সপ্তদশ অধ্যায়ঃ রাসূল ও অন্যান্যদের মধ্যে পার্থক্য (একনজরে)
==============
০১। রাসূল হলেন আল্লাহ কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত প্রতিনিধি- ফিরিস্তা বা অন্যান্য মানুষ ক্ষমতাপ্রাপ্ত প্রতিনিধি নয়।
০২। রাসূল হলেন সংবাদদাতা ও প্রশাসনিক কর্তা- ফিরিস্তা জিবরাইল হচ্ছে শুধু সংবাদবাহক- প্রশাসক নয়।
০৩। রাসূল হলেন মাখদুম- জিবরাইল ফেরেস্তা হচ্ছেন তাঁর খাদেম।
০৪। রাসূল হলেন আল্লাহর আইনের হাকিম- অন্যরা হলো সেই আইনের অধীন।
০৫। মানুষ রাসূলের উন্মত আছে- কিন্তু ফিরিস্তা রাসূলের উম্মত নেই।
০৬। রাসূলের বাণী আইন হয়- ফিরিস্তার বাণী আইন হয় না।
০৭। রাসূল হলেন বা-ইখতিয়ার বা ক্ষমতাবান- ফিরিস্তা হচ্ছে বে-ইখতিয়ার বা ক্ষমতাহীন।
০৮। রাসূল হলেন পবিত্রতা দানকারী -অন্যরা পবিত্রতা গ্রহণকারী।
০৯। রাসূল যত ইচ্ছে বিবাহ করতে পারেন- উম্মত চারের অধিক পারেনা।
১০। রাসূল হলেন ক্বলব বা হৃৎপিন্ড স্বরূপ- উম্মত হচ্ছে দেহ স্বরূপ।
১১। রাসূল হলেন ফয়েয দাতা – উম্মত হচ্ছে ফয়েয গ্রহীতা।
১২। রাসূল হলেন সব কিছুর মাধ্যম – বান্দারা তা নয়।
১৩। রাসূল হলেন আল্লাহর রশি- বান্দারা হচ্ছে সেই রশি ধারক।
১৪। রাসূল হলেন ঈমান- আমরা হলোম মো’মেন।
১৫। রাসূল হলেন আল্লাহ হতে গ্রহণকারী - আমরা হচ্ছি রাসূল হতে গ্রহণকারী।
১৬। রাসূল হলেন জাহানের কান্ডারী- আমরা হলোম আরোহী।
১৭। রাসূল হলেন হাদী - আমরা হলাম হেদায়াত গ্রহণকারী।
১৮। রাসূল জন্মসূত্রে আরিফ বিল্লাহ – আমরা তা নাই।
১৯। রাসূল আল্লাহ কর্তৃক শিক্ষাপ্রাপ্ত - আমরা মানুষ কর্তৃক শিক্ষাপ্রাপ্ত।
২০। রাসূল জন্মসূত্রে নিষ্পাপ বা মাসুম – আমরা কেউ মাসুম নই। অলীগণ হলেন মাহফুয।
২১। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম স্বচক্ষে আল্লাহর দীদার লাভকারী - অন্য কেউ সাক্ষাৎ দীদার লাভকারী নয়।
২২। রাসূলের উপাধী হাযির ও নাযির - অন্য কেউ হাযির-নাযির উপাধী প্ৰাপ্ত নয়।
২৩। রাসূলের সত্ত্বা প্রত্যেক কবরে উপস্থিত - অন্য কারো সত্ত্বা নয়।
২৪। রাসূল জান্নাত ও হাউযে কাউছারের মালিক - আমরা জান্নাতের বাসিন্দা ও কাউছার পানকারী।
২৫। রাসূলের নাম আল্লাহর নামের সাথে অঙ্কিত - অন্য কারো নাম অঙ্কিত নয়।
২৬। রাসূলের নামের সাইনবোর্ড জান্নাতের সর্বত্র - অন্য কারো নামের সাইনবোর্ড সেখানে নেই।
২৭। রাসূল মু’মিনের প্রাণের চেয়েও বেশী নিকটে - অন্য কেউ এরূপ নয়।
২৮। রাসূল সমগ্র সৃষ্টির জন্য রহমত - অন্যরা রহমতপ্রাপ্ত।
২৯। রাসূল শরিয়ত প্রনেতা - অন্যরা শরিয়তের অনুসারী।
৩০। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম শরিয়তের আইনে ব্যতিক্রম করতে পারেন- অন্যরা পরিবর্তন বা ব্যতিক্রম করতে পারে না।
৩১। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম শুপারিশের মাধ্যমে বিনা হিসাবে জান্নাত দিতে পারেন- অন্য কেউ পারে না।
৩২। সৈয়দ জামাআত আলী শাহ মোহাদেস আলীপুরী (রহঃ) এবং মুফতী আহমদ ইয়ার খান নঈমী (রঃ) উল্লেখ করেছেন-
নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাধারণ মানুষের চেয়ে ২৭গুন ঊর্ধ্ব মর্যাদায় উন্নীত! যেমনঃ- (১) মানুষ (২) মু’মিন (৩) অলী (৪) শহীদ (৫) মুত্তাকী (৬) মুজতাহিদ (৭) আবরার (৮) আওতাদ (৯) আবদাল (১০) কুতুব (১১) কুতুবুল আকতাব (১২) গাউস (১৩) গাউসুল আযম (১৪) তাবে তাবেয়ী (১৫) তাবেয়ী (১৬) সাহাবী (১৭) আনসার (১৮) মুহাজির (১৯) সিন্দীক (২০) নবী (২১) রাসূল (২২) উলুল আযম (২৩) খলিলুল্লাহ (২৪) খাতামুন্নাবিয়্যীন (২৫) রাহমাতুল্লিল আলামীন (২৬) হাবিবুল্লাহ (২৭) মোহাম্মদ মোস্তাফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। এরপর শুধু উলুহিয়াতের স্থান।
এগুলো সাধারণ মানুষ এবং রাসূলের মধ্যে মৌলিক পার্থক্য। এছাড়াও হাজার রকম পার্থক্য আছে। এক কথায়- তিনি বে-নাজীর ও বে-মিছাল। তিনি কোন ক্ষেত্রেই আমাদের মত নন এবং আমরাও কোন ক্ষেত্রেই তার মতো নই। এটাই চূড়ান্ত কথা। আমরা তাঁর মুখাপেক্ষী- সমগ্র সৃষ্টিও তাঁর মুখাপেক্ষী। যারা বলবে- তিনি আমাদের মত মানুষ- তাদের অন্তরে বেদ্বীনি রোগ আছে। (ছালাতান ওয়া সালামান আলাইকা ইয়া রাসুলাল্লাহ)।