কানযুল ঈমান থেকে অনুবাদঃ “হে ঈমানদারগণ! যদি আল্লাহ্’কে ভয় করো তবে তোমাদেরকে তা-ই (ফুরকান) প্রদান করবেন, যা দ্বারা সত্যকে মিথ্যা থেকে পৃথক করে নেবে আর তোমাদের পাপসমূহ মোচন করবেন এবং তোমাদেরকে ক্ষমা করবেন; আর আল্লাহ্ অতিশয় করুণাময়।” (সূরা আনফালঃ ২৯)
এর ব্যাখ্যায় হাকীমুল উম্মত মুফতি আহমদ ইয়ার খান নঈমী রহঃ লিখেন, আল্লাহ তাআ’লা মু’মিনকে এমন দূরদর্শিতা দান করেন যে, সে নিষ্ঠাবান ও মুনাফিককে চিনতে পারে; সুতরাং এটা কিভাবে হতে পারে যে,
হুযূর ﷺ মুনাফিকদের চিনবেন না? মু’মিনের অন্তর সৃষ্টিগতভাবে বাতিল বা মিথ্যাকে ঘৃণা করে। অনুরূপভাবে, মুমিন ঈমানের নূর (জ্যোতি) দিয়ে হক ও বাতিলের মধ্যে পার্থক্য করে নেয়। আর হক বা সত্যের প্রতি আগ্রহী হয়। (তাফসীরে নূরুল ইরফান)
তাফসীরে খাযেনে সূরা আলে ইমরানের ১৭৯ নং আয়াতঃ “(হে সর্বসাধারণ!) আল্লাহ’র শান/ রীতি এই নয় যে, তোমাদেরকে অদৃশ্যের জ্ঞান দিয়ে দেবেন। তবে আল্লাহ নির্বাচিত করে নেন তার রসূলগণের মধ্য থেকে যাঁকে চান। সুতরাং ঈমান আনো আল্লাহ এবং তাঁর রসূলের উপর এবং যদি তোমরা ঈমান আনো এবং পরহেযগারী অবলম্বন করো, তবে তোমাদের জন্য মহা প্রতিদান রয়েছে”- এর ব্যাখ্যায় রয়েছে,
(একদিন) প্রিয় নবী ﷺ বলেন, আমাকে বলে দেয়া হয়েছে কে আমার উপর ঈমান আনবে আর কে আমাকে অস্বীকার করবে। যখন এ খবর মুনাফিকদের কাছে পৌঁছালো, তখন তারা হেসে বলতে লাগলো, হুযুর ﷺ ওসব লোকদের জন্মের আগেই তাদের মুমিন ও কাফির হওয়া সম্পর্কে অবগত হয়ে গেছেন, অথচ আমরা তাঁর সাথেই আছি কিন্তু আমাদেরকে চিনতে পারেন নি।’ এ খবর যখন হুযুর ﷺ এঁর নিকট পৌঁছলো, তখন তিনি মিম্বরের উপর দাঁড়ালেন এবং আল্লাহ’র প্রশংসা করে ইরশাদ ফরমান এসব লোকদের কি যে হলো, আমার জ্ঞান নিয়ে বিরূপ সমালোচনা করছে। এখন থেকে কিয়ামত পর্যন্ত যে কোন বিষয় সম্পর্কে তোমরা আমাকে জিজ্ঞাস করো, আমি অবশ্যই বলে দিব।’’ (ইমাম খাযেন: লুকাবুত তা’ভীল: ১/৩২৪)
সিহাহ সিত্তার কিতাবসমূহে বর্ণিত হয়েছে,
প্রিয় নবী ﷺ মিম্বরে আরোহণ করে ঘোষণা করলেন, তোমরা আমাকে যা-ই প্রশ্ন করবে, আমি তারই উত্তর প্রদান করব। অতঃপর এমন এক ব্যক্তি, যাকে পারস্পরিক বাকবিতণ্ডার সময় অন্য এক ব্যক্তির (যে প্রকৃতপক্ষে তার পিতা নয়) সন্তান বলে সম্বোধন করা হতো, (তিনি) উঠে তার পিতার নাম জিজ্ঞাসা করলেন। তিনি ﷺ উত্তর দিলেন, তোমার পিতা হুযাফা। (সহীহ বুখারী ৭০৮৯)
