #শবেবরাত❓
“নে, শবে বরাত আছে কিনা দেখ। পারলে হাদিস গুলোকে জঈফ কিংবা মওজু বল।”
___ মুফতি আবুল কাশেম মুহাম্মদ ফজলুল হক
📖 হাদিসের আলোকে শবে বরাতঃ (০১)
কৃত-মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ বাহাদুর
হযরত মুয়াজ ইবনে জাবাল [رضي الله عنه] হতে বর্ণিত, রাসূলাল্লাহ [ﷺ] ইরশাদ করেনঃ
[ وعن معاذ بن جبل، عن النبى صلى الله عليه وسلم قال :《 يطلع الله الى جميع خلقه ليلة النصف من شعبان، فيغفر لجميع خلقه، الا لمشرك، او مشاحن》.]
“আল্লাহ তা’আলা শাবান মাসের ১৫ তারিখ অর্থাৎ (শবে বরাত) এর রাতে সমস্ত মাখলুকাতের দিকে রহমতের নজরে তাকান। সমস্ত মাখলুকাতকে আল্লাহ্ তা’আলা মাফ করে দিবেন। তবে মুশরিক ও হিংসুক ব্যতীত।”
[(১) ইমাম বায়হাক্বীঃ শুয়াবুল ঈমান; ৫/৩৬০ পৃ. হাদীসঃ ৩৫৫২ এবং ৬৬২৮.
(২) ইমাম আবু নঈমঃ হুলিয়াতুল আউলিয়া; ৪/২২২ পৃ.
(৩) ইমাম ইবনে মুনযিরীঃ তারগীব ওয়াত্তারহীব; ২/২২, হাদীসঃ ১৫১৭.
(৪) ইমাম তাবরানীঃ মু’জামুল কবীর; ১/১৪২পৃ. হাদীসঃ ২১৫.
(৫) ইমাম ইবনে হিব্বানঃ আস-সহীহ্; ১২/৪৮১পৃ. হাদীসঃ ৫৬৬৫.
(৬) ইমাম বায়হাক্বীঃ ফাযায়েলে ওয়াক্ত; ১/১১৮পৃ. হাদীসঃ ২২.
(৭) ইমাম তাবরানীঃ মু’জামুল আওসাত; ৭/৩৬পৃ. হাদীসঃ ৬৭৭৬.
(৮) ইবনে হাজার হায়সামীঃ মাযমাউয যাওয়াইদ; ৮/৬৫পৃ. হাদীসঃ ১২৯৫৬.
(৯) (লা-মাযহাবী) আলবানী: সহিহুত তারগীব; হাদীসঃ ১৫১৭, তিনি বলেন- হাদিসটি হাসান, সহীহ্।
(১০) ইবনে আছিমঃ আস্-সুন্নাহ্; ১/২২৪পৃ. হাদীসঃ ৫১২.
(১১) ইবনে আসাকীরঃ তারীখে দামেস্ক; ৫৪/৯৭ পৃ.
(১২) তাবরানীঃ মু’জামুল কবীর; ২০/১০৮পৃ. হাদীসঃ ২১৫.
(১৩) মুসনাদিস্-শামীনঃ ১/১২৮পৃ. হাদীসঃ ২০৩ ও ৪/৩৬৫পৃ. হাদীসঃ ৩৫৭০.
(১৪) আবু নঈম ইস্পাহানীঃ হুলিয়াতুল আউলিয়া; ৫/১৯১পৃ.
(১৫) বায়হাক্বীঃ শুয়াবুল ঈমান; ৯/২৪পৃ. হাদীসঃ ৬২০৪.
(১৬) সাজারীঃ তারতীবুল আমালি; ১/৩৭২পৃ. হাদীসঃ ১৩২০ ও ২/৪৫পৃ. হাদিসঃ ১৫২৫ এবং ২/১৪০পৃ. হাদীসঃ ১৮৮১
(১৭) হায়সামীঃ মাওয়ারিদুয্-যামান; ১/৪৮৬পৃ. হাদীসঃ ১৯৮০.
(১৮) দারে কুতনীঃ আল-নূযুল; ১/১৫৮পৃ. হাদীসঃ ৭৭.
