সাহাবায়ে কিরাম যারা সরাসরি রাসূল (সাঃ) এর কাছে ছিলেন তাদের জন্য রাসূল (সাঃ) এর ব্যাখ্যা অনুসরণ করা ছিল আবশ্যক। এছাড়া কারো ব্যাখ্যা নয়। কিন্তু যেই সকল সাহাবারা ছিলেন নবীজী (সাঃ) থেকে দূরে তারা সেই স্থানের বিজ্ঞ সাহাবীর মাযহাব তথা মত অনুসরণ করতেন। যেমন ইয়ামেনে হযরত মুয়াজ বিন জাবাল (রাঃ) এর মত তথা মাযহাবের অনুসরণ হত। আব্দুল্লাহ বিন মাসউদের অনুসরণ করতেন ইরাকের মানুষ।
রাসূল (সাঃ) যখন মুয়াজ বিন জাবাল (রাঃ) কে ইয়ামানে পাঠাতে মনস্ত করলেন তখন মুয়াজ (রাঃ) কে জিজ্ঞেস করলেন- “যখন তোমার কাছে বিচারের ভার ন্যস্ত হবে তখন তুমি কিভাবে ফায়সাল করবে?” তখন তিনি বললেন- “আমি ফায়সালা করব কিতাবুল্লাহ দ্বারা”। রাসূল (সাঃ) বললেন- “যদি কিতাবুল্লাহ এ না পাও?” তিনি বললেন- “তাহলে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর সুন্নাত দ্বারা ফায়সালা করব”। রাসূল (সাঃ) বললেন-“যদি রাসূলুল্লাহ এর সুন্নাতে না পাও?” তখন তিনি বললেন- “তাহলে আমি ইজতিহাদ তথা উদ্ভাবন করার চেষ্টা করব”। তখন রাসূল সাঃ তাঁর বুকে চাপড় মেরে বললেন- “যাবতীয় প্রশংসা ঐ আল্লাহর যিনি তাঁর রাসূলের প্রতিনিধিকে সেই তৌফিক দিয়েছেন যে ব্যাপারে তাঁর রাসূল সন্তুষ্ট”। {সূনানে আবু দাউদ, হাদিস নং-৩৫৯৪, সুনানে তিরমিযী, হাদিস নং-১৩২৭, সুনানে দারেমী, হাদিস নং-১৬৮, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-২২০৬১}
এই হাদীসে লক্ষ্য করুন- রাসূল (সাঃ) এর জীবদ্দশায় হযরত মুয়াজ (রাঃ) বলছেন যে, আমি কুরআন সুন্নাহ এ না পেলে নিজ থেকে ইজতিহাদ করব, আল্লাহর নবী বললেন-“আল হামদুলিল্লাহ”। আর ইয়ামেনের লোকদের উপর হযরত মুয়াজের মত তথা মাযহাব অনুসরণ যে আবশ্যক এটাও কিন্তু হাদীস দ্বারা স্পষ্ট।
এছাড়া সাহাবাদের যুগে যে সকল সাহাবাদের মাযহাব তথা মত অনুসরণীয় ছিল। তাদের মাঝে উল্লেখযোগ্য হল-
হযরত ওমর বিন খাত্তাব (রাঃ), হযরত আলী বিন আবু তালিব (রাঃ), হযরত আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ (রাঃ), হযরত আয়েশা (রাঃ), হযরত জায়েদ বিন সাবেত (রাঃ), হযরত আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস (রাঃ), হযরত আব্দুল্লাহ বিন ওমর (রাঃ) প্রমূখ সাহাবাগণ।