তারেক মনোয়ারের মনগড়া বক্তব্যের পর্যালোচনা
মতিউর দাম্মামীর মতে তারেক মনোয়ার পাগল
তারেক মনোয়ার সাহেব বাংলাদেশের একজন বক্তা। আগে উনি গায়ক ছিলেন। বর্তমানে তার কিছু মনগড়া বক্তব্যে সাধারণ মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তির সৃষ্টি করছে। যেমন তিনি বলেছেন- আল্লাহ এবং মুহাম্মদ পাশাপাশি লিখা শিরক। তিনি বলেছেন মাওলানা শব্দটি আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো জন্য ব্যবহার করা শিরক। নিম্নে কালিমা তাইয়্যিবাহ সম্বন্ধে তার মনগড়া বক্তব্যটি তুলে ধরা হল-
‘আল্লাহর কথা থাকবে সবার উপরে। এজন্য এই যে, আমাদের দেশে লেখা হয় ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ’ পাশাপাশি, এটাও কোন হাদিস দ্বারা স্বীকৃত নয়। এই কালিমাটি ৬টি জাগায় এসেছে বিশ্ব নবীর জীবনে। বদরের পতাকার ভিতরে এ কালিমাটি ছিল। ওহুদের পতাকাতে ছিল। খায়বার দূর্গের পতাকাতে ছিল। বিশ্বনবীর আংটিতে ছিল। ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ’। কিন্তু ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ টা ছিল উপরে ‘মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ’ ছিল নীচে। এটা পাশাপাশি ছিল না কখনো। এই পাশাপাশি লিখে এখন বিদাতিরা কয়-
‘মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খোদা নেহি’ খোদাছে জোদা নেহি।’ নাউজুবিল্লাহ মিন জালিক। কয়, মুহাম্মাদ খোদা নায়, খোদা থাকি জুদাও নায়। এজন্য এটা পাশাপাশি এভাবে আনেন নাই। আমাদের মসজিদগুলোর বাহিরে লেখা হয় একপাশে আল্লাহ এক পাশে মুহাম্মাদ। এটাও ঠিক নয় ইসামিকলী। এটাও শিরকের ভিতরে পড়ে যাবে। কারণ আমরা যদি আরবি গ্রামার অনুযায়ী ধরি, আল্লাহ মুবতাদা, রাসূল মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খবর। আল্লাহ মুবতাদা (উদ্দেশ্য) হয়ে গেল। আর খবর (বিধেয়) হয়ে গেল ‘মুহাম্মাদ। তাহলে আল্লাহ কে? আল্লাহ- মুহাম্মাদ। নাউজুবিল্লাহ মিন যালিক। যে ধারণা বিভিন্ন ফেরকাগুলোর আছে আমাদের দেশে।’ (ইউটুব থেকে সংগৃহীত)
তারেক মনোয়ারের বক্তব্য পর্যালোচনা
================
সম্মানিত পাঠকবর্গ, তারেক মনোয়ার সাহেবের বক্তব্য থেকে আপনারা কি বুঝলেন? তিনিও আব্দুর রহিম সালাফির সূরে সূর মিলিয়ে বললেন- ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ’ কালিমা পাশাপাশি কোন হাদিস দ্বারা সাবিত নয়। তবে তিনি স্বীকার করেছেন রাসূলেপাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সময় এ কালিমাটি ৬টি জাগায় এসেছে। অতএব তার কথা দ্বারাই প্রমাণিত হল যে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর হাদিস দ্বারাই পূর্ণ কালিমাটি বর্ণিত হয়েছে।
তবে তার মতে ইহা পাশাপাশি ছিল না। অর্থাৎ ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু’ ছিল উপরে এবং ‘মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ’ ছিল নীচে। ইহাও তার মনগড়া ও কাল্পনিক কথা।
ইতোপূর্বে অনেকগুলো হাদিস ও তাফসির থেকে উদ্ধৃতি দেয়া হয়েছে। কোথাও এ রকম লিখা হয় নাই। বরং আল্লাহ তায়ালা সূরা ফাতাহ এর ২৯ নং আয়াতে বলেন محمد رسول الله এই বাক্যে মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আগে ও আল্লাহ শব্দ পরে বর্ণিত হয়েছে এবং একই লাইনে পাশাপাশি উল্লেখিত হয়েছে। উপরে নীচে নয়। তাছাড়া পবিত্র কাবাশরীফের দরজার সর্ব উপরে ডান পার্শ্বে লিখা ‘আল্লাহ’ এবং বামপাশে লিখা মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মধ্যখানে গোল বৃত্তে ডান পাশে লিখা ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু এবং বাম পাশে লিখা মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ।
এমনিভাবে রাসূলেপাক পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর রওজাশরীফে সোনালী জালির পুরাতন নকশাতে উপরে লিখা রয়েছে ইয়া আল্লাহ এবং ইয়া মুহাম্মাদ। বর্তমান জালিতে ডান পাশে লিখা ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু’ এবং বাম পাশে লিখা ‘মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ।’ তার উপরের দিকে ডানপাশে লিখা উমর ইবনুল খাত্তাব। মধ্যখানে লিখা আবু বকর এবং বাম পাশে লিখা রাসূলুল্লাহ। অতএব এগুলো তার গলাবাজি বৈ কিছুই নয়।
মতিউর রহমান দাম্মামীর মতে তারেক মনোয়ার পাগল
==============
মতিউর রহমান দাম্মামী হচ্ছেন বাংলা ভাষাভাষি একজন সালাফি প্রচারক। তিনি সৌদি আরবের ‘দাম্মাম ইসলামিক কালচারাল সেন্টার’ থেকে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন বিভ্রান্তি মূলক বক্তব্যের মাধ্যমে সরলপ্রাণ মুসলমানদের মধ্যে হিংসা, বিভেদ ও বিভক্তি সৃষ্টি করছেন। তবে কালিমায়ে তাইয়্যিবার ব্যাপারে তিনি সুন্দর কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন- যারা বলে ‘ ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ’ পাশাপাশি লিখা শিরক তারা পাগল। তারা অল্প বিদ্যা ভয়ংকরী। নিম্নে তার বক্তব্যটি হুবহু তুলে ধরা হল-
‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ’ যদি পাশাপাশি বলা যায় তবে জায়েয না নাজায়েয এই ক্ষেত্রে কিছু লোক বাড়াবাড়ি করে থাকে। কিন্তু এই বাড়াবাড়ি আমি পছন্দ করি না। এমন বাড়াবাড়ি, বলে এটা শিরক হয়ে যাবে। আরে শিরক হবে কেন? পাগল। ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ একটা কালিমা। আর তার পরে আলাদা কালিমা ‘মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ’ আর এর মানে এটাইতো হইলো ‘অল্পবিদ্যা পড়ে বড় বড় ফতোয়া, ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ মানে যিনি আল্লাহ তিনি মুহাম্মাদ। এটা কোথায় বুঝা গেল? এটাতো বুঝা যায় না। (ইউটুব থেকে সংগৃহীত)