(১৯) মিযযীঃ তুহফাতুল আশরাফ বি মা’রিফাতুল আতরাফ; ৬/৪২০পৃ. হাদীসঃ ৯০০৬.
(২০) মুত্তাকী হিন্দীঃ কানযুল উম্মাল; ৩/৪৬৮পৃ. হাদীসঃ ৭৪৬৪.
(২১) সালিম জাররারঃ ইমা ইলা যাওয়াইদ; ৫/৫১৭পৃ. হাদিসঃ ৫০৭২.
(২২) ইবনে কাসীরঃ জামিউল মাসানিদ; ৭/৫৩০পৃ. হাদীসঃ ৯৬৯৭.
(২৩) (লা-মাযহাবী) আহলে হাদিস নাসিরুদ্দীন আলবানী: সিলসিলাতুল আহাদিসুল সহিহাহ, ৩/১৩৫ পৃ. হাদীসঃ ১১৪৪, তিনি বলেন-সনদটি সহীহ্।
❏ সনদ পর্যালোচনাঃ
আল্লামা ইবনে হায়সামী [رحمه الله عليه] উক্ত হাদিস সম্পর্কে বলেনঃ
[ رواه الطبرانى فى الكبير والاؤسط ورجالهما ثقات. – (مجمع الزوائد : ٨/ ٦٥)]
“উক্ত হাদিসটি ইমাম তাবরানী ‘মু’জামুল কবীর’ ও ‘মু’জামুল আওসাত’ গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন- উক্ত হাদিসটির সমস্ত রাবী সিকাহ বা বিশুদ্ধ।”
[আল্লামা ইবনে হাজার হায়সামী: মাযমাউয যাওয়াইদ; ৮/৬৫ পৃ.]
মুয়াজ বিন জাবাল [رضي الله عنه] এর উক্ত হাদিস সম্পর্কে ইমাম মুনযির এবং (লা-মাযহাবী) আহলে হাদিসের অন্যতম আলেম মোবারকপুরী বলেন:
[وقال منذرى والترغيب بعد ذكره : رواه الطبرانى فى الاوسط وابن حبان فى صحيحه والبيهقي ……… باسناد لا بأس به – تحفة الاحوذى: ٣/ ٤٤١]
“ইমাম মুনযির [رحمه الله عليه] তার তারগীব গ্রন্থে হাদিসটি উল্লেখের পর বলেন, ইমাম তাবরানী তার ‘মু’জামুল আওসাতে’, ইমাম ইবনে হিব্বান তার ‘আস-সহিহ’ গ্রন্থে এবং ইমাম বায়হাক্বী [رحمه الله عليه] স্বীয় গ্রন্থে বর্ণনা করেন। উক্ত হাদিসটির সনদ لا بأس به অর্থাৎ সনদে কোন অসুুবিধা নেই।”
[মোবারকপুরী: তুহফাতুল আহওয়াজী; ৩/৪৪১ পৃ. হাদীসঃ ৭৩৬]
[সূত্রঃ প্রমাণিত হাদীসকে জাল বানানোর স্বরুপ উম্মোচন; কৃত-মুহাম্মদ শহিদুল্লাহ বাহাদুর, খন্ড-১, পৃ.২৮১]
□ হাদিসের আলোকে শবে বরাতঃ (০২)
[ عن يحيى بن ابى كثير، عن عروة، عن عائشة رضى الله عنها قالت :فقدت رسول الله صلى الله عليه وسلم ذات ليلة، فخرجت طلبه، فاذا هو بالبقيع رافع رأسه الى السماء. فقال يا عائشة اكنت تخافين ان يحيف عليك الله ورسوله؟ قالت، قد قلت: وما بي ذلك، ولكنى ظننت انك اتيت بعض نسائك فقال :《ان الله تعالى ينزل ليلة النصف من شعبان الى السماء الدنيا فيغفر لاكثر من عدد شعر غنم بنى كلب》.]
