প্রশ্ন :- ﻋﻮﺭﺕ (তথা মহিলা) এর শাব্দিক অর্থ কি?
উত্তর:- ﻋﻮﺭﺕ (তথা মহিলা) শব্দের শাব্দিক অর্থ হলো; “গোপন করার বস্তু”। আল্লাহ্ তাআলার মাহবুব, হুযুর পুরনূ রাসূলুল্লাহ্ ﺻَﻠَّﯽ ﺍﻟﻠّٰﮧُ ﺗَﻌَﺎﻟٰﯽ ﻋَﻠَﯿْﮧِ ﻭَﺍٰﻟِﮧٖ ﻭَﺳَﻠَّﻢ ইরশাদ করেছেন:
ﻋﻮﺭﺕ ( তথা মহিলা), “মহিলা’ই” (অর্থাৎ গোপন করার বস্তু)। যখন সে বের হয় তখন তাকে শয়তান উঁকিমেরে দেখে।” (অর্থাৎ তাকে দেখা শয়তানের কাজ) (সুনানে তিরমিযী, ২য় খন্ড, ৩৯২ পৃষ্ঠা, হাদীস: ১১৭৬)
প্রশ্ন :- এই যুগেও কি পর্দা করা আবশ্যক?
উত্তর:- জ্বী, হ্যাঁ! কিছু বিষয় যদি দৃষ্টির সামনে রাখা হয় তবে ﺍِﻥْ ﺷَﺎﺀَ ﺍﻟﻠﻪ ﻋَﺰَّﻭَﺟَﻞّ পর্দার মাসয়ালা বুঝার ক্ষেত্রে সহজ হবে। ২২ পারা সূরা আহযাব এর ৩৩ নং আয়াতে পর্দার হুকুম দিতে গিয়ে আল্লাহ্ তাআলা ইরশাদ করেন:
ﻭَﻗَﺮْﻥَ ﻓِﻲ ﺑُﻴُﻮﺗِﻜُﻦَّ ﻭَﻟَﺎ ﺗَﺒَﺮَّﺟْﻦَ ﺗَﺒَﺮُّﺝَ ﺍﻟْﺠَﺎﻫِﻠِﻴَّﺔِ ﺍﻟْﺄُﻭﻟَﻰٰ
কানযুল ঈমান থেকে অনুবাদ: এবং নিজেদের ঘরগুলোতে অবস্থান করো এবং বেপর্দা থেকো না যেমন পূর্ববর্তী জাহেলী যুগের পর্দাহীনতা; (পারা: ২২, সূরা: আহযাব, আয়াত: ৩৩)
খলিফায়ে আ’লা হযরত, সদরুল আফাযিল হযরত আল্লামা মাওলানা সায়্যিদ মুহাম্মদ নঈম উদ্দীন মুরাদাবাদী ﺭَﺣْﻤَﺔُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺗَﻌَﺎﻟٰﻰ ﻋَﻠَﻴْﻪِ এই আয়াতের টীকায় বলেন: পূর্বের অন্ধকার যুগ (জাহেলীয়্যতের যুগ)দ্বারা উদ্দেশ্য ইসলামের পূর্বের যুগ। সেই যুগে মহিলারা বেপর্দা বের হতো। নিজের সৌন্দর্য্যতা ও রূপ মাধুর্যকে (অর্থাৎ শরীরের সাজসজ্জা ও সৌন্দর্যতা যেমন; বুকের উত্তান ইত্যাদি) প্রকাশ করতো। যেন পর-পুরুষেরা তা দেখে। এমন পোশাক পরিধান করতো যার দ্বারা শরীর পুরোপুরি আবৃত হতো না। (খাযায়িনুল ইরফান, ৬৭৩ পৃষ্ঠা)
আফসোস! অন্ধকার যুগের সেই পর্দাহীনতা ও নির্লজ্জতা বর্তমান যুগেও দেখা যাচ্ছে, নিঃসন্দেহে যেমনি ভাবে সেই যুগে পর্দা আবশ্যক ছিলো, তেমনি ভাবে বর্তমানেও আবশ্যক।
প্রখ্যাত মুফাস্সীর, হাকীমুল উম্মত হযরত মুফতী আহমদ ইয়ার খাঁন ﺭَﺣْﻤَﺔُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺗَﻌَﺎﻟٰﻰ ﻋَﻠَﻴْﻪِ বলেন: আহ! যদি উপরোক্ত আয়াত দ্বারা বর্তমান যুগের মুসলমান মহিলারা শিক্ষাগ্রহণ করতো। এই মহিলারা সেই উম্মাহাতুল মু’মিনীনদের চেয়ে উর্ধ্বে নয়। “রুহুল বয়ানে”র প্রণেতা ﺭَﺣْﻤَﺔُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺗَﻌَﺎﻟٰﻰ ﻋَﻠَﻴْﻪِ
বলেন: হযরত সায়্যিদুনা আদম ﻋَﻠٰﯽ ﻧَﺒِﯿِّﻨَﺎﻭَﻋَﻠَﯿْﮧِ ﺍﻟﺼَّﻠﻮٰۃُ ﻭَﺍﻟﺴَّﻼﻡ সায়্যিদুনা নুহ ﻋَﻠٰﯽ ﻧَﺒِﯿِّﻨَﺎﻭَﻋَﻠَﯿْﮧِ ﺍﻟﺼَّﻠﻮٰۃُ ﻭَﺍﻟﺴَّﻼﻡ এর তুফানের মধ্যবর্তী যুগকে প্রথম অন্ধকার যুগ (জাহেলী যুগ) বলা হয়, যার সময়সীমা বারশত বাহাত্তর (১২৭২) বছর ছিলো। আর ঈসা ﻋَﻠٰﯽ ﻧَﺒِﯿِّﻨَﺎﻭَﻋَﻠَﯿْﮧِ ﺍﻟﺼَّﻠﻮٰۃُ ﻭَﺍﻟﺴَّﻼﻡ ও হুযুর ﺻَﻠَّﯽ ﺍﻟﻠّٰﮧُ ﺗَﻌَﺎﻟٰﯽ ﻋَﻠَﯿْﮧِ ﻭَﺍٰﻟِﮧٖ ﻭَﺳَﻠَّﻢ এর মধ্যবর্তী যুগকে দ্বিতীয় অন্ধকার যুগ বলা হয়। যার সময়সীমা প্রায় ছয়শত (৬০০) বছর ছিলো। (নূরুল ইরফান, ৬৭৩ পৃষ্ঠা, রুহুল বয়ান, ৭ম খন্ড, ১৭০ পৃষ্ঠা)
ﻭَﺍﻟﻠﻪُ ﻭﺭﺳﻮﻟﻪ ﺍَﻋْﻠَﻢُ ﻋَﺰَّﻭَﺟَﻞّ ﻭ ﺻَﻠَّﯽ ﺍﻟﻠّٰﮧُ ﺗَﻌَﺎﻟٰﯽ ﻋَﻠَﯿْﮧِ ﻭَﺍٰﻟِﮧٖ ﻭَﺳَﻠَّﻢ
প্রশ্ন :- বেপর্দার শাস্তি কি?
উত্তর:- মহিলাদের বেপর্দা হওয়া আল্লাহ্ তাআলার গযবের মাধ্যম এবং ধ্বংসের কারণ। এই প্রশ্নের উত্তরে ১৮ পারার সূরা নূরের ৩১নং আয়াতের এই অংশটুকুর তাফসীর লক্ষ্য করুন। যেমনিভাবে আল্লাহ্ তাআলা ইরশাদ করেন:
ﻭَﻟَﺎ ﻳَﻀْﺮِﺑْﻦَ ﺑِﺄَﺭْﺟُﻠِﻬِﻦَّ ﻟِﻴُﻌْﻠَﻢَ ﻣَﺎ ﻳُﺨْﻔِﻴﻦَ ﻣِﻦ ﺯِﻳﻨَﺘِﻬِﻦَّ
.কানযুল ঈমান থেকে অনুবাদ: এ বং যেন মাটির উপর সজোরে পদক্ষেপ না করে, যাতে জানা যায় গোপন সাজসজ্জা; (পারা: ১৮, সূরা: নুর, আয়াত: ৩১)
বর্ণিত আয়াতে মোবারাকার ব্যাখ্যায় মুফাস্সীরে কোরআন মুহাম্মদ নঈম উদ্দীন মুরাদাবাদী ﺭَﺣْﻤَﺔُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺗَﻌَﺎﻟٰﻰ ﻋَﻠَﻴْﻪِ বলেন: অর্থাৎ মহিলারা ঘরের মধ্যে চলাফেরা করার সময়ও এতটুকু আস্তে পা ফেলবে যেন তাদের অলংকারের আওয়াজ শুনা না যায়। মাসয়ালা: এজন্যই মহিলাদের উচিত তারা যেন শব্দ সৃষ্টিকারী নূপুর পরিধান না করে। হাদীস শরীফে বর্ণিত রয়েছে: “আল্লাহ্ তাআলা সেই সম্প্রদায়ের দোয়া কবুল করেন না, যে সম্প্রদায়ের মহিলারা নূপুর পরিধান করে থাকে।” (তাফসীরাতে আহমদীয়া, ৫৬৫ পৃষ্ঠা) এ থেকে বুঝে নেয়া উচিত যে, যখন অলংকারের শব্দ দোয়া কবুল হওয়াকে বাধাগ্রস্থ করে, তবে বিশেষ করে মহিলারা নিজের আওয়াজকে (শরীয়াতের বিনা অনুমতিতে অন্য পুরুষ পর্যন্ত পৌঁছানো) এবং তাদের বেপর্দা হওয়া, কিরূপ আল্লাহ্ তাআলা গযবের কারণ হবে। পর্দার ব্যাপারে বেপরোয়া হওয়া ধ্বংসের কারণ। (খাযায়িনুল ইরফান, ৫৬৬ পৃষ্ঠা)
প্রশ্ন :- হাদীসে পাকে যে শব্দসৃষ্টিকারী নূপুর পরিধানে বারণ করা হয়েছে তা দ্বারা কোন অলংকার উদ্দেশ্য?
