মীলাদ শরীফ পাঠের শে’র

পোষ্টটি অন্যকে পড়ার সুযোগ করে দিতে শেয়ার করুন প্লিজ।

সংক্ষিপ্ত মীলাদ শরীফ- 

اَعُوْذُ بِاللهِ مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيْمِ

بِسْمِ اللهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيْمِ

* قلْ هُوَ اللَّهُ أَحَدٌ . اللَّهُ الصَّمَدُ . لَمْ يَلِدْ وَلَمْ يُولَدْ . وَلَمْ يَكُن لَّهُ كُفُواً أَحَدٌ .. لااله الا الله والله اكير,- ৩ বার 

بِسْمِ اللهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيْمِ

قُلْ أَعُوذُ بِرَبِّ الْفَلَقِ . مِن شَرِّ مَا خَلَقَ . وَمِن شَرِّ غَاسِقٍ إِذَا وَقَبَ. وَمِن شَرِّ النَّفَّاثَاتِ فِي الْعُقَدِ . وَمِن شَرِّ حَاسِدٍ إِذَا حَسَدَ,-

بِسْمِ اللهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيْمِ

* قُلْ أَعُوذُ بِرَبِّ النَّاسِ . مَلِكِ النَّاسِ . إِلَهِ النَّاسِ . مِن شَرِّ الْوَسْوَاسِ الْخَنَّاسِ . الَّذِي يُوَسْوِسُ فِي صُدُورِ النَّاسِ . مِنَ الْجِنَّةِ وَ النَّاسِ .

بِسْمِ اللهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيْمِ

الْحَمْدُ للّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ . الرَّحْمنِ الرَّحِيمِ . مَالِكِ يَوْمِ الدِّينِ . إِيَّاكَ نَعْبُدُ وإِيَّاكَ نَسْتَعِينُ . اهدِنَا الصِّرَاطَ المُستَقِيمَ . صِرَاطَ الَّذِينَ أَنعَمتَ عَلَيهِمْ غَيرِ المَغضُوبِ عَلَيهِمْ وَلاَ الضَّالِّينَ . امين.

بِسْمِ اللهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيْمِ

الم . ذَلِكَ الْكِتَابُ لاَ رَيْبَ فِيهِ هُدًى لِّلْمُتَّقِينَ . الَّذِينَ يُؤْمِنُونَ بِالْغَيْبِ وَيُقِيمُونَ الصَّلاةَ وَمِمَّا رَزَقْنَاهُمْ يُنفِقُونَ . والَّذِينَ يُؤْمِنُونَ بِمَا أُنزِلَ إِلَيْكَ وَمَا أُنزِلَ مِن قَبْلِكَ وَبِالآخِرَةِ هُمْ يُوقِنُونَ . أُوْلَئِكَ عَلَى هُدًى مِّن رَّبِّهِمْ وَأُوْلَئِكَ هُمُ الْمُفْلِحُونَ. 

وَإِلَهُكُمْ إِلَهٌ وَاحِدٌ لاَّ إِلَهَ إِلاَّ هُوَ الرَّحْمَنُ الرَّحِيمُ .

إِنَّ رَحْمَتَ اللّهِ قَرِيبٌ مِّنَ الْمُحْسِنِينَ. وَمَا أَرْسَلْنَاكَ إِلَّا رَحْمَةً لِّلْعَالَمِينَ,- مَّا كَانَ مُحَمَّدٌ أَبَا أَحَدٍ مِّن رِّجَالِكُمْ وَلَكِن رَّسُولَ اللَّهِ وَخَاتَمَ النَّبِيِّينَ وَكَانَ اللَّهُ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيماً,- إِنَّ اللَّهَ وَمَلَائِكَتَهُ يُصَلُّونَ عَلَى النَّبِيِّ يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا صَلُّوا عَلَيْهِ وَسَلِّمُوا تَسْلِيماً.

بِسْمِ اللهِ وَالْحَمْدُ لِلَّهِ الصَّلَوةُ وَالسَّلَامُ عَلَيْكَ يَارَسُوْلَ الله,-

মোহাম্মদ ইয়া রাসূলাল্লাহ

* জরা চেহরে ছে পরদেকো উঠহাও ইয়া রাসূলাল্লাহ 

 মুজহে দীদার ঠুক আপনা দেকহাও ইয়া রাসূলাল্লাহ 

* করো রুয়ে মনুওরছে মেরী আঁকহ উকো নূরানী

 মুজহে ফিরক্বত কি জুলমতছে বঁাচাও ইয়া রাসূলাল্লাহ।

* উঠহাকর যুলফে আকদ্দছকো যরা চেহরা মোবারকছে

 মুজহে দীওয়ানা আওর অহশি বানাও ইয়া রাসূলাল্লাহ । ঐ

* শাফি’য়ে আ’ছিয়া হোতুম ওছিলা বেকছা হো তুম,-

 তুমহে চুড় আব কাহা জাওঁ বাতাও ইয়া রাসূলাল্লাহ । ঐ

* পিয়াছা হায় তুমারে শরবতে দীদারকা আ’লম

 করমকা আপনা এক পিয়ালা পিলাও ইয়া রাসূলাল্লাহ । ঐ

* খোদা আ’শিক্ব তুমহারা আওর হো মাহবুব তুম উছকে

 হায় এছা মরতুবাহ কিছকা ছুনা ও ইয়া রাসূলাল্লাহ ।ঐ

* আগরচে নেক ইয়া বদহ তুমহারা চোকা হো ময়

 তুম আব চাহ হো হাছাও ইয়া, রুলাও ইয়া রাসূলাল্লাহ । ঐ

* বড়ি নদী ক্বিয়ামত কি উমেদ হামকো সালামত কি 

 দেকাও কিস্তি শাফায়াত কি মোহাম্মদ ইয়া রাসুলাল্লাহ। ঐ

* সালামে বে আদদ তুম পর দুরূদে কামিলা বরতর

 খোদা বেঝে ছাদা তুম পর মোহাম্মদ ইয়া রাসুলাল্লাহ। ঐ 

اَلصَّلَوةُ عَلى النَّبِى,- وَالسَّلَامُ عَلى الرَّسُوْل

 اَلشَّفِيْعُ الْاَبْطَحِى,- وَامُحَمَّدْ عَرَبِى

 خَيْرُ مِنْ وَطَىَ الثَّرَاى,- اَلْمُشَفَّعُ فِى الْوَرَاى

 مَنْ بِهِ حُلَّتْ عُرَاى – كُلَّ عَبْدٍ مُذْنِبِ,-

 مَالَهُ مِنْ مُشْبِهٍ,- فَازَ اُمَّتُهُ بِهِ

 مَنْ يَمُتْ فِى حُبِّهِ,- نَالَ كُلَّ الْمَطْلَبِ,-

 اَنَا مَفْتُوْنٌ بِهِ,- طَامِعُ فِى قُرْبِهِ

 رَبِّ عَجِّل لِى بِهِ,- عَلَىَّ يَصْفو مَشْرَبِى,-

 كَمْ شَفَا مِنْ اَسْقُمٍ,- كَمْ جَلَا مِنْ اَظْلُمٍ

 كَمْ لَهُ مِنْ اَنْعُمٍ,- لِلْفَطِيْنِ وَالْغَبِى,-

 كَمْ لَهُ مِنْ مُكْرَمَاتٍ,- كَمْ عَطَايَا وَافِرَاتٍ

 كَمْ رَوَتْ عَنْهُ اَلثِّقَاتُ,- كُلُّ عِلْمٍ وَاجِبِ,-

 نِعْمَ ذَاكَ الْمُصْطَفَى,- ذُو الْمَرُوَّةِ وَالْوَفَا

 فَضْلُ اَحْمَدَ مَاخَفَى,- شَرْقَهَا وَالْمَغْرِبِ,-

 كَمْ بِهِ مِنْ مُوْلِعِ,- غِارِقٌ فِى الْاَدْمُعِ

 عَقْلُهُ لَمَّا دُعِىَ,- فِى مَحَبَّتِهِ سُبِى,-

 يَا رَسُوْلَ الله,- يَاخَيْرَ كُلِّ الْاَنْبِيَّاء

 نَجِّنَا مِنْ هَاوِيَه,- يَازَكِىَّ الْمَنْصَبِ,-

حُبُّهُ يَجْلُوالصَّدَاي – وَيَدُلُّ عَلَي الْهُدَي 

فَلَهُ رُوْحِى فِدَا,- ثُمَّ اُمِّى وَاَبِى 

وَعَلَي عَلَمِ الْهُدَى – اَحْمَدُ مُفْنِي الْعِدَى 

جُدْ بِتَسْلِيْمٍ بَدَا – لِلنَّبِىِّ الْيَثْرَبِى,- 

قصيده

بَلَغَ الْعُلى بِكَمَالِهِ * كَشَفَ الدُّجَا بِجَمَا لِهِ,-

حَسُنَتْ جَمِيْعُ خِصَالِهِ * صَلُّوا عَلَيْهِ وَاَلِهِ,- 

خَسَفَ الْقَمَرُ بِجَمَا لِهِ * عَجِزَ الْبَشَرُ بِكَمَا لِهِ,-

نَطَقَ الحَجَرُ بِجَلَالِهِ * صَلُّوا عَلَيْهِ وَاَلِهِ,-

مُلِىَ الْخَلَاءُ بِخَيْرِهِ * خُرِقَ السَّمَاءُ بِسَيْرِهِ,-

مَا سَاغَ ذَالِكَ لِغَيْرِهِ * صَلُّوا عَلَيْهِ وَاَلِهِ,-

شَرَقَ الْمُكَانُ بِنُوْرِهِ * سَرَّ الزَّمَانُ لِسُوْرِهِ –

نُسِخَ الْمِلَلُ بِظُهُوْرِهِ * صَلُّوا عَلَيْهِ وَاَلِهِ,-

كَشَفَ الشِبُهُ بِبَيَانِهِ * رَفَعَ الْعُلَي بِمَكَانِهِ –

اَكْرِمْ بِرَفْعَةِ شَانِهِ * صَلُّوا عَلَيْهِ وَاَلِهِ,-

فَلْتَهْتَدُوُا بِشَرِيْعَتِهِ * ثُمَّ اقْتَدُوْا بِطَرِيْقَتِهِ –

فَتَحَقَّقُوا بِحَقِيْقَتِهِ * صَلُّوا عَلَيْهِ وَاَلِهِ,-

দুরূদ শরীফের শে’র

* বিশ্ব নবীর আগমনে জগত হইল উজ্বালা 

 মধুর নামটি জপন কর ওহে মুমিন নিরালা …ঐ 

* উম্মতি উম্মতি বলে ক্বদম রাখেন দুনিয়ায় 

 এখনো কঁাদেন নবীজী শুয়ে সোনার মদিনায়…ঐ 

* গাছে চিনলো মাছে চিনলো চিনলো বনের হরিণে 

 আবু জাহেল চাচা হয়ে চিনলো না মোর নবীজী কে..ঐ 

* ধন্য গো আমিনা বিবি ধন্য আপনার জিন্দেগী

 আপনার কোলে জন্ম নিলেন মোদের দয়াল নবীজী ..ঐ

* পশু পাখি সবাই বলে আজকে মোদের খুশির দিন

 এ জমিনে তাশরীফ আনলেন রাহমাতুল্লিল আলামীন …. ঐ 

* নিরশ ভূমি সরশ হলো শুকনো গাছে ফুল ফুটিল

 শুকনো স্তনে দুধ আসিল নূর নবীজীর উছিলায়..ঐ 

* তায়েফেতে গেলেন নবীজী ইসলাম প্রচার করিতে

 দুষ্ট কাফির মারল পাথর নূর নবীজীর বদনে…ঐ 

* দুরূদ পড় সবাই মিলে ওহে মুমিন মুসলমান 

 দুরূদেতে আল্লাহ রাজি খুশি নবী দু’জাহান। 

* কে আছে গো এই জগতে বুঝবে মোদের বেদনা 

 বুঝবে যে জন শুইয়া আছেন ঐ যে সোনার মদীনা। 

* দিবা নিশি কঁাদিরে মন আর দিও না যন্ত্রনা 

 ধনে যদি হইতাম ধনী যাইতাম সোনার মদীনা। 

* আল্লাহ তুমি দয়া কর নছীব কর মদীনা 

 নবীজীকে না দেখাইয়া কবরেতে নিও না।

* লক্ষ কোটি সালাম জানাই নূর নবীজীর ক্বদমে 

 দয়া করে পার করিবেন রোজ হাশরের ময়দানে। 

* অজ্ঞতারই অন্ধকারে ছিল যখন এই ধরা 

 আসলেন তখন নিয়ে কোরআন নূর নবীজী মোস্তাফা 

* আরশের নীচে সেজদায় পড়ে কঁাদবেন নবীজী যারেযার 

 মাফ করে দাও ওগো প্রভু উম্মত আমার গোনাগার। 

* ৬৩ বৎসর ছিলেন নবী এই যে বিশাল দূনিয়ায়

 কঁান্দিতেন উম্মতের লাগি আজ ও কঁান্দেন মদিনায়।

* তোমার তুলনা নবী সৃষ্টি কুলে মিলেনা

 উম্মত হয়ে ধন্য মোরা সালাম জানাই মদিনা। 

আল্লাহ, আল্লাহ, আল্লাহু, লা ইলাহা ইল্লাহু

* গোনাহগারের বন্ধু তুমি উম্মতের কান্ডার 

 রোজ হাশরে পার করিবেন উম্মত গোনাহগার, নবীজী। ঐ 

* আসমান জমিন চঁাদ ছিতারা জিন্নাত ও ইনসান 

 তোমার নূরে হইল পয়দা এ ছারে জাহান নবীজী। ঐ

* যার ইশারায় চন্দ্র সূর্য দুই ভাগ হইয়া যায়

 হাজার সালাম জানাই মোরা ঐ নবীজীর পায়, নবীজী। ঐ 

* শান্তি দাতা মুক্তি দাতা হাবীব ও আল্লার 

 যাহা উপর পরেন দূরূদ ফেরেস্তা খোদার, নবীজী। ঐ 

* দুজাহানের বাদশা নবী এলেনরে দূনিয়ায় 

 জিন, পরী, ফিরিস্তা, সালাম জানায় নবী পায়, নবীজী। ঐ 

* গোনাহগারের গোনাহ ঝরে দূরূদে আপনার

 রোজ হাশরে তরাইবেন উম্মত গোনাহগার, নবীজী। ঐ

* সাত সাগরের কালি বানাইয়া লিখিলে বয়ান

 শেষ করিবে এমন নাহি আপনার গুনগান, নবীজী। ঐ 

* মউতের তুফান আসবে যখন নবীগো আমার

 তখন যেন দেখিতে পাই চেহরায়ে আনওয়ার, নবীজী। ঐ

* শান্তি দাতা মুক্তি দাতা এলেনরে দুনিয়ায় 

 আসেন সবাই দঁাড়াইয়া সালাম ও জানাই, নবীজী। ঐ 

بِسْمِ اللهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيْمِ 

نَحْمَدُهُ وَنُصَلَّى عَلىَ رَسُوْلِه الكَرِيْم,-

اَبْتَدِءُ الْاِمْلَاءَ بِاسْمِ الذَّاتِ العَلِيَّة,-مُسْتَدِرًّا فَيْضَ الْبَرَكَاتِ عَلَى مَا اَنَا لَهُ وَاَوْلَاهُ,-وَاُثْنِىَ بِحَمْدِ مَوَارِدُهُ سَائِغَةُ هَنِية,-مُمْتَطَاءً مِنَ الْشُكْرِ الْجَمِيْلِ مَطَايَاهُ,-وَاُصَلِّى وَاُسَلِّمُ عَلَى النُّوْرُ الْمَوْصُوْفِ بِالتَّقَدُّمِ وَالْاَوَّلِيَّةِ,-اَلْمُنْتَقِلِ فِى الْغُرَرِ الْكَرِيْمَةِ وَالْجِبَاه,-وَاَسْتَمْنِحُ اللهَ تَعَالَى رِضْوَانَا يَخُصُّ الْعِتْرَةِ الطَاهِرَةَ النَّبَوِيَّةُ,-وَيَعُمُّ اَلْصَّحَابَةَ وَالْاَتْبَاعَ وَمَنْ وَّالَاه,-وَاَسْتَجْدِيْهِ هِدَايَةً لِسُلُوْكِ السُّبُلِ الْوَاضِحَةِ الْجَلِيَّةِ,-وَحِفْظَا مِّنَ الْغَوَايَةِ فِى خُطَطِ الْخَطَاءِ وَخُطَاهُ,-وَاَنْشُرُ مِنْ قِصَّةِ الْمَوْلِدِ الشَّرِيْفِ النَّبَوِىِّ بُرُوْدًا حِسَانًا عَبْقَرِيَّة,- نَاظِمًا مِنَ النَّسَبِ الشَّرِيْفِ عِقْدًا تَحَلَّى الْمَسَامِعُ بِحُلَاه,-وَاسْتَعِيْنُ بِحَوْلِ اللهِ تَعَالَى وَقُوَّتِهِ اَلْقَوِيَّةِ,-فَاِنَّهُ لَاحَوْلَ وَلَاقُوَّةَ اِلَّا بِاللهِ,-

