জুমার খুতবা
=======
২য় জুমা, জুমাদা আল উলা ১৪৩৯ হি: January :২০১৮
বিষয়: জামাত সহকারে নামায আদায়ের ফযিলত ও গুরুত্ব:
—————————————————————-
সৈয়দ মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন আল আয্হারী
খতিব, মুসাফিরখানা জামে মসজিদ, নন্দনকানন, চট্টগ্রাম। সহকারী অধ্যাপক, সাদার্ন বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম। # ০১৭১৯ ১৯৭৯৭৮
بسم الله الرحمن الرحيم. الحمد لله رب العالمين والصلاة والسلام على سيد المرسلين وعلى آله وصحبه أجمعين. أما بعد!
ইসলাম মানব জীবনের জন্য পরির্পূণ জীবন ব্যবস্থা, ভাতৃত্বের বন্ধনে সমাজের প্রতিটি মানুষকে আবদ্ধ করার প্রয়োজনীয় উপায় উপাদান ইসলামী জীবন ব্যাবস্থার মধ্যে বিদ্যমান। নামায বা সালাত হলো এর মধ্যে অন্যতম। পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে, وَأَقِيمُوا الصَّلَاةَ وَآتُوا الزَّكَاةَ وَارْكَعُوا مَعَ الرَّاكِعِينَ “তোমরা সালাত কায়েম করো, যাকাত প্রদান কর এবং রুকুকারীদের সাথে রুকু করো।”(আল বাক্বারা-৪৩) এখানে “সালাত কায়েম করো।” এর মানে হলো, সকলে সম্মিলিতভাবে নামাযকে সামাজিক ভাবে প্রতিষ্ঠিত কর। আর “তোমরা রুকুকারীদের সাথে রুকু করো।” তার মানে হলো, এখানে সম্মিলিতভাবে একজন ইমামের নেতৃত্বে জামায়াতে নামায আদায়ের জন্য স্পষ্ট নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। সমাজের প্রতিটি সক্ষম মানুষ যদি দৈনিক পাঁচবার মসজিদে একত্রিত হয়, পরস্পর সালাম বিনিময় ও ভাবের আদান-প্রদান করে তবে সমাজে একটি শান্তির্পূণ সহবস্থান তৈরী হবে। সুন্দর সোনালী সমাজের দ্বার উম্মুক্ত হবে। ইসলাম মুলত এই জন্য জামাতে নামাযের অপরিসীম গুরুত্ব প্রদান করেছে।
জামাতের সঙ্গে নামায আদায় করাই হলো দ্বীনের উদ্দেশ্য ও ইসলামের প্রতীক এবং মুসলিম জাতির বাহ্যিকরূপ। আল্লাহর ঘরকে আবাদ রাখতে হবে। যারা মসজিদ আবাদ করে তাদের ব্যাপারে আল্লাহ তায়ালা ঈমানের সাক্ষ্য দিয়েছেন এবং তারা ওইসব লোকের দলভুক্ত যাদের আল্লাহ তায়ালা হক ও সঠিক পথের দিকে হেদায়েত করেছেন। এরশাদ হচ্ছে, إِنَّمَا يَعْمُرُ مَسَاجِدَ اللَّهِ مَنْ آمَنَ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ وَأَقَامَ الصَّلَاةَ وَآتَى الزَّكَاةَ وَلَمْ يَخْشَ إِلَّا اللَّهَ ۖ فَعَسَىٰ أُولَٰئِكَ أَن يَكُونُوا مِنَ الْمُهْتَدِينَ ‘নিঃসন্দেহে তারাই আল্লাহর মসজিদ আবাদ করে, যারা ঈমান এনেছে আল্লাহর প্রতি ও শেষ দিনের প্রতি এবং কায়েম করে নামায ও আদায় করে যাকাত; আর আল্লাহ ব্যতীত কাউকে ভয় করে না। অতএব আশা করা যায়, তারা হেদায়েতপ্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে।’ (সূরা তওবা : ১৮)।
এরশাদ হচ্ছে,
فِي بُيُوتٍ أَذِنَ اللَّهُ أَن تُرْفَعَ وَيُذْكَرَ فِيهَا اسْمُهُ يُسَبِّحُ لَهُ فِيهَا بِالْغُدُوِّ وَالْآصَالِ رِجَالٌ لَّا تُلْهِيهِمْ تِجَارَةٌ وَلَا بَيْعٌ عَن ذِكْرِ اللَّهِ وَإِقَامِ الصَّلَاةِ وَإِيتَاءِ الزَّكَاةِ ۙ يَخَافُونَ يَوْمًا تَتَقَلَّبُ فِيهِ الْقُلُوبُ وَالْأَبْصَارُ لِيَجْزِيَهُمُ اللَّهُ أَحْسَنَ مَا عَمِلُوا وَيَزِيدَهُم مِّن فَضْلِهِ ۗ وَاللَّهُ يَرْزُقُ مَن يَشَاءُ بِغَيْرِ حِسَابٍ
