৪ টি শিক্ষামূলক ইসলামিক গল্প

পোষ্টটি অন্যকে পড়ার সুযোগ করে দিতে শেয়ার করুন প্লিজ।

১ গল্প 👎

দানের সুফল

হযরত রসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিয়াছেন : ‘একদা এক ব্যক্তি কোন এক গভীর জঙ্গলে ভ্রমণ করিতেছিল। হঠাৎ সে এক মেঘখণ্ড হইতে এক গায়েবী আওয়াজ শুনিতে পাইল, অমুকের বাগিচায় পানি দাও। এই আওয়াজের সঙ্গে সঙ্গে একখণ্ড মেঘ বাগিচার উপর আসিয়া পৌঁছিল। প্রবল বৃষ্টিপাতে বাগান প্লাবিত হইয়া গেল। পানির স্রোত একটি নালা দিয়া বহিয়া চলিল। ঐ লোকটি পানির স্রোত অনুসরণ করিয়া চলিল। কিছুদূর গিয়া দেখিল, একটি লোক কোদাল দ্বারা ক্ষেতের আইল বাধিয়া ঐ পানি তাহার বাগিচায় আটকাইতেছে। লোকটি বাগিচাওয়ালাকে জিজ্ঞাসা করিল, ‘ভাই আপনার নাম কি? বাগিচাওয়ালা সেই নামই বলিল—যাহা সে মেঘের মধ্য হইতে শুনিয়াছিল। অতঃপর বাগিচাওয়ালা লোকটিকে জিজ্ঞাসা করিল, ‘ভাই! আপনি আমার নাম জিজ্ঞাসা করিলেন কেন ? লোকটি বলিল, যে মেঘের এই পানি উহার মধ্য হইতে একটি আওয়াজ শুনিয়াছি, আপনার নাম লইয়া বলিয়াছেঃ “অমুকের বাগিচায় পানি দাও। আচ্ছা, আপনি বলুন তো, আপনি কি আমল করেন ? আপনি কি করিয়া আল্লাহর এত পেয়ারা হইলেন? বাগিচাওয়ালা বলিল, ‘ইহা তো বলার কথা নয়। কারণ, আল্লাহ্র ওয়াস্তের কাজ বলা ভাল নহে। শুধু আপনার অনুরোধ রক্ষার্থে বলিতেছি—এই বাগিচায় যাহাকিছু ফসল উৎপন্ন হয়, তাহা তিন ভাগ করিয়া এক ভাগ আল্লাহর রাস্তায় দান করি, এক ভাগ নিজের বাল-বাচ্চাসহ ভোগ করি, আর এক ভাগ বাগিচার উন্নতিকল্পে ব্যয় করি।

শিক্ষা/ উপদেশ : আল্লাহ্ পাকের কী রহমত! যে খাঁটীভাবে আল্লাহ্ ফরমাবরদারী করে, তাহার যাবতীয় কার্য আল্লাহ্ গায়েব হইতে সাহায্য করিয়া এমন সুন্দররূপে সমাধা করিয়া দেন যে, সে জানিতেও পারে না। উপরোক্ত ঘটনাটি ইহার জ্বলন্ত প্রমাণ। সত্যই বলা হইয়াছে যে, যে আল্লাহর হয় আল্লাহও তাহার হইয়া যান।

