শায়েখ তার সম্প্রদায়ের কাছে ঐরূপ যেরূপ নবী তার উম্মতের মাঝে
الشَّيْخُ فِي قَوْمِهِ كَالنَّبِيِّ فِي أُمَّتِهِ
-“শায়েখ তার সম্প্রদায়ের কাছে ঐরূপ যেরূপ নবী তার উম্মতের মাঝে।”
সনদসহ হাদিসখানা নিম্নরূপ,
(ابْن حبَان) حَدَّثَنَا عَلِيّ بْن أَحْمَد بْن حاتِم حَدَّثَنَا عُمَر بْن مُحَمَّد بْن القيرواني حَدَّثَنَا عَبْد الله بْن عُمَر بْن غَنَائِم عَن مَالك عَن نَافِع عَنِ ابْنِ عُمَرَ مَرْفُوعا: الشَّيْخُ فِي بَيْتِهِ كَالنَّبِيِّ فِي قَوْمِهِ،
-“হযরত ইবনে উমর (رضي الله عنه) মারফু রূপে বর্ণনা করেন, শায়েখ তার ঘরে ঐরূপ যেরূপ নবী তার উম্মতের মাঝে।” ৭৫৭৫, ইমাম যাহাবী: তারিখুল ইসলাম, ১৮৮ নং রাবী ব্যাখ্যায়; ইমাম ইবনে হিব্বান: মাজরুহিন, ৫৭১ নং রাবীর ব্যাখ্যায়; ইমাম ছিয়তী: জামেউল আহাদিস, হাদিস নং ১৩৫১৬; ইমাম ছিয়তী: জামেউছ ছাগীর, হাদিস নং ৭১৯৫; ইমাম ছিয়তী: ফাতহুল কবীর, হাদিস নং ৭১৭৮; ইমাম হিন্দী: কানজুল উম্মাল, হাদিস নং ৪২৬৩৩; ইমাম ছিয়তী: আল লাআলী মাসনূয়া, ১ম খন্ড, ১৪০ পৃ:; ইমাম ছাখাবী: মাকছিদুল হাছানাহ, হাদিস নং ৬০৯;
এই হাদিসের রাবী ‘আব্দুল্লাহ ইবনে উমর ইবনে গানিম ইফরিকী’ সম্পর্কে ইমাম যাহাবী ( رَحْمَةُ الله عليه) প্রাথমিক পর্যায়ে যদিও মাজহুল বা অপিরিচিত বলেছিলেন কিন্তু পরবর্তীতে এরূপ বলেননি। যেমন তিনি তদীয় তারিখুল ইসলাম গ্রন্থে এভাবে উল্লেখ করেছেন:-
عبد الله بن عمر بن غانم الرُّعَيْنيّ [الوفاة: ১৮১ – ১৯০ ه] قاضي إفريقية.
-“আব্দুল্লাহ ইবনে উমর ইবনে গানিম ইফরিকী ওফাত ১৮১-১৯০ হিজরী। সে ইফরিক শহরের কাজী ছিলেন।”
قال أبو داود: أحاديثه مستقيمة. -“ইমাম আবু দাউদ ( رَحْمَةُ الله عليه) বলেন: তার হাদিস সু-প্রতিষ্ঠিত।” ৭৬৭৬, ইমাম যাহাবী: তারিখুল ইসলাম, রাবী নং ১৮৮;
আল্লামা নুরুদ্দিন আলী ইবনে মুহাম্মদ কেনানী ( رَحْمَةُ الله عليه) ওফাত ৯৬৩ হিজরী বলেন,
روى لَهُ أَبُو دَاوُد، وَقَالَ الذَّهَبِيّ فِي الكاشف مُسْتَقِيم الحَدِيث (قلت): وَقَالَ الْحَافِظ ابْن حجر فِي التَّقْرِيب: وَثَّقَهُ ابْن يُونُس
-“ইমাম আবু দাউদ ( رَحْمَةُ الله عليه) তার থেকে হাদিস বর্ণনা করেছেন এবং ইমাম যাহাবী ( رَحْمَةُ الله عليه) তার ‘কাশ্শাফ’ গ্রন্থে বলেন: তার হাদিস সু-প্রতিষ্ঠিত। আমি বলি: হাফিজ ইবনে হাজার ( رَحْمَةُ الله عليه) তার ‘তাকরীব’ গ্রন্থে বলেন: ইবনে ইউনূছ ( رَحْمَةُ الله عليه) তাকে বিশ্বস্ত বলেছেন।” ৭৭৭৭, তানজিহুশ শারিয়াতুল মারফুয়া, হাদিস নং ৭৩;
এই রাবী সম্পর্কে হাফিজুল হাদিস, ইমাম ছাখাবী ( رَحْمَةُ الله عليه) বলেন:
فهو جليل القدر ثقة لا ريب فيه -“সে সন্দেহাতীত সু-স্পষ্ট বিশ্বস্ত রাবী।” ৭৮৭৮, ইমাম ছাখাবী: মাকাছিদুল হাছানা, ৬০৯ নং হাদিসের ব্যাখ্যায়;
এছাড়া ‘আলী ইবনে আহমদ ইবনে হাতেম’ সম্পর্কে ইমাম শামছুদ্দিন আবুল খায়ের ইবনে জাওযী ( رَحْمَةُ الله عليه) معروف বা প্রসিদ্ধ ব্যক্তি বলেছেন।” ৭৯৭৯, গায়াতুন নেহায়া ফি তাবকাতিল কুরা, রাবী নং ২১৪৪;
অন্য কোন রাবী কিজবের দোষে দূষী আছে বলে আমি পাইনি। অতএব, রেওয়ায়েতটি শক্তিশালী ও নির্ভরযোগ্য। এ সমর্থনে আরেকটি রেওয়ায়েত উল্লেখ করা যায়,
حَدَّثَنَا مُحَمد بْنُ الْحَسَنِ بْنِ قتيبة، قَال: حَدَّثَنا مُحَمد بْنُ شُعَيب الْحَرَّانِيُّ، قَال: حَدَّثَنا عُثْمَانُ بْنُ عَبد الرَّحْمَنِ الطَّرَائِفِيُّ عَنْ عَنْبَسَةَ بْنِ عَبد الرَّحْمَنِ عَنْ مُحَمد بْنِ زَاذَانَ عَنْ أُمِّ سَعْدٍ بِنْتِ زَيْدِ بْنِ ثَابِتٍ عَنْ أَبِيهِا، قَال: قَال رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ طَاعَةُ الْمَرْأَةِ نَدَامَةٌ
-“উম্মে সাঈদ বিনতে জায়েদ ইবনে ছাবেত তার পিতা হযরত জায়েদ ইবনে ছাবেত (رضي الله عنه) থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন রাসূলে পাক ( ﷺ) বলেছেন: মহিলাদের অনুসরণ করা নির্লজ্জতার কাজ।”৮০৮০, ইমাম ইবনে আদী: আল কামিল, ৬ষ্ঠ খন্ড, ৪৬২ পৃ: ১৪০৬ নং রাবীর ব্যাখ্যায়; আদ দুরারুল মুনতাশিরা ফি আহাদিছিল মুশতাহিরা, ১ম খন্ড, ১২ পৃ:;
এ বিষয়ে আরেকটি রেওয়ায়েত লক্ষ্য করুন,
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ قَالَ: نا مُحَمَّدُ بْنُ عِيسَى الطَّبَّاعُ قَالَ: نا بَكَّارُ بْنُ عَبْدِ الْعَزِيزِ بْنِ أَبِي بَكَرَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي بَكَرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: هَلَكَتِ الرِّجَالُ حِينَ أَطَاعَتِ النِّسَاءَ
-“আবী বাকরা (رضي الله عنه) বলেন, রাসূলে করিম ( ﷺ) বলেছেন: পুরুষ লোক ধংস হয় তখন যখন সে নারীর আনুগত্য করে।” ৮১৮১, ইমাম তাবারানী: মুজামুল কবীর, হাদিস নং ৪২৫; মুস্তাদরাকে হাকেম, হাদিস নং ৭৭৮৯; ইমাম ইবনে আদী: আল কামিল, ২য় খন্ড, ২১৮ পৃ:; ইমাম আবু নুয়াইম: তারিখে ইসবাহান, ১ম খন্ড, ৪৫৯ পৃ:; আদ দুরারুল মুনতাশিরা ফি আহাদিছিল মুশতাহিরা, ১ম খন্ড, ১২ পৃ:;