‘আল্লাহ যেসব গৃহকে মর্যাদায় উন্নীত করার এবং সেগুলোতে তাঁর নাম উচ্চারণ করার আদেশ দিয়েছেন, সেখানে সকাল ও সন্ধ্যায় তাঁর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে; এমন লোক যাদের ব্যবসা-বাণিজ্য ও ক্রয়-বিক্রয় আল্লাহর স্মরণ থেকে, নামায কায়েম করা থেকে এবং জাকাত প্রদান করা থেকে বিরত রাখে না। তারা ভয় করে সেই দিনকে, যে দিন অন্তর ও দৃষ্টিগুলো উল্টে যাবে। তারা আল্লাহর পবিত্রতা ঘোষণা করে, যাতে আল্লাহ তাদের উৎকৃষ্টতর কাজের প্রতিদান দেন এবং নিজ অনুগ্রহ আরও অধিক দেন, আল্লাহ যাকে ইচ্ছা অপরিমিত রিয্ক দান করেন।’ (সূরা নূর : ৩৬-৩৮)।
এমনকি যুদ্ধাবস্থায়ও জামাতের সঙ্গে নামায আদায় করার কথা বলা হয়েছে। এতেই জামাতে নামায আদায় করার সীমাহীন গুরুত্ব স্পষ্ট হয়। এরশাদ হচ্ছে, وَإِذَا كُنتَ فِيهِمْ فَأَقَمْتَ لَهُمُ الصَّلَاةَ فَلْتَقُمْ طَائِفَةٌ مِّنْهُم مَّعَكَ وَلْيَأْخُذُوا أَسْلِحَتَهُمْ فَإِذَا سَجَدُوا فَلْيَكُونُوا مِن وَرَائِكُمْ وَلْتَأْتِ طَائِفَةٌ أُخْرَىٰ لَمْ يُصَلُّوا فَلْيُصَلُّوا مَعَكَ وَلْيَأْخُذُوا حِذْرَهُمْ وَأَسْلِحَتَهُمْ ۗ ‘যখন আপনি তাদের মধ্যে থাকেন, অতঃপর নামাযে দাঁড়ান, তখন যেন একদল আপনার সঙ্গে দাঁড়ায় এবং তারা যেন স্বীয় অস্ত্র সঙ্গে নেয়। অতঃপর যখন তারা সেজদা সম্পন্ন করে, তখন আপনার কাছে থেকে যেন সরে যায় এবং অন্য দল যেন আসে, যারা নামায পড়েনি, অতঃপর তারা যেন আপনার সঙ্গে নামায পড়ে এবং আত্মরক্ষার হাতিয়ার সঙ্গে নেয়।’ (সূরা নিসা : ১০২)।
জামাতে নামাযের আবশ্যকতাঃ ইমাম আবু হানিফা রহমাতুল্লাহি আলাইহি সহ সকল সাহাবী, তাবেঈ, ফকিহ, ও ইমামদের মতে নামায জামায়াতে আদায় করা সুন্নতে মুয়াক্কাদা এবং ওয়াজিবের নিকটবর্তী। কোন কোন সাহাবী শরীয়াসম্মত কারণ ছাড়া জামাত তরক করা জায়েয নয় বলে মন্ত্যব্য করেছেন। জামায়াত ত্যাগ করার কারো অনুমতি থাকলে রণাঙ্গনে শত্রুর সম্মুখে ব্যুহবিন্যাসে দন্ডায়মান যুদ্ধাদেরকে সে অনুমতি দেওয়া হত। আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সে অনুমোতি দেননি, এতে প্রমানিত হয় যে জামাতে নামায আদায় উম্মতে মুহাম্মদীর জন্য কতটা আবশ্যক।
একদা এক অন্ধ সাহাবি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এসে জামাতের সঙ্গে নামায আদায় না করার অনুমতি চাইলেন। তিনি বললেন,
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ : أَتَى النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رَجُلٌ أَعْمَى فَقَالَ : يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّهُ لَيْسَ لِي قَائِدٌ يَقُودُنِي إِلَى الْمَسْجِدِ فَسَأَلَ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنْ يُرَخِّصَ لَهُ فَيُصَلِّيَ فِي بَيْتِهِ فَرَخَّصَ لَهُ فَلَمَّا وَلَّى دَعَاهُ فَقَالَ هَلْ تَسْمَعُ النِّدَاءَ بِالصَّلَاةِ ؟قَالَ : نَعَمْ ، قَالَ : فَأَجِبْ . )رواه مسلم ( ৬৫৩ .) وعَنْ ابْنِ أُمِّ مَكْتُومٍ أَنَّهُ سَأَلَ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ : يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنِّي رَجُلٌ ضَرِيرُ الْبَصَرِ شَاسِعُ الدَّارِ وَلِي قَائِدٌ لَا يُلَائِمُنِي فَهَلْ لِي رُخْصَةٌ أَنْ أُصَلِّيَ فِي بَيْتِي ؟ قَالَ : هَلْ تَسْمَعُ النِّدَاءَ ؟ قَالَ : نَعَمْ ، قَالَ: لَا أَجِدُ لَكَ رُخْصَةً ) .سنن أبي داود ( ৫৫২ ) ابن ماجه ( ৭৯২ ) .وفي رواية عند أحمد قال ابن أم مكتوم : إِنَّ بَيْنِي وَبَيْنَ الْمَسْجِدِ نَخْلًا وَشَجَرًا وَلَا أَقْدِرُ عَلَى قَائِدٍ كُلَّ سَاعَةٍ أَيَسَعُنِي أَنْ أُصَلِّيَ فِي بَيْتِي ؟ قَالَ: أَتَسْمَعُ الْإِقَامَةَ ؟ قَالَ : نَعَمْ، قَالَ: فَأْتِهَا ) .رواه أحمد ( ২৪ / ২৪৫ ) وصححه محققو المسند ، ” صحيح الترغيب والترهيب ” ( ১ / ১০৩ ) .