https://googleads.g.doubleclick.net/pagead/ads?npa=1&gdpr=1&us_privacy=1—&gdpr_consent=CPziCYAPziCYAEsACBENDaCoAP_AAEPAAAIYINJB7D7FbSFCwH57aLsAMAhXRsCAQqQAAASBAmABQAKQIAQCkkAYFESgBAACAAAAICZBIQIMCAgACUABQAAAAAEEAAAABAAIIAAAgAEAAAAIAAACAIAAEAAIAAAAEAAAmQhAAIIACAAAhAAAIAAAAAAAAAAAAgCAAAAAAAAAAAAAAAAAAQQaQD2F2K2kKFgPi2QWYAQBCijYEAhUAAAAkCBIAAgAUgQAgFIIAwAIFAAAAAAAAAQEgCQAAQABAAAIACgAAAAAAIAAAAAAAQQAAAAAIAAAAAAAAEAQAAAAAQAAAAIAABEhCAAQQAEAAAAAAAQAAAAAAAAAAABAAAAAAAAAAAAAAAAAAAAgAA&addtl_consent=1~2072.70.89.93.108.122.149.196.2253.2299.259.2357.311.317.323.2373.338.358.2415.415.2506.2526.482.486.494.495.2568.2571.2575.540.574.2624.609.2677.2779.827.864.981.1048.1051.1095.1097.1201.1205.1276.1301.1365.1415.1449.1570.1577.1651.1716.1735.1753.1765.1834.1870.1878.1889.1958&client=ca-pub-1426523110009009&output=html&h=182&slotname=6325634926&adk=3139377454&adf=3394911742&pi=t.ma~as.6325634926&w=728&fwrn=4&lmt=1697061769&rafmt=11&format=728×182&url=https%3A%2F%2Fwww.loveislife1.com%2F2023%2F05%2Fblog-post_60.html&host=ca-host-pub-1556223355139109&wgl=1&uach=WyJXaW5kb3dzIiwiMTUuMC4wIiwieDg2IiwiIiwiMTE3LjAuNTkzOC4xNTAiLFtdLDAsbnVsbCwiNjQiLFtbIkdvb2dsZSBDaHJvbWUiLCIxMTcuMC41OTM4LjE1MCJdLFsiTm90O0E9QnJhbmQiLCI4LjAuMC4wIl0sWyJDaHJvbWl1bSIsIjExNy4wLjU5MzguMTUwIl1dLDBd&dt=1697115224105&bpp=29&bdt=474&idt=257&shv=r20231004&mjsv=m202310090101&ptt=9&saldr=aa&abxe=1&cookie=ID%3D1ee942d30082ee50-222d393765e0001f%3AT%3D1697114959%3ART%3D1697115149%3AS%3DALNI_MaBmSdtUY4R7_qtrDo_VbhJptGxnw&gpic=UID%3D00000cba06040dec%3AT%3D1697114959%3ART%3D1697114959%3AS%3DALNI_MYtHDQUHhtIZrRaF0Q4BOp_u_vmnA&prev_fmts=0x0%2C1073x280%2C728x280&nras=1&correlator=7428550485827&frm=20&pv=1&ga_vid=896729878.1697114958&ga_sid=1697115224&ga_hid=92951295&ga_fc=1&rplot=4&u_tz=60&u_his=2&u_h=1080&u_w=1920&u_ah=1032&u_aw=1920&u_cd=24&u_sd=1&dmc=8&adx=415&ady=1816&biw=1903&bih=955&scr_x=0&scr_y=0&eid=44759876%2C44759927%2C31078657%2C31078701%2C42531705%2C44804783%2C44805099%2C31078301%2C31078680%2C31078663%2C31078665%2C31078668%2C31078670&oid=2&pvsid=1067016778300241&tmod=1819887879&uas=0&nvt=1&ref=https%3A%2F%2Fwww.loveislife1.com%2F2023%2F06%2Fblog-post_1.html&fc=1920&brdim=0%2C0%2C0%2C0%2C1920%2C0%2C1920%2C1032%2C1920%2C955&vis=1&rsz=%7C%7CoeEbr%7C&abl=CS&pfx=0&fu=128&bc=31&td=1&nt=1&ifi=4&uci=a!4&btvi=1&fsb=1&xpc=eYhF8jVX9R&p=https%3A//www.loveislife1.com&dtd=401

২ গল্প 👎

না-শোক্রীর পরিণাম

বোখারী শরীফের হাদীসে আছে, হযরত রসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিয়াছেন, বনী ইস্বায়ীল গোত্রে তিনজন লোক ছিল বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত। তন্মধ্যে একজন ছিল কুষ্ঠ রোগাক্রান্ত, দ্বিতীয় জন মাথায় টাক পড়া, তৃতীয় জন অন্ধ। আল্লাহ্ তা’আলা এই তিনজনকে পরীক্ষা করিতে ইচ্ছা করিলেন। তিনি একজন ফেরেশতা পাঠাইলেন। ফেরেশতা প্রথমে কুণ্ঠ রোগগ্রস্ত লোকটির নিকট গিয়া বলিলেন, তুমি কি চাও? লোকটি উত্তর করিল : আমি আল্লাহর কাছে এই চাই যে, আমার এই কুৎসিত ব্যাধি নিরাময় হউক, আমার দেহের চর্ম নূতন রূপ ধারণ করিয়া সুন্দর হউক—যেন আমি লোক সমাজে যাইতে পারি, লোকে আমাকে ঘৃণা না করে। আমি যেন এই বালা হইতে মুক্তি পাই। ফেরেশতা তাহার শরীরে হাত বুলাইয়া দোআ করিলেন । মুহুর্তের মধ্যে তাহার রোগ নিরাময় হইয়া গেল। সর্বশরীর নূতন রূপ ধারণ করিল। তারপর আল্লাহর ফেরেশতা তাহাকে জিজ্ঞাসা করিলেন, তুমি কি পাইতে চাও? লোকটি বলিল, আমি উট পাইলে সন্তুষ্ট হই। ফেরেশতা তাহাকে একটি গর্ভবর্তী উটনী আনিয়া দিলেন এবং আল্লাহর দরবারে বরকতের জন্য দোআ করিলেন।

অতঃপর ফেরেশতা টাকপড়া লোকটির নিকট গিয়া বলিলেন, তুমি কোন জিনিস পছন্দ কর? লোকটি বলিল, আমার মাথার ব্যাধি নিরাময় হউক, যে কারণে লোক আমাকে ঘৃণা করে। আল্লাহ্র ফেরেশতা তাহার মাথায় হাত বুলাইয়া দিলেন। সঙ্গে সঙ্গে মাথা ভাল হইয়া গেল। নূতন চুল গজাইয়া নূতন রূপ ধারণ করিল। এখন ফেরেশতা জিজ্ঞাসা করিলেন, কোন প্রকারের মাল তুমি পাইতে চাও? সে বলিল, আল্লাহ্ যদি আমাকে একটি গরু দান করেন, তবে আমি খুব সন্তুষ্ট। হই। ফেরেশতা একটি গর্ভবর্তী গাভী আনিয়া দিলেন এবং বরকতের জন্য দোআ করিলেন। অনন্তর ফেরেশতা অন্ধ লোকটির নিকট গমন করিয়া তাহাকে জিজ্ঞাসা করিলেন, তুমি কি চাও? লোকটি বলিল : আল্লাহ্ তাআলা আমার চোখ দুইটির দৃষ্টিশক্তি ফিরাইয়া দিন, যেন আমি আল্লাহর দুনিয়া দেখিতে পাই। ইহাই আমার আরজু। আল্লাহ্ তাআলার ফেরেশতা তাহার চোখের উপর হাত বুলাইয়া দিলেন। সঙ্গে সঙ্গে তাহার চোখ ভাল হইয়া গেল। সে দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়া পাইল। অতঃপর ফেরেশতা জিজ্ঞাসা করিলেন, আচ্ছা বল তো, কোন্ চিজ তুমি পছন্দ কর ? অন্ধ বলিল, আল্লাহ্ যদি আমাকে একটি বকরী দান করেন, আমি খুব খুশী হইব। ফেরেশতা তৎক্ষণাৎ একটি গাভীন বকরী আনিয়া তাহাকে দিলেন এবং বরকতের দো’আ করিয়া চলিয়া গেলেন।

