একই বা সমান অর্থের শব্দকে প্রতিশব্দ বা সমার্থক শব্দ বলে। অথবা এমন অনেক শব্দ আছে যাদের অর্থ একই কিন্তু উচ্চারণ ভিন্ন, সেসব শব্দকে সমার্থক শব্দ বলে। অথবা মেয়ে, মেয়েমানুষ, মেয়েছেলে, মাইয়া, কনে, কন্যা, ঝি, বেটি, ঝিউরি, ঝিয়ারি, পুত্রী, দুহিতা, আত্মজা, দুলালী, কুমারী, নন্দিনী, তনয়া, তনুজা, পুত্রিকা, দারিকা ইত্যাদি শব্দগুলো একই অর্থ প্রকাশ করে তাই এগুলো সমার্থক শব্দ। অথবা Synonym is a word which expressingthe same meaning with another /Expressing the same meaning words is called synonym or similar word|
সমার্থক শব্দের প্রয়োজনীয়তা
ভিন্নভিন্ন ভাষার শব্দ থেকে আগত শব্দ, অর্থের দিক দিয়ে এক হলেও অর্থ দ্যোতনার দিক খেয়াল রেখে শব্দ ব্যবহার করা উচিত। যেমন: জল ও পানি একই অর্থবোধক শব্দ কিন্তু জলচ্ছ্বাসকে পানিচ্ছ্বাস লিখলে বাক্যের গুণ নষ্ট হয়। সমার্থক শব্দের ব্যবহার খুব জরুরি। যেমন : দেশি ভাষাকে সমৃদ্ধ করতে, বক্তৃতা ও বক্তব্য আকর্ষণীয় করতে, একই শব্দের বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করতে, বাক্যকে সহজ, সুন্দর, বলিষ্ঠ, প্রাঞ্জল ও সমৃদ্ধ করতে, বাক্যে শাব্দিক সৌন্দর্য, গুণ, বৈচিত্র্য এবং প্রকাশশৈলীতে অভিনবত্ব আনতে, বাক্যকে অলংকারমণ্ডিত করতে, ছড়াকবিতার ছন্দের মাত্রা ঠিক রাখতে এবং কবিতার মিল দিতে এবং একই শব্দের বার বার প্রয়োগজনিত সমস্যার হাত থেকে রক্ষা করতে সমার্থক শব্দের ব্যবহার জরুরি।
সমার্থক শব্দের নমুনা
স্বরবর্ণ
অ বর্ণ
১. অবকাশ — অবসর, ছুটি, ফুরসত, সময়, সুযোগ
২. অপূর্ব — অদ্ভুত, আজব, আশ্চর্য, তাজ্জব, চমৎকার
৩. অকস্মাৎ — আচমকা, আকস্মিক, সহসা, হঠাৎ
৪. অকাল — অসময়, অবেলা, অদিন, কুদিন, দুঃসময়
৫. অক্লান্ত — অদম্য, ক্লান্তি হীন, নিরলস, পরিশ্রমী
৬. অŸম — অসমর্থ, অপটু, অদক্ষ, অযোগ্য, দুর্বল
৭. অঙ্গীকার — পণ, প্রতিশ্রুতি, প্রতিজ্ঞা, শপথ, সংকল্প
৮. অচেতন — অজ্ঞান, অসাড়, জ্ঞানশূন্য, জ্ঞানহীন, বেহুঁশ
৯. অজ্ঞ — অশিক্ষিত, অজ্ঞানী, মূর্খ, নির্বোধ, বেকুব
১০. অতিরিক্ত — অনেক, প্রচুর, পর্যাপ্ত, বেশি, মেলা
১১. অতীত — গতদিন, তৎকাল, পূর্ব, সেকাল, পূর্বকাল
১২. অত্যাচার — উপদ্রব, নিপীড়ন, নির্যাতন, জুলুম, লাঞ্ছনা
১৩. অদৃশ্য — অগোচর, অদেখা, অদৃষ্ট, অলক্ষ্য, না দেখা
১৪. অধিবেশন — সভা, সমিতি, সমাবেশ, মিটিং
১৫. অধ্যয়ন — পাঠ, পঠন, পড়া, পাঠাভ্যাস, লেখাপড়া
১৬. অনন্ত — অবয়, অসীম, অশেষ, চিরস্থায়ী
১৭. অনুজ্জ্বল — নিস্তেজ, জ্যোতিহীন, ম্লান, বিবর্ণ
১৮. অনুরোধ — আবেদন, আবদার, আরজি, বায়না
১৯. অপরিচিত — অজানা, নাজানা, অজ্ঞাত, অচিন
২০. অভাব — অনটন, দারিদ্র্য, দৈন্য, গরিবি, দুর্দশা
২১. অলস — কুড়ে, অকর্ম, অকেজো, ঢিলে, আলসে
২২. অল্প — কম, সামান্য, অপ্রচুর, নগণ্য, কিয়ৎ, ঈষৎ
২৩. অগ্নি — আগুন, অনল, বহ্নি, দহন, পাবক
২৪. অশ্ব — ঘোড়া, বাজী, তুরগ, হ্রেষা, টাঙ্গন
২৫. অতিশয় — অতি, অতীব, অতিমাত্রা, অধিক, অত্যন্ত
২৬. অখ্যাতি — নন্দা, কুৎসা, বদনাম, দুর্নাম, অপবাদ
২৭. অন্ধকার — আঁধার, তিমির, তমসা, শর্বর
২৮. অচল — গতিহীন, অটল, স্থির, নিথর, অপ্রচলিত
২৯. অবস্থা — দশা, রকম, প্রকার, হাল, হালত
৩০. অনাদর — উপেক্ষা, অবজ্ঞা, অবহেলা, হেলা, অযত্ন
৩১. অপচয় — অপব্যয়, বৃথাব্যয়, ক্ষতি, ক্ষয়, হ্রাস
৩২. অতিথি — মেহমান, কুটুম, আগন্তুক, আমন্ত্রিত
আ বর্ণ
১. আসল — খাঁটি, মূলধন, মৌলিক, মূল, মৌল
২. আইন — বিধান, কানুন, ধারা, নিয়ম, নিয়মাবলি
৩. আঁধার — অন্ধকার, তমসা, তিমির, শর্বর, আলোহীন
৪. আকার — আকৃতি, চেহারা, আদল, গড়ন, গঠন
৫. আমন্ত্রণ — আহ্বান, নিমন্ত্রণ, সম্ভাষণ, অভ্যর্থনা
৬. আরম্ভ — শুরু, সূচনা, ভূমিকা, সূত্রপাত, প্রারম্ভ
৭. আলো —রশ্মি, কিরণ, দীপ্তি, প্রভা, নুর, জ্যোতি, আভা
৮. আকাশ — অম্বর, নভ, গগন, আসমান, দ্যুলক
৯. আদেশ — আজ্ঞা, হুকুম, অনুমতি, অনুশাসন, অনুজ্ঞা
১০. আনন্দ — হর্ষ, আহ্লাদ, ফুর্তি, খুশি, আমোদ, মজা
১১. আফসোস — পরিতাপ, দুঃখ, খেদ, অনুতাপ, আক্ষেপ
১২. আধুনিক — সাম্প্রতিক, নব্য, নবীন, বর্তমান, হালের
১৩. আকুল — ব্যাকুল, কাতর, উৎসুক, কৌতূহলি, অস্থির
১৪. আশ্চর্য — বিস্ময়, চমক, অবাক
ই /ঈ বর্ণ
১. ইচ্ছা — সাধ, বাসনা, আকাঙ্ক্ষা, আশা, চাওয়া
২. ইতি — সমাপ্তি, শেষ, অবসান, সমাপন, ছেদ
৩. ইদানিং — সম্প্রতি, আজকাল, এখন, অধুনা, বর্তমান
৪. ঈর্ষা — দ্বেষ, বিদ্বেষ, হিংসা, রেষারেষি, বৈরিতা
৫. ঈশ্বর — আল্লাহ, খোদা, রব, সৃষ্টিকর্তা, স্রষ্টা, প্রভু
উ/ঊ বর্ণ
১. নমুনা — দৃষ্টান্ত , নিদর্শন, নজির, নমুনা
২. উজ্জ্বল — আলোকিত, উদ্ভাসিত, ভাস্বর, ঝলমলে, দীপ্ত
৩. উত্তম — উৎকৃষ্ট, প্রকৃষ্ট, শ্রেষ্ঠ, সেরা, অতুলনীয়
৪. উচ্ছেদ — উৎপাটন, উৎখাত, নির্মূল, বিনাশ, স্থানচ্যুতি
৫. উচিত — যোগ্য, কর্তব্য, উপযুক্ত, ন্যায্য, সমীচীন
৬. উপযুক্ত — যোগ্য, উপযোগী, সমকক্ষ, সক্ষম
৭. উপকথা — উপাখ্যান, কাহিনি, গল্প, কেচ্ছা
৮. উপকার — হিতকর, মঙ্গল, সাহায্য, অনুগ্রহ, কল্যাণ
৯. ঊর্বর — ভাল, ভারসাম্য, অনুকূল, ফলপ্রদ
১০. ঊষা — প্রভাত, প্রত্যুষ, ভোর, সকাল
এ/ঐ বর্ণ
১. একতা — ঐক্য, মিলন, একত্ব, অভেদ, অভিন্নতা
২. ঐশ্বর্য — ধন, সম্পত্তি, বিত্ত, প্রতিপত্তি
৩. ঐক্য — একতা, একত্ব, মিল, অভিন্ন, সমতা
ব্যঞ্জনবর্ণ
ক-বর্গ (ক/খ/গ/ঘ)
১. কাঁদা — ক্রন্দন, কান্না, রোদন, কান্নাকাটি, অশ্রুত্যাগ
২. কেনা — ক্রয়, খরিদ, কেনাকাটা, সওদা
৩. কোন্দল — বিবাদ, বিরোধ, ঝগড়া, কলহ
৪. কষ্ট — ক্লেশ, আয়াশ, পরিশ্রম, দুঃখ
৫. কন্যা — মেয়ে, নন্দিনী, কুমারী, ঝি, বেটি
৬. কথা — উক্তি, বচন, কথন, বাক্য, বাণী
৭. কলহ — ঝগড়া, বিরোধ, বিবাদ, দ্বন্দ্ব, কাইয়া
৮. কপাল — ভাল্, অদৃষ্ট, ভাগ্য, নিয়তি
৯. কেশ — অলক, চিকুর, কুন্তল, চুল, কবরী
১০. কুল — বংশ, গোত্র, গোষ্ঠী, জাতি, বর্ণ
১১. কঠিন — শক্ত, দৃঢ়, কঠোর, কড়া, জটিল, রুক্ষ
১২. কল্যাণ — মঙ্গল, শুভ, সুখ, কল্যাণযুক্ত, সমৃদ্ধি
১৩. কাটা — কর্তন করা, খণ্ডন করা, খনন করা
১৪. কারণ — হেতু, নিমিত্ত, প্রয়োজন, উদ্দেশ্য, মূল
১৫. কৃষক — চাষি, কৃষিজীবী, কর্ষক
১৬. কূল — তীর, তট, কিনারা, ধার, পার, পাড়
১৭. খ্যাতি — যশ, সুনাম, নাম, নামযশ, প্রতিষ্ঠা
১৮. খাদ্য — খাবার, ভোজ্য, অন্ন, রসদ, খানা
১৯. খবর — সংবাদ, বার্তা, তত্ত্ব, তথ্য, সমাচার, নিউজ
২০. খাঁটি — বিশুদ্ধ, আসল, প্রকৃত, যথার্থ, সাচ্চা
২১. খারাপ — মন্দ, কু, বদ, নিকৃষ্ট, দুষ্ট, নষ্ট, অভদ্র
২২. খুব — ভীষণ, প্রচণ্ড, প্রচুর, অনেক, অত্যন্ত , অতিশয়
২৩. খোঁজা — অন্বেষণ, সন্ধান, অন্বেষা, এষণা, তালাশ
২৪. খেচর — পাখি, পক্ষি, বিহঙ্গ, দ্বিজ, খগ
২৫. গভীর — অগাধ, প্রগাঢ়, নিবিড়, অতল, গহন
২৬. গরু — ধেনু, গো, গাভী, পয়স্বিনী
২৭. গৃহ — ভবন, আলয়, নিলয়, সদন, ঘর, বাড়ি
