প্রখ্যাত আলেমগণের মতে ঈদে মিলাদুন্নবী (সঃ)
- প্রসিদ্ধ তাবেঈ হযরত হাসান বসরী (রঃ) বলেন
قال حسن البصري رضي الله تعالی عنه وددت لو کان لی مثل جبل احد ذھبا فانفقته علی قراءة مولد النبي صلی الله علیه وسلم
অর্থাৎ- যদি আমার উহুদপাহাড় পরিমাণ স্বর্ণথাকত তাহলে আমিতা রাসূলে পাক(দঃ) এর ঈদ-ই-মিলাদুন্নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহিওয়া সাল্লাম) মাহফিলে খরচকরতাম।
— আন নেয়মাতুল কুবরাআলাল আলাম, পৃষ্ঠানং-১১
- হযরত জুনাইদ বাগদাদী (রঃ) বলেন
যেব্যক্তি ঈদ-ই-মিলাদুন্নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহিওয়া সাল্লাম) এউপস্থিত হয়ে তাঁকেসম্মান প্রদর্শন করেছে, সে ঈমানের সফলতালাভ করেছে।
— আন নেয়মাতুল কুবরাআলাল আলাম, পৃষ্ঠানং-১১
- হযরত মারুফ কারখী (রঃ) বলেন
যেব্যক্তি ঈদ-ই-মিলাদুন্নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহিওয়া সাল্লাম) উপলক্ষে পানাহারের আয়োজনকরে মুসলিমদের ভাইদেরএকত্রিত করে, আলোকসজ্জা করে, নতুন পোষাক পরিধানকরে এবং খুশবো, আতোর, গোলাপ ওলোবান প্রয়োগে নিজেকেসুগন্ধিযুক্ত করে; রোজকিয়ামতে প্রতম শ্রেণীর নবীদেরসাথে তার হাশরহবে এবং ইল্লীঈনের সর্বোচ্চ স্থানেসে অবস্থান করবে।
— আন নেয়মাতুল কুবরাআলাল আলাম, পৃষ্ঠানং-১১
- শাফেঈ মাযহাবের প্রবর্তক ইমাম শাফেঈ (রঃ) বলেন
যদিকোন ব্যক্তি ঈদ-ই-মিলাদুন্নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহিওয়া সাল্লাম) উপলক্ষে মুসলিমভাইদেরকে খাবার তৈরীকরে মজলিসে আপ্যায়ন করেও ইবাদাত সম্পন্ন করে, রোজ কিয়ামতে সিদ্দীকিন, শাহাদাও সালেহীনদের সাথেতার হাশর হবেএবং জান্নাতুন নাঈমেসে অবস্থান করবে।
— আন নেয়মাতুল কুবরাআলাল আলাম, পৃষ্ঠানং-১৩
- ৯ম শতাব্দীর মুজাদ্দিদ আল্লামা জালালুদ্দিন সুয়ুতি (রঃ) বলেন
ইমাম সৈয়ুতী কৃত‘আল-হাওয়ী লিল্ফাতাওয়ী’ কিতাবের প্রচ্ছদ
আল-হাওয়ী লিল্ফাতাওয়ী কিতাবে মিলাদুন্নবী (সঃ) এর স্বপক্ষে ইমামজালালুদ্দিন আস সৈয়ুতী (রহঃ) এর বক্তব্য
أن أصل عمل المولد الذي هو اجتماع الناس وقراءة ما تيسر من القرآن ورواية الأخبار الواردة في مبدأ أمر النبي صلى الله عليه وسلم وما وقع في مولده من الآيات ثم يمد لهم سماط يأكلونه وينصرفون من غير زيادة على ذلك هو من البدع الحسنة التي يثاب عليها صاحبها لما فيه من تعظيم قدر النبي صلى الله عليه وسلم وإظهار الفرح والاستبشار بمولده الشريف
মীলাদুন্নবী (ﷺ)উদযাপন যামূলতঃ মানুষদের সমবেতকরা, কুরআনের অংশ-বিশেষ তেলাওয়াত, মহানবী(ﷺ)-এর ধরাধামে শুভাগমন (বেলাদত) সংক্রান্ত ঘটনা ওলক্ষ্মণগুলোর বর্ণনা পেশ, অতঃপর তবাররুক (খাবার) বিতরণ এবং সবশেষেসমাবেশ ত্যাগ, তাউত্তম বেদআত (উদ্ভাবন); আরযে ব্যক্তি এরঅনুশীলন করেন তিনিসওয়াব অর্জন করেন, কেননা এতে জড়িতরয়েছে রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর মহানমর্যাদার প্রতি গভীরশ্রদ্ধা প্রদর্শন এবংতাঁর সম্মানিত বেলাদতের প্রতিখুশি প্রকাশ।
— ইমাম সৈয়ুতী কৃত‘আল-হাওয়ী লিল্ফাতাওয়ী’, ১ম খণ্ড, ২৯২ পৃষ্ঠা, মাকতাবা আল-আসরিয়া, বৈরুত, লেবানন হতে প্রকাশিত