https://googleads.g.doubleclick.net/pagead/ads?npa=1&gdpr=1&us_privacy=1—&gdpr_consent=CPziCYAPziCYAEsACBENDaCoAP_AAEPAAAIYINJB7D7FbSFCwH57aLsAMAhXRsCAQqQAAASBAmABQAKQIAQCkkAYFESgBAACAAAAICZBIQIMCAgACUABQAAAAAEEAAAABAAIIAAAgAEAAAAIAAACAIAAEAAIAAAAEAAAmQhAAIIACAAAhAAAIAAAAAAAAAAAAgCAAAAAAAAAAAAAAAAAAQQaQD2F2K2kKFgPi2QWYAQBCijYEAhUAAAAkCBIAAgAUgQAgFIIAwAIFAAAAAAAAAQEgCQAAQABAAAIACgAAAAAAIAAAAAAAQQAAAAAIAAAAAAAAEAQAAAAAQAAAAIAABEhCAAQQAEAAAAAAAQAAAAAAAAAAABAAAAAAAAAAAAAAAAAAAAgAA&addtl_consent=1~2072.70.89.93.108.122.149.196.2253.2299.259.2357.311.317.323.2373.338.358.2415.415.2506.2526.482.486.494.495.2568.2571.2575.540.574.2624.609.2677.2779.827.864.981.1048.1051.1095.1097.1201.1205.1276.1301.1365.1415.1449.1570.1577.1651.1716.1735.1753.1765.1834.1870.1878.1889.1958&client=ca-pub-1426523110009009&output=html&h=182&slotname=6325634926&adk=3749953646&adf=272887745&pi=t.ma~as.6325634926&w=728&fwrn=4&lmt=1697061769&rafmt=11&format=728×182&url=https%3A%2F%2Fwww.loveislife1.com%2F2023%2F05%2Fblog-post_60.html&host=ca-host-pub-1556223355139109&wgl=1&uach=WyJXaW5kb3dzIiwiMTUuMC4wIiwieDg2IiwiIiwiMTE3LjAuNTkzOC4xNTAiLFtdLDAsbnVsbCwiNjQiLFtbIkdvb2dsZSBDaHJvbWUiLCIxMTcuMC41OTM4LjE1MCJdLFsiTm90O0E9QnJhbmQiLCI4LjAuMC4wIl0sWyJDaHJvbWl1bSIsIjExNy4wLjU5MzguMTUwIl1dLDBd&dt=1697115224105&bpp=8&bdt=474&idt=265&shv=r20231004&mjsv=m202310090101&ptt=9&saldr=aa&abxe=1&cookie=ID%3D1ee942d30082ee50-222d393765e0001f%3AT%3D1697114959%3ART%3D1697115149%3AS%3DALNI_MaBmSdtUY4R7_qtrDo_VbhJptGxnw&gpic=UID%3D00000cba06040dec%3AT%3D1697114959%3ART%3D1697114959%3AS%3DALNI_MYtHDQUHhtIZrRaF0Q4BOp_u_vmnA&prev_fmts=0x0%2C1073x280%2C728x280%2C728x182&nras=1&correlator=7428550485827&frm=20&pv=1&ga_vid=896729878.1697114958&ga_sid=1697115224&ga_hid=92951295&ga_fc=1&rplot=4&u_tz=60&u_his=2&u_h=1080&u_w=1920&u_ah=1032&u_aw=1920&u_cd=24&u_sd=1&dmc=8&adx=415&ady=2545&biw=1903&bih=955&scr_x=0&scr_y=0&eid=44759876%2C44759927%2C31078657%2C31078701%2C42531705%2C44804783%2C44805099%2C31078301%2C31078680%2C31078663%2C31078665%2C31078668%2C31078670&oid=2&pvsid=1067016778300241&tmod=1819887879&uas=0&nvt=1&ref=https%3A%2F%2Fwww.loveislife1.com%2F2023%2F06%2Fblog-post_1.html&fc=1920&brdim=0%2C0%2C0%2C0%2C1920%2C0%2C1920%2C1032%2C1920%2C955&vis=1&rsz=%7C%7CoeEbr%7C&abl=CS&pfx=0&fu=128&bc=31&td=1&nt=1&ifi=5&uci=a!5&btvi=2&fsb=1&xpc=XWPX8tczvZ&p=https%3A//www.loveislife1.com&dtd=410

