সূত্রঃ প্রমানিত হাদীস কে জাল বানানোর স্বরুপ উন্মোচন।
মাওলানা মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ বাহাদুর
প্রচলিত জাল হাদিস বইয়ের (মতিউর রহমান লিখিত) ১৮৬ পৃষ্ঠায় লিখছে এটি লােক মুখে হাদীসে কুদসী হিসেবে যথেষ্ট প্রসিদ্ধ। অপরদিকে প্রচলিত জাল হাদিস ৫৬ পৃষ্ঠায় (জুনাইদ বাবুনগরী লিখিত) উক্ত হাদিসটিকে জাল প্রমাণ করার অপচেষ্টা চালিয়েছে।সে আরও লিখেছে, “অথচ হাদিস বিশেষজ্ঞরা এ ব্যাপারে একমত যে, এটি একটি ভিত্তিহীন রেওয়ায়েত, মিথ্যুকদের বানানাে কথা, “রাসূল (ﷺ) এর হাদীসের সাথে এর সামান্যতম সম্পর্ক নেই।”উক্ত প্রচলিত জাল হাদিস বইয়ের ১৮৭ পৃষ্ঠায় আরও উল্লেখ করেছে- “একমাত্র তার খাতিরেই সবকিছু সৃষ্টি করা হয়েছে, ততক্ষণ পর্যন্ত এই আকীদা রাখার সুযােগ নেই যতক্ষণ পর্যন্ত দলীল প্রমাণ না পাওয়া যাবে। অথচ উক্ত বইয়ে সে কোন মুহাদ্দিসের রায় ইবারত সহ উপস্থাপন করতে পারে নি।
তথাকথিত আরেক লেখক ড. আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর তার লিখিত ঈমান বিধ্বংসী বই হাদীসের নামে জালিয়াতি”এর ২৪৭ পৃষ্ঠায় কোন মুহাদ্দিসের মতামত ছাড়া মনগড়া কটি লাইন লিখে দাবী করেছেন হাদিসটি বানােয়াট ও ভিত্তিহীন। তার কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছে الافلاك শব্দে বা বাক্যে কোনাে হাদীসের গ্রন্থে কোনাে প্রকার সনদ বর্ণিত হয়নি। এ হাদিসটিকে অনেক বাতিল পন্থীদের গ্রন্থে জাল বলে আখ্যা দেয়া হয়েছে। তাদের সকলের নামের তালিকা দিয়ে আমি আমার কিতাব দীর্ঘায়িত করতে চাই না। আমি প্রথমে এই বিষয় বস্তুর সমর্থনে কিছু হাদিস উল্লেখ করব,তার পরে সরাসরি الافلاك শব্দসহ রেওয়ায়েত বর্ণনা ও তার ব্যাপারে গ্রহনযােগ্য মুহাদ্দিসদের বক্তব্য উল্লেখ করব এবং এমনকি বাতিল পন্থীদের বক্তবও দলিল হিসেবে উল্লেখ করব।
দলীল নং-১-২৪
প্রথমে যে হাদিস খানা আমি উল্লেখ করছি সে হাদিস সম্পর্কে ড. আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর তার বইয়ের ২৪৮ পৃষ্ঠায় মওদু প্রমানের অনেক অপ্রচষ্টা চালিয়ে সর্বশেষে দ্বঈফ বলেছেন।
অথচ সে নিজেই ২৪৮ পৃষ্ঠায় লিখেন, “ইমাম হাকিম নিশাপুরী হাদিসখানা সংকলন করে বলেছেন হাদিস খানা সহিহ।’ এখন আমার প্রশ্ন হলাে তিনি কী তাহলে ইমাম হাকেমের চেয়েও বড় মুহাদ্দিস হয়ে গেলাে? যে হাদিস বর্ণনা করে বলেন সহিহ আর সে কোন গ্রহণযােগ্য মুহাদ্দীসের মতামত ইবারত উল্লেখ না করে কিভাবে জাল বলার মত দুঃসাহস পেল! উক্ত হাদিস সম্পর্কে আমি সামনে দীর্ঘ আলােচনা করব ইনশাআল্লাহ। হাদিসটি নিম্নরূপঃ
حدثنا أبو سعيد عمرو بن محمد بن منصور العدل، ثنا أبو الحسن محمد بن إسحاق بن إبراهيم الحنظلي، ثنا أبو الحارث عبد الله بن مسلم الفهري، ثنا إسماعيل بن مسلمة، أبا عبد الرحمن بن زيد بن أسلم، عن أبيه، عن جده، عن عمر بن الخطاب رضي الله عنه، قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: ” لما اقترف آدم الخطيئة قال: يا رب أسألك بحق محمد لما غفرت لي، فقال الله: يا آدم كيف
عرفت محمدا ولم أخلقه؟ قال: يا رب، لأنك لما خلقتني بيدك ونفخت في من روحك رفعت راسيي فرايت على قوام العرش مكتوبا لا إله إلا الله محمد رسول الله فعلمت أنك لم تضيف إلى اسمك إنا أحب الخلق إليك، فقال الله: صدقت يا آدم، إنه لأحب الخلق إلي اذعني بحقه فقد غفرت لك ولولا محمد ما خلقتك «هذا حديث صحيح الإسناد وهو اول حدیث ذكرته لعبد الرحمن بن زيد بن أستلم في هذا الكتاب.