রসূলুল্লাহ ﷺ ফজর হতে মাগরিব পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে নামাজসমূহ আদায়ের পরপর মিম্বরে আরোহণ করে খুতবা (বর্ণনা) দিতে থাকেন। এতে তিনি পূর্বে যা ঘটেছে এবং ভবিষ্যতে যা ঘটবে সব জানিয়ে দেন। (সহীহ মুসলিম ৭১৫৯)
তিনি ﷺ সৃষ্টির সূচনা সম্পর্কে জ্ঞাত করলেন। অবশেষে তিনি জান্নাতবাসী ও জাহান্নামবাসীর নিজ নিজ নির্দিষ্ট স্থানে প্রবেশ করার কথাও উল্লেখ করেন। যাদের স্মরণশক্তি ভাল ছিল, তারা এগুলো স্মরণ রাখতে পেরেছেন। (সহীহ বুখারী ৩১৯২)
তিনি ﷺ কিয়ামত পর্যন্ত যা কিছু ঘটবে বলে জানান সেসবের কিছু ঘটলেই সাহাবায়ে কেরাম তা স্মরণ করতে পারতেন যেভাবে কেউ তার পরিচিত লোকের অনুপস্থিতিতে তার চেহারা স্মরণ রাখে। অতঃপর তাকে দেখা মাত্র চিনে ফেলে। (সূনান আবূ দাউদ ৪২৪০)
হুযায়ফা (রঃ) আল্লাহ্’র কসম করে বলেন,
রসূলুল্লাহ ﷺ কিয়ামত পর্যন্ত ফিতনা সৃষ্টিকারী কোন ব্যক্তির কথা উল্লেখ করতে বাদ দেননি, যাদের সংখ্যা হবে তিনশ’রও বেশী। তিনি তাদের নাম, তাদের পিতার নাম এবং তাদের গোত্রের নামও উল্লেখ করেন।
(সূনান আবূ দাউদ ৪২৪১)
রসূলুল্লাহ ﷺ বলেন, দাজ্জালের সংবাদ সংগ্রাহক দলের প্রতিটি ব্যক্তির নাম, তাদের বাপ-দাদার নাম এবং তাদের ঘোড়ার রং সম্পর্কেও তিনি অবগত আছেন। (সহীহ মুসলিম ৭১৭)
আনাস ইবনু মালিক (রঃ) হতে বর্ণিত। দুপুরের পর নবী ﷺ বেরিয়ে আসলেন এবং যোহরের নামাজ পড়লেন। সালাম ফিরানোর পর তিনি মিম্বরে দাঁড়ালেন এবং ক্বিয়ামত সম্পর্কে আলোচনা করলেন। তিনি উল্লেখ করলেন যে, ক্বিয়ামতের আগে অনেক বড় বড় ঘটনা ঘটবে। তারপর তিনি বললেনঃ কেউ যদি আমাকে কোন বিষয়ে জিজ্ঞেস করা পছন্দ করে, তাহলে সে তা করতে পারে। আল্লাহর কসম! আমি এখানে অবস্থান করা পর্যন্ত তোমরা আমাকে যে বিষয়েই প্রশ্ন করবে, আমি তা তোমাদেরকে জানাব। আনাস (রঃ) বলেন, এতে লোকেরা খুব বেশি কাঁদল। আর রসূলুল্লাহ ﷺ বেশি বেশি বলতে থাকলেন তোমরা আমার কাছে প্রশ্ন কর। আনাস (রঃ) বলেন, তখন এক লোক দাঁড়িয়ে বলল, ইয়া রসূলাল্লাহ ﷺ! আমার আশ্রয়ের জায়গা কোথায়? তিনি বললেন, জাহান্নাম। তারপর ‘আবদুল্লাহ্ ইবনু হুযাফা (রঃ) দাঁড়িয়ে বললেনঃ ইয়া রসূলাল্লাহ ﷺ! আমার পিতা কে? তিনি বললেনঃ তোমার পিতা হুযাফা। আনাস (রাঃ) বলেন, তারপর তিনি বার বার বলতে লাগলেনঃ তোমরা আমার কাছে প্রশ্ন কর, আমার কাছে প্রশ্ন কর। এতে ‘উমার (রঃ) হাঁটু গেড়ে বসে গেলেন এবং বললেন, আমরা আল্লাহ্কে রব হিসাবে মেনে ইসলামকে দ্বীন হিসাবে গ্রহণ করে এবং মুহাম্মাদ ﷺ কে রসূল হিসাবে বিশ্বাস করে সন্তুষ্ট আছি। আনাস (রঃ) বলেন, ‘উমার (রঃ) যখন এ কথা বললেন, তখন রসূলুল্লাহ্ ﷺ চুপ করলেন।..(সহীহ বুখারী ৭২৯৪)