আমার বাড়ি বহুদূরে এবং আমাকে মসজিদে নিয়ে আসার মতো কেউ নেই। তাছাড়া রাস্তায় রয়েছে পোকা-মাকড় ও আক্রমণাত্মক প্রাণী, আরও অন্য কারণ। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে বললেন, তুমি কি আযান শুনতে পাও। তিনি বললেন, হ্যাঁ! আমি আযান শুনতে পাই। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে বললেন, তবে তুমি তাতে সাড়া দাও। অর্থাৎ তুমি জামাতে এসো, নামায আদায় করো। অন্য বর্ণনায় এসেছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে বললেন, আমি তাঁর জন্য কোনো অনুমতি দেখতে পাই না। (মুসলিম- ৬৫৩, আবু দাউদ-৫৫২, ইবনু মাজা-৭৯২, মুসনাদ আহমদ-২৪/২৪৫)
পরনির্ভশীল অন্ধের জন্য এই নির্দেশ হলে সুস্থ-সমর্থ চক্ষুষ্মান; যার কোন ওযর-অন্তরায় নেই তার জন্য কি নির্দেশ হতে পারে?
জামাতে নামায পড়া একাকী নামায পড়ার চেয়ে ২৫ বা ২৭ গুণ অধিক সাওয়াব:
فعَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ صَلَاةُ الْجَمَاعَةِ تَفْضُلُ صَلَاةَ الْفَذِّ بِسَبْعٍ وَعِشْرِينَ دَرَجَةً حديث عبد الله بن عمر ، وقد رواه البخاري ( ৬১৯ ) ومسلم ( ৬৫০ ) ،وعَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ رضي الله عنه: أَنَّهُ سَمِعَ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: صَلَاةُ الْجَمَاعَةِ تَفْضُلُ صَلَاةَ الْفَذِّ بِخَمْسٍ وَعِشْرِينَ دَرَجَةً ( رواه البخاري ( ৬১৯ )،
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন, ‘জামাতে নামায পড়া একাকী নামায পড়ার চেয়ে ২৭ গুণ সাওয়াব বেশি।’ আরেক বর্ণনায় এসেছে, ২৫ গুণ সাওয়াব। (বোখারি-৬১৯ ও মুসলিম-৬৫০)।
অন্য এক হাদিসে এরশাদ হচ্ছে, عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ عَنْ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ : مَنْ سَمِعَ النِّدَاءَ فَلَمْ يَأْتِهِ فَلَا صَلاةَ لَهُ إِلا مِنْ عُذْرٍ . ‘যে ব্যক্তি আযান শুনে বিনা কারণে মসজিদে আসবে না, তার কোনো নামায হবে না।’ (ইবনে মাজা-৭৯৩)। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও এরশাদ করেন,
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : إِنَّ أَثْقَلَ صَلَاةٍ عَلَى الْمُنَافِقِينَ صَلَاةُ الْعِشَاءِ وَصَلَاةُ الْفَجْرِ، وَلَوْ يَعْلَمُونَ مَا فِيهِمَا لَأَتَوْهُمَا وَلَوْ حَبْوًا وَلَقَدْ هَمَمْتُ أَنْ آمُرَ بِالصَّلَاةِ فَتُقَامَ ثُمَّ آمُرَ رَجُلًا فَيُصَلِّيَ بِالنَّاسِ ثُمَّ أَنْطَلِقَ مَعِي بِرِجَالٍ مَعَهُمْ حُزَمٌ مِنْ حَطَبٍ إِلَى قَوْمٍ لَا يَشْهَدُونَ الصَّلَاةَ فَأُحَرِّقَ عَلَيْهِمْ بُيُوتَهُمْ بِالنَّارِ
صحيح البخاري – (৭৪১) صحيح البخاري – (৩৪০৬) صحيح البخاري – (২৪২০) صحيح البخاري – الأحكام (৬৭৯৭) صحيح مسلم – المساجد ومواضع الصلاة (৬৫১) صحيح مسلم – المساجد ومواضع الصلاة (৬৫১) صحيح مسلم – المساجد ومواضع الصلاة (৬৫১) سنن الترمذي – الصلاة (২১৭) سنن النسائي – الإمامة (৮৪৮) سنن أبي داود – الصلاة (৫৪৮) مسند أحمد – باقي مسند المكثرين (২/২৪৪) مسند أحمد – باقي مسند المكثرين (২/২৯২) مسند أحمد – باقي مسند المكثرين (২/৩৬৭) مسند أحمد – باقي مسند المكثرين (২/৩৭৬) مسند أحمد – باقي مسند المكثرين (২/৩৭৭) مسند أحمد – باقي مسند المكثرين (২/৪১৬) مسند أحمد – باقي مسند المكثرين (২/৪২৪) مسند أحمد – باقي مسند المكثرين (২/৪৮০)
‘নিশ্চয়ই মোনাফেকদের ওপর সবচেয়ে কঠিন হলো ফজর ও এশার নামায। মানুষ যদি জানত এ দুই নামাযের মধ্যে কী মর্যাদা রয়েছে, তবে হামাগুড়ি দিয়ে হলেও তাতে আসত। আমার ইচ্ছা হয়, আমি নামায কায়েম করার আদেশ দিই, অতঃপর একজনকে নামাযের ইমামতি করার আদেশ প্রদান করি। অতঃপর লাকড়ি বা খড়ি বহনকারী একদল লোক নিয়ে যারা নামাযে আসে না তাদের বাড়ি-ঘর আগুন দিয়ে ভস্মীভূত করে দিই।’ (বোখারি-৭৪১ ও মুসলিম-৬৫১)।
