জামাআতে নামায আদায় করার হুকুম ও ফজিলত কী?
(১) জামাআতে নামায আদায় করার হুকুম কি?
উত্তর: হানাফী মাজহাব মতে ওজর বিহীন স্বাধীন পুরুষের জন্য জামাআতে নামায আদায় করা সুন্নাতে মোয়াক্কাদাহ। যেমন ফিকহ এর কিতাব
(১) নুরুল ইজাহ পৃষ্ঠা নং ৭৫-এ আছে- وَالصَّلٰوةُ بِالْجَمَاعَةِ سُنَّةٌ لِلرِّجَالِ الْاَ حْرَارِ بِلاَ عُذْرٍ
(২) কুদুরী কিতাব ৩৭নং পৃষ্ঠায় আছে- وَالْجَمَا عَةُ سُنَّةٌ مُؤَكَّدَهٌ
(৩) হেদায়া কিতাব ১২১ নং পৃষ্ঠায় আছে- اَلْجَمَاعَةُ سُنَّةٌ مُؤَ كَّدَةٌ لِقَوْلِهٰ عَلَيْهِ السَّلاَمُ اَلْجَمَاعَةُمِنْ سُنَنِ الْهُدٰي لاَيَتَخَلَّفُ عَنْهَا اِلاَّ مُنَافِقٌ
অর্থাৎ জামাআতের সাথে নামায আদায় করা সুন্নাতে মোয়াক্কাদা। দলীল রাসূলুল্লাহ্ ﷺ এর বাণী জামাআত সুন্নাতে হুদার অন্তর্ভুক্ত। মোনাফেকই এর থেকে বিরত থাকে।
(২) জামাআতে নামায আদায়ের ফযিলত কি?
উত্তর: পুরুষের জন্য জামা’আতের সাথে ফরজ নামায আদায় করা অনেক ফযিলত ও ছাওয়াব রয়েছে। একটি হাদীস শরীফে জামা’আতের সাথে এক রাকাতে ২৫ রাকাত এবং অপর বর্ণনায় ২৭ রাকাত এর ছাওয়াবসহ এর অনেক ফযিলত বর্ণিত রয়েছে। যেমন-
عَنْ اَبِيْ هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ صَلٰوةُ الرَّجُلِ فِي الْجَمَاعَةِ تُضَعَّفُ عَلٰي صَلاَ تِهٖ فِيْ بَيْتِهٖ وَ فِيْ سُوْقِهٖ خَمْسَةً وَّ عِشْرِيْنَ ضِعْفًا – وَذَ الِكَ اَنَّهُ اِذَا تَوَضَّأَ فَاَ حْسَنَ الْوُضُوْءَ ثُمَّ خَرَجَ اِلَي الْمَسْجِدِ لَا يُخْرِجُهُ اِلاَّ الصَّلٰوةُ لَمْ يَخُطَّث خَطْوَةً اِلاَّ رُ فِعَتْ لَهُ بِهَا دَرَجَهٌ وَ حُطَّا عَنْهُ بِهَا خَطِيْئَةٌ – فَاِذَا صَلّٰي لَمْ تَزِلِ الْمَلاَ ئِكَةُ تُصَلِّيْ عَلَيْهِ مَادَامَ فِيْ مُصَلاَّهُ – اَللّٰهُمَّ صَلِّ عَلَيْهِ اَللّٰهُمَّ ارْحَمْ وَ لَايَزَالُ اَحَدُكُمْ فِيْ صَلَاةٍ مَاا نْتَظَرَ الصَّلٰوةَ
[আবু হোরায়রা (রা) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ এরশাদ করেছেন- জামা’আতের সাথে পুরুষের নামায একাকি তার বাড়িতে ও বাজারে পড়ার চেয়ে পঁচিশ গুণ বৃদ্ধি করা হয়। এটা এজন্য যে, যখন সে অজু করে তখন উত্তম রূপে অজু করে। অতপর যখন সে মসজিদের দিকে বের হয় তখন একমাত্র নামাজের জন্যই বের হয়। তার প্রতিটি পদেই তার একেকটি মর্যাদা বৃদ্ধি করা হয় এবং এর দ্বারা তার একেকটি অপরাধ ক্ষমা করে দেয়া হয়।
অত:পর যখন সে নামায আদায় করে ফেরেস্তাগণ তার জন্য দোয়া করতে থাকেন যতক্ষণ পর্যন্ত সে নামাজের স্থানে অবস্থান করেন। ফেরেস্তাগণ তার জন্য এ বলে দোয়া করেন- হে আল্লাহ! তাকে ক্ষমা করুন। হে আল্লাহ! তার উপর রহমত বর্ষণ করুন। আর তোমাদের কেহ যতক্ষণ পর্যন্ত নামাযের অপেক্ষায় থাকে ততক্ষণ পর্যন্ত নামাযে রত হিসেবে গণ্য হবে। (বুখারী ১ম খণ্ড পৃষ্ঠা নং ৮৯, হাদীস নং ৬৩৮, মুসলিম হাদীস নং ৬৪৯, আবু দাউদ হাদীস নং ৫৫৯, তিরমিযী হাদীস নং- ৬৩, ইবনে মাজাহ হাদীস নং ৭৭৪)]
عَنِ ابْنِ عُمَرَ اَنَّ رَسُوْلَ اللّٰهِ ﷺ قَالَ صَلَا ةُ الْجَمَا عَةِ تَفْضُلُ صَلاَةَ الْفَذِّ بِسَبْعٍ وَّ عِشْرِيْنَ دَرَجَةً
[আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা:) থেকে বর্ণিত। রাসূলুুল্লাহ ﷺ এরশাদ করেছেন জামা’আতের সাথে নামায একাকী নামাজের চেয়ে সাতাশগুণ অধিক মর্যাদা রাখে। (বুখারী ১ম খণ্ড পৃষ্ঠা নং ৯৮, হাদীস নং ৪৩৬, মুসলিম হাদীস নং ৬৫০)]
عَنْ اَبِي الدَّرْدَاءِ قَالَ سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللّٰهِ ﷺ يَقُوْلُ مَا مِنْ ثَلاَ ثَةٍ فِيْ قَرْيَةٍ وَ لاَ بَدْوٍ لاَّ تُقَامُ فِيْهِمُ الصَّلٰوةُ اِلاَّ وَ قَدِا سْتَحْوَذَ عَلَيْهِمُ الشَّيْطَانُ فَعَلَيْكَ بِالْجَمَا عَةِ فَاِ نَّمَا يَأْ كُلُ الذِّ ئْبُ الْقَا صِيَةَ –
[আবু দারদা (রা:) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ ﷺ কে এরশাদ করতে শুনেছি- এমন তিন ব্যক্তি চাই তারা গ্রামে বা মানবহীন অঞ্চলে থাকুক যারা জামা’আত সহকারে নামায আদায় করে না, নিশ্চয়ই শয়তান তাদের উপর আধিপত্য বিস্তার করবে। তাই তোমার উচিৎ জামাআত কায়েম করা। কেননা, দল হতে বিচ্ছিন্ন ছাগলকেই বাঘ ভক্ষণ করে। (আবু দাউদ পৃষ্ঠা নং ৮১, হাদীস নং ৫৪৭, আহমাদ, নাসায়ী।)]
ইসলামী গবেষণা বিভাগ
বাগদাদী ফাউন্ডেশন, কুমিল্লা- ৩৫০০, বাংলাদেশ।






Users Today : 337
Users Yesterday : 759
This Month : 5371
This Year : 177242
Total Users : 293105
Views Today : 5414
Total views : 3460525