অল্প দিনের মধ্যেই এই তিন জনের উট, গরু এবং বকরীতে মাঠ পরিপূর্ণ হইয়া গেল। তাহারা প্রত্যেকে এক একজন বিরাট ধনী। অনতিকাল পরে সেই ফেরেশতা প্রথম ছুরতে পুনরায় সেই উটওয়ালার (কুষ্ঠ রোগীর) নিকট আসিয়া বলিলেন, আমি বিদেশে (ছফরে) অসিয়া বড়ই অভাবগ্রস্ত হইয়া পড়িয়াছি। আমার বাহক জন্তুটিও মারা গিয়াছে। আমার পথ-খরচও ফুরাইয়া গিয়াছে। আপনি যদি মেহেরবানী করিয়া কিছু সাহায্য না করেন, তবে আমার কষ্টের সীমা থাকিবে না। এক আল্লাহ্ ছাড়া আমি সম্পূর্ণ নিরুপায়। যে আল্লাহ্ আপনাকে সুন্দর স্বাস্থ্য ও সুশ্রী চেহারা দান করিয়াছেন তাঁহার নামে আমি আপনার নিকট একটি উট প্রার্থনা করিতেছি। আমাকে একটি উট দান করুন। আমি উহাতে আরোহণ করিয়া কোন প্রকারে বাড়ী যাইতে পারিব। লোকটি বলিল, হতভাগা কোথাকার। এখান হইতে দূর হও, আমার নিজেরই কত প্রয়োজন রহিয়াছে? তোমাকে দিবার মত কিছুই নাই। ফেরেশতা বলিলেন, আমি তোমাকে চিনি বলিয়া মনে হইতেছে। তুমি কি কুষ্ঠ রোগগ্রস্ত ছিলে না? লোকে কি এই রোগের কারণে তোমাকে তুচ্ছ ও ঘৃণা করিত না? তুমি কি গরীব ও নিঃস্ব ছিলে না? তৎপর আল্লাহ্ পাক কি তোমাকে এই ধন-সম্পদ দান করেন নাই। লোকটি বলিল, বাঃ বাঃ কি মজার কথা বলিতেছ ? আমরা বাপ-দাদার কাল হইতেই বড় লোক। এই সম্পত্তি পুরুষানুক্রমে আমরা ভোগদখল করিয়া আসিতেছি। ফেরেশতা বলিলেন, যদি তুমি মিথ্যাবাদী হও, তবে আল্লাহ্ তা’আলা তোমাকে সেইরূপ করিয়া দিন যেরূপ তুমি পূর্বে ছিলে। কিছুকালের মধ্যে লোকটি সর্বস্বান্ত হইয়া পূর্বাবস্থা প্রাপ্ত হইল। অনন্তর ফেরেশতা দ্বিতীয় ব্যক্তি অর্থাৎ, টাকপড়া লোকটির নিকট গমন করিলেন। লোকটির এমন সুন্দর ও সুঠাম চেহারা! মাথায় কুচকুচে কাল চুল, যেন তাহার কোন রোগই ছিল না। ফেরেশতা তাহার নিকট একটি গাভী চাহিলেন। কিন্তু সেও উটওয়ালার ন্যায়ই “না” সূচক শব্দে জবাব দিল। ফেরেশতাও তাহাকে বদদো’আ দিয়া বলিলেন, যদি তুমি মিথ্যুক হও, তবে আল্লাহ্ তা’আলা যেন তোমার সেই পূর্বাবস্থা ফিরাইয়া দেন। ফেরেশতার দোআ ব্যর্থ হইবার নহে। তাহার মাথায় টাক পড়া শুরু হইল, সমস্ত ধন-সম্পদ লয় পাইল।

তারপর ফেরেশতা পূর্বাকৃতিতে সেই অন্ধ ব্যক্তির নিকট গমন করিয়া বলিলেন, বাবা আমি মুসাফির! বড়ই বিপদগ্রস্ত হইয়া পড়িয়াছি। আমার টাকা-পয়সা কিছুই নাই। আপনি সহানুভূতি ও সাহায্য না করিলে আমার কোন উপায় দেখিতেছি না। যে আল্লাহ্ তা’আলা আপনাকে এক বিরাট সম্পত্তির মালিক করিয়া দিয়াছেন, তাঁহার নামে আমাকে একটি বকরী দান করুন— যেন কোন প্রকারে অভাব পূরণ করিয়া বাড়ী যাইতে পারি। লোকটি বলিল, নিশ্চয়ই। আমি অন্ধ, দরিদ্র ও নিঃস্ব ছিলাম। আমি আমার অতীতের কথা মোটেই ভুলি নাই। আল্লাহ্ তা’আলা শুধু নিজ রহমতে আমার দৃষ্টিশক্তি ফিরাইয়া দিয়াছেন। এই সব ধন-সম্পদ যাহাকিছু দেখিতেছেন সবই আল্লাহ্ তা’আলার, আমার কিছুই নহে। তিনিই অনুগ্রহ করিয়া আমাকে দান করিয়াছেন। আপনার যে কয়টির প্রয়োজন আপনার ইচ্ছামত আপনি লইয়া যান। যদি ইচ্ছা হয় আমার পরিবার পরিজন ও সন্তান-সন্ততির জন্য কিছু রাখিয়াও যাইতে পারেন। আল্লাহর কছম, আপনি সবগুলি লইয়া গেলেও আমি বিন্দুমাত্র অসন্তুষ্ট হইব না। কারণ, এসব আল্লাহ্র দান। ফেরেশতা বলিলেন, বাবা, এসব তোমার থাকুক। আমার কিছুর প্রয়োজন নাই, তোমাদের তিন জনের পরীক্ষা করার উদ্দেশ্য ছিল; তাহা হইয়া গিয়াছে, তাহারা দুইজন পরীক্ষায় ফেল করিয়াছে। তাহাদের প্রতি আল্লাহ্ তা’আলা অসন্তুষ্ট ও নারায হইয়াছেন। তুমি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হইয়াছ। আল্লাহ্ তোমার প্রতি সন্তুষ্ট হইয়াছেন।

শিক্ষা/উপদেশ: হে মানুষ! চিন্তা কর। প্রথমোক্ত দুইজন আল্লাহ্র নেয়ামতের শোকর করে নাই বলিয়া দুনিয়া ও আখেরাত উভয়ই তাহাদের বিনষ্ট হইয়াছে। তাহাদের অবস্থা কতই না শোচনীয় হইয়াছে। কারণ, আল্লাহ্ তাহাদের উপর অসন্তুষ্ট হইয়াছেন। তৃতীয় ব্যক্তি আল্লাহর শোক করিয়াছে বলিয়া দুনিয়া ও আখেরাত সবই বহাল রহিয়াছে, ধন-সম্পদ কিছুই নষ্ট হয় নাই। আল্লাহ্ তা’আলা ‘দিয়া ধন বুঝে মন, কেড়ে নিতে কতক্ষণ। সাধারণতঃ মানুষ বড় হইলে অতীতের কথা ভুলিয়া যায়। এ ধরনের লোককে প্রকৃত মানুষ বলা যায় না। প্রকৃত মানুষ তাহারা—যাহারা অতীতের দুঃখ-কষ্টের কথা স্মরণ করিয়া আল্লাহর শোকর গোয়ারী করে।

https://googleads.g.doubleclick.net/pagead/ads?npa=1&gdpr=1&us_privacy=1—&gdpr_consent=CPziCYAPziCYAEsACBENDaCoAP_AAEPAAAIYINJB7D7FbSFCwH57aLsAMAhXRsCAQqQAAASBAmABQAKQIAQCkkAYFESgBAACAAAAICZBIQIMCAgACUABQAAAAAEEAAAABAAIIAAAgAEAAAAIAAACAIAAEAAIAAAAEAAAmQhAAIIACAAAhAAAIAAAAAAAAAAAAgCAAAAAAAAAAAAAAAAAAQQaQD2F2K2kKFgPi2QWYAQBCijYEAhUAAAAkCBIAAgAUgQAgFIIAwAIFAAAAAAAAAQEgCQAAQABAAAIACgAAAAAAIAAAAAAAQQAAAAAIAAAAAAAAEAQAAAAAQAAAAIAABEhCAAQQAEAAAAAAAQAAAAAAAAAAABAAAAAAAAAAAAAAAAAAAAgAA&addtl_consent=1~2072.70.89.93.108.122.149.196.2253.2299.259.2357.311.317.323.2373.338.358.2415.415.2506.2526.482.486.494.495.2568.2571.2575.540.574.2624.609.2677.2779.827.864.981.1048.1051.1095.1097.1201.1205.1276.1301.1365.1415.1449.1570.1577.1651.1716.1735.1753.1765.1834.1870.1878.1889.1958&client=ca-pub-1426523110009009&output=html&h=182&slotname=6325634926&adk=3749953646&adf=3537252164&pi=t.ma~as.6325634926&w=728&fwrn=4&lmt=1697061769&rafmt=11&format=728×182&url=https%3A%2F%2Fwww.loveislife1.com%2F2023%2F05%2Fblog-post_60.html&host=ca-host-pub-1556223355139109&wgl=1&uach=WyJXaW5kb3dzIiwiMTUuMC4wIiwieDg2IiwiIiwiMTE3LjAuNTkzOC4xNTAiLFtdLDAsbnVsbCwiNjQiLFtbIkdvb2dsZSBDaHJvbWUiLCIxMTcuMC41OTM4LjE1MCJdLFsiTm90O0E9QnJhbmQiLCI4LjAuMC4wIl0sWyJDaHJvbWl1bSIsIjExNy4wLjU5MzguMTUwIl1dLDBd&dt=1697115224105&bpp=10&bdt=474&idt=281&shv=r20231004&mjsv=m202310090101&ptt=9&saldr=aa&abxe=1&cookie=ID%3D1ee942d30082ee50-222d393765e0001f%3AT%3D1697114959%3ART%3D1697115149%3AS%3DALNI_MaBmSdtUY4R7_qtrDo_VbhJptGxnw&gpic=UID%3D00000cba06040dec%3AT%3D1697114959%3ART%3D1697114959%3AS%3DALNI_MYtHDQUHhtIZrRaF0Q4BOp_u_vmnA&prev_fmts=0x0%2C1073x280%2C728x280%2C728x182%2C728x182&nras=1&correlator=7428550485827&frm=20&pv=1&ga_vid=896729878.1697114958&ga_sid=1697115224&ga_hid=92951295&ga_fc=1&rplot=4&u_tz=60&u_his=2&u_h=1080&u_w=1920&u_ah=1032&u_aw=1920&u_cd=24&u_sd=1&dmc=8&adx=415&ady=3533&biw=1903&bih=955&scr_x=0&scr_y=0&eid=44759876%2C44759927%2C31078657%2C31078701%2C42531705%2C44804783%2C44805099%2C31078301%2C31078680%2C31078663%2C31078665%2C31078668%2C31078670&oid=2&pvsid=1067016778300241&tmod=1819887879&uas=0&nvt=1&ref=https%3A%2F%2Fwww.loveislife1.com%2F2023%2F06%2Fblog-post_1.html&fc=1920&brdim=0%2C0%2C0%2C0%2C1920%2C0%2C1920%2C1032%2C1920%2C955&vis=1&rsz=%7C%7CoeEbr%7C&abl=CS&pfx=0&fu=128&bc=31&td=1&nt=1&ifi=6&uci=a!6&btvi=3&fsb=1&xpc=gAEYJTMZG2&p=https%3A//www.loveislife1.com&dtd=418