উত্তর:- এর দ্বারা পায়ের ঘুঙ্গুর উদ্দেশ্য, এমন অলংকার পরিধানকারীনিদের ব্যাপারে একটি হাদীসে পাকে ইরশাদ হয়েছে: “আল্লাহ্ তাআলা শব্দসৃষ্টিকারী নুপুরের আওয়াজকে এমনিভাবে অপছন্দ করেন যেমনিভাবে গানের আওয়াজকে অপছন্দ করেন এবং যে মহিলা এমন অলংকার পরিধান করবে তার হাশর তেমনই হবে যেমনটি বাদ্যযন্ত্র বাদকদের হবে। যে মহিলা শব্দসৃষ্টিকারী নূপুর পরিধান করে তার উপর অভিশাপ অবতীর্ণ হয়।” (কানযুল উম্মাল, ১৬তম খন্ড, ১৬৪ পৃষ্ঠা, হাদীস: ৪৫০৬৩)
হযরত সায়্যিদুনা আব্দুল্লাহ্ বিন যুবাইর ﺭَﺿِﻰَ ﺍﻟﻠﻪُ ﺗَﻌَﺎﻟٰﻰ ﻋَﻨْﻪُ বলেন: আমাদের ঘরের (এক) দাসী হযরত যুবাইর ﺭَﺿِﻰَ ﺍﻟﻠﻪُ ﺗَﻌَﺎﻟٰﻰ ﻋَﻨْﻪُ এর মেয়েকে নিয়ে হযরত ওমর ﺭَﺿِﻰَ ﺍﻟﻠﻪُ ﺗَﻌَﺎﻟٰﻰ ﻋَﻨْﻪُ এর নিকট গেলো, এমতাবস্থায় তার পায়ে নুপুর ছিলো। হযরত সায়্যিদুনা ওমর ফারুক
ﺭَﺿِﻰَ ﺍﻟﻠﻪُ ﺗَﻌَﺎﻟٰﻰ ﻋَﻨْﻪُ সেটাকে কেঁটে দিলেন এবং বললেন: “আমি হুযুর ﺻَﻠَّﯽ ﺍﻟﻠّٰﮧُ ﺗَﻌَﺎﻟٰﯽ ﻋَﻠَﯿْﮧِ ﻭَﺍٰﻟِﮧٖ ﻭَﺳَﻠَّﻢ
এর নিকট শুনেছি যে, প্রতিটি নুপুরের সাথে শয়তান থাকে।” (সুনানে আবু দাউদ, ৪র্থ খন্ড, ১২৪ পৃষ্ঠা, হাদীস: ৪২৩০)
হযরত সায়্যিদাতুনা বুনানা ﺭَﺿِﻰَ ﺍﻟﻠﻪُ ﺗَﻌَﺎﻟٰﻰ ﻋَﻨْﻬَﺎ
বলেন: আমি উম্মুল মু’মিনীন হযরত সায়্যিদাতুনা আয়েশা সিদ্দীকা ﺭَﺿِﻰَ ﺍﻟﻠﻪُ ﺗَﻌَﺎﻟٰﻰ ﻋَﻨْﻬَﺎ এর নিকট উপস্থিত ছিলাম, তখন তাঁর কাছে একটি শিশু কন্যাকে আনা হলো, যার পায়ে নুপুর ছিলো, যেটা আওয়াজ করছিল। (তা দেখে) তিনি ﺭَﺿِﻰَ ﺍﻟﻠﻪُ ﺗَﻌَﺎﻟٰﻰ ﻋَﻨْﻬَﺎ বললেন: তাকে কখনও আমার নিকট আনবেনা। কিন্তু যদি তার নুপুর ভেঙ্গে ফেলা হয় (তবে আনবে)। আমি ﺻَﻠَّﯽ ﺍﻟﻠّٰﮧُ ﺗَﻌَﺎﻟٰﯽ ﻋَﻠَﯿْﮧِ ﻭَﺍٰﻟِﮧٖ ﻭَﺳَﻠَّﻢ কে ইরশাদ করতে শুনেছি: “যে ঘরে নুপুর থাকে সেই ঘরে ফিরিশতা আগমন করে না।” (সুনানে আবু দাউদ, ৪র্থ খন্ড, ১২৫ পৃষ্ঠা, হাদীস: ৪২৩১)
এই অধ্যায়ের হাদীসে মোবারাকার টীকায় প্রখ্যাত মুফাস্সীর, হাকীমুল উম্মত হযরত মুফতী আহমদ ইয়ার খাঁন ﺭَﺣْﻤَﺔُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺗَﻌَﺎﻟٰﻰ ﻋَﻠَﻴْﻪِ বলেন: ﺍَﺟْﺮَﺍﺱْ শব্দটি ﺟَﺮْﺱ এর বহুবচন। যার অর্থ হলো: নুপুর এবং তার ন্যায় শব্দ সৃষ্টিকারী বস্তু। উটের গলায় ঝুমুর এবং বাজ পাখির পায়ের চামড়াকেও আজরাস বলা হয়। হিন্দুস্থানেও পূর্ববর্তী মহিলাদের মধ্যে নুপুরের প্রচলন ছিলো। হাদীসে আয়েশায় ﺭَﺿِﻰَ ﺍﻟﻠﻪُ ﺗَﻌَﺎﻟٰﻰ ﻋَﻨْﻬَﺎ যেই নুপুর ভেঙ্গে ফেলার বর্ণনা রয়েছে, তার ব্যাখ্যা করতে গিয়ে মুফতী সাহেব ﺭَﺣْﻤَﺔُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺗَﻌَﺎﻟٰﻰ ﻋَﻠَﻴْﻪِ বলেন: এমন ভাবে ভেঙ্গে দিবে যে, তার ভিতরের কংকর বের করে দিবে অথবা তার নুপুরকে আলাদা করে দিবে অথবা সেই নুপুরটা স্বয়ং ভেঙ্গে ফেলবে। মোটকথা হলো, তাতে যেন শব্দ না হয়। (মিরআতুল মানাজিহ, ৬ষ্ঠ খন্ড, ১৩৬ পৃষ্ঠা)
প্রশ্ন :- মহিলাদের জন্য কী শব্দ সৃষ্টিকারী অলংকার পরিধান করা একেবারে নিষিদ্ধ?
