নেক বান্দাগণের আলোচনা কালে রহমত নাজিল হয়

পোষ্টটি অন্যকে পড়ার সুযোগ করে দিতে শেয়ার করুন প্লিজ।

নেক বান্দাগণের আলোচনা কালে রহমত নাজিল হয়

قوله صلى الله عليه وسلم عِنْدَ ذِكْرِ الصَّالِحِينَ تَنْزِلُ الرَّحْمَةُ

-“রাসূলে পাক ( ﷺ‎‎) বলেছেন: নেক বান্দাহগণের আলোচনার সময় রহমত নাজিল হয়।”

*ইমাম গাজ্জালী: এহইয়ায়ে উলুমুদ্দিন, ২য় খন্ড, ২৩১ পৃ:; 

*আব্দুর রহমান ইবনে আব্দুস সালাম সাফুরী রঃ ওফাত ৮৯৪ হিজরী: 

*নুজহাতুল মাজালিছ ওয়া মুন্তাখাবুন নাফাইছ, ১ম খন্ড, ৩ পৃ:; 

*ইমাম ছাখাবী: মাকাছিদুল হাছানা, ২৯২ পৃ:; 

আবু আলী ছদরুদ্দিন বুকরা দামেস্কী (রঃ) ওফাত ৬৫৬ হি.: কিতাবু আরবাইনা হাদিসান, ১ম খন্ড, ৫২ পৃ:; 

*ইমাম আহমদ: আল ওয়ারাআ, হাদিস নং ২৬৭; 

*হাফিজ ইবনে আব্দিল বার: জামেউল বায়ানু ওয়া ফাদ্বলিহী, ৩য় খন্ড, ৪১৫ পৃ:; 

*ইমাম মোল্লা আলী ক্বারী: মেরকাত শরহে মেসকাত, ১৬৭৮ নং হাদিসের ব্যাখ্যায়; 

*ইমাম মোল্লা আলী ক্বারী: শরহে শিফা, ১ম খন্ড, ৬০ পৃ:; 

*জামেউল অয়াইল ফি শরহে শামাইল, ১ম খন্ড, ৫ পৃ:; 

*ইমাম মোল্লা আলী ক্বারী: মওজুয়াতুল কোবরা, ১৬১ পৃ:; 

*ইমাম ইবনে ছালেহী: সুবুলুল হুদা ওয়ার রাশাদ, ২য় খন্ড, ৩৯৭ পৃ:; 

*ইমাম আজলুনী: কাশফুল খফা, ২য় খন্ড, ৬৫ পৃ:;

ইমাম আসকালানী ও হাফিজ ইরাকী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেছেন: 

لَيْسَ لَهُ أَصْلٌ فِي الْمَرْفُوعِ -“ইহা মারফূভাবে কোন ভিত্তি নেই।” ইমাম মোল্লা আলী ক্বারী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেন,

وَقَالَ الْعِرَاقِيُّ فِي تَخْرِيجِ الْإِحْيَاءِ لَيْسَ لَهُ أَصْلٌ فِي الْمَرْفُوعِ وَإِنَّمَا هُوَ قَوْلُ سُفْيَانَ بْنِ عُيَيْنَةَ

-“হাফিজ ইরাকী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) তার ‘তাখরিজে এহইয়া’ গ্রন্থে বলেন, মারফূ রূপে এর কোন ভিত্তি নেই, নিশ্চয় ইহা সুফিয়ান ইবনে উয়াইনা (رضي الله عنه) এর কউল।”

(ইমাম মোল্লা আলী ক্বারী: আসরারুল মারফুয়া, হাদিস নং ৩০৬;)  

যেটা সনদসহ ইমাম ইবনু আব্দিল র্বা ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) এভাবে বর্ণনা করেছেন,

قَرَأْتُ عَلَى أَبِي عُثْمَانَ سَعِيدِ بْنِ نَصْرٍ أَنَّ قَاسِمَ بْنَ أَصْبَغَ حَدَّثَهُمْ قَالَ حَدَّثَنَا ابْنُ وَضَّاحٍ قَالَ سَمِعْتُ ابْنَ أَبِي إِسْرَائِيلَ يَقُولُ سَمِعْتُ سُفْيَانَ بْنَ عُيَيْنَةَ يَقُولُ عِنْدَ ذِكْرِ الصَّالِحِينَ تَتَنَزَّلُ الرَّحْمَةُ

-“ইবনু আঈ ইসরাঈল বলেন আমি সুফিয়ান ইবনু উয়াইনাহ ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেন: নেক বান্দাহগণের আলোচনা কালে রহমত নাজিল হয়।”  

(ইমাম ইবনু আব্দিল বার: আত তামহীদ, ১৭তম খন্ড, ৪২৯ পৃ:;)

সনদসহ সুফিয়ান ইবনে উয়াইনা ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) এর কউলটি ইমাম আহমদ ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) এভাবে উল্লেখ করেছেন, 

وَقَالَ حَدَّثَنِي أََبِي قَالَ قَالَ سُفْيَانُ: كَانَ يُقَالُ عِنْدَ ذِكْرِ الصَّالِحِينَ تَنْزِلُ الرَّحْمَةُ قِيلَ: مَنْ ذَكَرَهُ؟ قَالَ: بَعْضُ الْعُلَمَاءِ

 -“আহমদ বলেন আমার কাছে আমার পিতা বর্ণনা করেন, তিলিন, হযরত সুফিয়ান ইবনে উয়াইনা ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেছেন: নেক বান্দাগণের আলোচনার সময় রহমত নাজিল হয়। বলা হল, ইহা কে উল্লেখ করেছেন? তিনি বললেন: কোন কোন উলামাগণ।”(ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল: আয যুহদ, ১ম খন্ড, ২৬৪ পৃ:;)  

