ক্রুসেড যুদ্ধে সূফীদের ভূমিকা (শেষ পর্ব)
📝মুহাম্মদ আলী
তাতার যুদ্ধ ও আধুনিক যুগের সূফীরা হলেন অগ্রগামীঃ
তাতার যুদ্ধে সূফীদের যে অবদান ছিল দীর্ঘ আলোচনা রয়েছে। তাতার যুদ্ধে যে সকল সূফীরা অবদান রেখেছিলেন, তাঁদের মধ্যে অন্যতম হলেন, ইমাম আবদুল হাসান শাযিলী ও তাঁর শিষ্যগণ। ‘সুলতানুল ওলামা’ শায়খ ইযুদ্দীন ইবনে সালাম (রহঃ) ও বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। তিনি তখনকার মিসর ও সিরিয়ার রাষ্ট্রপ্রধান শায়খ সাইফুদ্দীন কতব (রহঃ)-এর শায়খ। সাথে সাথে তিনি তাতারীদেরকে ( তুর্কি জাতিগোষ্ঠীর অন্তর্ভূক্ত একটি উপজাতি) নিশ্চিহ্ন করার উদ্দেশ্যে ৬৫৮ হিজরী সনের ২৭ রমজান শেষ হওয়া সিরিয়ার ‘আইনে জালুত’ নামক যুদ্ধের সেনাপতি ছিলেন। উল্লেখ্য যে, ৬৫৬ হিজরী সনে তাতারীরা আব্বাসী খেলাফতকে ধ্বংস করে দেয়।
তাতারীদের বিরুদ্ধে এ জয় সূফী সৈন্য ও তাঁদের সেনাপতি সুলতানুল ওলামা শায়েখ ইয ইবনে সালাম (রহঃ)-এর উপর আল্লাহর পূর্ণ সন্তুষ্টির বহিঃপ্রকাশ। মহান আল্লাহ বলেন, ‘ সাহায্য একমাত্র আল্লাহর পক্ষ থেকেই আসে। নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ শক্তিশালী, বিজ্ঞ।’ এভাবে ৫৮৩ হিজরী সনের ২৭ রজব বিশিষ্ট সূফী বীর সালাহুউদ্দীন আইয়ুবী (রহঃ) ক্রুসেডারদের হাত থেকে মুসলিম বিশ্ব ও বায়তুল মাকদাসকে মুক্ত করেন। মহান আল্লাহ বলেন, ‘আগে হোক বা পরে হোক সব সময় আল্লাহর নির্দেশই বাস্তবায়িত হবে সেদিন আল্লাহর সাহায্যের মাধ্যমে মুমিনরাই বিজয়ী হবেন। মহান আল্লাহ তাঁর প্রিয় বান্দাকে সাহায্য করেন। তিনি ক্ষমতাধর, করুণাময়।’
এমনকি আধুনিক যুগেও সূফীরা সাম্রাজ্যবাদ ও সাম্রাজ্যবাদীদের বিরুদ্ধে জিহাদে বড় ভূমিকা রেকেছে। আধুনিক যুগের এমন কয়েকজন বীর সূফী হলেন, মরক্কোর আবদুল করীম মরোক্কী (রহঃ) এবং দ্বীপ রাষ্ট্রের শায়খ আবদুল কাদের জাযাইয়ী (রহঃ) তাঁরা উভয়েই ফ্রান্স সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে জিহাদে বড় অবদান রাখেন। ওমর মোখতার (রহঃ) ভূমিকা রাখেন ইতালী সাম্রাজ্যের বিরুদ্ধে। একইভাবে সূফীদেরকে সাথে নিয়ে তিনি লিবিয়াতে ২৫ বছর যাবত জিহাদ পরিচালনা করেন। সেখানে তিনি একের পর এক সৈন্যদলকে পরাজিত করেন। তাঁরা সংখ্যায় অল্প হলেও মহান আল্লাহর বিশেষ সাহায্যে তাঁরা শত্রুদের বিরুদ্ধে জয়লাভ করেন। যাই হোক, প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যে সূফীরা যে অসমান্য বরীত্ব দেখিয়েছেন, তা ইতিহাসবেত্তাগণ স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছেন। ওমর মোখতার(রহঃ)- কে পর্যুদস্ত করতে দুশমনরা আপ্রাণ চেষ্টা করেছিল। কিন্তু তিনি হকের পাল্লায় ছিলেন অটল। মহান আল্লাহ বলেন, ‘নবী সিদ্দীক, শহীদ ও সালেহীগণের সাথে তাঁরা কতই না উত্তম সাথী।’ (সংক্ষিপ্ত)।
নোটঃ বাতিল, তাকফিরি গোষ্ঠি হাজার পৃষ্ঠার বই লিখেন, যুদ্ধের মহা বীর’রা যে, সূফী ছিলেন সেটা তাদের লিখনিতে স্থান পায় না। আজকাল সূফীদেরকে বেদ’আতী আখ্যা দেয়া হয়। যেমন, এদেশীয় পেট্রো ডলার খাদক এক সালাফী আলেম, রাবেয়া বসরী, ইমাম গাজ্জালী (রহঃ) -কেও বেদ’আতী আখ্যা দিয়েছে। মোডারেট মুসলিমরা এখন সবকিছুতেই “T20” ভার্শন খোঁজেন। আল্লাহ তা’আলা এসব নব্য ফেতনা থেকে আমাদের সন্তানদের রক্ষা করুন আমীন। সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া-সাল্লাম।