আবূ মূসা (র.) বলেন, একদা নবী ﷺ কে কয়েকটি অপছন্দনীয় বিষয় সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হল। প্রশ্নের সংখ্যা অধিক হয়ে যাওয়ায় তখন তিনি রেগে গিয়ে লোকদেরকে বললেনঃ ‘তোমরা আমার নিকট যা ইচ্ছা প্রশ্ন কর (তোমরা আমাকে যা-ই প্রশ্ন করবে, আমি তারই উত্তর প্রদান করব)। জনৈক ব্যক্তি বলল, ‘আমার পিতা কে?’ তিনি বললেনঃ ‘তোমার পিতা হুযাফাহ।’ আর এক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে বলল, ইয়া রসূলাল্লাহ ﷺ! আমার পিতা কে?’ তিনি বললেনঃ ‘তোমার পিতা হল শায়বার দাস সালিম।’ তখন ‘উমার (রঃ) রসূলুল্লাহ ﷺ এঁর চেহারার অবস্থা দেখে বললেনঃ ইয়া রসূলাল্লাহ ﷺ! আমরা মহিমান্বিত আল্লাহ’র নিকট তাওবাহ করছি।’
(সহীহ বুখারী ৯২, সহীহ বুখারী ৭০৮৯)
একমাত্র মুনাফিকরাই প্রিয় নবী ﷺ এঁর জ্ঞান নিয়ে সমালোচনা করতে পারে। অথচ রসূলুল্লাহ ﷺ বলেনঃ আল্লাহ তা’আলা গোটা পৃথিবীকে ভাজ করে আমার সামনে রেখে দিলেন। অতঃপর আমি এর পূর্বপ্রান্ত থেকে পশ্চিমপ্রান্ত পর্যন্ত দেখে নিয়েছি। পৃথিবীর যে পরিমাণ অংশ গুটিয়ে আমার সম্মুখে রাখা হয়েছিল সে পর্যন্ত আমার উম্মতের রাজত্ব পৌছবে। আমাকে লাল ও সাদা দুই প্রকারের ধনাগার দেয়া হয়েছে। (সহীহ মুসলিম ৭১৫০)
রসূলুল্লাহ ﷺ বলেনঃ আমার সামনে সকল উম্মতকে পেশ করা হয়েছিল। (সহীহ বুখারী ৫৭০৫)
রসূলুল্লাহ ﷺ বলেনঃ আমার উম্মতের সমস্ত আমল আমার সামনে পেশ করা হয়েছিল।
(সহীহ মুসলিম ১১২০)
আম্মাজান আয়িশা (রঃ) বলেন, রসূলুল্লাহ ﷺ বলেনঃ এমন কোন জিনিস নেই যা আমাকে দেখানো হয়নি আমি এ জায়গা হতে সব কিছুই দেখেছি। (সহীহ বুখারী ৯২২)
আবদুল্লাহ ইবনু ‘আমর (রাঃ) বলেন, একদা রসূলুল্লাহ ﷺ দুই হাতে দু’টি কিতাব নিয়ে বের হলেন এবং (সাহাবীগণের উদ্দেশে) বললেন, তোমরা কি জান এ কিতাব দু’টি কি? আমরা বললাম, না, ইয়া রসূলাল্লাহ ﷺ! কিন্তু আপনি যদি আমাদের অবহিত করতেন। তিনি তাঁর ডান হাতের কিতাবের প্রতি ইশারা করে বললেন, আমার ডান হাতে কিতাবটি হচ্ছে আল্লাহ রব্বুল ‘আলামীনের পক্ষ থেকে একটি কিতাব। এতে সকল