ইহা আরেকটি সূত্রে মুহাম্মদ ইবনে নাদ্বর আল হারেসী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) থেকেও বর্ণিত আছে,

أخبرنا عبيد الله بن محمد بن أحمد ، قال : ثنا جعفر بن محمد بن نصير ، قال : ثنا أحمد بن محمد بن مسروق ، قال : ثنا محمد بن الحسين البرجلاني ، قال : سمعت الحسن بن الربيع ، قال : سمعت ابن المبارك ، بالمصيصة وذكر علي بن الفضيل ، فجعل يذكر مناقبه ، قال : فسأله رجل عن حديث ، فقال : دعنا فإن محمد بن النضر الحارثي كان يقول : عند ذكر الصالحين تنزل الرحمة

-“নিশ্চয় মুহাম্মদ ইবনে নাদ্বর আল হারেছী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেছেন: নেক বান্দাহগণের আলোচনার সময় রহমত নাজিল হয়।” 

(শরহে উসুল এ’তেকাদ আহলু সুন্নাহ ওয়াল জামাত, রেওয়াত নং ২৩৭৩;) 

মুহাম্মদ ইবনে নাদ্বর আল হারেছী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) ওফাত ১৪১-১৫০ হি. সম্পর্কে ইমাম যাহাবী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেছেন:- 

مِنْ أَوْلِيَاءِ اللَّهِ تَعَالَى إِنْ شَاءَ اللَّهُ، -“আল্লাহ চাহেতু তিনি আল্লাহর একজন ওলী।”

(ইমাম যাহাবী: তারিখুল ইসলাম, ৩য় খন্ড, ৯৭৫ পৃ:;)  এই হাদিস সম্পর্কে ইমাম আজলুনী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেন,

وقال الزمخشري في خطبه “رسالة في فضائل العشرة”: ورد في صحيح الآثار المسندة عن العلماء الكبار أن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال: عند ذكر الصالحين تنزل الرحمة

-“জামাখশারী তার খুতবে ‘রিছালায়ে ফি ফাদ্বাইলি আশারা’ গ্রন্থে বলেন: বড় বড় আলিম থেকে ছহীহ্ সূত্রে আছার বর্ণনা করেন যে, নিশ্চয় আল্লাহর রাসূল ( ﷺ‎‎) বলেছেন: নেক বান্দাগণের আলোচনার সময় রহমত নাজিল হয়।”(ইমাম আজলুনী: কাশফুল খফা, ২য় খন্ড, ৬৫ পৃ:;)  

এই হাদিস সম্পর্কে আরো উল্লেখ আছে:

قَالَ ابْنُ الصَّلَاحِ فِي عُلُومِ الْحَدِيثِ رَوَيْنَا عَنْ أَبِي عُمَرَو إِسْمَاعِيلَ بْنِ نُجَيْدٍ أَنَّهُ سَأَلَ أَبَا جَعْفَرٍ أَحْمَدَ ابْن حَمْدَانَ وَكَانَا عَبْدَيْنِ صَالِحَيْنِ فَقَالَ لَهُ بَأَيِّ نِيَّةٍ أَكْتُبُ الْحَدِيثَ قَالَ أَلَسْتُمْ تَرَوْنَ أَنَّ عِنْدَ ذِكْرِ الصَّالِحِينَ تَنْزِلُ الرَّحْمَةُ فَقَالَ نَعَمْ قَالَ فَرَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رَأْسُ الصَّالِحِينَ

-“আল্লামা ইবনে ছিলাহ তাঁর উলুমুল হাদিসে বলেন: আমাদেরকে এই হাদিস বর্ণনা করেছেন হযরত আবু আমর ইসমাইল ইবনে মাজিদ। নিশ্চয় তিনি আবু জাফর ইবনে হামদান ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) এর কাছে সফর করেছিলেন, আর তাঁরা সকলেই ছিলেন নেক বান্দাহগণের অন্তর্ভূক্ত। তিনি ইবনে হামদান ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) কে জিজ্ঞাসা করলেন, কোন নিয়তে আপনি ইহা হাদিস লিখেন? তখন তিনি বললেন, আপনারা কি দেখেন না যে নেক বান্দাহগণের জিকিরের সময় রহমত নাজিল হয়? তিনি বললেন: হ্যাঁ। ফলে তিনি বললেন: আল্লাহর রাসূল ( ﷺ‎‎) হলেন ছালেহীনগণের মূল বা শীর।”

(ইমাম আজলুনী: কাশফুল খফা, ২য় খন্ড, ৬৫ পৃ:; ইমাম মোল্লা আলী ক্বারী: আসরারুল মারফুয়া, হাদিস নং ৩০৬; ইমাম ছাখাবী: মাকাছিদুল হাছানাহ, হাদিস নং ৭২০;)  

ইমাম শামছুদ্দিন ছাখাবী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) উল্লেখ করেন,

أشار بذلك أن له أصلاً -“ইমাম ছাখাবী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) ঈশারা করলেন যে, ইহার ভিত্তি রয়েছে।” (তাখরিজু আহাদিছিল এহইয়ায়ে উলুমুদ্দিন, ১৯২৯ নং হাদিসের ব্যাখ্যায়;) 

সুতরাং ইহা নির্ভরযোগ্য উলামাদের কাশ্ফের দ্বারা প্রমাণিত হাদিস এবং সনদের দ্বারা প্রমাণিত সুফিয়ান ইবনে উয়াইনা ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) এর কউল। সর্বোপরি ইহাকে হাদিস বলে যুগে যুগে আলিমগণ সমর্থন করে বয়ান এসেছেন।

পোষ্টটি ভালো লেগে থাকলে আপনার মূল্যবান মতামত জানান প্লিজ!

Leave a Comment