عَطِّرِ اللهم قَبْرَهُ الْكَرِيْمَ,-بِعَرْفٍ شَذِىٍّ مِنْ صَلَواةٍ وَتَسْلِيْمٍ,- اللهم صَلِّ وَسَلِّمْ وَبَارِكْ عَلَيْهِ –

মহান আল্লাহ পাকের নামে শুরুকরছি, আল্লাহ পাক আমাকে যে নিয়ামত ও দৌলত দান করেছেন তাঁর ফয়েজ ও কল্যাণ লাভের আশায়। আমি উত্তম কৃতজ্ঞতা পাশে আবদ্ধ হয়ে তাঁর এমন প্রশংসা করছি যা সবাইকে সন্তুষ্ট ও আনন্দিত করতে সক্ষম। এবং দরুদ ও সালাম সেই মহান নূরে মুহাম্মদীর খেদমতে যিনি হচ্ছেন সৃষ্ঠির আদি ও প্রথম, যে মহান নূর পর্যায়ক্রমে উজ্জল পবিত্র ললাট দেশ সমূহ বহিয়া এসেছেন। আমি বিশেষভাবে হুজুরে পাক (ﷺ)ের পবিত্র খান্দানের জন্য এবং সাধারণভাবে ছাহাবায়ে কেরাম এবং তাঁদের অনুসারী ও আপনজনদের জন্য মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি কামনা করছি। আমি সরল সঠিক পথে চলার জন্য এবং শয়তান ও প্রবৃত্তির কুমন্ত্রণা হতে পরিত্রাণের জন্য তাওফীক কামনা করছি। আমি মহানবী (ﷺ)ের পবিত্র জন্ম বৃত্তান্ত বর্ণনার মাধ্যমে এমন মনোরম, সুসজ্জিত গালিচা বিছিয়ে দিচ্ছি; তাঁর মহান নসব নামা দিয়ে এমন মুক্তামালা রচনা করছি যা আশেকানদের কানে অনুপম শোভা ছড়াবে। আমি আল্লাহপাকের কাছে তাওফীক কামনা করছি কারণ আল্লাহ পাকের সাহায্য ও শক্তি ব্যতীত আর কোন সাহায্য ও শক্তি নাই। 

ذكر اسماء اجداده الكرام صلى الله عليه وسلم,-

فَاقَوْلُ هُوَ سَيِّدُنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدُ اللهِ بْنُ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ وَاسْمُهُ شَيْبَةُ الْحَمْدِ بْنُ هَاشِمٍ وَاسْمُهُ عَمْرُو بْنُ عَبْدِ مَنَافِ وَاسْمُهُ المُغِيْرَةُ بْنُ قُصَىٍ وَاسْمُهُ مُجَمِّعٌ سُمِّىَ بِقُصَىٍّ لِتَقَاصِيْهِ فِى بِلَادِ قُضَاعَةِ الْقَصِيِّه,-اِلَى اَنْ اَعَادَهُ اللهُ تَعَالَى اِلَى الْحَرَمِ اَلْمُحْتَرَمِ فَحَمَا حِمَاهُ,-اِبْنُ كِلَابٍ وَاسْمُهُ حَكِيْمٌ بْنِ مُرَّةَ بْنِ كَعْبٍ بْنِ لُوَىِّ بْنِ غَالِبِ بْنِ فِهْرٍ وَاسْمُهُ قُرَيْشٌ وَاِلَيْهِ

تُنْسَبُ الْبُطُوْنُ الْقُرَ شِيَّة,-وَمَا فَوْقَهُ كِنَانِيَّةٌ كَمَا جَنَحَ اِلَيْهِ الْكَثِيْرُ, وَارْتَضَاهُ,-اِبْنُ مَالِكِ بْنِ النَّضَرِ بْنِ كِنَانَةَ بْنِ خُزَيْمَةَ بْنِ مُدْرِكَةَ بْنِ اِلْيَاس,-وَهُوَ اَوَّلُ مَنْ اَهْدَى الْبُدْنَ اِلَى الرِّحَابِ الْحَرَمِيَّة وَسُمِعَ فِى صُلْبِهِ النَّبِيِّ الْاَكْرِم صَلَّ اللهُ عَلَيْهِ وَ سَلَّمَ ذَكَرَ اللهُ تَعَالَى وَلَبَّاهُ,-اِبْنُ مُضَرِ بْنِ نِزَارِ بْنِ مَعْدِ بْنُ عَدْنَان,-وَهَذَا سِلْكٌ نَظَمَتَ فَرَائِدَهُ بَنَانُ السُّنَّةِ السَّنِيَّةُ,-وَرَفْعُهُ اِلَى الْخَلِيْلِ اِبْرَاهِيْمَ عَلَيْهِ السَّلَام اَمْسَكَ عَنْهُ الشَّارِعُ وَاَبَاهُ,-وَعَدْنَانُ بِلَا رَيْبٍ عِنْدَ ذَوِىْ العُلُوْمِ النَّسَبِيَّةِ اِلَى الذَّبِيْح اِسْمَاعِيْلَ عَلَيْهِ السَّلاَمِ نِسْبَتُهُ وَمُنْتَهَاهُ,-فَاَعْظِمْ بِهِ مِنْ عِقْدٍ تَاَلَّقَتْ كَوَاكِبُهُ الدُّرِّيَّةُ وَكَيْفَ لَا وَالسَّيِّدُ الْاَكْرَمُ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَاسِطَتُهُ الْمُنْتَقَاهُ,-

 عَطِّرِ اللهم قَبْرَهُ الْكَرِيْمَ,-بِعَرْفٍ شَذِىٍّ مِنْ صَلَواةٍ وَتَسْلِيْمٍ,- اللهم صَلِّ وَسَلِّمْ وَبَارِكْ عَلَيْهِ .

(অতএব আমি বলছি) তিনি হচ্ছেন মুহাম্মাদ ইবনে আব্দুল্লাহ ইবনে আব্দুল মুত্তালিব, তাঁর আসল নাম শায়বাতুল হামদ, ইবনে হাশিম, তাঁর আসল নাম আমর, ইবনে আবদে মানাফ, তাঁর আসল নাম মুগিরা, ইবনে কুসাই, তাঁর আসল নাম মুজাম্মা, তাঁর নাম কুসাই রাখা হয় যেহেতু ক্বুদাআহ গোত্রের দূর দূরান্তের শহরগুলিতে তিনি ভ্রমণ করেছিলেন, অবশেষে আল্লাহ পাক তাঁকে পবিত্র হারাম শরীফে ফিরিয়ে আনেন এবং তিনি হরম শরীফের যথাযথ রক্ষণাব্বেণ করেন। কুসাই ছিলেন কিলাবের পুত্র, তাঁর আসল নাম হাকীম, ইবনে মুররাহ, ইবনে কাব, ইবনে লুওয়াই, ইবনে গালিব, ইবনে ফিহর, তাঁর আসল নাম কুরাইশ, কুরাইশ গোত্রের বিভিন্ন শাখাগুলিকে এই কুরাইশ উপাধির দিকেই সম্বন্ধ করা হয়েছে। তাঁর উধর্ক্ষতন গোত্র কেনানিয়্যাহ নামে অভিহিত, এটাই হচ্ছে অধিকাংশ আলিমগণের পছন্দনীয় মত, ফিহর হচ্ছেন ইবনে মারিক, ইবনে নাদ্বর, ইবনে কেনানাহ, ইবনে খুজাইমাহ, ইবনে মুদরিকাহ, ইবনে ইলিয়াছ, ইনিই হরম শরীফে সর্বপ্রথম কুরবানী দিয়েছিলেন এবং তাঁর পৃষ্টদেশ হতে মহানবী (ﷺ)ের জিকর এবং তালবিয়া বা লাব্বাইকা ধক্ষনি শুনা যেত। ইলিয়াছ হচ্ছেন ইবনে মুদার, ইবনে নাজার, ইবনে মাদ, ইবনে আদনান। মহানবী (ﷺ) তাঁর বংশষূত্র হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম পর্যন্ত বর্ণনা করে ক্ষান্ত হয়েছেন। ইলমুল আনসাবে অভিজ্ঞদের মতে আদনান ছিলেন ইসমাঈল আলাইহিস সালাম এর বংশের অন্তর্গত। এই বংশ কতইনা উত্তম যারা তারাকারাজির ন্যায় দেদিপ্যমান, আর কেনই বা হবে না এই বংশেই তো রয়েছেন আমাদের মহানবী মুহাম্মদ (ﷺ) ।

نَسَبٌ تَحْسِبُ الْعُلَا بحُلَاهُ,

– قَلَّدَتْهَا نُجُوْمُهَا الْجَوْزَاءُ- 

حَبَّذَا عِقْدُ سُوْدَدٍ وَفَخَارٍ،

اَنْتَ فِيْهِ الْيَتِيْمَةُ الْعَصْمَاءُ،

وَاَكْرِمْ بِهِ مِنْ نَسَبٍ طَهَّرَهُ اللهُ تَعَالَى مِنْ سِفَاحِ الْجَاهِلِيَّةِ,-

اَوْرَدَ الزَّيْنُ وَارَدةَُ الْعِرَاقِىُّ فِى مَوْرِدِ الْهَنِىِّ وَرَوَاهُ,

حَفِظَ الْاِلَهُ كَرَامَةً لِّمُحَمَّدُ اَبَائَهُ الْاَمْجَادَ صَوْنًا لِاسْمِهِ,- 

تَرَكُوْا السِّفَاحَ فَلَمْ يُصِبْهُمْ عَارُهُ,-

مِنْ اَدَمَ اِلَى اَبِيْهِ وَاُمِّهِ,-

سَرَاةُ سَرَاى نُورُ النَّبُوَّةِ فِى اَسَارِيْرِ غُرَرِهِمُ الْبَهِيَّة,-

وَبَدَرَبَدْرُهُ فِى جَبِيْنِ,-

عَبْدِ الْمُطَّلِبِ وَابْنهِ عَبْدِ اللهِ,-

عَطِّرِ اللهم قَبْرَهُ الْكَرِيْمَ,-بِ

عَرْفٍ شَذِىٍّ مِنْ صَلَواةٍ وَتَسْلِيْمٍ,- 

اللهم صَلِّ وَسَلِّمْ وَبَارِكْ عَلَيْهِ 

মহানবী (ﷺ)’র বংশ নিজ মহিমায় উচ্চ মর্যাদা লাভ করেছে। যে উচ্চ মর্যাদার মহান মালা পরিধান করেছেন ঐ বংশের স্বনামধন্য তারকাগণ। কতইনা উত্তম নেতৃত্ব ও গৌরবের সে মালা। (ইয়া রাসূলাল্লাহ) আপনি সেই বংশের পুত;পবিত্র একমাত্র দুর্রে ইয়াতীম। 

কতইনা মহান সেই বংশ, আল্লাহ যে বংশকে জাহিলিয়াতের সমস্ত পঙ্খিলতা ও ব্যভিচার থেকে পাক রেখেছেন। হযরত জাইনুদ্দীন জাকারিয়া ইরাক্বী (রাহ.) তাঁর রচিত (মীলাদ শরীফের) আল-মাওরিদুল হানি নামক কিতাবে এ বিষয়ে বিষদ আলোচনা করেছেন। 

আল্লাহ রাব্বুল আলামীন হযরত মুহাম্মদ (ﷺ)ের সম্মানে, তাঁর নামের ওসিলা ও বরকতে তাঁর পূর্ব পূরুষ (দাদা,-দাদী ও নানা,-নানী) দেরকে (শিরক সহ যাবতীয় পাপাচার থেকে) হেফাজত করেছে। জাহিলিয়াতের জিনা ব্যভিচার ত্যাগ করার কারণে হযরত আদম আলাইহিসসালাম থেকে নিয়ে তাঁর বাবা হযরত আব্দুল্লাহ (রাদ্বি:) এবং তাঁর মা জননী হযরত আমিনা (রাদ্বি:) পর্যন্ত কাউকে জিনা ব্যভিচারের দুর্নাম স্পর্শ করতে পারেনি। 

মহানবী (ﷺ)’র পূর্বপুরুষগণ নিজ নিজ জামানার নেতৃস্থানীয় এবং পুত,-পবিত্র ব্যক্তিত্ব ছিলেন, তাঁদের ললাটের চি‎ে‎হ্ন ছিল নূরে নবুওয়তের আমানত বিদ্যমান। যে আমানতের পূর্ণিমাশশীর কিরণে আলেময় ছিল খাজা আব্দুল মুত্তালিব এবং তদীয় পুত্র হযরত আব্দুল্লাহ (রাদ্বি:) র মুবারক পেশ। 

ذكر ار هاصات قبل الولادة الشريفة,-

وَلَمَّا اَرَادَ الله تَبَارَكَ وَتَعَالَى اِبْرَازَ حَقِيْقَتِهِ الْمُحَمَّدِيِّةِ,-وَاِظْهَارَهُ جِسْمً وَرُوْحًا بِصُوْرَتِهِ وَمَعْنَاهُ,- نَقَلَهُ اِلَى مَقَرَّهِ مِنَ صَّدَفَةِ اَمِنَةَ الزُّهْرِيَّة,- وَخَصَّهَا القَرِيْبُ المُجِيْبُ بِاَنْ تَكُوْنَ اُمًّا لِّمُصْطَفَاهُ,-وَنُوْدِىَ فِى السَّمَوَاتِ وَالْاَرْضِ بِحَمْلِهَا لِاَنْوَارِهِ الذَّاتِيَّةِ,-وَصَبَا كُلُّ صَبٍّ لِهُبُوْبِ نَسِيْمِ صَبَاهُ,- وَكُسِيَتِ الْاَرْضُ بَعْدَ طُوْلِ جَدْبِهَا مِنَ النَّبَاتِ حُلَلًا سُنْدُسِيَّة وَاَيْنَعَتِ الثِّمَارُ وَاَدْنَى الشَّجَرَ لِلْجَانِى جَنَاهُ,- وَنَطَقَتْ بِحَمْلِهِ كُلُّ دَابَّةٍ لِقُرَيْشٍ بِفِصَاحِ الْاَلْسُنِ العَرَبِيَّةِ,- وَخَرَّتِ الْاَسِرَّةُ, – وَالْاَصْنَامُ عَلَى الْوَجُوْهِ وَالْاَفْوَاهُ,- وَتَبَاشَرَتْ وَحُوْشُ الْمَشَارِقِ وَالْمَغَارِبِ وَدَوَابُّهَا الْبَحْرِيَّةُ,- وَاحْتَسَّتِ العَوَالِمُ مِنَ السُّرُوْرِ كَأسَ حُمَيَّاهُ,-وَبَشَّرَتِ الْجِنُّ بِاظِلَالِ زَمَنِهِ وَانْتَهَكَتِ الْكَهَانَةُ وَرُهِبَتِ الرُّهْبَانِيَّةُ,- وَلَهِجَ بِخَبرِهِ كُلُّ حِبْرٍ خَبِيْرٍ وَفِى حُلَا حُسْنِهِ تَاهُ,- وَاُوْتِيَتْ اُمُّهُ فِى الْمَنَامِ فَقِيْلَ لَهَا اِنَّكِ قَدْ حُمَلَتِ بِسَيِّدِ الْعَالَمِيْنَ وَخَيْرِ الْبَرِيَّةِ,- فَسَمِّيْهِ اِذَا وَضَعْتِهِ مُحَمَّدًا فَاِنَّهُ سَتُحْمَدُ عُقْبَاهُ,-