উত্তর:- না, এমন তো কখনও হতে পারে না। আমার আক্বা আ’লা হযরত, ইমামে আহলে সুন্নাত, মুজাদ্দিদে দ্বীন ও মিল্লাত মাওলানা শাহ্ ইমাম আহমদ রযা খাঁন ﺭَﺣْﻤَﺔُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺗَﻌَﺎﻟٰﻰ ﻋَﻠَﻴْﻪِ “ফতোওয়ায়ে রযবীয়া” ২২তম খন্ডের ১২৭ ও ১২৮ পৃষ্ঠায় উল্লেখ করেন: “বরং মহিলাদের সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও একেবারে অলংকার বিহীন থাকা মাকরূহ। কেননা, এতে পুরুষদের সাথে সাদৃশ্য পাওয়া যায়।” তিনি আরো বলেন: হাদীসে পাকে বর্ণিত রয়েছে: হুযুর ﺻَﻠَّﯽ ﺍﻟﻠّٰﮧُ ﺗَﻌَﺎﻟٰﯽ ﻋَﻠَﯿْﮧِ ﻭَﺍٰﻟِﮧٖ ﻭَﺳَﻠَّﻢ হযরত মাওলা আলী ﺭَﺿِﻰَ ﺍﻟﻠﻪُ ﺗَﻌَﺎﻟٰﻰ ﻋَﻨْﻪُ কে ইরশাদ করলেন: ﻳَﺎ ﻋَﻠِﻲُّ ﻣُﺮْﻧِﺴَﺎﺀَﻙَ ﻟَﺎﻳُﺼَﻠِّﻴْﻦَ ﻋُﻄُﻠًﺎ অর্থাৎ; হে আলী! নিজ পরিবারের মহিলাদেরকে হুকুম দাও যে, (তারা যেন) অলংকার বিহীন নামায আদায় না করে।” (আল মু’জামুল আওসাত লিত তাবারানী, ৪র্থ খন্ড, ২৬২ পৃষ্ঠা, হাদীস: ৫৯২৯)
উম্মুল মু’মিনীন হযরত আয়েশা সিদ্দীকা ﺭَﺿِﻰَ ﺍﻟﻠﻪُ ﺗَﻌَﺎﻟٰﻰ ﻋَﻨْﻬَﺎ মহিলাদের জন্য অলংকার বিহীন নামায পড়াকে মাকরূহ (অপছন্দনীয়) মনে করতেন আর বলতেন: “যদি কিছুও না পাও তবে একটি রশি গলায় বেধেঁ নাও।” (আস্সুনানুল কুবরা লিল বায়হাকী, ২য় খন্ড, ৩৩২ পৃষ্ঠা, হাদীস: ৩২৬৭)
আ’লা হযরত ﺭَﺣْﻤَﺔُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺗَﻌَﺎﻟٰﻰ ﻋَﻠَﻴْﻪِ শব্দ সৃষ্টিকারী অলংকার ব্যবহার করা সম্পর্কে বলেন: “শব্দ সৃষ্টিকারী অলংকার মহিলার জন্যসেই অবস্থায় পরিধান করা জায়েয, যখন তাকে না-মাহরাম যেমন; চাচাতো, খালাতো, মামাতো, ফুফাতো ভাই, ভাসুর, দেবর, বোনের স্বামীর সামনে আসতে না হয়। আর না তার অলংকারের শব্দ না-মাহরাম পর্যন্ত পৌঁছে।” আল্লাহ্ তাআলা ইরশাদ করেন:
ﻭَﻟَﺎ ﻳُﺒْﺪِﻳﻦَ ﺯِﻳﻨَﺘَﻬُﻦَّ ﺇِﻟَّﺎ ﻟِﺒُﻌُﻮﻟَﺘِﻬِﻦَّ
কানযুল ঈমান থেকে অনুবাদ: আর আপন সাজসজ্জাকে যেন প্রকাশ না করে, কিন্তু নিজেদের স্বামীর নিকট; (পারা: ১৮, সূরা: নূর, আয়াত: ৩১)
আল্লাহ্ তাআলা আরো ইরশাদ করেন:
ﻭَﻟَﺎ ﻳَﻀْﺮِﺑْﻦَ ﺑِﺄَﺭْﺟُﻠِﻬِﻦَّ ﻟِﻴُﻌْﻠَﻢَ ﻣَﺎ ﻳُﺨْﻔِﻴﻦَ ﻣِﻦ ﺯِﻳﻨَﺘِﻬِﻦَّ
কানযুল ঈমান থেকে অনুবাদ: আর যেন মাটির উপর সজোরে পদক্ষেপ না করে যাতে জানা যায় তাদের গোপন সাজসজ্জা। (পারা: ১৮, সূরা: নূর, আয়াত: ৩১)
নোট : এই আয়াতে করীমা যেমনিভাবে না-মাহরাম পর্যন্ত অলংকারের শব্দ পৌঁছাতে নিষেধ করছে, অনূরূপভাবে যখন শব্দ না পৌঁছে তখন তা পরিধান করা মহিলাদের জন্য জায়েয সাব্যস্ত করছে। কেননা, এই আয়াতে মোবারাকায় জোরে জোরে পা রাখতে বারণ করা হয়েছে, পরিধান করতে বারণ করা হয়নি। (ফতোওয়ায়ে রযবীয়া, ২২তম খন্ড, ১২৭-১২৮ পৃষ্ঠা, সংকলিত)
প্রশ্ন :- স্বামীর সন্তুষ্টির জন্য মহিলাদের অলংকার পরিধান করা কেমন?
উত্তর:- সাওয়াবের কাজ। আমার আক্বা আ’লা হযরত, ইমামে আহলে সুন্নাত, মুজাদ্দিদে দ্বীন ও মিল্লাত মাওলানা শাহ্ ইমাম আহমদ রযা খাঁন ﺭَﺣْﻤَﺔُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺗَﻌَﺎﻟٰﻰ ﻋَﻠَﻴْﻪِ বলেন: “স্বামীর জন্য মহিলাদের অলংকার পরিধান করা, সাজসজ্জা করা মহান প্রতিদানের মাধ্যম ও তার জন্য নফল নামায আদায় করা থেকেও উত্তম। কতিপয় নেক্কার বিবিগণ (এমনও ছিলেন) নিজে এবং তার স্বামী উভয়েই আউলিয়ায়ে কিরামের মধ্যে অন্তর্ভূক্ত ছিলেন। প্রতি রাতে ইশারের নামাযের পর পুরোপুরি নব বধুর মতো সেজে নিজের স্বামীর নিকট আসতেন। যদি তাকে নিজের দিকে আগ্রহী মনে হতো তবে স্বামীর নিকট উপস্থিত থাকতেন। নতুবা অলংকার খুলে জায়নামায বিছিয়ে নামাযে লিপ্ত হয়ে যেতেন। আর নব বধুকে সাজানো তো অনেক পুরোনো সুন্নাত এবং অনেক হাদীস শরীফ দ্বারা প্রমাণিত। বরং যুবতি মেয়েদেরকে ভাল পোশাক ও অলংকার দ্বারা সজ্জিত রাখা যেন তাদের বিয়ের প্রস্তাব আসে, এটাও সুন্নাত।” (ফতোওয়ায়ে রযবীয়া, ২২তম খন্ড, ১২৬ পৃষ্ঠা)
কিন্তু স্মরণ রাখবেন! সাজ-সজ্জা যেন ঘরের চার দেয়ালের মধ্যে এবং তাও শুধুমাত্র মাহরামদের সামনে হয়। যুবতী মেয়েদের সাজিয়ে পর-পুরুষের সামনে বেপর্দা অবস্থায় নিয়ে ঘুরে বেড়ানো হারাম এবং জাহান্নামে নিয়ে যাওয়ার মতো কাজ।
ইসলামী বোনেরা! শরয়ী পর্দা করাতে দৃঢ়তা পাওয়ার জন্য তবলীগে কোরআন ও সুন্নাতের বিশ্বব্যাপী অরাজনৈতিক সংগঠন দা’ওয়াতে ইসলামীর মাদানী পরিবেশের সাথে সর্বদা সম্পৃক্ত থাকুন। দা’ওয়াতে ইসলামীর মাদানী কাজও করতে থাকুন এবং দা’ওয়াতে ইসলামীর সুন্নাত প্রশিক্ষণের মাদানী কাফেলায় ইসলামী বোনেরা মুসাফির হওয়ার সৌভাগ্যও অর্জন করতে থাকুন।* যদি কেউ জিজ্ঞাসা করে, মাদানী কাফেলায় কি পাওয়া যায়? তবে আমি বলব: মাদানী কাফেলায় কি পাওয়া যায় না! এই মাদানী বাহারটি লক্ষ্য করুন এবং নবীর প্রেমে মুখরিত অন্তরের অনুধাবন মাদানী বাহারের পরিশেষে প্রদত্ত কবিতার লাইনে ﺳُﺒْﺤٰﻦَ ﺍﻟﻠﻪِ ﻋَﺰَّﻭَﺟَﻞ বলে সত্যায়নের মোহর লাগিয়ে নিন। হায়দারাবাদ সিন্ধু প্রদেশের একজন ইসলামী বোনের বর্ণনা কিছুটা এরকম: আমাদের এলাকার দা’ওয়াতে ইসলামীর ইসলামী বোনদের একটি মাদানী কাফেলা আগমন করলো। দ্বিতীয় দিন নেকীর দাওয়াতের মাদানী দাওরার পর অনুষ্ঠিত সুন্নাতে ভরা বয়ানে আমারও অংশগ্রহণ করার সৌভাগ্য অর্জিত হলো। বয়ান শেষে যখন সালাত ও সালামের এই কবিতার লাইনগুলো পড়া হলো;
“হে শাহানশাহে মদীনা আস্সালাতু ওয়াস্সালাম” তখন আমি জাগ্রত চোখে দেখলাম যে, রহমতে আলম ﺻَﻠَّﯽ ﺍﻟﻠّٰﮧُ ﺗَﻌَﺎﻟٰﯽ ﻋَﻠَﯿْﮧِ ﻭَﺍٰﻟِﮧٖ ﻭَﺳَﻠَّﻢ ফুলের মালা পরিধান করে সেখানে আগমণ করলেন। আমার আক্বা, উভয় জাহানের দাতা ﺻَﻠَّﯽ ﺍﻟﻠّٰﮧُ ﺗَﻌَﺎﻟٰﯽ ﻋَﻠَﯿْﮧِ ﻭَﺍٰﻟِﮧٖ ﻭَﺳَﻠَّﻢ কে দেখে আমি নিজেকে সামলাতে পারলাম না, আমার চোখ দিয়ে অশ্রুধারা প্রবাহিত হতে লাগলো। অতঃপর সেই ঈমান তাজাকারী দৃশ্য আমার চোখের সামনে থেকে অদৃশ্য হয়ে গেলো, আর তখনই ইজতিমাও সমাপ্ত হয়ে গেলো।
————-
*ইসলামী বোনদের মাদানী কাফেলা প্রত্যেক মুসাফির ইসলামী বোনের সাথে তার সন্তানের বাবা অথবা নির্ভরযোগ্য মুহরিম পুরুষ থাকা আবশ্যক। এ ছাড়া যিম্মাদারদের জন্য নিজের ইচ্ছায় মাদানী কাফেলায় সফর করানোর অনুমতি নেই। যেমন- ইসলামী বোনদের মাদানী কাফেলার জন্য ইসলামী বোনদের মজলিশ বরায়ে মুলক (দেশ পর্যায়ের ইসলামী বোনদের যিম্মাদারের) অনুমতি আবশ্যক।
————-
মিল গেয়ে ওহ তো ফির কমি কেয়া হে,
দোনো আলম কো পা লিয়া হামনে।
ﺻَﻠُّﻮﺍ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟﺤَﺒِﻴﺐ ! ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﺗَﻌَﺎﻟَﻰ ﻋَﻠﻰ ﻣُﺤَﻤَّﺪ
——–
মাসাইল পর্দা সম্পর্কিত প্রশ্নোত্তর: সতর এর মাসআলা (দ্বিতীয় পর্ব)
প্রশ্ন :- সতরে আওরাত (সতর ঢাকা) কাকে বলে?
