ⓞ➤【শামায়েলে তিরমিযি】
২৫ রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর রুটির বিবরণ
📌পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর পরিবারবর্গ কখনো একাধারে ২দিন পেট ভরে যবের রুটি আহার করেননি
১০৭
دَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى ، وَمُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ ، قَالا : حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا شُعْبَةُ ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ ، قَالَ : سَمِعْتُ عَبْدَ الرَّحْمَنِ بْنَ يَزِيدَ ، يُحَدِّثُ عَنِ الأَسْوَدِ بْنِ يَزِيدَ ، عَنْ عَائِشَةَ ، أَنَّهَا قَالَتْ : ” مَا شَبِعَ آلُ مُحَمَّدٍ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنْ خُبْزِ الشَّعِيرِ يَوْمَيْنِ مُتَتَابِعَيْنِ حَتَّى قُبِضَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ” .
আয়েশা (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর ওফাত পর্যন্ত মুহাম্মাদ (ﷺ) এর পরিবারবর্গ একাধারে ২দিন পেট ভরে যবের রুটি আহার করেননি। [১০৯]
🔴 ব্যাখ্যাঃ বদান্যতা ও দানশীলতায় রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ছিলেন অতুলনীয়। স্বেচ্ছায় এ অবস্থাকে গ্রহণ করে নেয়ার কারণেই তাকে এরূপ সাদাসিধা জীবন-যাপন করতে হয়েছে।
তিনি চাইলে সীমাহীন স্বাচ্ছন্দের সাথে জীবন কাটাতে পারতেন। কিন্তু তা তার পছন্দনীয় ছিল না।
[১০৯]ইবনে মাজাহ, হা/৩৩৪৬; তাহযীবুল আসার, হা/৬০৯; শারহুস সুন্নাহ, হা/৪০৭৩
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
📌পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর কাছে কখনো যবের রুটি উদ্ধৃত থাকত না
১০৮
حَدَّثَنَا عَبَّاسُ بْنُ مُحَمَّدٍ الدُّورِيُّ ، قَالَ : حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ أَبِي بُكَيْرٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا حَرِيزُ بْنُ عُثْمَانَ ، عَنْ سُلَيْمِ بْنِ عَامِرٍ ، قَالَ : سَمِعْتُ أَبَا أُمَامَةَ الْبَاهِلِيَّ , يَقُولُ : ” مَا كَانَ يَفْضُلُ عَنِ أَهْلِ بَيْتِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ خُبْزُ الشَّعِيرِ ” .
আবু উমামা বাহিলী (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর গৃহে কখনো যবের রুটি উদ্ধৃত থাকত না। [১১০]
🔴 ব্যাখ্যাঃ অন্যদের দান করার দরুন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর ঘরে অতিরিক্ত পাকানোর মতো খাদ্য থাকত না। তাছাড়া আহলুস সুফফা এবং অন্যান্য মেহমান তো থাকতই।
[১১০]মুসনাদে আহমাদ, হা/২২৩৫০; মুজামুল কাবীর, হা/৭৫৭৮; শারহুস সুন্নাহ, হা/৪০৭৫
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
📌পরিচ্ছদঃ
মাঝে মাঝে তিনি আহারের জন্য কিছুই পেতেন না
১০৯
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُعَاوِيَةَ الْجُمَحِيُّ ، قَالَ : حَدَّثَنَا ثَابِتُ بْنُ يَزِيدَ ، عَنْ هِلَالِ بْنِ خَبَّابٍ ، عَنْ عِكْرِمَةَ ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ ، قَالَ : ” كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , يَبِيتُ اللَّيَالِيَ الْمُتَتَابِعَةَ طَاوِيًا هُوَ وَأَهْلُهُ , لا يَجِدُونَ عِشَاءً وَكَانَ أَكْثَرُ خُبْزِهِمْ , خُبْزَ الشَّعِيرِ ” .
ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ছত্র এবং তার পরিবারবর্গ একাধারে কয়েক রাত অনাহারে এমনভাবে কাটাতেন যে, তারা আহার্য বস্তুর কোন কিছুই পেতেন না। আর অধিকাংশ সময় তাদের খাবার হতো যবের রুটি (অর্থাৎ ধারাবাহিক যবের রুটিও পেতেন না)[১১১]
[১১১]ইবনে মাজাহ, হা/৩৩৪৭; মুসনাদে আহমাদ, হা/২৩০৩; মুসনাদুল বাযযার, হা/৪৮০৫; মুজামুল কাবীর, হা/১১৭৩৩।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
১১০
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ ، قَالَ : حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ الْمَجِيدِ الْحَنَفِيُّ ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ دِينَارٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا أَبُو حَازِمٍ ، عَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ ، أَنَّهُ قِيلَ لَهُ : أَكَلَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ النَّقِيَّ ؟ يَعْنِي الْحُوَّارَى فَقَالَ سَهْلٌ : ” مَا رَأَى رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ النَّقِيَّ حَتَّى لَقِيَ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ تَعَالَى ” ، فَقِيلَ لَهُ : هَلْ كَانَتْ لَكُمْ مَنَاخِلُ عَلَى عَهْدِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ؟ قَالَ : ” مَا كَانَتْ لَنَا مَنَاخِلُ ” . قِيلَ : كَيْفَ كُنْتُمْ تَصْنَعُونَ بِالشَّعِيرِ ؟ قَالَ : ” كُنَّا نَنْفُخُهُ فَيَطِيرُ مِنْهُ مَا طَارَ , ثُمَّ نَعْجِنُهُ ” .