৩ গল্প 👎

 বখিলীর পরিণাম

একবার উম্মুল মু’মিনীন হযরত উম্মে সালমার গৃহে কিছু হাদিয়ার গোশত আসিয়াছিল। আমাদের হযরত (সাঃ) গোশত খাইতে ভালবাসিতেন। তাই পতিভক্তা উম্মে সালমা গোশতটুকুহযরতের জন্য তুলিয়া রাখিলেন। ইতিমধ্যে এক ভিক্ষুক গৃহদ্বারে আসিয়া হাঁক ছাড়িল – “আল্লাহর নামে খয়রাত দিন, আল্লাহ বরকত দিবেন।” গৃহমধ্যে হইতে জবাব আসিল, “বাবা, মাফ কর, আল্লাহ তোমাকেও বরকত দান করুক।” ইহার অর্থ হইল – তোমাকে দিবার মত বাড়ীতে কিছুই নাই। এই জবাব শুনিয়া ভিক্ষুক চলিয়া গেল। কিছুক্ষণ পর হযরত (সাঃ) গৃহে ফিরিয়া বিবি উম্মে সালামাকে বলিলেন, খাবার কিছু আছে কি? হযরত উম্মে সালামা “জি-হ” বলিয়া তৎক্ষণাৎ ঐ গোশত আনিতে গেলেন। কিন্তু পাত্রের দিকে তাকাইয়া বিস্ময়ে স্তম্ভিত হইয়া গেলেন। কারণ, উহাতে গোশতের নাম গন্ধও নাই। আছে মাত্র এক টুকরা পাথর। তিনি সব কথা আ-হযরতের নিকট গুলিয়া বলিলেন। জবাবে আঁ-হযরত বলিলেন, বেশ হইয়াছে। তোমার পাষাণ হৃদয় ভিক্ষুককে বঞ্চিত করিয়াছে, আল্লাহ তাআলাও গোশতকে পাথরে পরিণত করিয়া তোমাকে বঞ্চিত করিয়াছেন।

শিক্ষা/উপদেশ: যে ব্যক্তি অভাবগ্রস্ত ভিক্ষুককে দান না করিয়া শুধু নিজের উদর পূর্ণ করে, সে যেন পাথর উদরে পুরিল। এইরূপ করিতে করিতে শেষে তাহার হৃদয়ও পাষাণের মত হইয়া যায়। কিন্তু দুনিয়ায় আল্লাহ্ তাআলা এইরূপ পরিণাম সকলকে চর্মচক্ষে দেখান না।

৪ গল্প 👎

মিথ্যা, সুদ, ঘুষ, ব্যভিচার ইত্যাদি পাপের শাস্তি

হযরত রসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অভ্যাস ছিল, প্রত্যহ ফজরের নামায শেষে ছাহাবীদের দিকে মুখ করিয়া বসিতেন এবং কেহ কোন খাব (স্বপ্ন) দেখিয়াছে কি না, বা কাহারও কোন কথা বলিবার আছে কি না, জিজ্ঞাসা করিতেন। কোন কথা জানিতে চাহিলে হুযুর (সাঃ) তাহাকে যথাযথ উপদেশ প্রদান করিতেন । অভ্যাস মত এক দিন হযরত (সাঃ) বলিলেন, কাহারও কিছু বলিবার আছে কি না ? কেহ কিছু না বলায় তিনি নিজেই বলিলেন, আজ রাত্রে আমি অতি সুন্দর ও বিস্ময়কর একটি স্বপ্ন দেখিয়াছি। (নবীদের খাব এবং ওহী সম্পূর্ণ সত্য হইয়া থাকে। ইহাতে বিন্দুমাত্র সন্দেহ নাই।) দেখিলাম, দুই ব্যক্তি আমার নিকট আসিয়া আমাকে হাতে ধরিয়া এক পবিত্র স্থানের দিকে লইয়া চলিল। কিয়দ্দূর গমনের পর দেখিলাম, (১) একজন লোক বসিয়া আছে, আর একজন লোক তাহার নিকট দন্ডায়মান রহিয়াছে। দণ্ডায়মান লোকটির হাতে একটি জম্বুরা রহিয়াছে। সে ঐ জম্বুরা দ্বারা উপবিষ্ট লোকটির মস্তক চিরিতেছে। একবার মুখের এক দিক দিয়া ঐ জম্বুরা ঢুকাইয়া দিয়া মাথার পিছন পর্যন্ত কাটিয়া ফেলে। আবার অন্য দিক দিয়াও এইরূপ করে। এক দিক কাটিয়া যখন অন্য দিক কাটিতে যায়, তখন প্রথম দিক পুনরায় জোড়া লাগিয়া ভাল হইয়া যায়। আবার ঐরূপভাবে কাটে আবার জোড়া লাগে। আমি এই অবস্থা দেখিয়া অত্যন্ত ভীত হইয়া সঙ্গীদ্বয়কে জিজ্ঞাসা করিলাম, বন্ধুগণ! ব্যাপার কি? সঙ্গীদ্বয় বলিলেন, সামনে চলুন। আমরা সম্মুখের দিকে চলিলাম। কিছুদূর গিয়া দেখিলাম, (২) এক জন লোক শুইয়া আছে, আর একজন লোক একখানা ভারী পাথর হাতে করিয়া তাহার নিকট দণ্ডায়মান রহিয়াছে। দাঁড়ান লোকটি ঐ পাথরের আঘাতে শোয়া লোকটির মাথা চুরচুর করিয়া দিতেছে। পাথরটি এত জোরে নিক্ষেপ করে যে, মস্তকটি চূর্ণ-বিচূর্ণ হইয়া বহুদূরে গিয়া নিক্ষিপ্ত হয়।