উত্তর:- সতরের শাব্দিক অর্থ হচ্ছে; গোপন করা বা ঢেকে রাখা। যে অঙ্গ সমূহকে ঢেকে রাখা আবশ্যক, সেগুলোকে “আওরাত” বলা হয়। আর সমষ্টিগত ভাবে ঢেকে রাখার এই কর্মকে “সতরে আওরাত” (অর্থাৎ গোপনীয় অঙ্গ সমূহকে ঢেকে রাখা) বলা হয়।আমাদের সমাজে এই বিশেষ অঙ্গ সমূহকে সতর বলা হয়। যেগুলোকে ঢেকে রাখা আবশ্যক।
দা’ওয়াতে ইসলামীর প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান মাকতাবাতুল মদীনা কর্তৃক প্রকাশিত ১২৫০ পৃষ্ঠা সম্বলিত কিতাব “বাহারে শরীয়াত”এর ১ম খন্ডের ৪৭৯ পৃষ্ঠায় সদরুশ শরীয়া, বদরুত তরিকা মুফতী মুহাম্মদ আমজাদ আলী আযমী ﺭَﺣْﻤَﺔُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺗَﻌَﺎﻟٰﻰ ﻋَﻠَﻴْﻪِ বলেন: “সতরে আওরাত (অর্থাৎ সতর গোপন করা) প্রতিটি অবস্থায় ওয়াজিব। চাই সে নামাযে থাকুক বা না থাকুক। একা হোক বা সবার সামনে থাকুক। কোন সঠিক কারণ ব্যতিত একাকীত্বেও সতর খোলা বৈধ নয় এবং লোকদের সামনে হোক অথবা নামাযের মধ্যে (প্রতিটি অবস্থায়) সতর ঢেকে রাখা সর্বসম্মতিক্রমে ফরয।” (বাহারে শরীয়াত, ১ম অংশ, ৩য় অংশ, ৪৭৯ পৃষ্ঠা)
ﺻَﻠُّﻮﺍ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟﺤَﺒِﻴﺐ ! ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﺗَﻌَﺎﻟَﻰ ﻋَﻠﻰ ﻣُﺤَﻤَّﺪ
(১) নামাযের মধ্যে নারী ও পুরুষের জন্য সতরের বিধান।
(২) নামাযের বাইরে সতরের বিধান। অর্থাৎ কে কার শরীরের কতটুকু অংশ দেখতে পারবে। প্রথম প্রকারের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা প্রশ্নোত্তর আকারে লক্ষ্য করুন।
প্রশ্ন :- পুরুষের শরীরের কোন অংশটি সতর এবং নামাযে তার জন্য সতরের বিধান কী?
উত্তর:- সদরুশ শরীয়া, বদরুত তরিকা হযরত আল্লামা মাওলানা মুফতী মুহাম্মদ আমজাদ আলী আযমী ﺭَﺣْﻤَﺔُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺗَﻌَﺎﻟٰﻰ ﻋَﻠَﻴْﻪِ বলেন: “পুরুষের জন্য নাভীর নিচ থেকে হাঁটুর নিচ পর্যন্ত সতরে আওরাত অর্থাৎ ততটুকু অংশ ঢেকে রাখা ফরয। নাভী সতরে অন্তর্ভূক্ত নয় কিন্তু হাঁটু সতরে অন্তর্ভূক্ত। বর্তমান যুগে অধিকাংশ লোক এমন রয়েছে যে, লুঙ্গি অথবা পায়জামা এভাবে পরিধান করে যে, নাভীর নিচের কিছু অংশ খোলা থাকে আর যদি জামা বা পাঞ্জাবী ইত্যাদি দ্বারা (সেই অংশটি) এভাবে ঢেকে নেয় যে, চামড়ার রং প্রকাশিত না হয়, তবে তা ঠিক আছে। আর এরূপ না হলে হারাম, আর নামাযের মধ্যে একচতুর্থাংশ পরিমাণ খোলা থাকলে নামাযই হবেনা এবং অনেক মূর্খ এমনও রয়েছে যে, লোকদের সামনে হাঁটু বরং রান পর্যন্তও খোলা রাখে এটাও হারাম এবং যদি এরূপ অভ্যাস হয়ে যায়, তবে ফাসিক (প্রকাশ্যে গুনাহকারী) বলে গন্য হবে।” (বাহারে শরীয়াত, ১ম অংশ, ৩য় অংশ, ৪৮১ পৃষ্ঠা)
ইহরাম পরিধানকারী কিছু হাজীও এরূপ অসাবধানতা অবলম্বন করে আর তাদের সতরের কিছু অংশ যেমন; নাভীর নিচের কিছু অংশ এবং হাঁটু বরং রানের কিছু অংশ সবার সামনে প্রকাশ পেয়ে থাকে। তাদের তাওবা করা এবং ভবিষ্যতে সাবধানতা অবলম্বন করা আবশ্যক। এছাড়া জাঙ্গিয়া (KNICKERS) পরিধান করে পুরো হাঁটু এবং রানের কিছু অংশ খোলা রেখে ঘুরে বেড়ানো ব্যক্তিদেরও শিক্ষা গ্রহণ করা উচিত, এবং তা থেকে তাওবা-ও করা উচিত। না নিজে গুনাহগার হবে, না অন্যকে কুদৃষ্টির দাওয়াত দিবে। যদি কেউ জাঙ্গিয়া পরিধান করে থাকে তবে অপর মুসলমানের জন্য আবশ্যক যে, তার খোলা হাঁটু এবং রান দেখা থেকে যেন নিজেকে বিরত রাখে।
প্রশ্ন :- মহিলাদের সতরের ব্যাপারেও অবগত করুন আর এটাও বলে দিন যে, তাদের জন্য নামাযের মধ্যে কি কি ঢেকে রাখা আবশ্যক?
উত্তর:- মাকতাবাতুল মদীনা কর্তৃক প্রকাশিত “বাহারে শরীয়াত” ১ম খন্ডের ৩য় অংশের ৪৮১ পৃষ্ঠায় বর্ণিত রয়েছে: “স্বাধীন মহিলা (দাস-দাসীদের যুগ শেষ হয়ে গেছে, বর্তমানে সকল মহিলাই স্বাধীন) ও দূর্লভ হিজড়ার (অর্থাৎ যাদের মধ্যে নারী ও পুরুষ উভয়ের নিদর্শন পাওয়া যায় এবং এটা প্রমাণিত হয় না যে, পুরুষ নাকি মহিলা) জন্য সারা শরীরই লুকোনোর স্থান। মুখমন্ডল এবং হাতের তালু ও পায়ের তালু ব্যতিত, মাথার ঝুলন্ত চুল ও গর্দান এবং কব্জিও সতর (অর্থাৎ লুকোনোর বস্তু) এবং এগুলোকে ঢেকে রাখাও ফরয। কতিপয় ওলামায়ে কিরাম হাতের পিষ্টদেশ এবং পায়ের তালুকে সতর (অর্থাৎ লুকোনোর বস্তু) এর মধ্যে গন্য করেননি। যদি মহিলারা এতই পাতলা ওড়না পরিধান করে, যা দ্বারা চুলের রং প্রকাশ পায়, এমন ওড়না পরিধান করে নামায আদায় করলে নামায হবে না। যতক্ষণ পর্যন্ত তার উপর এমন কোন বস্তু না থাকে যা দ্বারা চুল ইত্যাদির রং ঢেকে যায়।” (“বাহারে শরীয়াত” ১ম খন্ডের ৩য় অংশের ৪৮৪ পৃষ্ঠা)
প্রশ্ন :- যদি নামাযের মধ্যে সামান্য সতর খোলা থাকে তবে কি নামায হয়ে যাবে?