ইমাম যাহাবী ও ইমাম হাকেম ( رَحْمَةُ الله عليه) এই হাদিসের সনদ সম্পর্কে বলেন, هَذَا حَدِيثٌ صَحِيحُ الْإِسْنَادِ -“এই হাদিসের সনদ ছহীহ্।” ৮২৮২, মুস্তাদরাকে হাকেম, হাদিস নং ৭৭৮৯;
উক্ত দুইটি রেওয়ায়েত দ্বারা মূল হাদিসটি সমর্থিত হয়। কেননা পুরুষ লোক মহিলাদের পরিচালন ইহা স্বয়ং কোরআনের কথা। আর সে অর্থে প্রত্যেক পরিবারে পরিচালক সে পরিবারে মূল কর্তা হওয়া স্বাভাবিক কথা। উম্মত তার নবীকে অনুসরণ করে আর পরিবারে সকলে ঐ পরিবারের কর্তাকে তথা শায়েখকে অনুসরণ করবে। এ বিষয়ে আরেকটি রেওয়ায়েত লক্ষ্য করুন,
ابْن عَبَّاس الشَّيْخ فِي أَهله كالنبي فِي أمته -“হযরত ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) বর্ণনা করেন, শায়েখ তার পরিবারে ঐরূপ যেরূপ নবী তার উম্মতের মাঝে।” ৮৩৮৩, ইমাম দায়লামী: আল ফেরদৌস, হাদিস নং ৩৬৬৬;
এ বিষয়ে আরেকটি রেওয়ায়েত লক্ষ্য করুন,
أخبرنا علي بن إسماعيل بن علي أبو الحسن بن أبي المعالي العلوي الأذرعي بقراءتي عليه بمرو أبنا الأديب أبو محمد كامجار بن عبد الرزاق بن محتاج بن أحمد بن سهل الشافعي قراءة عليه قال ثنا القاضي أبو بكر أحمد بن محمد بن إبراهيم الصدقي إملاء ثنا أبو عبد الله الحسين بن علي الخطيب ثنا أستاذي أبو جعفر محمد بن أحمد الفقيه ثنا عبد الله بن محمود السعدي ثنا محمد بن عبد الملك الكوفي القناطري ثنا إسماعيل بن إبراهيم شيخ لنا عن ابن أبي رافع عن أبي رافع قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: الشيخ في أهله كالنبي في أمته.
-“হযরত আবী রাফে (رضي الله عنه) বলেন, রাসূলে করিম ( ﷺ) বলেছেন: শায়েখ তার পরিবারে ঐরূপ যেরূপ নবী তার উম্মতের মাঝে।” ৮৪৮৪, মুজামে ইবনে আসাকির, হাদিস নং ৮৭১; ইমাম ছিয়তী: জামেউছ ছাগীর, হাদিস নং ৭১৯৪; ইমাম ছিয়তী: ফাতহুল কবীর, হাদিস নং ৭১৭৭; ইমাম হিন্দী: কানজুল উম্মাল, হাদিস নং ৪২৬৩২;
ইমাম জালালুদ্দিন ছিয়তী ( رَحْمَةُ الله عليه) এর ‘জামেউছ ছাগীর’ কিতাবে কোন জাল হাদিস নেই। যেমন এই হাদিস সম্পর্কে ইমাম আজলুনী ( رَحْمَةُ الله عليه) বলেন,
لكن أورد السيوطي في الجامع الصغير عن جابر بلفظ ركعتان بعمامة خير من سبعين ركعة من غير عمامة فهو غير موضوع لأن الجامع المذكور جرده مؤلفه عن الموضوع.