মসজিদে জামাতে নামায আদায়ের অশেষ সওয়াব সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও এরশাদ করেন,
عن أنس بن مالك ، قال : قال رسول الله صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : ” صَلاةُ الرَّجُلِ فِي بَيْتِهِ بِصَلاةٍ ، وَصَلاَتُهُ فِي مَسْجِدِ الْقَبائِلِ بِخَمْسٍ وَعِشْرِينَ صَلاَةٍ ، وَصَلاَتُهُ فِي الْمَسْجِدِ الَّذِي يُجمَّعُ فِيهِ بِخَمٍسِ مِئَةِ صَلاةٍ ، وَصَلاَةٌ فِي الْمسْجِدِ الأَقْصَى بِخَمْسِينَ أَلْفَ صَلاَةٍ ، وَصَلاَةٌ فِي مَسْجِدِي بِخَمْسِينَ أَلْفِ صَلاةٍ ، وَصَلاَةٌ فِي الْمَسْجِدِ الْحَرامِ بِمئَةِ أَلْفِ صَلاَةٍ ” ) سنن ابن ماجه গ্ধ كتاب إقامة الصلاة والسنة فيها গ্ধ باب ما جاء في الصلاة في المسجد الجامع. مرقاة المفاتيح شرح مشكاة المصابيح গ্ধ كتاب الصلاة গ্ধ باب المساجد ومواضع الصلاة ৭৫২
“নিজ ঘরে যদি কেউ নামায পড়ে তাহলে তার এক নামাযের সাওয়াব, নিজ গোত্রের মসজিদে পঁচিশ নামাযের, জুমা হয় এমন মসজিদে পাঁচ শত, বাইতুল মাকদাসে এক নামায পঞ্চাশ হাজার নামায পড়ার সওয়াব পাওয়া যায়, আমার এই মসজিদে (মসজিদে নববী শরীফে) এক নামায পঞ্চাশ হাজার সালাতের সমান এবং মসজিদে হারামে এক নামায এক লাখ সালাতের সমান।” [ইবনু মাযা, হা-১৪১৩, মিশকাত-৭৫২]
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন,
عَن أُبيِّ بنِ كَعبٍ – رَضِيَ اللهُ عَنهُ – قَالَ: صَلَّى بِنَا رَسُولُ اللهِ – صَلَّى اللهُ عَلَيهِ وَسَلَّمَ – يَومًا الصُّبحَ، فَلَمَّا سَلَّمَ قَالَ: ” أَشَاهِدٌ فُلانٌ ؟ ” قَالُوا: لا. قَالَ: ” إِنَّ هَاتَينِ الصَّلاتَينِ أَثقَلُ الصَّلَوَاتِ عَلَى المُنَافِقِينَ، وَلَو تَعلَمُونَ مَا فِيهِمَا لأَتَيتُمُوهُمَا وَلَو حَبوًا عَلَى الرُّكَبِ، وَإِنَّ الصَّفَّ الأَوَّلَ عَلَى مِثلِ صَفِّ المَلائِكَةِ، وَلَو عَلِمتُم مَا فَضِيلَتُهُ لابتَدَرتُمُوهُ، وَإِنَّ صَلاةَ الرَّجُلِ مَعَ الرَّجُلِ أَزكَى مِن صَلاتِهِ وَحدَهُ، وَصَلاتَهُ مَعَ الرَّجُلَينِ أَزكَى مِن صَلاتِهِ مَعَ الرَّجُلِ، وَمَا كَثُرَ فَهُوَ أَحَبُّ إِلى اللهِ (“رواه أبو داود ( ৫৫৪ ) ، والنسائي ( ৮৪৩ ) .
‘নামাযের প্রথম সারি হলো ফেরেশতাদের সারির মতো। তোমরা যদি প্রথম সারির মর্যাদা সম্পর্কে জানতে, তবে তা পাওয়ার জন্য ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়তে। মনে রেখো, একা নামায পড়ার চেয়ে দুই ব্যক্তির একত্রে নামায পড়া উত্তম। আর দুই ব্যক্তির একত্রে নামায পড়ার চেয়ে তিন ব্যক্তির একত্রে নামায পড়া উত্তম। এভাবে যত বেশি লোকের জামাত হবে, তা আল্লাহর কাছে তত বেশি প্রিয় হবে।’(আবু দাউদ-৫৫৪, নাসায়ী-৮৪৩)
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদ্বিয়াল্লাহ তাআলা আনহু থেকে বর্ণিত হাদিসে আছে, ذَلِكَ أَنَّهُ إِذَا تَوَضَّأَ فَأَحْسَنَ الْوُضُوءَ ثُمَّ خَرَجَ إِلَى الْمَسْجِدِ لَا يُخْرِجُهُ إِلَّا الصَّلَاةُ لَمْ يَخْطُ خَطْوَةً إِلَّا رُفِعَتْ لَهُ بِهَا دَرَجَةٌ وَحُطَّ عَنْهُ بِهَا خَطِيئَةٌ যে ব্যক্তি উত্তমভাবে পবিত্রতা অর্জন করে জামাতে নামায পড়ার জন্য কোনো একটি মসজিদের দিকে পা বাড়াবেন, তাঁর প্রতিটি কদমে আল্লাহ তাঁর জন্য একটি করে পুণ্য লিখে দেবেন। তাঁর একটি করে মর্যাদা বাড়িয়ে দেবেন এবং একটি করে পাপ মুছে দেবেন।(বুখারী-৬২০)
মসজিদে যাওয়ার ও প্রবেশের পর করণীয় সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন,
عَنْ أَبِي أُمَامَةَ رَضِيَ الله عَنْهُ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: “مَنْ خَرَجَ مِنْ بَيْتِهِ مُتَطَهِّرًا إِلَى صَلَاةٍ مَكْتُوبَةٍ فَأَجْرُهُ كَأَجْرِ الْحَاجِّ الْمُحْرِمِ رواه ابوداود في سننه (৫৫৮)، صحيح الترغيب والترهيب(৩২০).
