মূল: হুজ্জাতুল ইসলাম ইমাম গাজ্জালী (রহ.)
অনুবাদ: কাজী সাইফুদ্দীন হোসেন
[ইংরেজি অনুবাদক মুহাম্মদ আবূল ক্বা’সেম কর্তৃক লিখিত ভূমিকা ও টীকা-টিপ্পনীসহ]
সূরাহ কাসাস হতে পাঁচটি আয়াত (ومن سورة القَصَص خمسُ آيات):
আল্লাহতায়ালা বলেন:
وَمَآ أُوتِيتُم مِّن شَيْءٍ فَمَتَاعُ ٱلْحَيَاةِ ٱلدُّنْيَا وَزِينَتُهَا وَمَا عِندَ ٱللَّهِ خَيْرٌ وَأَبْقَىٰ أَفَلاَ تَعْقِلُونَ، أَفَمَن وَعَدْنَاهُ وَعْداً حَسَناً فَهُوَ لاَقِيهِ كَمَن مَّتَّعْنَاهُ مَتَاعَ ٱلْحَيَاةِ ٱلدُّنْيَا ثُمَّ هُوَ يَوْمَ ٱلْقِيَامَةِ مِنَ ٱلْمُحْضَرِينَ.
অর্থ: এবং যে কোনো বস্তুই তোমাদেরকে প্রদান করা হয়েছে তা হচ্ছে পার্থিব জীবনের ভোগ-সামগ্রী ও সেটার সাজসজ্জা মাত্র। এবং যা আল্লাহর নিকট রয়েছে তা উত্তম ও অধিক স্থায়ী। তবে কি তোমাদের বিবেক নেই? তবে কি ওই ব্যক্তি, যাকে আমি উত্তম প্রতিশ্রুতি দিয়েছি অতঃপর সে সেটার সাক্ষাৎ পাবে, (সে) ওই ব্যক্তির মতো, যাকে আমি পার্থিব জীবনের ভোগ-সামগ্রী ভোগ করতে দিয়েছি, অতঃপর তাকে কিয়ামতের দিনে গ্রেফতার করে হাজির করা হবে? [কুর’আন, ২৮/৬০-৬১; নূরুল ইরফান]
আল্লাহ বিবৃত করেন:
وَٱبْتَغِ فِيمَآ آتَاكَ ٱللَّهُ ٱلدَّارَ ٱلآخِرَةَ وَلاَ تَنسَ نَصِيبَكَ مِنَ ٱلدُّنْيَا وَأَحْسِن كَمَآ أَحْسَنَ ٱللَّهُ إِلَيْكَ وَلاَ تَبْغِ ٱلْفَسَادَ فِي ٱلأَرْضِ إِنَّ ٱللَّهَ لاَ يُحِبُّ ٱلْمُفْسِدِينَ.
অর্থ: আল্লাহ যে সম্পদ তোমাকে প্রদান করেছেন তা দ্বারা আখিরাতের আবাস অনুসন্ধান করো এবং দুনিয়ার মধ্যে নিজ অংশ ভুলো না আর পরোপকার করো যেমন আল্লাহ তোমার উপর অনুগ্রহ করেছেন এবং পৃথিবীতে অশান্তি চেয়ো না। নিশ্চয় আল্লাহ অশান্তি সৃষ্টিকারীদেরকে ভালোবাসেন না। [কুর’আন, ২৮/৭৭; নূরুল ইরফান] {অনুবাদক আবূল কাসেম সাহেবের নোট: “দুনিয়ার মধ্যে নিজ অংশ ভুলো না” (لاَ تَنسَ نَصِيبَكَ مِنَ ٱلدُّنْيَا) মর্মে আয়াতটির মানে প্রশংসনীয় জ্ঞান-প্রজ্ঞা অর্জন ও সৎকর্মের অনুশীলন। কেননা এ দুটো দ্বারা কারো পক্ষে জান্নাত লাভ সম্ভব হবে।}
আল্লাহ ফরমান:
تِلْكَ ٱلدَّارُ ٱلآخِرَةُ نَجْعَلُهَا لِلَّذِينَ لاَ يُرِيدُونَ عُلُوّاً فِي ٱلأَرْضِ وَلاَ فَسَاداً وَٱلْعَاقِبَةُ لِلْمُتَّقِينَ، مَن جَآءَ بِٱلْحَسَنَةِ فَلَهُ خَيْرٌ مِّنْهَا وَمَن جَآءَ بِٱلسَّيِّئَةِ فَلاَ يُجْزَى ٱلَّذِينَ عَمِلُواْ ٱلسَّيِّئَاتِ إِلاَّ مَا كَانُواْ يَعْمَلُونَ.
অর্থ: এটা আখিরাতের আবাস, আমি তাদেরই জন্যে নির্ধারিত করি যারা ভূ-পৃষ্ঠে অহঙ্কার চায় না এবং না অশান্তি; আর পরকালের শুভ-পরিণাম খোদাভীরুদেরই। যে সৎকর্ম করেছে তার জন্যে তা অপেক্ষা উত্তম রয়েছে; এবং যে মন্দ কাজ করে তারা তার বদলা পাবে না, কিন্তু যতোটুকু করেছিলো। [কুর’আন, ২৮/৮৩-৮৪; নূরুল ইরফান]
সূরাহ আনকাবূত হতে সাতটি আয়াত (ومن سورة العَنْكَبُوت سبعُ آيات):
আল্লাহ ইরশাদ করেন:
مَثَلُ ٱلَّذِينَ ٱتَّخَذُواْ مِن دُونِ ٱللَّهِ أَوْلِيَآءَ كَمَثَلِ ٱلْعَنكَبُوتِ ٱتَّخَذَتْ بَيْتاً وَإِنَّ أَوْهَنَ ٱلْبُيُوتِ لَبَيْتُ ٱلْعَنكَبُوتِ لَوْ كَانُواْ يَعْلَمُونَ، إِنَّ ٱللَّهَ يَعْلَمُ مَا يَدْعُونَ مِن دُونِهِ مِن شَيْءٍ وَهُوَ ٱلْعَزِيزُ ٱلْحَكِيمُ، وَتِلْكَ ٱلأَمْثَالُ نَضْرِبُهَا لِلنَّاسِ وَمَا يَعْقِلُهَآ إِلاَّ ٱلْعَالِمُونَ، خَلَقَ ٱللَّهُ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلأَرْضَ بِٱلْحَقِّ إِنَّ فِي ذٰلِكَ لآيَةً لِّلْمُؤْمِنِينَ، ٱتْلُ مَا أُوْحِيَ إِلَيْكَ مِنَ ٱلْكِتَابِ وَأَقِمِ ٱلصَّلاَةَ إِنَّ ٱلصَّلاَةَ تَنْهَىٰ عَنِ ٱلْفَحْشَآءِ وَٱلْمُنْكَرِ وَلَذِكْرُ ٱللَّهِ أَكْبَرُ وَٱللَّهُ يَعْلَمُ مَا تَصْنَعُونَ.
অর্থ: তাদের উপমা, যারা আল্লাহ ছাড়া অন্য মালিক স্থির করেছে, মাকড়সার মতো; সে জালের ঘর তৈরি করেছে; এবং নিশ্চয় সমস্ত ঘরের মধ্যে দুর্বলতম ঘর হচ্ছে মাকড়সার ঘর; কতোই উত্তম হতো যদি তারা জানতো! আল্লাহ জানেন তাঁকে ছাড়া যে বস্তুর পূজা তারা করছে; এবং তিনিই সম্মান ও বাস্তব জ্ঞানের অধিকারী। এবং এ দৃষ্টান্তসমূহ আমি মানুষের জন্যে বর্ণনা করছি; আর সেগুলো কেবল জ্ঞানী ব্যক্তিরাই বোঝে। আল্লাহ আসমান ও জমিন সত্য তৈরি করেছেন। অবশ্যঅবশ্য তাতে নিদর্শন রয়েছে মুসলমানদের জন্যে। হে মাহবূব, পাঠ করুন যে কিতাব আপনার প্রতি ওহী করা হয়েছে এবং নামাজ কায়েম করুন! নিশ্চয় নামাজ অশ্লীল ও মন্দ কাজ থেকে বিরত রাখে এবং নিশ্চয় আল্লাহর যিকর/স্মরণ সর্বাপেক্ষা বড় এবং আল্লাহ জানেন যা তোমরা করো। [কুর’আন, ২৯/৪১-৪৫; নূরুল ইরফান]
রাব্বুল আলামীন ঘোষণা করেন:
يٰعِبَادِيَ ٱلَّذِينَ آمَنُوۤاْ إِنَّ أَرْضِي وَاسِعَةٌ فَإِيَّايَ فَٱعْبُدُونِ، كُلُّ نَفْسٍ ذَآئِقَةُ ٱلْمَوْتِ ثُمَّ إِلَيْنَا تُرْجَعُونَ.
অর্থ: হে আমার বান্দাবর্গ, যারা ঈমান এনেছো, নিশ্চয় আমার পৃথিবী প্রশস্ত; সুতরাং আমারই ইবাদত করো। প্রত্যেক প্রাণিকে মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে; অতঃপর আমারই দিকে প্রত্যাবর্তন করবে। [কুর’আন, ২৯/৫৬-৫৭; হাকিমুল উম্মত মুফতী আহমদ ইয়ার খাঁন রহমতুল্লাহি আলাইহি কৃত ‘নূরুল ইরফান’ শীর্ষক তাফসীরগ্রন্থের বাংলা সংস্করণ] {অনুবাদক আবূল কাসেম সাহেবের নোট: “নিশ্চয় আমার পৃথিবী প্রশস্ত; সুতরাং আমারই ইবাদত করো” (إِنَّ أَرْضِي وَاسِعَةٌ فَإِيَّايَ فَٱعْبُدُونِ) মর্মে আয়াতটিতে আল্লাহর ইবাদত যেসব জায়গায় করা কঠিন, সেগুলো ত্যাগের আমন্ত্রণ বিদ্যমান।}