সাহল ইবনে সা’দ (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিতঃ
তাঁকে জিজ্ঞেস করা হলো রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কি ময়দার রুটি আহার করতেন? তিনি বললেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তাঁর ওফাত পর্যন্ত ময়দা দেখেননি। তারপর তাঁকে বলা হলো, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর সময় আপনাদের কি চালনি ছিল? তিনি বললেন, আমাদের কোন চালনি ছিল না। তখন তাকে জিজ্ঞেস করা হলো, তবে আপনারা যবের রুটি ভাবে ব্যবহার করতেন? তিনি বললেন, আমরা তাতে ফু দিতাম, যাতে অখাদ্য কিছু থাকলে তা উড়ে যায়। এরপর আমরা খামির করে নিতাম। [১১২]
🔴 ব্যাখ্যাঃ সাহল (رضي الله عنه) বলেছেন যে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ময়দা দেখেননি এবং চালনি ব্যবহার করেননি। এ কথা তিনি তার জানা অনুসারে বলেছেন। কেননা তখন মক্কা ও মদিনায় চালনির প্রচলন ছিল না। অন্যথায় রাসূলুল্লাহ (ﷺ) নবুওয়াত প্রাপ্তির পূর্বে সিরিয়া সফরের সময় ময়দা দেখে থাকতে পারেন। কেননা সিরিয়ায় চালনি দিয়ে ময়দা চালার রেওয়াজ আগে থেকেই ছিল।
[১১২]মুসনাদে আহমাদ, হা/২২৮৬৫; তাহযীবুল আছার, হা/২৫১৭।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
📌পরিচ্ছদঃ
তিনি আহারের জন্য টেবিল এবং ছোট প্লেট ব্যবহার করতেন
১১১
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا مُعَاذُ بْنُ هِشَامٍ ، قَالَ : حَدَّثَنِي أَبِي ، عَنْ يُونُسَ ، عَنْ قَتَادَةَ ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ ، قَالَ : ” مَا أَكَلَ نَبِيُّ اللَّهِ عَلَى خِوَانٍ , وَلا فِي سُكُرَّجَةٍ ، وَلا خُبِزَ لَهُ مُرَقَّقٌ ” قَالَ : فَقُلْتُ لِقَتَادَةَ : فَعَلامَ كَانُوا يَأْكُلُونَ ؟ قَالَ : ” عَلَى هَذِهِ السُّفَرِ ” .
আনাস ইবনে মালিক (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (ﷺ) টেবিলে আহার করতেন না, ছোট প্লেটে খাবার নিতেন না এবং তার জন্য চাপাতিও তৈরি করা হতো না।
(বর্ণনাকারী) ইউনুস বলেন, আমি কাতাদা (رحمة الله) কে জিজ্ঞেস করে বললাম, তাহলে কোন ধরণের প্লেটে তারা আহার করতেন? তিনি বলেন, দস্তরখানের উপর রেখে আহার করতেন। [১১৩]
🔴 ব্যাখ্যাঃ ‘সুকুররুজাহ’ শব্দটি ফারসী শব্দ। ক্ষুধা এবং হজমকারক রুচিবর্ধক বিভিন্ন উপকরণ রাখার ছোট ছোট পাত্র। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) যেহেতু নিজে পেটভরে আহার করতেন না, কাজেই পরিতৃপ্ত ভোজনের উপকরণও ব্যবহার করতেন না। তাছাড়া এভাবে আহার করা যেহেতু বিলাসী, তাই রাসূলুল্লাহ (ﷺ)তে এসব পদ্ধতি পরিহার করতেন। এটা অতিভোজনকারী লোভী লোকদের অভ্যাস।
[১১৩] সহীহ বুখারী, হা/৫৬১৫, মুসনাদে আহমদ, হা/১২৩৪৭।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
১১২
حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ غَيْلانَ ، قَالَ : حَدَّثَنَا أَبُو دَاوُدَ ، قَالَ : حَدَّثَنَا شُعْبَةُ ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ ، قَالَ : سَمِعْتُ عَبْدَ الرَّحْمَنِ بْنَ يَزِيدَ يُحَدِّثُ ، عَنِ الأَسْوَدِ بْنِ يَزِيدَ ، عَنْ عَائِشَةَ ، قَالَتْ : ” مَا شَبِعَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنْ خُبْزِ الشَّعِيرِ يَوْمَيْنِ مُتَتَابِعَيْنِ حَتَّى قُبِضَ ” .
আয়েশা (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ই মৃত্যু পর্যন্ত তাঁর জীবদ্দশায় একাধারে ২দিন যবের রুটি আহার করেননি। [১১৪]
[১১৪]তাহযীবুল আছার, হা/৬০৯; শারহুস সুন্নাহ, হা/৪০৭৩।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস