আল্লাহ তায়ালা হযরত হাওয়া আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে হযরত আদম আলাইহি ওয়া সাল্লামের বাম পাজরের হাড় দ্বারা সৃষ্টি করেছেন
আল্লাহ তায়ালা কুরআনে বলেন:
আন নিসা ৪:১
يَٰٓأَيُّهَا ٱلنَّاسُ ٱتَّقُوا۟ رَبَّكُمُ ٱلَّذِى خَلَقَكُم مِّن نَّفْسٍ وَٰحِدَةٍ وَخَلَقَ مِنْهَا زَوْجَهَا وَبَثَّ مِنْهُمَا رِجَالًا كَثِيرًا وَنِسَآءًۚ وَٱتَّقُوا۟ ٱللَّهَ ٱلَّذِى تَسَآءَلُونَ بِهِۦ وَٱلْأَرْحَامَۚ إِنَّ ٱللَّهَ كَانَ عَلَيْكُمْ رَقِيبًا
হে মানবসম্প্রদায়! তোমরা তোমাদের প্রতিপালককে ভয় কর, যিনি তোমাদেরকে একটি প্রাণ হতে সৃষ্টি করেছেন[১] ও তা হতে তার সঙ্গিনী সৃষ্টি করেছেন, যিনি তাদের দু’জন থেকে বহু নরনারী (পৃথিবীতে) বিস্তার করেছেন। সেই আল্লাহকে ভয় কর, যার নামে তোমরা একে অপরের নিকট যাচ্ঞা কর এবং জ্ঞাতি-বন্ধন ছিন্ন করাকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের উপর তীক্ষ্ম দৃষ্টি রাখেন।
[১] ‘একটি প্রাণ’ বলতে মানবকুলের পিতা আদম (আঃ)-কে বুঝানো হয়েছে। আর خَلَقَ مِنْهَا زَوْجَهَا এতে مِنْهَا থেকে উক্ত প্রাণ অর্থাৎ, আদম (আঃ)-কেই বুঝানো হয়েছে। অর্থাৎ, আদম (আঃ) থেকেই তাঁর স্ত্রী হাওয়াকে সৃষ্টি করেন। আদম (আঃ) থেকে হাওয়াকে কিভাবে সৃষ্টি করা হয়, এ ব্যাপারে মতভেদ রয়েছে। ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, হাওয়া পুরুষ অর্থাৎ, আদম (আঃ) থেকে সৃষ্টি হয়েছেন। অর্থাৎ, তাঁর পাঁজরের হাড় থেকে। অপর একটি হাদীসে বলা হয়েছে যে, “নারীদেরকে পাঁজরের হাড় থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে। আর পাঁজরের হাড়ের মধ্যে উপরের হাড়টি অধিক বাঁকা। যদি তা সোজা করতে যাও, তাহলে ভেঙ্গে ফেলবে। আর যদি তুমি তার দ্বারা উপকৃত হতে চাও, তবে তার মধ্যে বক্রতা অবশিষ্ট থাকা অবস্থাতেই উপকৃত হতে পারবে।” <em>(বুখারী ৩৩৩১, মুসলিম ১৪৬৮নং)</em> উলামাদের কেউ কেউ এই হাদীসের ভিত্তিতে ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত উক্তিকেই সমর্থন করেছেন। কুরআনের শব্দ خَلَقَ مِنْهَا থেকেও এই মতের সমর্থন হয়। অর্থাৎ, মা হাওয়ার সৃষ্টি সেই একটি প্রাণ থেকেই হয়েছে, যাকে ‘আদম’ বলা হয়।
আয-যুমার ৩৯:৬
خَلَقَكُم مِّن نَّفْسٍ وَٰحِدَةٍ ثُمَّ جَعَلَ مِنْهَا زَوْجَهَا وَأَنزَلَ لَكُم مِّنَ ٱلْأَنْعَٰمِ ثَمَٰنِيَةَ أَزْوَٰجٍۚ يَخْلُقُكُمْ فِى بُطُونِ أُمَّهَٰتِكُمْ خَلْقًا مِّنۢ بَعْدِ خَلْقٍ فِى ظُلُمَٰتٍ ثَلَٰثٍۚ ذَٰلِكُمُ ٱللَّهُ رَبُّكُمْ لَهُ ٱلْمُلْكُۖ لَآ إِلَٰهَ إِلَّا هُوَۖ فَأَنَّىٰ تُصْرَفُونَ
তিনি তোমাদেরকে একই ব্যক্তি হতে সৃষ্টি করেছেন।[১] অতঃপর তিনি তা হতে তার সঙ্গিনী সৃষ্টি করেছেন। [২]তিনি তোমাদের জন্য আট প্রকার পশু অবতীর্ণ করেছেন। তিনি তোমাদের মাতৃগর্ভের তিন প্রকার অন্ধকারে[] পর্যায়ক্রমে সৃষ্টি করেন। তিনিই আল্লাহ তোমাদের প্রতিপালক, সার্বভৌমত্ব তাঁরই, তিনি ব্যতীত কোন সত্য উপাস্য নেই। অতএব তোমরা মুখ ফিরিয়ে কোথায় চলেছ?
[১] অর্থাৎ, আদম (আঃ) থেকে, তাঁকে আল্লাহ তাআলা নিজ হাত দ্বারা তৈরী করেছিলেন এবং তাঁর মধ্যে নিজ রূহ ফুঁকেছিলেন।
[২] অর্থাৎ, হাওয়াকে আদম (আঃ)-এর বামপার্শ্বের অস্থি থেকে সৃষ্টি করেছেন এবং এটাও তাঁর কুদরতের বড় কৃতিত্ব। কারণ হাওয়া ছাড়া কোন নারীর সৃষ্টি কোন পুরুষের অস্থি থেকে হয়নি। ফলে হাওয়ার সৃষ্টি সাধারণ নিয়ম-বহির্ভূত এবং আল্লাহর মহাশক্তির একটি নিদর্শন।
হাদিসে আছে
নবী করীম ﷺ বলেনঃ “নারী জাতিকে
পাঁজরের বাঁকা হাড় দ্বারা সৃষ্টি করা হয়েছে। আর পাঁজরের হাড়ের মধ্যে একেবারে উপরের হাড়টি অধিক বাঁকা। যদি তা সোজা করতে যাও, ভেঙ্গে ফেলবে। আর যদি তা ছেড়ে দাও, তবে সব সময় বাকাই থাকবে। সূতরাং তোমরা নারীদের সাথে উত্তম আচরণ করবে।”
[বুখারীঃ ৩০৮৫; মিশকাতঃ ৩২৩৮]




Users Today : 349
Users Yesterday : 767
This Month : 14771
This Year : 186642
Total Users : 302505
Views Today : 37335
Total views : 3614078