উত্তর:- সদরুশ শরীয়া, বদরুত তরিকা, হযরত আল্লামা মাওলানা মুফতী মুহাম্মদ আমজাদ আলী আযমী ﺭَﺣْﻤَﺔُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺗَﻌَﺎﻟٰﻰ ﻋَﻠَﻴْﻪِ বলেন: “প্রকাশ্য যে, যে অঙ্গগুলোর সতর (ঢেকে রাখা) ফরয। যদি কোন অঙ্গের এক-চতুর্থাংশ হতে কম খুলে যায়, তবে নামায হয়ে যাবে। আর যদি এক-চতুর্থাংশ অঙ্গ খুলে যায় এবং তৎক্ষণাৎ ঢেকে নেয়, তবুও নামায হয়ে যাবে। আর যদি এক রুকন পরিমাণ (অর্থাৎ তিনবার ﺳُﺒْﺤٰﻦَ ﺍﻟﻠﻪِ বলার সম পরিমাণ সময়) খোলা থাকে অথবা ইচ্ছাকৃত ভাবে খোলে রাখে, যদিওবা তৎক্ষণাৎ ঢেকে নেয়ও, তবে নামায ভঙ্গ হয়ে যাবে। যদি কয়েকটি অঙ্গের অল্প অল্প খোলা থাকে যে, প্রত্যেকটি অনাবৃত অংশ সেই অঙ্গের এক-চতুর্থাংশের কম হয় অথচ সবগুলোর সমষ্টি সেই অনাবৃত অঙ্গ সমূহের মধ্যে যা সবচেয়ে ছোট, তার চতুর্থাংশের সমান হয়, তবে নামায হবে না। যেমন; মহিলাদের কানের এক-নবমাংশ এবং পায়ের গোড়ালীর এক-নবমাংশ অনাবৃত (খোলা) থাকে, তবে সমষ্টিগত ভাবে উভয় অঙ্গ (যা অনাবৃত রয়েছে) কানের চতুর্থাংশের সমপরিমাণ হয়। তাই নামায ভঙ্গ হয়ে যাবে।” (বাহারে শরীয়াত, ১ম অংশ, ৪৮১-৪৮২ পৃষ্ঠা)
ইসলামী বোনেরা! দা’ওয়াতে ইসলামীর বরকতের কথা কী বলব! এই সুন্নাতে ভরা মাদানী পরিবেশ লক্ষ লক্ষ বেনামাযীকে নামাযী বানিয়ে দিয়েছে। এমনই একটি মাদানী বাহার লক্ষ্য করুন। পাঞ্জাব এর এক ইসলামী বোনের বর্ণনার সারাংশ হলো: আমার ঘরের পরিবেশ তো এমনিতে ইসলামী ছিলো। আমার আব্বাজান মসজিদের মুয়াজ্জিন আর বড় বোন ও বড় ভাই দা’ওয়াতে ইসলামীর মাদানী পরিবেশের সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। কিন্তু আমার মনমানসিকতা দুনিয়াবী স্বাদে মত্ত ছিলো এবং নফস গুনাহের কাজে আসক্ত ছিলো। নামায কাযা করা আমার অভ্যাস ছিলো। একদিন কিছু ইসলামী বোন আমাদের ঘরে দা’ওয়াতে ইসলামীর সুন্নাতে ভরা ইজতিমার দাওয়াত দেয়ার জন্য আগমন করলেন। তাদের ভালবাসাপূর্ণ আচরণের ধরণ আমার অন্তরকে মোমের মতো গলিয়ে দিলো আর আমি ইজতিমায় অংশগ্রহণ করার নিয়্যত করে নিলাম। যখন সেখানে গেলাম তখন একজন দা’ওয়াতে ইসলামীর মুবাল্লিগাকে “বেনামাযীর শাস্তি” এই বিষয় সম্পর্কিত হৃদয় কাঁপানো বয়ান করলেন। যা শুনে আমি কেঁপে উঠলাম এবং সত্য অন্তরে নিয়্যত করে নিলাম যে, ﺍِﻥْ ﺷَﺎﺀَ ﺍﻟﻠﻪ ﻋَﺰَّﻭَﺟَﻞّ আজকের পর থেকে আমার আর কোন নামায কাযা হবে না। অতঃপর যখন রবিউন নূর শরীফের বসন্তের বাহার আসলো তখন আমি ইসলামী বোনদের ইজতিমায়ে মিলাদে অংশগ্রহণ করলাম সেখানে একজন ইসলামী বোন “টিভির ধ্বংসলীলা”* সম্পর্কে বয়ান করলেন। সেই বয়ান শুনে আমার শরীরের লোম খাঁড়া হয়ে গেলো এবং আমার চোখ থেকে অশ্রু প্রবাহিত হতে লাগল। সেই দিন থেকে আজ পর্যন্ত আমি দা’ওয়াতে ইসলামীর মাদানী পরিবেশের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে নিজের সংশোধনের চেষ্টায় রত আছি।
আপ খোদ তাশরীফ লায়ে আপনে বেকস কি তরফ,
আহ জব নিকলী তরপ কর বেকসু মজবুর কী।
আপ কে কদমু মে গিরকর মওত কি ইয়া মুস্তফা!
আরযু কব আয়েগী বারি বেকসু মজবুর কী।
————-
*আমীরে আহলে সুন্নাত ﺩَﺍﻣَﺖْ ﺑَﺮَﻛَﺎﺗُﻬُﻢُ ﺍﻟﻌَﺎﻟِﻴَﻪ এর আওয়াজে ওডিও ক্যাসেট এবং ভি.সি.ডি আর এ বয়ানের রিসালা মাকতাবাতুল মদীনা থেকে হাদিয়া সহকারে সংগ্রহ করুন।
———-
ইসলামী বোনেরা! ﺍَﻟْﺤَﻤْﺪُ ﻟِﻠّٰﻪِ ﻋَﺰَّﻭَﺟَﻞّ ঘরে ঘরে গিয়ে নেকীর দাওয়াত দেয়ার সত্যিই অনেক বরকত রয়েছে। হতে পারে আপনার সামান্যতম প্রচেষ্টা কারো ভাগ্য পরিবর্তন করে দিবে এবং সে আখিরাতের মঙ্গলজনক কাজে লিপ্ত হয়ে যায় এবং আপনার তরীও পার হয়ে যাবে। একটু ভাবুন তো! আপনার নেকীর দাওয়াত শুনে যে ইসলামী বোন মাদানী পরিবেশের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে যাবে তার কতটুকু শান্তি অনুভব হবে এবং তার অন্তর কতটুকু খুশি হবে।
ﺳُﺒْﺤٰﻦَ ﺍﻟﻠﻪِ ﻋَﺰَّﻭَﺟَﻞ মুসলমানের অন্তর খুশি করা অনেক বড় সাওয়াবের কাজ। যেমনিভাবে- তাজেদারে রিসালাত, শাহানশাহে নবূয়ত, মাহবুবে রব্বুল ইয্যত, হুযুর ﺻَﻠَّﯽ ﺍﻟﻠّٰﮧُ ﺗَﻌَﺎﻟٰﯽ ﻋَﻠَﯿْﮧِ ﻭَﺍٰﻟِﮧٖ ﻭَﺳَﻠَّﻢ ইরশাদ করেন: “যে ব্যক্তি কোন মু’মিন বান্দার অন্তর খুশি করে, আল্লাহ্ তাআলা সেই খুশি দ্বারা একজন ফিরিশতা সৃষ্টি করেন, সেই ফিরিশতা আল্লাহ্ তাআলার ইবাদত এবং তাওহীদ বর্ণনা করে থাকে। যখন সেই বান্দা কবরে চলে যাবে তখন সেই ফিরিশতা তার কাছে এসে জিজ্ঞাসা করবে: তুমি কী আমাকে চিনতে পেরেছো? তখন সে বলবে: তুমি কে? উত্তরে ফিরিশতা বলবে: তুমি যে অমুক মুসলমানের অন্তর খুশি করেছিলে আমি সেই খুশির আকৃতি। এখন আমি তোমার একাকীত্বের সাথী হবো এবং তোমাকে (মুনকার-নকীরের) প্রশ্নের উত্তর প্রদানে অটল রাখবো এবং কিয়ামতের দিন তোমার নিকট আসবো এবং তোমার জন্য আল্লাহ্ তাআলার দরবারে সুপারিশ করবো আর তোমাকে জান্নাতে তোমার ঠিকানা দেখিয়ে দিবো।” (আত্তারগীব ওয়াত্তারহীব, ৩য় খন্ড, ২৬৬ পৃষ্ঠা, হাদীস: ২৩)
তাজ ও তখত হুকুমত মত দে, কছরতে মালও দৌলত মাত দে।
আপনি খুশি কা দে দে মুছদাহ্, ইয়া আল্লাহ্! মেরী ঝুলি ভর দে।
ﺻَﻠُّﻮﺍ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟﺤَﺒِﻴﺐ ! ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﺗَﻌَﺎﻟَﻰ ﻋَﻠﻰ ﻣُﺤَﻤَّﺪ
এখন সতরের দ্বিতীয় প্রকার (অর্থাৎ নামাযের বাইরে সতর) এর বিস্তারিত বর্ণনা প্রশ্নোত্তর উপস্থাপন করা হলো। এই বিধানের ৪টি প্রকারভেদ রয়েছে:
(১) পুরুষের জন্য পুরুষের সতর,
(২) মহিলাদের জন্য মহিলাদের সতর,
(৩) মহিলাদের জন্য পর-পুরুষের সতর,
(৪) পুরুষের জন্য মহিলার সতর।
প্রশ্ন :- পুরুষের সতর কতটুকু থেকে কতটুকু?
