॥ দুই ॥মিথ্যা কসমের ভয়াবহ পরিণাম : হযরত আবু উমামাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত। রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “যে ব্যক্তি মিথ্যা কসম দ্বারা কোন মুসলিমের অধিকার হরণ করে আল্লাহ তার জন্য দোযখ ওয়াজিব ও জান্নাত হারাম করে দেন।” লোকেরা জিজ্ঞেস করল, হে আল্লাহর রসূল! যদিও সামান্য কিছু হয়, তাহলেও?’ তিনি বললেন, “যদিও পিল্লুগাছের একটি সামান্য ডালও হয়।” – (তিরমিযী, মুসলিম- ১৩৭)মিথ্যা কথা বলার পরিণাম : হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (রাদিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “যখন কোনো বান্দা মিথ্যা বলে তখন এর দুর্গন্ধে ফেরেশতারা তার নিকট থেকে এক মাইল দূরে চলে যায়।” – (তিরমিযী : হাদীস নং-১৯৭২)শোনা কথা বলে বেড়ানোর পরিণাম : হযরত আবু হুরাইরা (রাদিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “কোন ব্যক্তির মিথ্যাবাদী হওয়ার জন্য এতটুকুই যথেষ্ট যে, সে যা শুনে তাই বলে বেড়ায়।” – (সহীহ মুসলিম)ভালো-মন্দ বিচার না করেই কোন কথা বলা : হযরত আবু হুরাইরা (রাদিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত। তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছেন, “বান্দা যখন ভালো-মন্দ বিচার না করেই কোন কথা বলে, তখন তার কারণে সে নিজেকে জাহান্নামের এত গভীরে নিয়ে যায় যা পূর্ব ও পশ্চিমের দূরত্বের সমান।” – (বুখারী ও মুসলিম)চুটকি বলার ভয়াবহ পরিণাম : হযরত মুয়াবিয়া বিন হাইদাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি- “দুর্ভোগ তার জন্য, যে লোকদেরকে হাসানোর উদ্দেশ্যে মিথ্যা (গল্প বানিয়ে) বলে। দুর্ভোগ তার জন্য, দুর্ভোগ তার জন্য।” – (আবু দাউদ-৪৯৯০, তিরমিযী)নিফাকী চরিত্রের পরিচয় : হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রাদিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : “চারটি স্বভাব যার মধ্যে থাকে, সে মুনাফিক অথবা যার মধ্যে এ চারটি স্বভাবের কোন একটা থাকে, তার মধ্যেও মুনাফিকীর একটি স্বভাব থাকে, যে পর্যন্ত না সে তা পরিত্যাগ করে। (১) সে যখন কথা বলে মিথ্যা বলে (২) যখন ওয়াদা করে ভঙ্গ করে (৩) যখন চুক্তি করে তা লঙ্ঘন করে (৪) যখন ঝগড়া করে অশ্লীল ভাষা ব্যবহার করে।” – (সহীহ বুখারী : হাদিস নং ২২৯৭)গালি-গালাজ করার ভয়াবহ পরিনাম : হযরত আবু হুরাইরা (রাদিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত। নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “দুই ব্যক্তির পরস্পরকে গালি দেয়ার পরিণাম প্রথম গালি প্রদানকারীর উপর পতিত হয়, যাবত না মাজলুম (দ্বিতীয় ব্যক্তি) সীমা লংঘন করে।” -(মুসলিম, আবুদাউদ ও তিরমিযী-১৯৩১)মুসলিমকে গালি দেয়া ফাসেকী : হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “মুসলিমকে গালি দেয়া ফাসেকী আর হত্যা বা তার বিরুদ্ধে অস্ত্র ধারণ করা কুফরী।” – (বুখারী ও মুসলিম)চোগলখুরীর ভয়াবহ পরিণাম : হযরত হাম্মাম ইবনুল হারিস (র.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি হযরত হুযাইফা ইবনুল ইয়ানকে (রাদিয়াল্লাহু আনহু) অতিক্রম করে যাচ্ছিল। তাকে বলা হলো, এই ব্যক্তি জনসাধারণের কথা সরকারের কানে দেয়। হুযাইফা (রাদিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, আমি রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি- “চোগলখোর বেহেশতে প্রবেশ করতে পারবে না।” – (বুখারী ও মুসলিম) দ্বিমুখীপনার ভয়াবহ পরিণাম : হযরত আবু হুরাইরা (রাদিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “দ্বিমুখী চরিত্রের লোকেরা কিয়ামতের দিন আল্লাহর কাছে সবচেয়ে নিকৃষ্ট বলে গণ্য হবে।” -(বুখারী, মুসলিম, তিরমিযী-১৯৭৪ : হাসান ও সহীহ)।
জবানের হেফাজতের গুরুত্ব ও ফজিলত
পোষ্টটি অন্যকে পড়ার সুযোগ করে দিতে শেয়ার করুন প্লিজ।





Users Today : 235
Users Yesterday : 767
This Month : 14657
This Year : 186528
Total Users : 302391
Views Today : 15148
Total views : 3591891