হুজুর পাক ﷺ এর নামের পরে দরুদ শরীফ সংক্ষেপে লিখা মাকরুহ

পোষ্টটি অন্যকে পড়ার সুযোগ করে দিতে শেয়ার করুন প্লিজ।

সাইয়্যিদুল মুরসালীন , ইমামুল মুরসালীন ,হাবীবুল্লাহ হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মুবারক লেখা বা মুখে উচ্চারণ করার সময় সর্বোচ্চ আদব প্রকাশ করা প্রতিটা মুমিন , মুসলমানদের জন্য ফরয – ওয়াজিব !! এর বিন্দু মাত্র আদবের খিলাফ হলে তা ঈমান হারা হওয়ার কারন হবে !!
মুলত হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মুবারক লিখার আদব হচ্ছে যে ক্ষেত্রে নাম মুবারক না লিখলেও চলে সেক্ষেত্রে নাম মুবারক না লিখে লক্বব মুবারক লেখাই আদব !!!
উদাহরন স্বরুপ বলা যায় — সাইয়্যিদুল মুরসালীন , ইমামুল মুরসালীন , নূরে মুজাসসাম , হাবীবুল্লাহ , হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরকম লক্বব মুবারক দিয়ে সম্বোধন করা ! তবে দরুদ শরীফ অর্থাৎ , “ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ” আরবীতে হোক , ফারসিতে হোক , উর্দুতে হোক , বাংলায় হোক , ইংরেজিতে হোক অথবা যেকোন ভাষায় হোকনা কেন দরুদ শরীফ পূর্ণভাবেই লিখতে হবে ! কারন ইসলামী শরীয়তের ফতোয়া মোতাবেক ” দরুদ শরীফ ” সংক্ষেপে লেখা যেমন – (ص) , ( দ:) ,( সা:) , (sh). , (D) ইত্যাদি অক্ষরে লেখা আম ফতোয়া মুতাবিক মাকরুহ এবং খাছ ফতোয়া মুতাবিক কুফরী !!
এ প্রসঙ্গে ফতোয়ার কিতাব সমুহে ফতোয়া দেয়া হয়েছে — ” ويكره ان يرمز للصوة والسلام علي النبي عليه الصلاة و السلام في الخط بان يقتصر من ذالك علي الحرفين هكذا (عم) او نحو ذالك كمن يكتب ( صلعم) يشير به الي ( صلي الله عليه و سلم ) و يكره حذف واحد من الصلاة و التسليم و الاقتصار علي احدهم . و في الحديث ( من صلي علي في كتاب لم تزل صلاته جاريت لم ما دام اسمي في ذالك الكتاب ) كم في انوار المشارق لمفتي حلب .
“অর্থ : সাইয়্যিদুনা নূরে মুজাসসাম ,হাবিবুল্লাহ , হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উপর ছলাত ও সালাম লিখতে সংক্ষেপ করা মাকরুহ তাহরীমি | যেমন – সংক্ষপ দুটি অক্ষর ( عم) লেখার মাধ্যমে এবং অনুরুপ صلي الله عليه و سلم বাক্যকে ইঙ্গিত বুঝতে ( صلعم) সংক্ষেপে লেখা | ছালাত এবং সালাম শব্দ দুখানার যেকোন একখানা হরফ বা বাদ দেয়া এবং যেকোন একখানা শব্দ সংক্ষেপ করা মাকরুহ তাহরীমি |

হাদীস শরীফে বর্ণনা করা হয়েছে , ( যে ব্যক্তি আমার উপর ছলাত বা দরুদ শরীফ লিখবে সর্বদায় আমার নাম মুবারক উনার সাথে ঐ লিখায় পূর্ণ দরুদ শরীফ লিখবে ) অনুরুপ বর্ণনা ‘ আনওয়ারুল মাশারিক লিমুফতী হলব ‘ কিতাবে আছে |””

এ প্রসঙ্গে ফতোয়ার বিখ্যাত কিতাব ” তাতারখানিয়া ” কিতাবে এ ব্যাপারে আরো কঠিন ফয়সালা বর্ণিত রয়েছে এবং সংক্ষিপ্ত দরুদ শরীফ লিখাকে শানে নবুওয়াত উনাকে খাটো করার অন্তর্ভুক্ত বলা হয়েছে |
এ প্রসঙ্গে ” তাহতাবী আলা দুররিল মুখতার ” এর ১ম জিলদ , ৬ ষষ্ঠ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে – ( ص) অক্ষর দ্বারা দরুদ শরীফ লিখা মাকরুহ , দরুদ শরীফ পূর্ণ ভাবে লিখবে !”

ফতোয়ার কিতাব ” তাতারখানিয়াতে ” উল্লেখ আছে ,” যে ব্যক্তি হামযা এবং মীম দ্বারা দরুদ শরীফ লিখলো সে কুফরী করলো | কেননা এটা ইহানত বা অবজ্ঞা | আর নবী আলাইহিমুস সালাম উনাদের ইহানত বা অবজ্ঞা করা নিঃসন্দেহে কুফরী !!””
অথচ বর্তমানে প্রকাশিত প্রায় সকল ধরণের
কিতাবাদি, বই-পুস্তক, পত্র- পত্রিকা ইত্যাদিতে দেখা যায়, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন্ নাবিইয়ীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মুবারক
শেষে সংক্ষেপে দুরূদ শরীফ অর্থাৎ (সাঃ)
বা (দঃ) লিখে থাকে। এ সংক্ষেপে লিখার
প্রধান কারণ হিসাবে যা প্রকাশ পায়,
তা হলো- সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল
মুরসালীন, খাতামুন্ নাবিইয়ীন, হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম
মুবারক বার বার লিখতে গেলে বেশি কাগজ
লাগা, সময় বেশি লাগা ইত্যাদি।
নাঊযুবিল্লাহ!
উল্লেখ্য, যাঁর প্রতি ফেরেশ্তা আলাইহিমুস
সালাম, স্বয়ং আল্লাহ পাক দুরূদ শরীফ প্রেরণ করেন এবং মানুষকে দুরূদ শরীফ পাঠ করার জন্য আল্লাহ পাক আদেশ করেছেন এবং অসংখ্য হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে দুরূদ শরীফ পাঠের ফযীলত
সম্পর্কে বর্ণনা করা হয়েছে।
বিপরীতে দুরূদ শরীফ পাঠ করতে যারা গাফলতী করে, তাদের সম্পর্কে হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে অনেক দুঃসংবাদ রয়েছে এবং তাদের শেষ
ফায়সালা হলো জাহান্নাম। এখন চিন্তা ফিকির করা দরকার যারা দুরূদ শরীফ লিখার সময় সামান্য কাগজ ও সময় বাচানোর জন্য সংক্ষেপে (সাঃ) বা (দঃ) ইত্যাদি দিয়ে লিখে, তাদের কি অবস্থা হতে পারে?
সুতরাং যখনই, যতবারই আল্লাহ পাক উনার হাবীব,
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন্
নাবিইয়ীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মুবারক লিখতে হবে ততবারই পূর্ণ দুরূদ শরীফসহ এবং ব্রাকেট ‘()’ বিহীন লিখতে হবে।

পোষ্টটি ভালো লেগে থাকলে আপনার মূল্যবান মতামত জানান প্লিজ!

Leave a Comment