عَطِّرِ اللهم قَبْرَهُ الْكَرِيْمَ,-بِعَرْفٍ شَذِىٍّ مِنْ صَلَواةٍ وَتَسْلِيْمٍ,- اللهم صَلِّ وَسَلِّمْ وَبَارِكْ عَلَيْهِ,-

যখন আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তাঁর হাকীকতে মুহাম্মাদী উন্মুক্ত করতে এবং তাঁকে দেহ ও আত্মার সমন্বয়ে, স্বআকৃতিতে বিশ্ববাসীর সামনে প্রকাশ করতে মনস্থ করলেন তখন সেই নূরে মুহাম্মদীকে (হযরত আব্দুল্লাহর ললাট দেশ হতে) হযরত আমিনার রেহেমে (আমানত) স্থানান্তর করলেন এবং তাঁকে (হযরত আমিনা) নবী মুস্তাফার মা জননী হিসেবে মনোনীত করলেন। আসমান জমিনে এই সংবাদ জানিয়ে দেয়া হল যে, নূরে মুহাম্মদী হযরত আমিনার কাছে স্থানান্তর করা হয়েছে। দীঘৃ দুর্ভিক্ষপীড়িত আরব দেশে মঙ্গল সমীরণ প্রবাহিত হতে লাগল, বৃক্ষলতার মুকুল অঙ্কুরিত হল, ফলে ফুলে জমিন ভরপুর হয়ে গেল, বৃক্ষ সমূহ ফল সম্ভারে নুয়ে পড়ল। কুরাইশদের চতুষ্পদ জন্তগুলী পরস্পর বিশুদ্ধ আরবী ভাষায় বিবি আমেনার গর্ভের সংবাদ বলাবলি করতে লাগল, বিভিন্ন রাজা,-বাদশাহর সিংহাসন উল্টে পড়ে গেল এবং মূর্তিগুলী উপুড় হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ল। তামাম দুনিয়ার সমস্ত জীব,-জন্তু এমনকি জলচর প্রাণীগুলো পর্যন্ত নবী মুস্তাফার শুভাগমণের বিষয় পরস্পর আলাপ আলোচনা করতে লাগল। সমগ্র বিশ্ববাসী আনন্দ শরবত পানে মত্ত হল, জ্বিন জাতিও সুসংবাদ প্রচার করতে লাগল যে, মুহাম্মদ (ﷺ)ের জন্মের শুভ লগ্ন সমাগত হয়েছে। জ্যোতিষীগণের গণনা এবং বৈরাগীদের যপতপ ব্যর্থ হল, জ্ঞানী (বুযুর্গ ব্যক্তি) গণ নবীজীর শুভাগমনের সংবাদে আপ­ুত হলেন এবং তাঁর পবিত্র অবয়বের আলৌকিক প্রভা দর্শন করে বিস্ময়ে বিমুগ্ধ হলেন। তাঁর মা জননী (হযরত আমিনা) কে স্বপ্নযোগে সুসংবাদ দেয়া হল যে, জগৎবরেণ্য, সৃষ্টির সেরা সন্তান আপনি গর্ভে ধারণ করেছে, তিনি যখন ভূমিষ্ট হবেন তখন নাম রাখবেন মুহাম্মদ ((ﷺ) ), কারণ শীঘ্রই তিনি প্রশংসিত হবেন। 

وذكر وفات عبد الله والد رسول الله صلى الله عليه وسلم

وَلَمَّا تَمَّ مِنْ حَمْلِهِ صَلىَّ الله عَلَيْهِ وَسَلَّمَ شَهْرَانِ عَلى اَشْهَرِ الْاَقْوَال الْمَرْوِيَةُ,-تُوُفِىَ بِالمَدِينَةِ الشَّرِيفَةِ المُنَوَّرَةِ اَبُوْهُ عَبْدُ الله وَكَانَ قَدِاجْتَازَ بِاَخْوَالِهِ بَنِى عَدَىٍّ مِنَ الطَّائِفَةِ النَّجَّارِيَةِ,-وَمَكَثَ فِيْهِمْ شَهْرًا سَقِيْمًا يُعَانُوْنَ سُقْمَهُ وَشَكْوَاهُ,-وَلَمَّا تَمَّ مِنْ حَمْلِهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلَى الرَّاجْحِ تِسْعَةُ اَشْهُرِ قَمَرِيَّةُ,- وَاَنَ للِزَّمَانَ اَنْ يَّنْجَلِى عَنْهُ صَدَاهُ,-حَضَرَتْ اُمَّهُ لَيْلَةَ مَوْلُدِهِ اَسِيَّةُ وَمَرْيَمُ فِى نِسْوَةٍ مِن الحَظِيْرَةِ الْقُدْسِيَّةُ,-وَاَخَذَهَا الْمَخَاضُ فَوَلَدَتْهُ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نُوْرَا يَتَلَأ لَاُ سِنَاهُ,-

যখন নবী পাক (ﷺ)’র মাতৃগর্ভে মাত্র দুই মাস পূর্ণ হয়েছে তখন তাঁর পিতা (হযরত আব্দুল্লাহ) মদীনা শরীফে ইন্তেকাল করেন। ব্যবসায়িক একটি কাফেলার সাথে থাকা অবস্থায় তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁর মাতুলালয় বনী আদি গোত্রে এক মাস অবস্থানের পর তিনি সেখানে ইন্তেকাল করেন। 

যখন নয়টি চন্দ্র মাস পূর্ণ হয়ে গেল এবং নবী পাকের জন্মলগ্ন নিকটবর্তী হয়ে গেল তখন হযরত আমিনার সেবা যত্নের উদ্দেশ্যে হযরত আছিয়া এবং হযরত মারিয়াম (عليه الصلاة والسلام) হাজিরায়ে কুদসিয়া (বেহেশতের একটি জায়গা) থেকে আরো কতিপয় মহিলা সহযোগে হযরত আমিনার খেদমতে হাজির হলেন। সময় মত তাঁর প্রসব ব্যথা আরম্ভ হল এবং নূর নবী মুহাম্মদ (ﷺ) দুনিয়ার বুকে শুভাগমন করলেন। 

صلى الله على محمد,- صلى الله عليه وسلم

طَلَعَ الْبَدْرُ عَلَيْنَا,- مِنْ ثَنِيَاتِ الْوَدَاعِ,-.

وَجَبَ الشُّكْرُ عَلَيْنَا – مَا دَعَا لِلّهَِ دَاعِ,-

اَيُّهَا الْمَبْعُوْثُ فِيْنَا,- جِئْتَ بِالْاَمْرِ الْمُطَاعِ,- 

وَقَدْ لَبِسْنَا ثَوْبَ عِزٍّ,- بَعْدَ تَلْفِيْقِ الرَّقَاعِ –

وَرَضَعْنَا ثَدْيَى وَصْلٍ- قَبْلَ اَيَّامِ الرَّضَاعِ

كُنْ شَفِيْعِى يَا حَبِيْبِى – يَوْمَ حَشْرٍ وَاِجْتِمَاعِ

رَبَّنَا صَلِّ عَلَى مَنْ,- حَلَّ فِى خَيْرِ الْبِقَاعِ,- 

وَاسْبُلِ السِّتْرَ عَلَيْنَا – يَا مُجِيْبَ كُلِّ دَاعِ,- 

وَعَلَى عِشْقِ الْجَمَالِ,- طَبَّعَ اللهُ الطِّبَاعِ,- 

وَصَلَوَةُ اللهِ عَلَى اَحْمَدِ,- مَا سَعَى اللهِ سَاعِ,- 

আরবী ক্বিয়াম-

 يَا نَبِى سَلَامُ عَلَيْكَ,- يَا رَسُولْ سَلَامُ عَلَيْكَ

 يَاحَبِيْب سَلَامُ عَلَيْكَ,- صَلَوَاتُ الله عَلَيْكَ

 اَشْرَقَ الْبَدْرُ عَلَيْنَا,- وَاخْتَفَتْ مِنْهُ الْبُدُوْرِ

 مِثْلَ حُسْنِكْ مَا رَاَيْنَا,- قَطُّ يَا وَجْهَ السُّرُوْرِ

 اَنْتَ شَمْسٌ اَنْتَ بَدْرٌ,- اَنْتَ نُوْرٌ فَوْقَ نُوْرِ

 اَنْتَ اِكْسِيْرُ وَغَالِى,- اَنْتَ مِصْبَاحُ الصُّدُوْرِ

 يَا حَبِيْبِى يَامُحَمَّد,- يَاعَرُوْسَ الخَافِقَيْنِ

 يَامُؤَيَّدْ يَامُمَجَّدْ,- يَا اِمَامَ الْقِبْلَتَينِ

 مَن يَّرَى وَجْهَكَ يَسْعَد,- يَاكَرِيْمَ الْوَالِدَيْنِ

 حَوْضُكَ الصَّافِى المُبَرَّدْ,- وِرْدُنَا يَوْمَ النُّشُوْرِ 

 مَا رَايْنَا الْعِيْسَ حَنَّتْ,- بِالسُّرَاى اِلاَّ اِلَيْكَ

 وَالْغَمَامَةُ لَكَ اَظَلَّتْ,- وَالْمَلَا صَلُّو عَلَيْكَ

 وَاَتَاكَ الْعُوْدُ يَبْكِى,- وَتَذَلَّلْ بَيْنَ يَدَيْكَ

 وَاسْتَجَارَتْ يَا حَبِيْبِى,- عِنْدَكَ الظَّبْىُ النُّفُوْرِ

 عِندَ مَا شَدُّوا الْمَحَامِلَ,- وَتَنَادَوْا لِلرَّحِيْلِ

 جِئْتُهُمْ وَالدَّمْعُ سَائِلٌ,- قُلْتُ قِفْ لِى يَادَلِيْل

 وَصَلَوَتُ اللهِ عَلَى اَحْمَدْ,- عِدَّةَ اَحْرُفِ السُطُوْرِ

 اَحْمَدُ الْهَادِىْ مُحَمًّدُ,- صَاحِبُ الْوَجْهِ الْمُنِيْرِ

 يَا رَبِّ صَلِّ وَسَلِّمْ دَائِمًا اَبَدَا,- عَلى حَبِيْبِكَ خَيرِ الخَلْقِ كُلِّهِم,-

بَلَغَ العلى بكماله كشف الدجى بجماله

حَسُنَتْ جَمِيْعُ خِصَالِهِ صَلُّوا عَلَيْهِ وَاَلِهِ 

اِنْ نِلْتَ يَارِيْحَ الصَّبَا يَوْمًا اِلَى اَرْضِ الْحَرَامِ 

بَلِّغْ سَلاَمِى رَوْضَةً فِيْهَا النَّبِىُّ الْمُحْتَرَمِ 

مَنْ وَجْهُهُ شَمْسُ الضُّحَى مَنْ خَدُّهُ بَدْرُ الدَّجَى

مَنْ ذَاتَهُ نُوْرُ الْهُدَاى مَنْ كَفُّهُ بَحْرُ الْهِمَمِ 

يَا رَحْمَةَ لِّلْعَالَمِيْنَ اَنْتَ شَفِيْعُ الْمُذْنِبِيْنَ 

اَكْرِمْ لَنَا يَوْمَ الْحَزِيْنَ فَضْلَا وًّجُوْدً اوًّ الْكَرَمِ

يَا مُصْطَفَى وَالْمُجْتَبَى : اِرْحَمْ عَلَى عِصْيَانِنَا 

مَجْبُوْرَةٌ اَعْمَالُنَا:طَمْعًا وَذَنْبًا وَالظُّلَمِ

——————————————————

মিলাদুন্নবী  (ﷺ) উপলক্ষে যারা গ্রন্থ লিখেছেন 

১.    তাকয়ীদাতু আলা মাওলিদিন নাবী লিআহমদ দারিরী – মুহাম্মদ বিন 

২.    আমির আল মালাকী ১২৩২হিজরী ।

৩.    তুহফাতুল বাশির আলা মাওলিদে বিন হাযর ইব্রাহীম বিজয়ূরী মীলাদুন্নবী১২৭৭ 

৪.    হিজরী ।

৫.    হাছাবী, আবি ওফা ফি মাওলিদিল মুস্তফা ইব্রাহীম বিন আলী বিন ইব্রাহীম বিন ওফা আল ইরাকী ৮৭৭ হিজরী।

৬.    দুরাজুদ দুরুর ফি মীলাদি সাইয়্যিদিল বাশির- আছিলুদ্দিন আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রহমান শিরাজী ৮৮৪ হিজরী ।

৭.    আদ্দুরূল মানাজ্জাম ফি মাওলিদিন নাবীয়িল আয়জাম- মুহাম্মদ বিন উছমান লুওলুয়ী দামেশকী ৮৬৭ হিজরী।

৮.    আদদুররাতুছ ছানীয়া ফি মাওলিদি খাইরিল বারীয়্যা – হাফীজ সালাউদ্দীন খলিল বিন কাইকালদী আলাভী ৭৬১ হিজরী।

৯.    জিকরে মাওলিদু রাসূলুল্লাহ- হাফিজ ইবনে কাছীর ৭৭৪ হিজরী।

১০.    আর রাদ্দু আলা ইনকারিল কিয়াম ইন্দা ওলাদাতিহ – মাগলুতাবী বিন কালিজ ৭৬২ হিজরী।

১১.    মাওরিদুস সাদী ফি মাওলিদিল হাদী ইবনে নাছির উদ্দীন দিমাসকী ৮৪২ হিজরী ।

১২.    মাওলিদুন নববী ফি ছালাছাতি আছফার 

১৩.    মাওলিদুন নবী -কামালুদ্দীন আবি মুয়াল্লি মুহাম্মদ বিন আলী বিন আব্দুল ওয়াহিদ আজ্জামলাকানী ৭২৭ হিজরী । 

১৪.    আল মুৃনতাকী ফি মাওলিদিন নাবীয়্যিল মুস্তফা – কাজারনী সায়িদ উদ্দীন মুহাম্মাদ বিন মাসউদ বিন মুহাম্মদ ৭৫৮ হিজরী।

১৫.    মাওলিদুন নাবী (ﷺ) – ফকিহ আন্নাহুবী হুসাইন বাহরূবী ৯৯৪ হিজরী।

১৬.    ইরতেশাফুত তারিব ফি সাইয়্যিদিল আজামী ওয়াল আরব- মুহাম্মদ বি ইবনে জাবির। ৭৮০ হিজরী।

১৭.    আরফুত তারিফ ফি মাওলিদিশ শরীফ মুহাম্মদ বিন মুহাম্মদ বিন জাজরী ৮৩৩ হিজরী ।

১৮.    আল মাওলিদ -মুহাম্মদ বিন আহমদ বিন জাবির আন্দালুছী ৭৮০ হিজরী।

১৯.    মাওলিদুন্নাবী-কামালুদ্দীন আবিল মুয়াল্লি মুহাম্মদ বিন আলী বিন আব্দুল ওয়াহিদ জামলাকানী৭২৭ হিজরী।

২০.    আল আখবার বিওয়াফাতিল মুখতার, ইবনে নাছির উদ্দীন দিমাস্কী ৮৪২ হিজরী। 

২১.    আল উনজার বি ওয়াফাতিন নাবীয়্যিল মুস্তফা আল মুখতার – জইনুদ্দিন আব্দুর রহমান বিন আবি বকর দাউদ সালেহী আদ দিমাসকি। ৮৫৬ হিজরী