উত্তর:- পুরুষের সতর নাভীর ঠিক নিচ থেকে শুরু করে হাঁটু সহ নিচ পর্যন্ত। নাভী সতরের অন্তর্ভূক্ত নয়। সদরুশ শরীয়া, বদরুত তরিকা, হযরত আল্লামা মাওলানা মুফতী মুহাম্মদ আমজাদ আলী আযমী ﺭَﺣْﻤَﺔُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺗَﻌَﺎﻟٰﻰ ﻋَﻠَﻴْﻪِ বলেন: “এক পুরুষ অপর পুরুষের প্রত্যেক সেই অঙ্গসমূহ দেখতে পারবে, যে অঙ্গগুলো ঢেকে রাখা ফরয নয় আর নাভীর ঠিক নিচ থেকে হাঁটুর নিচ পর্যন্ত দেখতে পারবে না। কেননা, এ অঙ্গ সমূহ ঢেকে রাখা ফরয। যেই অঙ্গগুলোকে ঢেকে রাখা আবশ্যক তাকে “আওরাত” বলে। যদি কোন পুরুষের হাঁটু অনাবৃত দেখে, তবে তাকে বারণ করবে আর যদি রান অনাবৃত (খোলা) দেখে তবে কঠোরভাবে বারণ করবে। আর যদি লজ্জাস্থান অনাবৃত দেখে তবে শাস্তি প্রদান করা হবে।” (বাহারে শরীয়াত, ১৬তম অংশ, ৮৫ পৃষ্ঠা)
স্মরণ রাখবেন! শাস্তি দেয়া সাধারণ মানুষের কাজ নয় বরং বিচারকের কাজ। প্রয়োজন বশতঃ বাবা সন্তানকে, শিক্ষক ছাত্রকে, পীর মুরিদকে কঠোরতা প্রদর্শন করতে পারবে এবং শাস্তিও দিতে পারবে। যেমনিভাবে “বাহারে শরীয়াত” ১ম খন্ডের ৪৮২ নং পৃষ্ঠায় বর্ণিত রয়েছে: “যদি নাপাক অঙ্গ (অর্থাৎ সামনেও পিছনের বিশেষ অংশ) অনাবৃত থাকে, তবে যে প্রহার করার ক্ষমতা রাখে, যেমন; বাবা, বিচারক সে প্রহার করবে।
প্রশ্ন :- দুধ পানকারী বাচ্চাদেরও কি হাঁটু এবং রান ইত্যাদি ঢেকে রাখা আবশ্যক?
উত্তর:- জ্বী, না। দুধ পানকারী বাচ্চা যদি সম্পূর্ণ ভাবে উলঙ্গ থাকে তবুও তার দিকে দৃষ্টি দেয়াতে কোন সমস্যা নেই। দা’ওয়াতে ইসলামীর প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান মাকতাবাতুল মদীনা কর্তৃক প্রকাশিত ৩১২ পৃষ্ঠা সম্বলিত কিতাব “বাহারে শরীয়াত” ১৬তম অংশের ৮৫নং পৃষ্ঠায় সদরুশ শরীয়া, বদরুত তরিকা, হযরত আল্লামা মাওলানা মুফতী মুহাম্মদ আমজাদ আলী আযমী ﺭَﺣْﻤَﺔُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺗَﻌَﺎﻟٰﻰ ﻋَﻠَﻴْﻪِ বলেন: “অতি ছোট বাচ্চার জন্য ‘আওরাত’ (সতর) নেই অর্থাৎ তার শরীরের কোন অংশকেই ঢেকে রাখা ফরয নয়। তারপরও যখন সামান্য বড় হয়ে যায় তখন তার সামনে ও পিছনের জায়গা ঢেকে রাখা আবশ্যক। অতঃপর যখন আরও বড় হয়ে যাবে অর্থাৎ দশ বছর থেকে বড় হয়ে যাবে তখন তার জন্য বালিগের ন্যায় হুকুম হবে।” (বাহারে শরীয়াত, ১৬তম অংশ, ৮৫ পৃষ্ঠা)
প্রশ্ন :- অতি ছোট বাচ্চার রান স্পর্শ করা কেমন?
উত্তর:- স্পর্শ করতে পারবে। হ্যাঁ, যদি দেখাতে বা স্পর্শ করাতে যৌন উত্তেজনা সৃষ্টি হয় তবে এক দিনের বাচ্চাকেও দেখতে ও স্পর্শ করতে পারবেনা। আজকাল খুবই নাজুক অবস্থা। আল্লাহর পানাহ! দুই অথবা তিন বছরের ছোট মেয়েদের সাথেও কুকর্ম করার খবর শুনা যায়।
প্রশ্ন :- সুশ্রী বালককে দেখা জায়েয কি না?
উত্তর:- সুশ্রী বালকদের দেখা জায়েযও আবার নাজায়েযও। এর বিস্তারিত বর্ণনা করতে গিয়ে সদরুশ শরীয়া, বদরুত তরিকা, হযরত আল্লামা মাওলানা মুফতী মুহাম্মদ আমজাদ আলী আযমী ﺭَﺣْﻤَﺔُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺗَﻌَﺎﻟٰﻰ ﻋَﻠَﻴْﻪِ বলেন: “ছেলে যখন ‘মুরাহিক’ (অর্থাৎ দশ বছরের বয়সের পর বালিগের নিকটবর্তী) হয়ে যায় এবং সে যদি অতি সুন্দর আকৃতির না হয় তবে পুরুষের দিকে দৃষ্টি দেয়ার যে হুকুম তার প্রতি দৃষ্টি দেয়ারও সেই একই হুকুম। আর যদি খুবই সুদর্শণ হয় তবে মহিলার দিকে দৃষ্টি দেয়ার যে হুকুম তার দিকে দৃষ্টি দেয়ারও একই হুকুম। অর্থাৎ যৌন উত্তেজনা সহকারে তার দিকে দৃষ্টি দেয়া হারাম। আর যদি যৌন উত্তেজনা না আসে তবে তার দিকে দৃষ্টি দেয়া যাবে, ও তার সাথে একাকী অবস্থানও করা জায়েয। যৌন উত্তেজনা না আসা দ্বারা উদ্দেশ্য হলো, তার এ বিশ্বাস থাকে যে, দৃষ্টি দেয়ার দ্বারা যৌন উত্তেজনা আসবে না। আর যদি এ আশংকা থাকে, তবে কখনও দৃষ্টি দিবে না। চুম্বন করার ইচ্ছাও যৌন উত্তেজনার মধ্যে অন্তর্ভূক্ত।” (বাহারে শরীয়াত, ১৬তম অংশ, ৮৫ পৃষ্ঠা)
(বিস্তারিত জানার জন্য মাকতাবাতুল মদীনা কর্তৃক প্রকাশিত রিসালা “ লুত সম্প্রদায়ের ধ্বংসলীলা ” অধ্যয়ন করুন)
প্রশ্ন :- মহিলারা কি মহিলাদের শরীরের প্রতিটি অঙ্গ দেখতে পারবে?
উত্তর:- জ্বী, না। মহিলাদের জন্য মহিলার নাভী থেকে হাঁটু পর্যন্ত দেখার অনুমতি নেই। যেমনিভাবে সদরুশ শরীয়া, বদরুত তরিকা হযরত আল্লামা মাওলানা মুফতী মুহাম্মদ আমজাদ আলী আযমী ﺭَﺣْﻤَﺔُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺗَﻌَﺎﻟٰﻰ ﻋَﻠَﻴْﻪِ বলেন: মহিলাদের জন্য মহিলাদেরকে দেখার সেই হুকুম, যা পুরুষের জন্য পুরুষের দিকে দেখার হুকুম। অর্থাৎ নাভীর নিচ থেকে হাঁটু পর্যন্ত দেখতে পারবেনা। অন্যান্য অঙ্গ সমূহ দেখতে পারবে। কিন্তু শর্ত হচ্ছে, যৌন উত্তেজনার আশংকা যেন না হয়। নেক্কার মহিলাদের উচিত যে, নিজেকে যেন পাপীষ্টা (অর্থাৎ যেনাকারীনী ও অশ্লীল) নারীদের দৃষ্টিপাত থেকে বাঁচিয়ে রাখে। অর্থাৎ তার সামনে ওড়না ইত্যাদি যেন না খুলে। কেননা, সে তাকে দেখে পুরুষদের সামনে তার আকৃতি ও অবস্থা সম্পর্কে বর্ণনা করবে। (বাহারে শরীয়াত, ১৬তম অংশ, ৮৬ পৃষ্ঠা)
প্রশ্ন :- মহিলারা কি পর পুরুষকে দেখতে পারবে?
উত্তর:- না দেখাতেই মঙ্গল রয়েছে। অবশ্য দেখার বৈধ অবস্থাও রয়েছে। কিন্তু দেখার পূর্বে নিজের অন্তরের অবস্থার প্রতি খুব ভালভাবে ভেবে নিন। কেননা, এই দেখা যেন গুনাহের অতল গহবরে নিক্ষেপ না করে। ফোকাহায়ে কিরামগণ ﺭَﺣْﻤَﺔُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺗَﻌَﺎﻟٰﻰ ﻋَﻠَﻴْﻬِﻢْ বৈধ অবস্থাদি বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন: “মহিলাদের জন্য পর-পুরুষের দিকে দেখার সেই হুকুম, যা পুরুষ পুরুষের দিকে দেখার হুকুম আর এটা তখনই হবে যখন মহিলার দৃঢ় বিশ্বাস থাকে যে, তার দিকে দেখার দ্বারা যৌন উত্তেজনা সৃষ্টি হবে না। আর যদি এর আশংকা থাকে তবে কখনও দৃষ্টি দেবেন না।” (বাহারে শরীয়াত, ১৬তম অংশ, ৮৬ পৃষ্ঠা। আলমগিরী, ৫ম খন্ড, ৩২৭ পৃষ্ঠা)
প্রশ্ন :- এমন দেশ যেখানে কাফিরদের আধিক্যতা রয়েছে, সেখানে কাফির ধাত্রী দ্বারা প্রসব করাতে পারবে কিনা?