২৮. ঘরনি — গৃহিণী, গিন্নী, বউ, স্ত্রী, পত্নী, জায়া, বিবি
চ-বর্গ (চ/ছ/জ/ঝ)
১. চন্দ্র — চাঁদ, শশী, শশাঙ্ক, ইন্দু, হিমাংশু
২. চক্ষু — চোখ, লোচন, নয়ন, নেত্র, অক্ষি, আঁখি
৩. চঞ্চল — অস্থির, চপল, ব্যাকুল, কম্পিত, বিচলিত
৪. চতুর — চালাক, ধূর্ত,
৫. চিত্র — ছবি, আলেখ্য, প্রতিমূর্তি, নকশা
৬. চির — অনন্ত , নিরবধি, নিত্য, অটুট
৭. চিন্তা — মনন, ভাবা, স্মরণ, ধ্যান, ভাবনা
৮. ছেদ — যতি, ছেদন, বিরাম, খণ্ড, দাঁড়ি
৯. ছাত্র — বিদ্যার্থী, শিষ্য, শিক্ষার্থী, শিক্ষানবিশ
১০. জন্ম — উৎপত্তি, উদ্ভব, সৃষ্টি, ভূমিষ্ঠ, জনম, আবির্ভাব
১১. জলাশয় — পুকুর, সরোবর, দিঘি, জলাধার, জলাভূমি
১২. জাত — জাতি, গোষ্ঠী, গোত্র, বংশ, প্রকার, কুল
১৩. জ্ঞান — বোধ, বুদ্ধি, পাণ্ডিত্য, শিক্ষা, চেতনা
১৪. ঝড় — সাইক্লোন, ঝটিকা, ঝঞ্ঝা, তুফান
১৫. ঝোঁক — টান, আকর্ষণ, মমতা, মায়া, ভালবাসা
১৬. ঠিক — সত্য, যথার্থ, নির্ভুল, ন্যায্য, ভাল, উত্তম
১৭. ঠাট্টা — উপহাস, রসিকতা, বিদ্রুপ, শ্লেষ, মশকরা
১৮. ডগা — শীর্ষ, শিখর, অগ্রভাগ, আগা, মাথা
১৯. ঢেউ — ঊর্মি, তরঙ্গ, কলল, হিলল, জোয়ার
২০. ঢাকনা — আবরণ, আচ্ছাদন, ঢাকা, ছাদ, সরা
২১. ঢের — প্রচুর, অনেক, বেশি, রাশি, স্তুপ
ত-বর্গ (ত/থ/দ/ধ/ন)
১. তপন — সূর্য, রবি, ভানু, প্রভাকর, দিনপতি
২. তৃষ্ণা — পিপাসা, তেষ্টা, পিয়াসা, ইচ্ছা, আকাঙ্ক্ষা
৩. তুষার — বরফ, হিম, হিমানী, তুহীন, নীহার
৪. তৈরি — গঠন, নির্মাণ, গড়া, বানানো, প্রস্তুত
৫. দলিল — নথি, নথিপত্র, কাগজপত্র, পাট্টা, দস্তাবেজ
৬. দক্ষ — নিপুণ, পটু, পারদর্শী
৭. দরিদ্র — দুর্গত, নির্ধন, গরিব, বিত্তহীন, নির্বিত্ত
৮. দরদ — ব্যথা, বেদনা, মমতা, টান, আকর্ষণ
৯. দয়া — অনুগ্রহ, করুণা, কৃপা, অনুকম্পা, মায়া
১০. দুঃখ — কষ্ট, ক্লেশ, যন্ত্রণা, দুখ, ব্যথা, বেদনা
১১. দাস — ভৃত্য, চাকর, ক্রীতদাস, অনুগত, অধীন
১২. দান — দেওয়া, অর্পণ, সম্প্রদান, বিতরণ, উৎসর্গ
১৩. দাহ — দহন, জ্বালা, পোড়া, সৎকার
১৪. দীন — দরিদ্র, কাতর, অসহায়, দুঃখ, করুণ
১৫. ধন — বিত্ত, অর্থ, সম্পদ, বিভব, টাকা-পয়সা
১৬. ধর্ম — রীতি, আচরণ, আইন, সৎকর্ম, পূণ্যকর্ম
১৭. ধ্বংস — নাশ, বিনাশ, বিলপ, শেষ, ভস্ম, কেয়ামত
১৮. ধবল — সাদা/শাদা, শ্বেত, শুভ্র, শুল্ক, ধলা, সিতা
১৯. নবীন — আনকোরা, নতুন, আধুনিক, অধুনা, নব, নয়া
২০. নাম — খ্যাতি, সুনাম, অভিধা, পরিচয়, মর্যাদা
২১. নিকট — সন্নিহিত, কাছে, অদূর, অদূরবর্তী
২২. নম্র — ভদ্র, বিনয়ী, বিনয়াবনত, কোমল, নরম
২৩. নদী — তটিনী, প্রবাহিনী, তরঙ্গিণী, দরিয়া, গাঙ
২৪. নর — মানব, মানুষ, মনুষ্য, লোক, জন, পুরুষ
২৫. নারী — রমণী, মহিলা, স্ত্রী, মেয়ে, ললনা, মানবী
২৬. নিজ — আপন, স্বীয়, স্বয়ং, নিজস্ব, ব্যক্তিগত
২৭. নিত্য — সতত, সর্বদা, প্রত্যহ, নিয়মিত, রোজ
২৮. নিদ্রা — ঘুম, বিশ্রাম, রাতের অবসান, অসাড়
প-বর্গ (প/ফ/ব/ভ/ম)
১. পরিবর্তন — বদল, পাল্টানো, সংস্কার, সংশোধন
২. পানি — জল, বারি, সলিল, নীর, পয়ঃ
৩. পৃথিবী — ভুবন, জগৎ, ধরনী, ধরা, বিশ্ব
৪. পাপ — পাতক, কুলুষ, দুষ্কর্ম, দুষ্কৃতি
৫. পদ্ম — কমল, উৎপল, পঙ্কজ, কুমুদ, শতদল
৬. পর্বত — গিরি, পাহাড়, নগ, অচল, ক্ষিতিধর
৭. পিতা — জনক, জন্মদাতা, বাবা, আব্বা, বাপ
৮. পুত্র — আত্মজ, দুলাল, তনয়, ছেলে, কুমার, পোলা
৯. পাথর — পাষাণ, প্রস্তর, শিলা, কাঁকর, কঙ্কর
১০. পুষ্প — কুসুম, ফুল, রঙ্গনা, প্রসূন
১১. পণ্ডিত — বিদ্বান, বিজ্ঞ, প্রাজ্ঞ, বিশারদ, মনীষী
১২. পতন — পড়া, অধোগতি, অবনতি, ধ্বংস, স্থলন
১৩. পতাকা — কেতন, ঝাণ্ডা, ধ্বজা, নিশান
১৪. পত্নী — বউ, জায়া, সহধর্মিণী, জীবনসাথী, স্ত্রী
১৫. পথ — রাস্তা, সরণি, সড়ক, নির্গমন, রাহা, দ্বার
১৬. পরম — শ্রেষ্ঠ, মহৎ, অত্যন্ত , প্রধান, চরম
১৭. পূর্ণ — পুরা, ভর্তি, সফল, সিদ্ধ, সম্পূর্ণ, সমাপ্ত
১৮. পেলব — কোমল, মৃদু, লঘু, সুন্দর, নিপুণ, নরম
১৯. পেষণ — দলন, মর্দন, বাঁটা, চূর্ণন, পেষা
২০. প্রকৃতি — স্বভাব, চরিত্র, ধর্ম, নিসর্গ
২১. প্রবৃত্তি — অভিরুচি, স্পৃহা, ব্যাপৃত, চেষ্টা, নিয়োগ
২২. প্রভু — মনিব, স্বামী, ঈশ্বর, কর্তা, অধিপতি
২৩. পত্র — পাতা, পল্লব, পত্তর, চিঠি, দ্রব্যাদি
২৪. ফাঁকি — অবহেলা, বঞ্চনা, প্রতারণা, ঠকামি, ভোগা
২৫. বন্ধুত্ব — মৈত্রী, সৌহার্দ, সখ্য, মিতালি, দোস্তি
২৬. বায়ু — হাওয়া, বাতাস, পবন, সমীর, সমীরণ
২৭. বিচিত্র — বিভিন্ন, রকমারি, রকমফের, বিবিধ, নানান
২৮. বিশৃঙ্খল — ব্যতয়, গোলমাল, গোলযোগ
২৯. বৃহৎ — বিশাল, প্রকাণ্ড, মস্ত , বিপুল, বড়
৩০. বন — অরণ্য, অটবী, জঙ্গল, কানন, বনানী, বনভূমি
৩১. বন্ধু — সখা, মিত্র, সুহৃদ, বান্ধব, স্বজন, প্রিয়জন
৩২. বৃক্ষ — তরু, মহিরুহ, উদ্ভিদ, গাছপালা
৩৩. বস্ত্র — বসন, পরিধেয়, কাপড়, পোশাক
৩৪. বসন্ত — মধুকাল, রাগ, ঋতুরাজ, মধুমাস
৩৫. বিমান — উড়োজাহাজ, হাওয়াই জাহাজ, আকাশযান
৩৬. বদ — দুষ্ট, মন্দ, অসাধু, অসৎ, কর্কশ, খারাপ
৩৭. বাদ — বাতিল, কথন, ভাষণ, উক্তি, বিয়োগ, ত্যাগ
৩৮. বর — বরণীয়, পতি, স্বামী, জামাই
৩৯. বহু — যথেষ্ট, অধিক, অনেক, প্রচুর, বেশি
৪০. বড় — জ্যেষ্ঠ, ধনী, শ্রেষ্ঠ, শীর্ষ, উচ্চ, মহৎ
৪১. বন্ধ — বাঁধা, আবদ্ধ, রুদ্ধ, যুক্ত, ন্যস্ত , বিন্যস্ত
৪২. বন্যা — প্লাবন, বান, জলচ্ছ্বাস, জোয়ার, কোটাল
৪৩. বশ — অধীন, আয়ত্ত, অধীনতা, বশবর্তিতা
৪৪. বসা — উপবেশন, স্থাপন, সক্রিয় হওয়া
৪৫. বাস্তু — বাসস্থান, বাসগৃহ, বাসভূমি, আবাস
৪৬. বিদ্যুৎ — তড়িৎ, বিজলি, শম্পা, চপলা, চঞ্চলা
৪৭. বিফল — ফলহীন, অচল, নিষ্ফল, অসমর্থ, ব্যর্থ
৪৮. বিচক্ষণ — বহুদর্শী, দূরদর্শী, অভিজ্ঞ, কর্মদক্ষ
৪৯. বিচার — বিবেচনা, যুক্তিপ্রয়োগ, তর্ক, মীমাংসা
৫০. বিধি — নিয়ম, বিধান, আইন, পদ্ধতি, উপায়
৫১. বিয়োগ — বিচ্ছেদ, বিরহ, মৃত্যু, অভাব
৫২. বিরক্ত — বিমুখ, বিপ, অপ্রসন্ন, বিদ্বিষ্ট, ক্ষুব্ধ
৫৩. বিবাহ — বিয়ে, পরিণয়, পাণিগ্রহণ, উদ্বাহ, শাদি
৫৪. ভয় — শঙ্কা, ত্রাস, ভীতি, ডর
৫৫. ভাই — ভ্রাতা, সহোদর, ভাইয়া, ভায়া
৫৬. ভাগ্য — বিধি, কপাল, নসিব, তকদির, নিয়তি
৫৭. ভুল — ভ্রম, ভ্রান্তি , ত্রুটি, প্রমাদ, গলদ, দোষ
৫৮. ভ্রমর — ভোমরা, মৌমাছি, মধুকর, মধুপ, অলি
৫৯. ভগ্ন — ভাঙা, খণ্ডিত, চূর্ণিত, দুমড়ানো, কুঞ্চিত
৬০. ভজন — স্তুতি, আরাধনা, সেবা, প্রশংসা
৬১. ভয়ানক — ভয়ঙ্কর, ভয়াবহ, খুব, ভীষণ
৬২. ভর — অবলম্বন, নির্ভর, সহযোগিতা, ভার
৬৩. ভাব — সত্তা, অস্তিত্ব, স্থিতি হওয়া
৬৪. মাতা — জননী, মা, প্রসূতি, গর্ভধারিণী, জন্মধাত্রী
৬৫. মৃত্যু — মরণ, নিধন, ইন্তেকাল, মহাপ্রস্থান
অন্যান্য বর্ণ
১. রাজা — রাজ্যপাল, নৃপতি, ভূপতি, মহীপাল, সম্রাট
২. রানি — রাজ্ঞী, মহিষী, সম্রাজ্ঞী, রাজমহিষী, বেগম
৩. ঋষি — তপস্বী, মুনি, যোগী, সাধুপুরুষ
৪. ঋদ্ধ — সমৃদ্ধ, উন্নত, পুষ্ট, কল্যাণকর
