১৬- بَابُ مَا جَاءَ فِي التَّمَتُّعِ وَالْقِرَانِ
٢٥٣- أَبُوْ حَنِيْفَةَ: عَنْ حَمَّادٍ، عَنْ إِبْرَاهِيْمَ، عَنِ الضَّبِّيِّ بْنِ مَعْبَدٍ، قَالَ: أَقْبَلْتُ مِنَ الْـجَزَيرَةِ حَاجًّا، فَمَرَرْتُ بِسَلْمَانَ ابْنِ رَبِيْعَةَ، وَزَيْدِ بْنِ صُوْحَانَ، وَهُمَا شَيْخَانِ بِالْعُذَيْبَةِ، فَسَمِعَانِيْ أَقُوْلُ: لَبَّيْكَ بِعُمْرَةٍ وَحَجَّةٍ، فَقَالَ أَحَدُهُمَا: هَذَا الشَّخْصُ أَضَلُّ مِنْ بَعِيْرِهِ، وَقَالَ الْآخَرُ: هَذَا أَضَلُّ مِنْ كَذَا وَكَذَا، قَالَ: فَمَضَيْتُ حَتَّىٰ إِذَا قَضَيْتُ نُسُكِيْ مَرَرْتُ بِأَمِيْرِ الْـمُؤْمِنِيْنَ عُمَرَ، فَأَخْبَرْتُهُ: كُنْتُ رَجُلًا بَعِيْدَ الشُّقَّةِ، قَاصِيَ الدَّارِ أَذِنَ اللهُ لِيْ فِيْ هَذا الْوَجْهِ، فَأَحْبَبْتُ أَنْ أَجْمَعَ عُمْرَةً إِلَىٰ حَجَّةً، فَأَهْلَلْتُ بِهِمَا جَمِيْعًا، وَلَـمْ أَنْسَ، فَمَرَرْتُ بِسَلْمَانَ بْنِ رَبِيْعَةَ، وَزَيْدِ بْنِ صُوْحَانَ، فَسَمِعَانِيْ أَقُوْلُ: لَبَّيْكَ بِعُمْرَةٍ وَحَجَّةٍ مَعًا، فَقَالَ أَحَدُهُمَا: هَذَا أَضَلُّ مِنْ بَعِيْرِهِ، وَقَالَ الْآخَرُ: هَذَا أَضَلُّ كَذَا وَكَذَا، قَالَ: فَصَنَعْتُ مَاذَا؟ قَالَ: مَضَيْتُ، فَطُفْتُ طَوَافًا لِعُمْرَتِيْ، وَسَعَيْتُ سَعْيًا لِعُمْرَتِيْ، ثُمَّ عُدْتُ، فَفَعَلْتُ مِثْلَ ذَلِكَ، ثُمَّ بَقِيْتُ حَرَامًا أَصْنَعُ كَمَا يَصْنَعُ الْـحَاجُّ، حَتَّىٰ إِذَا قَضَيْتُ آخِرَ نُسُكِيْ، قَالَ: هُدِيْتَ لِسُنَّةِ نَبِيِّكَ مُحَمَّدٍ .