-“ইমাম ছিয়তী ( رَحْمَةُ الله عليه) তার ‘জামেউস ছাগীর গ্রন্থে এই শব্দে হাদিসটি উল্লেখ করেছেন:- পাগড়ী সহ ২ রাকাত পাগড়ী ব্যতীত ৭০ রাকাতের সমান। এই হাদিস মওজু নয়, কারণ জামেউছ ছাগীর কিতাবে লেখক কোন মওজু হাদিস উল্লেখ করেননি।” ৮৫৮৫, ইমাম আজলুনী: কাশফুল খাফা, হাদিস নং ১৬০৩;
তাই হাদিসের সর্বনিম্ন স্তর দ্বায়িফ অথবা শাওয়াহিদ থাকায় হাছান হবে। এ বিষয়ে আরেকটি রেওয়ায়েত লক্ষ্য করুন,
قَالَ ابْن أَبِي الفراتي فِي جزئه أَنْبَأنَا جدِّي أَبُو عَمْرو، حَدَّثَنَا أَحْمَد بْن يَعْقُوب الْقُرَشِيّ الْجِرْجَانِيّ الْأمَوِي حَدَّثَنَا عَبْد الله بْن مُحَمَّد بْن سُلَيْمَان السَّعْدِيّ الْمَرْوَزِيّ حَدَّثَنَا أَحْمَد بْن عَبْد الْملك القناطري حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيل بْن إِبْرَاهِيم شيخ لنا عَن أَبِيهِ عَنْ رَافِعِ بْنِ أَبِي رَافِعٍ عَن أَبِيهِ قَالَ قَالَ رَسُول الله الشَّيْخُ فِي أَهْلِهِ كَالنَّبِيِّ فِي أُمَّتِهِ،
-“হযরত রাফে ইবনে আবী রাফে তার পিতা হতে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, রাসূলে করিম ( ﷺ) বলেছেন: শায়েখ তার পরিবারে ঐরূপ যেরূপ নবী তার উম্মতের মাঝে।” ৮৬৮৬, ইমাম ছিয়তী: জামেউল আহাদিস, হাদিস নং ১৩৫১৫; ইমাম ছিয়তী: আল লাআলী মাসনূয়া, ১ম খন্ড, ১৪১ পৃ:; ইমাম মোল্লা আলী ক্বারী: আসরারুল মারফুয়া, হাদিস নং ২৫৩; হাফিজ ইরাকী: তাখরিজু আহাদিসু এহ্ইয়ায়ে উলুমুদ্দিন, ১ম খন্ড, ২৩০ পৃ:;
এই হাদিস সম্পর্কে হাফিজুল হাদিস, ইমাম জালালুদ্দিন ছিয়তী ( رَحْمَةُ الله عليه) তদীয় কিতাবে উল্লেখ করেন,
وَقَالَ الْحَافِظ أَبُو الْفضل الْعِرَاقِيّ فِي تَخريج الْإِحْيَاء إسنادهُ ضَعِيف.
-“হাফিজ আবুল ফজল ইরাকী ( رَحْمَةُ الله عليه) তার ‘তাখরিজে এহইয়া’ গ্রন্থে বলেন, এর সনদ দ্বায়িফ ।” ৮৭৮৭, ইমাম ছিয়তী: আল লাআলী মাসনূয়া,১ম খন্ড, ১৪১ পৃ:;
আল্লামা ইমাম মোল্লা আলী ক্বারী ( رَحْمَةُ الله عليه) বলেন,
وَيُقَوِّيهِ مِنْ حَيْثُ الْمَعْنَى حَدِيثٌ صَحِيحٌ -“ছহীহ্ হাদিস দ্বারা ইহার মাআনা বা অর্থ শক্তি অর্জন করেছে।” ৮৮৮৮, ইমাম মোল্লা আলী ক্বারী: আসরারুল মারফুয়া, হাদিস নং ২৫৩;
হাফিজুল হাদিস, ইমাম যায়নুদ্দিন ইরাকী ইরাকী ( رَحْمَةُ الله عليه) ওফাত ৮০৬ হি. বলেন,
أخرجه ابْن حبَان فِي الضُّعَفَاء من حَدِيث ابْن عمر وَأَبُو مَنْصُور الديلمي من حَدِيث أبي رَافع بِسَنَد ضَعِيف.