https://googleads.g.doubleclick.net/pagead/ads?npa=1&gdpr=1&us_privacy=1—&gdpr_consent=CPziCYAPziCYAEsACBENDaCoAP_AAEPAAAIYINJB7D7FbSFCwH57aLsAMAhXRsCAQqQAAASBAmABQAKQIAQCkkAYFESgBAACAAAAICZBIQIMCAgACUABQAAAAAEEAAAABAAIIAAAgAEAAAAIAAACAIAAEAAIAAAAEAAAmQhAAIIACAAAhAAAIAAAAAAAAAAAAgCAAAAAAAAAAAAAAAAAAQQaQD2F2K2kKFgPi2QWYAQBCijYEAhUAAAAkCBIAAgAUgQAgFIIAwAIFAAAAAAAAAQEgCQAAQABAAAIACgAAAAAAIAAAAAAAQQAAAAAIAAAAAAAAEAQAAAAAQAAAAIAABEhCAAQQAEAAAAAAAQAAAAAAAAAAABAAAAAAAAAAAAAAAAAAAAgAA&addtl_consent=1~2072.70.89.93.108.122.149.196.2253.2299.259.2357.311.317.323.2373.338.358.2415.415.2506.2526.482.486.494.495.2568.2571.2575.540.574.2624.609.2677.2779.827.864.981.1048.1051.1095.1097.1201.1205.1276.1301.1365.1415.1449.1570.1577.1651.1716.1735.1753.1765.1834.1870.1878.1889.1958&client=ca-pub-1426523110009009&output=html&h=182&slotname=6325634926&adk=3749953646&adf=4175751521&pi=t.ma~as.6325634926&w=728&fwrn=4&lmt=1697061769&rafmt=11&format=728×182&url=https%3A%2F%2Fwww.loveislife1.com%2F2023%2F05%2Fblog-post_60.html&host=ca-host-pub-1556223355139109&wgl=1&uach=WyJXaW5kb3dzIiwiMTUuMC4wIiwieDg2IiwiIiwiMTE3LjAuNTkzOC4xNTAiLFtdLDAsbnVsbCwiNjQiLFtbIkdvb2dsZSBDaHJvbWUiLCIxMTcuMC41OTM4LjE1MCJdLFsiTm90O0E9QnJhbmQiLCI4LjAuMC4wIl0sWyJDaHJvbWl1bSIsIjExNy4wLjU5MzguMTUwIl1dLDBd&dt=1697115224105&bpp=9&bdt=474&idt=315&shv=r20231004&mjsv=m202310090101&ptt=9&saldr=aa&abxe=1&cookie=ID%3D1ee942d30082ee50-222d393765e0001f%3AT%3D1697114959%3ART%3D1697115149%3AS%3DALNI_MaBmSdtUY4R7_qtrDo_VbhJptGxnw&gpic=UID%3D00000cba06040dec%3AT%3D1697114959%3ART%3D1697114959%3AS%3DALNI_MYtHDQUHhtIZrRaF0Q4BOp_u_vmnA&prev_fmts=0x0%2C1073x280%2C728x280%2C728x182%2C728x182%2C728x182&nras=1&correlator=7428550485827&frm=20&pv=1&ga_vid=896729878.1697114958&ga_sid=1697115224&ga_hid=92951295&ga_fc=1&rplot=4&u_tz=60&u_his=2&u_h=1080&u_w=1920&u_ah=1032&u_aw=1920&u_cd=24&u_sd=1&dmc=8&adx=415&ady=4541&biw=1903&bih=955&scr_x=0&scr_y=0&eid=44759876%2C44759927%2C31078657%2C31078701%2C42531705%2C44804783%2C44805099%2C31078301%2C31078680%2C31078663%2C31078665%2C31078668%2C31078670&oid=2&pvsid=1067016778300241&tmod=1819887879&uas=0&nvt=1&ref=https%3A%2F%2Fwww.loveislife1.com%2F2023%2F06%2Fblog-post_1.html&fc=1920&brdim=0%2C0%2C0%2C0%2C1920%2C0%2C1920%2C1032%2C1920%2C955&vis=1&rsz=%7C%7CoeEbr%7C&abl=CS&pfx=0&fu=128&bc=31&td=1&nt=1&ifi=7&uci=a!7&btvi=4&fsb=1&xpc=ZqU6mCTOhZ&p=https%3A//www.loveislife1.com&dtd=428