وَفِيْ رِوَايَةٍ: عَنِ الضَّبِّيِّ بْنِ مَعْبَدٍ، قَالَ: كُنْتُ حَدِيْثَ عَهْدٍ بِنَصْرَانِيَّةِ، فَقَدِمْتُ الْكُوْفَةَ أُرِيْدُ الْـحَجَّ فِيْ زَمَانِ عُمَرَ بْنِ الْـخَطَّابِ ، فَأَهَلَّ سَلْمَانُ بْنُ رَبِيْعَةَ وَزَيْدُ بْنُ صُوْحَانَ بِالْـحَجِّ وَحْدَهُ، وَأَهَلَّ الضَّبِّيُّ بِالْـحَجِّ وَالْعُمْرَةِ، فَقَالَ: وَيْحَكَ تَمَتَّعْتَ، وَقَدْ نَهَىٰ رَسُوْلُ اللهِ عَنِ الْـمُتْعَةِ، فَقَالَا لَهُ: وَاللهِ لَأَنْتَ أَضَلُّ مِنْ بَعِيْرِكَ، قَالَ: نَقْدُمُ عَلَىٰ عُمَرَ وَتَقْدُمُوْنَ، فَلَـمَّا قَدِمَ الضَّبِّيُّ مَكَّةَ طَافَ بِالْبَيْتِ، وَسَعَىٰ بَيْنَ الصَّفَا وَالْـمَرْوَةِ لِعُمْرَتِهِ، ثُمَّ رَجَعَ حَرَامًا لَـمْ يَحْلُلْ مِنْ شَيْءٍ، ثُمَّ طَافَ بِالْبَيْتِ وَبَيْنَ الصَّفَا وَالْـمَرْوَةِ لِـحَجِّهِ، ثُمَّ أَقَامَ حَرَامًا لَـمْ يَحْلُلْ مِنْهُ حَتَّى اتَىٰ عَرَفَاتٍ، وَفَرَغَ مِنْ حَجَّتِهِ، فَلَـمَّا كَانَ يَوْمُ النَّحْرِ حَلَّ فَأَهْرَقَ دَمًا لِمُتْعَتِهِ، فَلَـمَّا صَدَرُوْا مِنْ حَجِّهِمْ مَرُّوْا بِعُمَرَ بْنِ الْـخَطَّابِ ، فَقَالَ لَهُ زَيْدُ بْنُ صُوْحَانَ: يَا أَمِيْرَ الْـمُؤْمِنِيْنَ! إِنَّكَ نَهَيْتَ عَنِ الْـمُتْعَةِ، وَإِنَّ الضَّبِّيَّ بْنَ مَعْبَدٍ قَدْ تَمَتَّعَ، قَالَ: صَنَعْتَ مَاذَا يَا ضَبِّيُّ؟ قَالَ: أَهْلَلْتُ يَا أَمِيْرَ الْـمُؤْمِنِيْنَ بِالْـحَجِّ وَالْعُمْرَةِ، فَلَـمَّا قَدِمْتُ مَكَّةَ طُفْتُ بِالْبَيْتِ وَطُفْتُ بَيْنَ الصَّفَا وَالْـمَرْوَةِ لِعُمْرَتِيْ، ثُمَّ رَجَعْتُ حَرَامًا لَـمْ أَحْلُلْ مِنْ شَيْءٍ، ثُمَّ طُفْتُ بِالْبَيْتِ وَبَيْنَ الصَّفَا وَالْـمَرْوَةِ لِـحَجَّتِيْ، ثُمَّ أَقَمْتُ حَرَامًا يَوْمُ النَّحْرِ، فَأَهْرَقْتُ دَمًا لِـمُتْعَتِيْ، ثُمَّ أَحْلَلْتُ، قَالَ: فَضَرَبَ عُمَرُ عَلَىٰ ظَهْرِهِ، وَقَالَ: هُدِيْتَ لِسُنَّةِ نَبِيِّكَ .
وَفِيْ رِوَايَةٍ: عَنِ الضَّبِّيِّ، قَالَ: خَرَجَ هُوَ وَسَلْمَانُ بْنُ رَبِيْعَةَ وَزَيْدُ بْنُ صُوْحَانَ يُرِيْدُوْنَ الْـحَجَّ، قَالَ: فَأَمَّا الضَّبِّيُّ فَقَرَنَ الْـحَجَّ وَالْعُمْرَةَ جَمِيْعًا، وَأَمَّا سَلْمَانُ وَزَيْدٌ فَأَفْرَدُوا الْـحَجَّ، ثُمَّ أَقْبَلَا عَلَى الضَّبِّيِّ يَلُوْمَانِهُ فِيْمَا صَنَعَ، ثُمَّ قَالَا لَهُ: أَنْتَ أَضَلُّ مِنْ بَعِيْرِكَ، تَقْرِنُ بَيْنَ الْـحَجِّ وَالْعُمْرَةِ، وَقَدْ نَهَى امِيْرُ الْـمُؤْمِنِيْنَ عَنِ الْعُمْرَةِ وَالْـحَجِّ، قَالَ: تَقْدُمُوْنَ عَلَىٰ عُمَرَ وَأَقْدُمُ، فَمَضَوْا حَتَّىٰ دَخَلُوْا مَكَّةَ، فَطَافَ بِالْبَيْتِ لِعُمْرَتِهِ، وَسَعَىٰ بَيْنَ الصَّفَا وَالْـمَرْوةِ لِعُمْرَتِهِ، ثُمَّ عَادَ وَطَافَ بِالْبَيْتِ لِـحَجَّتِهِ، ثُمَّ سَعَىٰ بَيْنَ الصَّفَا وَالْـمَرْوَةِ، ثُمَّ أَقَامَ حَرَامًا كَمَا هُوَ لَـمْ يَحِلَّ لَهُ شَيْءٌ حُرِّمَ عَلَيْهِ، حَتَّىٰ إِذَا كَانَ يَوْمُ النَّحْرِ ذَبَحَ مَا اسْتَيْسَرَ مِنَ الْـهَدْيِ شَاةً، فَلَـمَّا قَضَوْا نُسُكَهُمْ مَرُّوْا بِالْـمَدِيْنَةِ، فَدَخَلُوْا عَلَىٰ عُمَرَ ، فَقَالَ لَهُ سَلْمَانُ وَزَيْدٌ: يَا أَمِيْرَ الْـمُؤْمِنِيْنَ! إِنَّ الضَّبِّيَّ قَرَنَ بِالْـحَجِّ وَالْعُمْرَةِ، قَالَ: صَنَعْتَ مَاذَا؟ قَالَ: لَـمَّا قَدِمْتُ مَكَّةَ طُفْتُ طَوَافًا لِعُمْرَتِيْ، ثُمَّ سَعَيْتُ بَيْنَ الصَّفَا وَالْـمَرْوَةِ لِعُمْرَتِيْ، ثُمَّ عُدْتُ فَطُفْتُ بِالْبَيْتِ لِـحَجَّتِيْ، ثُمَّ سَعَيْتُ بَيْنَ الصَّفَا وَالْـمَرْوَةِ لِـحَجَّتِيْ، قَالَ: ثُمَّ صَنَعْتَ مَاذَا؟ قَالَ: أَقَمْتُ حَرَامًا لَـمْ يَحِلَّ لِيْ شَيْءٌ حُرِّمَ عَلَيَّ، حَتَّىٰ إِذَا كَانَ يَوْمُ النَّحْرِ ذَبَحْتُ مَا اسْتَيْسَرَ مِنَ الْـهَدْيِ شَاةً، قَالَ: فَضَرَبَ عُمَرُ عَلَىٰ كَتِفِهِ، ثُمَّ قَالَ: هُدِيْتَ لِسُنَّةِ نَبِيِّكَ .
বাব নং ১১৪. ১৬. হজ্জে তামাত্তু ও কিরান সম্পর্কে
২৫৩. অনুবাদ: ইমাম আবু হানিফা হাম্মাদ থেকে, তিনি ইব্রাহীম থেকে, তিনি দ্বাব্বিই ইবনে মা‘বাদ থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, আমি জাযিরা থেকে হজ্জের নিয়তে আগমণ করি এবং সালমান ইবনে রাবীয়া ও যায়েদ ইবনে সুহান নামক আযীবার দু‘জন শায়খের নিকট দিয়ে যাচ্ছিলাম। তারা আমাকে لبيك بعمرة وحجة বলতে শুনে তাদের একজন বলেন- এই ব্যক্তি তার উট থেকেও অধিক মূর্খ। কিন্তু আমি নিজের কাজে নিয়োজিত আছি (অর্থাৎ তাদের কথায় কর্ণপাত করিনি) এবং হজ্জের আরকান শেষ করি। আমি আমীরুল মু‘মিনীন হযরত ওমর (رضي الله عنه)’র কাছে গিয়ে আরয করি যে, আমি দেশের দূর প্রান্তে বাস করি। আল্লাহ তায়ালা আমার জন্য হজ্জের এই পদ্ধতি নির্ধারণ করেছেন। তাই হজ্জ ও উমরা একত্রে পালন করা আমার নিকট অধিক মনপুত হয়েছে। আমি উভয়ের নিয়ত করে ইহরাম বেঁধেছি। এটা আমি ইচ্ছা করে করেছি। অতঃপর যখন আমি সালমান ইবনে রাবীয়া ও সুহানের নিকট দিয়ে যাচ্ছিলাম এবং তারা আমাকে لبيك بعمرة وحجة বলতে শুনেন তখন তাঁদের মধ্যে একজন বলেন- এই ব্যক্তি তার উট থেকে অধিক অজ্ঞ। দ্বিতীয় ব্যক্তি বলেন- এই ব্যক্তি অমুক অমুক বস্তু থেকে অজ্ঞ। তখন হযরত ওমর (رضي الله عنه) বলেন- তারপর তুমি কি করলে? আমি বললাম- আমি যথানিয়মে হজ্জের আরকানসমূহ আদায় করি। আমি উমরার জন্য তাওয়াফ করি এবং উমরার জন্য সাঈ আদায় করি। এরপর দ্বিতীয়বার এরূপ করি। তারপর আমি (হজ্জের জন্য) মুহরিম (ইহরাম অবস্থায়) থেকে গিয়েছি এবং একজন হাজী যা করেন আমিও তা করছি। তখন তিনি বললেন, তুমি তোমার নবী ’র সুন্নত অনুযায়ী কাজ করেছ।
অন্য এক রেওয়ায়েতে বর্ণিত আছে, হযরত দ্বাব্বিই ইবনে মা‘বাদ (رضي الله عنه) বলেন, মাত্র কিছুদিন পূর্বে খ্রীষ্টধর্ম ত্যাগ করে আমি হযরত ওমর (رضي الله عنه)’র খিলাফতকালে হজ্জের নিয়তে কূফায় গমণ করি। সালমান এবং যায়েদ ইবনে সুহান কেবল হজ্জের নিয়তে ইহরাম বাঁধেন। আর দ্বাব্বিই একত্রে হজ্জ ও উমরার নিয়ত করেন। তখন উভয়ে বলেন- তোমার ধ্বংস হোক, তুমি তামাত্তোর নিয়ত করেছ, অথচ রাসূল (ﷺ) এর থেকে নিষেধ করেছেন। তাঁরা উভয়ে তাকে বললেন, আল্লাহর শপথ! তুমি তোমার উটের চেয়ে অধিক অজ্ঞ। দ্বাব্বিই উত্তরে বলেন আমরা ওমর (رضي الله عنه)’র নিকট যাচ্ছি। এরপর দ্বাব্বিই যখন মক্কা পৌঁছেন তখন বাইতুল্লাহর তাওয়াফ করেন এবং সাফা-মারওয়া সাঈ করেন। তারপর হালাল না হয়ে ইহরাম অবস্থায় থাকেন। (হজ্জের দিন পুনরায়) কা‘বা ঘর তাওয়াফ করেন এবং হজ্জের জন্য সাফা-মারওয়া সাঈ করেন। অতঃপর হালাল না হয়ে ইহরাম অবস্থায় থাকেন এবং আরাফাত গমণ করেন ও হজ্জের আরকান সমাপ্ত করেন। এরপর যখন নহরের দিন আসে, তখন মুতআর জন্য কুরবানী করেন। লোকজন হজ্জ থেকে ফিরে গেলে তারা হযরত ওমর (رضي الله عنه)’র নিকট গমন করেন। যায়েদ ইবনে সুহান বলেন- হে আমীরুল মু‘মিনীন! আপনি মুতআ (অর্থাৎ কেরান ও তামাত্তু) থেকে নিষেধ করেছেন কিন্তু দ্বাব্বিই ইবনে মা‘বাদ তামাত্তু আদায় করেছেন। হযরত ওমর (رضي الله عنه) দ্বাব্বিইকে জিজ্ঞাসা করেন, হে দ্বাব্বিই! তুমি কিরূপ করেছ? তিনি বলেন- হে আমীরুল মু‘মিনীন! আমি হজ্জ ও উমরার নিয়তে ইহরাম বাঁধি। এরপর যখন আমি মক্কায় আগমণ করি তখন উমরার জন্য বায়তুল্লাহ তাওয়াফ করি এবং সাফা-মারওয়া সাঈ করি। অতঃপর হালাল না হয়ে ইহরাম অবস্থায় থাকি। এরপর বায়তুল্লাহ তাওয়াফ (তাওয়াফে কুদুম) করি এবং হজ্জের জন্য সাফা-মারওয়া সাঈ করি। তারপর নহরের দিন পর্যন্ত ইহরাম অবস্থায় থাকি এবং মুতআর জন্য দম কুরবানী করি। তারপর ইহরাম থেকে হালাল হয়ে যাই। দ্বাব্বিই বলেন- তখন হযরত ওমর আমার পিঠ চাপড়াইয়ে বলেন- নিশ্চয়ই তুমি তোমার নবীর সুন্নত অনুযায়ী আমল করেছ।
