উত্তর: ১. ঈসালে সাওয়াব একটি পূণ্যময় ও অত্যন্ত সাওয়াবজনক আমল। সাধারণত মৃত ব্যক্তির কল্যাণ ও তার কবরে সাওয়াব পৌঁছানোর জন্য ঈসালে সাওয়াবের মত নেক আমল সমূহ তথা মেজবান-জেয়াফত, গরীব-দুঃখীদের প্রতি দান-খায়রাত, খতমে ক্বোরআন, খতমে গাউসিয়া, ইত্যাদির আয়োজন করে থাকে মৃত ব্যক্তির পরিবার ও আপনজন তথা আত্মীয়-স্বজন। তবে যদি নিজের বা স্বীয় রূহে সওয়াব পৌঁছানোর জন্য তার জীবদ্দশায় ঈসালে সাওয়াব এর উদ্দেশ্যে গরীব-অসহায়, মিসকিনদের জন্য খানা-পিনা, দান-খায়রাত করার ইচ্ছা পোষণ করে তাতে কোন প্রকার অসুবিধা নেই। বরং সওয়াব ও মঙ্গলময়। এক্ষেত্রে গোপনীয়তা রক্ষা করা উত্তম। যাতে লোক দেখানো ও লৌকিকতা মুক্ত হয়।
উত্তর: ২. গরীব-এতিম, অসহায়, বিধবা ও মিসকিন অভাবীদের প্রতি সাদকা তথা দান-খায়রাত করা অনেক উত্তম আমল। সাদকা ও দান-খায়রাত প্রকাশ্যেও করা যায়, গোপনেও করা যায়। তবে গোপনে দেয়াই উত্তম। হাদীসে পাকে প্রিয়নবী হুযূর পুরনূর সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-
صَدَقَة السّرّ تطفى غضب الربِّ وتُدفِعُ ميتة السّوءِ- (صحيح ابن حبان- كتاب الزكوة- باب صدقة التطوع الحديث- ৩২৯৮)
অর্থাৎ- গোপনে দান-সাদকা করার দরুন আল্লাহ্ তা‘আলার ক্রোধ শীতল হয় এবং (বান্দাকে) অপমৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা করেন।
[সহীহ ইবনে হিব্বান, কিতাবুয্ জাকাত, নফল সদকার অধ্যায়, হাদীস নং ৩২৯৮] কোন সাদকা উত্তম এমন প্রশ্নের উত্তরে প্রিয়নবী সরকারে দু’আলম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-
افضل الصدقة أن تصدق وانت صحيح حريصٌ تأمل الغنى وتخشى الفقر ولاتمهلُ حتّى اذا بَلغَتِ قلْتَ لفلانِ كذا اولفلانِ كذا الا وقد كان لفلانٍ- (صحيح البحخارى- الحديث ২৭৪৮)
অর্থাৎ- উত্তম সদকা হচ্ছে তুমি গরীব-দুঃখীর প্রতি দান করবে এমতাবস্থায় যে, তুমি সুস্থ এবং সম্পন্নদের প্রতি লোভী। আর যে অবস্থায় তুমি সম্পদ-কামনা করছে আর অভাব-অনটনকে ভয় করছ। তুমি সাদকার ব্যাপারে কাল ক্ষেপন কর না এবং এমনটি যেন না হয় যে, তোমার নিঃশ্বাস গলদেশে আটকে গেল, আর তখন বললে- এটা অমুকের, এত পরিমাণ অমুকের। অর্থাৎ- সুযোগ থাকতে সাদকা না করলে পরে আর দান করার সুযোগ অনেকের হয় না। সুতরাং সময়-সুযোগ থাকতে সাদকা ও ইবাদত-বন্দেগী করা বুদ্ধিমানের কাজ। আর যদি কোন মুসলমান এ নিয়তে প্রকাশ্যে সাদকা করে যে আমার থেকে দেখে অন্যরাও উদ্বুদ্ধ হবে এবং তারাও আমার অনুসরণে গরীব-অসহায়ের প্রতি সাদকা করবে। তখন প্রকাশ্য সাদকার মাধ্যমেও সাওয়াব ও ফজিলত পাবে।
[সহীহ বুখারী: হাদীস নং ২৭৪৮, কিতাবুল ওসিয়ত, ও মালফুযাতে আ’লা হযরত, ৩য় খন্ড ইত্যাদি]
প্রশ্ন: ১. নিজের জীবদ্দশায় নিজের জন্য ‘ঈসালে সাওয়াব’ করা যাবে কিনা? কেউ করলে তার জন্য সাওয়াব আছে কিনা? ২. গরীব দুঃখীর প্রতি সাদকা ও দান খায়রাতে ফযিলত বর্ণনা করার অনুরোধ রইল।
পোষ্টটি অন্যকে পড়ার সুযোগ করে দিতে শেয়ার করুন প্লিজ।