উত্তর:- করাতে পারবে না। যে মুসলমান এমন দেশে বসবাস করে তার পূর্ব থেকেই এমন হাসপাতাল খুঁজে রাখা উচিত, যেখানে মহিলা ডাক্তার, সেবিকা এবং মুসলমান ধাত্রী পাওয়া যায়। যদি বিশেষ প্রয়োজন হয় এবং মুসলমান ধাত্রীও পাওয়া সম্ভব না হয় এবং এছাড়া অন্য কোন উপায়ও না থাকে তবে অপারগ অবস্থায় কাফির ধাত্রী দ্বারা এ কাজ করিয়ে নিবে। সদরুশ শরীয়া, বদরুত তরিকা হযরত আল্লামা মাওলানা মুফতী মুহাম্মদ আমজাদ আলী আযমী ﺭَﺣْﻤَﺔُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺗَﻌَﺎﻟٰﻰ ﻋَﻠَﻴْﻪ বলেন: “মুসলমান নারীদের জন্য এটা বৈধ নয় যে, সে কাফির নারীদের সামনে সতর খুলবে (মুসলমান নারীদের জন্য কাফির নারীদের সাথে সেই রকম পর্দার হুকুম রয়েছে, যেই রকম পর্দার হুকুম পর-পুরুষের সাথে রয়েছে, কাফির নারীদের সামনে মুসলমান নারীদের শরীরের সেই সমস্ত অঙ্গ সতর যা একজন পর-পুরুষের জন্য সতর) যে সমস্ত ঘরে কাফির নারীরা আসা-যাওয়া করে এবং ঘরের মহিলাগণ তাদের সামনে সেভাবে সতরের অঙ্গ সমূহ খুলে রাখে, যেভাবে মুসলমান নারীদের সামনে থাকে। তাদের এরূপ করা থেকে বিরত থাকা আবশ্যক। অধিকাংশ স্থানে ধাত্রীরা কাফির হয়ে থাকে এবং তারা বাচ্চা প্রসব করার কাজ সম্পন্ন করে থাকে। যদি মুসলমান ধাত্রী পাওয়া যায়, তবে কাফির ধাত্রী দ্বারা কখনও এ কাজ করাবেন না। কেননা, কাফিরদের সামনে সেই অঙ্গগুলো খোলার অনুমতি নেই।” (বাহারে শরীয়াত, ১৬তম অংশ, ৮৬ পৃষ্ঠা। আলমগিরী, ৫ম খন্ড, ৩২৭ পৃষ্ঠা)
বর্তমান যুগে এর তিনটি অবস্থা
(ক) পুরুষের জন্য তার স্ত্রীকে দেখা,
(খ) পুরুষের জন্য তার মাহারিমকে দেখা,
(গ) পুরুষের জন্য পর নারীকে দেখা।
প্রশ্ন :- এমন কোন বিশেষ অঙ্গ কি রয়েছে যার দিকে স্বামী-স্ত্রীর দৃষ্টিপাত করা নিষিদ্ধ?
উত্তর:- না। শরীরের এমন কোন বিশেষ অঙ্গ নেই। সদরুশ শরীয়া, বদরুত তরিকা হযরত আল্লামা মাওলানা মুফতী মুহাম্মদ আমজাদ আলী আযমী ﺭَﺣْﻤَﺔُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺗَﻌَﺎﻟٰﻰ ﻋَﻠَﻴْﻪِ বলেন: “(স্বামী তার) স্ত্রীর পায়ের গোড়ালি থেকে চুলের অগ্রভাগ পর্যন্ত প্রতিটি অঙ্গের দিকে দৃষ্টিপাত করতে পারবে। উত্তেজনা হোক বা না হোক উভয় অবস্থায় দৃষ্টিপাত করতে পারবে। এমনিভাবে এ দু’প্রকারের মহিলাগণ (অর্থাৎ স্ত্রী এবং দাসী। তবে এখন দাসীর প্রচলন নেই) তাদের পুরুষের অঙ্গ সমূহের দিকে দৃষ্টিপাত করতে পারবে। তবে উত্তম এটাই যে ﻋﻮﺭﺕ (উভয়েরই একে অপরের) বিশেষ স্থানে যেন দৃষ্টিপাত না করে। কেননা, এর দ্বারা স্মরণশক্তি হ্রাস পায় এবং দৃষ্টিতে দূর্বলতা সৃষ্টি হয়।” (বাহারে শরীয়াত, ১৬তম অংশ, ৮৬ পৃষ্ঠা, ৮৭ পৃষ্ঠা)
প্রশ্ন :- পুরুষ তার মাহারিম, যেমন; মা, বোনের কোন কোন অঙ্গের প্রতি দৃষ্টিপাত করতে পারবে?
উত্তর:- মাহরামের শরীরের কিছু অঙ্গের প্রতি দৃষ্টিপাত করতে পারবে এবং কিছু অঙ্গের প্রতি দৃষ্টিপাত করতে পারবেনা। এর বিস্তারিত বর্ণনা করতে গিয়ে সদরুশ শরীয়া, বদরুত তরিকা হযরত আল্লামা মাওলানা মুফতী মুহাম্মদ আমজাদ আলী আযমী ﺭَﺣْﻤَﺔُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺗَﻌَﺎﻟٰﻰ ﻋَﻠَﻴْﻪِ বলেন: “যে সকল মহিলা তার মাহরামের অন্তর্ভূক্ত, তাদের মাথা, বুক, পায়ের গোড়ালী, উভয় বাহু, কব্জি, ঘাড় এবং পায়ের দিকে দৃষ্টিপাত করতে পারবে। যতক্ষণ পর্যন্ত তাদের দু’জনের মধ্যে কারো যৌন উত্তেজনা (কামভাব) সৃষ্টি না হয়। মাহরামের পিঠ, পেট এবং রানের দিকে দৃষ্টিপাত করা নাজায়িয। এমনিভাবে পার্শ্ব ও হাঁটুর দিকেও দৃষ্টিপাত করা নাজায়িয। (এই হুকুম ঐ সময় পর্যন্ত যতক্ষণ এই অঙ্গসমূহে কোন কাপড় থাকবে না, আর যদি এই অঙ্গগুলো কোন মোটা কাপড় দ্বারা আবৃত থাকে তবে দেখাতে কোন সমস্যা নেই।) কান, ঘাঁড়, কাঁধ এবং চেহারার দিকে দৃষ্টিপাত করা জায়িয। মাহরাম দ্বারা ঐ মহিলাদের বুঝানো হয়, যাদের সাথে সব সময়ের জন্য বিবাহ হারাম।
আর এই হারাম হওয়াটা বংশগত কারণেই হোক বা অন্য কোন কারণে হোক। যেমন; দুধের সম্পর্ক বা শশুড়ালয়ের সম্পর্ক। যদি যেনা করার কারণে সম্পর্ক হারাম হয়, যেমন; (যেনাকারীনীর) মা, নানি, মায়ের নানি এভাবে উপরে যতটুকু যায় এবং (যেনাকারীনীর) কন্যা, নাতনী, কন্যার নাতনী এভাবে যত নিচে যায়, এসবের দিকেও (যেনাকারীর জন্য) দৃষ্টিপাত করার একই হুকুম।” ((বাহারে শরীয়াত, ১৬তম অংশ, ৮৭-৮৮ পৃষ্ঠা)
প্রশ্ন :- ইসলামী ভাইয়েরা যদি নিজের মায়ের হাত, পা চুম্বন করা বা টিপতে চায়, তবে কি এর অনুমতি আছে? নাকি নাই?
উত্তর:- দু’জনের মধ্যে কারোরই যৌন উত্তেজনা সৃষ্টি না হলে অবশ্যই অনুমতি রয়েছে, বরং ইসলামী ভাইদের জন্য এতে দু’জাহানের সৌভাগ্য বিদ্যমান। বর্ণিত আছে: “যে নিজের মায়ের পা চুম্বন করলো, তবে যেন সে জান্নাতের চৌকাটে চুম্বন করলো।” (দুররে মুখতার, ৯ম খন্ড, ৬০৬ পৃষ্ঠা) সদরুশ শরীয়া, বদরুত তরিকা হযরত আল্লামা মাওলানা মুফতী মুহাম্মদ আমজাদ আলী আযমী ﺭَﺣْﻤَﺔُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺗَﻌَﺎﻟٰﻰ ﻋَﻠَﻴْﻪِ বলেন: “মাহারিমের যে অঙ্গগুলোর দিকে দৃষ্টিপাত করতে পারবে, সেই অঙ্গগুলো স্পর্শও করতে পারবে। তবে দু’জনের মধ্যে কারো যেন যৌন উত্তেজনার আশংকা না থাকে, পুরুষ তার মায়ের পা টিপে দিতে পারবে, কিন্তু মায়ের রান (থাই) তখনই টিপতে পারবে যখন তা কাপড়ে আবৃত থাকবে, অর্থাৎ টিপতে পারবে তবে কাপড়ের উপর এবং সরাসরি স্পর্শ করা জায়িয নাই।” (বাহারে শরীয়াত, ১৬তম অংশ, ৮৮ পৃষ্ঠা)
প্রশ্ন :- পুরুষ পর-নারীর চেহারা দেখতে পারবে কি না?