-“ইবনে হিব্বান ( رَحْمَةُ الله عليه) তার ‘দোয়াফা’ গ্রন্থে ইবনে উমর (رضي الله عنه) থেকে হাদিস বর্ণনা করেছেন এবং আবু মানছুর দাইলামী ( رَحْمَةُ الله عليه) আবী রাফে (رضي الله عنه) থেকে দ্বায়িফ সনদে হাদিস বর্ণনা করেছেন।” ৮৯৮৯, তাখরিজু আহাদিসুল এহইয়া, হাদিস নং ১;
আল্লামা তাহের ইবনে আলী ফাতানী ( رَحْمَةُ الله عليه) ওফাত ৯৮৬ হিজরী তদীয় কিতাবে বলেন, لِابْنِ حبَان والديلمي ضَعِيف جدا -“কেননা ইবনে হিব্বান ও দায়লামী এর সনদ অত্যান্ত দ্বায়িফ ।” ৯০৯০, তাজকিরাতুল মাওজুয়াত, ১ম খন্ড, ২০ পৃ:;
হাফিজুল হাদিস, ইমাম জালালুদ্দিন ছিয়তী ( رَحْمَةُ الله عليه) বলেন,
أَخْرَجَهُ ابْنُ حِبَّانَ وَالدَّيْلَمِيُّ ضَعِيفٌ جِدًّا -“অত্যান্ত দুর্বল সনদে ইবনে হিব্বান ও দায়লামী ( رَحْمَةُ الله عليه) হাদিসটি বর্ণনা করেছেন।” ৯১৯১, ইমাম ছিয়তী: আল মাসনূ ফি মারিফাতিল মাওজু, হাদিস নং ১৬৯;
অন্যত্র তিনি বলেন: لكن في معناه حديث -“কিন্তু এর মাআনা বা অর্থটি হাদিস।” ৯২৯২, ইমাম ছিয়তী: আদ দুরারুল মুনতাশিরা ফি আহাদিসিল মুশতাহিরা, ১ম খন্ড, ১২ পৃ:;
কাজী শাওকানী তার কিতাবে হাদিসটি নিয়ে তেমন সমালোচনা না করে তিনি লিখেছেন: وقال العراقي في تخريج الإحياء: إسناده ضعيف -“হাফিজ ইরাকী তার ‘তাখরিজে এহইয়া’ কিতাবে বলেছেন: এর সনদ দ্বায়িফ ।” ৯৩৯৩, কাজী শাওকানী: ফাওয়াইদুল মাজমুয়া, হাদিস নং ৫৮, ৪৪৭ পৃ:;
হাফিজ ইবনে হাজার ( رَحْمَةُ الله عليه) ও ইবনে তাইমিয়া হাদিসটিকে মওজু বলেছেন। তবে ইমাম ইবনে হাজার আসকালানীর উস্তাদ হাফিজুল হাদিস, ইমাম হাফিজ যায়নুদ্দিন ইরাকী ( رَحْمَةُ الله عليه), হাফিজুল হাদিস, ইমাম জালালুদ্দিন ছিয়তী ( رَحْمَةُ الله عليه), আল্লামা ইমাম মোল্লা আলী ক্বারী ( رَحْمَةُ الله عليه) ও আল্লামা তাহের ফাতানী ( رَحْمَةُ الله عليه) এর মতে ইহা দ্বায়িফ সনদে প্রমাণিত এবং এর মাআনা বা অর্থ বিশুদ্ধ। সকলেই অবগত আছে, ইমাম ছিয়তী ( رَحْمَةُ الله عليه) এর জামেউছ ছাগীর গ্রন্থের কোন মওজু হাদিস নেই, সেহেতু অবশ্যই ইহা রাসূলে পাক ( ﷺ) এর হাদিস। পূর্ব যুগের ইসলামী মনিষীগণ তাদের স্ব স্ব কিতাবেও ইহাকে হাদিসে রাসূল বলে স্বীকৃতি দিয়েছেন। যেমন নিচের বর্ণনা গুলো লক্ষ্য করুন:- ইমাম গাজ্জালী ( رَحْمَةُ الله عليه) এভাবে উল্লেখ করেছেন,
قال صلى الله عليه وسلم الشيخ في قومه كالنبي في أمته -“আল্লাহর রাসূল ( ﷺ) বলেছেন: শায়েখ তার সম্প্রদায়ে তেমন, যেমনি একজন নবী তার উম্মতের মাঝে।” ৯৪৯৪, ইমাম গাজ্জালী: এহইয়ায়ে উলুমুদ্দিন, ১ম খন্ড, ৮৩ পৃ:;