অর্থাৎ- উম্মুল মুমেনীন হযরত আয়েশা [رضي الله ﺗﻌﺎﻟﯽٰ عنها] হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি এক রজনীতে হুযূর-ই আকরাম [ﷺ]’কে হারিয়ে ফেললাম। অর্থাৎ মধ্যরাতে আমি তাঁকে বিছানায় দেখতে পেলাম না। এ সময় ঘর ছেড়ে গিয়ে তিনি জান্নাতুল বাকীতে অবস্থান করতে ছিলেন। (এবং এ সময় মুনাজাত রোনাজারীতে মশগুল ছিলেন) তিনি তখন আমার উদ্দেশ্যে এরশাদ করলেন- তুমি কি এ আশংকা করছো যে, আল্লাহ্ এবং তাঁর রাসূল তোমার প্রতি অবিচার করেছেন? আমি বললাম, ‘‘হে আল্লাহ্’র রাসূল, আমি ধারণা করেছি যে, আপনি আপনার আপনার পবিত্র বিবিদের থেকে কারো গৃহে অবস্থান করতেছেন।’’ তখন তিনি বললেন, ‘আল্লাহ্ তা‘আলা অর্ধ শা’বান (অর্থাৎ- শবে বরাত) এর রজনীতে দুনিয়ার আসমানে অবতরণ করেন। (অর্থাৎ- তাঁর বিশেষ তাজাল্লী বিচ্ছুরণ ঘটান) এবং বনী ক্বলবের বকরীর পশমের সংখ্যার চেয়েও বেশি আমার উম্মতকে ক্ষমা করেন।
[(১) ইমাম তিরমিযীঃ আস সুনান; ৩/১১৫পৃ. হাদীসঃ ৭৩৯.
(১) ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বলঃ আল মুসনাদ; ১৮/১১৪ পৃ. হাদীসঃ ২৫৮৯৬.
(৩) ইবনে আবি শায়বাহঃ আল-মুসান্নাফ; ১০/৪৩৮, হাদীসঃ ৯৯০৭.
(৪) ইমাম ইবনে মাজাহঃ আস-সুনান; ১/৪৪৪ পৃ. হাদীসঃ ১৩৮৯.
(৫) ইমাম বগভীঃ শরহে সুন্নাহ; ৪/১২৬ পৃ. হাদীসঃ ৯৯২.
(৬) ইমাম ইবনে মুনযিরীঃ আত্ তারগীব ওয়াত তারহীব; ৪/২৪০পৃ. হাদীসঃ ২৪.
(৭) ইমাম ইবনে ইসহাক রাহবিয়্যাহঃ আল মুসনাদ; ২/৩২৬পৃ. হাদীসঃ ৮৫০ এবং ৩/৯৭৯, হাদীসঃ ১৭০০.
(৮) শায়খ খতিব তিবরিযীঃ মিশকাতুল মাসাবীহ; ২৫৩পৃ. হাদীসঃ ১২৯৯.
(৯) ইমাম বায়হাক্বীঃ ফাযায়েলে ওয়াক্ত; ১/১৩০ পৃ. হাদীসঃ ২৮.
(১০) মোল্লা আলী ক্বারীঃ মিরকাতুল মাফাতীহ; ৩/৩৪০পৃ. হাদীসঃ ১২৯৯.
(১১) ইমাম কুরতুবীঃ তাফসীরে কুরতুবী; ১৬/১২৬-১২৭পৃ.
(১২) ইমাম সুয়ূতীঃ আল-জামেউস সগীর; ১/১৪৬পৃ. হাদীসঃ ১৯৪২.
(১৩) আব্বাস আল-মাক্কী ফিক্হীঃ আখবারুল মক্কা, ৩/৬৬পৃ. হাদীসঃ ১৮০৬ ও ১৮৪০.
(১৪) শায়খ ইউসুফ নাবহানীঃ ফতহুল কাবীর; ১/১৩৯পৃ. হাদীসঃ ১৪২০.
(১৫) মুত্তাকী হিন্দীঃ কানযুল উম্মাল; ৩/৪৬৪পৃ. হাদীসঃ ৭৪৫০ এবং ১২/৩১৪পৃ. হাদীসঃ ৩৫১৭৯ এবং ১২/৩১৫পৃ. হাদীসঃ ৩৫১৮৪.