উত্তর:- দেখবে না। অবশ্য প্রয়োজনে কিছু বাধ্য-বাধকতা সহ দেখতে পারবে। এর কয়েকটি পদ্ধতি বর্ণনা করা হচ্ছে; সদরুশ শরীয়া, বদরুত তরিকা হযরত আল্লামা মাওলানা মুফতী মুহাম্মদ আমজাদ আলী ﺭَﺣْﻤَﺔُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺗَﻌَﺎﻟٰﻰ ﻋَﻠَﻴْﻪِ বলেন: “পর-নারীর দিকে দেখার হুকুম হলো, প্রয়োজন বশতঃ তার চেহারা ও হাতের তালুর দিকে দেখা জায়েয। কেননা; এর প্রয়োজনে হয়ে থাকে, কখনও তার পক্ষে অথবা বিপক্ষে সাক্ষ্য দিতে হয় অথবা মীমাংসা করতে হয় যদি তখন তাকে না দেখে, তবে কিভাবে সাক্ষ্য দিবে যে, সে এমন করেছে। তার দিকে দেখারও এই শর্ত, যেন যৌন উত্তেজনার আশংকা না থাকে। আর এভাবেও প্রয়োজন হয় যে (আজকাল অলিগলি, বাজারে) অসংখ্য মহিলারা ঘরের বাইরে আসা-যাওয়া করে, তাই তাদের দিকে দৃষ্টিপাত করা থেকে বিরত থাকা কঠিন। কতিপয় উলামায়ে কিরামগণ ﺭَﺣْﻤَﺔُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺗَﻌَﺎﻟٰﻰ ﻋَﻠَﻴْﻬِﻢْ পায়ের দিকে দৃষ্টিপাত করাকেও বৈধ বলেছেন।” (বাহারে শরীয়াত, ১৬তম অংশ, ৮৯ পৃষ্ঠা) মুফতি সাহেব আরো বলেন: “পর নারীর চেহারার দিকে দৃষ্টি দেয়া যদিও জায়েয, যখন যৌন উত্তেজনার আশংকা না থাকে। কিন্তু বর্তমান যুগ হচ্ছে ফিতনার যুগ। এই যুগে এমন লোক কোথায় পাবো যেমন লোক পূর্বের যুগে ছিলো। তাই এই যুগে মহিলাদের চেহারার দিকে দৃষ্টিপাত করাতে বারণ করা হবে। কিন্তু সাক্ষ্যদাতা ও বিচারকের জন্য প্রয়োজন বশতঃ তাদের দিকে দৃষ্টিপাত করা জায়েয।” (বাহারে শরীয়াত, ১৬তম অংশ, ৮৯-৯০ পৃষ্ঠা)
প্রশ্ন :- কান এবং ঘাঁড়েও কি চেহারার অন্তর্ভূক্ত, যে অবস্থায় পর-নারীর চেহারার দিকে দেখার অনুমতি রয়েছে, সে অবস্থায় কি কান ও ঘাঁড়ের দিকেও দৃষ্টি দিতে পারবে?
উত্তর:- “কান, ঘাঁড়, গলা চেহারার অন্তর্ভূক্ত নয়। এই অঙ্গগুলোর দিকে পর-পুরুষের দৃষ্টিপাত করা গুনাহ।” (বাহারে শরীয়াত, ১ম অংশ, ৪৮৩ পৃষ্ঠা)
ইসলামী বোনেরা! আমলের প্রেরণা বৃদ্ধির জন্য মাদানী পরিবেশ জরুরী। নতুবা যদিওবা সাময়িক প্রেরণা সৃষ্টি হয়ও তবে সৎসঙ্গ না পাওয়ার কারণে স্থায়িত্ব অর্জিত হয়না। নিজের মাদানী মনমানসিকতা তৈরী করার জন্য তবলীগে কোরআন ও সুন্নাতের বিশ্বব্যাপী অরাজনৈতিক সংগঠন দা’ওয়াতে ইসলামীর মাদানী পরিবেশের সাথে সম্পৃক্ত থাকুন। ﺳُﺒْﺤٰﻦَ ﺍﻟﻠﻪِ ﻋَﺰَّﻭَﺟَﻞ দা’ওয়াতে ইসলামীর মাদানী পরিবেশ, সুন্নাতে ভরা ইজতিমা সমূহ এবং মাদানী কাফেলার কি অপরূপ বাহার ও বরকত রয়েছে। দা’ওয়াতে ইসলামীর সুন্নাতে ভরা মাদানী পরিবেশে সম্পৃক্ত থাকার বরকতে অসংখ্য ইসলামী বোনের শরয়ী পর্দা করার সৌভাগ্য অর্জিত হয়েছে। এমনই একটি মাদানী বাহার শুনুন: পাঞ্জাবের একজন ইসলামী বোনের লিখিত বর্ণনার সারাংশ হচ্ছে: আমি দা’ওয়াতে ইসলামীর মাদানী পরিবেশের সাথে সম্পৃক্ত হওয়ার পূর্বে টিভিতে সিনেমা-নাটক দেখায় অভ্যস্থ ছিলাম। বাজার ইত্যাদিতে যাওয়ার জন্য বেপর্দা হয়েই বের হয়ে যেতাম। নামাযও আদায় করতাম না। এমনি ভাবে আমার সকাল-সন্ধ্যা উদাসীনতা ও গুনাহে অতিবাহিত হতো। একদা কেউ আমাকে মাকতাবাতুল মদীনা কর্তৃক প্রকাশিত সুন্নাতে ভরা বয়ানের ক্যাসেট দিল। তা শুনার পর ﺍَﻟْﺤَﻤْﺪُ ﻟِﻠّٰﻪِ ﻋَﺰَّﻭَﺟَﻞّ আমি অলসতার নিদ্রা হতে জেগে উঠলাম। সেই বয়ানের বরকতে আমার খোদাভীরুতা নসীব হলো। নবী প্রেমের প্রেরণা জাগল এবং আমি নামাযী হয়ে গেলাম। আমি আমার সমস্ত গুনাহ বিশেষ করে বেপর্দার গুনাহ থেকে তাওবা করে নিলাম। ﺍَﻟْﺤَﻤْﺪُ ﻟِﻠّٰﻪِ ﻋَﺰَّﻭَﺟَﻞّ মাদানী বোরকা আমার পোশাকের অবিচ্ছেদ্দ্য অংশ হয়ে গেলো। সেই লাগামহীন মুখ, যা পূর্বে গান গুনগুন করাতে রত ছিলো, এখন ﺍَﻟْﺤَﻤْﺪُ ﻟِﻠّٰﻪِ ﻋَﺰَّﻭَﺟَﻞّ সে মুখে নাতে মুস্তফা ﺻَﻠَّﯽ ﺍﻟﻠّٰﮧُ ﺗَﻌَﺎﻟٰﯽ ﻋَﻠَﯿْﮧِ ﻭَﺍٰﻟِﮧٖ ﻭَﺳَﻠَّﻢ শুনাতে রত আছে। বর্ণনা লিখা অবস্থায় আমি দা’ওয়াতে ইসলামীর যেলী মুশাওয়ারাতের খাদিমা (নিগরান) হিসেবে সুন্নাতের খিদমত করার সৌভাগ্য অর্জন করছি।
কাটি হে গাফলাতোঁ মে যিন্দেগানী, না জানে হাশর মে কেয়া ফয়সালা হো।
ইলাহী! হোঁ বহুত কমজোর বন্দি, না দুনিয়া মে না উকবা মে সাজা হো।
ﺻَﻠُّﻮﺍ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟﺤَﺒِﻴﺐ ! ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﺗَﻌَﺎﻟَﻰ ﻋَﻠﻰ ﻣُﺤَﻤَّﺪ
ইসলামী বোনেরা! আপনারা দেখলেন তো! মাকতাবাতুল মদীনা কর্তৃক প্রকাশিত সুন্নাতে ভরা বয়ানের ক্যাসেট শুনা ও শুনানো কতটুকু উপকারী।
ﺍَﻟْﺤَﻤْﺪُ ﻟِﻠّٰﻪِ ﻋَﺰَّﻭَﺟَﻞّ অসংখ্য ইসলামী ভাই ও ইসলামী বোন প্রতি দিন কমপক্ষে একটি সুন্নাতে ভরা বয়ান শুনার সৌভাগ্য অর্জন করে, আর যার সামর্থ্য রয়েছে সে বন্টনও করে। আপনিও প্রতি মাসে অথবা কমপক্ষে প্রত্যেক বছর রবিউন নূর শরীফে “রিসালা বন্টন” করার নিয়্যত করে নিন এবং সামর্থানুযায়ী এ বিশেষ দিনে সুন্নাতে ভরা ক্যাসেট এবং রিসালা ইত্যাদি বন্টন করুন। কেননা, এটাও সদকা আর আল্লাহর রাস্তায় সদকা ও খয়রাতের ফযীলতের কথা কি বলব! নবী করীম, রউফুর রহীম, হুযুর ﺻَﻠَّﯽ ﺍﻟﻠّٰﮧُ ﺗَﻌَﺎﻟٰﯽ ﻋَﻠَﯿْﮧِ ﻭَﺍٰﻟِﮧٖ ﻭَﺳَﻠَّﻢ ইরশাদ করেছেন: “মুসলমানদের সদকা করা, বয়স বৃদ্ধির কারণ এবং মন্দ মৃত্যুকে দূর করে এবং আল্লাহ্ তাআলা এটির (সদকায়) কারণে অহংকার ও গর্ব দূর করে দেন।” (আল মুজামুল কবির লিত তাবারানী, ১৭তম খন্ড, ২২ পৃষ্ঠা, হাদীস: ৩১)
রহে হক মে সভি দৌলত লোটা দোঁ, খোদা! এয়্যসা মুঝে জযবা আতা হোঁ।
ﺻَﻠُّﻮﺍ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟﺤَﺒِﻴﺐ ! ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﺗَﻌَﺎﻟَﻰ ﻋَﻠﻰ ﻣُﺤَﻤَّﺪ