৫. ঋতু — আর্তব, কাল, মৌসুম, মরশুম
৬. শিক্ষক — গুরু, ওস্তাদ, মাষ্টার, টিচার
৭. হস্তি — হাতি, করী, গজ, দ্বিপ, মাতঙ্গ
৮. হরিণ — মৃগ, কুরঙ্গ, সাঙ্গ, সৃনয়ন
ভিন্নার্থক শব্দ বা সমোচ্চারিত বা প্রায়সমোচ্চারিত শব্দ
যেসব শব্দের উচ্চারণ প্রায় এক কিন্তু বানান ও অর্থ ভিন্ন সেসব শব্দকে সমোচ্চারিত শব্দ বলে। অন্যভাবে বলা যায়, উচ্চারণে অভিন্ন এবং অর্থে ভিন্ন যেসব শব্দ বাংলা ভাষায় ব্যবহৃত হয় তাকে সমোচ্চারিত শব্দ বলে।
লিখতে গেলে আমরা কিছু শব্দের বানান নিয়ে সংশয়ের মধ্যে থাকি। যেসব বানান প্রায় এক কিন্তু অর্থ আলাদা। জাদুর চুড়ি পরে সে প্রতিরাতেই চুরি করতে যায়। চুড়ির স্থান বদল হলে বাক্যের কী হাল হবে! এরা শুধু অর্থকেই ঠিকরাখে না, এরা বাক্যে বসে বাক্যকে সুন্দর ও অলংকারমণ্ডিত করে।
সমোচ্চারিত শব্দের প্রকরণ
১. সমধ্বনি: ণন, শ—ষ—স, উ—ঊ ইত্যাদি দ্বারা শব্দ গঠিত হতে পারে। যেমন: শোনা— সোনা।
২. সমরূপ : যার বানান ও উচ্চারণ এক কিন্তু অর্থ ভিন্ন। যেমন: চাল—চাল, উত্তর—উত্তর, মাথায়—মাথায়।
সমোচ্চারিত শব্দের প্রয়োজনীয়তা
সমোচ্চারিত শব্দ বিভিন্নভাবে বাক্যকে সাহায্য করে থাকে। সমোচ্চারিত শব্দ সঠিক বাক্য ও বাক্যের সঠিক অর্থ রক্ষা করা ছাড়াও অন্যান্য প্রয়োজনীয়তা রক্ষা করে। দেশীয় ভাষাকে সমৃদ্ধ করতে, বক্তৃতার বক্তব্য আকর্ষণীয় করতে, বাক্যকে অলংকারমণ্ডিত করতে, অর্থের বিপর্যয় থেকে বাক্যকে রক্ষা করতে, বাক্যের ভাব— অর্থ রক্ষা করতে, ভুল বানান থেকে রক্ষা করে এবং বাক্যে যমক অলংকার ব্যবহার করতে সাহায্য করে।
কতিপয় শব্দের নমুনা
সমোচ্চারিত শব্দ অর্থ বাক্যরচনা
১
অন্ন (ভাত) — দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্ব গতিতে মানুষের মুখে অন্ন ওঠা দায়।
অন্য (অপর) — সংস্কার, সংস্কার বাদ দিয়ে দুটো অন্য কথা বল।
২
অনু (পশ্চাৎ) — এই দেশে এক সময় স্ত্রীলোকদের মৃত স্বামীর চিতায় অনুগমন করতে হতো।
অণু (ক্ষুদ্রতম অংশ) — এটুকু ভাতে আমার পেটের অণুটুকুও ভরবে না।
৩
অনিষ্ট (ক্ষতি) — অন্যের অনিষ্টের চিন্তা কখনো মনে এনো না।
অনিষ্ঠ (নিষ্ঠাহীন) — লেখা পড়ায় অনিষ্ঠ হলে পাশ করতে পারবে না।
৪
অংশ (ভাগ) — বাপের জমির অংশ মেয়েরাও ছাড়বে না।
অংস (কাঁধ) — বিপদে দূরে সরে না থেকে অংস মেলাও।
৫
অর্ঘ (মূল্য) — তোমার একাজের অর্ঘ দেওয়ার সাধ্য আমার নাই।
অর্ঘ্য (পূজার উপকরণ) — মানুষের জন্য কাজ করলে তারা তোমার পায়ের কাছে অর্ঘ্য সাজাবে।
৬
অশ্ব (ঘোড়া) — শুয়ে পড়ো, অশ্বের মতো দাঁড়িয়ে ঘুমিয়ো না।
অশ্ম (পাথর) — অশ্মে মাথা ঠুকে লাভ নাই, চল বাড়ি যাই।
৭
অশক্ত (দুর্বল) — বিপদে অশক্ত হতে নাই।
অসক্ত (আসক্তিহীন) — বইয়ে অসক্ত হলে ছাত্রজীবন বৃথা হবে।
৮
অনিল (বাতাস) — গুমোট গরমে অনিল এসে প্রাণ জুড়াল।
অনীল (যা নীল নয়) — আকাশ কী কখনো অনীল হয়।
৯
অভ্যাস (বারবার চেষ্টা)— পরীক্ষা কাছে রাত জেগে পড়ার অভ্যাস করো।
অভ্যাশ (নিকট) — অংক অভ্যাস কর, পরীক্ষা অভ্যাশে।
১০
অবধ্য (বধের অযোগ্য) — মানুষ মানুষের অবধ্য।
অবোধ্য (যা বোঝা যায় না) — অবোধ্য তত্ত্ব কথা সব জায়গায় বল না।
১১
অপরিণত (যা পরিণত হয়নি) — অপরিণত বয়সে এ বই পড়ে কিছুই বুঝবে না।
অপরিণীত (অবিবাহিত) — বিধবার ঘরে অপরিণীত দুটো মেয়ে আছে।
১২
অন্ত (শেষ) — সংসারে কাজের অন্ত নাই।
অন্ত্য (যা অন্তে আছে) — অন্ত্যেষ্টি ক্রিয়া শেষেই মানুষের শোক নিঃশেষ হয়ে যায়।
১৩
অন্যন্য (অপরাপর) — অন্যন্যের সঙ্গেই তার ভাল সম্পর্ক আছে।
অন্যোন্য (পরস্পর) — অন্যোন্যের প্রতি ভালোবাসায় মানুষের সুখ।
১৪
অন্নপুষ্ট (ভোজনপুষ্ট) — এ আকালে অন্নপুষ্ট মানুষ নাই।
অন্যপুষ্ট (কোকিল) — কাকের বাসায় কোকিলের ছা অন্যপুষ্ট হয়।
১৫
অবদান (সৎকর্ম) — মুক্তিযোদ্ধাদের অবদান অনস্বীকার্য।
অবধান (মনোযোগ) — স্বাধীনদেশের মান বাড়াতে আমাদের অর্থনৈতিক মুক্তিতে অবদান দিতে হবে।
১৬
অবিরাম (অনবরত) — অবিরাম চেষ্টা মানুষকে সফলতা এনে দেয়।
অভিরাম (সুন্দর) — পোশাকে নয়নাভিরাম সেজো না, মনের দিকে অভিরাম হও।
১৭
অপচয় (ক্ষতি) — সময়ের অপচয় করলে জীবন নষ্ট হয়।
অবচয় (চয়ন) — সবকিছুতেই সৌন্দর্য অবচয়ন করতে হবে।
১৮
অবিনীত (উদ্ধত) — অবিনীত সন্তান মা—বাবার মর্যাদা নষ্ট করে।
অভিনীত (অভিনয় করা হয়েছে)— অনেক সময় নাট্যদলের অভিনীত মঞ্চনাটক দর্শকের মনে আশা জাগায়।
১৯
অজগর (সাপ) — অজগর অলস প্রকৃতির।
অজাগর (নিদ্রা) — মা অজাগর ছেলেকে কোলে নিয়ে বসে আছে।
২০
অপগত (দূরীভূত) — অপরের দুঃখ অপগত করতে জীবন বিলিয়ে দাও।
অবগত (জানা) — দেশসেবা করতে চাইলে দেশ সম্পর্কে অবগত হওয়া চাই।
২১
আদি (মূল) — চর্যাপদ বিাংলার আদি ভাষা।
আধি (মনঃকষ্ট) — আধি গোপন না করে খোলা মেলা আলোচনা করা ভালো।
২২
আশা (ভরসা) — ছাত্রদের উপর দেশের মানুষের অনেক আশা।
আসা (আগমন) — আজ তার বাড়িতে আসা হবে না।
২৩
আবাস (বাসস্থান) — ঢাকা শহরে অনেক মানুষের আবাস নাই, তারা ফুটপথে থাকে।
আভাস (ইঙ্গিত) — পুলিশের আভাসেই চোরটা পালিয়ে গেল।
২৪
আবরণ (আচ্ছাদন) — ছাতার আবরণে রোদ— বৃষ্টি থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
আভরণ (অলংকার) — আভরণের লোভ দেখিয়ে মেয়েদের ঘরে আটকিয়ে রাখা যাবে না।
২৫
আপন (নিজ) — আপন কাজে কেউ ফাঁকি দেয় না।
আপন (দোকান) — আপন থেকে লবণ কিনে আনো।
২৬
আষাঢ় (মাস বিশেষ) — বাংলাদেশে আষাঢ়ে প্রচুর বৃষ্টি হয়।
আসার (প্রবল বৃষ্টিপাত)— আসার বন্যার অন্যতম কারণ।
২৭
উপাদান (উপকরণ) — আমাদের দেশে কৃষি উপাদান সহজলভ্য।
উপাধান (বালিশ) — উপাধানে মাথা রেখে ঘুমাও।
২৮
ওষধি (যে গাছ একবার ফল দিয়ে মারা যায়)— ধান ওষধি গাছ।
ওষধি (ভেষজ উদ্ভিদ) — ওষধির পর্যাপ্ত চাষ বাংলাদেশের জন্য জরুরি।
২৯
কূল (তট) — নদিকূলে বসে সূর্যাস্ত দেখতে ভালো লাগে।
কুল (বংশ) — উঁচুকুল জন্মালেই ভালো মানুষ হওয়া যায় না।
৩০
কাক (পাখি বিশেষ) — কাক কালো হয়।
কাঁখ (কোমর) — কাঁখে কলসি গ্রামীণ বধূর প্রাচীন ছবি।
৩১
কালি (লেখার রং) — কালো কালিতে ভালো লেখা হয়।
কালী (সনাতন ধর্মের দেবী) — কালী শক্তির প্রতীক।
৩২
ক্রীত (কেনা হয়েছে যা) — শ্রমিকেরা ক্রীতদাস নয়।
কৃত (করা হয়েছে যা) — প্রত্যেক মানুষ নিজের কৃতকর্মের ফল ভোগ করে।
৩৩
কপাল (ললাট) —কপাল ভালোমন্দ বলে কিছু নাই কাজ করলে ফল লাভ করা যায়।
কপোল (গণ্ডদেশ) — জ্বর এলে কপোলে হাত দিয়ে তাপমাত্রা বোঝা যায়।
৩৪
খাট (পালঙ্ক) — খাটতো দূরের কথা আমাদের দেশে বহু মানুষের ঘরই নাই।
খাটো (বেঁটে) — আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষ খাটো প্রকৃতির।
৩৫
খুর (পশুর পায়ের তলদেশ) — গরুর খুরের নিচে পা পড়লে মানুষের পা থেতলে যায়।
ক্ষুর (চুল দাড়ি কামাবার অস্ত্রবিশেষ)—এখন ক্ষুরের চেয়ে বে¬ড দিয়েই বেশি মানুষ শেভ করে।
৩৬
গা (শরীর) — কৃষকের গা রোদে পুড়ে তামাটে হয়।