তিনিতার স্ব-রচিত“আল উয়াছায়েল ফীশরহিশ শামাইল” গ্রন্থে উল্লেখআরও করেন,
যেগৃহে বা মসজিদেকিংবা মহল্লায় মীলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহিওয়া সাল্লাম উপলক্ষ্যে হুযুরসাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মীলাদমাহফিলের আয়োজন করাহয়। তখন অবশ্যইসে গৃহ বামসজিদ বা মহল্লাঅসংখ্য ফেরেশতা দ্বারাপরিবেষ্টিত থাকে এবংউক্ত স্থান সমূহেযারা অবস্থান করেতাদের জন্য তারাসালাত পাঠ করে।(অর্থাৎ তাদের গুণাহরজন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে) এবং আল্লাহ তায়ালা তাদেরসবাইকে সাধারণভাবে রহমতও সন্তুষ্টি দ্বারাভূষিত করেন। অতঃপরনূরের মালা পরিহিতফেরেশতাকুল বিশেষতঃ হযরতজিব্রাঈল, মীকাঈল, ঈস্রাফীল ওআজরাঈল আলাইহিস সালামমিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহিওয়া সাল্লাম উপলক্ষ্যে মাহফিলআয়োজনকারীর গুণাহ মাফেরজন্য আল্লাহর কাছেপ্রার্থনা করতে থাকেন।
তিনিআরো বলেন,
যেমুসলমানের গৃহে হুযুরসাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মীলাদপাঠ করা হয়, সে গৃহ ওগৃহে বসবাসকারী ব্যক্তি দুর্ভিক্ষ, মহামারী, অগ্নি, পানি, পরনিন্দা, কুদৃষ্টি ওচুরি ইত্যাদির আক্রমণথেকে মুক্ত থাকবে।সে ঘরে যারমৃত্যু হবে সেমৃত ব্যক্তি কবরেমুনকার নকীরের প্রশ্নের উত্তরঅতি সহজে দিতেপারবে। যে ব্যক্তি রাসুলসাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মীলাদকে সম্মান করতেচায়, তার জন্যইহাই যথেষ্ট। পক্ষান্তরে যেব্যক্তির নিকট নবীকরীম সাল্লাল্লাহু আলাইহিওয়া সাল্লাম-এরমীলাদের কোন মর্যাদা নেই, তার অন্তর এতনিকৃষ্ট হয়ে পড়বেযে, তার সামনেহুযুরপুর নূর সাল্লাল্লাহু আলাইহিওয়া সাল্লাম-এরবিশ্বজোড়া প্রশংসাগীতি উচ্চারিত হলেওতার অন্তরে হুযুরসাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জন্যবিন্দুমাত্র মুহাব্বতের উদ্রেকহবে না।
— আন নেয়মাতুল কুবরাআলাল আলাম, পৃষ্ঠানং- ১৩ ও১৪
- ইমাম ইবন কাসীর (রঃ) বলেন
আল বিদায়া ওয়াননিহায়া উর্দু কিতাবের প্রচ্ছদ
আল বিদায়া ওয়াননিহায়া উর্দু কিতাবের যেঅংশে ইবনে কাসির(রহঃ) মিলাদ শরীফেরপক্ষে লিখেছেন
ইবনেকাসীর, যাকে সালাফী/ওহাবীরা তাফসীরও ইতিহাস শাস্ত্রে সবচেয়ে বেশিশ্রদ্ধা করে থাকে, তিনি সর্বজন শ্রদ্ধেয় ইসলামের মুজাহিদ সুলতানগাযী সালাহউদ্দীন আইয়ুবীর ভগ্নিপতি শাহমালিক আল-মুযাফফর সম্পর্কে উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন।অথচ সালাফীরাই ইবনেকাসীরের কথাকে বিকৃতকরে এই মর্মেমিথ্যে ছড়িয়েছে যেমুযাফফর শাহ একজনফাসেক, নিষ্ঠুর ওবেদআতী শাসক ছিলেন(নাউযু বিল্লাহ)।প্রকৃতপক্ষে ইবনে কাসীরলিখেন:
أحد الاجواد والسادات الكبراء والملوك الامجاد له آثار حسنة وقد عمر الجامع المظفري بسفح قاسيون وكان قدهم بسياقه الماء إليه من ماء بذيرة فمنعه المعظم من ذلك واعتل بأنه قد يمر على مقابر المسلمين بالسفوح وكان يعمل المولد الشريف في ربيع الاول ويحتفل به احتفالا هائلا وكان مع ذلك شهما شجاعا فاتكا بطلا عاقلا عالما عادلا رحمه الله وأكرم مثواه وقد صنف الشيخ أبو الخطاب ابن دحية له مجلدا في المولد النبوي سماه التنوير في مولد البشير النذير فأجازه على ذلك بألف دينار وقد طالت مدته في الملك في زمان الدولة الصلاحية وقد كان محاصر عكا وإلى هذه السنة محمودالسيرة والسريرة قال السبط حكى بعض من حضر سماط المظفر في بعض الموالد كان يمد في ذلك السماط خمسة آلاف راس مشوى وعشرة آلاف دجاجة ومائة ألف زبدية وثلاثين ألف صحن حلوى
(মুযাফফর শাহ) ছিলেন একজন উদার/সহৃদয় ওপ্রতাপশালী এবং মহিমান্বিত শাসক, যাঁর সকল কাজছিল অতি উত্তম।তিনি কাসিইউন-এরকাছে জামেয়া আল-মুযাফফরী নির্মাণ করেন…..(প্রতি) রবিউলআউয়াল মাসে তিনিজাঁকজমকের সাথে মীলাদশরীফ (মীলাদুন্নবী) উদযাপনকরতেন। উপরন্তু, তিনিছিলেন দয়ালু, সাহসী, জ্ঞানী, বিদ্বান ওন্যায়পরায়ণ শাসক – রাহিমুহুল্লাহ ওয়াএকরাম – শায়খ আবুলখাত্তাব (রহ:) সুলতানের জন্যেমওলিদুন্ নববী সম্পর্কে একখানিবই লিখেন এবংনাম দেন ‘আত্তানভির ফী মওলিদআল-বাশির আন্নাযীর’। একাজের পুরস্কারস্বরূপ সুলতানতাঁকে ১০০০ দিনারদান করেন। সালাহিয়া আমলপর্যন্ত তাঁর শাসনস্থায়ী হয় এবংতিনি ’আকা’ জয়করেন। তিনি সবারশ্রদ্ধার পাত্র থেকেযান। আস্ সাবত্এক ব্যক্তির কথাউদ্ধৃত করেন যিনিসুলতানের আয়োজিত মওলিদঅনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন; ওইব্যক্তি বলেন: ‘অনুষ্ঠানে সুলতানভালভাবে রান্নাকৃত ৫০০০ছাগল, ১০,০০০মোরগ, ১ লক্ষবৌল-ভর্তি দুধএবং ৩০,০০০ট্রে মিষ্টির আয়োজনকরতেন’।
— তারিখে ইবনে কাসীর, ‘আল-বেদায়াহ ওয়ান্নেহায়া’ ১৩তম খণ্ড, ১৭৪ পৃষ্ঠা
- বুখারী শরীফের ব্যাখাকার বিশ্ববিখ্যাত মোহাদ্দিস আল্লামা কুস্তোলানী রহমাতুল্লাহে আলাইহি (মৃত্যুঃ ৯২৩ হিজরী) বলেন-
যেব্যক্তি নবী করীমসাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর শুভাগমনের মোবারকমাসের রাতসমূহকে ঈদহিসেবে গ্রহণ করে, আল্লাহ তার উপরেরহমত বর্ষণ করেন।আর উক্ত রাত্রকে ঈদহিসেবে উদযাপন করবেএ জন্য যে, যাদের অন্তরে (নবীবিদ্বেষী) রোগ রয়েছে। তাদেরঐ রোগ যেনআরো শক্ত আকারধারণ করে এবংযন্ত্রণায় অন্তর জ্বলেপুড়ে যায়।
— শরহে জুরকানী আলালমাওয়াহেব, ১ম খন্ড, পৃষ্ঠা নং– ২৬২
- বুখারী শারীফের আরেক অন্যতম নির্ভরযোগ্য ব্যাখ্যাগ্রন্থ ‘ফাতহুল বারী’ এর লেখক ইমাম ইবন হাজর আসকলানী (রঃ) বলেন-
ইমাম জালালুদ্দিন আসসুয়ুতী (রহঃ) কৃতহুসনুল মাকসাদ ফীআমলিল মওলিদ কিতাবের প্রচ্ছদ
হুসনুল মাকসাদ ফীআমলিল মওলিদ কিতাবের পৃষ্ঠানং ৬৩
হুসনুল মাকসাদ ফীআমলিল মওলিদ কিতাবের পৃষ্ঠানং ৬৪
হুসনুল মাকসাদ ফীআমলিল মওলিদ কিতাবের পৃষ্ঠানং ৬৫
