দিল্লুরাম নামে একজন হিন্দু কবি ছিলেন, যিনি রাসূলুল্লাহ (ﷺ)’র ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে তাঁর প্রশংসামূলক কবিতা রচনা করতেন। মুসলিম এবং হিন্দু উভয় ধর্মালম্বীরা তার কবিতা পড়ে থাকতো। যখন দিল্লুরাম রাসুল (ﷺ) এর প্রতি লেখা ভক্তিমূলক কবিতাগুলোর সংখ্যা বাড়াতে শুরু করলেন তখন হিন্দু ব্যক্তিবর্গরা তাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে বললো, “তোমার কি হয়েছে? তুমি তো হিন্দুদের নাম ডুবাচ্ছো! তুমি একজন হিন্দু হয়েও নবী (ﷺ) এর নামে প্রশংসামূলক কবিতা রচনা করছো!?”
দিল্লু রাম বললেন,“ আমাকে থামিয়ো না, আমি আমার ভালোবাসা দ্বারা আবদ্ধ হয়ে গেছি!” তিনি খুব সুন্দর একটি শ্লোক লিখে তার ভালোবাসা সম্পর্কে ব্যাখ্যা দিলেন :
“শুধু মুসলিম হয়েই যে মুহাম্মদ (ﷺ) কে ভালোবাসা যাবে এমন তো নয়, এই কোঠারি (দিল্লু), একজন হিন্দু হয়েও মুহাম্মদ (ﷺ) এর অন্বেষণকারী।”
পরবর্তী একটা সময়ে, দিল্লু রাম ভীষণ অসুস্থ হয়ে শয্যাশায়ী হলেন। তার এই মর্মান্তিক অসুস্থ হবার ঘটনা ভারতবর্ষের চারিদিকে ছড়িয়ে পড়লো পত্রপত্রিকা এবং ম্যাগাজিনের মাধ্যমে। এটা বর্ণিত হয়েছিলো যে, যখন তিনি শয্যাশায়ী ছিলেন তখন তিনি প্রিয়জনদের দ্বারা বেষ্টিত ছিলেন, তবুও তিনি সবসময় দরজার দিকে তাকিয়ে থাকতেন। একদিন তিনি হঠাৎ করে হাত গুটিয়ে উঠে দাঁড়ালেন এবং বাকি সবাইকে বললেন দাঁড়াতে।
আশ্চর্যান্বিত এবং বিভ্রান্ত হয়ে লোকজন জিজ্ঞেস করলো,“ কি হচ্ছে এখানে?” দিল্লু কেঁদে উঠলেন এবং বললেন, “যে ব্যক্তির জন্য আমি সারাজীবন প্রশংসা করে গিয়েছি তিনি এসেছেন! ফাতিমা (রাঃ) এর পবিত্র বাবা এসেছেন! এবং আমি তো ইসলাম ধর্মও গ্রহণ করিনি তবুও তিনি এসেছেন! কতই না মহানুভব আমার প্রাণের নবী হযরত মুহাম্মদ (ﷺ)!”
এ বলে তিনি আরো কান্না করতে লাগলেন এবং আমাদের নবী (ﷺ) তাকে বললেন: “দিল্লু রাম! তোমার সময় প্রায় শেষ, আজরাইল প্রায় চলে এসেছে। আমি চাই না এমন কেউ জাহান্নামের আগুনে যাক যেকিনা আজীবন আমার প্রশংসা করে গেছে। আমি ইচ্ছা পোষণ করছি তোমাকেও আমার সাথে জান্নাতে নিয়ে যাওয়ার।”
তিনি কালেমায় শাহাদাত পড়লেন এবং বললেন : “ও সর্দার মুহাম্মদ (ﷺ)! আপনি আমাকে কালিমাহ পড়ানো শিখিয়েছেন এখন আমাকে আপনার পছন্দমত একটি মুসলিম নাম দিন। আমি অনুভব করতে পারছি জান কবজের ফেরেশতা আজরাইল এসে গেছে।”
দিল্লুর নাম বদলিয়ে ‘আলী কোঠারি’ রাখা হয়েছিলো। এর কিছু মুহূর্ত পরেই, তাঁর আত্না অস্থায়ী পৃথিবী থেকে প্রস্থান করে।।