গাঁ (গ্রাম) — গাঁয়ের মানুষ সহজসরল হয়।
৩৭
গাদা (রাশি, স্তুপ) — কৃষক ধান কেটে গাদা দিয়েরাখে।
গাধা (গর্ধভ) — গাধার সামনে মূলা ঝুলিয়ে ভারটানা সহজ।
৩৮
গোকুল (বৃন্দাবন) — কৃষ্ণ গোকুলে বাঁশি বাজায়।
গোকুল (গরুজাতি) — গোকুল আমাদের গৃহপালিত পশু।
৩৯
ঘোড়া (অশ্ব) — ঘোড়ার গায়ে শক্তি বেশি।
ঘোরা (বিচরণ) — রোদে বেশি ঘোরাঘুরি করা স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর।
৪০
চাখড়ি (খড়িমাটি) — চাখড়ি দিয়ে কাপড়ে দাগকাটা যায়।
চাকরি (বেতনের বিনিময়ে কাজ)— চাকরিতে স্বাধীনতা নাই।
৪১
চাল (ঘরের চালা) — গ্রামেও এখন আর খড়ের চালের প্রচলন নাই।
চাল (চাউল) — চালের বাজারে এখন সরকারের কোন নিয়ন্ত্রণ নাই।
৪২
চির (দীর্ঘকাল) — চিরদিন কেউ বেঁচে থাকে না।
চীর (ছেঁড়া কাপড়) — চীর হলেও পরিষ্কার করে পরতে হয়।
৪৩
ছার (অধম) — সে আবার কোন ছার, তাকে কুর্নিশ করতে হবে।
ছাড় (অনুমতি) — অশালীন সিনেমা প্রদর্শণীয় ছাড়পত্র বাতিল করতে হবে।
৪৪
ছাদ (আচ্ছাদন) — ছাদে উঠলেই চাঁদে যাওয়া যায় না।
ছাঁদ (আকৃতি, গঠন) — পৃথিবীতে নানা ছাঁদের মানুষ দেখা যায়।
৪৫
জল (পানি) — জলের কোন রং নেই।
জ্বল (দীপ্তি) — রাতে ঝোপে ঝোপে জোনাকির আলো জ্বলজ্বল করে।
৪৬
জাম (ফলবিশেষ) — পাকা জামের রস মধুর।
যাম (অংশ) — দিবসের দ্বিতীয় যামে তোমার সঙ্গে দেখা হবে।
৪৭
জিব (জিহ্বা) — কুকুরের জিব দিয়ে লালা পড়ে।
জীব (প্রাণী) — বুদ্ধির জোরেই জীব জগতে মানুষ শ্রেষ্ঠ।
৪৮
জ্যোতি (আলো) — চাঁদের নিজের কোন জ্যোতি নাই।
যতি (ছেদ) — কাজে যতি দেওয়া মানে কাজবন্ধ করা নয়।
৪৯
টিকা (রোগের প্রতিষেধক) — টিকা দিলে অনেক রোগের আক্রমন থেকেরক্ষা পাওয়া যায়।
টীকা (ব্যাখ্যা) — অবোধ্য লেখায় টীকা টিপ্পনি জুড়ে স্পস্ট করতে হয়।
৫০
টেকা (সয়ে থাকা) — দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে গরিব মানুষের টেকা দায়।
টেক্কা (প্রতিযোগিতা) — হস্তশিল্প যন্ত্রশিল্পের সঙ্গে টেক্কা দিয়ে টিকতে পারে না।
৫১
ঠক (ধ্বনিবিশেষ) — ঠকঠক শব্দ করে সে অন্ধকার রাস্তায় হেঁটে চলে।
ঠক (প্রতারক) — ঠক মানুষকে কেউ শ্রদ্ধা করে না।
৫২
ডোল (ভাণ্ড) — ডোলে ধান চাল রাখা হয়।
ঢোল (বাদ্যযন্ত্র) — ঢাক ঢোল বাজিয়ে আসর জমিয়ে নিলো।
৫৩
ডাল (শাখা) — ঝড়ের সময় গাছের ডাল ভেঙ্গে পড়ে।
ডাল (খাদ্যবিশেষ) — গরিবের ডালভাত খেয়ে দিন কাটে।
৫৪
ঢাল (আঘাত প্রতিরোধ করার অস্ত্র)—ঢাল দিয়ে সে তীরের আক্রমণ থেকে নিজেকে রক্ষা করল।
ঢাল (ঢালু জমিবিশেষ) — পাহাড়ের ঢালে ঢালে জুম চাষ হয়।
৫৫
দিন (দিবস) — দিন যেয়ে রাত আসে।
দীন (দরিদ্র) — দীনে দয়া করা মানুষের ধর্ম।
৫৬
দেশ (ভূখণ্ড) — অনেক শহিদের রক্তের বিনিময়ে আমাদের দেশ স্বাধীন হয়েছে।
দ্বেষ (হিংসা) — দ্বেষ মানুষকে ধবংস করে।
৫৭
দীপ (আলো) — মঙ্গলদীপ জ্বালিয়ে শুভ কামনা করা হয়।
দ্বীপ (জলবেষ্টিত স্থলভাগ) — ভোলা বাংলাদেশের বৃহত্তম বদ্বীপ।
৫৮
ধনী (বিত্তশালী) — ধনী মানুষের ধনের লোভ অপরিসীম।
ধ্বনি (আওয়াজ) —১৯৭১ সালে ‘জয়বাংলা’ ধ্বনি রাজাকারদের আতঙ্কিত করে তুলত।
৫৯
ধরা (পৃথিবী) — ধনে ধান্যে ভরা আমাদের এই ধরা।
ধড়া (কটি বস্ত্র) — ধড়া পরে তাকে অসহায় মনে হচ্ছে।
৬০
ধাতৃ (বিধাতা) — মানুষের মাঝেই ধাতৃ নিজেকে লুকিয়ে রাখেন।
ধাত্রী (দাই) — ধাত্রী মা শিশুটিকে লালনপালন করেন।
৬১
নীর (পানি) — বানের নীর মানুষের দুঃখের কারণ।
নীড় (পাখির বাসা) — কোকিল নীড় বানাতে পারে না।
৬২
নিতি (রোজ) — নিতি দিন তোমার কাছে আমার প্রার্থনা।
নীতি (নিয়ম) — দেশ পরিচালনার নীতিই রাজনীতি।
৬৩
নিত্য (প্রতিদিন) — সে নিত্য এখানে আসা যাওয়া করে।
নৃত্য (নাচ) — ছোট শিশুটির নৃত্য সবাইকে মুগ্ধ করেছে।
৬৪
নিরাশ (আশাহীন) — নিরাশ মানুষকে সফল হতে দেয় না।
নিরাস (প্রত্যাখ্যান) — দুর্নীতিকে মানুষ নিরাস করেছে।
৬৫
নিরস্ত্র (অস্ত্রহীন)— ২৫ মার্চ কালরাত্রিতে নিরস্ত্র বাঙালিদের উপর গুলি চালিয়েছে পাকিস্তানি সৈন্য।
নিরস্ত (ক্ষান্ত) — শহিদ হয়েছে তবু যুদ্ধে বাঙালি নিরস্ত হয়নি।
৬৬
প্রদান (দেওয়া) — ভিয়েতনাম সরকার দুজন বাংলাদেশিকে বীরশ্রেষ্ঠ উপাধি প্রদান করেছে।
প্রধান (বড়, শ্রেষ্ঠ) — ভাত বাংলাদেশের প্রধান খাদ্য।
৬৭
পরা (পরিধান) — আদিম মানুষ কাপড় পরত না।
পড়া (পাঠ করা) — বই পড়া মজার কাজ।
৬৮
পান (পাতা বিশেষ) — পাহাড়ে পানের চাষ ভালো হয়।
পান (পান করা) — ধূমপান বদ অভ্যাস।
৬৯
প্রসাদ (অনুগ্রহ) — প্রসাদ নয়, গরিবকে তার প্রাপ্য অধিকার দিতে হবে।
প্রাসাদ (বড় দালান) — ঢাকা শহরে প্রাসাদের অভাব নাই।
৭০
পালক (পাখির ডানার অংশ) — পালক পাখিকে শীত ও তাপ থেকে রক্ষা করে।
পলক (মুহূর্ত, অল্প সময়) — পারমাণবিক বোমা এক পলকে আমাদের পৃথিবীকে ধবংস করে দিতে পারে।
৭১
পরভৃত (কোকিল) — বসন্তে পরভৃত ডাকে।
পরভৃৎ (কাক) — পরভৃৎ কাকা করে।
৭২
ফি (প্রত্যেক) — ফিবছর আমরা নববর্ষ উদযাপন করি।
ফি (বেতন) — ফি বৃদ্ধি করে শিক্ষাকে পণ্য বানানো হচ্ছে।
৭৩
বর্ষা (ঋতুবিশেষ) — বর্ষাকালে মাঠঘাট পানিতে ভরে যায়।
বর্শা (অস্ত্রবিশেষ) — বর্শার আঘাতে মানুষের মৃত্যু হয়।
৭৪
বান (বন্যা) — বানভাসী মানুষের পাশে দাঁড়াও।
বাণ (শর) — বানবিদ্ধ হরিণ শাবক ছটফট করতে করতে মারা গেল।
৭৫
বল (শক্তি) — খাদ্য শরীরের বল বৃদ্ধি করে।
বল (খেলার বল) — চার বছর পরপর বিশ্বকাপ ফুটবল খেলা অনুষ্ঠিত হয়।
৭৬
বিনা (ব্যতীত) — বিনা কারণে কার্য হয় না।
বীণা (বাদ্যযন্ত্র) — বীণার সুরে মানুষ আনন্দ পায়।
৭৭
বিষ (গরল) — আর্সেনিক এক প্রকার বিষ।
বিশ (কুড়ি) — বিশ টাকায় এখন এক কেজি আলুও কিনতে পাওয়া যায় না।
৭৮
ভাষণ (উক্তি, কথন, বক্তব্য) — মিথ্যা ভাষণে মানুষকে আর বিভ্রান্ত করা যাবে না।
ভাসন (দীপ্তি) — সূর্যের আলয় সোনা ভাসন ছড়ায়।
৭৯
ভারা (স্তূপাকার) — ধান কাটা শেষে চাষিরা ভারা করে রাখে।
ভাড়া (মাশুল) — এখন বাসের ভাড়াও মানুষের অসহনীয়।
৮০
মন (অন্তর, হৃদয়) — মনই মানুষের শ্রেষ্ঠ সম্পদ।
মণ (চল্লিশ সের) — পরিমাপের জন্য এখন আর মণ ব্যবহার করা হয় না।
৮১
মাস (ত্রিশ দিন) — বারমাস সে এখানে থাকে।
মাষ (কলাই) — মাষকলাই ডাল খেতে ভালো।
৮২
মুখ (বদন) — পাকিস্তানের বিরুদ্ধে জিতে ক্রিকেটাররা বাংলাদেশের মুখ উজ্জ্বল করেছে।
মুক (বোবা) — মুক মানুষ কথা বলতে পারে না।
৮৩
মরা (মৃত) — মরা মানুষ পানিতে ভেসে ওঠে।
মড়া (শবদেহ) — মড়াকে তাড়াতাড়ি সৎকার করাই ভালো।
৮৪
মূর্খ (জ্ঞানহীন) — মূর্খ মানুষের কান্ডজ্ঞান থাকে না।
মুখ্য (প্রধান) — মেধা নয়, টাকাই শিক্ষা গ্রহনের জন্য মুখ্য বিষয় হয়ে দাড়িয়েছে এখন।
৮৫
মোড়ক (আচ্ছাদন) — বিজ্ঞাপনের মোড়কে পন্যের গুণ বোঝা যায় না।
মড়ক (মহামারি) — আগে মড়ক লেগে গ্রামের পর গ্রাম উজাড় হয়ে যেত।
৮৬