হযরত দ্বাব্বিই ইবনে মা‘বাদ (رضي الله عنه) থেকে অপর এক রেওয়ায়েতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন- তিনি সালমান ইবনে রাবীয়া এবং যায়েদ ইবনে সুহান হজ্জের উদ্দেশ্যে বের হন। দ্বাব্বিই ইহরামের সময় কিরানের নিয়ত করেন। সালমান এবং যায়েদ কেবল হজ্জের নিয়ত করেন। তখন তারা উভয়ে দ্বাব্বিইকে গালমন্দ করে বলেন- তুমি তোমার উট থেকেও অজ্ঞ। তুমি হজ্জ ও উমরা একত্রে করছ, অথচ হযরত ওমর (رضي الله عنه) হজ্জ ও উমরা একত্রে করা থেকে নিষেধ করেছেন।
তখন দ্বাব্বিই বলেন- আমরা হযরত ওমর (رضي الله عنه)’র নিকট যাচ্ছি। তার নিকট এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করব। অতঃপর তারা চলতে থাকেন এবং মক্কায় গিয়ে পৌঁছেন। তখন দ্বাব্বিই উমরার উদ্দেশ্যে বায়তুল্লাহ তাওয়াফ করেন এবং সাফা-মারওয়া সাঈ করেন। অতঃপর হজ্জের জন্য বায়তুল্লাহ তাওয়াফ করেন এবং সাফা-মারওয়া সাঈ করেন। তারপর হালাল না হয়ে ইহরাম অবস্থায় থাকেন যাতে তার জন্য হারাম বস্তু হালাল না হয়। এরপর যখন কুরবানীর দিন উপস্থিত হয় তখন সামর্থ অনুযায়ী একটি বকরী যবেহ করে কুরবানী আদায় করেন। কুরবানীর যাবতীয় আহকাম শেষ করে মদীনা গমণ করে হযরত ওমর (رضي الله عنه)’র খেদমতে উপস্থিত হন। তখন সালমান ও যায়েদ তাঁকে বলেন- হে আমীরুল মু‘মিনীন! দ্বাব্বিই হজ্জ ও উমরা একত্রে আদায় করেছেন। অথচ আপনি এরূপ করতে নিষেধ করেছেন। তখন হযরত ওমর (رضي الله عنه) দ্বাব্বিইকে বললেন- তুমি কি রূপ করেছ? উত্তরে তিনি বলেন- আমি মক্কায় পৌঁছে উমরার উদ্দেশ্যে তাওয়াফ করি এবং সাফা-মারওয়া সাঈ করি। এরপর দ্বিতীয়বার হজ্জের জন্য বায়তুল্লাহ তাওয়াফ করি এবং সাফা-মারওয়া সাঈ করি। তখন ওমর (رضي الله عنه) জিজ্ঞাসা করেন এরপর কি করেছ? উত্তরে দ্বাব্বিই বলেন- এরপর আমি ইহরাম অবস্থায় থাকি। আমার উপর হারাম বস্তু হালাল করিনি। কুরবানীর দিন আসলে আমার সাধ্য অনুযায়ী একটি বকরী যবেহ করি। দ্বাব্বিই বলেন তখন হযরত ওমর (رضي الله عنه) আমার কাঁধে হাত চাপড়িয়ে আমাকে ধন্যবাদ ও বাহ্বা দেন। অতঃপর বলেন- তুমি তোমার নবীর সুন্নত পালন করেছ।
ব্যাখ্যা: কোন প্রকারের হজ্জ উত্তম এ প্রসঙ্গে ২৩১ নং হাদিসের ব্যাখ্যায় উলেখ করা হয়েছে। এখানে শুধু হজ্জে কিরান উত্তম হওয়ার পক্ষে হানাফী মাযহাবের দলীল সমূহ পেশ করা হবে।
❏ইমাম আবু হানিফা (رحمة الله) উপরোক্ত হাদিস দ্বারা কিরান উত্তম হওয়ার দলীল পেশ করে বলেন- হযরত ওমর (رضي الله عنه) দ্বাব্বিই (رضي الله عنه)কে হজ্জে কিরান আদায় করার কারণে ধন্যবাদ দিয়েছেন এবং এটা সুন্নতে নববী বলে স্বীকৃতি দিয়েছেন।
দ্বিতীয় শক্তিশালী দলীল হলো- মুসলিম শরীফে হযরত ইমরান ইবনে হোসাইন (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত আছে, রাসূল (ﷺ) হজ্জ এবং উমরা একত্রে আদায় করেছেন। ইন্তেকাল পর্যন্ত তিনি এটা অব্যাহত রেখেছেন। এটা হারাম বা নিষিদ্ধ হওয়ার ব্যাপারে কুরআন নাযিল হয়নি।