২২.    তুহফাতুল আবরার লি ওয়াফাতিল মুখতার – মুহাম্মদ বিন উছমান লুওলুয়ী আদ দিমাসকী। ৮৬৭ হিজরী

২৩.    ছালাওয়াতিল কাইয়্যিব বি ওয়াফাতিল হাবিব- আবি বকর বিন মুহাম্মদ আল হুসানী। ৮২৯ হিজরী।

২৪.    ছালাওয়াতিল কাইয়্যিব বি ওয়াফাতিল হাবিব আবি ইবনে নাসির উদ্দিন মুহাম্মদ বিন আব্দুল্লাহ বিন মুহাম্মাদ আল কাইছি আদ দিমাসকি ৮৪২ হিজরী।

২৫.    আল কাওয়াকিবুদ দুররিয়্যাতু ফি ওয়াফাতি খাইরিল বারিয়্যাহ – আবি বকর আব্দুর রহমান বিন মুহাম্মদ আল বাসতামী ৮৫৮ হিজরী ।

২৬.    মাওলিদিন নাবিয়্যি (ﷺ) – সুলাইমান বিন আউদ বাশা বিন মাহমুদ বারুছী।৭৮০ হিজরী 

২৭.    আছনিল মুস্তফা ফি মাওলিদিল মুস্তফা – ইউসুফ জাদা রুমী। ১১৬৭ হিজরী 

মাওলিদুন্নবী (ﷺ) -বাদায়ী কাশগরী নকশবন্দী ১১৭৪ হিজরী 

২৮.    মাওলিদুন নাবী (ﷺ) মানজুমাতু তারকিয়া – শাইখ আব্দুল কারিম আদরানতুবী আল খালুতী ১১৭৪ হিজরী।

২৯.    মাওলিদুল হাদীয়্যিল বাশিরুন নাজির (ﷺ) ৮৮৫১১৭৪ হিজরী ।

৩০.    শরহে আলা মাওলিদুন নজম আল খাইতি আলী বিন আব্দুল কাদির নাবতানী। ১০৬১ হিজরী

৩১.    তানিছু আরবাবুস সাফা ফি মাওলিদিল মুস্তফা- ইবনে সালেহ আমির সানআনী। ১১৭১ হিজরী

৩২.    মাওলিদুন্নবী (ﷺ) -হাবিব উমর আব্দুর রহমান বালাবী। ৮৮৯ হিজরী 

৩৩.    নাজমুদ দরুর ফি মাদহি সাইয়্যিদিল বাশির (ﷺ) আব্দুল্লাহ আতারী ৭০৭ হিজরী

৩৪.    মানাছিকুল হুজ্জাযিল মুনতাকি মিন সিরুমাওলিদুন্নাবীয়্যিল মুসতফা (ﷺ) – মুহাম্মদ বিন মাসউদ কাজারনী৭৫৮ ১১৭৪ হিজরী 

৩৫.    আন নাফহাতুল আম্বারিয়াতু ফি মাওলিদি খাইরিল বারিয়্যাতু (ﷺ) – ফিরূজ আবাদী ।৮১৭ হিজরী 

৩৬.    আল রাফজুল জামিল ফি মাওলিদিন নাবীয়্যিল জালিল মুহাম্মদ বিন ফখরুদ্দীন উসমান লুওলুবী ৮৬৭ হিজরী 

৩৭.    আল জামিউল আযহারিল মুনির ফি জিকরি মাওলিদিল বাশিরুন নাজির – নুসুহী আররুমী। ১১৩০ হিজরী

৩৮.    মাওলিদুন্নবী (ﷺ) সাইয়্যিদ, মুহাম্মদ বিন হাসানী জাফরী।১১৮৬ হিজরী 

৩৯.    ওয়াল হাদী হাদীয়ি মুহাম্মাদ বিন উবাদাতা আদুবী ১১৯৩ হিজরী

৪০.    আল জাওয়াহিরিছ ছানিয়াতি ফি মাওলিদি খাইরিল বারিয়্যাতি সাল্লাল্লাহু ্আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুহাম্মদ বিন আলী আল মিছরী সানুয়ানী।১২৩৩ হিজরী

৪১.    তানবীরুল উকুল ফি আহাদিসু মাওলিদুর রাসূল- আরিফ বিল্লাহ মুহাম্মদ বিন মুস্তফা আল বারজিঞ্জি । ১২৫৪ হিজরী

৪২.    মাওলিদুন্নবী (ﷺ) –

৪৩.    ইসবাতিল মুহাসিনাতি ফি তিলাওয়াতি মাওলিদু সাইয়্যিদি সাদাতি -ফাওজি বিন আব্দুল্লাহ রুমী আশ শাহিরূ বি মুফতি আদরানি ১৩১৮ হিজরী।

৪৪.    হাসুলুল ফারজ ওয়া হালুলুল ফারজ ফি মাওলিদিমিন আনজিল আলাইহি আলামনাশরাহ – সাইয়্যিদ বি ইবনুল মাওয়াকিয় আল হুসাইনি আল কাদরী ১৩২১হিজরী ।

৪৫.    মানজুমাতু ফি মাওলিদুন নাবী (ﷺ) মুস্তফা বিন ইসমাইল শারেহ আল আজমীরী।১২২৮হিজরী। 

৪৬.    আদ দুরুরল মুনাজ্জাম ফি মাওলিদিন নাবিয়্যিল আ“জম- আবুল আব্বাস আহমদ আকলাসী আনদালুসী ৫৫০হিজরী।

৪৭.    আল ইলমুল আহমদী ফি মাওলিদিল মুহাম্মদি — শিহাবুদ্দীন আহমদ আল হালুয়ানী।১৩০৪হিজরী।

৪৮.    মাওলিদুল মুস্তফা আদনানী আতাইয়্যা বিন ইব্রাহিম শাইবানী ১৩১১ হিজরী। 

৪৯.    আদ দুরুল মুনাজ্জাম ফি মাওলিদুন নাবীয়িল মুয়াজ্জাম– আবিল কাসিম- মুহাম্মদ বিন উছমান লুওলুবী ৮৬৭হিজরী 

৫০.    সিরাজুম মুনির। মুফতী আমীমুল ইহসান মুজাদ্দেদে বরকতী হানাফীرحمة الله عليه  (১৩৯৪,-সন) 

৫১.    আল মিহনাজুল মুবিনুল কাউয়ী লিমাওলিদিন নাবাবী- আবুল হাছান আল বিকরী। 

৫২.    ইরতিসাফুত তারিব ফি মাওলিদি সাইয়্যিদিল আজামি ওয়াল আরব – মুহাম্মদ ইবনে জাবির।

৫৩.    মাওলিদি সাইয়্যিদি- আব্দুর রহমান আল খাইতি। 

৫৪.    ফতহুস সামাদুল আলাম আলা মাওলিদুস শাইখ আহমদ বিন কাসিম- শাইখ জায়ী।

৫৫.    আল ইবরুজুদ্দুনিয়া ফি মাওলিদি সাইয়্যিনা মুহাম্মদ সাইয়্যিদ আদানী- শাইখ জায়ী ।

৫৬.    বাখিয়াতুল আওয়াম ফি শরহে মাওলিদিল আনাম শরহে আলা মাওলিদি ইবনে জাওজী- শাইখ জায়ী।

৫৭.    তারগীবুল মুশতাকীন লিবায়ানি মানজুমাতু সাইয়্যিদ বারজনজী ফি মাওলিদি সাইয়িদিল আওয়ালীন ওয়াল আখীরীন- শাইখ জায়ী ।

৫৮.    মাওলিদিস সাইয়িদ জাফর বিন হুছাইন বরজিনজী।

৫৯.    মাওলিদে শাইখ ইবনে দিবা হান্বলী।

৬০.    মাওলিদে মানজুম -আরিফ বিল্লাহ হামাদী জালাবী। 

৬১.    আল মুকামাতুল আলিয়া ফিন্নাশাওতুল ফাখিমাতুন নবুওয়াহ- ইমাম মাহমুদ মুহাম্মাদ খতিব আস সুবুকী। 

৬২.    মীলাদির রাসূল – হাছান বাহরুয়ারী ।

৬৩.    মাওলিদে শাইখ আব্দুর রাজ্জাক আলকানাবী ।

৬৪.    সাইফুল ইসলাম আলা মানিয়িল মাওলিদে ওয়াল কিয়াম- আব্দুল কাদির বদায়ূনী।

৬৫.    ইজাকাতুল আছাম লিমানিয়িল মাওলিদে ওয়াল কিয়াম- নকী আলী বেরলবী।

৬৬.    কিস্সাতু মাওলিদ- শাইখ আলী আল হিন্দী । 

৬৭.    মাওলিদে নাসির জৈনপুরী ।

৬৮.    মাওলিদে আমির মিনায়ী আল হিন্দী ।

৬৯.    আনওয়ারুল আহমদী ফি মাওলিদুন নাবাবী -আনওয়ার উল্লাহ হায়দরী আবাদী।

৭০.    তুহফাতুল মুহিব্বিন বি মাওলিদিল হাবীবি রাব্বিল আলামীন -আব্দুল্লাহ মাদরাছী আল হিন্দী ।

৭১.    ওয়াজীফাতুল কাবুল ফি তায়ীনি মাওলিদুর রাসুল- আলী কাবীর ইলাহী আবাদী। 

৭২.    ইশবায়ূল কালাম ফি ইসবাতিল মাওলিদি ওয়াল কিয়াম- ছালামাতুল্লাহ কানপুরী।

৭৩.    রিসালাতাইনি ফি কিস্সাতুল মাওলিদ – ছালামাতুল্লাহ কানপুরী।

৭৪.    আল মুনতাখাবুল মুসতফা ফি আখবারী মাওলিদিল মুস্তফা- হাবিব আব্দুল কাদীর হাদরামী 

৭৫.    মাওলিদুন নাবী (ﷺ) – ফকিহ নহবী হাছান বাহরুবী।

৭৬.    মাওলিদে শাইখ হাছান মুহাম্মাদুল আজিব ।

৭৭.    মাওলিদে সালেহ উদ্দীন সাফাদী খলিল বিন আইবেক।

৭৮.    মাওলিদুন্নবী (ﷺ) – ফকিহ আনিছ তালুবী ১৯০৯ ইসাঈ।

৭৯.    মাওলিদে শাইখ আলী হাবশী ।

৮০.    আল ইবরিজুদ্দানী ফি মাওলিদে সাইয়্যিদুনা মুহাম্মাদ আল আদানী – মুহাম্মদ নুরী জায়ী।

৮১.    মাওয়াইদুল কিরাম লিমাওলিদুন নাবী আলাইহিস সালাতু ওয়া সাল্লাম, – ইব্রাহীম হা’বারী আল খলিল সাফি । ইবনে সিরাজ

৮২.    মাওলিদে শরফুল আনাম ।

৮৩.    মাওলিদে হুছনুল খাতাম – শরীফ হিন্দী।

৮৪.    তাফদিলি লাইলাতিল মাওলিদু আলা লাইলাতুল কাদরি আহমদ বিন মুহাম্মদ বিন আলহাজ সালামী।

৮৫.    হাদীয়াতুল মুহিব্বিন ফি মীলাদী সাইয়্যিদিল মুরসালীন -তাহামী কানুনী।

৮৬.    মাওলিদে শাইখ আব্দুল কাদির বিন সাওদাত ।

৮৭.    আনওয়ারুল আয়িহ বিমাওলিদুর রাসূলুল খাতিমুল ফাত্তাহ – মাওলাবী কাবির ইবনে যাইদানী ।

৮৮.    রেসালাতু ফি মাছআলাতিল কিয়ামি ফি মাওলিদি- আহমদ ইবনে মাওয়াজী।

৮৯.    ইছআফুর রাগিবীন বিমাওলিদি সাইয়্যিদিল মুরসালিন- আব্দুস সামাদ কানুনী ।

৯০.    মাওলিদে শাইখ মুহাম্মদ আল মাগরিবী ওয়া হুয়া মাওলিদে সুফী ।

৯১.    শারুকীল আনওয়ার ফি মাওলিদিল মুখতার (ﷺ) – আব্দুল ফাত্তাহ বিন মুহাম্মদ খতিব আল হাছানী ।

৯২.    আত তা’য়রীফু বিল মাওলিদিশ শরীফ- মুহাম্মদ বিন মুহাম্মদ বিন জাযরী ৮৩৩ হিজরী।

৯৩.    আরফুত তারীফ ফি মাওলিদিশ শারীফ- লিছ ছাবিক।

৯৪.    জামিয়ূল আছার ফি মাওলিদিল মুখতার ইবনে নাছির উদ্দিন দিমাসকী ৮৪২ হিজরী।

৯৫.    আনওয়ারুছ ছাতেয়া ফি মাওলিদুন নাবয়্যিল জামি’ -মুহাম্মদ মাজযুব বিন কামারূদ্দীন।

৯৬.    মাওলিদুল আলী আয যাহিরাতি ওয়াল ফসূসালফায়িকাতি- মুহাম্মদ মাজযুব বিন কামারূদ্দীন।

৯৭.    আন নাফহাতুল লাইলাতি ফি জিকরি মাওলিদিল খাইরিল বারিয়্যাহ – মুহাম্মদ মাজযুব বিন কামারূদ্দীন।

৯৮.    আল আকিদাতুল মুনাজ্জাম ফি জিকরি মাওলিদির রাসূলুল মুকাররাম – মুহাম্মদ মাজযুব বিন কামারূদ্দীন।

৯৯.    কানজুর রাগিবীনিল আফাতি ফির রামাযি ইলাল মাওলিদিল মুহাম্মাদী ওয়াল ওয়াফাতি – বুরহানুদ্দিন ইব্রাহিম বিন মুহাম্মদ আন নাজি আদদামিস্কী ৯০০ হিজরী ।

১০০.    আল ফাইদ্বুর রাব্বানী ফি মাওলিদুত তাহিরুল আদানী- শাইখ আব্দুল্লাহ বিন মুহাম্মদ বা আব্বাদি ।

১০১.    কিতাবু মাওলিদিল কাবির – আরিফ বিল্লাহ শরীফ ইউসুফ বিন মুহাম্মদ আমিন হিন্দী ।

১০২.    কিতাবুল মাওলিদিস সাগির আরিফ বিল্লাহ শরীফ ইউসুফ বিন মুহাম্মদ আমিন হিন্দী।

১০৩.    মাওরিদুল বাদাবী ফি মাওলিদিন নবাবী- সাইয়্যিদ আহমদ বিন আহমদ বাদাবী ইবনে সালেহ বিন আলাবী জামালুল লাইল। 

১০৪.    মাওলিদুন নাবী (ﷺ) – ফকিহ আনিছ তালুবী ১৯০৯ হিজরী ।

১০৫.    মানজুমাতুল হামীদিয়াতু ফি কিস্সাতু খাইরিল বারিয়্যাহ – আব্দুল হামিদ ।

১০৬.    শুরুকুল আনওয়ার ফি মাওলিদিল মুখতার (ﷺ) – আব্দুল ফাত্তাহ বিন মোহাম্মাদ খতিব হাছানী ।

১০৭.    বাশায়িরূল আখইয়ার ফী মাওলিদিল মুখতার – শাইখ মুহাম্মদ মাজি আবুল আজাইম।

১০৮.    আল বিজয়ুরী আলা মাওলিদিদ দরদির ।

১০৯.    ইকদুল জাওহার ফি মাওলিদিন নাবিয়্যীল আজহার- সাইয়্যিদ জাফর বিন হুসাইন আলবারজিঞ্জি আল হুসাইনি।

১১০.    ইফহামুল মায়ানী মিন কালাশিল আউয়ালূ ফি বায়ানি মা ওয়াকায়া ফি শাহরী রাবিউল আউয়াল – লেখক ওজ্ঞাত।