মহানবী(দ:)-এর মীলাদদিবস উদযাপন সম্পর্কে হযরতইমামকে জিজ্ঞেস করাহলে তিনি লিখিতভাবে যেউত্তর দেন তানিম্নরূপ: মীলাদুন্নবী (দ:) উদযাপনের উৎসবলতে এটি এমনএক বেদআত (উদ্ভাবন) যাপ্রথম তিন শতকেরসালাফ আস্ সালেহীন (পুণ্যাত্মাবৃন্দ) কর্তৃকআমাদেরকে জ্ঞাত করানোহয় নি, যদিওএতে প্রশংসনীয় ওপ্রশংসনীয় নয় উভয়দিকই বিদ্যমান। কেউপ্রশংসনীয় দিকগুলো গ্রহণকরে প্রশংসনীয় নয়এমন দিকগুলো বর্জনকরায় যত্নবান হলেতা বেদআতে হাসানাতথা কল্যাণময় নতুনপ্রথা হবে। আরতা না হলেএর উল্টো হবে।এ বিষয়ের বৈধতাপ্রতীয়মানকারীএকটি নির্ভরযোগ্য শরীয়তের দলিলআমার সামনে এসেছে, আর তা হলোবুখারী ও মুসলিমশরীফে উদ্ধৃত সহীহহাদীস যা’তেবর্ণিত হয়েছে যেমহানবী (দ:) মদীনামোনাওয়ারায় হিজরত করেদেখতে পান সেখানকার ইহুদীরা ১০ইমহররম (আশুরা) তারিখেরোযা রাখেন।
— হুসনুল মাকসাদ ফীআমলিল মওলিদ, ৬৩ পৃষ্ঠা
এমতাবস্থায় তিনিতাদেরকে এর কারণজিজ্ঞেস করলে তারাউত্তর দেন, ‘এইদিনে আল্লাহতা’লাফেরাউনকে পানিতে ডুবিয়ে মূসা(আ:)-কে রক্ষাকরেন। তাই আমরামহান প্রভুর দরবারেএর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের উদ্দেশ্যে রোযারেখে থাকি।’ এইঘটনা পরিস্ফুট করেযে আল্লাহতা’লাররহমত অবতরণের কিংবাবালা-মসীবত দূরহওয়ার কোনো বিশেষদিনের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশকরা, সেই উদ্দেশ্যে বার্ষিকী হিসেবেতা উদযাপনের সময়নামায, রোযা, দান-সদকাহ বাকুরআন তেলাওয়াতের মতোবিভিন্ন এবাদত-বন্দেগী পালনকরা শরীয়তে জায়েয। আররাসূলুল্লাহ (দ:)-এরমীলাদের (ধরণীতে শুভাগমন দিবসের) চেয়ে আল্লাহর বড়রহমত কী-ইবা হতে পারে? এরই আলোকে প্রত্যেকের উচিতহযরত মূসা (আ:) ও ১০ই মহররমের ঘটনার(দালিলিক ভিত্তির) সাথেসঙ্গতি রেখে মীলাদুন্নবী (দ:) দিবস উদযাপন করা; তবে যাঁরা এটিবিবেচনায় নেন না, তাঁরা (রবিউল আউয়াল) মাসের যে কোনোদিন তা উদযাপনে আপত্তিকরেন না; অপরদিকে কেউ কেউসারা বছরের যেকোনো সময় (দিন/ক্ষণ) তাউদযাপনকে কোনো ব্যতিক্রম ছাড়াইবৈধ জেনেছেন।
— হুসনুল মাকসাদ ফীআমলিল মওলিদ, ৬৪ পৃষ্ঠা
আমিমওলিদের বৈধতার দলিলসুন্নাহ’র আরেকটিউৎস থেকেপেয়েছি (আশুরার হাদীসথেকে বের করাসিদ্ধান্তের বাইরে)।এই হাদীস ইমামবায়হাকী (রহ:) হযরতআনাস (রা:) থেকেবর্ণনা করেন: ‘হুযূরপাক (দ:) নবুয়্যত প্রাপ্তির পরনিজের নামে আকিকাহকরেন; অথচ তাঁরদাদা আবদুল মোত্তালিব তাঁরইবেলাদতের সপ্তম দিবসেতাঁর নামে আকিকাহকরেছিলেন, আর আকিকাহদু’বার করাযায় না। অতএব, রাসূলে খোদা (দ:) বিশ্বজগতে আল্লাহর রহমতহিসেবে প্রেরিত হওয়ায় মহানপ্রভুর দরবারে কৃতজ্ঞতা প্রকাশের জন্যেএটি করেছিলেন, তাঁরউম্মতকে সম্মানিত করারজন্যেও, যেমনিভাবে তিনিনিজের ওসীলা দিয়েদোয়া করতেন। তাইআমাদের জন্যেও এটিকরা উত্তম হবেযে আমরা মীলাদুন্নবী (দ:) দিবসে কৃতজ্ঞতাসূচক খুশিপ্রকাশার্থে আমাদের দ্বীনীভাইদের সাথে সমবেতহই, মানুষদেরকে খাবারপরিবেশন করি এবংঅন্যান্য সওয়াবদায়ক আমলপালন করি।’ এইহাদীস পূর্বোক্ত মহানবী(দ:)-এর দ্বারামীলাদ ও নবুয়্যত-প্রাপ্তির দিবসপালনার্থে সোমবার রোযারাখার হাদীসকে সমর্থনদেয়।
— হুসনুল মাকসাদ ফীআমলিল মওলিদ, ৬৪-৬৫ পৃষ্ঠা
- হযরত সাররী সাক্বত্বী (রঃ) বলেন
যেব্যক্তি মিলাদ শারীফপাঠ বা মিলাদুন্নাবী (সাঃ) উদযাপন করার জন্যস্থান নির্দিষ্ট করল, সে যেন তারজন্য জান্নাতে রওজাবা বাগান নির্দিষ্ট করল।কেননা সে তাহুজুর পাক (দঃ) এর মহব্বতের জন্যইকরেছে।