(১৬) ইমাম সুয়ূতীঃ জামেউস সগীর; ১/১৬৬৭পৃ. হাদীসঃ ১৬৬৭ ও জামিউল আহাদিস; ৩/৪৮৫পৃ. হাদীসঃ ২৬২৪.
(১৭) (লা-মাযহাবী) আহলে হাদিস নাসিরুদ্দীন আলবানীঃ দ্বঈফু মিশকাত; হাদীসঃ ১২৯৯, দ্বঈফু জামে, হাদীসঃ ৬৫৪, তিনি বলেন-সনদটি দ্বঈফ।]
❏ সনদ পর্যালোচনাঃ
আল্লামা ইবনে মুনযিরী [رحمه الله عليه] ‘তারগীব’ গ্রন্থে এবং (লা-মাযহাবী) আহলে হাদীসের অন্যতম আলেম মোবারকপুরী উক্ত হাদিস সম্পর্কে বলেনঃ
[ اخرجه البزار والبيهقى با اسناد لا بأس به كذا فى ترغيب والترهيب للمنذرى في باب الترهيب من الهاجر – تحفة الاحوذي، باب : ما جاء النصف من الشعبان: 3/440 – الرقم:736 ]
“উক্ত হাদিসটি ইমাম বাযযার [رحمه الله عليه] ও ইমাম বায়হাক্বী [رحمه الله عليه] বর্ণনা করেছেন-উক্ত সনদটি لا بأس به অর্থাৎ উক্ত হাদীসের সনদে কোন অসুুবিধা নেই। অনুরুপ বলেছেন ইমাম মুনযির [رحمه الله عليه] স্বীয় ‘তারগীব ওয়াত তারহীব’ গ্রন্থে।”
[(ক). মোবারকপুরীঃ তুহফাতুল আহওয়াজী; ৩/৪৪০ পৃ. হাদীসঃ ৭৩৬.
(খ). ইমাম মুনযিরীঃ আত্-তারগীব ওয়াত তারহীব; ৪/২৪০পৃ.]
অপরদিকে ইমাম তিরমিযী উক্ত হাদিসটি বর্ণনার পর বলেনঃ
[ وقال ابو عيس الترمذى : وفي الباب عن ابى بكر الصديق ]
“ইমাম তিরমিযী [رحمه الله عليه] বলেন, এ পরিচ্ছেদে (এ বিষয়ে) হযরত আবু বকর [رضي الله عنه] হতে হাদিস বর্ণিত হয়েছে।”
[(ক). তিরমিযীঃ আস্-সুনান; ৩/১১৫পৃ. হাদীসঃ ৭৩৯.
(খ). মোবারকপুরীঃ তুহফাতুল আহওয়াজী; ৩/৪৪০ পৃ. হাদীসঃ ৭৩৬]
হযরত আয়েশা [رضي الله ﺗﻌﺎﻟﯽٰ عنها] এর উক্ত হাদিস প্রসঙ্গে মোবারকপুরী বলেনঃ
[ رواه البيهقى وقال: هذا مرسل جيد: تحفة الاحوذى : 3/441 ]
“উক্ত হাদিসটি ইমাম বায়হাক্বী [رحمه الله عليه]ও একটি সনদে বর্ণনা করেছেন। ইমাম বায়হাক্বী [رحمه الله عليه] বলেন, উক্ত হাদিসটি মুরসাল, তবে শক্তিশালী সনদ।”
[মোবারকপুরীঃ তুহফাতুল আহওয়াজী; ৩/৪৪০ পৃ. হাদীসঃ ৭৩৬]
ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ূতী [رحمه الله عليه] বলেনঃ
[ هذا حديث حسن ]
“উক্ত হাদিসটি সনদের দিক দিয়ে ‘হাসান’ পর্যায়ের।”
[ইমাম সুয়ূতীঃ আল-জামেউস সগীর; ১/১৪৬পৃ. হাদীসঃ ১৯৪২.]
