ইসলামে বিয়ের গুরুত্ব ও ফজিলত

পোষ্টটি অন্যকে পড়ার সুযোগ করে দিতে শেয়ার করুন প্লিজ।

লেখক : প্রধান শিক্ষক, পিরামিড বর্ণমালা স্কুল, বিজয়নগর, পতেঙ্গা, চট্টগ্রাম।

আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘আর তোমাদের মধ্যকার অবিবাহিতদের বিবাহ করিয়ে দাও এবং তোমাদের সৎ ক্রীতদাস ও ক্রীতদাসীদেরও। যদি তারা দরিদ্র হয় তবে আল্লাহ তাঁর নিজ অনুগ্রহে ধনী বানিয়ে দিবেন।’ 

(সূরা নূর ৩২)

রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর হাদিসে বিয়ের প্রতি উৎসাহ ও তাকিদের কথা : আবু আইয়ুব রা: থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, চারটি জিনিস নবীদের চিরাচরিত সুন্নত। 

১. লজ্জা-শরম 

২. সুগন্ধি ব্যবহার করা 

৩. মেসওয়াক করা 

৪. বিয়ে করা। (তিরমিজি-১০১৮)

রাসূল (ﷺ)-এর আহ্বান : 

আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা: থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা আমরা রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর সাথে বের হলাম। আমরা ছিলাম যুবক (বিবাহের ব্যয় বহনের) সামর্থ্য আমাদের ছিল না। তিনি বলেন, হে যুবসমাজ তোমাদের বিয়ে করা উচিত। কেননা এটি দৃষ্টিশক্তিকে সংযত রাখে এবং লজ্জাস্থানকে রাখে সুরক্ষিত। আর তোমাদের মধ্যে যার বিবাহ করার সামর্থ্য নেই, সে যেন রোজা রাখে, কেননা রোজা তার যৌনশক্তিকে দমিয়ে রাখবে। (তিরমিজি : ১০১৯)

চিরকুমার হওয়া সম্পর্কে কঠোর হুঁশিয়ারি :

ইবনে মাজাহ ‘হাদিস গ্রন্থে বলা হয়েছে- আয়শা রা: থেকে বর্ণিত- রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, বিয়ে আমার সুন্নাত-নীতি। অতএব যে ব্যক্তি আমার নীতি অনুযায়ী কাজ করবে না সে আমার দলভুক্ত নয়।

কাকে বিয়ে করবেন : এ সম্পর্কে আবু হুরায়রা রা: থেকে বর্ণিত রাসূল (ﷺ) বলেছেন, চারটি কারণ বিবেচনা করে কোনো মহিলাকে বিয়ে করা হয়ঃ 

১. ধন-সম্পদ 

২. বংশমর্যাদা 

৩. সৌন্দর্য 

৪. দ্বীনি চেতনা। 

অতএব, দ্বীনি চেতনাকে অগ্রাধিকার দাও, তোমার হাত কল্যাণে পূর্ণ হয়ে যাবে।

বিয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ মোহর : 

মোহরের পরিমাণঃ

আবুল আজফা রা: থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, উমর ইবনুল খাত্তাব রা: বলেছেন, সাবধান, তোমরা নারীদের মোহর উচ্চ হারে বৃদ্ধি করবে না। কেননা তা যদি দুনিয়াতে সম্মানের বস্তু অথবা আল্লাহর কাছে তাকওয়ার বস্তু হতো তবে তোমাদের চেয়ে আল্লাহর নবী এ ব্যাপারে বেশি উদ্যোগী হতেন। কিন্তু রাসূল সা: বার উকিয়ার বেশি মোহরে তার কোনো স্ত্রীকে বিয়ে করেছেন অথবা কোনো কন্যাকে বিয়ে দিয়েছেন বলে আমার জানা নেই। (তিরমিজি : ১০৫১)

যৌতুক :

স্বামীর প্রাপ্য হিসেবে কোনো কিছু রয়েছে বলে কুরআন ও হাদিসে উল্লেখ নেই। অথচ আমাদের সমাজে যৌতুককে একটি বাধ্যতামূলক অংশ ধরা হয়ে থাকে, যা কুরআন ও হাদিসের সম্পূর্ণ বিপরীত। এমনকি এই যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে নানাভাবে নির্যাতন করা হয়, স্ত্রীকে তার বাপের বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়া হয়, তালাক দেয়া হয়।

তার আগে একটি কথা না বললেই হয় না। তা হলো অপরাধ যে করে আর অপরাধকে যে প্রশ্রয় দেয় দু’জনই সমান অপরাধী। যৌতুকের জন্য অনেক মা-বাবা তার আদরের মেয়েকে বিয়ে দিতে পারেন না। আর এ কারণে সমাজে অনেক ব্যভিচার বৃদ্ধি পায়। কাল কিয়ামতের দিন এই ব্যভিচারের দায়ভার কে নেবে? একটু চিন্তা করা উচিত। সমাজ থেকে এই যৌতুক প্রথাকে বিলুপ্ত করা না হলে কালক্রমে এই সমাজ ধ্বংসের দিকে পতিত হবে।

পোষ্টটি ভালো লেগে থাকলে আপনার মূল্যবান মতামত জানান প্লিজ!

Leave a Comment