যোগ্য (উপযুক্ত) — মন্ত্রীর ছেলে চোর যোগ্য বাপের যোগ্য পুত্র বটে।
যজ্ঞ (যাগ, উৎসব) — বিজয় দিবস বাঙালিদের মিলনযজ্ঞ।
৮৭
রচক (রচয়িতা) — রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আমাদের জাতীয় সঙ্গীতের রচক।
রোচক (উপভোগ্য) — মুখরোচক হলেই খাদ্য পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ হয় না।
৮৮
রাধা (রাধিকা) — রাধা কৃষ্ণের লীলা বৈষ্ণব মতে ভগবত লীলা।
রাঁধা (রন্ধন করা) — যে ভাতরাঁধে সে চুলও বাধে।
৮৯
লক্ষ (সংখ্যা বিশেষ) — লক্ষ লক্ষ মানুষ মাঠে নেমেছে।
লক্ষ্য (দৃষ্টি, উদ্দেশ্য, গন্তব্যস্থল) — স্বাধীনতা পরবর্তী সংবিধানই আমাদের লক্ষ।
৯০
লব্ধ (লাভ করা) — জ্ঞানলব্ধ মানুষ পথ চিনতে ভুল করে না।
লুব্ধ (আকৃষ্ট) — মানুষের পোশাক দেখে অনেকেই লুব্ধ হয়।
৯১
লক্ষণ (চিহ্ন) — নিয়মিত লেখাপড়া করা ভালো ছাত্রের লক্ষণ।
লক্ষ্মণ (রামের ভাই) — রাম লক্ষ্মণ সহোদয়।
৯২
শক্ত (কঠিন) — কাদা মাটি নরম হলেও গুড়িয়ে ইট শক্ত হয়।
সক্ত (আসক্ত) — মাদকাসক্ত সন্তান মা— বাবার কষ্টের কারণ।
৯৩
শয্যা (বিছানা) — শয্যা বিছিয়ে সে ঘুমিয়ে গেলো।
সজ্জা (সাজ) — বর সজ্জায় তাকে বেশ মানিয়েছে।
৯৪
শীত (শীতল) — উত্তরবঙ্গে শীত বেশি পড়ে।
সিত (সাদা) — সিত কাগজে ইচ্ছামত লেখা হয় না।
৯৫
শব (মৃতদেহ) — সব ধর্মেই শব সৎকারের কথা আছে।
সব (সকল) — সব মানুষের মুখে ভাত যোগানোর দায়িত্ব সরকারের।
৯৬
শিকার (মৃগয়া) — শিকার করা অনেক মানুষের শখ।
স্বীকার (মেনে নেওয়া) — ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি সৈন্য পরাজয় স্বীকার করে।
৯৭
সর্গ (অধ্যায়) — বইটি পাঠ সর্গে সাজানো।
স্বর্গ (বেহেশত) — মাতৃভূমি মানুষের কাছে স্বর্গের সমান।
৯৮
সহিত (সঙ্গে) — পণ্যের সহিত ফ্রি দেওয়া বিক্রয় কৌশল।
স্ব—হিত (নিজ কল্যাণ) — পাগলেও স্ব-হিত বোঝে।
৯৯
সাড়া (সংকেত) — বিড়ালের সাড়া পেয়ে ইঁদুরটি পালিয়ে গেল।
সারা (সমাপ্ত) — কাজ সারা হলেই ঘরে ফিরব।
১০০
সাক্ষর (শিক্ষিত, অবদান) — আমাদের দেশে সাক্ষর মানুষ কম।
/সাহিত্যে তিনি সাক্ষর রেখেছেন।
স্বাক্ষর (নামসই) — আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষই স্বাক্ষর করতে জানে না।
১০১
হুতি (হোম) — পুরোহিত অগ্নিতে সৃতাহুতি দিয়ে মন্ত্র পাঠ শুরু করলেন।
হূতি (আহবান) — শ্রমিক অহূতিতে আগামিকাল ধর্মঘট।
১০২
হাড় (অস্তি) — হাড়ই সম্বল, তার শরীরে মাংস নাই বললেই চলে।
হার (পরাজয়) — প্রতিদ্বন্দ্বীদের মধ্যে শেষ পর্যন্ত কাউকে না কাউকে হার মানতেই হয়।
১০৩
হাঁস (হংস) — হাঁস পানিতে সাতাঁর কাটে।
হাস (হাসি) — হাসতে পারলে মন ভালো থাকে।
বিপরীতার্থক শব্দ /Antonym
প্রদত্ত শব্দ বা মূলশব্দের বিপরীত অর্থ প্রকাশক শব্দকে বিপরীত শব্দ বলে। অথবা একটি শব্দের অর্থ যদি তার বিপরীত বা উল্টো বা নাবোধক হয় তাহলে সেই শব্দকে বিপরীত শব্দ বলে। অন্যভাবে বলা যায়, পরস্পর বিপরীত ভাবার্থক দুটো শব্দকেই বিপরীত শব্দ বলে।
ড. সুনীতিকুমারের মতে, দুটি শব্দের অর্থ পরস্পর বিপরীত হইলে, শব্দ দুটিকে বলা হয় বিপরীতার্থক শব্দ।
ড. সুকুমার সেনের মতে, কোন শব্দ অন্য একটি শব্দের বিপরীত অর্থ প্রকাশ করলে সে শব্দ দুটিকে পরস্পরের বিপরীতার্থক বা বিপরীত শব্দ বলে।
বিপরীত শব্দের প্রয়োজনীয়তা
বিপরীত শব্দ বিভিন্নভাবে সাহায্য করে থাকে। যেমন : বিপরীত শব্দ বাক্যকে সুন্দর, স্পষ্ট, শ্রুতিমধুর করে। বাক্যের গুণ বা যোগ্যতা বজায় রাখতে সহায়তা করে। এবং মনের ভাব যথাযথভাবে অল্প কথায় প্রকাশ করতে সহায়তা করে। যেমন: ‘লোকটির স্বভাব ভালো না’ বাক্যটি যেমন সৌন্দর্য বহন করে তারচে বেশি সৌন্দর্য বহন করে যদি বলি—লোকটি মন্দ স্বভাবের। তাই সরাসরি না শব্দটি ব্যবহার না করে বিপরীত শব্দ ব্যবহার করে বাক্যের সৌন্দর্য বজায় রাখা যায়।
বিপরীত শব্দ গঠন করার নিয়ম
বিভিন্নভাবে একটি শব্দের বিপরীত শব্দ গঠিত হয়। যেমন :
১. একটি শব্দের হুবহু বিপরীত শব্দ গঠিত হয়। যেমন : ভালো-মন্দ।
২. বিপরীত শব্দ বিশেষভাবে নাবোধক অর্থ প্রকাশ করে। যেমন : ভালো—মন্দ, সবর—নীরব।
৩. শব্দের উৎপত্তি অনুসারে বিপরীত শব্দ হয়। যেমন:
ক) সংস্কৃত ও সংস্কৃত শব্দের বিপরীত শব্দ হয়। যেমন : স্বেত—কৃষ্ণ।
খ) তদ্ভব ও তদ্ভব শব্দের বিপরীত শব্দ হয়। যেমন : সাদা—কালা।
গ) বিদেশি ও বিদেশি শব্দের বিপরীত শব্দ হয়। যেমন : ইহকাল—পরকাল।
৪. শব্দশ্রেণি অনুসারে বিপরীত শব্দ হয়। যেমন:
ক) বিশেষ্য ও বিশেষ্য শব্দের বিপরীত শব্দ হয়। যেমন : দিন—রাত।
খ) বিশেষণ ও বিশেষণ শব্দের বিপরীত শব্দ হয়। যেমন : ভালো—মন্দ, সবর—নীরব।
গ) ক্রিয়া ও ক্রিয়া শব্দের বিপরীত শব্দ হয়। যেমন : হাসি—কান্না।
ঘ) ক্রিয়াবিশেষণ ও ক্রিয়াবিশেষণ শব্দের বিপরীত শব্দ হয়। যেমন : প্রকাশ্যে—গোপনে।
৫. শব্দের গঠন অনুসারে বিপরীত শব্দ হয়। যেমন:
ক) একটি শব্দের পূর্বে উপসর্গযুক্ত হয়ে বিপরীত শব্দ গঠিত হয়। যেমন : সুঅভ্যাস—কুঅভ্যাস।
খ) নরচিহ্ন ও নারী চিহ্ন বা নারী চিহ্ন ও নরচিহ্ন অনুসারে বিপরীত শব্দ গঠিত হয়। যেমন : ছেলে—মেয়ে, স্ত্রী—পুরুষ।
গ) কারক অনুসারে বিপরীত শব্দ গঠিত হয়। দুটি শব্দের কারক অক্ষুণ্ন থাকবে। যেমন : প্রভাতে-সন্ধ্যায় (অধিকরণ), আসলকে-নকলকে (কর্ম) যত্নে-অবহেলায় (করণ), নিজের-পরের (সম্বন্ধপদ)
ঘ) শব্দের পরে বা আগে শূন্য, না, বি, বে, অ, ছাড়া, হারা, হীন, বিহীন যুক্ত হয়ে বিপরীত শব্দ হয়। যেমন : যুক্তিপূর্ণ—যুক্তিশূন্য, জানা—না জানা, খোঁজ—নিখোঁজ, বিপদ—বিপদহীন।
নিয়ম অনুসারে নমুনা
উপসর্গযোগে হাঁবোধক—নাবোধক
১. অ : কারণে—অকারণে, বাধ্য—অবাধ্য, ভদ্র—অভদ্র, ব্যয়—অব্যয়, পুষ্টি—অপুষ্টি
২. অন : অভিজ্ঞ—অনভিজ্ঞ, আদর—অনাদর, অবসর—অনবসর, ন্যায়—অন্যায়
৩. অনু—বি : অনুরাগ—বিরাগ, অনুরক্ত—বিরক্ত
৪. অনু—প্রতি : অনুকূল—প্রতিকূল, অনুলভ—প্রতিলভ
৫. আ—প্র : আদান—প্রদান
৬. আ—নির : আনন্দ—নিরানন্দ/বেদনা, আশা—নিরাশা, আগমন—নির্গমন
৭. আ—ব : আকর্ষণ—বিকর্ষণ
৮. অতি—অনা : অতিবৃষ্টি—অনাবৃষ্টি
৯. অভি—নির : অভিমান—নিরভিমান
১০. উৎ—অপ : উৎকর্ষ—অপকর্ষ, সংস্কৃতি—অপসংস্কৃতি
১১. না : মঞ্জুর—নামঞ্জুর, লায়েক—নালায়েক, জায়েজ—নাজায়েজ, হক—নাহক
১২. নির /নিঃ : দোষি—নির্দোষ, ধনি—নির্ধন
১৩. বি : তর্ক—বিতর্ক, পক্ষে—বিপক্ষে, মূর্ত—বিমূর্ত, স্মৃতি—বিস্মৃতি
১৪. বে : আদব—বেয়াদব, কায়দা—বেকায়দা, দখল—বেদখল, সরকারি —বেসরকারি,
রসিক—বেরসিক, দরদি—বেদরদি, সামাল—বেসামাল, ফাস—বেফাস
১৫. গর : মিল—গরমিল/অমিল
১৬. সু—কু : সুঅভ্যাস—কুঅভ্যাস
১৭. স্ব—কু : স্বভাব—কুভাব
১৮. সু—দুঃ : সুসময়—দুঃসময়, সুশাসন—দুঃশাসন
১৯. স—দুঃ/দুর : সবল—দুর্বল
২০. স—অ : সসীম—অসীম, সম্ভব—অসম্ভব, সবাধ্য/বাধ্য—অবাধ্য, স্বচ্ছ—অস্বচ্ছ,
সম্মান—অসম্মান, সক্ষম—অক্ষম, সচল—অচল
২১. স—নি : সদয়—নির্দয়, সবাক—নির্বাক, সাক্ষর—নিরক্ষর, সলাজ—নিলাজ