জান্নাতীদের নাম, তাদের বাপ-দাদার নাম ও তাদের গোত্রের নাম লিখা রয়েছে এবং এদের সর্বশেষ ব্যক্তির নামের পর সর্বমোট যোগ করা হয়েছে। অতঃপর এতে আর কখনো (কোন নাম) বৃদ্ধিও হবে না কমতিও করা হবে না। তারপর তিনি তাঁর বাম হাতের কিতাবের দিকে ইঙ্গিত করে বললেন, এটাও আল্লাহ রব্বুল ‘আলামীনের পক্ষ হতে একটি কিতাব। এ কিতাবে জাহান্নামীদের নাম আছে, তাদের বাপ-দাদার নাম ও তাদের গোত্রের নামও রয়েছে। অতঃপর তাদের সর্বশেষ ব্যক্তির নাম লিখে মোট যোগ করা হয়েছে। তাই এতে (আর কোন নাম কখনো) বৃদ্ধিও করা যাবে না কমানোও যাবে না।
তাঁর এ বর্ণনা শুনার পর সাহাবীগণ জিজ্ঞেস করলেন, ইয়া রসূলাল্লাহ ﷺ! এসব ব্যাপার যদি আগে থেকে চূড়ান্ত হয়েই থাকে (অর্থাৎ- জান্নাত ও জাহান্নামের বিষয়টি তাক্বদীরের উপর নির্ভর করে লিপিবদ্ধ হয়েছে) তবে ‘আমল করার প্রয়োজন কী? উত্তরে তিনি বললেন, হক পথে থেকে দৃঢ়ভাবে ‘আমল করতে থাক এবং আল্লাহর নৈকট্যার্জনের চেষ্টা কর। কেননা জান্নাতবাসীদের শেষ ‘আমল (জান্নাত প্রাপ্তির ন্যায়) জান্নাতীদেরই কাজ হবে। (পূর্বে) দুনিয়ার জীবনে সে যা-ই করুক। আর জাহান্নামবাসীদের পরিসমাপ্তি জাহান্নামে যাবার ন্যায় ‘আমলের দ্বারা শেষ হবে। তার (জীবনের) ‘আমল যা-ই হোক। অতঃপর রসূলুল্লাহ ﷺ তাঁর দুই হাতে ইশারা করে কিতাব দু’টিকে পেছনের দিকে ফেলে দিয়ে বললেন, তোমাদের রব বান্দাদের ব্যাপারে পূর্ব থেকেই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে রেখেছেন। একদল জান্নাতে যাবে আর অপর একদল জাহান্নামে যাবে (সূরা আশ্ শূরা ৪২: ৭)। (মিশকাতুল মাসাবীহ ৯৬, সূনান আত তিরমিযী ২০৬৭)
সূরা আনফালের ২৯ নং আয়াতে বর্ণিত ফুরকান শব্দের ব্যাখ্যায় মুহাম্মদ ইবন ইসহাক (রহঃ) বলেন, (তাকওয়া অবলম্বন করলে) আল্লাহ্ পাক সত্য অসত্য, হক ও বাতিলের মধ্যে পার্থক্য করার ক্ষমতা দান করিবেন। ইবন ইসহাকের এই ব্যাখ্যা অন্যান্য ব্যাখ্যার তুলনায় সাধারণ ও ব্যাপক এবং সমস্ত কথাই এই ব্যাখ্যার আওতাভুক্ত হওয়া অনিবার্য। কেননা যে লােক আল্লাহ’র নির্দেশ পালন করে এবং তাঁর নিষিদ্ধ কার্যাবলী পরিহার করে আল্লাহ্ তাআ’লাকে ভয় করে, তার মধ্যে বাতিল হতে সত্যকে বাছাই করার এবং সত্যকে সম্যক উপলব্ধি করার ক্ষমতা সৃষ্টি হয় । সুতরাং এটাই আল্লাহ’র সাহায্যে পরকালে পরিত্রাণ এবং জাগতিক বিপর্যয় হইতে নিষ্কৃতি লাভের কার্যকারণে পরিণত হয়। উহা তাহার