— আন নেয়মাতুল কুবরাআলাল আলাম, পৃষ্ঠানং- ১৩
- ১১’শ শতাব্দীর বা সহস্রাব্দের মুজাদ্দিদ আলফে সানী (রঃ) বলেনঃ
دیگر درباب مولود خوانی اندراج یا فتہ بود در نفس قران خواندن بصوت حسن وقصائد نعت ومنقبت خواندن چہ مضائقہ است؟ ممنوع تحریف وتغیر حروف قران است والتزام رعایت مقامات نغمہ وتبرید صوت باں طریق الحان باتصفیق منا سب انکہ در شعر نیز غیر مبارح است. اگر ہر نہجے خوانند کہ تحریفے در کلمات قران واقع نشود و در قصائد خواندن شروط مذکورہ متحقق نگردد رواں ہم بغرض صحیح تجویز نما یند چہ مانع است؟
অর্থাৎ সুমিষ্ট আওয়াজে পবিত্রকুরআন শরীফ পাঠএবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূরপাক ছল্লাল্লাহু আলাইহিওয়া সাল্লাম উনারশানে সুন্দর ক্বাছীদাবলী আবৃত্তি করতেকি বাধা আছে? নিষিদ্ধ হচ্ছে পবিত্রকুরআন শরীফ উনারহরফ বা অক্ষরসমূহের মধ্যে পরিবর্তন বাগানের তাল বাছন্দ অবলম্বন স্বরেরউত্থান-পতন যাসাধারণ কবিতার মধ্যেওজায়িয নেই। যদিপবিত্র মীলাদ শরীফএমনভাবে পড়া হয়যে, পবিত্র কুরআনশরীফের মধ্যে কোনরূপপরিবর্তন আপতিত নাহয় এবং পবিত্রক্বাছীদা শরীফ আবৃত্তির মধ্যেউপরোক্ত গানের ছন্দবা তালের অনুসরণকরা না হয়, তাহলে এরূপ পবিত্রমীলাদ শরীফ পাঠেকি বাধা আছে ?
— মাকতুবাতে ইমাম রব্বানী, ৩য়খন্ড, মাকতুব নং৭২
- ভারতীয় উপমহাদেশের সর্বপ্রথম মোহাদ্দিস হযরত শায়খ আবদুল হক মোহাদ্দেসে দেহলভী রহমাতুল্লাহে আলাইহি বলেন-
যেব্যক্তি মীলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহিওয়া সাল্লাম-এররাত্রকে ঈদ হিসেবেপালন করে, তারউপর আল্লাহ তায়ালা রহমতনাযিল করেন। আরযার মনে হিংসাএবং [নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহিওয়া সাল্লাম-এরদুশমনির] রোগ রয়েছে, তার ঐ (নবীবিদ্বেষী) রোগ আরওশক্ত আকার ধারণকরে।
— মা সাবাতা বিসসুন্নাহ (উর্দু) পৃষ্ঠা নং-৮৬
উল্লেখ্য যেউপরিল্লিখিত মুহাদ্দিসগণের উছিলায় আজআমরা হাদীস শাস্ত্র এইউপমহাদেশে পেয়েছি ।অন্যথায় বর্তমানের কোনআলেমদের অস্তিত্বই পাওয়াযেত না ।এজন্য তাঁদের এলেমেরকাছেই বর্তমান আমরাসকল মুসলমানগণ চিরঋনী।
- আল্লামা ইমাম শিহাব উদ্দিন আহমদ কুস্তোলানী রহমাতুল্লাহে আলাইহি “মাওয়াহিবে লাদুন্নিয়া” নামক কিতাবে হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর দুগ্ধপান শীর্ষক অধ্যায়ে আলোচনা করতে গিয়ে বলেন-
আবুলাহাবের আযাদকৃত দাসীসুয়াইবাহ তাকে (হুযুরসাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে দুধপান করিয়েছেন। যাকেআবু লাহাব তখনইআযাদ করেছিলো তখনতিনি তাকে হুযুরসাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বেলাদতশরীফের শুভ সংবাদশুনিয়েছিলেন।উল্লেখ্য যে, একদাআবু লাহাবকে তারমৃত্যুর পর স্বপ্নে দেখাগিয়েছিলো। (হযরত আব্বাসরাদ্বিয়াল্লাহুআনহু এক বছরপর স্বপ্ন দেখেছিলেন) তখনতাকে বলা হলো“তোমার কি অবস্থা?” সে বলল, দোজখেইআছি। তবে প্রতিসোমবার রাতে আমারশাস্তি কিছুটা শিথিলকরা হয়; আরআমি আমার এআঙ্গুল দুটির মধ্যখানে চুষেপানি পানের সুযোগপাই। আর তখনসে তার আঙ্গুলের মাথাদিয়ে ইশারা করলো।আর বলল, আমারশাস্তির শিথিলতা এজন্য যে, সুয়াইবা যখনআমাকে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহিওয়া সাল্লাম-এরবেলাদতের সুসংবাদ দিয়েছিলো, তখনতাকে আমি আযাদকরে দিয়েছিলাম এবংসে হুযুরকে দুগ্ধপান করিয়েছে।
