যে আলিমের সাথে বসবে সে যেন নবীর সাথে বসল।
مَنْ جَالَسَ عَالِمًا فَكَأَنَّمَا جَالَسَ نَبِيًّا
-“যে আলিমের সাথে বসবে সে যেন নবীর সাথে বসল।”
এই হাদিস সম্পর্কে আল্লামা মোল্লা আলী ক্বারী ( رَحْمَةُ الله عليه) বলেন,
قَالَ السَّخَاوِيُّ لَا أَعْرِفُهُ فِي الْمَرْفُوعِ قُلْتُ لَكِنَّ مَعْنَاهُ صَحِيحٌ لِأَنَّ الْعُلَمَاءَ وَرَثَةُ الْأَنْبِيَاءِ وَقَدْ قَالَ اللَّهُ تَعَالَى {فَاسْأَلُوا أَهْلَ الذِّكْرِ إِن كُنْتُم لَا تعلمُونَ} وَوَرَدَ الشَّيْخُ فِي قَوْمِهِ كَالنَّبِيِّ فِي أُمَّتِهِ
-“ইমাম ছাখাবী ( رَحْمَةُ الله عليه) বলেন: মারফুভাবে আমি ইহাকে জানিনা। আমি বলি: এর মাআনা বা অর্থ বিশুদ্ধ, কেননা আলিমগণ নবীদের উত্তরাধিকার. আর আল্লাহ তা’আলা বলেছেন: “তোমরা আহলে জিকিরকে জিজ্ঞাসা কর যদি না জান।” আর উল্লেখ আছে: শায়েখ তার সম্প্রদায়ে ঐরূপ যেরূপ একজন নবী তার উম্মতের কাছে।” (ইমাম মোল্লা আলী ক্বারী: আসরারুল মারফুয়া, হাদিস নং ৪৭৯; ইমাম আজলুনী: কাশফুল খাফা, হাদিস নং ২৪৪৯;)
এই হাদিস উল্লেখ করে আল্লামা আহমদ ইবনে আব্দুল কারিম আমেরী ( رَحْمَةُ الله عليه) ওফাত ১১৪৩ হিজরী, হাফিজুল হাদিস ইমাম ছাখাবী ( رَحْمَةُ الله عليه) ওফাত ৯০২ হিজরী ও ইমাম আজলুনী ( رَحْمَةُ الله عليه) ওফাত ১১৬২ হিজরী আরেকটি বর্ণনা উল্লেখ করেছেন,
لَا يُعْرَفُ لَكِنْ جَاءَ عَنِ الشَّافِعِيِّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ إِذَا رَأَيْتَ رَجُلا مِنْ أَصْحَابِ الْحَدِيثِ فَكَأَنَّمَا رَأَيْت النَّبِي صلى الله عَلَيْهِ وَسلم
-“ইহা সম্পর্কে জানা যায়নি, কিন্তু ইমাম শাফেয়ী ( رَحْمَةُ الله عليه) থেকে বর্ণিত আছে, যখন কেউ কোন হাদিসের আলিমকে দেখবে সে যেন নবীকে দেখল।”(জাদ্দিল হাছিছ ফি বায়ানে মা লাইছা বি’হাদিস, হাদিস নং ৪৯৬; ইমাম ছাখাবী: মাকাছিদুল হাছানাহ, হাদিস নং ১১০৪ নং হাদিসের ব্যাখ্যায়; ইমাম আজলুনী: কাশফুল খাফা, হাদিস নং ২৪৪৯;)
এই হাদিসের অর্থের সাথে মিল রয়েছে এমন একাধিক রেওয়ায়েত বর্ণিত হয়েছে। যেমন ইমাম দায়লামী ( رَحْمَةُ الله عليه) হাদিসটি এভাবে বর্ণনা করেছেন,
عن مُعَاوِيَة بن حيدة من اسْتقْبل الْعلمَاء فقد استقبلني وَمن زار الْعلمَاء فقد زارني وَمن جَالس الْعلمَاء فقد جالسني وَمن جالسني فَكَأَنَّمَا جَالس رَبِّي عز وَجل