২২. সং/সম—বি : সংযুক্ত—বিযুক্ত, সংশ্লিষ্ট—বিশ্লিষ্ট
২৩. সং/সম—প্রসা : সংকুচিত—প্রসারিত
২৪. যুগল শব্দে : সত্য—মিথ্যা, জীবিত—মৃত, বেহেস্ত —দোজখ, স্বর্গ—নরক, আকাশ—পাতাল
২৫. ভিন্নশব্দ
দিয়ে : অগ্র—পশ্চাৎ, অগ্রিম—বকেয়া, অতীত—ভবিষ্যত, ভেতর /অন্তর—বাহির,
আলো—অন্ধকার, সুন্দর—কুৎসিত/অসুন্দর, উত্থান—পতন, শত্রু—মিত্র,
মূর্খ—জ্ঞানি, থামা—চলা।
২৬. শূন্য, হীন,
না, ছাড়া,
হারা, বিহীন
ইত্যাদি যোগে : যুক্তিপূর্ণ—যুক্তিশূন্য, জানা—না জানা, খোঁজ—নিখোঁজ, পূন্যবান—পূন্যহীন,
শূন্য/খালি—পূর্ণ/ভরাট, বিপদ—বিপদহীন।
২৭. পর্যায়মূলক
বিপরীত শব্দ : ছোট—বড়, ধনি—গরিব, উঁচু—নিচু, না গরম—না ঠান্ডা/গরমও নয়, ঠান্ডাও নয়, খুব গরমও নয়, খুব ঠান্ডাও নয়।
নমুনা
মূলশব্দ বিপরীত শব্দ মূলশব্দ বিপরীত শব্দ মূলশব্দ বিপরীত শব্দ
অগ্র পশ্চাৎ অদৃশ্য দৃশ্য অমৃত গরল
অধম উত্তম অন্তরালে প্রকাশ্যে অগ্রজ অনুজ
অধঃ ঊর্ধ্ব অবিকৃত বিকৃত অনুরাগ বিরাগ
আদায় অনাদায় অগ্রসর পশ্চাদপ সরণ অন্তর বাহির
অনুলম প্রতিলম অল্পবয়স্ক পরিণতবয়স্ক অনুগ্রহ নিগ্রহ
আলো অন্ধকার আলোকে অন্ধকারে আকর্ষণ বিকর্ষণ
আজগুবি সত্য আশা নিরাশা আচার অনাচার
আসা যাওয়া আত্মীয় অনাত্মীয় ইতি শুরু
উৎকর্ষ অপকর্ষ ঐচ্ছিক অনৈচ্ছিক ঈর্ষা প্রীতি
অস্ত উদয় ওখানে এখানে উৎকৃষ্ট নিকৃষ্ট
উপসর্গ অনুসর্গ ক্ষীণা স্থুলা খোঁজ নিখোঁজ
চয়ন অপচয়ন টানা ঠেলা
খুঁত নিখুঁত চপল গম্ভীর টাটকা বাসি
গুরু লঘু ছেঁড়া ভালো ঠান্ডা গরম
গোপনীয় প্রকাশ্য জাগ্রত সুপ্ত ত্যাগ গ্রহণ
বিষ অমৃত মৌলিক যৌগিক শ্রেষ্ঠ নিকৃষ্ট
সঞ্চয় খরচ হায়াত মউত হাল সাবেক
স্বার্থ পরার্থ হাসা/হাসি কান্না হরণ পূরণ
বাক্যসংকোচন /এককথায় প্রকাশ
বাক্যসংকোচন হলো বহুপদের সমষ্টিতে একটি পদ। বহুপদকে একপদে পরিণত করাকে বাক্যসংকোচন বলে। অথবা কথার অর্থপূর্ণ সংকোচিত ভাবই বাক্যসংকোচন। মানুষের মনে ভাবের সীমা নাই। আর এই ভাবকে ভাষায় প্রকাশ করে মানুষ তার ভাব-আবেগ-প্রয়োজন আর কর্তব্য পূরণ করে। বাক্যসংকোচনের মাধ্যমে ভাবগুলো সহজে প্রকাশ করা যায়। অর্থাৎ বক্তব্য সংক্ষিপ্ত করার জন্য বাক্যের বহুপদকে একপদে পরিণত করাকে বাক্য সংকোচন বলে। যেমন: এক সঙ্গে যারা যাত্রা করে —সেটিকে আমরা এককথায় বলি ‘সহযাত্রী’।
বাক্যসংকোচনের প্রয়োজনীয়তা
অল্পকথায় মনের ভাব প্রকাশ করতে, কথাকে সহজ, সংক্ষিপ্ত, শ্রুতিমধুর ও শক্তিশালী করতে, নতুন শব্দ তৈরি করতে এবং সময় বাঁচাতে বাক্যসংকোচনের গুরুত্ব অনেক।
বাক্যসংকোচনের নিয়ম
বিভিন্ন নিয়মের মাধ্যমে বাক্যসংকোচন করা যায়। যেমন:
১. প্রত্যয়যোগে : যা চলছে—চলন্ত (কৃৎ প্রত্যয়—চল+অন্ত), বেনারসের তৈরি—বেনারসি (তদ্ধিত প্রত্যয়—বেনারস+ই)।
২. সমাসযোগে : জায়া ও পতি—দম্পতি (দ্বন্দ্ব সমাস), ত্রি ভুজের সমাহার—ত্রিভুজ (দ্বিগু সমাস), মহান যে নবি—মহানবি (কর্মধারয় সমাস), চিরকাল ব্যাপিয়া সুখি—চিরসুখি (দ্বিতীয়া তৎপুরুষ সমাস), দশ আনন যার—দশানন (বহুব্রিহী সমাস), মরণ পর্যন্ত— আমরণ (অব্যয়ীভাব সমাস), অন্য+ দেশ— দেশান্তর (নিত্যসমাস)।
৩. উপসর্গযোগে : বৃষ্টির অভাব—অনাবৃষ্টি (অনা+বৃষ্টি)।
৪. অনুকার শব্দযোগে : নূপুরের ধ্বনি—নিক্কণ।
৫. ভিন্ন শব্দযোগে : লোক গণনা — আদমশুমারী।
বাক্যসংকোচনের কিছু নমুনা
অ
অনুকরণ করবার ইচ্ছা — অনুচিকীর্ষা
অনুকরণ করা যায় এমন — অনুকরণীয়
অনুমানের যোগ্য — অনুমেয়
অনুষ্ঠানের যোগ্য — অনুষ্ঠেয়
অনুসন্ধান করবার ইচ্ছা — অনুসন্ধিৎসা
অনুকরণ করতে ইচ্ছুক — অনুচিকীর্ষু
অনুসরণ করা হয়েছে এমন — অনুসৃত
অতি উচ্চ হাসি— — অট্টহাস্য
অত্যন্ত প্রফুল্ল — উৎফুল্ল
অহনের অপর ভাগ — অপরাহ্ণ
অন্বেষণ করা হয়েছে যার — অন্বিষ্ট
অর্ধেক সম্মত — নিমরাজী
আ
আকাশ পৃথিবীর সঙ্গে যেখানে মিশেছে — দিগবলয়, চক্রবাল
আট মাসে জন্মেছে যে — আটাশে
আগামিকালের পরের দিন — পরশ্ব, পরশু
আঙুলে পরার অলংকার — অঙ্গুরীয়
আপনাকে কেন্দ্র করে যার চিন্তা — আত্মকেন্দ্রিক
ই
ইন্দ্রের অশ্ব — উচ্চৈঃশ্রবা
ইন্দ্রের সারথি — মাতলি
ইতিহাস জানেন যিনি — ঐতিহাসিক
ইতিহাস বিষয়ে অভিজ্ঞ যিনি — ইতিহাস বেত্তা
ঈ
ঈষৎ উষ্ণ — কবোষ্ণ, কদুষ্ণ
ঈষৎ মধুর — আমধুর
ঈশ্বরের অস্তিত্বে বিশ্বাসী — আস্তিক
ঈশ্বর-প্রেরিত দূত — পয়গম্বর
ঈষৎ বক্র — বঙ্কিম
ঈষৎ পাণ্ডুবর্ণ — ধূসর
উ
উপকার করার ইচ্ছা — উপচিকীর্ষা
উপকার করতে ইচ্ছুক — উপচিকীর্ষু
উপকারে বিনিময়ে উপকার — প্রত্যুপকার
উড়তে পারে যে — উড়ুক্কু
উচ্ছিষ্ট নয় যা — অনুচ্ছিষ্ট
উদগিরণ করা হয়েছে যা — উদগীর্ণ
উষ্ণতা পরিমাপের যন্ত্র — তাপমান
ঊ
ঊর্ধ্ব ও বক্রভাবে যা গমন করে — তরঙ্গ
ঊর্ধ্ব থেকে নিম্নে গমন — অবতরণ
ঋণ গ্রহণ করে যে — অধমর্ণ
ঋ
ঋণ দান করে যে — উত্তমর্ণ
এ
একই গুরুর শিষ্য — সতীর্থ
একই মায়ের পুত্র — সহোদর
একই সময়ে বর্তমান — সমসাময়িক
একান্ত গুপ্ত — নিগুঢ়
একটি পক্ষের প্রতি অতিরিক্ত আকর্ষণ — পক্ষপাত
একই অর্থবিশিষ্ট শব্দ — প্রতিশব্দ
ঐ
ঐশ্বর্যের অধিকারী — ঐশ্বর্যবান
ঔ
ঔষধ পাওয়া যায় যেখানে — ঔষধালয়
ও
ওজন পরিমাপের যন্ত্র — তুলাদণ্ড
ওষ্ঠ ও অধর — ওষ্ঠাধর
ক
ক্ষমা করবার ইচ্ছা — তিতিক্ষা
ক্ষমার যোগ্য — ক্ষমার্হ
কর্ণ পর্যন্ত — আকর্ণ
কণ্ঠ পর্যন্ত — আকণ্ঠ
কোকিলের ডাক — কুহু
খ
খাবার ইচ্ছা — বুভুক্ষা
খেয়া পার করে যে — পাটনি
খেলায় পটু যে — খেলোয়াড়
খরচের হিসাব নাই যার — বেহিসাবি
গ
গৃহে থাকে যে — গৃহস্থ
গভীর রাত্রি — নিশীথ, নিশুতি
গভীর নিদ্রায় মগ্ন — নিষুপ্ত
ঘ
ঘামের দ্বারা সিক্ত — ঘর্মাক্ত
ঘোরানো হচ্ছে যা — ঘূর্ণ্যমান
ঘাম ঝরছে যার — গলদঘর্ম
ঘর নাই যার — হা ঘরে
ঘণ্টাধ্বনিতে যে সময় নির্দেশ করে — ঘড়িয়াল
চ
চক্ষুর প্রসাধন দ্রব্য — অঞ্জন
চোখে যা দেখা যায়
বা চক্ষুর দ্বারা যা দৃষ্ট বা লব্ধ — চাক্ষুষ
চিরকাল মনে রাখার যোগ্য — চিরস্মরণীয়
চোখের পাতা — নিমিষ, নিমেষ, পলক
চক্ষুর দ্বারা গৃহীত — গোচর
চক্ষুর সম্মুখে — প্রত্যক্ষ
চিত্রের অবিকল নকল — প্রতিচিত্র
চার খণ্ডে চেরা — চৌচির
ছ
ছবি আঁকার বস্ত্র — চিত্রপট
ছবি আঁকে যে — চিত্রকর
ছল করে কান্না — মায়াকান্না
ছড়াছড়ির ফলে নষ্ট হবার অবস্থা — ছয়লাপ
ছেদনের যোগ্য — ছেদ্য, ছেদনীয়
জ
জয় করবার ইচ্ছা — জিগীষা
জানবার ইচ্ছা — জিজ্ঞাসা
জলে চরে যে — জলচর
জয় উপলক্ষে নির্মিত স্তম্ভ — জয়স্তম্ভ
ঝ
ঝন ঝন শব্দ — ঝনৎকার
ঝাড়ামোছা করা হয় যার দ্বারা — ঝাড়ন
ট
টলে পড়ে যাবার মতো অবস্থা — টলায়মান
টোল পড়েনি যাতে — নিটোল
ঠ
ঠাকুরের পূজার মণ্ডপ — ঠাকুর দালান
ঠাকুরের ভাব — ঠাকুরালি
ঠেঙিয়ে যারা দুস্যুতা করে — ঠ্যাঙাড়ে
ড
ডুব দিতে পটু — ডুবুরি
ডানা আছে যার — পক্ষী
ডানার অভ্যন্তর — পক্ষপটু
ঢ
ঢাকের প্রবল আওয়াজ — ঢক্কানিনাদ
ত
তরঙ্গ আছে যার — তরঙ্গিণী
তন্তু বয়ন করে যে — তন্তুবায়
