মহান রাব্বুল আলামীন পবিত্র কুরআনে ইয়াহইয়া (আলাইহিস সালাম) এবং ঈসা (আলাইহিস সালাম) সহ অনেক নবী রাসুলের জন্ম বৃত্তান্ত, মৃত্যু দিবস এবং পুনরুত্থান সবিস্তারে আলোচনা করেছেন।
***{হযরত ইয়াহইয়া (আলাইহিস সালাম) সম্পর্কে} “তার প্রতি শান্তি যেদিন তিনি জন্মগ্রহণ করেন এবং যেদিন মৃত্যুবরণ করবেন এবং যেদিন জীবিতাবস্থায় পুনরুত্থিত হবেন।” (সূরা মরিয়ম : ১৫)
***{হযরত ঈসা (আলাইহিস সালাম) } “আমার প্রতি সালাম যেদিন আমি জন্মগ্রহণ করেছি, যেদিন মৃত্যুবরণ করব এবং যেদিন পুনরুজ্জীবিত হয়ে উত্থিত হব।” (সূরা মরিয়ম : ৩৩)
“এই শহর (মক্কার) শপথ করছি হে আমার প্রিয় হাবীব! এ জন্যে যে এ শহরে আপনি জন্ম গ্রহণ করেছেন। আপনার পিতা (আদম(আলাইহিস সালাম) অথবা ইব্রাহিম (আলাইহিস সালাম)) এর কসম এবং কসম (তাঁর) যিনি এইমাত্র জন্ম গ্রহণ করেছেন।” (সূরা বালাদ : ১-৩)
ওই দিনগুলোর প্রতি শান্তি বা সালাম প্রেরীত হয়েছে।
আল্লাহ পাকের নিয়ামত পাবার পর সন্তুষ্টি ও আনন্দ প্রকাশের নির্দেশ এসেছে। যেমন>
“হে আমার হাবীব (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম )! আপনি উম্মাহকে বলে দিন, মহান আল্লাহ পাক অনুগ্রহ ও রহমত (হুজুর পাক (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম )) প্রেরণ করেছেন, সেজন্য তারা যেন খুশি প্রকাশ করে| এ খুশি প্রকাশ করাটা সবচাইতে উত্তম, যা তারা সঞ্চয় করে রাখে!” (সূরা ইউনূছ ৫৮)
আর সে নিয়ামতকে স্মরণ করতে বলা হয়েছে>
“তোমাদেরকে আল্লাহর যে নিয়ামত দেয়া হয়েছে তা তোমরা স্মরণ করো!” (৩: ১০৩)
তাফসীরে ইবনে আব্বাস খুলে দেখুন উপরোক্ত আয়াতের নিয়ামত ও রহমত দ্বারা আমাদের নবী (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ) কেই বোঝানো হয়েছে। যেমন অন্য আয়াতে পরিষ্কার ভাবে নবী (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ) কেই রহমত হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে>
আমি আপনাকে বিশ্ববাসীর জন্যে রহমত স্বরূপই প্রেরণ করেছি। (২১: ১০৭)
এত বড় রহমত পেয়েও যারা আনন্দ প্রকাশ করে না তারা নিতান্তই অকৃতজ্ঞ! আর ঈসা (আ) বেহেস্তি খাবার সহ খাঞ্জার অবতরণের দিনকে ঈদ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
(ঈসা (আলাইহিস সালাম): হে আমাদের রব! আমাদের জন্য আপনি আসমান হতে খাদ্যসহ একটি খাঞ্চা নাযিল করুন| আর সে উপলক্ষটি অর্থাৎ সেদিনটি আমাদের জন্য, আমাদের পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সকলের জন্য ঈদ স্বরূপ হবে! (সূরা মায়িদা ১১৪)
ঈদে মিলাদুন্নাবী (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ) মুমিনের জন্যে সবচে বড় ঈদ! ঈদ অর্থ হচ্ছে খুশি বা আনন্দ প্রকাশ। “ঈদে মীলাদুন্নবী” বলতে হুজুর পাক (সা) এর বিলাদত শরীফ উপলক্ষে আনন্দ প্রকাশ করা, তাঁর ছানা- সিফাত আলোচনা করা, তাঁর প্রতি সালাত ও সালাম পাঠ করা, এবং তাঁর পবিত্রতম জীবনী মুবারকের সামগ্রিক বিষয়ের আলোচনাকে বুঝানো হয়!
আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু) হতে বর্ণিত। তিনি একদা বিলাদত শরীফ উপলক্ষে খুশি প্রকাশ করে তাঁর নিজগৃহে সাহাবীগণকে সমবেত করে নবী (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম )
এর বিলাদত শরীফের ঘটনাসমূহ শুনাচ্ছিলেন। এতে শ্রবণকারীগণ আনন্দও খুশি প্রকাশ করছিলেন এবং আল্লাহ পাকের প্রশংসা তথা তাসবীহ-তাহলীল পাঠ করছিলেন এবং রাসুল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম )
এর উপর দুরূদ (সালাত-সালাম) পাঠ করছিলেন। এমন সময় রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম )
তথায় উপস্থিত হয়ে বিলাদত শরীফ উপলক্ষে খুশি প্রকাশ করতে দেখে বললেন: “আপনাদের জন্য আমার শাফায়াত ওয়াজিব হয়ে গেলো।”
{আল্লামা জালাল উদ্দীন সূয়ুতী (রাহ) এর বিখ্যাত কিতাব “সুবলুল হুদা ফি মাওলেদে মুস্তাফা (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম )
“ এ হাদিস দুটি উল্লেখিত হয়েছে। # দুররুল মুনাযযাম – সপ্তম অধ্যায় – প্রথম পরিচ্ছেদ
# ইশবাউল কালাম # হাক্বীকতে মুহম্মদী মীলাদে আহমদী ৩৫৫ পৃষ্ঠা}
(ডঃ আব্দুল বাতেন মিয়াজী)
হযরত আবু কাতাদা (রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু) হতে বর্নিত, রাসুলে পাক (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম )এর দরবারে আরজ করা হলো তিনি প্রতি সোমবার রোজা রাখেন কেন? উত্তরে নবীজি ইরশাদ করেন, “এই দিনে আমি জন্ম গ্রহন করেছি, এই দিনেই আমি নবুয়ত প্রাপ্ত হয়েছি অর্থাৎ এই দিনেই আমার উপর প্রথম পবিত্র কুরআন নাযিল হয়েছে।” [সহীহ মুসলিম ২৬১৩-২৬১৬ বা ই সে, ২৬০৩-২৬০৬ ইংরেজী মুসলিম শরীফ]