যে ব্যক্তি নিজের ঘর থেকে অযু করে ফরয নামায পড়ার উদ্দেশ্যে মসজিদের দিকে যান, তিনি একজন ইহরাম ওয়ালা হজ সমাধাকারীর নেকি পান। (আবু দাউদ-৫৫৮)
حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ يَعْقُوبَ قَالَ: حَدَّثَنَا زَيْدُ بْنُ حُبَابٍ، أَنَّ حُمَيْدًا المَكِّيَّ، مَوْلَى ابْنِ عَلْقَمَةَ، حَدَّثَهُ، أَنَّ عَطَاءَ بْنَ أَبِي رَبَاحٍ، حَدَّثَهُ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: ্রإِذَا مَرَرْتُمْ بِرِيَاضِ الجَنَّةِ فَارْتَعُواগ্ধ. قُلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ وَمَا رِيَاضُ الجَنَّةِ؟ قَالَ: ্রالمَسَاجِدُগ্ধ، قُلْتُ: وَمَا الرَّتْعُ يَا رَسُولَ اللَّهِ؟ قَالَ: ্রسُبْحَانَ اللَّهِ وَالحَمْدُ لِلَّهِ وَلَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَاللَّهُ أَكْبَرُগ্ধ سنن الترمذي – الدعوات . رقم الحديث-(৩৫০৯)
‘যখন তোমরা জান্নাতের বাগানে ঘোরাফেরা করবে, তখন কিছু ফলমূল খেয়ে নিয়ো।’ সাহাবিরা বললেন, ‘জান্নাতের বাগান কোনটা?’ তিনি বললেন: ‘মসজিদগুলো।’ তাঁরা বললেন, ‘এর ফল খাওয়া কেমন?’ তিনি বললেন, ‘এই তাসবিহগুলো পড়া, সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, ওয়া লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু আল্লাহু আকবার।’ (তিরমিযী-৩৫০৯)
ইসলাম জামাত কায়েমের উদ্দেশ্য নিয়েই আযানের ব্যবস্থা করেছে, আযান এই জন্য নয় যে আযান দিয়ে ঘরে বা একাকী নামায পড়ে নিবে। বরং আযানের মৌলিক উদ্দেশ্য হলো জামায়াত প্রতিষ্ঠা করা ,একটি নামাযের জন্য দুইটি আহ্বান করা হয় একটিকে বলে আযান আরেকটি হলো ইকামাত উভয়টির উদ্দেশ্য হলো যাতে মুসলমানগণ জামাতে নামায আদায় করতে পারে।
শরয়ী ওযর ছাড়া জামাত তরক করার পরিনামঃ মহান আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেন,
يَوْمَ يُكْشَفُ عَن سَاقٍ وَيُدْعَوْنَ إِلَى السُّجُودِ فَلَا يَسْتَطِيعُونَ خَاشِعَةً أَبْصَارُهُمْ تَرْهَقُهُمْ ذِلَّةٌ ۖ وَقَدْ كَانُوا يُدْعَوْنَ إِلَى السُّجُودِ وَهُمْ سَالِمُونَ
“স্মরণ কর বিচার দিনের কথা সেদিন পায়ের নলা উন্মোচন করা হবে এবং ওদেরকে সিজদা করার জন্য আহবান করা হবে কিন্তু ওরা তা করতে সক্ষম হবে না, হীনতাগ্রস্থ হয়ে ওরা ওদের দৃষ্টি অবনত করবে, অথচ ওরা যখন নিরাপদ ছিল, তখন ওদের আহবান করা হয়েছিল সিজদা করতে (আল- কুরআন ৬৮/৪২-৪৩)
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنْ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ : ” سَبْعَةٌ يُظِلُّهُمْ اللَّهُ فِي ظِلِّهِ يَوْمَ لا ظِلَّ إِلا ظِلُّهُ : الإِمَامُ الْعَادِلُ ، وَشَابٌّ نَشَأ فِي عِبَادَةِ رَبِّهِ ، وَرَجُلٌ قَلْبُهُ مُعَلَّقٌ فِي الْمَسَاجِدِ ، وَرَجُلَانِ تَحَابَّا فِي اللَّهِ اجْتَمَعَا عَلَيْهِ وَتَفَرَّقَا عَلَيْهِ ، وَرَجُلٌ طَلَبَتْهُ امْرَأَةٌ ذَاتُ مَنْصِبٍ وَجَمَالٍ فَقَالَ إِنِّي أَخَافُ اللَّهَ ، وَرَجُلٌ تَصَدَّقَ بِصَدَقَةٍ فَأَخْفَاهَا حَتَّى لا تَعْلَمَ شِمَالُهُ مَا تُنْفِقُ يَمِينُهُ ، وَرَجُلٌ ذَكَرَ اللَّهَ خَالِيًا فَفَاضَتْ عَيْنَاهُ ” متفق عليه ، رواه البخاري (২/১৪৪-১৭৪) ومسلم برقم ১৭১২ ، وغيرهما .