তিনিআরো বলেন-
এতদভিত্তিতে, আল্লামা মোহাদ্দিস ইবনেজাযরী রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুবলেন, যখন ঐআবু লাহাব কাফির, যার তিরস্কারে কোরআনের সূরানাযিল হয়েছে। মীলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহিওয়া সাল্লাম-এআনন্দ প্রকাশের কারণেজাহান্নামে পুরস্কৃত হয়েছে। এখনউম্মতে মুহাম্মদী সাল্লাল্লাহু আলাইহিওয়া সাল্লাম-এরঐ একত্ববাদী মুসলমানের কিঅবস্থা? যে নবীকরীম সাল্লাল্লাহু আলাইহিওয়া সাল্লাম-এরবেলাদতে খুশি হয়এবং হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহিওয়া সাল্লাম-এরভালবাসায় তার সাধ্যনুযায়ী খরচকরে। তিনি জবাবেবলেন- আমার জীবনেরশপথ! নিশ্চয়ই পরমকরুণাময় আল্লাহ তাকেআপন ব্যাপক করুণায় নিয়ামতপূর্ণ জান্নাতে প্রবেশকরাবেন।
— শরহে জুরকানী, ১মখন্ড, পৃষ্ঠা নং- ২৫৮-২৬২
- আবু লাহাবের উক্ত ঘটনা সর্বশ্রেষ্ঠ হাদীস গ্রন্থ পবিত্র বোখারী শরীফেও বর্ণিত হয়েছে। হাদীসটি নিম্নরুপ
হযরতওরওয়া ইবনে যোবাইয়ের রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুবলেন, সুয়াইবাহ আবুলাহাবের দাসী ছিলেন।আবু লাহাব হুযুরসাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বেলাদতের সুসংবাদে দেওয়ার কারণে(আনন্দিত হয়ে) সুয়াইবাহকে আযাদকরে দিয়েছিলো। অতঃপরসুয়াইবাহ হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহিওয়া সাল্লাম-কেদুধ পান করিয়েছিলেন। এরপরযখন আবু লাহাবমৃত্যুবরণ করল, তকন(এক বছর পর) তার ঘনিষ্টদের কেউ[হযরত আব্বাস রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু] তাকে স্বপ্নে শোচনীয় অবস্থায় দেখেতার উদ্দেশ্যে বলেন, “তোমার অবস্থা কেমন?” আবু লাহাব তদুত্তরে বললো, “তোমাদের নিকট থেকেআসার পর আমিকোন প্রকার শান্তিপাইনি, কেবল আমিযে (আল্লাহর হাবীবের জন্মসংবাদ বা মীলাদশরীফের খুশিতে) সুয়াইবাহকে (তর্জনীও মধ্যমা দুটিআঙ্গুলের ইশারায়) আযাদকরেছিলাম, ঐ কারণে(প্রতি সোমবার আঙ্গুলদু’টির মধ্যেকিছু পানি জমেথাকে) আমি ওইপানি চুষে থাকিও প্রতি সোমবারআযাবকে হাল্কা বোধকরে থাকি।
— বুখারী শরীফ, ২য়খন্ড, পৃষ্ঠা নং-৭৬৪
বোখারীশরীফে উক্ত পৃষ্ঠায়ই শেষেরদিকে এ হাদীসের পাদটিকায় বর্ণিতআছে :
সুয়াইবাহ আবুলাহাবকে হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহিওয়া সাল্লাম-এরজন্মের সুসংবাদ দেওয়ার কারণেআবু লাহাব তাকেআযাদ করে দিয়েছিলো। অতঃপরএ আযাদ করাটা(পরকালে) আবু লাহাবের উপকারেএসেছে। এ কাজতার উপকারে আসারঅর্থ হলো- তারএ কর্ম হুযুরসাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বরকতেঅবশিষ্ট ছিল। অন্যান্য কাজেরন্যায় বিনষ্ট হয়েযায়নি।