পরিশেষে বলতে চাই, যেহেতু উক্ত হাদিসটি হক্কানী মুহাদ্দিসগণ গ্রহণযোগ্য বলেছেন, সেহেতু (লা-মাযহাবীদের গুরু) আহলে হাদিস আলবানীর যঈফ বলার কোন ভিত্তি নেই।
[সূত্রঃ প্রমাণিত হাদীসকে জাল বানানোর স্বরুপ উম্মোচন; কৃত-মুহাম্মদ শহিদুল্লাহ বাহাদুর, খন্ড-১, পৃ. (২৭৯-২৮০)]
□ হাদিসের আলোকে শবে বরাতঃ (০৩)
কৃত- মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ বাহাদুর
[ عن علي بن أبى طالب، قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: “اذا كانت ليلة النصف من شعبان، فقوموا ليلها وصوموا نهارها، فان الله ينزل فيها لغروب الشمس الى سماء الدنيا، فيقول: ألا من مستغفر لي فأغفر له ألا مسترزق فأرزقه ألا مبتلى فأعافيه ألا كذا ألا كذا، حتى يطلع الفجر” وفى رواية حتى تطلع الشمس.]
অর্থাৎ- হযরত আলী [رضي الله عنه] থেকে বর্ণিত, রাসূলাল্লাহ [ﷺ] ইরশাদ ফরমানঃ “যখন শাবানের চৌদ্দ(১৪) তারিখ আসবে, সে রাত্রে তোমরা কিয়াম করবে (নামায ইবাদত বন্দেগীতে কাটাবে) এবং দিনে রোযা রাখবে, আল্লাহ্ তা’আলার রহমত এ রাত্রে সূর্যাস্তের সাথে সাথে প্রথম আকাশে অবতরণ করেন এবং বলতে থাকেন, কেউ আছ কি? ক্ষমা চাইলে আমি ক্ষমা করে দেবো। কেউ রোগাগ্রস্ত আছ কি? (রোগমুক্তি প্রার্থনা করলে) আমি আরোগ্য দান করবো। কেউ রিযিক চাওয়ার আছ কি? আমি তোমাকে রিযিক (জীবন উপকরণ) দেবো। কেউ আছ কি? কেউ আছ কি? এভাবে ফযর পর্যন্ত ঘোষণা আসতে থাকে। কোন কোন বর্ণনায় রয়েছে- সূর্যোদয় পর্যন্ত ঘোষণা চলতে থাকে।”
(১) ইমাম ইবনে মাজাহঃ আস-সুনান; ১/৪৪৪ পৃ. হাদীসঃ ১৩৮৮.
(২) ইমাম বায়হাক্বীঃ শুয়াবুল ঈমান; ৫/৩৫৪পৃ. হাদীসঃ ৩৮২২.
(৩) ইমাম বায়হাক্বীঃ ফাযায়েলে ওয়াক্ত; হাদীসঃ ৩৩.
(৪) দায়লমীঃ আল-ফিরদাউস ১/২৫৯পৃ. হাদীসঃ ১০০৭.
(৫) ইমাম মুনযিরঃ আত্ তারগীব ওয়াত তারহীব; ২/৭৫পৃ. হাদীসঃ ১৫৫.
(৬) ইমাম খতিব তিবরিযীঃ মিশকাতুল মাসাবীহ; ২/২৪৫পৃ. হাদীসঃ ১২৩৩.
(৭) ইমাম আবু বকর কেনানীঃ মিসবাহুয যুজ্জাহ; ২/১০পৃ. হাদীসঃ ৮০ ও ৪৯১.
(৯) মোল্লা আলী ক্বারীঃ মিরকাতুল মাফাতীহ; ৩/১৯৫পৃ. হাদীসঃ ১৩০৮.
(১০) ইমাম সুয়ূতীঃ তাফসীরে দুররে মানসূর; ৭/৪০২পৃ. দারুল ফিকর ইলমিয়্যাহ্, বৈরুত।
(১১) শায়খ আব্দুল হক্ব মোহাদ্দেস দেহলভীঃ আশিআতুল লুম’আত; ৪/২১২পৃ. হাদীসঃ ১২৩৩.
(১২) ইমাম তিব্বীঃ শরহে মেশকাত; ৩/৪৪৮পৃ. হাদীসঃ ১২৩৩.
(১৩) ইমাম কুরতুবীঃ তাফসীরে কুরতুবী; ১৬/১২৬-১২৭পৃ.
(১৪) ইমাম ইবনে হিব্বানঃ আস-সহীহ; হাদীসঃ ১৩৮৮.