মসজিদের সাথে অন্তরের সম্পর্ক স্থাপনকারীগণকে (জামা’আতে নামায আদায়কারীকে) আল্লাহর (আরশের) ছায়ায় আশ্রয় দেয়া হবে।
قالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهِ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : ” مَنْ صَلَّى البَرْدَيْنِ دَخَلَ الْجَنَّةَ ” صحيح البخاري গ্ধ كتاب مواقيت الصلاة গ্ধ باب فضل صلاة الفجر, رقم الحديث-৫৪৯
আসর ও ফজরের সালাত যথারীতি জামা’আতের সাথে আদায়কারী জান্নাতী হবেন। (বুখারী-৫৪৯)
নামাযের পূর্ণ ফযিলত ও বরকত হাসিল হয় যদি জামায়াতের সাথে আদায় করা হয়। বস্তুত নামাযের স্বভাব ও প্রকৃত দাবী হল জামায়াতের মাধ্যমেই তার স্বকীয় মহিমায় উদ্ভাসিত হয়ে আত্মপ্রকাশ করতে পারা। এজন্যই রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং সাহাবাগণ জামায়াতের এতো বেশি যতœবান হতেন যেন জামায়াত নামাযের এক অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। এমনকি ইন্তিকালের পূর্বাবস্থায়ও রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুইজনের কাঁধে ভর করে জামায়াতে হাজির হয়েছিলেন। (বুখারী)
عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: مَنْ صَلَّى لِلَّهِ أَرْبَعِينَ يَوْمًا فِي جَمَاعَةٍ يُدْرِكُ التَّكْبِيرَةَ الْأُولَى كُتِبَتْ لَهُ بَرَاءَتَانِ بَرَاءَةٌ مِنْ النَّارِ وَبَرَاءَةٌ مِنْ النِّفَاقِ ( رواه الترمذي(২৪১)
যে ব্যক্তি চল্লিশ দিন তাকবিরে উলার সাথে (নামায শুরুর তাকবিরের সাথে) পাঁচ ওয়াক্ত নামায জামায়াতের সাথে আদায় করল তার জন্য দু’টি নাজাত লিপিবদ্ধ করা হল, ১. জাহান্নাম হতে ও ২. মুনাফিক্বী হতে (তিরমিযী-২৪১, মিশকাত ২১৭পৃষ্ঠা)।
مَنْ صَلَّى الْعِشَاءَ فِي جَمَاعَةٍ فَكَأَنَّمَا قَامَ نِصْفَ اللَّيْلِ وَمَنْ صَلَّى الفجر فِي جَمَاعَةٍ فَكَأَنَّمَا قام اللَّيْلَ كُلَّهُ” ( صحيح الإمام مسلم – ٦٥٦ ) .
এবং ‘যে ব্যক্তি জামায়াতের সাথে ইশার নামায আদায় করল, সে যেন অর্ধেক রাত পর্যন্ত দাঁড়িয়ে (ইবাদত) করল। আর যে ফজরের নামায জামায়াতসহ আদায় করল, সে যেন সারা রাত দাঁড়িয়ে (ইবাদত) নামায পড়ল” (মুসলিম-৬৫৬)।
আবু মুসা আশআরী রাদ্বিয়াল্লাহ তাআলা আনহু হতে বর্ণিত আছে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন,
عنْ أَبِي مُوسَى رضي الله عنه قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : إِنَّ أَعْظَمَ النَّاسِ أَجْرًا فِي الصَّلاةِ أَبْعَدُهُمْ إِلَيْهَا مَمْشًى فَأَبْعَدُهُمْ ) رواه مسلم (৬৬২ )
যে ব্যাক্তি মসজিদ থেকে দূরে বসবাস করে লোকদের মধ্যে তার সাওয়াবই বেশী ( কেননা সে দূর থেকে নামাযের জন্য মসজিদে আসে) আর যে তাড়াতাড়ি নামায পড়ে ঘুমিয়ে পরে তার চেয়ে ঐ ব্যাক্তির সাওয়াব বেশী যে ইমামের সাথে জামাতে নামায পড়ার জন্য অপেক্ষা করে।( মুসলিম-৬৬২)
عَن أَبِي الدَّرداءِ، عَن النَّبِيِّ صَلى الله عَليه وسَلمَ، قال: ্রمَن مَشَى فِي ظُلمَةِ اللَّيلِ إِلَى المَساجِدِ آتاهُ اللَّهُ نُورًا يَومَ القِيامَةِগ্ধ. وعَن أَبِي سَعِيدٍ، عَن النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قال: ্রبَشِّرِ المَشائِينَ فِي الظُّلَمِ إِلَى المَساجِدِ بِالنُّورِ التامِ يَومَ القِيامَةِগ্ধ.