পাপ-মােচন এবং ক্ষমালাভ ও মানুষের নিকট গােপন থাকার কারণে মানুষ আল্লাহ’র নিকট মহান পুরস্কারের অধিকারী হয়। যেমন আল্লাহ্ পাক বলেন, “হে ঈমানদারগণ ! তােমরা আল্লা’হকে ভয় কর এবং তাঁর রসূলের প্রতি ঈমান আন। তবে আল্লাহ তােমাদেরকে তার দ্বিগুণ রহমত দান করিবেন। আর তােমাদেরকে এমন জ্যোতি দান করিবেন, যার সাহায্যে তােমরা পথ চলিবে। আর তিনি তােমাদের পাপকেও ক্ষমা করিবেন। আল্লাহ ক্ষমাশীল ও দয়ালু” (৫৭ : ২৮ )।
(তাফসীর ইবনে কাসীর, সূরা আনফালঃ ২৯)
কাজী সানাউল্লাহ পানিপথী রহঃ উল্লেখ করেন, ন্যায় অন্যায়ের পার্থক্য করা বুঝাতে এখানে ব্যবহৃত হয়েছে ‘ফুরকানুন’ শব্দটি। বিশ্বাস ও অবিশ্বাসকে পার্থক্য করার এই জ্ঞান হচ্ছে সর্বশ্রেষ্ঠ জ্ঞান। আল্লাহ তাআ’লা এই জ্ঞানদানের মাধ্যমে বিশ্বাসীগণকে করেন সম্মানিত। আর এই জ্ঞান থেকে বঞ্চিত করে লাঞ্ছিত করেন অবিশ্বাসীদেরকে। এই জ্ঞান লাভের পূর্বশর্ত হচ্ছে তাকওয়া। আর তাকওয়া লাভ করেন কেবল বিশুদ্ধ চিত্ত এবং বিশুদ্ধ প্রবৃত্তির অধিকারীরা। তাদেরকে বলা হয় মুত্তাকী। মুজাহিদ রহঃ বলেন, আল্লাহ পাক তাঁদেরকে সকল প্রকার স্থলন ও সন্দেহের দোদুল্যমানতা থেকে চির নিরাপদ করে দিয়েছেন। মুকাতিল বিন হাইয়্যান রহঃ বলেন, আল্লাহ্ পাক মুত্তাকীদেরকে সংশয়াচ্ছন্নতার অন্ধকার থেকে বিশ্বাসের আলাের দিকে পথ প্রদর্শন করেন। ইকরমা রহঃ বলেন, আল্লাহ্ পাক মুত্তাকীদের- কে ভ্রষ্টতার কারাগার থেকে চিরদিনের জন্য মুক্তিদান করেন। জুহাক রহঃ বলেন, মুত্তাকীদেরকে দেয়া হয় চির অটল বিশ্বাস। ইবনে ইসহাক রহঃ বলেন, মুত্তাকীদের নিকট সত্য ও মিথ্যার পার্থক্য রেখাটি সুস্পষ্ট।
প্রথমে বলা হয়েছে- ‘হে বিশ্বাসীগণ ! যদি তােমরা আল্লাহ’কে ভয় করাে তবে আল্লাহ তােমাদেরকে ন্যায় অন্যায় পার্থক্য করবার শক্তি (ফুরকান) দেবেন’- এ কথার অর্থঃ হে বিশ্বাসীর দল! যদি তােমরা আল্লাহ’কে ভয় করাে তবে আল্লাহ তাআ’লা তােমাদেরকে অন্তর্দৃষ্টি (ফিরাসাত) দান করবেন। সেই অন্তদৃষ্টির মাধ্যমে তােমরা ন্যায় অন্যায়ের পার্থক্য করতে পারবে।(তাফসীরে মাজহারী, সূরা আনফালঃ ২৯)
ফিরাসাত- দূরদৃষ্টি বা অন্তর্দৃষ্টি তিন প্রকার।
১.ফিরাসাতে ঈমানিয়াঃ যা ঈমানের কারণে আল্লাহ্ তা’আলা অন্তরে পয়দা করেন,
২.ফিরাসাতে রিয়াযিয়াঃ যা সাধনার মাধ্যমে অর্জিত হয়
৩.ফিরাসাতে খালকিয়াঃ যা স্বভাবজাত।
(আল ফিকহুল আকবর, পৃষ্ঠা ৬৯, ইঃ ফাঃ)