১১১.    মাজমাউল লতিফ উনসী ফি সাইগুল মাওলিদুন্নবীয়ীল কুদসী -ড.আসিম কাইয়ালী।

১১২.    ফি রিহাবুজ ঝিকরী মাওলিদির রাসূলিল আয়জাম – শাইখ তাহির বাদুবী।

১১৩.    ফাতহুল রাতিফ শরহে নজমুল মাওলিদিশ শরীফ ওয়াহুয়া শরহে আলা মাওলিদে বারজিঞ্জি – মুস্তফা বিন মুহাম্মদ আফিফ শাফি।

১১৪.    মাওলিদুন্নবী (ﷺ) – আব্দুল্লাহ কাশগরী

১১৫.    মাওলিদে কানজুল আফা -বাজী 

১১৬.    ফতহুল্লাহি ফি মাওলিদি খাইরি খালকিল্লাহ – আবুল ফজল ফাতহুল্লাহ বিন আবি বকর বানানী

১১৭.    তাফরিজুল আশিকিন ফি মীলাদি সায়্যিদিল মুরসালিন,হাছান কাকুরবী 

১১৮.    কিরাছাহ ইবনে ইবাদ ফি মাওলিদ।

১১৯.    মাওলিদি খাইরিল আনাম সাল্লাল্লাহু আলাইহিস ওয়া সাল্লাম ইব্রাহিম বিন আব্দুল কাদির রাইয়াহী।

১২০.    মাওরিদুজ জামান শরহে মাওলিদি সাইয়্যিদি ওয়ালিদু আদনান (ﷺ) – ইবনে কুদুরী আবাদী ।

১২১.    আল ফায়ূজাতিল ওয়াহাবিতু ফি মাওলিদি খাইরিল বারিয়্যাহ (ﷺ) – আব্দুল কাদির বিন সাওদাত

১২২.    রাবিয়ূল কুলূব ফি মাওলিদি সাইয়্যিদুনা আননাবীয়িল মাহবুব (ﷺ) – আল আরাবি ওয়াজানী 

১২৩.    আদ দুররুল মুনাজ্জাম ফী মাওলিদি সাইয়্যিদিনা আন নাবীয়্যিল মুয়াজ্জাম (ﷺ) – মুহাম্মদ আল লাখমী আস সুবুতী 

১২৪.    সায়াদাতিল উম্মাতি বি মাওলিদি খাইরিল উম্মাতি (ﷺ) -মুহাম্মাদ বিন কাসিম আল হাসিমী 

১২৫.    বুলুগুল মাকসুদ ওয়াল মারাম বি কিরাআতি মাওলিদি খাইরিল আনাম (ﷺ) – মুহাম্মাদ আল হাজুজী।

১২৬.    মানজুমাতু ফি মাওলিদুন নাবী (ﷺ) – আল হাদিবুত তারাবলুছী ।

১২৭.    তাহরিরুল কালাম ফিল কিয়ামি ইনদা জিকরি মাওলিদি ছাইয়্যিদিল আনাম – আলী বিন হাজার হাইতামী

১২৮.    মাওলিদুন নাবী (ﷺ) – আহমদ বিন মুহাম্মাদ বিন আরিফ আছ-ছায়ূয়াছী। 

১২৯.    মাওলিদুন নাবী (ﷺ) – আহমদ বিন উছমান আদ দিয়ারে বিকরী । 

১৩০.    বুলুগুল মারাম লি বায়ানিল ফাজ্জু মাওলিদু সাইয়্যিদিল আনাম ফী শরহে মাওলিদে আহমদ আল বুখারী – সাইয়্যিদ আহমদ আল মারজুকী আবুল ফাওজি।

১৩১.    আল কাওয়াকিবুদ দুররীয়াতু ফি মাওলিদি খাইরিল বারিয়্যাহ -আবু বকর বিন মুহাম্মদ হাবশী।

১৩২.    মাওলিদুন্নবী (ﷺ) মানজুমাতু তরকী -সুলাইমান বিন আব্দুর রহমান বিন সালেহ রুমী

১৩৩.    । 

১৩৪.    মুতালিউল আনওয়ার ফি মাওলিদিল মুখতার (ﷺ) – আব্দুল্লাহ দামলাজী 

১৩৫.    হাশিয়ায়ে আলা মাওলিদিন নাবী – মাদাবিগী আব্দুর রহমান বিন মাহমুদ নাহরাবী মিসরী। 

১৩৬.    সুরুরুল আবরার ফি মাওলিদিন নাবীয়্যিল মুখতার (ﷺ) ।

১৩৭.    আল মুনতাখাবুল মুস্তফা ফি আখবারে মাওলিদুল মুস্তফা – মুহি উদ্দীন আব্দুল কাদির বিন শাইখ।

১৩৮.    মাওলিদুন্নবী (ﷺ) মানজুমাতু তারকি – আশরাফ জাদা বারুছী ।

১৩৯.    আল মাওরিদুল আজাবিল মাইন ফিমাওলিদি সাইয়্যিদিল খালকিল আজমাইন – মুহাম্মদ বিন আব্দুল্লাহ আতারী জাজারী।

১৪০.    মাওলিদুন্নবী (ﷺ) -আরিফ বিল্লাহ ইবনে ইবাদ রানদী। 

১৪১.    মাওলিদুন্নবী সালা­ল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম – মুহাম্মদ বিন সাইয়্যিদ মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ হুসাইনি আত তাবরীজী। 

১৪২.    মাওলিদুন্নবী (ﷺ) – মুল্লা আরব ওয়ায়িজি ৯৩৮ হিজরী 

১৪৩.    মাওরিদুস সাফা ফি মাওলিদিল মুস্তফা (ﷺ) – ইবনে ইলান মক্কি। 

১৪৪.    মাওলিদুন্নবী (ﷺ) -ইবনে আকিল আজজাহির। 

১৪৫.    ইকতিনাসুশ শাওয়ারিদ মিন মাওরিদুল মাওরিদ ফি শরহে মাওলিদে ইবনে হাজার হাইতামী। 

১৪৬.    হাশিয়ায়ে আলা মাওলিদিন নাবী (ﷺ), ইবনে হাজার গাইতী । 

১৪৭.    মুহাম্মাদ বিন খলিল বিন ইবা্রহিম বিন মুহাম্মদ আলী বিন মুহাম্মদ তারাবলুসী। 

১৪৮.    মাওলিদুন্নবী (ﷺ) ।

১৪৯.    বাঘীয়াতিল আওয়াম ফি শরহে মাওলিদি সাইয়্যিদিল আনাম আলাইহিস সালাতু ওয়া সাল্লাম — ইবনে জাওজি মুহাম্মদ রওরী আল জায়ী ।১৩১৫হিজরী

১৫০.    তুহফাতুল আশেকীন ওয়া হাদিয়াতুল মায়শুকীন ফি শরহে তুহফাতুল মুওমিনীন ফি মাওলিদিন নাবিয়্যিল আমিন (ﷺ) – মুহাম্মদ রাছিমুল মুল্লা তীবি

১৫১.    আল জামিউল আজহারুল মুনির ফি মাওলিদিল বাশিরুন নাজির- জয়নুল আবেদিন মুহাম্মদ আব্বাসী।

১৫২.    আদ দুররুল মুনাজ্জাম শরহে কানজুল মুতালসিম ফি মাওলিদিন নাবিয়্যিল মুয়াজ্জাম – আবি শাকের আব্দুল্লাহ শালাবী

১৫৩.    আদ দুররুল মুনাজ্জাম ফি মাওলিদিন নাবীয়্যিল কারিম – ইমাম সাইফুদ্দীন ইবনে তগরবীক.।

১৫৪.    মাওলিদিন নাবী উনওয়ান ইহরাযুল মাযিইয়্যাতু ফি মাওলিদিন নাবী খাইরিল বারিয়্যাহ (ﷺ) — আবি হাসিম মুহাম্মদ শরীফ নববী। 

১৫৫.    আল মুনতাখাবুল মুস্তফা ফি আখবারি মাওলিদিল মুস্তফা (ﷺ) – শাইখ আব্দুল কাদির আদরাছী। 

১৫৬.    মাওলিদুননাবী — হাশিম কাদরী আল হাছানী।

১৫৭.    আল আতিয়াতুল মুহাম্মাদিয়্যা ফি কিস্সাতু খাইরিল বারিয়্যাহ – আহমদ বিন নাজ্জারী দিমইয়াতি। 

১৫৮.    খুলাছাতুল কালাম ফি মাওলিদিল মুস্তফা (ﷺ) — রেদওয়ানুল আদিল বাইবারছী। 

১৫৯.    আল মুনজিরুল বাহী ফি মুতালিয়ু মাওলিদুন্নাবী –শাইখ মুহাম্মদ আল হাজরাছী।

১৬০.    বুলুগুল মারাম লি বায়ানিল ফাজ্জু মাওলিদু সাইয়্যিদিল আনাম – আবুল ফাওজি আহমদ আল মারজুকী ওয়া হুয়া শরহে আলা মাওলিদু শাইখ আহমদ বিন কাসিম মালাকী ।

১৬১.    আল আনওয়ার ওয়া মিফতাহুস সুরুরি ওয়াল আফকারি ফি মাওলিদিল মুখতার -আবিল হাছান আহমদ বিন আব্দুল্লাহ আল বিকরী। 

১৬২.    তিল্লুল গামামাতি ফি মাওলিদু সাইয়্যিদু তাহামাতী – আহমদ বিন আলী বিন সাইদ । 

১৬৩.    আল কাওয়াকিবুদ দুররীয়াতু ফি মাওলিদি খাইরিল বারিয়্যাতু —আবি বকর মুহাম্মদ হাবসী আল বাসতামী । 

১৬৪.    মাওলিদিন নাবাবী শরীফ – শাইখ মুহাম্মদ নাজা মুফতি বৈরুত। 

১৬৫.    মাওলিদিন নাবাবী- মুসা জানাতী আজ জামুরী। 

১৬৬.    আল মাদখালুল মুফিদ ফি হুকমি মাওলিদিল হাকিম – ইয়াহইয়া বিন মুহাম্মদ আল কুরতুবী আল মাগরিবী।

১৬৭.    আল মাওলিদিল কারিম – ইবা্রহিম বিন আবি বকর তিলমিছানী। 

১৬৮.    মাওলিদিদ দুররুননাফিছ – আরিফ বিল্লাহ ইয়াহইয়া বাসতানজী।

১৬৯.    তারিখুল ইহতেফালু বি মাওলিদিন নাবাবী মিন আছরিল ইসলামী আউয়ালু ইলা আছরী ফারুকিল উলা— হাছান ছান্দুবী। 

১৭০.    ওয়ারুদু মিন রিয়াদি আকরামি মাওলিদু (ﷺ) — শাইখ রিদওয়ান বিন ফদলুর রহমান। 

১৭১.    খুলাছাতুল কালাম ফি ইহতেফালু বি মাওলিদি খাইরিল আনাম (ﷺ) ।

১৭২.    আনওয়ারে ছাতিয়া ফি মাওলিদিন নাবীয়িশ শাফি – ইবনে আতাউল্লাহ গাইছী।

১৭৩.    বাহজাতুছ ছামিয়িন ওয়ান নাজিরিন লি মাওলিদি সাইয়্যিদিল মুরছারিন- নাজমুল গাইতি। 

১৭৪.    আল মাওরিদুদ দানী ফি মাওলিদিন নাবাবী– মুস্তফা বিন কামালুদ্দীন বিকরী।

১৭৫.    ইনতেছারুল মাওলিদিশ শরীফ— হাছান বিন আলী আশ শাফি আল আজহারী।

১৭৬.    আল মাওলীদুল বাদাবী ফি মাওলিদিন নাবাবী — আহমদ জামিল আল লাইল ।

১৭৭.    আল মুনতাখাবুল মুস্তফা ফি আখবারিল মুস্তফা সাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম – আব্দুল কাদীর আল আদরাছী।

১৭৮.    আলমিনহালুল আজাবিল কারির ফি মাওলিদিল হাদিয়্যিল বাশিরুন নাজির। আবুল হাছান আল মারদুবী।

১৭৯.    নাছুরুদ দার আলা মাওলিদু ইবনে হজর আব্দুল গনী আদ দামেস্কী। 

১৮০.    নাতিকুল হিলাল বি তারিখুল ওয়ালাদাতি — হাবিব ওয়াসালী

১৮১.    ইসতাহাব্বুল কিয়াম ইনদা জিকরি ওয়ালাদাতিহি আলাইহি ওয়া সাল্লাম – মাহমুদ আতারী আদ দামেস্কী। 

১৮২.    মাওলিদিল কাওছারী – ইমাম মাহমুদ জাহিদ কাওছারী

১৮৩.    আল কাওয়া কিবুল আজহার বি মাওলিদি সাইয়্যিদিল আউয়ালি ওয়াল আখির – নাজিম আহমদ আল জাহিরী আল খালুতী। .

১৮৪.    আল কালাদাতুছ ছানিয়াতু ফি মাওলিদিশ শরীফ ওয়াল ইমদাদুল মুহাম্মদী – আব্দুর রহমান আবইয়ারী। .

১৮৫.    নাজমু নুরুস সাফা ফি মাওলিদি ওয়া মিরাজি তাহাল মুস্তফা লাম যূয়াল্লিমু মুয়াল্লিফ..

১৮৬.    মানজুমাতু ফি কিস্সাতুল মাওলিদিন নাবাবী -…….

১৮৭.    মাওলিদুন নাবাবী (ﷺ) -নাজমু হাছান কালবী আদাবী মালাকী। 

১৮৮.    মাওলিদুন নাবাবী

১৮৯.    রাওয়ায়িহুজ জাকিইয়া ফি মাওলিদি খাইরিল বারিয়্যাহ – আব্দুল্লাহ বারুরী।

১৯০.    জিকরে মাওলিদি ওয়া খুলাছাতুছ ছীরাত – মুহাম্মাদ রশিদ রেজা ।

১৯১.    ইয়লাম বি ফাতওয়ায়ী আয়িম্মাতুল ইসলাম হাওলি মাওলিদুহু আলাইহিস সালাতু ওয়া সাল্লাম – সাইয়্যিদ আলাবী আল মালেকী। 

১৯২.    বাগিয়াতুল মুস্তফা ফি মাওলিদিল মুস্তফা – আব্দুল আজিজ বিন আহমদ 

১৯৩.    বাগিয়িয়াতুল আওয়াম ফি শরহে মাওলিদি ইবনে জাজরী ইবনে আরাবী আন নাবাবী।

১৯৪.    বাশায়িরুল আখইয়ার ফি মাওলিদিল মুখতার – মুহাম্মদ মাজী আবুল আজাইম । 

১৯৫.    আল আনওয়ার ফি মাওলিদিল মুখতার – আবুল হাছান বিকরী 

১৯৬.    মাওলিদিন নাবাবী,- আব্দুল্লাহ আফিফি।

১৯৭.    আল ইব্রিজুদ দুনিয়া ফি মাওলিদি,-সাইয়িদ মুহাম্মদ আল আদানী,-মুহাম্মদ নুরী আশ শাফী

১৯৮.    বাখিয়াতুল আওয়াম ফি শরহে মাওলিদি সাইয়্যিদিল আনাম।

১৯৯.    তা”য়রিবিল মুত্তাকি ফি সিরাতি মাওলিদিন নাবীয়্যিল মুকতাফী,- সাইয়্যিদ কাজারনী। 

২০০.    আল জামিউল জাহিরিল মুনির ফি জিকরে মাওলিদিল কাশিরিন নাজির,- জয়নুল আবেদিন আল আব্বাসি।

২০১.    আদ দুররুল মুনাজ্জাম শরহে আল কানজুল মুতালছাম ফি মাওলিদিন নাবীয়্যিল মুয়াজ্জাম,- আবু শাকের সালাবী। 

২০২.    আদ দুররুল মুনাজ্জাম ফি মাওলিদিন নাবিয়্যিল কারিম,- সাইফুদ্দিন আল হামইয়ারী। 

২০৩.    আদ দুররুল মুনাজ্জাম ফি মাওলিদিন নাবিয়্যিল আয়জাম,- আহমদ আকলাশি।

২০৪.    আল মাওলিদুল আজাবিল মায়িন ফি মাওলিদিল খালকি আজমায়িন,- আল আতারী আল জাযায়িরী।