(১৫) তায়মী ইস্পাহানীঃ তারগীব ওয়াত তারহীব; ২/৩৯৭পৃ. হাদীসঃ ১৮৬০.
(১৬) ইরাকীঃ তাখরীজে ইহইয়া; ১/২৪০পৃ.
(১৭) শাওকানীঃ ফাওয়াইদুল মাওদ্বুআত; ১/৫১পৃ.
(১৮) মাহমুদ মুহাম্মদ খলিলঃ মুসনাদে জামে; ১৩/২১৬পৃ. হাদীসঃ ১০০৭০.
(১৯) বদরুদ্দীন আইনীঃ উমদাতুল ক্বারী; ১১/৮২পৃ.
(২০) মের’আত; ৪/৩৪৩, হাদীসঃ ১৩১৬.
(২১) জওযীঃ আল-ইল্লল মুতনাহিয়্যাত; ২/৭১পৃ. হাদীসঃ ৯২২.
(২২) তাহের পাটনীঃ তাযকিরাতুল মাওদ্বুআত; ১/৪৫পৃ.
(২৩) কুস্তালানীঃ মাওয়াহেবে লাদুন্নীয়া; ৩/৩০০পৃ.
(২৪) যুরকানী: শরহুল মাওয়াহেব; ১০/৫৬১পৃ.
(২৫) ইমাম রমলী: ফাতওয়ায়ে রমলী; ২/৭৯পৃ.
(২৬) ইবনে হাজর মক্কী: ফাতওয়ায়ে ফিকহিয়্যাতুল কোবরা; ২/৮০পৃ.
(২৭) মুত্তাকী হিন্দীঃ কানযুল উম্মাল; ১২/৩১৪পৃ. হাদীসঃ ৩৫১৭৭.
(২৮) ইমাম সুয়ূতীঃ জামেউস সগীর; ১/১৬৬৫পৃ. হাদীসঃ ১৬৬৬ এবং জামিউল আহাদিস; ৩/৪৮৩পৃ. হাদীসঃ ২৬২১.
(২৯) বায়হাক্বীঃ ফাযায়েলুল ওয়াক্ত; ১/১২২পৃ. হাদীসঃ ২৪.
(৩০) আব্দুল আযিয বিন বাযঃ মাজমূউল ফাতওয়া; ১/১৯০পৃ.]
উক্ত হাদীসের যে রাবী সম্পর্কে তাদের (লা-মাযহাবীদের) আপত্তি, প্রকৃতপক্ষে কী বলা হয়েছে তা রিযাল শাস্ত্রের ইমামগণের কিতাব থেকে তা আলোকপাত করা হলঃ
❏ সনদ পর্যালোচনাঃ
তৃতীয় রাভীঃ বাতিলপন্থীদের আপত্তি ‘ইবনু আবি সাবরা’কে নিয়ে, তার সম্পর্কে ইমাম যাহাবী [رحمه الله عليه] বলেনঃ
[ الفقيه الكبير قاضى العراق أبو بكر ابن عبد الله ابن محمد ابن أبى سبرة الخ ]
“তিনি অনেক বড় ফকীহ্, ইরাকের কাযী ছিলেন।”
[ইমাম যাহাবীঃ মিযানুল ইতিদাল; ৪/৪৬১পৃ. রাভী নং-১০৫১৭]
ইমাম আবু দাঊদ [رحمه الله عليه] বলেনঃ
[ كان مفتى اهل المدينة ]
“তিনি মদীনা শরীফের মুফতী ছিলেন।”
[(ক). ইবনে হাজার আসকালানীঃ তাহযীবুত তাহযীব; ১২/২৭পৃ.