কিয়মতের দিন পরির্পুণ নূরের অধিকারী তারাই হবে অন্ধকারে মাঝেও যাদের পদচারণা মসজিদে নামাযের জন্য থাকে।(আবু দাউদ)
روي أنَّ السَّلَف كانوا يُعَزُّون أنفسَهم ثلاثة أيام: “إذا فاتَتهم التكبيرة الأولى، ويعزُّون سبعًا إذا فاتَتهم الجماعة”.(إحياء علوم الدين : جـ১ صـ১৪৭ وما بعدها)
আর সালফে সালেহীনগণ ইমামের সাথে প্রথম তাকবীর না পেলে ৩ দিন ও জামায়াত ছুটে গেলে ৭ দিন দুঃখ প্রকাশ করতেন (মির’আত- ৪/১০২)।
عَنْ الْبَرَاءِ بْنِ عَازِبٍ رضي الله عنه قَالَ : كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَتَخَلَّلُ الصُّفُوفَ مِنْ نَاحِيَةٍ إِلَى نَاحِيَةٍ ، يَمْسَحُ مَنَاكِبَنَا وَصُدُورَنَا ، وَيَقُولُ : لا تَخْتَلِفُوا فَتَخْتَلِفَ قُلُوبُكُمْ وَكَانَ يَقُولُ : إِنَّ اللَّهَ وَمَلَائِكَتَهُ يُصَلُّونَ عَلَى الصُّفُوفِ الْمُتَقَدِّمَةِ
(وروى أبو داود (৬৬৪) والنسائي (৮১১) ورواه ابن ماجه (৯৯৭) بلفظ : ( إِنَّ اللَّهَ وَمَلائِكَتَهُ يُصَلُّونَ عَلَى الصَّفِّ الأَوَّلِ ) وعن عائشة رضي الله عنها، قالت: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم:. إِنَّ اللهَ وَ مَلاَئِكَتَهُ يُصَلُّونَ عَلَى مَيَامِنِ الصُّفُوفِ وعَنِ الْعَرْبَاضِ بْنِ سَارِيَة رضي الله تعالى عنه عَنْ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم:্র أَنَّهُ كَانَ يُصَلِّي عَلَى الصَّفِّ الأَوَّل ثَلاَثاً، وَعَلَى الَّذِي يَلِيه وَاحِدَة গ্ধ صحيح النسائي ح (৮১৭). وعن العرباض بن سارية – رضي الله عنه – قال أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم:্র كَانَ يَسْتَغْفِرُ لِلصَّفِّ الْمُقَدَّمِ ثَلاَثاً، وَلِلثَّانِي مَرَّةً গ্ধ صحيح ابن ماجه ح (৯৯৬). (حم) ১৮৭২৬ , (د) ৫৪৩ , (جة) ৯৯৭ , وقال الشيخ شعيب الأرناؤوط: إسناده صحيح. (২) (س) ৮১১ , (حم) ১৮৬৬৩ (৩) (د) ৫৪৩ , (هق) ২১১৮ , انظر صحيح الترغيب والترهيب: ৫০৭(مي) ১২৬৫ , (س) ৮১৭ , (جة) ৯৯৬ , (حم) ১৭১৮৮ , (عب) ২৪৫২
তিনি আরো এরশাদ করেন, আল্লাহ ও ফেরেশতাগণ জামায়াতের প্রথম কাতারের লোকদের ওপর বিশেষ রহমত নাযিল করে থাকেন। কথাটি তিনি ৩ বার বললেন। অতঃপর বলেন, দ্বিতীয় কাতারের ওপরেও (ইবনু মাযা-৯৯৬, আহমাদ-১৮৭২৬,দারমী-১২৬৫)।
রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رَأَى فِي أَصْحَابِهِ تَأَخُّرًا ، فَقَالَ لَهُمْ : تَقَدَّمُوا فَأْتَمُّوا بِي وَلْيَأْتَمَّ بِكُمْ مَنْ بَعْدَكُمْ، لا يَزَالُ قَوْمٌ يَتَأَخَّرُونَ حَتَّى يُؤَخِّرَهُمْ اللَّهُ ( رواه مسلم (৪৩৮)
তোমরা সামনের কাতারের দিকে অগ্রসর হও। কেননা যারা সর্বদা পিছনে থাকবে, আল্লাহ তাদেরকে (স্বীয় রহমত থেকে) পিছনে রাখবেন (মুসলিম) অন্য বর্ণনায় এসেছে, আল্লাহ তাদেরকে জাহান্নাম পর্যন্ত পিছিয়ে দেবেন (মুসলিম-৪৩৮)।
عَنْ أَبِي الأَحْوَصِ ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ ، قَالَ : ” مَنْ سَرَّهُ ، أَنْ يَلْقَى اللَّهَ غَدًا مُسْلِمًا ، فَلْيُحَافِظْ عَلَى هَؤُلَاءِ الصَّلَوَاتِ ، حَيْثُ يُنَادَى بِهِنَّ ، فَإِنَّ اللَّهَ شَرَعَ لِنَبِيِّكُمْ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ، سُنَنَ الْهُدَى ، وَإِنَّهُنَّ مِنْ سُنَنِ الْهُدَى ، وَلَوْ أَنَّكُمْ صَلَّيْتُمْ فِي بُيُوتِكُمْ ، كَمَا يُصَلِّي هَذَا الْمُتَخَلِّفُ فِي بَيْتِهِ ، لَتَرَكْتُمْ سُنَّةَ نَبِيِّكُمْ ، وَلَوْ تَرَكْتُمْ سُنَّةَ نَبِيِّكُمْ ، لَضَلَلْتُمْ ، وَمَا مِنْ رَجُلٍ يَتَطَهَّرُ فَيُحْسِنُ الطُّهُورَ ، ثُمَّ يَعْمِدُ إِلَى مَسْجِدٍ مِنْ هَذِهِ الْمَسَاجِدِ ، إِلَّا كَتَبَ اللَّهُ لَهُ بِكُلِّ خَطْوَةٍ يَخْطُوهَا حَسَنَةً ، وَيَرْفَعُهُ بِهَا دَرَجَةً ، وَيَحُطُّ عَنْهُ بِهَا سَيِّئَةً ، وَلَقَدْ رَأَيْتُنَا وَمَا يَتَخَلَّفُ عَنْهَا ، إِلَّا مُنَافِقٌ مَعْلُومُ النِّفَاقِ ، وَلَقَدْ كَانَ الرَّجُلُ يُؤْتَى بِهِ ، يُهَادَى بَيْنَ الرَّجُلَيْنِ ، حَتَّى يُقَامَ فِي الصَّفِّ
