প্রসঙ্গঃ রওযা মোবারকের মাটি উত্তম- নাকি আরশ উত্তম?
নবী করীম [ﷺ]-এঁর পবিত্র দেহ স্পর্শকারী রওযা মোবারকের মাটি আসমান-জমীন, কা’বা, আরশ, কুরছি, লাওহ-কলম- সব কিছুর চেয়েও উত্তম। ফতোয়া শামী ৩য় খণ্ড যিয়ারত অধ্যায়ে ফতোয়া দেয়া হয়েছে এভাবেঃ
ان التربة التى اتصلت الى أعظم النبي صلى الله عليه وسلم أفضل من الارض والسماء حتى العرش العظيم-
অর্থ – “রওযা মোবারকের যে মাটি নবী করীম [ﷺ]-এঁর দেহ মোবারকের সাথে লেগে আছে, তা আসমান জমীন- এমনকি আরশ আযীম হতেও উত্তম।” (শামী, যিয়ারত অধ্যায়)। রওযা মোবারকই যদি সর্বোত্তম হয়, তাহলে শরীর মোবারকের অবস্থা কি হতে পারে? এটা বলার অপেক্ষা রাখে না। (দেখুন মাওয়াহেব ৪র্থ খণ্ড ৬০২ পৃষ্ঠা)।
এ আক্বিদা চার মাযহাবের ইমামগণ ঐক্যবদ্ধভাবে পোষণ করে থাকেন। এ আক্বিদার উপর চার মাযহাবের ইজমা প্রতিষ্ঠিত। সুতরাং রওযা মোবারক খানায়ে কা’বা ও আরশ মোয়াল্লা হতেও উত্তম। এটাই সুন্নি আক্বিদা। এ সম্পর্কে অসংখ্য কিতাবে উল্লেখ রয়েছে। (মাওয়াহিবে লাদুন্নিয়া ৪র্থ খণ্ড ৬০২ পৃষ্ঠা)।
হুযুর [ﷺ]-কে রওযা শরীফে স্থাপন করে তারপর রওযা মোবারকের উপরিভাগ ৯ খানা কাঁচা ইটের ব্লক দিয়ে বন্ধ করা হয়।
ইমাম বায়হাকী বলেনঃ-
انه نصب على لحده عليه السلام تسع لبنات-
অর্থঃ- ‘নবী করীম [ﷺ]-এঁর রওযা মোবারকের উপরিভাগ নয়খানা কাঁচা ইট দ্বারা বন্ধ করা হয়।” নবী করীম [ﷺ]-এঁর রওযা মোবারক পূর্ব পশ্চিমে করা হয়। মাথা মোবারক পশ্চিম দিকে রেখে দক্ষিণ দিকে কেবলা মুখী করে শোয়ানো হয়।
عطر اللهم قبره الكريم بعرف شذي من صلوة وتسليم ـ
হুযুর [ﷺ]-এঁর আড়াই বৎসর পর হযরত আবু বকর সিদ্দিক (رضي الله عنه) ইন্তিকাল করলে তাঁকেও উক্ত হুজরা মোবারকে নবী করীম [ﷺ]-এঁর বাম ও উত্তর পার্শ্বে হুযুরের কাঁধ বরাবর দাফন করা হয়। আরো দশ বৎসর পর হযরত ওমর (رضي الله عنه)-কে হযরত আবুবকর (رضي الله عنه)-এর উত্তর ও বাম পার্শ্বে দাফন করা হয়। নবী করীম [ﷺ]-এঁর কাঁধ বরাবর হলো হযরত আবু বকর (رضي الله عنه)-এর মাথা এবং হযরত আবু বকরের কাঁধ বরাবর হলো হযরত ওমরের মাথা। হযরত আয়েশা সিদ্দিকা (رضي الله عنها) স্বপ্নে যে তিনটি চন্দ্র তাঁর কোলে পতিত হতে দেখেছিলেন –তাঁর সে স্বপ্ন তিন রওযা মোবারকের মাধ্যমে বাস্তবে পরিণত হলো। আল্লাহপাক সকলকে আরশে মোয়াল্লার চেয়েও উত্তম স্থান রওযা মোবারক দর্শন করার সৌভাগ্য নসিব করুন। আমিন!
عرش سے زیاده رتبه روضه رسول الله کا
-اسی روضه انوار په غلا موں کے لاکهون سلام
আরশ হতে অধিক উত্তম দয়াল নবীর রওযা পাক,
সে রওযাতে গোলামদেরই লক্ষ কোটি ছালাম যাক।
(অনুবাদঃ লেখক)