- আল্লামা কুস্তোলানী রহমাতুল্লাহে আলাইহি স্বীয় মাওয়াহিব গ্রন্থে আরো বলেন-
প্রতিটি যুগেমুসলমানগণ নবী করীমসাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বেলাদতশরীফের মাসে মাহফিলের আয়োজনকরে আসছেন। উন্নতমানের খাবারের আয়োজনকরেন, এর রাতগুলোতে বিভিন্ন ধরণেরসাদক্বাহ- খায়রাত করেন, আনন্দ প্রকাশ করতেথাকেন, পুন্যময় কাজবেশি পরিমাণে করেনএবং নবী করীমসাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বেলাদতশরীফের আলোচনার প্রতিগুরুত্ব দিয়ে আসেন।ফলে আল্লাহর অসংখ্যবরকত ও ব্যাপকঅনুগ্রহ প্রকাশ পায়।এর বিশেষত্বের এটাওপরীক্ষিত যে, নিঃসন্দেহে গোটাবছরই তারা নিরাপদে থাকেএবং তাদের উদ্দেশ্য দ্রুতসফল হয়ে থাকে।
(ইমাম কুস্তোলানী রহমাতুল্লাহে আলাইহিদো’আ করেবলেন) অতএব, ঐব্যক্তিকে আল্লাহ দয়াকরুন, যে মীলাদুন্নবী মোবারকমাসের রাতগুলোকে ঈদহিসেবে উদযাপন করে- এ লক্ষ্যে যেনমুনাফিকদের অন্তরে অসহনীয় জ্বালাসৃষ্টি হয়।
— শরহে জুলকানী, ১মখন্ড, পৃষ্ঠা নং- ২৬১-২৬৩
- ইমাম শামসুদ্দিন দিমিস্কি (রঃ) বলেনঃ
হুসনুল মাকসাদ ফীআমলিল মওলিদ কিতাবের পৃষ্ঠানং ৬৬
قد صح أن أبا لهب يخفف عنه عذاب النار في مثل يوم الاثنين لإعتاقه ثويبة سرورا بميلاد النبي صلى الله عليه وسلم ثم أنشد:
إذا كان هذا كافرا جاء ذمه – وتبت يداه في الجحيم مخلدا أتى أنه في يوم الاثنين دائما – يخفف عنه للسرور بأحمدا فما الظن بالعبد الذي طول عمره – بأحمد مسرورا ومات موحدا
এটিপ্রমাণিত যে আবুলাহাবের (পারলৌকিক) অনলেজ্বলবার শাস্তি প্রতিসোমবার লাঘব করাহয়, কেননা সেমহানবী (দ:)-এরবেলাদতে খুশি হয়েছিল এবংতার দাসী সোয়াইবিয়াকে মুক্তকরে দিয়েছিল (সুসংবাদ দেয়ারজন্যে)। আবুলাহাবের মতো অবিশ্বাসী, যারচিরস্থায়ী আবাস দোযখএবং যার জন্যেসূরা লাহাব অবতীর্ণ হয়েছে, সে যদি আযাবথেকে তাখফিফ (নিষ্কৃতি) পায়প্রতি সোমবার, তাহলেভাবুন সেই মো’মেন ব্যক্তির কীশান যিনি সারাজীবন রাসূলুল্লাহ (দ:)-এর বেলাদতে খুশিপ্রকাশ করেছিলেন এবংআল্লাহর একত্বে বিশ্বাস নিয়েইন্তেকাল করেছেন।
— ইমাম দামেশকী কৃত‘মওরিদ আস্ সাফাফী মওলিদ আল-হাদী’ এবংইমাম সৈয়ুতী প্রণীত‘হুসনুল মাকসাদ ফীআমলিল মওলিদ’, ৬৬পৃষ্ঠা
- বিরোধীবাদীরা বলে থাকে এটি মহানবী (সাঃ) এর ওফাত দিবস। তাই এটি পালন করা উচিত নয়। এর জবাবও ৯ম শতাব্দীর মুজাদ্দিদ দিয়ে গেছেন খুব সুন্দরভাবে।
أن ولادته صلى الله عليه وسلم أعظم النعم علينا ووفاته أعظم المصائب لنا والشريعة حثت على إظهار شكر النعم والصبر والسلوان والكتم عند المصائب وقد أمر الشرع بالعقيقة عند الولادة وهي إظهار شكر وفرح بالمولود و لم يأمر عند الموت بذبح ولا غيره بل نهى عن النياحة وإظهار الجزع فدلت قواعد الشريعة على أنه يحسن في هذا الشهر إظهار الفرح بولادته صلى الله عليه وسلم دون إظهار الحزن فيه بوفاته