-“সাহাবী হযরত মুয়াবিয়া ইবনু হায়দাহ (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত, আল্লাহর রাসূল ( ﷺ) বলেছেন: যে ব্যক্তি আলেমকে স্বাগতম করল সে যেন আমাকে স্বাগতম করল, যে ব্যক্তি কোন আলেমের যিয়ারত করল সে যেন আমার যিয়ারত করল, যে ব্যক্তি আলেমের সাথে বসল সে যেন আমার সাথে বসল, যে ব্যক্তি আমার সাথে বসল সে যেন আল্লাহর কাছে বসল।”(মুসনাদু ফেরদৌস, হাদিস নং ৫৮৯৩; ইমাম হিন্দী: কানজুল উম্মাল, হাদিস নং ২৮৮৮৩; ইমাম ছিয়তী: জামেউল আহাদিছ, হাদিস নং ৪৫৭১০;)
ইমাম আলাউদ্দিন হিন্দী ( رَحْمَةُ الله عليه) ও হাফিজুল হাদিস ইমাম জালাউদ্দিন ছিয়তী ( رَحْمَةُ الله عليه) হাদিস উল্লেখ করে বলেছেন,
الرافعي عن بهز بن حكيم عن أبيه عن جده. -“ইমাম রাফেয়ী ( رَحْمَةُ الله عليه) বাহজ ইবনু হাকিম ( رَحْمَةُ الله عليه) থেকে, তিনি তিনার পিতা ও দাদার সূত্রে বর্ণনা করেছেন।”(ইমাম হিন্দী: কানজুল উম্মাল, হাদিস নং ২৮৮৮৩; ইমাম ছিয়তী: জামেউল আহাদিছ, হাদিস নং ৪৫৭১০;) এখানে ‘বাহজ ইবনু হাকীম’ এর দাদা হল معاوية بن حيدة (মুয়াবিয়া ইবনু হায়দাহ) যিনি আল্লাহর রাসূলের সাহাবী।
এ বিষয়ে আরেকটি রেওয়ায়েত ইমাম আবু নুয়াইম ইস্পাহানী ( رَحْمَةُ الله عليه) ওফাত ৪৩০ হিজরী আরেকজন সাহাবী থেকে এভাবে বর্ণনা করেছেন,
حدثنا أبو الحسين محمد بن أحمد بن جعفر، ثنا يعرب بن خيران، ثنا محمد بن الفضل بن العباس البلخي بسمرقند ، ثنا أبو محمد حمد بن نوح، ثنا حفص بن عمر العدني، عن الحكم، عن عكرمة، عن ابن عباس، قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: من زار العلماء فكأنما زارني، ومن صافح العلماء فكأنما صافحني، ومن جالس العلماء فكأنما جالسني، ومن جالسني في الدنيا أجلس إلى يوم القيامة
-“হযরত ইবনু আব্বাস (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল ( ﷺ) বলেছেন: যে ব্যক্তি আলেমের যিয়ারত করলসে যেন আমার যিয়ারত করল, যে ব্যক্তি আলেমের সাথে বসল সে যেন আমার সাথে বসল, যে ব্যক্তি দুনিয়ায় আমার সাথে বসল সে যেন সে কেয়ামতের দিন আমার কাছে বসবে।”(ইমাম আবু নুয়াইম: আখবারু ইসবাহান, হাদিস নং ২১০৭;)
এই হাদিসের সনদের গ্রহণযোগ্যতা সম্পর্কে অত্র কিতাবে পূর্বে আলোচনা করেছি। অর্থাৎ হাদিসটি নূন্যতম দ্বায়িফ সনদের। সুতরাং এই হাদিস দ্বারা উল্লেখিত হাদিসটির মাআনা সঠিক প্রমাণিত হয়।