সাঈদি সাহেবের গায়েবানা জানাজা কোনভাবেই শরিয়ত সম্মত নয়।
(পুরাটা পড়ে, বিবেক দিয়ে চিন্তা করে আমানতের সাথে মন্তব্য করুন)
গায়েবানা জানাজার ব্যাপারে ইমামগণ থেকে মোটাদাগে দুইটা মত পাওয়া যায়
১. ইমাম আবু হানিফা রহ: ও ইমাম মালেক রহ: মতে গায়েবানা জানাজার কোন সুযোগ ইসলামে নেই।
সহিহ বুখারী বর্ণিত হাদিসে নাজাশীর জন্য নবীজি কর্তৃক পড়া জানাজা গায়েবানা ছিলোনা, বরং নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নাজাশীর লাশ দেখেই জানাজা পড়িয়েছেন।
এর পর আর কোন গায়েব ব্যক্তির জন্য নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কখনো গায়েবানা জানাজা পড়েননি।
নাজাশীর জন্য পড়া জানাজা নবীজির জন্যই খাস ছিলো।
২. ইমাম শাফেয়ী রহ: ও ইমাম আহমাদ রহ: সহিহ বুখারীর ১৩২৭ নাম্বার হাদিসের (নাজাশীর জানাজার হাদিস) আলোকে বলেছেন গায়েবানা জানাজা শর্তসাপেক্ষে শরিয়তসম্মত।
এবং শর্তগুলো সব বুখারীর হাদিসের আলোকেই করা;
১. মৃতব্যক্তি এমন দেশে মৃত্যুবরণ করেছেন যে দেশে তার জানাজা পড়ার মতো কেউ নেই। এককথায় মৃতব্যক্তি যে দেশে মৃত্যুবরণ করেছেন সেখানে তার জন্য জানাজার নামাজ পড়া হয়নি। তখন তার জন্য ভিন্ন কোন দেশে গায়েবানা জানাজা হতে পারে।
বুখারীর হাদিসও তাই প্রমাণ করে, নাজাশীর জন্য হাবাশায় কোন জানাজা হয় নি। সেখানে তার জানাজা পড়ার মতো কেউ ছিলোনা বিধায় নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদিনাতে জানাজা পড়েছেন। তাও নাজাশীর লাশ সামনে নিয়ে/দেখে।
২. মৃতব্যক্তি যদি ভিন্নদেশে ইন্তেকাল করেন এবং সেখানে তার জানাজা যদি না হয়, তাহলে তার গায়েবানা জানাজা পড়া যাবে।
একই দেশের ভিন্ন ভিন্ন জেলায় গায়েবানা জানাজা আয়োজন সম্পূর্ণ নব আবিষ্কৃত বা বিদায়াত। শরীয়তে এর কোন অনুমোদন নেই।
বুখারীর যে হাদিস দিয়ে গায়েবানা জানাজার কথা বলা হয় সেখানেও স্পষ্ট উল্লেখ করা আছে সহিবাল হাবাশা।
এবং ফকিহরাও সকলে ভিন্নদেশের শর্তারোপ করেছেন।
৩. যেদিন মারা যায় সেদিন উপরের ২ শর্ত পাওয়া না গেলে গায়েবানা জানাজা করা যাবে।
বুখারীর ১৩২৭ নাম্বার হাদিসে নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কর্তৃক নাজাশীর জানাজার ব্যাপারে স্পষ্ট বলা আছে (يَومَ الذي ماتَ فِيهِ) যেদিন মারা গিয়েছে সেদিন।
অতএব জেলায় জেলায় পড়া গায়েবানা বুখারীর হাদিসের আলোকেই শরীয়তলঙ্গন ও বিদায়াত।
আর জানাজা ও দাফন সম্পন্ন হবার পরেরদিন (১৬ তারিখ বাইতুল মোকাররমে) গায়েবানা জানাজার আয়োজন বিদায়াতের উপর আরেক বিদায়াত। (ভিন্ন জেলায় আয়োজন এক বিদায়াত, জানাজা ও দাফন পরবর্তী দিন আয়োজন আরেক বিদায়াত)
হ্যা তিনি যদি এমন দেশে ইন্তেকাল করতেন, সেখানে তার জন্য নামাজ পড়ার কেউ না থাকতো, তার কোন জানাজা না হতো শুধুমাত্র ঐদিন ভিন্নদেশীয় শাফেয়ী বা হাম্বলী মতাবলম্বীরা / মাজহাব না মানা ব্যক্তিরা গায়েবানা জানাজা করতে পারতো। (হানাফি ও মালেকি মাজহাবে গায়েবানা বলতেই কিছু নেই।
আবেগ দিয়ে নয়, বিবেক দিয়ে চলতে হবে আপনাকে।
পিরোজপুরে জানাজা হলো আপনি ঢাকায় বসে আছেন আরেকটা জানাজার জন্য?
দাফন কার্য সমাপনের পর এ আয়োজন তো রীতিমতো হাস্যকর হবে।