বিশ্বনবী (দ:)-এর বেলাদতহলো (আল্লাহর) সর্ববৃহৎ নেয়ামত (আশীর্বাদ); আরতাঁর বেসাল মহাদুর্যোগ। ধর্মীয় বিধানআমাদের প্রতি তাকিদদেয় যেন আমরাআল্লাহর নেয়ামতের শোকরগুজারি (কৃতজ্ঞতা প্রকাশ) করি এবং দুর্যোগের মুহূর্তে ধৈর্যধরি ও শান্তথাকি। শরীয়তের আইনেআমাদের আদেশ দেয়াহয়েছে কোনো শিশুরজন্মে পশু কোরবানি দিতে(এবং ওর গোস্তগরিবদের মাঝে বিতরণকরতে)। এটাওই শিশুর জন্মোপলক্ষে কৃতজ্ঞতা ওখুশি প্রকাশের নিদর্শন। পক্ষান্তরে, মৃত্যুর সময়পশু কোরবানি দিতেশরীয়ত আমাদের আদেশদেয় নি। উপরন্তু, শোকপ্রকাশ বা মাতমকরতে শরীয়তে মানাকরা হয়েছে। অতএব, মীলাদুন্নবী (দ:)-এরপুরো মাসব্যাপী খুশিপ্রকাশ করার পক্ষেইসলামী বিধানের রায়পরিদৃষ্ট হয়; আরতাঁর বেসাল উপলক্ষে শোকপ্রকাশ না করারপক্ষে মত দেয়াহয়।
— হুসনুল মাকসাদ ফীআমলিল মওলিদ, ৫৪-৫৫ পৃষ্ঠা; ইমাম সৈয়ুতী প্রণীত’আল-হাওয়ী লিল্ফাতাওয়ী’, ১ম খণ্ড, ২৯৮ পৃষ্ঠা, মাকতাবা আল-আসরিয়া, বৈরুত, লেবানন হতে প্রকাশিত
- হযরত শাহ ওয়ালী উল্লাহ মোহাদ্দিসে দেহলভী রহমাতুল্লাহে আলাইহি তার রচিত “আদ দুররুস সামীন ফী মুবাশশারাতিন নবীয়্যিল আমীন” কিতাবের ৯ম পৃষ্ঠায় লিখেছেনঃ
আমারশ্রদ্ধেয় আব্বাজান আমাকেঅবহিত করে বলেন, আমি প্রতি বছরইনবীকুল সর্দার সাল্লাল্লাহু আলাইহিওয়া সাল্লাম-এরমীলাদ উপলক্ষ্যে বিরাটখাবার আয়োজন করেআসছিলাম। অতঃপর একবছর খাবারের আয়োজনকরা আমার পক্ষেসম্ভব হয়নি। সুতরাংঅল্প ভাজ্যকৃত চনাব্যতীত আর কিছুইআমি জোগাড় করতেপারিনি। কাজেই সেগুলোউপস্থিত লোকদের মাঝেবন্টন করে দিলাম।অতঃপর আমি স্বপ্নে হুযুরসাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাক্ষাত লাভকরে ধন্য হলাম।দেখলাম, হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহিওয়া সাল্লাম-এরসামনে ঐ চনাগুলো মওজুদআছে। তখন হুযুরসাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন অত্যন্ত আনন্দিত ওহাস্যোজ্জল।
— তথ্যসূত্রঃ ইসলামী শরীয়তের দৃষ্টিতে ঈদেমীলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহিওয়া সাল্লাম উদযাপন, পৃষ্ঠা নং-৮১, ফতুয়ায়ে রশীদিয়া, পৃষ্ঠানং- ১৩৭, হাকিকতে মীলাদ, পৃষ্ঠা নং-২৮
- “ফয়ূযুল হারামাইন” কিতাবে শাহ ওয়ালী উল্লাহ মোহাদ্দিসে দেহলভী রহমাতুল্লাহে আলাইহি আরো বলেনঃ
আমিএর পূর্বে মক্কামু’আযযামায় বেলাদতশরীফের বরকতময় ঘরেউপস্থিত ছিলাম। আরসেখানে লোকজন সমবেতহয়ে হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহিওয়া সাল্লাম-এরউপর একত্রে দরুদশরীফ পাঠা করছিলেন। তার(হুযুরের) শুভাগমনের সময়সংঘটিত অলৌকিক ঘটনাবলী ওতার নবুয়ত প্রকাশের পূর্বেসংঘটিত ঘটনাবলী আলোচনাকরছিলেন। তারপর আমিসেখানে এক মিশ্রনূরের ঝলক প্রত্যক্ষ করলাম।আমি বলতে পারিনিযে, এ নূরগুলো চর্মচক্ষে দেখেছিলাম এবংএটাও বলতে পারিনা যে, এগুলোকেবল মাত্র অন্তরচক্ষুতে দেখেছিলাম। এদুটোর মধ্যে প্রকৃতব্যাপার কি ছিল, তা আল্লাহ পাকইভাল জানেন। অতঃপরআমি গভীরভাবে চিন্তাকরলাম এবং উপলব্ধি করতেপারলাম যে, এইনূর বা জ্যোতিঐ সব ফিরিশতার, যারাএ ধরণের মজলিসও উল্লেখযোগ্য (ধর্মীয়) স্থানসমূহে (জ্যোতিবিকিরণের জন্য) নিয়োজিত থাকেন।আমার অভিমত হলসেখানে ফিরিশতাদের নূরও রহমতের নূরেরসংমিশ্রণ ঘটেছে।
— ফয়ূযুল হারামাইন (আরবী-উর্দু), পৃষ্ঠানং- ৮০-৮১