তিন কালের ঘটনা যিনি দেখতে পান — ত্রিকালদর্শী
তলস্পর্শ করা যায় না — অতলস্পর্শী
দ
দেখবার ইচ্ছা — দিদৃক্ষা
দেখতে ইচ্ছুক — দিদৃক্ষু
দূর করা হয়েছে যাকে — দূরীকৃত
দাড়িগোফ জন্মায়নিক যার — অজাতশ্মশ্রু
দেশকে ভালবাসেন যিনি — দেশপ্রেমিক
দিনের শেষ ভাগ — অপরাহ্ণ
দিনের আলোর রাতের অন্ধকারের সন্ধিক্ষণ — গোধূলি
দিনে যে একবার আহার করে — একাহারী
দান করা উচিত — দাতব্য
দগ্ধ করা যায় না যা — অদাহ্য
ধ
ধনুর দ্বারা যে যুদ্ধ বা শিকার করে — ধানুকী
ধ্যানের যোগ্য যিনি — ধ্যেয়
ধূলায় পরিণত — ধূলিসাৎ
ধূম উদগিরণ করছে যা — ধূমায়মান
ধুনকের শব্দ — টংকার, বিষ্ফার
ধ্যানে মগ্ন যিনি — ধ্যানমগ্ন, ধ্যানস্থ
ন
নিতান্ত দগ্ধ হয় যে সময়ে — নিদাঘ
নাটকের অভিনয় হয় যেখানে — নাট্যশালা
নাই অলংকার যার — নিরলংকার
নয়রত্নের সমাহার — নবরত্ন
নতুন চাল খাবার অনুষ্ঠান — নবান্ন
নীল আভা যার — নীলাভা
প
পঙ্কে জন্মে যে — পঙ্কজ
পান করবার ইচ্ছা — পিপাসা
পরের সৌভাগ্য দেখলে যে কাতর হয় — পরশ্রীকাতর
প্রিয় বাক্য বলে যে নারী — প্রিয়ংবদা
পরস্পর আলিঙ্গন — কোলাকুলি
ফ
ফল পাকলে যে গাছ মরে যায় — রষধি
ফল প্রসব করে যা — ফলপ্রসূ
ফল ভোজন করে যে — ফলাহারী
ব
বৃদ্ধি পাচ্ছে যা — বর্ধিষ্ণু
বশ হয়েছে যে — বশীভূত, বশংগত
বিশেষভাবে জানেন যিনি — বিশেষজ্ঞ
বিজ্ঞান জনেন যিনি — বৈজ্ঞানিক, বিজ্ঞানী
বুদ্ধের উপাসনা করেন যিনি — বৌদ্ধ
বক্রভাবে গমন করে যে — ভুজগ, ভুজঙ্গ, ভুজঙ্গম
বিদেশে থাকে যে — প্রাবাসী
বিরুদ্ধে অভ্যুত্থান — বিদ্রোহ
ভ
ভিক্ষার অভাব — দুর্ভিক্ষ
ভূষণাদির শব্দ — শিঞ্জন, টুংকার
ভ্রমরের শব্দ — গুঞ্জন
ভেতর থেকে গোপনে ক্ষতিসাধন — অন্তর্ঘাত
ভ্রমণ করান হচ্ছে যাকে — ভ্রাম্যমাণ
ভবিষ্যতে যা ঘটবে — ভবিতব্য
ম
মরবার ইচ্ছা — মুমূর্ষা
ময়ূরের কণ্ঠের মতো রং যার — ময়ূরকণ্ঠী
মমতা নাই যার — নির্মম
মুষ্টির দ্বারা পরিমাপের যোগ্য — মুষ্টিমেয়
য
যা বৃদ্ধি পাচ্ছে — বর্ধিষ্ণু
যা ক্ষয় পাচ্ছে — ক্ষয়িষ্ণু
যা নিবারণ করা কষ্টকর — দুর্নিবার
যা চুষে খাবার যোগ্য — চুষ্য, চোষ্য
যা আসবে — আগামী
যা হবে — ভাবি
যা দমন করা যায় না — অদম্য
যা বলা হয়নি — অনুক্ত
র
রাজ্যর সিংহাসন — রাজ্যপাট
রাজপথে যে ডাকাতি করে — রাহাজান
রব শুনে আসে যে — রবাহুত
রাত্রির মধ্যভাগ — মহানিশা
রৌদ্র ও ছায়ার সংযোগ — ধূপছায়া
রুচির যোগ্য — রোচ্য
ল
লাভ করার ইচ্ছা — লিপ্সা
লক্ষ্য করার যোগ্য — লক্ষণীয় [স্ত্রীলোকের]
লাঠি খেলায় যে পটু — লেঠেল, লাঠিয়াল
লুঠ করে যে — লুটেরা
লবণ তৈরি করে যে — লাবণিক
লকলকে জিহ্বা যার — লেলিহান
শ
শুনবার ইচ্ছা — শুশ্রূষা
শত্রুকে বধ করে যে — শত্রুঘ্ন
শুভক্ষণে জন্মেছে যে — ক্ষণজন্মা
শোক নাই যার — অশোক
শিশুকাল থেকে — আশৈশব
শব্দ শুনে যে লক্ষ্যভেদে সমর্থ — শব্দভেদী
শ্রমের দ্বারা যে জীবিকা নির্বাহ করে — শ্রমজীবী
স
সহ্য করা যার স্বভাব — সহিষ্ণু
সরোবরে জন্মে যা — সরোজ, সরসিজ
স্বামী নাই যার — বিধবা
সমুদ্রের গর্জন ধ্বনি — কলল
সাগর সমেত পৃথিবী — সসাগরা-পৃথিবী
সামান্য উষ্ণ — কবোষ্ণ
সহজে যা হজম হয় — সুপাচ্য
সিংহের গর্জন — নাদ
হ
হস্তীর চিৎকার — বৃংহণ, বৃংহিত
হরিণের চামড়া — অজিন
হরণ করার ইচ্ছা — জিহীর্ষা
হৃদয়ে গমন করে যা — হৃদয়ঙ্গম
হাতের লেখা পুস্তকের খসড়া — পাণ্ডুলিপি
হাস্য-রসাত্মক নাটক — প্রহসন
হরণ করতে ইচ্ছুক — জির্হীষু
হৃদয় বিদীর্ণ করে যা — হৃদয়বিদারক
বাগধারা
বাগধারা ভাষায় বিশেষ অর্থে ব্যবহৃত হয় বলে বাগধারা ভাষাকে সুন্দর ও আকর্ষণীয় করে তোলে। বাগধারা বাংলা ভাষার শব্দ ভাণ্ডারকে সমৃদ্ধ করেছে। বাগধারার আছে আলাদা প্রকাশভঙ্গি। বাক্যরীতি থেকে বাগভঙ্গি, সব ক্ষেত্রেই এর নিজস্ব শৈলী। যে শব্দ বা শব্দগুচ্ছ দিয়ে বিশেষ অর্থ প্রকাশ পায় তাকে বাগধারা বলে। বাগধারায় এমন একটি শক্তি আছে যা সাধারণ অর্থে বোঝা যাবে না। যেমন: ‘গোবরগণেশ, বিড়ালতপস্বী, গোবরে পদ্মফুল, ঘোড়ার ডিম, কই মাছের প্রাণ। বাগধারা তিন প্রকারে ভাব প্রকাশ করে থাকে। যেমন:
১. বাচ্যার্থ: শব্দের মুখ্য অর্থকে বাচ্যার্থ বলে। যেমন: ঈশ্বর, নদী, চন্দ্র, সূর্য ইত্যাদি।
২. লক্ষ্যার্থ: যখন কোন শব্দ মুখ্য অর্থ ছাড়া অন্য অর্থ প্রকাশ করে তখন তাকে লক্ষ্যার্থ বলে। যেমন: ‘গোপালের লেখাপড়ার গা নাই’। (গাত্র>গা) ‘গা’ শব্দের মুখ্য হলো দেহ’ কিন্তু এখানে বাচ্যার্থে বা মুখ্যার্থে ব্যবহৃত না হয়ে লক্ষ্যার্থে ব্যবহৃত হয়েছে। এই বাক্যে ‘গা’ শব্দের লক্ষ্যার্থ হলো ‘ইচ্ছা’।
৩. ব্যাঙ্গ্যার্থ: যখন কোনো শব্দ বা শব্দসমষ্টি বাচ্যার্থ বা লক্ষ্যার্থ প্রকাশ না করে অন্য একটি নতুন গভীর ব্যঞ্জনাপূর্ণ অর্থ প্রকাশ করে তখন তাকে ব্যাঙ্গ্যার্থ বলে। যেমন: ‘রমেশ বাবুর ছেলে একটা অকালকুষ্মাণ্ড।’ ‘অকাল-কুষ্মাণ্ডের’ ব্যাঙ্গ্যার্থ হলো ‘অপদার্থ’।
সুতরাং লক্ষ্যার্থ ও ব্যাঙ্গার্থযুক্ত শব্দ বা শব্দসমষ্টি অথবা বাক্যাংশকে বাগধারা বলে।
বাগধারা ও প্রবাদের মধ্যে পার্থক্য দেখাও।
বাগধারা ও প্রবাদের মধ্যে কিছু পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়। যেমন :
১. যে শব্দ বা শব্দগুচ্ছ দিয়ে বিশেষ অর্থ প্রকাশ পায় তাকে বাগধারা বলে। আর বিশেষ অর্থে প্রকাশিত উক্তি বা কথনকে প্রবাদ বলে।
২. বাগধারা লোকমুখ হতে সৃষ্টি হয়েছে। আর প্রবাদ চিন্তাশীল ব্যক্তি ও লেখক হতে সৃষ্টি হয়েছে।
৩. বাগধারা জনপ্রিয় বা ছন্দবদ্ধ উক্তি নয়। আর প্রবাদ জনপ্রিয় বা ছন্দবদ্ধ উক্তি।
৪. বাগধারা হলো অলংকারহীন শব্দ বা শব্দগুচ্ছ। আর প্রবাদ হলো অলংকারসমৃদ্ধ সংক্ষিপ্ত বাক্য।
৫. বাগধারায় পুরো বুদ্ধির ছাপ নাই। আর প্রবাদে পুরো বুদ্ধির ছাপ আছে।
৬. বাগধারার অর্থ অতি সহজে বুঝা যায় না তাই এটি একটু জটিল। আর প্রবাদের অর্থ অতি সহজে বুঝা যায় তাই এটি সহজ সরল, ছন্দবদ্ধ, মিলেবদ্ধ, স্পষ্ট হয়।
বাগধারা গঠন
বিভিন্নভাবে বাগধারা গঠিত হতে পারে। যেমন:
১. বিশেষ্য + বিশেষ্য=গোবর গণেশ
২. বিশেষ্য + বিশেষণ=বকধার্মিক
৩. একাধিক বিশেষ্য + বিশেষণ=কাটা ঘায়ে নুনের ছিটা, এক ঢিলে দুই পাখি মারা
৪. দ্বিত্বক্রিয়া (আ/ই-প্রত্যয় যোগে)=মাখামাখি, নাচানাচি
৫. ক্রিয়া বিশেষণযোগে=গলায় গলায় ভাব
বাগধারার ব্যবহার
বাগধারা অর্থ বাক্যরচনা
অ
অ আ ক খ (সাধারণ জ্ঞান)— এ বিষয়ে তার অ আ ক খ জানা নাই।
অক্কা পাওয়া (মারা যাওয়া)— বৃদ্ধ লোকটি বাসের ধাক্কায় অক্কা পেয়েছে।
অকালকুষ্মাণ্ড (অপদার্থ)—ওকে দিয়ে কিছু হবে না, ও অকালকুষ্মাণ্ড।
অন্ধের যষ্ঠি (একমাত্র অবলম্বন)— যে ছিল মায়ের অন্ধের যষ্ঠি সেও অকালে মারা গেলো।
অমাবস্যার চাঁদ (অদৃশ্য)—রহিম ভালো চাকরি পেয়ে একেবারে অমাবস্যার চাঁদ হয়ে গেছে।
আ
আকাশকুসুম (অসম্ভব কল্পনা)— আকাশকুসুম না ভেবে কাজ করলে ভালো ফল পাওয়া যায়।
আকাশ পাতাল (বড় ব্যবধান) — দুই ভায়ের আচরণ কী আকাশ পাতাল ব্যবধান!