আল্লামা আব্দুল কারিম ইবনে হাওয়াজিন ইবনে আব্দুল মালেক কুশাইরী ( رَحْمَةُ الله عليه) ওফাত ৪৬৫ হি. তদীয় কিতাবে এভাবে উল্লেখ করেছেন,
وفى الخبر: الشيخ فى قومه كالنبى فى أمته -“খবরে বর্ণিত আছে: শায়েখ তার সম্প্রদায়ে তেমন, যেমনি একজন নবী তার উম্মতের মাঝে।” ৯৫৯৫, লাতাইফুল ঈশারাত, ২য় খন্ড, ২৮৯ পৃ:;
আল্লামা আবুল হাফছ সিরাজুদ্দিন উমর ইবনে আলী হাম্বলী দামেস্কী (ওফাত ৭৭৫হি.) এভাবে উল্লেখ করেছেন,
قوله صلوات الله وسلامه عليه:الشَّيخ في قَومِه كالنَّبيِّ في أمَّتهِ
-“রাসূল ( ﷺ) বাণী হল: শায়েখ তার সম্প্রদায়ে তেমন, যেমনি একজন নবী তার উম্মতের মাঝে।” ৯৬৯৬, আল লুভাব ফি উলুমিল কিতাব, ১২তম খন্ড, ৭৬ পৃ:;
আল্লামা ইসমাঈল হাক্বী ( رَحْمَةُ الله عليه) এভাবে উল্লেখ করেছেন,
كما قال عليه السلام الشيخ فى قومه كالنبى فى أمته -“যেমনটি আল্লাহর রাসূল ( ﷺ) বলেছেন: শায়েখ তার সম্প্রদায়ে তেমন, যেমনি একজন নবী তার উম্মতের মাঝে।” ৯৭৯৭, তাফছিরে রুহুল বয়ান, ৩য় খন্ড, ৪৬৬ পৃ:;
আল্লামা নাজিমুদ্দিন হাছান ইবনে মুহাম্মদ নিছাপুরী ( رَحْمَةُ الله عليه) ওফাত ৮৫০ হি. এভাবে উল্লেখ করেছেন,
وقال أيضا صلى الله عليه وسلم الشيخ في قومه كالنبي في أمته
-“এমনিভাবে আল্লাহর নবী ( ﷺ) বলেছেন: শায়েখ তার সম্প্রদায়ে তেমন, যেমনি একজন নবী তার উম্মতের মাঝে।” ৯৮৯৮, তাফছিরে নিছাপুরী, ৪র্থ খন্ড, ২৬৮ পৃ:;
ইমাম ফখরুদ্দিন রাজী ( رَحْمَةُ الله عليه) এভাবে উল্লেখ করেছেন,
قَوْلُهُ عَلَيْهِ السَّلَامُ: الشَّيْخُ فِي قَوْمِهِ كَالنَّبِيِّ فِي أُمَّتِهِ -“আল্লাহর রাসূল ( ﷺ) এর বাণী: শায়েখ তার সম্প্রদায়ে তেমন, যেমনি একজন নবী তার উম্মতের মাঝে।” ৯৯৯৯, তাফছিরে কবীর, ২০তম খন্ড, ২১৯ পৃ:;
আল্লামা আবুল আব্বাস আহমদ ইবনে মুহাম্মদ আনজেরী সূফী ( رَحْمَةُ الله عليه) ওফাত ১২২৪ হিজরী এভাবে উল্লেখ করেছেন,
وفي الخبر: الشيخ في أهله كالنبيِّ في أمته -“খবরে বর্ণিত আছে: শায়েখ তার পরিবারে তেমন, যেমন একজন নবী তার উম্মতের মাঝে।” ১০০০১০০০, বাহরুল মাদিদ ফি তাফছিরে কুরআনিল মাজিদ, ৫ম খন্ড, ১২৬ পৃ:;
আল্লামা কাজী ছানাউল্লাহ পানিপাথি ( رَحْمَةُ الله عليه) এভাবে উল্লেখ করেছেন,
وعن ابى رافع عن النبي صلى الله عليه وسلم قال الشيخ فى اهله كالنبى فى أمته
-“আবী রাফে (رضي الله عنه) নবী করিম ( ﷺ) থেকে বর্ণনা করেছেন, নিশ্চয় রাসূল ( ﷺ) বলেছেন: শায়েখ তার পরিবারে তেমন যেমন একজন নবী তার উম্মতের মাঝে।” ১১, তাফছিরে মাজহারী, ৫ম খন্ড, ২৫৪ পৃ:;