(খ). ইমাম যাহাবীঃ মিযানুল ইতিদাল; ৪/৪৬১পৃ. তবে ইমাম বুখারী, ইমাম নাসাঈ আর কেউ কেউ দুর্বল বলে ইমাম যাহাবী উল্লেখ করেছেন।]
সম্মাণিত পাঠকবৃন্দ! ইমাম আবু দাঊদ [رحمه الله عليه] এর মত এতবড় একজন ইমাম বললেন, ‘তিনি মদীনা শরীফের মুফতী ছিলেন।’ আমি (শহীদুল্লাহ বাহাদুর) বলবো জাল হাদিস বানোয়াটকারী কীভাবে এতবড় ফকীহ্ হন? ইমাম যাহাবী [رحمه الله عليه] উল্লেখ করেছেন, ইমাম ইউসুফ [رحمه الله عليه] ওফাতের পর তিনি(রাভী) কাযী বা বিচারপতি ছিলেন। ইমাম যাহাবী উল্লেখ করেছেন, তিনি বিখ্যাত তাবেঈ আ’রায, হযরত আতা ইবন রিবাহ [رحمه الله عليه] সহ অনেক তাবেঈ থেকে হাদিস শুনেছেন এবং তার থেকে ইমাম আব্দুর রাযযাক, ইমাম আবু আছেম [رحمه الله عليه] সহ এক জামাত হাদিস শাস্ত্রের ইমাম হাদিস শুনেছেন। ইমাম যাহাবী বলেন, আব্বাস [رحمه الله عليه] বর্ণনা করেন, আর তিনি ইয়াইয়া ইবন মুঈন থেকে শুনেছেন তিনি বলেছেন, লোকেরা তার নিকট হাদিস শ্রবণ করার জন্য গিয়েছিলেন, আর তাদেরকে তিনি বলেছেন আর নিকট সত্তর হাজার হাদিস রয়েছে যা আমি বিখ্যাত তাবেঈ ইমাম ইবন জুরাইয [رحمه الله عليه] থেকে যেভাবে অর্জন করেছি সেভাবেও তোমরা আমার থেকে গ্রহণ করলে করতে পারো অন্যথায় নয়। [ইমাম যাহাবীঃ মিযানুল ইতিদাল; ৪/৪৬১পৃ. রাভী নং-১০৫১৭]
(লা-মাযহাবী) আহলে হাদিস মোবারকপুরী ও আলবানীর দাবী হল যে- সালেহ ইবন আহমদ বলেছেন-(كان يضع الحديث) তিনি জাল হাদিস বানাতেন। আমি বলবো যে, এটা শুধু একক তার (লা-মাযহাবীর) অভিমত যা সকল গ্রহণযোগ্য মুহাদ্দিস এমনকি ইমাম বুখারী, আবু দাঊদ, ইবনে মুঈন সহ সবার বিপরীত। আর ‘ইবন সালেহ’ এই সংবাদ তার পিতা থেকে শ্রবণ করেছেন বলে দাবী করেছেন। কিন্তু তার পিতা কে? তা জানা যায় নি।
একটি লক্ষ্যণীয় বিষয় হলো- (লা-মাযহাবী) আলবানী হাদিসটি ‘জাল’ বলেছেন। অথচ আলবানী’র দলের অনুসারী ‘আব্দুল আযিয বিন বায’ তার কিতাবে সনদটিকে ‘দ্বঈফ’ বলেছেন। (লা-মাযহাবী) আলবানী’র পূর্বে একজন মুহাদ্দিসও হাদিসটিকে জাল বলেননি। তবে ইমাম কুস্তালানী, ইমাম সুয়ূতী, ইমাম যুরকানী, ইরানী, কিনানী, ইবনে হাজর মক্কী, ইমাম ইবনে আবেদীন শামী সকলেই তাদের স্ব-স্ব গ্রন্থে ‘দ্বঈফ’ বলেছেন; একজনও জাল বলেননি।
(উল্লেখ্য যে,) ইমাম ইবনে হিব্বান [رحمه الله عليه] সহীহ্ সূত্রে হযরত আলী [رضي الله عنه] হতে বর্ণনা করেছেন। [ইমাম ইবনে হিব্বানঃ আস-সহীহ; হাদীসঃ ১৩৮৮] সুতরাং আমাদের বর্ণনার জন্য এটাই দলীল (হিসেবে যথেষ্ট)।
[সূত্রঃ প্রমাণিত হাদীসকে জাল বানানোর স্বরুপ উম্মোচন; কৃত-মুহাম্মদ শহিদুল্লাহ বাহাদুর, খন্ড-১, পৃ. (২৭৬-২৭৭)]