আমড়াকাঠের ঢেঁকি (অপদার্থ)— আমড়াকাঠের ঢেঁকিকে দিয়ে কোন কাজে ভালো ফল আশা করা যায় না।
আষাঢ়ে গল্প (আজগুবি গল্প)— আষাঢ়ে গল্প শুনিয়ে কারো কাছ থেকে উপকার পাওয়ার আশা করো না।
আঙুল ফুলে কলাগাছ (হঠাৎ বড়লোক হওয়া)— অসৎ পথেই আঙুল ফুলে কলাগাছ হওয়া যায়।
ই/ঈ
ইঁচড়ে পাকা (অকালে পাকা)— ইঁচড়ে পাকা ছেলেটি বাবা মায়ের কথা শোনে না।
ইলশেগুঁড়ি (গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি)— সকাল থেকেই শুরু হয়েছে ইলশেগুঁড়ি।
ঈদের চাঁদ (অতি আনন্দ)— হারানো ছেলেকে পেয়ে মা যেন ঈদের চাঁদ পেয়েছে।
উ/ঊ
উত্তম-মধ্যম (প্রহার) — পুলিশ চোরটিকে কিছু উত্তম-মধ্যম দিয়ে ছেড়ে দিলো।
উনিশ-বিশ (সামান্য পার্থক্য)— হারজিতটি উনিশ-বিশে হয়েছে।
উঠে পড়ে লাগা (আদার জল খেয়ে লাগা/প্রাণপন চেষ্টা করা)—একবার ফেল করে ছেলেটি পাশের জন্য উঠে পড়ে লেগেছে।
উনপাঁজুরে (হতভাগ্য)— উনপাঁজুরে লোকটির ভাগ্যে সারা জীবনেও সুখ মিলল না।
এ
এলাহিকাণ্ড (বিরাট ব্যাপার)— তার মেয়ে বিয়ে যেন এক এলাহিকাণ্ড।
এক ঢিলে দুই পাখি (এক প্রচেষ্টায় উভয় উদ্দেশ্য সাধন)— চালাক লোকটি এক ঢিলে দুই পাখি মারল।
ক
কলুর বলদ (পরাধীন)— লোকটি সারা জীবন কলুর বলদের মতো খেটে গেলো।
কড়ায় গণ্ডায় (পুরোপুরি)— পাওনা টাকা তার কাছ থেকে কড়ায় গণ্ডায় বুঝে নিবি।
কান খাড়া করা (সতর্ক হওয়া)—রাস্তাঘাটে কান খাড়া করে চলতে হয়।
গ
গোঁফ খেঁজুরে (খুব অলস)— গোঁফ খেঁজুরে লোক দিয়ে দেশের উন্নতি অসম্ভব।
গোবর গণেশ (অপদার্থ/মূর্খ)— গোবর গণেশ দিয়ে কোন কাজে ভালো ফল আশা করা যায় না।
গোড়ায় গলদ (মূলে ভুল)— অংক মিলবে কী করে, এর তো গোড়ায় গলদ আছে।
গুঁড়েবালি (আশায় নৈরাশ্য)— শেষমেষ সব আশাই গুঁড়েবালি হবে।
ঘ
ঘোড়ার ডিম (মিথ্যা জিনিস/অবাস্তব বস্তু)— এমন লেখাপড়া করলে পরীক্ষায় ঘোড়ার ডিম পাবা।
ঘোড়ার ঘাস কাটা (বাজে কাজ করা)— ঘোড়ার ঘাস কাটো; পরীক্ষায় ভালো করতে পারলে না।
চ
চোখের পর্দা (লজ্জা)— বড় হয়ে কী চোখের পর্দা খেয়েছে?
চোখের মণি (অতি আদরের)— ছেলেটি গরিব মায়ের চোখের মণি।
চোখের বালি (চোখের কাঁটা/চক্ষুশূল)— খারাপ কাজ করে বাবা মায়ের কাছে চোখের বালি হইও না।
চোখ টাটান (হিংসা করা)— অন্যের ভালো দেখে অনেকের চোখ টাটায়।
চোখে সরষে ফুল দেখা/চোখে অন্ধকার দেখা (বিপদ দেখা, হতবুদ্ধি)— সারা বছর না পড়লে চোখে সরষে ফুল /চোখে অন্ধকার দেখতে হয়।
জ/ঝ
জলে কুমির ডাঙায় বাঘ (দুদিকেই বিপদ/উভয় সংকট) — জলে কুমির ডাঙায় বাঘ নিয়ে বাঁচা কষ্টকর।
জিলাপির প্যাঁচ (খারাপ বুদ্ধি)— জিলাপির প্যাঁচ দিয়েও লোকটি বাঁচতে পারল না।
ঝোপ বুঝে কোপ মারা (অবস্থা বুঝে সুযোগ গ্রহণ) — ছেলেটি ঝোপ বুঝে কোপ মেরেই সফল হয়েছে।
ট/ঠ
টনক নড়া (সজাগ হওয়া)— এবার ফেল করে ছেলেটির টনক নড়েছে।
টাকার গরম (অহংকার করা)— টাকার গরম বেশি দিন টেকে না।
টাকার কুমির (বড়লোক)— লোকটি টাকার কুমির কিন্তু হাড়কিপটে।
ঠোঁটকাটা (স্পষ্টবাদী)— সবসময় ঠোঁটকাটা হলে চলে না।
ত
তাসের ঘর (ক্ষণস্থায়ী)— জীবনটি তাসের ঘর তাই সৎ হয়ে চলাই উচিত।
তিলকে তাল করা (ছোটকে বড় করা)— ঘটকরা সবসময় তিলকে তাল করে।
তেলে বেগুনে জ্বলে ওঠা (রেগে যাওয়া)—রগচটা লোকরা সবসময় তেলে বেগুনে জ্বলে ওঠে।
তালপাতার সেপাই (ছোটতে বড় শক্তি)— লোকটি ছোট হলে কী হবে একেবারে তালপাতার সেপাই।
তুষের আগুন (গোপন কষ্ট) —অন্যের ক্ষতি করলে তুষের আগুনে জ্বলতে হয়।
তেলে মাথায় তেল দেয়া (যার আছে তাকে আরো দেয়া) —সবাই তেলে মাথায় তেল দেয়।
দ/ধ/ন
দুধে মাছি (সুসময়ে বন্ধু/বসন্তের কোকিল)— দুধে মাছির মতো বন্ধু হইও না।
দুমোখো সাপ (এক মুখে দুরকম কথা)— দুমুখো সাপকে কেউ পছন্দ করে না।
দুধ কলা দিয়ে সাপ পোষা (যত্নে শত্রু পালা)— দুধ কলা দিয়ে সাপ পুষে লোকটি নিজের ক্ষতি করল।
দশের লাঠি একের বোঝা (সকলে যেটি সহজে করা যায়, একের পক্ষে সেটি বোঝা)— দশে মিলে করি কাজ হারি জিতি নাহি লাজ।
ধামা ধরা (তোষামদী করা)— টাকা থাকলে সবাই ধামা ধরে।
নাকে খৎ (প্রায়শ্চিত্ত করা)— ছেলেটিকে নাকে খৎ দিয়ে ছেড়ে দেয়া হলো।
ননীর পুতুল ((শ্রমবিমুখ/নরম স্বভাবের)— ননীর পুতুলকে দিয়ে কঠিন কাজ হবে না।
নাকে তেল দিয়ে ঘুমানো (নিশ্চিন্ত থাকা)— নাকে তেল দিয়ে ঘুমালে পরীক্ষা ভালো হবে?
প
পটল তোলা (অক্কা পাওয়া/মরে যাওয়া)— বাসের ধাক্কায় সে পটল তুলেছে।
পাকা ধানে মই দেয়া (প্রায় সফল কাজ নষ্ট করা)— পাকা ধানে মই দেয়ার মতো বড় ক্ষতি আর নাই।
পুকুর চুরি (বড় চুরি)— পরীক্ষায় নকল করাও পুকুর চুরি।
পুঁটি মাছের প্রাণ (ক্ষণস্থায়ী)— পুঁটি মাছের প্রাণ নিয়ে বড় কাজ সমাধান করা যাবে না।
ব/ভ
বইয়ের পোকা (খুব বই পড়ায় অভ্যস্ত ব্যক্তি)— আমার মা বইয়ের পোকা।
ব্যাঙের সর্দি (অসম্ভব ব্যাপার)— কৃষকের কষ্ট আর ব্যাঙের সর্দি একই কথা।
বুকের পাটা (দুঃসাহস)— বুকের পাটা থাকে তো কাজটি করে দেখাও।
ভেজা বেড়াল (কপট ব্যক্তি)— লোকটি দেখতে শান্ত হলেও আসলে ভেজা বেড়াল।
ম
মগের মুল্লুক (অরাজকতা)— দেশটি কী মগের মুল্লুক যে যা ইচ্ছা তাই করবে।
মাটির মানুষ (নিরীহ)— আমার মা মাটির মানুষ।
মানিকজোড় (অন্তরঙ্গ ভাব)— মানিকজোড় বলেই তাদের গলায় গলায় ভাব।
হ
হ-য-ব-র-ল (বিশৃংখল)— ভালো ছাত্ররা টেবিলে বই হ-য-ব-র-ল করে রাখে না।
হাতেখড়ি (শুরু/আরম্ভ)— শিশুর লেখা পড়ার হাতেখড়ি মাই দিয়ে থাকেন।
হাতে কলমে (প্রত্যক্ষভাবে)— হাতে কলমে শিক্ষা দেয়াই প্রকৃত শিক্ষা দেয়া।
হাত টান (চুরির অভ্যাস)— লোকটির হাত টানের অভ্যাস আছে।