তৃতীয়ত ইবনে ওমর (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত আছে যে, রাসূল (ﷺ) বিদায় হজ্জে উমরার জন্য ইহরাম বেঁধেছেন এবং হজ্জের জন্যও ইহরাম বেঁধেছেন।
চতুর্থত হযরত আয়েশা (رضي الله عنه) থেকে একই ধরনের রেওয়ায়েত বর্ণিত আছে।
পঞ্চমত তাহাভী, তিরমিযী, ও ইবনে মাজাহ-এ-উম্মে সালমা (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত আছে, নবী করিম (ﷺ) জীবনে চারবার উমরা আদায় করেছেন।
প্রথমবার হুদায়বিয়ায়
দ্বিতীয়বার উমরাতুল কাযা যিলক্বদ মাসে,
তৃতীয়বার জি‘রানা থেকে,
চতুর্থবার বিদায় হজ্জে। সুতরাং এ সমস্ত দলীল হানাফী মাযহাবকে সঠিক প্রমাণিত করে।
যষ্ঠত পবিত্র কুরআনের আয়াত واتموا الحج والعمرة لله “আল্লাহর জন্য হজ্জ ও উমরা আদায় কর।” (সূরা বাকারা, আয়াত, ১৯৬) হাকেম স্বীয় মুস্তাদরাকে বুখারী ও মুসলিমের শর্ত সাপেক্ষে বর্ণনা করেন যে, কোন এক ব্যক্তি হযরত আলী (رضي الله عنه)’র নিকট এই আয়াত সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন- اتمام বা পূর্ণতার পদ্ধতি হলো- হজ্জ ও উমরার জন্য ঘর থেকে ইহরাম বাঁধবে। অর্থাৎ কিরান হজ্জের নিয়ত করবে।
হযরত ইবনে মাসউদ (رضي الله عنه) থেকেও অনুরূপ বর্ণিত আছে। সুতরাং কিরানই উত্তম যদি মানুষ এর উপর আমল করতে সক্ষম হয়। সুতরাং যখন পবিত্র কুরআনে কিরান হজ্জের উলেখ রয়েছে, তখন এটা অন্যান্য হজ্জ থেকে কেন উত্তম হবে না?
এখানে আরেকটি মাসয়ালা নিয়ে ইমামদের মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে। তা হলো কিরান হজ্জ আদায়কারী দু‘তাওয়াফ ও দু‘সাঈ করবে, না এক তাওয়াফ ও এক সাঈ করবে? শাফেঈ মাযহাব মতে কিরান হজ্জে এক তাওয়াফ ও এক সাঈ। পক্ষান্তরে হানাফী মাযহাবে কিরান হজ্জে দু‘তাওয়াফ এবং দু‘সাঈ। হানাফী মাযহাবের প্রথম দলীল উপরোক্ত হাদিস। দ্বিতীয় দলীল নাসাঈ সুনানে কুব্রা নামক গ্রন্থে ইব্রাহীম ইবনে মুহাম্মদ ইবনে হানাফিয়্যা (رحمة الله) থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন- আমি আমার পিতার সাথে তাওয়াফ করেছি। এসময় তিনি হজ্জ ও উমরা একত্রে আদায় করেছেন। তিনি দু‘তাওয়াফ ও দু‘সাঈর কথা বলেছেন এবং আমার নিকট হাদিস বর্ণনা করেছেন যে, হযরত আলী (رضي الله عنه) এরূপ করেছেন। হযরত আলী (رضي الله عنه) তাদের নিকট হাদিস বর্ণনা করেন যে, রাসূল (ﷺ) দু‘তাওয়াফ ও দু‘সাঈ করেছেন। তৃতীয়ত আবু বকর ইবনে শায়বা যিয়াদা ইবনে মালিক (رحمة الله) থেকে বর্ণনা করেন, নবী করিম (ﷺ) দু‘তাওয়াফ ও দু‘সাঈ করেছেন। চতুর্থত হযরত আলী ও ইবনে মাসউদ (رضي الله عنه) বলেন, হজ্জে কিরানে দু‘তাওয়াফ ও দু‘সাঈ রয়েছে।