-“হযরত উমর ইবনে খাত্তাব (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত রাসূল (ﷺ) ইরশাদ ফরমান হযরত আদম (عليه السلام) যখন অপ্রত্যাশিতভাবে (ইজতেহাদি) ভুল করলেন। তখন,হযরত আদম (عليه السلام) আল্লাহর দরবারে আবেদন করলেন, হে পরওয়ারদিগার, হযরত মুহাম্মদ (ﷺ) এর উসিলায় আমাকে মার্জনা করুন। আল্লাহ রব্বল আলামীন তাকে জিজ্ঞাসা করলেন তুমি মুহাম্মদ (ﷺ) কে কিভাবে চিনেছ? জবাৰে আদম আরজ করলেন, হে আল্লাহ! আপনি স্বীয় কুদরতি হাত দ্বারা আমাকে সৃষ্টি করে আমার দেহের অভ্যন্তরে যখন আত্না প্রবেশ করিয়ে ছিলেন, তখন আমি মাথা উঠিয়ে আরশের পায়ায় লেখা দেখেছিলাম, “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ” আমি বুঝতে পারলাম, আপনি আপন নামের সাথে এমন একটি নাম মিলিয়ে রেখেছেন যােট সমগ্র সৃষ্টি জগতে আপনার নিকট সবচেয়ে প্রিয়। আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন, হে আদম! তুমি সত্য বলেছ। নিশ্চয় ঐ নাম সমগ্র জাহানে আমার কাছে সবচেয়ে প্রিয়। যেহেতু তুমি সেই নাম নিয়েই আমার কাছে প্রার্থনা করেছ, সেহেতু আমি তােমাকে ক্ষমা করে দিলাম। যদি মুহাম্মদ (ﷺ) না হতেন,আমি তােমাকেও সৃষ্টি করতাম না।”
১.ইমাম হাকেম নিশাপুরী-আল মুস্তাদরাক : ২/৪৮৬ পৃ. হাদিসঃ ৪২২৮ ইমাম হাকেম বলেন হাদিসটির সনদ সহিহ
২.ইমাম তাবরানী-মু’জামুল আওসাত : ৬/৩১৩ হাদিসঃ ৬৫০২
৩.তাবরানী-মু’জামুস সগীর : ২১৮২ হাদিসঃ ৯৯২
৪.ইবনে হাজার হায়সামী-মাযমাউদ যাওয়াইদ : ৮/২৫৩ : পৃ.
৫.ইমাম ইবনে আসাকির_তারিখে দামেস্ক : ৭/৪৩৭
৬.আল্লামা ইবনে কাসীর_বেদায়া ওয়ান নেহায়া ১/১৮ পৃ.
৭.ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ুতী_খাসায়েসুল কোবরা, ১১২ হাদিস : ১২
৮.ইমাম বুরহান উদ্দিন হালবী-সিরাতে হালবিয়্যাহ ১৫৫
৯.ইমাম কুস্তালানী-মাওয়াহেবে লাদুনীয়া ১৮২ পূ.
১০.ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ুতি-তাফসীরে দুররে মানসুর ১১৪২ পৃ.
১১.ইমাম বায়হাকী-দালায়েলুল নবুয়ত ৫/৪৮৯
১২.ইমাম হাকেম নিশাপুরী-আল মাদখাল : ১১৫৪
১৩.ইমাম আবু নঈম ইস্পাহানী-হলিয়াতুল আউলিয়া
১৪.আল্লামা শায়খ ইউসুফ নাবহানী-শাওয়াহিদুল হক :১৩৭
১৫,আল্লামা শায়খ ইউসুফ নাবহানী-আনােয়ার-ই-মুহাম্মদিয়া:১-১০
১৬.আল্লামা শাহ আঃ আজীজ মুহাদ্দিস দেহলভী : তাফসীর-ই-আজীজী :১৩
১৭,আল্লামা শায়খ ইউসুফ নাবহানী : আফযালস্ সালাত:১১৭
১৮.আল্লামা ইসমাঈল হাক্কী-তাফসীরে রুহুল বায়ানঃ ১৩৭০ . সূরা মায়েদা আয়াত-১৫
১৯.আল্লামা ইবনে হাজার হায়সামী : শরহে শামায়েল : ১১১৫ পৃ:
২০.আল্লামা শায়খ ইউসফ নাৰহানী : যওয়াহিরুল বিহার : ১১৪ পৃ:
২১.ইমাম যুরকানী : শরহে মাওয়াহেবে লাদুন্নীয়া, ১১৭২ –
২২.ইউসুফ নাৰহানী : হজ্জাতুল্লাহি আলাল আলামিন : ৭৯৫ . এবং ৩১ . আৰু অফিকহিয়্যাহ, কাহেরা,মিশর।
২৩.আল্লামা শফী উকাড়বী-যিকরে হাসীন, ৩৭ পৃষ্ঠা।
২৪.মাওলানা আশরাফ আলী থানবী : নশরুত্তীব পৃষ্ঠা নং- ২৮
প্রমাণিত, হলাে রাসূল (ﷺ) সৃষ্টি কে করা না হলে আদম (عليه السلام) কে সৃষ্টি করা হত না, সুতরাং আদম (عليه السلام) না হলে হয়ত আমরা কোন মানবের উৎপত্তিও হত না। এই হাদিসটিকে যেহেতু গ্রহনযােগ্য প্রখ্যাত মুহাদ্দিসগন সহিহ বলেছেন। ইমাম হাকিম সনদের দিক দিয়ে সহিহ বলেছেন,তার এ অভিমতকে বহু ইমামগণ করেছেন। তার মধ্যে ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ূতি , শায়খ ইউসুফ নাবহানী, শা আযিয মুহাদ্দিস দেহলভী, কুস্তালানী, যুরকানী, ইসমাঈল হাক্কী, ইবনে হাযার হা ইবনে কাসীর, বুরহানউদ্দীন আলভী, এমনকি দেওবন্দের অন্যতম আলেম আল আলী থানবীরও উক্ত হাদিসটির ব্যাপারে হাকেমের সহিহ হওয়ার মতকে মেনে নিয়েছেন তাদের স্বস্ব গ্রন্থে। উল্লেখ্য যে, এই হাদিস দ্বারা উসিলার বৈধতা পা পাওয়া গেল।
দলীল নং- ২৫-৩৩
প্রথম দীর্ঘ হাদিস থেকে কিছু শব্দ বাদ পড়ে কিছুটা সংক্ষেপে অন্য সনদে উক্ত সাহাবী হতে ইমাম জাওযী ও ইমাম সুয়ূতি (رحمة الله) ইমাম দায়লামীর সূত্রে উত্ত হাদিসটি এভাবে বর্ণনা করেন,
عن عمر بن الخطاب رضي الله عنه قال: قال رسول الله صلى الله عليه وآله مسلم: لما اذنب أدم صلی الله عليه وسلم الذنب الذي أذنبه رفع راسه إلى العرش و قال: أسألك بحق محمد إلا غفرت لي , فأوحى الله إليه , «وما محمد ومن محمد؟» قال: تبارك اسمك، لما خلقتني رفعت راسي إلى عرشك، فإذا فيه مكتوب: لا إله إلا الله محمد رسول الله، فعلمت أنه ليس أحد أعظم عندك قدرا ممن جعلت اسمه مع اسمك , فأوحى الله عز وجل إليه: «يا آدم , إنه أخر النبيين من ذريتك , وإن أمه آخر الأمم من ذريتك , ولولاه يا آدم ما خلقتك»۔
-“হযরত উমর ইবনে খাত্তাব (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল (ﷺ) ইরশাদ করেন, যখন হযরত আদম (عليه السلام) এর ইজতেহাদী ভুল হয়ে যায় তখন তিনি স্বীয় মাথা মুবারক আসমানের দিকে উত্তোলন করলেন এবং নিবেদন করলেন, হে প্রভু, হযরত মুহাম্মদ (ﷺ) এর ওসীলায় আমাকে ক্ষমা করে দাও। আল্লাহ তা’য়ালা তার প্রতি ওহী প্রেরণের মাধ্যমে বললেন, হে আদম (عليه السلام)! মুহাম্মদ এবং মুহাম্মদ কে? হযরত আদম (عليه السلام) বললেন, হে সম্মানিত নামের অধিকারী। যখন তুমি আমাকে সৃষ্টি করেছিলে, তখন আমি মাথা উঠিয়ে তােমার আরশে দেখাে আরশের (পায়াতে) লেখা ছিল
لا إله إلا الله محمد رسول الله
তাই আমি বুঝে নিলাম, তুমি যার নামকে তােমার নামের সাথে সংযুক্ত করে লিখে রেখেছ, আমার মনে হয়েছে তিনি তােমার নিকট সমগ্র সৃষ্টির মধ্যে অধিক প্রিয়ভাজন। আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করলেন, হে আদম (عليه السلام)! তুমি সত্য বলেছ। সৃষ্টি জগতে তিনি আমার কাছে সর্বাধিক প্রিয়। তিনি তােমার সন্তানদের মধ্যে সমস্ত নবীদের মধ্যে আখের এবং সর্বশেষ নবী হবেন। তাঁর উম্মত তােমার সন্তানাদিদের মধ্যে সর্বশেষ উম্মত। যদি তিনি (মুহাম্মদ (ﷺ) না হতেন, তাহলে আমি তােমাকেও সৃষ্টি করতাম না।
১.ইমাম তাবরানী : মু’জামুল আওসাত : ৬/৩১৩ পৃ. হাদিস নং- ৬৫০২
২.ইমাম সুয়ূতি : আদ দুররুল মনসুর : ১৫৮
৩.ইমাম সুয়ূতি : আর রিয়াদুল আনিকা, পৃ-৪৮
৪.ইমাম জওজী । আল-ওয়াফা বি আহওয়া লিল মুস্তাফা- ৩৩ পদারুল কুতুৰ ইলমিয়্যাহ, বয়ৱত।
৫.ইমাম জওজী : বয়ানুল মিলাদুন্নবীঃ ১৫৮ পৃ
৬.ইমাম দায়লামী : আল মুসনাদিল ফিরদাউস : ৫/২২৭
৭.আল্লামা আজলুনী : কাশফুল খাফা : ১/৪৬ এবং ২১৪
৮.শায়খ ইউসুফ নাবহানী : হুজ্জাতুল্লাহি আলাল আলামিন। ৭৯৫
৯.তাবরানী,মুজামু-সগীর,ফ১৮২পৃ. হাদিস:৯১২
উক্ত হাদিসের দুটি সূত্রের সনদের গ্রহণযােগ্যতা দেখতে হলে কিতাবের শেষে দেখুন।
দলীল নং- ৩৪-৪৬
ثنا جندل بن والق، ثنا عمرو بن اوس الانصاري، ثنا سعيد بن أبي عروبة، عن قتادة، عن سعيد بن المسيب، عن ابن عباس رضي الله عنهما، قال: «اوحى الله إلى عيسى عليه السلام يا عيسى آمن بمحمد وامر من أدركه من أمتك أن يؤمنوا به فلولا محمد ما خلفت أدم ولولا محمد ما خلقت الجنة ولا النار ولقد خلقت العرش على الماء فاضطرب فكتبت عليه لا إله إلا الله محمد رسول الله فسكن» هذا حديث صحيح الإسناد ولم يخرجاه “
-“হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত রাসূল (ﷺ) ইরশাদ করেন, আল্লাহ তা’য়ালা হযরত ঈসা (عليه السلام) এর নিকট ওহী নাযিল করলেন, হে ঈসা! তুমি মুহাম্মদ (ﷺ) এর উপর ঈমান আন এবং তােমার উম্মতের মধ্যে যারা তার যুগ পাবে। তাদেরকে ঈমান আনতে বলাে। কারণ যদি মুহাম্মদ (ﷺ) না হতেন, তাহলে আমি না আদমকে সৃষ্টি করতাম, না বেহেশত, না দোযখ সৃষ্টি করতাম। আমি (আল্লাহ) যখন পানির উপর আরশ তৈরী করেছিলাম, তখন তা এদিক সেদিক কম্পন করতে লাগল। তখন আমি তার উপর কালেমা শরীফ লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ’ লিখে দিলাম অতঃপর আরশ স্থির হয়ে গেল।
১.ইমাম হাকেম নিশাপুরীঃ আল মুস্তাদরাক ২/৬৭১, পৃষ্ঠা হাদিসঃ ৪২২৭
২. আল্লামা ইমাম তকিউদ্দিন সুবকী শিফাউস সিকাম ৪৫ পৃষ্ঠা
৩. আল্লামা ইবনে হাজর মক্কী: আফজালুল কুরাঃ
৪. আল্লামা সিরাজুদ্দীন বলকী: ফতােয়ায়ে সিরাজিয়া : ১/১৪০ পৃ.
৫. আল্লামা মােল্লা আলী ক্বারী মাওজুআতুল কবীর ১০১ পৃ.
৬. ইমাম ইবনে সা’দ। আত্-তবকাতুল কোবরা !
৭. ইমাম আবু নঈম ইস্পাহানীঃ হুলিয়াতুল আউলিয়া
৮,আল্লামা জালালুদ্দীন সুয়ুতিঃ খাসায়েসুল কোবরাঃ ১/১৪ হাদিসঃ ২১
৯,আল্লামা ইবনে হাজার হায়সামী : শরহে শামায়েলঃ ১/১৪২ পূ.
১০.আল্লামা শায়খ ইউসূফ বিন নাবহানীঃ যাওয়াহিরুল বিহারঃ ২১১৪ পৃ.
১১. ইমাম যাহাৰীঃ মিনুল ইতিদাল : ৫/২৯৯ পূ. রাবী নং- ৬৩৩৬
১২, আল্লামা ইবনে হাজার আসকালানী লিসানুল মিযানঃ ৪/৩৫৪ পৃ.
১৩. ইমাম ইবনে হাইয়্যানঃ তবকাতে মুহাদ্দিসিনে ইস্পাহানীঃ ৩/২৮৭ পৃ.
১৪.আবু সা’দ ইবরাহিম নিশাপুরী,শরহে মুস্তফাঃ১/১৬৫পৃ.
১৫.যুরকানী,শরহুল মাওয়াহেব:১২/২২০পৃ.
১৬.ইবনে কাসীর,কাসাসুল আম্বিয়া,১/২৯পৃ.দারুল তা’লিফ,কাহেরা,মিশর।
১৭.ইবনে কাসীর,সিরাতে নববিয়্যাহঃ১/৩২০পৃ.দারুল মা’রিফ,বয়রুত লেবানন।
১৮.ইবনে কাসীর,মু’জিজাতুন্নাবী:১/৪৪১পৃ.মাকতুবাতুল তাওফিকহিয়্যাহ,কাহেরা,মিশর।
১৯.ইবনে সালেহ শামী,সবলুল হুদা ওয়ার রাশাদ:১২/৪০৩পৃ.দারুল কুতুব ইলমিয়্যাহ বয়রুত,লেবানন।
উক্ত হাদিসটিকে আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর তার বইয়ের ২৫০ পৃষ্ঠায় জাল প্রমাণ করার অপচেষ্টা চালিয়েছেন অথচ ইমাম হাকিম, সুয়ূতি, ইমাম সুবকী, ইবনে হাজর মক্কী,মােল্লা আলী কারী হাদিসটির সনদ সহিহ বলেছেন। ইমাম হাকিম (رحمة الله) বলেন, হাদিসটির সনদ সহিহ। উক্ত হাদিসটির ব্যাপারে আমি বিস্তারিত এই কিতাবের শেষে আলােচনা করেছি।
দলীল নং- ৪৭-৪৯
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত, রাসূল (ﷺ) ইরশাদ ফরমান :-
عن ابن عباس رضي الله عنهما مرفوعا أتاني جبريل فقال يا محمد لولاك ما خلفت الجنة ولولاك ما خلقت النار
-“একদা আমার কাছে হযরত জিব্রাঈল (عليه السلام) এসে বললেন, আল্লাহ পাক ইরশাদ করেছেন, আপনাকে সৃষ্টি না করা হলে সৃজন না হতাে বেহেশত আর না দোযখ।”
ক, ইমাম দায়লামী : আল-মুসনাদিল ফিরদাউস : ২/২৪২ তিনি বর্ণনা করে বলেন হাদিসটি সনদের দিক। দিয়ে “হাসান”।
খ, আল্লামা মােল্লা আলী কারী : মওদুআতুল কবীরঃ ১/২৯৫ পূহাদিস ৩৮৫.পু,মুয়াসাতুর রিসালা, মরুত, লেবানন।
গ, আল্লামা শায়খ ইউসূফ নাবহানীঃ যাওয়াহিরুল বিহারঃ ৪/১৬০ পৃ.
