চুগলখোরীর দোয়া কবুলের অন্তরায়

পোষ্টটি অন্যকে পড়ার সুযোগ করে দিতে শেয়ার করুন প্লিজ।

হযরত কা’ব আহবার (রঃ) বলেন যে, হযরত মূছা (আঃ) এর যামানায় একবার দুর্ভিক্ষ হলো, হযরত মূছা (আঃ) তিনবার জাতিকে নিয়ে দোয়ার জন্যে বেরুলেন, কিন্তু দোয়া কবুল হলো না।

আরজ করলেন, হে আল্লাহ্! তোমার বান্দাহরা তিনবার দোয়ার জেন্য বের হলো, কিন্তু তুমি তাদের দোয়া কবুল কর নাই।
ওহী আসল, হে মূছা! তোমার জামাতের মধ্যে এক চুগলখোর আছে এজন্যেই দোয়া কবুল করা হয় না।
মূছা (আঃ) আরজ করল হে আল্লাহ্! বলে দিন, সে কে? তাহলে তাকে বের করে দেবো। এরশাদ হলো, মূছা! আমি চুগলখোরী থেকে নিষেধ করছি, আবার নিজেই চুগলী করবো, এটা কি শুভা পায়? তাহলে সবাই মিলে তওবা করো।
সুতরাং সবাই মিলে তওবা করলো, তওবা কবুল হলো, দুর্ভিক্ষ দূর হয়ে গেল। (আল্লাহু আকবার! পরম করুনাময় আল্লাহু রাব্বুল আলামীন তার বান্দাহদের ইজ্জত রক্ষা করেন, কিন্তু বান্দাহরা পরস্পরে একে অপরের ইজ্জত হানির জন্যে যেন মিশিন ফিট করে রাখে। আফছোছ, শত আফছোছ)।
সর্বোত্তম উক্তি
১। কোন এক বিজ্ঞ ব্যক্তি বলেন যে, যদি কেই তোমাকে একথা বলে যে, অমূক ব্যক্তি আপনাকে গালি দিয়েছে, তাহলে তুমি বুঝে নেবে যে, সে নিজেই তোমাকে গালি দিচ্ছে।
২। হযরত ওয়াহাব ইবনে মুনাব্বাহ (রহঃ) বলেন যে, যদি কেই তোমার সামনে তোমার এমন গুনাবলী বর্ণনা করে, যা তোমার মধ্যে নেই, তাহলে সে এক সময় তোমার এমন দুর্নাম রটাবে, যা তোমার মধ্যে মোটেই নেই।
৩। হযরত ইমাম আবুল লাইছ (রহঃ) বলেন যে, যদি কোন ব্যক্তি তোমাকে বলে যে, “অমূক ব্যক্তি তোমার সাথে এই অসদাচরণ করেছে, এবং তোমার সম্পর্কে এমন এমন কথা বলেছে” তাহলে তোমাকে এর জবাবে ছয়টি বিষয় বিবেচনা করা অপরিহার্য।
১। তার উপর বিশ্বাস রাখবেনা (কারণ চুগল খোর বিশ্বাস যোগ্য নয়।)
২। তাকে এ বিষয় থেকে নিষেধ কর (কারন মন্দ কাজ থেকে বিরত রাখা মুছলমানদের উপর ওয়াজিব)।
৩। আল্লাহ্’র সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে তার সামনে তোমার অসন্তষ্টি ও গোস্বা প্রকাশ কর (কেননা যেভাবে اَلْحُبُّ فِى اللهِ আল্লাহ্’র জন্যে ভালবাসা রাখা পছন্দনীয়) তদ্রূপ اَلْبُغْضُ لِلَّهِ  আল্লাহর জন্যে বিদ্বেষ রাখাও পছন্দনীয়”)।
৪। এই চুগলখোরের বলা-কওয়ার ভিত্তিতে নিজ ভাইয়ের প্রতি কু ধারনা পোষন করবেনা (কেননা মুছলমানের প্রতি কু ধারনা রাখা হারাম)
৫। যে কথা সে বলেছে, এটার যাচাই করতে যাবেনা (কেননা আল্লাহ্ পাক দোষ অন্বেষন করা থেকে নিষেধ করেছেন)।
৬। যে কথা তুমি এই চুগলখোরের জন্যে পছন্দ করনা, সেটা তুমিও করবেনা (অর্থাৎ অন্য কারো কাছে বর্ণনা করবেনা)।
হাদীস শরীফ
قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ تَعَا لَى عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لاَيَدْخُلُ الْجَنَّةَ قَتَّاتٌ হযরত রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু তা‌‌আলা আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এরশাদ করেছেনঃ চুগলখোর জান্নাতে যাবেনা। -বুখারী ও মুছলিম শরীফ

وَقَالَ تَخِدُوْنَ شَرُّ النَّاسُ يَوْمَ الْقِيَا مَةِ ذَالْوَجْهَيْنِ الَّذِىْ تَأْتِىْ هَؤُلاَءِ بِوَجْهِ وَهَؤُلاَ ءِبِوَجْهِ – متفق عليه

তিনি রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু তা‌‌আলা আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-আরো ফরমায়েছেন : কিয়ামত দিবসে দু’মুখী মানুষ (অর্থাৎ সে যার কাছে যায়, তার পক্ষেই কথা বলে) এমন লোকদেরকে সবচে নিকৃষ্ট অবস্থায় দেখতে পাবে।                              -বুখারী ও মুসলিম শরীফ।

اِذَاكَذَبَ الْعَبْدُ تُبَا عِدُ عَنْهُ الْمَلَكُ مَيْلاً مِنْ نَتَنِ مَاجَا ءَ بِهِ
ترمذى

হযরত রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু তা‌‌আলা আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এরশাদ করেছেনঃ বান্দাহ্ যখন মিথ্যা বলে, তখন ফেরেশতা এটার দুর্গন্দের কারণে এক মাইল দূর পর্যন্ত চলে যায়, (অর্থাৎ অনেক দূর চলে যায়) -তিরমিজী শরীফ
مَنْ كَانَ ذَا وَجْهَيْنِ فِى الدُّنْيَا كَانَ لَه‘ يَوْمَ الْقِيَامَةِ لِسَانٌ مِنْ نَّارٍ – دارمى

যে ব্যক্তি দুনিয়ায় দু’মুখী হবে, কিয়ামত দিবসে তার আগুনের জবান (জিহ্বা) হবে। (আল্লাহুম্মাহফাজনা মিনহু)- দারেমী।

পোষ্টটি ভালো লেগে থাকলে আপনার মূল্যবান মতামত জানান প্লিজ!

Leave a Comment