২০৫.    মানাছিকুল হুজ্জাজিল মুনতাকি মিন ছিরাতি মাওলিদিল মুস্তফা,- সায়িদ উদ্দীন কাজারনী। 

২০৬.    আদ্দুররাতুছ ছানিয়াতু ফি মাওলিদি খাইরিল বারিয়্যাহ,- খলিল বিন কাই কালদি।

২০৭.    মাওলিদে আল বারিয়ী,-আব্দুর রহিম বারিয়ী। 

২০৮.    আল মাওরিদুল হানী ফি মাওলিদিছ ছানী,- জাইয়িনুদ্দীন ইরাকী।

২০৯.    মাওলিদে বারছুনী,- সুলাইমান বারছুনী।

২১০.    জামিউল আনার ফি মাওলিদ্দিন নাবিউল মুখতার ।

২১১.    মাওরিদুস সাদি ফি মাওলিদিল হাদী,-,- সামছুদ্দীন সাখাবী। 

২১২.    মাওলিদিন নাবী (ﷺ) । আফিফুদ্দীন তাবরিজী। 

২১৩.    আদ দুরুরুফি মাওলিদি সাইয়্যিদিল বাশির,- আছিলুদ্দীন বারবী।

২১৪.    দারাজুদ দুরার ফি মীলাদি সাইয়্যিদিল বাশির,- আব্দুল্লাহ আল হুসাইনি আশ,-শিরাজী।

২১৫.    লিমিনহালুল আজাবিল কারির ফি মাওলিদিল হাদিয়্যিল বাশিরিন নাজির,- আল আলাউল মারবাবী।

২১৬.    ফতহুল্লাহি ওয়া কাফি ফি মাওলিদিল মুস্তফা,- বুরহানুদ্দীন আবু সাফা

২১৭.    মাওলিদিন নাবী (ﷺ) আল হাবিব উমর বিন আব্দুর রহমান বায়লাবী।

২১৮.    আল ফখরূল আলাবী ফি মাওলিদিন নাবাবী,- হাফিজ সাখাবী

২১৯.    আল মাওরিদুল হানী ফি মাওলিদি খাইরিল বারিয়্যাহ,- নুরূদ্দীন ছামহুদী। 

২২০.    হুসনুল মাকসিদ ফি আমালিল মাওলিদ,- ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ূতী 

২২১.    ফতহুল আলিমুল মুনাজ্জি আলা মাওলিদিল বারজাঞ্জি,- আব্দুল্লাহ আল ফারছী। 

২২২.    মাওলিদুন্নবী (ﷺ),- আয়েশা বায়ুনী । 

২২৩.    আল কাওয়াকিবুদ দুররিয়াতু ফি মাওলিদি খাইরিল বারিয়্যাতু,- আবু বকর হালবী।

২২৪.    মাওলিদুন্নবী (ﷺ),- মুল্লা আরব ওয়ায়িজী।

২২৫.    তাহরিরুল কালাম ফিল কিয়ামি ইন্দা জিকরী মাওলিদি সাইয়্যিদিল আনাম,- ইমাম ইবনে হাজার হাইতামী

২২৬.    তুহফাতুল আখইয়ার ফি মাওলিদিল মুখতার ইমাম ইবনে হাজার হাইতামী

২২৭.    ইতমামু আন নিয়অমাতুল আলাল আলামিন বি মাওলিদি সাইয়্যিদি উলদে আদম 

২২৮.    মাওলিদুন্নবী (ﷺ),- ইমাম ইবনে হাজার হাইতামী 

২২৯.    কানজুর রাগিবীনিল আফা ফির রামাজিল মাওলিদিল ওয়াফা,- হাফিজ ইসহাক নাজ্জা

২৩০.    মাওলিদুন নাবী সাইয়্যিদ মুস্তফা নাজ্জা বইরুতী

২৩১.    শরহে ইবনে আবিদীন আলা মাওলিদে ইবনে হাজার আসকালানী

২৩২.    মাওলিদুর রাসূল,-আব্দুল হামিদ যাওদাতি

২৩৩.    আনওয়ারে ছাতিয়া ফি মাওলিদিন নাবীয়িশ শাফি,- আবি আতা উল্লাহ আল গাইছি শাফী

২৩৪.    মাওলিদিল জিসমানিল মাওরিদির রুহানী,- সামছুদ্দীন আহমদ আহমদুল্লাহ

২৩৫.    আর রাওদুর রাহিব ফি মাওলিদি সাইয়্যিদুনাল হাবিব (ﷺ),-মুহাম্মদ ইবনে আকিল মিসরী

২৩৬.    মাওলিদুন নাবী,- আহমদ দরদির

২৩৭.    মাওলিদুন্নবী (ﷺ) 

২৩৮.    হাকিকতে মুহাম্মদী ও মীলাদে আহমদী। মাওঃ বশারাতুল্লা মোদিনি পুরী হানাফী (রহঃ । 

২৩৯.    কিশোরগঞ্জের বহস। আল্লামা রুহুল আমীন বশির হাটি হানাফী رحمة الله عليه  (১৯৪৫,-ইং) । 

২৪০.    তানজিমুল বাদিয় ফি মাওলিদিন নাবাবী। ইমাম ইউসুফ বিন ইসমাইল নাবেহানী رحمة الله عليه 

২৪১.    আদ,-দুররুল মুনাজ্জাম। আব্দুল হক এলাহাবাদী হানাফী رحمة الله عليه  

২৪২.    ফয়সালায়ে হাফত মাসায়েল হাজী ইমদাদুল্লাহ মুহাজেরী মক্কী হানাফী رحمة الله عليه । 

২৪৩.    মছলকে আরবাবে হক। শাহ ওয়াজী উদ্দীন রামপুরী رحمة الله عليه  হানাফী ।

২৪৪.    আল ইহতেফাল বি মাওলিদি আম্বিয়া ওয়াল আউলিয়া। আল্লামা সাইয়্যিদ মাযী আবুল আযায়েম আল মিসরী رحمة الله عليه ।

২৪৫.    মুসতাযুল মুবতাদা। আল্লামা আব্দুর রহমান সিরাজ হানাফী মক্কী رحمة الله عليه  । 

২৪৬.    মুলাখ্খাস আল্লামা শাহ কারামত আলী জৈনপুরী رحمة الله عليه  ১২৯০,-হিঃ। 

২৪৭.    কারামাতে হারমাইন। আল্লামা শাহ কারামত আলী জৈনপুরী رحمة الله عليه  (১২৯০,-হিঃ। 

২৪৮.    নুফহাতুল আম্বারিয়া লি ইসবাতিল কিয়াম ফী মাওলিদি খাইরিল বারিয়্যা। (মিলাদ বিষয়ক সর্বোত্তম গ্রন্থ) আল্লামা শাহ আব্দুল আউয়াল জৈনপুরী হানাফী رحمة الله عليه  (১৩৩৯,-হিঃ) 

২৪৯.    আল কাউলুল মাকবুল ফি মীলাদির রাসূল,-আল্লামা হবিবুর রহমান,- মুহাদ্দিসে রারাই।

২৫০.    মীলাদে বেনজীর,- মুজাহিদ উদ্দীন চৌধুরী ।

২৫১.    মীলাদ ও কিয়াম,- মুস্তফা হামিদী

২৫২.    মীলাদ ও কিয়ামের ফতোয়া,- জসিম উদ্দীন আল আজহারী 

২৫৩.    আকওয়ালুল আখইয়ার ফি মাওলিদিন নাবিয়্যিল মুখতার,- মো. আবুল খায়ের ইবনে মাহতাবুল হক 

ইসলামি বিশ্বকোশ

মাওলিদ

রচনায়

মোহাম্মাদ আব্দুর রহিম ও সম্পাদনা পরিষদ 

ইসলামিক ফাউন্ডেশন

বিশ্ব কোশ বিভাগ

মাওলিদঃ (এক বচন, বহুবচন) কোন ব্যক্তির জন্মকাল, জন্মস্থান, জন্মদিন ও জন্মোৎসব, বিশেষত মহানবী হযরত মুহাম্মদ (ﷺ)-এর জন্মকাল অর্থে (বহুবচন) শব্দের ব্যবহার হয়। হযরত মুহাম্মাদ (ﷺ) এর জাগতিক জীবন যে পরিবেশে অতিবাহিত হয় সেই দৃশ্যাবলী স্বভাবতই মুসলিম জনগণের চক্ষে পবিত্রতামÊিত হইয়া দেখা দেয়। অন্যতম নিদর্শন সেই গৃহখানি যেখানে তিনি ভূমিষ্ঠ হন— মাওলিদু’ন-নাবী। উহা মক্কা শহরের আধুনিক সূকু’ল-লায়্ল মহল্লায় অবস্থিত। এই স্থানের ইতিবৃত্ত প্রধানত শহরের ইতিকাহিনীতে সংরক্ষিত আছে (বফ.ডঁংঃবহভবষফ, ১খ, ৪২২)। প্রথম দিকে এই গৃহখানির উপর তেমন গুরুত্ব আরোপ করা হয় নাই। হারূনু’র-রশীদের জননী খায়যুরান (মৃ. ১৭৩/৭৮৯-৯০) সর্বপ্রথম এই সাধারণ ঘরখানিকে স’ালাতের ঘরে রূপান্তরিত করেন। ধর্মপ্রাণ মুসলিমগণ যেরূপ মদীনায় নবী (স’)-এর রাওদা যিয়ারাত করিতে যান, ঠিক তদ্রƒপ তাঁহার ভূমিষ্ঠ হইবার স্থানে গমন করিয়া ভক্তি-শ্রদ্ধা নিবেদন করত ছ’াওয়াব হাসিল করেন। এইরূপ ভক্তি-শ্রদ্ধা প্রদর্শনের হেতু কালক্রমে এই সকল স্থানে যথাযোগ্য স্থাপত্য নিদর্শন প্রতিষ্ঠিত করা হয় (ইব্ন জুবায়র, পৃ. ১১৪,১৬৩; আল-বাতানূনী, পৃ. ৩৪: গৃহখানির বর্তমান অবস্থান সম্পর্কে দ্র. ংহড়ঁপশ ঐঁৎমৎড়হলব, সবশশধ, ১খ, ১০৬, ২খ, ২৪)। 

হযরত (স’) এর জন্মদিনকে পবিত্র দিন হিসাবে উদ্যাপন করা সম্পর্কে লিখিত বিবরণ শুরু হয় বহুদিন পরে। সাধারণ্যে গৃহীত মতে হযরত (ﷺ) এর জন্মদিন হইল সোমবার, রাবী‘উ’ল- আওয়াল মাসের ১২ তারিখে। তারিখ যাহাই হউক, তাঁহার জন্ম হইয়াছিল সোমবার। হযরত (স’) এর জীবনে সোমবার দিনটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। কারণ কথিত আছে যে, এই দিনটি তাঁহার জন্মদিন, হিজরতের দিন এবং তাঁহার মৃত্যুদিবস (গ’াযালী, ইহ’য়া’, উল, উলুম ১খ, ৩৬৩)। সোমবার দিনে য়াহূদীদের রোযা রাখার মূল কারণ সম্পর্কে দ্র. ভডবহংরহপশ, গড়যধসসবফ বহ ফব ঔড়ফবন, ঢ়. ১২৬)। এই দিনে যে একটি বিশিষ্ট উৎসব হইত, যাহা ছিল ঘরে ঘরে অনুষ্ঠিত পারিবারিক উৎসব হইতে স্বতন্ত্র, এই তথ্যটি জনশ্রুতিতে সর্বপ্রথম মক্কায় সুবিদিত থাকার কথা ছিল, অথচ সর্বপ্রথম উহা জানা যায় ইব্ন জুবায়রের নিকট হইতে (মৃ. ৬১৪/১২১৭; পৃ. ১১৪-১১৫)। তিনি স্পষ্টত একটি প্রথার উল্লেখ করেন, যে প্রথাটি মক্কায় বহু পূর্ব হইতে প্রচলিত ছিল। এই উৎসবের মৌলিক বৈশিষ্ট্যের মধ্যে ছিল কেবল এইটুকু যে, মাওলিদ গৃহে সেই উৎসবের দিনে আগন্তুকের সংখ্যা বৃদ্ধি হত এবং গৃহখানি কেবল এই উপলক্ষেই সারাদিন সকলের জন্য বিশেষভাবে উন্মুক্ত থাকিত। এই স্থান দর্শন এবং এই উপলক্ষে অনুষ্ঠানাদি সামগ্রিকভাবে প্রাচীন মুসলিম দরবেশদের অনুসৃত ধমর্ীয় পদ্ধতি অনুসারে করা হইত। 

কালক্রমে হযরত (স’) এর জন্মদিবস উদযাপনের জন্য নূতনতর রীতি প্রচলিত হইল এবং কাল ও স্থানভেদে সামান্য পার্থক্য দৃশ্য হইলেও কতগুলি সাধারণ রীতি-পদ্ধতিতে সর্বত্র একটি ঐক্য পরিলক্ষিত হয় এবং সমষ্টিগতভাবে উহাদিগকে মাওলিদু’ন-নাবী বলা হয়। মিসরে ফাতি’মী আমলের মাঝামাঝি কালে এবং শেষের দিকে উক্ত মাওলিদু’ন-নাবী উৎসবের পূর্বাভাস দেখা য়ায়। উযীর আল-আফদ’ালের আমলে (৪৮৭- ৫১৫/১০৯৫-১১২১) একবার মাওয়ালীদ চতুষ্টয়’ রহিত করা হয়, কিন্তু আবার স্বল্পদিন পরেই সাবেক গৌরবের সহিত এই মাওলীদ চতুষ্টয়কে পুনরুজ্জীবিত করা হয় (মাক’রীযী, আল-খিত’াত; ১খ, ৪৬৬, উৎসবের বর্ণনাঃ ১খ. ৪৩৩ প.)। তখন উৎব করা হইত পরিস্কার দিবালোকে এবং কেবল নগরীর সরকারী কর্মচারীবৃন্দ ও ধার্মিক ব্যক্তিগণই উহাতে অংশগ্রহণ করিতে পারিতেন। তখন প্রাথমিক উৎসব বলিয়া কিছুই প্রচলিত ছিল না, তবে একটি মিছিলের প্রথা ছিল অর্থাৎ গণ্যমান্য ব্যক্তিগণ শোভাযাত্রা সহকারে খলীফার প্রাসাদে গমন করিতেন। খলীফা প্রাসাদের বারান্দায় পর্দার আড়ালে বসিতেন আর তাঁহার সম্মুখে কায়রোর তিনজন খাত’ীব (বক্তা, তু- খাত’ীব প্রবন্ধ) পর্যায়ক্রমে ধর্মীয় বক্তৃতা দিতেন এবং এই খুত’বার সময় একটি বিশেষ অনুষ্ঠান পালন করা হইত। খুত’বার বিষয়বস্তু হইতে উৎসবের উপলক্ষ ভিত্তিক, মিসরের ফাতি’মীদের এই মাওলিদ শুধু নবী (স’)এর সহিত সম্পর্কিত ছিল না, বরং হযরত আলী, ফাতি’মাঃ

(رضي الله عنه) ও তখনকার শাসনরত খলীফা তথা ইমামুল হাদিরের মাওলিদও সমভাবে উদযাপিত হইত। ইমামাঃ মতবাদের শীয়া’ عليه السلام  নীতির প্রতিফলন দেখা যাইত মাওলিদু’ল- ইমামিল হাদি’র এর উৎসবের বিভিন্ন আনুষ্ঠানিক ক্রিয়াকর্মে। ফাতি’মীদের আমল পর্যন্ত মাওলিদ জনসাধারণের উৎসবে পরিণত হয় নাই। এই কারণেই মাক’রীযী আশল পর্যন্ত মাওলিদ জনসাধারণের উৎসবে পরিণত হয় নাই। এই কারণেই মাক’রীযী ও ক’ালক’ শান্দীর গ্রন্থ ব্যতীত সুন্নী সাহিত্যে এই সকল উৎসবের কোন উল্লেখ নাই, এমনকি আলী পাশা মুবারাকের ন্যায় গ্রন্থকারগণও কায়রোতে অনুষ্ঠিত মাওলিদের পূর্ণ ঐতিহাসিক বিবরণী প্রদানকালে উহা জনগণের অনুষ্ঠান বলিয়া কোন কথা বলেন নাই। 