দলীল নং- ৫০-৫৪
হযরত সালমান ফারসী (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত রাসূল (ﷺ) ইরশাদ করেন, একদা জিব্রাঈল (عليه السلام) আমার নিকট উপস্থিত হয়ে বললেন, আল্লাহ রাব্বল আলামীন । ইরশাদ করেছেন
ان كنت اتخذت ابراهيم خليلا. فقد اتخذتك حبيبا و ان كنت كلمت موسى في ا الأرض تكليما. فقد كلمتك في السماء و ان كنت خلقت عیسی من روح القدس فقد خلقت اسمك من قبل ان اخلق الخلق بالفي سنة و لقد وطات في السماء ماء موطا لم يطاه أحد قبلك. و لا يطاه احد بعدك و ان كنت اصطفيت ادم فقد ختمت بك الأنبياء – وما خلقت خلقا اكرم على منك (وساق الحديث إلى أن قال) ظل عرشى في القيامة عليك ممدود- تاج الحمد على راسك معقود و قرنت اسمك مع اسمى فلا اذكر في موضع حتى تذكر معي – ولقد خلقت الدنيا و اهلها لاعرفهم كرامتك و منزلتك عندی۔ ولولاك ما خلقت الدنيا۔
“আমি যদিও ইব্রাহীম (عليه السلام) কে খলিল বানিয়েছি কিন্তু আপনাকে বানিয়েছি হাবীব। আমি যদিও মুসা (عليه السلام) এর সাথে দুনিয়াতে কথা বলেছি, আপনার সাথে কথা বলেছি আসমানে। আমি ঈসা (عليه السلام) কে রুহুল কুদ্স থেকে সৃজন করলেও আপনাকে করেছি সমগ্র সৃষ্টি জগত সৃষ্টির দু’হাজার বছর পূর্বে। আপনার কদম আসমানের এমন জায়গায় পৌঁছেছে যেখানে আপনার পূর্বে কারাে কদম পৌঁছেনি এবং ভবিষ্যতেও পৌঁছবে না। আমি আদম (عليه السلام) কে বিশেষ সম্মানে ভূষিত করলেও আপনার মাধ্যমে ঘটিয়েছি নবুয়তের ধারার পরিসমাপ্তি । আপনার চেয়ে অধিক সম্মানী কাউকে আমি সৃষ্টি করেনি। কিয়ামত দিবসে আমার আরশের ছায়া আপনার উপর প্রসারিত হবে। প্রশংসার জয়মুকুট আপনার নূরানী মস্তকে শােভা পাবে। আমি আপনার নাম আমার নামের সাথে মিলিয়ে রেখেছি।যেখানে আমার যিকির চর্চা হবে সেখানে আপনার যিকিরও চর্চা হবে। আমি পৃথিবী এবং পৃথিবীবাসীকে সৃষ্টি করেছি,আমার নিকট আপনার মর্যাদা ও সম্মান কতটুকু তা দেখানাের জন্য জেনে রাখুন,
ولولاك ما خلقت الدنيا
অর্থাৎ আপনাকে সৃষ্টি না করলে আমি দুনিয়া সৃষ্টি করতাম না।”
১.ইমাম ইবনে আসাকীর: তারীখে দামেস্ক ৩/৫১৭ পৃষ্ঠা।
২.আল্লামা মােল্লা আলী ক্বারী হানাফীঃ মওদুআতুল কবীরঃ ১০১ পৃষ্ঠা
৩.আল্লামা ইমাম যুরকানীঃ শরহে মাওয়াহেবঃ ১১৮২
৪ শায়খ ইউসূফ নাবহানী : যাওয়াহিরুল বিহার : ১/২৮৯ পৃষ্ঠা
৫ ইমাম কাজী আয়াজঃ শিফা শরীফঃ২১০৫ পূ.