মানুষের কাছে সময় কম, কাজ বেড়ে গেছে। কম সময়ের মধ্যে কিভাবে বেশি কাজ সম্পন্ন করা যায়? এটা দেখতে হলে পড়ুন সীরাতে রাসূলে আরাবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম।
মাত্র ২৩ বছরের মধ্যে হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি বলেছেন ২৭ টি যুদ্ধ লড়েছেন। মানুষ ২/১ টা মামলা-মোকদ্দমার মুখোমুখি হলে তার জীবনের অর্ধেক এসবেই চলে যায়। সেখানে হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ২৭ টি যুদ্ধ লড়েছেন মাত্র ২৩ বছরে। এরই মধ্যে দূর-দুরান্ত থেকে আগত আগন্তুকদের সাথে মোলাকাতও ঠিক ছিল। সাহাবিদের তরবিয়তও করেছেন। সিদ্দিকে আকবর, ওমর ফারুক রাদ্বিআল্লাহু আনহু’র মতো খুলাফাও তৈরী করেছেন।
গরিব-দুঃখী, অসহায়দেরও সময় দিয়েছেন। অসুস্থদের দেখতেও যেতেন। পরিবারের কাছেও ছিলেন সবচেয়ে উত্তম। লিডার হিসেবেও ছিলেন তুলনাহীন। এত ব্যস্ততার মধ্যেও হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নামাজ কাযা হয় না। কাযা তো দূরের কথা– ইবাদতের রঙ কেমন ছিল? আল্লাহ তায়ালা স্বয়ং বলেন, ‘হে চাদরওয়ালা মাহবুব! সারারাত জাগবেন না, কিছু সময় আরামও করে নিন।’ আল্লাহু আকবার।
আক্বা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন দুনিয়া থেকে পর্দা করলেন– কোনো একজন মানুষও তখন হুজুর এর ওপর অসন্তুষ্ট ছিল না। সুবহানাল্লাহ
তো মাত্র ২৩ বছরে এতো কাজ কিভাবে সম্ভব হলো? নিঃসন্দেহে হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মু’জিজা। তাছাড়াও সময়ের মধ্যে বরকত চলে আসে যখন বান্দা অপ্রয়োজনীয় কাজ, যেগুলো না দুনিয়ায় না আখিরাতে উপকারী সেগুলো পরিত্যাগ করে।
আমরা অনেক সময় এক সপ্তাহ পর নিজের ওয়ালেট খোলে অপ্রোয়জনীয় ভিজিটিং কার্ড, কাগজ-পত্র ফেলে দেই। যেগুলোর কাজ ইতিমধ্যেই শেষ হয়ে গেছে। তখন সেখানে আরো কিছু প্রয়োজনীয় জিনিস রাখার জায়গা তৈরী হয়। ঠিক তদ্রূপ নিজের পুরো দিনের একটা জরিপ করুন। সারাদিনে এমন কতটি কাজ করেছেন, যেগুলো অপ্রয়োজনীয় ছিল। এগুলোকে নোট করে রাখুন। এবং ধীরে ধীরে নিজের মূল্যবান সময় থেকে কাজগুলোকে বাদ দিতে থাকুন। আর পাঁচ ওয়াক্ত নামাজকে নিজের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ বানিয়ে নিন।
ইনশাআল্লাহ আপনার সময়ে বরকত হবে। প্রয়োজনীয় কাজগুলো করার পরও নিজের জন্য থেকে যাবে অফুরন্ত সময়। প্রিয় আক্বা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন– ‘কোনো ব্যক্তির ইসলামের সৌন্দর্য এটা যে, সে সকল বে-মাকসাদ কাজগুলোকে ছেড়ে দিবে।’