মুসলিম গ্রন্থকারগণ মাওলিদের আদি উৎস সম্পর্কে যে ঐকমত্য প্রদান করেন তাহাতে দেখা যায় যে, ৬০৪/১২০৭ সালে আবালাতে মাওলিদ অনুষ্ঠান সর্বপ্রথম প্রবর্তন করেন সুলতা’ন সালাহু’দ-দীনের ভগ্নীপতি আল-মালিক মুজ’াফ্ফারু’দ-দীন কোক্বুরী। ফাতি’মী মাওয়ালীদের কথা তখন প্রায় সম্পূর্ণরূপে বিস্মৃতির অতল তলায় নিমজিজ্ত হইয়া গিয়াছিল। মুজ’াফ্ফারু’দ-দীনের মাওলিদের পূর্ণ বিবরণী দেন কিছু পরের প্রায় সমসাময়িক ইব্ন খাল্লিকান (মৃ.৬৮১/১২৮২)। পরবর্তী লেখকগণ তাঁহার বিবরণীর উপর নির্ভর করিয়া নিরবচ্ছিন্নভাবে বর্ণনা দিয়া আসিতেছেন (যথাঃ আস-সুয়ূত’ী, হু’সনু’ল- মাক্’সি’দ ফী ‘আমাদ্দি’ল-মাওলিদ (ইৎড়পশবঃ-সধহহ. এধষ২১, রঃ, ২০২) এবং অন্যান্য। উক্ত শাসকের ব্যক্তিত্ব ক্রুসেড সংঘটনের ফলে তাহার সময়ে গোলযোগ সৃষ্টি এবং তাহার পরিপার্শ্বিকতা, যাহার প্রতি ইবন্ খাল্লিকান বিশেষ মনোযোগ আকর্ষণ করেন এই সকল ব্যাপার একযোগে আমাদের মনে এরুপ ধারণার উদ্রেক করে যে, মাওলিদ উৎসবের ক্রমবিবর্তনে যথেষ্ট খৃষ্টানী প্রভাব রহিয়াছে। অন্য- পক্ষে উক্ত শাসক সূ’ফী আন্দোলনের সহিত ঘনিষ্ঠভাবে সংযুক্ত ছিলেন বলিয়া অনুমান করা যায় যে, মাওলিদের উপর সম্পূর্ণ ভিন্ন প্রকৃতির সূ’ফী প্রভাবের সম্ভবনা রহিয়াছে। মাওলিদ অনুষ্ঠানাদির বর্ণনা হইতে ইহা সুস্পষ্ট। উৎসবের বহু পূর্ব হইতেই প্রস্তুতি আরম্ভ হয় এবং দূরদূরান্ত হইতে জনসমাগম হয়। শাসক স্বয়ং বিশেষ লক্ষ্য রাখেন, আগন্তুকগণ যেন বিশেষভাবে কাষ্ঠ দ্বারা নির্মিত সুসজ্জিত কুববায় অবস্থান করিতে পারে এবং তাঁহাদিগকে গীতবাদ্য ও অন্যান্য আমোদ-প্রমোদে ছায়া নাটক, ভোজবাজি ইত্যাদি) আপ্যায়িত করা হয়। এই উপলক্ষে নগরের রাজপথসমূহ বাৎসরিক মেলার ন্যায় লোকজনে পরিপূর্ণ থাকে। মাওলিদ রজনীর সমাগমে মাগ’রিবের সালাতের পর শাসক স্বয়ং নগরের প্রধান দুর্গ হইতে খানকাহ পর্যন্ত মশাল শোভাযাত্রা পরিচালনা করেন। পরদিন প্রত্যূষে জনসাধারন খানকাহর সম্মুখে সমবেত হয়। সেখানে শাসকের জন্য একটি কাঠের দুর্গ ও ওয়াইজ (বক্তা)-এর জন্য একটি মঞ্চ ইতিপূর্বেই তৈরি থাকে। তিনি দুর্গ হইতে বক্তৃতা শুনিবার জন্য সমবেত সেই জনতাই শুধু পরিদর্শন করেন না, বরং পরিদর্শনার্থ আহুত ও সন্নিহিত ময়দানে সমবেত সেনাবাহিনীও পর্যবেক্ষণ করেন। বর্ণনাকারিগণ বক্তৃতার বিষয়বস্তু সম্বন্ধে কিছু উল্লেখ করেন নাই। অনুষ্ঠানের শেষে শাসক সম্মানিত বিশিষ্ট মেহমানদিগকে দুর্গে আমন্ত্রণ করিয়া সম্মানসূচক পরিচ্ছদ উপহার দেন। তাৎপর জনগণকে উক্ত ময়দানে শাসক নিজ ব্যয়ে ভূরিভোজে আপ্যায়িত করেন এবং গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গকে খানকাহতে পরিতৃপ্ত করেন। তিনি পরবর্তী রজনী সূ’ফীদের সাহচর্যে বিস্তর লোকজনসহ সামা (শ্রবণ) তথা ভক্তিমূলক সংগীত শ্রবণে অতিবাহিত করেন (ইবন খাল্লিকান সম্পা, ডঁংঃবহভবষফ, ৬খ, ৬৬)। 

ফাতি’মী উৎসবের বিপরীত এখানে বিশেষ লক্ষণীয় এই যে, এই উৎসবে সূ’ফীগণ ও জনসাধারণ বিপুলভাবে অংশগ্রহণ করেন। এই অবস্থাটি আরো সবিশেষ উল্লেখযোগ্য এই কারণে যে, সম্ভবত সূ’ফীদের সাহচর্যের ফলে পরবর্তী কালে মাওলিদ এত জনপ্রিয়তা অর্জন করিয়াছে, এইরূপ ধারণার যৌক্তিকতা বিদ্যমান রহিয়াছে। সঙ্গে সঙ্গে এই কথাও বলিতে হয় যে, মশাল মিছিল যেহেতু মুসলিম ধ্যান-ধারণার বহিভর্ূত, সুতরাং ইহা সমসাময়িক খৃষ্টান উৎসবাদি হইতে ধার করা বলিয়া আমাদের বিশেস দৃষ্টি আকর্ষণ করে। কায়রোর অনুষ্ঠানে এইরূপ মশাল মিছিলের উল্লেখ দেখা যায় না। কারণ সেখানে উৎসব হইত দিবাভাগে। কিন্তু উপস্থিত সকলকে ব্যয়বহুল ভোজনাদিতে আপ্যায়ন, বিশেষত মিষ্টি বিতরণ ও বক্তৃতাদান উভয় ক্ষেত্রেই দেখিতে পাওয়া যায়। মনে হয় এই উল্লেখযোগ্য সমুদয় অনুষ্ঠান মাওলিদ উৎসবের উৎপত্তিস্থল। সালজূক প্রতিক্রিয়ারূপী বিরাট রাজনৈতিক ও ধর্মীয় আন্দোলনের সঙ্গে সঙ্গে সালাহু উদ-দীনের সময় মাওলিদ মিসরে প্রবেশ লাভ করে। বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য যে, মিসরে সূ’ফী মতবাদ অতি দ্রুত শিকড় গাড়িয়াছিল। ফলে মাওলিদের ন্যায় অনুষ্ঠানের পথ প্রস্তুত হয়। কারণ উহা মূলত জনসাধারণের ধর্মভাবের উপর ভর করিয়াই টিকিয়া থাকিতে পারে।

এই উৎসব উদ্যাপন রীতি শীঘ্রই হউক আর বিলম্বেই হউক, মিসর হইতে মক্কায় প্রসারিত হইবার পর উহার প্রাচীন রূপের পরিবর্তন ঘটে। উহার আরও অগ্রগতি হয় উত্তর আফ্রিকার তটভূমি হইতে সিউটা, ঞষবসপবহ ও ফাস হইয়া স্পেন পর্যন্ত। পূর্ব দিকেও ভারতভূমি পর্যন্ত ইহার ক্রমপ্রসার ঘটে। ফলে সমগ্র মুসলিম জাহান এই দিনে সমভাবে উৎসবে মিলিত হইতে থাকে, প্রায়ই উৎসবে অভূতপূর্ব জঁাকজমক দেখা যায়, কিন্তু প্রধা্ন প্রধান আঙ্গিকে সর্বত্র একইরূপে ইহা উদযাপিত হয়। সমগ্র মুসলিম জাহানের বিভিন্ন অংশ হইতে এই উৎসবের অগণিত বিবরণী পাওয়া যায় (মক্কায় উদযাপন সম্পর্কে পূর্ণ বিবরণ পাওয়া যায়ঃ ঈযৎড়হরশবহ, বফ. ডঁংঃবহভবষফ, ররর, ৪৩৮ প.; ইব্ন হাজার আল-হায়ছ’ামী, মাওলিদ ইৎড়পশবষসধহহ, এঅখ, রর. ৫১০) আধুনিক যুগের অনুষ্ঠানাদির বিবরণের জন্যঃ ঝহড়ঁপশ ঐঁৎমৎড়হলব, গবশশধ, রর. ৫৭ পৃ.। মক্কায় উৎসবানুষ্ঠান সমধিক প্রসিদ্ধ; মিসরের জন্য দ্র. ঔ.ড. গপ ঢ়যবৎংড়হ. ঞবয গড়ঁষরফং ড়ভ ঊমুঢ়ঃ (ঈধরৎড় ১৯৪১); খধহব, গধহহবৎং ধহফ ঈঁংঃড়সং (১৮৭১, রর. ১৬৬ প.) এবং ভাতীয় দ্বীপসমূহের জন্য দ্র. ঝহড়ঁপশ ঐঁৎমৎড়হলব, অপযবযহবংব, র. ২০৭; ফড়. ঠবৎংঢ়ৎবরফব এবংপযৎরভঃবহ, রর. ৮ প.; ঐবৎশষড়ঃং, ছধহড়ড়হ-ব-ওংষধস (১৮৩২), চ. ২৩৩ প.; , ঈঁষঃব ফবং ংধরহঃং (১৮৮০).চ. ১৩. এখানে প্রায়শ জ্নম নয়, বরং নবী (সা) এর মৃত্যুবার্ষিকী উদযাপন করা হয়। ইসলামে অনুপ্রবিষ্ট তুর্কী রীতিনীতি মাওলিদ উৎসব উদযাপনের অগ্রগতি ব্যাহত করে নাই (ঞঁৎশ. গবষিঁফ) ৯৯৬/১৫৮৮ সালে সুলতান তৃতীয় মুরাদ উছমানী সাম্রাজ্যে উহা প্রবর্তন করার পর হইতে সেখানে তাহা ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয়তা অর্জন করিয়াছে। ১৯১০ খৃষ্টাব্দ হইতে উহা জাতীয় উৎসবরূপে প্রতিপালিত হইতেছে। কনষ্টান্টিনোপলের অপেক্ষাকৃত পুরাতন আমলে এই উৎসব যেরূপে উদযাপিত হইত তাহাতে নিখুঁত (গড়ঁৎফমবধ ফ’ড়যংংড়হ, ঞধনষবধঁ মবহবৎধষ, চধৎরং ১৭৮৭ র. ২৫৫ প.; এঙজ, াররর., ৪৪১) স্পষ্ট প্রকাশ পায় যে, অপরাপর ইসলামী দেশের অধিকতর জনপ্রিয় প্রকৃতির উৎসবানুষ্ঠানের সহিত উহার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বিদ্যমান। 

যে বিষয়টি বিশেষ লক্ষণীয় এবং যাহা পরবর্তীতে প্রচলিত উৎস অনুষ্ঠানের অত্যন্ত সুস্পষ্ট বৈশিষ্ট্য তাহা হইল ‘মাওলিদ’ আবৃত্তি অর্থাৎ রাসূল (ﷺ)এর জন্ম বৃত্তান্তমূলক কবিতা আবৃত্তি। সে কবিতায় সাধারণত কিছু কাহিনী এবং অলৌকিক ঘটনাবলী বর্ণনার মাধ্যমে অতিশয়োক্তি সহকারে হযরত (ﷺ) এর গুণ কীর্তন করা হয়্ ইত্যাকার কবিতার উৎসমূল ফাতি’মী কায়রো ও আরবেলাতে অনুষ্ঠিত র্ধমিয় বক্তৃতাসমূহ। আরবেলা অবস্থানকালে কোক্বুরীর প্রস্তাবক্রমে ইব্ন দিহ’য়াঃ তাঁহার কিতাবু’ত তানবীর ফী মাওলিদিস সিরাজ রচনা করেন। এই প্রন্থখানি মাওলিদ গ্রন্থরূপে সেই যুগে প্রসিদ্ধি লাভ করে (ইৎড়পশবষসধহহ, এঅখ, ১. ৩৮০)। এই উৎসবের অন্যান্য ক্রমবর্ধমান অংগসমূহের, যথাঃ মশাল মিছিল, ভোজন ও সড়ক মেলাসহ, সঙ্গে পরবর্তী কালে মাওলিদ উৎসবের প্রধান অনুষ্ঠানের রূপ পরিগ্রহ করে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, মক্কায়ও কতকটা এইরূপ আঙ্গিকে মসজিদে মাওলিদ উৎসব অনুষ্ঠিত হইত। ধর্মপ্রাণ ব্যক্তিগণ উৎসবের কয়েক দিন পূর্ব হইতেই বিধি জনপ্রিয় বৈকালিক আনন্দ উপভোগ করিতেন, শিক্ষকগণ বক্তৃতাদান স্থগিত রাখিয়া ছাত্রদের সম্মুখে ও রাস্তাঘাটে লোকসমক্ষে মাওলিদ পাঠ করিতেন, কফিখানায় পর্যন্ত উহা সকলে শুনিয়া আধ্যাত্মিক আবেগ ও আনন্দ লাভ করিত। এরূপ মাওলিদের সংখ্যা বেশ উল্লেখযোগ্য। কবি কাব ইবন যুহায়র বিরচিত বিখ্যাত কিন্তু কম জনপ্রিয় বানাত সুআদ নামক পুরাতন কবিতা, ‘বুসীরী’ রচিত কাসীদাতুল-বুরদাঃ ও হামযিয়্যাঃ এবং উহাদের বহুবিদ অনুকরণ ব্যতীত আরও নানা রকমের নিত্য ব্যবহৃত মাওলিদ কবিতা বিদ্যমান। উহাদের কতকগুলি ইবন হাজার আল-হায়ছামীর গ্রন্থের ন্যায় উপদেশ দানের উদ্দেশ্য রচিত; অন্যগুলি সংক্ষিপ্ত আকারে বিশুদ্ধ উপদেশদান উদ্দেশ্যে রচিত, বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য ইবনু’ল- জাওযী ১১১৬-১২০০ (এঅখ২ ১. ৬৬২) ও জাফার আল- বায়যানজী আল-মাদানীর (১৬৯০-১৭৬৬ খৃ.) কি’স’স’াতুল- মাওলিদ’িন নাবী (এঅখ২ রর. ৫০৩)। আরবী ভাষায় রচিত মাওলিদ ছাড়াও তুর্কী ভাষায় রচিত বহু মাওলিদ আছে (ওৎসম. ঊহমবষশব, ঝঁষবুসধহ ঞংপযবষবনর’ং খড়নমবফরপযঃ, ১৯২৬)। বিশেষ লক্ষণীয় এই কবিতাগুলি ভূমিকা স্মপ্রসারণ, মাওলিদ উৎসব ছাড়াও ক্রমে অন্যান্য আনন্দ উৎসবে উহাদের ব্যবহার করা হইতে থাকে। সুতরাং ‘মাওলিদ’ শব্দটি ক্রমে যে কোন উৎসব, বিশেষভাবে ভোজনোৎসব অর্থে ব্যবহৃত হইতে থাকে (আজ’ীমাঃ তু. ঝহড়ঁপশ ঐঁৎমৎড়হলব, গবশশধ, রর. ১৪৭, ১৫৪ ধহফ ইবপশবৎ, রহ ওংষ, রর. ১৯১১, ঢ়. ২৬ প.)। উৎসবাদি ছাড়াও মালিদ আবৃত্তি বেশ জনপ্রিয় হইয়া ওঠে, উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, ফিলিস্তীনে ধর্মীয় প্রতিজ্ঞা বা মানত পালনার্থ মাওলিদ পড়া হয় (ঞ. ঈধৎধধহ, রহ ঔড়ঁৎহ, ড়ভ ঃযব চধষ. ঙৎ. ঝড়প., ার. ১৯২৬, চ. ৫৫ প.; তু. ইবনুল আরাবীর রচনা বলিয়া কথিত মাওলিদ এর ভূমিকা (এঅখ২, র. ৫৮২)। এই সকল মাওলিদের বিষয় বস্তুর ন্যায় উহাদের কামোটিও পরস্পর সাদৃশ্যপূর্ণ ও পর্যায়ক্রমে আসে কবিতার পর গদ্য এবং গদ্যের পর ছন্দোবদ্ধ বাক্যাবলী, ফঁাকে ফঁাকে প্রায়শ নবী (স’) এর উপর দরূদ পাঠের আবেদন আসে, র্সবশেষ উহার সহিত যিকর সংযু্ক্ত হয়। মাওলিদ পাঠ হযরত মুহাম্মদ (স’) এর প্রতি ভক্তি-শ্রদ্ধা প্রকাশের সর্বোৎকৃষ্ট অভিব্যক্তি হিসাবে ইসলামে প্রায় সর্বজন স্বীকৃতি পাইয়াছে এবং মুসলিম জনগণের একটি ধর্মীয় প্রয়োজন মিটাইবার তাকীদে ইহার উদ্ভব ইহয়াছে। শক্তিশালী সূ’ফী আন্দোলনের ফলশ্রুতিতে ইহার প্রসার লাভ হইয়াছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে এ সত্যটি ভূলিয়া যাওয়া উচিত নহে যে, প্রায় সর্বযুগের মুসলিম সমাজে মাওলিদের বিরুদ্ধে প্রবল বিরোধিতাও হইয়াছে। আরবেলায় অনুষ্ঠিত মাওলিদের আদিকাল হইতেই এইরূপ বিরোধিতা চলিতেছে (আস-সুয়ূতী, হুসনুল-মাকসিদ)। প্রতিপক্ষের মতে এই উৎসব একটি বিদআ بدعة অর্থাৎ নব উদ্ভাবিত প্রথা ও সুন্নাতের ঘোর বিপরীত। এই উৎসবের উৎসাহী সমর্থগণও স্বীকার করেন যে, ইহা বিদ্’আ’ কঠোর নিষ্ঠাবান সুন্নাত অনুসারিগণ সর্বশক্তি প্রয়োগে ইহার প্রতিরোধ করেন। কিন্তু প্রচলিত প্রথা অনেক ক্ষেত্রে ধর্মীর অনুশাসনকে ছাড়াইয়া যায়। জনগণের ধর্মীয় জীবনে একবার সুপ্রতিষ্ঠিত আসন লাভ করিবার পর এই উৎসব কালক্রমে কিছু সংখ্যাক ‘আলিমের সমর্থন লাভ করে। উহার সমর্থণকারিগণ এই বিদআতকে নীতিগপ্তভাবে বিদআঃ হাসানাঃ রূপে স্বীকৃতি দেন। তাঁহাদের যুক্তি এই যে, মাওলিদ উৎসবটি সাধারণ্যে প্রচার লাভ করার ফলে এই উপলক্ষে কতগুলি সৎকাজ আনুষঙ্গিক ভাবে সম্পন্ন হয়, যথাঃ কু’রআন মাজীদের তিলাওয়াত, সুন্নার আলোচনা, নবীর জন্ম উপলক্ষে আনন্দ প্রকাশ, তাঁহার উদ্দেশ্য সা’লাত ও সালাম, দান-খয়রাত ও দরিদ্রজনকে আহার্য দান। বিরুদ্ধ বাদিগণের যুক্তি কতকটা এইরূপঃ মাওলিদের বা (মিলাদে) সূফীদের সামা, নৃত্য ও ভাবোচ্ছ্বাসমূলক অনৈসলামী ক্রিয়াকলাপের জন্য তাহা পরিত্যাজ্য। এক শ্রেণীর লোক মীলাদে আবৃত্তিকে ব্যবসায়রূপে গ্রহণ করিয়াছে এবং অবৈধভাবে অজ্ঞ জনগণের মধ্যে ইহার প্রসার বৃদ্ধির চেষ্টা করিতেছে। এই উদ্দেশ্যে বহু সংখ্যাক অপ্রামাণিক হাদীছ ও অলৌকিক কাহিনী বর্ণনা করে যাহাতে রাসূল (সা) এর প্রকৃত সত্তা অলীক কাহিনীর আড়াল হইয়া পড়ে। প্রচার করা হয় যে, রাসূল (ﷺ) প্রতিটি মীলাদ মাহ্ফিলে উপস্থিত হন এবং এইজন্য তাঁহার প্রতি সম্মান প্রদর্শনার্থে দাড়াইয়া সমস্বয়ে সালাত ও সালাম মুলক কবিতা আবৃত্তি, করিতে হইবে, সংক্ষেপে যাহাকে কি’য়াম (قيام) বলা হয়। এই অনুষ্ঠানটি খুবই বিতর্কমূলক। মীলাদ ইসলামের একটি অপরিহার্য অংগ-এইরূপ ধারণা সাধারন মানুষের মনে বদ্ধমূল করিয়া দেওয়া কোনক্রমেই সমীচীন নহে, ইত্যাকার যুক্তিতে বিরুদ্ধবাদীরা মীলাদের বিপক্ষে মত প্রকাশ করেন। এই দ্বন্দ্বের সর্বোৎকৃষ্ট লিখিত দলীল আ-সুয়ূতীর ফাতওয়া (হুসনুল- মাকসিদ)। তিনি উহাতে উৎসবের ঐতিহাসিক ঘটনাবলীর সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দান করেন, উহার খুটিনাটি বিষয় আলোচনা করেন এবং উপসংহারে সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন যে, উৎসবটি বিদআঃ হাসানাঃ রূপে অনুমোদন লাভের উপযুক্ত, যদি উহার সকল প্রকার অপব্যবহার পরিহার করা হয়। ইব্ন হাজার আল-হায়ছামী তদীয় মাওলিদের ও কুতবুদদীন (ঈযৎড়হরশবহ ফবৎ ঝঃধফঃ গবশশধ, রর. ৪৩৯) একই মত পোষণ করেন, কিন্তু অত্যন্ত নিষ্ঠাবান সুন্নাপন্থী মালিকী ইব্নুল হাজ্জ (মৃ. ৭৩৭/১৩২৬) তীব্রভাবে উহার নিন্দা করেন (কিতাবুল- মাদখাল (১৩২০) ১খ. ১৫৩ ড়.)। 

(সম্পাদক ,এখানে কিছু বিষয় ইচ্ছাকৃত ছেড়ে দিয়েছেন। মদখল কিতাব পড়ে দেখুন) 

এই দ্বন্দ্ব চরমে পৌছিয়াছি অষ্টম-নবম শতকে, কিন্তু পরবর্তী কালেও এই বিরোধিতা সম্পূর্ণ স্তিমিত হয় নাই, বরং ওয়াহ্হাবীগণের অভ্যূদয়ের সঙ্গে সঙ্গে এই দ্বন্দ্ব পুনারয় নবজীবন লাভ করে। মাওলিদ প্রথা ওয়াহাবীদের মূলনীতির খেলাফ অর্থাৎ তাহাদের মতে খাটি সুন্নাঃ মুতাবিক ইসলামের পুনরুজ্জীবনের সহিত ইহার বিরোধ প্রকট। মাওলিদের প্রতি তাহাদের সামগ্রিক বিরোধিতাও এই কারণে। এই ব্যাপারে তাঁহারা তাঁহাদের আন্দোলনের অগ্রদূত হাম্বালী ইবন তায়মিয়্যাঃ (মৃ. ৭২৮/১৩২৮) এর সুন্নাঃ বিরোধী বিদ’আতের বিরুদ্ধে উত্থাপতি প্রতিবাদ কার্যে পরিণত করিয়াছেন মাত্র (ইব্ন তায়মিয়্যাঃ মাওলিদ রজনীতে খাত্মাঃ অনুষ্ঠানের বিরুদ্ধে ফাতাওয়া (কায়রো ১৩২৬/ ১খ. ৩১২)। ওয়াহ্হাবী মতবাদ সাধারণভাবে গৃহীত না হইলেও তাহাদের মাওলিদ সংক্রান্ত মতবাদ অদ্যাবধি বিদ্যামান। স্বনামধণ্য মুহাম্মাদ আবদুহ (মৃ. ১৯০৫) প্রতিষ্ঠিত যে সংস্থাটিকে  “কঁষঃঁৎধিযযধনরংসঁং” নামে আখ্যায়িত করিয়াছেন সেই সংস্থার লোকদের মধ্যে এইরূপ মতবাদ বিশেষভাবে প্রচলিত। তিনি “আল-মানার” সাময়িকীতে দরবেশ পূজার বিরুদ্বে সমালোচনা করিতে গিয়া মাওলিদেরও নিন্দা করেন (, জরপযঃঁমবহ ফবৎ রংষধস কড়ৎধহধঁংষবমঁহম, ঢ়. ৩৬৯ ড়.)। 

অন্যান্য মুসলিম ওয়ালীর প্রতি সম্মান প্রদর্শন ও তাঁহাদের বিসালে. ছাওয়াব অনুষ্ঠানের ব্যাপারেও মাওলিদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রহিয়াছে। যদিও উহা কোন বিশেষ দিনক্ষণের উপর নির্ভর করে না, তথাপি কোন কোন দিনক্ষণ, বিশেষ করিয়া কাহারও জন্মদিন, বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ বলিয়া মনে করা হয়। এই প্রকার উৎসবানুষ্ঠান প্রায়শ কোন কোন স্থানের সহিত, যেমন জন্মস্থান, প্রচারে স্থান ও মাযায়ের স্থান ইত্যাদির সহিত সম্পর্কিত এবং এই সকল স্থানের পবিত্রতা বহু যুগ পূর্ব হইতে স্বীকৃত; যথাঃ তানতায় শায়খ হাসান আল- বাদাবীর মাওলিদ (, গঁয. ঝঃঁফ., রর. ৩৩৮ প.)। অজ্ঞাতনামা দরবেশদের মাওলিদও উদযাপন করা হয়। দরবেশ আস্তানাগুলিতে নবী (ﷺ) মাওলিদের পরেই সংঘ সংস্থাপকের মাওলিদে বিশেষ জনপ্রিয়তা লাভ করিয়াছে। আলী পাশা মুবারাক বলেন (খিতাত জাদীদাঃ ১খ, ৯০; ৩খ. ১২৯ প.) যে, বর্তমান যুগে কায়রোতে এবং বিধ বহু সংখ্যাক উৎসব উদযাপিত হয় এবং ঐ সকল উৎসবের বিশেষ আঙ্গিক হইল উজ্বল আলোকমালায় নগরকে সুসজ্জিত করা, জঁাকজমকপূর্ণ শোভাযাত্রা (মাহফিল’ মাওলিদুন-নাবী উৎসবে মাওকিব, তু. চ. কধযষব. রহ রংষ. রা. ১৯১৬. ঢ়.১৫৫) এবং বিপুল ভোজনোৎসব। 

এই উপমহাদেশে মাওলিদ শব্দের পরিবর্তে মৌলদু; বা মীলাদ শরীফ’ আখ্যা প্রচলিত ছিল। কিন্তু শব্দের অর্থ জাতক অর্থৎ- শিশু। সুতরাং শব্দটি অনুষ্ঠানের সহিত সামঞ্জস্যপূর্ণ না হওয়ায় অধুনা মীলাদ শব্দটি শিক্ষিত সমাজে গৃহীত হইয়াছে। হযরত (সা) এর জন্ম ও মৃত্যু প্রচলিত ধারণা অনুসারে চান্দ্র মাসের একই তারিখে (১২ রাবী’ উল- আওয়াল) হওয়ায় জন্ম ও মৃত্যু দিন একসঙ্গেই পালন করা হয়। এদেশে মীলাদ মাহফিল ফারাশ বিছাইয়া করা হয় এবং ইহাতে সুগন্ধি লোবান জ্বালানো ও গোলাব ছিটানো হয়। মৌলুদ খান (যিনি মৌলুদ পাঠ করেন।) আসিয়া মৌলুদের গ্রন্থ (যাহা সাধারণত উর্দূ ভাষায় লিখিত) হইতে রাসূল (স’) এর জন্ম বৃত্তান্তের আবৃত্তি করেন। এই বিবরণে নানা অপ্রামাণিক রিওয়ায়াত ও অসমর্থিত কাহিনও থাকে। জন্মলগ্নের বর্ণনার সঙ্গে সঙ্গে বর্ণনাকারী ও শ্রোতৃবর্গ দন্ডায়মান হইয়া সালাত ও সালাম সম্বলিত চারিটি বিভিন্ন কবিতা সমবেতভাবে সুর করিয়া পাঠ করেন। অতঃপর তাহারা বসিয়া পড়েন এবং মুনাজাতের পর মিষ্টান্ন (তাবাররুক) বিতরণান্তে সভা ভঙ্গ হয়। বাংলাদেশে ও পাক-ভারত উপমহাদেশের আহল-ই হাদীছ (দ্র) সম্প্রদায় ও দেওবন্দ (দ্র.)-পন্থী হানাফীগণ মৌলুদ অনুষ্ঠানটিকে বিদ্’আত মনে করা ছাড়াও উহার কি’য়ামকে অসিদ্ধ মনে করেন। কোন কোন মাহ’ফিলে মৌলুদের পূর্বে বা পরে কু’রআন ও প্রামাণিক হাদীছের আলোকে রাসূল (ﷺ) এর জীবন চরিত আংশিক বর্ণনা করা হয় এবং কিয়াম পরিত্যাগ করা হয়। তাই বলিয়া আনুষ্ঠানিক মীলাদ একেবারে পরিত্যক্ত হয় নাই। 

দেওবন্দপন্থী ব্যতীত অপর হানাফীগণ মীলাদকে একটি অতি শুভ অনুষ্ঠানরূপে গ্রহণ করিয়াছে। তাই ১২ রাবী’উল-আওয়াল ছাড়াও কোন ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান উদ্বোধনকালে, নূতন গৃহে প্রবেশকালে, সন্তান ভূমিষ্ঠ হইলে, কাহারও মৃত্যু হইলে, বিশিষ্ট ব্যক্তিদের মৃত্যু দিবসে তাহাদের আবাসে বা সমাধিক্ষেত্রে, বিবাহ অনুষ্ঠানে, শব-ই বরাত, রামাদান প্রভৃতি উপলক্ষে মৌলুদের অনুষ্ঠান করা হয়। 

বাংলাদেশে সরকার রাসূল (ﷺ) এর জন্ম ও মৃত্যু দিবসকে জাতীয় উৎসব হিসাবে গ্রহণ করায় পরিবারে, মসজিদে, বিদ্যালয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সীরাতু’ন-নাবী অনুষ্ঠান উদ্যাপিত হয়। এতদ্ব্যতীত প্রায় প্রতি বিদ্যালয়েই বার্ষিক মৌলুদ অনুষ্ঠিত হয়। ইহাকে ফাতিহাঃ দুওয়ায দাহম ও বলা হয়।

পোষ্টটি ভালো লেগে থাকলে আপনার মূল্যবান মতামত জানান প্লিজ!

Leave a Comment