হাফেজ মুহাম্মদ রায়হান –
হালিশহর, বন্দর, চট্টগ্রাম।
প্রশ্ন: ফরজ নামায কাযা হয়ে গেলে আদায়ের করণীয়/পদ্ধতি কি?
উত্তর: ফরয নামায যথা সময়ে আদায় করতে না পারায় ওয়াক্ত চলে যাওয়ার পর উক্ত অনাদায়ী নামায় আদায় করাকে ‘কাযা’ বলা হয়। আর ফরযের কাযা ফরয, ওয়াজিবের কাযা ওয়াজিব এবং ফজরের নামায কাযা হলে সূর্যোদয়ের পর সূর্যস্থীর হওয়ার আগ পর্যন্ত যখন ফজরের নামায কাযা করবে তখন ফজরের দু’রাকাত সুন্নাত সহ কাযা করবে। আর নফল ও সুন্নাতে যায়েদার কাযা বাধ্যগত নয়। আর আসরের ফরয নামায আদায়ের পর কোন প্রকার নফল নামায আদায় করা মাকরূহে তাহরিমা। তবে কারো জিম্মায় ফরয নামায ‘কাযা’ থাকলে তা আসরের ফরয নামাযের পরেও সূর্যাস্তের বিশ মিনিট পূর্ব পর্যন্ত আদায় করা যাবে। তাছাড়া আসরের ফরয আদায়ের পর মৃত ব্যক্তির লাশ হাজির হলে নামাযে জানাযা ও আদায় করা যাবে।
উল্লেখ্য যে, ওয়াক্তিয়া বা পঞ্জেগানা নামায পাঁচ ওয়াক্ত বা তার কমে কাযা হলে তখন ওয়াক্তিয়া নামাযের আগে পূর্বের কাযা নামায আদায় করতে হবে। যদি ওয়াক্তিয়া নামাযের সময় বাকি থাকে তখন পূর্বের কাযাকৃত নামায আদায় না করে ইচ্ছাকৃত ওয়াক্তিয়া নামাযের জামাতে শরীক হতে পারবে না। কাযা নামাযের স্মরণ থাকা সত্ত্বেও ওয়াক্তিয়া নামাযের সময় থাকতে কাযা আদায় না করে যদি কেউ ওয়াক্তিয়া নামাযের জমাতে শরিক হয়, তা শুদ্ধ হবে না। তবে পাঁচ ওয়াক্তের বেশী কাযা হলে তখন ওয়াক্তিয়ার পূর্বে কাযা নামায ও কাযা নামাযের পূর্বে ওয়াক্তিয়া আদায় করা জায়েয। আর ওয়াক্তিয়া নামাযের সময় যদি একেবারে শেষ পর্যায়ে এসে যায় শুধু ওই ওয়াক্তের ফরয নামায পড়া যাবে তার বেশী পড়ার সুযোগ নেই। তখন কোন মুসল্লীর জিম্মায় পাঁচ ওয়াক্ত বা কমে কাযা থাকলেও ওয়াক্তিয়া আগে আদায় করতে হবে তারপর কাযা নামায আদায় করবে। কাযা নামাযের ব্যাপারে বেশীর ভাগ মানুষ গাফেল ও অজ্ঞ। এসব জরুরী মাসআলা জানা প্রত্যেক বালেগ মুসলমান নর-নারীর উপর ফরয।
[দুররে মুখতার, আলমগীরি, শরহে বেকায়া, ফতোয়ায়ে রযভীয়াহ, ২য় খন্ড, ৩৫৯ পৃঃ, নামায অধ্যায়]