( ” . صحيح مسلم গ্ধ كِتَاب الْمَسَاجِدِ وَمَوَاضِعِ الصَّلَاةِ গ্ধ بَاب صَلَاةِ الْجَمَاعَةِ مِنْ سُنَنِ الْهُدَى رقم الحديث: ১০৫২ صحيح مسلم – المساجد ومواضع الصلاة (৬৫৪) صحيح مسلم – المساجد ومواضع الصلاة (৬৫৪) سنن أبي داود – الصلاة (৫৫০) مسند أحمد – مسند المكثرين من الصحابة (১/৩৮২) مسند أحمد – مسند المكثرين من الصحابة (১/৪১৫) مسند أحمد – مسند المكثرين من الصحابة (১/৪১৯) مسند أحمد – مسند المكثرين من الصحابة (১/৪৪৪) مسند أحمد – مسند المكثرين من الصحابة (১/৪৫৫)
ইবনে মাসউদ রাদ্বিয়াল্লাহ তাআলা আনহু বলেন, ‘যে ব্যক্তি কেয়ামতের ময়দানে আল্লাহর সাথে মুসলিম হয়ে সাক্ষাতের ইরাদা রাখে তার উচিত সুন্দরভাবে পবিত্রতা অর্জন করে কেবল নামাযের উদ্দেশ্যে ঘর থেকে বের হওয়া, তাহলে তার প্রতি পদক্ষেপের বিনিময়ে একটি করে নেকী লিপিবদ্ধ করা হবে, একটি করে মর্যাদার স্তর উন্নীত ও তার পাপ মোচন করা হবে। (মুসলিম-১০৫২,৬৫৪, আবু দাউদ-৫৫০, আহমদ-১/৩৮২, ১/৪১৫,১/৪১৯,১/৪৪৪.১/৪৫৫)
প্রকৃত মুমিনদের জন্য এটা সহজ থাকলেও মুনাফিকদের জন্য সত্যিই বর কঠিন। আল্লাহ তায়ালা তাদের উদ্দেশ্যে বলেন, নিশ্চয়ই এটা বড় কঠিন কিন্তু খোদাভীরুদের জন্য সহজ (সুরা বাকারা ৪৫)
وَقَدْ رَوَى ابْنُ عَبَّاسٍ , أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ : { مَنْ سَمِعَ النِّدَاءَ فَلَمْ يَمْنَعْهُ مِنْ اتِّبَاعِهِ عُذْرٌ . قَالُوا : وَمَا الْعُذْرُ يَا رَسُولَ اللَّهِ ؟ قَالَ : خَوْفٌ أَوْ مَرَضٌ . لَمْ تُقْبَلْ مِنْهُ الصَّلاةُ الَّتِي صَلَّى } . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد ( ১ / ১৩০ ) أخرجه ابن ماجه في كتاب (المساجد والجماعات)، باب: التغليظ في التخلف عن الجماعة، برقم: [৭৯৩]).
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদ্বিয়াল্লাহ তাআলা আনহুমা থেকে বর্ণিত: রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন: যে ব্যক্তি আযান শুনে ওজর ছাড়া মসজিদে না গিয়ে একাকী নামায আদায় করল, তার নামায কবুল করা হবে না। লোকেরা বলল, ওজর কী? রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: ভয় ও রোগ। [আবু দাউদ-১/১৩০, ইবনু মাযা-৭৯৩)]
فعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رضي الله عنه أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ : أَلا أَدُلُّكُمْ عَلَى مَا يَمْحُو اللَّهُ بِهِ الْخَطَايَا وَيَرْفَعُ بِهِ الدَّرَجَاتِ ؟ قَالُوا : بَلَى يَا رَسُولَ اللَّهِ , قَالَ : إِسْبَاغُ الْوُضُوءِ عَلَى الْمَكَارِهِ , وَكَثْرَةُ الْخُطَا إِلَى الْمَسَاجِدِ , وَانْتِظَارُ الصَّلاةِ بَعْدَ الصَّلاةِ , فَذَلِكُمْ الرِّبَاطُ , فَذَلِكُمْ الرِّبَاطُ ( رواه مسلم ( ২৫১ ) .
হযরত আবূ হুরায়রা রাদ্বিয়াল্লাহ তাআলা আনহু থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: আমি কি তোমাদের এমন বিষয় জানাব না, যার মাধ্যমে আল্লাহ গুনাহসমূহ মোচন করে দেন এবং মর্যাদা বৃদ্ধি করেন? সাহাবায়ে কিরাম বললেন: হ্যাঁ, হে আল্লাহর রাসুল ! তিনি বললেন: তা হচ্ছে কষ্টের সময়ে যথাযথভাবে অযু করা, মসজিদের দিকে বেশি বেশি পদচারণ করা এবং এক নামাযের পর অন্য নামাযের অপেক্ষায় থাকা। এটাই হল সীমান্ত প্রহরা। [মুসলিম-২৫১,তিরমিযি : ৪৮]
জামায়াতে নামায আদায়ের গুরুত্বকে মনেপ্রাণে উপলব্ধি করে আপনি যদি ইচ্ছা করেন যে আমি এখন থেকে পাঁচ ওয়াক্ত নামায জামাতে আদায় করবো ইনশাআল্লাহ। দেখবেন আল্লাহর রহমতে তা আদায়ে আপনি সক্ষম হচ্ছেন। ফজরের কথা চিন্তা করছেন? যত রাতেই আপনি ঘুমাতে যান না কেন, কায়মনোবাক্যে যদি আল্লাহকে বলেন, আল্লাহ দয়া করে আমাকে ফজরের সময় জাগার তওফিক দিও, দেখবেন ঠিকই কোনো না কোনোভাবে আপনি জেগে গেছেন।
وصلى الله على سيدنا محمد وعلى آله وصحبه أجمعين. والحمد لله