লোকটি নিক্ষিপ্ত পাথরটি কুড়াইয়া আনিবার পূর্বেই বহুধা বিভক্ত মস্তক জোড়া লাগিয়া পূর্বের ন্যায় হইয়া যায়। সে ঐ পাথর কুড়াইয়া আনিয়া আবার মাথায় আঘাত করে এবং মাথা চূর্ণ-বিচূর্ণ হইয়া যায়। এইভাবে সে পুনঃ পুনঃ করিতে থাকে। এই ভয়াবহ দৃশ্য দেখিয়া আমি ভীত ও সন্ত্রস্ত হইয়া পড়িলাম। সঙ্গীদ্বয়কে জিজ্ঞাসা করিলাম, এ কি ব্যাপার খুলিয়া বলুন। তাঁহারা কোন জবাব না দিয়া শুধু বলিলেন, আগে চলুন। আমরা আগে চলিলাম, কিছুদূর অগ্রসর হইয়া একটি প্রকাণ্ড গর্ত দেখিতে পাইলাম। গতটির মুখ সরু কিন্তু অভ্যন্তরভাগ অত্যন্ত গভীর এবং প্রশস্ত – যেন একটি তদুর, উহার ভিতরে দাউ দাউ করিয়া আগুন জ্বলিতেছে আর বহু সংখ্যক নর নারী উহাতে দক্ষীভূত হইতেছে। আগুনের তেজ এত অধিক যে, যেন আগুনের ঢেউ খেলিতেছে। ঢেউয়ের সঙ্গে যখন আগুন উচ্চ হইয়া উঠে, তখন লোকগুলি উথলিয়া গর্তের দ্বারেদেশে পৌঁছিয়া গর্ত হইতে বাহির হইবার উপক্রম হইয়া যায়। আবার যখন আগুন নীচে নামিয়া যায়, তখন লোকগুলিও সঙ্গে সঙ্গে নীচে নামিয়া যায়। আমি ভীত হইয়া সঙ্গীগণকে বলিলাম, বন্ধুগণ! এবার বলুন এই ব্যাপার কিং কোন জবাব না দিয়াই তাহারা বলিলেন, আগে চলুন। আমরা সম্মুখে অগ্রসর হইতে লাগিলাম। কিছুদূর অগ্রসর হইয়া আমরা একটি রক্তের নদী দেখিতে পাইলাম। তীরে একটি লোক দাঁড়ান আছে, ইহার নিকট স্তূপীকৃত কতকগুলি প্রস্তর রহিয়াছে। নদীর মধ্যে একটি লোক হাবুডুবু খাইয়া অতি কষ্টে কূলের দিকে আসিতে চেষ্টা করিতেছে।

তীরের নিকটবর্তী হইতেই তীরস্থ লোকটি তাহার মুখে এত জোরে পাথর নিক্ষেপ করে যে, সে আবার নদীর মাঝখানে চলিয়া যায়। এভাবে যখনই সে তীরের দিকে আসিতে চেষ্টা করে, তখনই তীরস্থ লোকটি পাথর নিক্ষেপ করিয়া তাহাকে দূরে সরাইয়া দেয়। এমন নির্মম ব্যবহার দর্শনে ভয়ে আমি স্তম্ভিত হইয়া সঙ্গীদ্বয়কে জিজ্ঞাসা করিলাম, বন্ধুগণ। বলুন একি ব্যাপার? তাহারা কোন জবাব দিলেন না; বলিলেন, আগে চলুন। আমরা আগে চলিলাম, কিছুদূর অগ্রসর হইয়া একটি সুন্দর শ্যামল উদ্যান দেখিতে পাইলাম। উদ্যানের মধ্যভাগে একটি অতি উচ্চ বৃক্ষ। উহার নিম্নে একজন বৃদ্ধলোক বসা আছে। বৃদ্ধের পার্শ্বদেশে অনেক বালক-বালিকা। বৃক্ষটির অপর পার্শ্বে আরও একজন লোক বসা আছে। তাহার সম্মুখে আগুন জ্বলিতেছে। ঐ লোকটি আগুনের মাত্রা আরও প্রবলভাবে বৃদ্ধি করিতেছে। সঙ্গীয় আমাকে বৃক্ষে আরোহণ করাইতে লাগিলেন। বৃক্ষটির মাঝামাঝি গিয়া দেখিলাম, এক সুদৃশ্য অট্টালিকা। এমন সুন্দর ও মনোরম অট্টালিকা ইহার পূর্বে কখনও আমি দেখি নাই। অট্টালিকার ভিতরে পুরুষ-স্ত্রী, বালক-বালিকা সকল শ্রেণীর লোক রহিয়াছে। অট্টালিকা হইতে বাহিরে আসিয়া সঙ্গীদ্বয় আমাকে আরও উপরে লইয়া গেলেন। তথায় অপর একটি উত্তম অট্টালিকা দেখিতে পাইলাম, উহার ভিতরে দেখিলাম শুধু বৃদ্ধ ও যুবক । আমি সঙ্গীদ্বয়কে বলিলাম, আপনারা আমাকে নানাস্থান ভ্রমণ করাইয়া ঘুরাইয়া ফিরাইয়া আনিলেন। এখন বলুন দেখি, ঐসব কি ব্যাপার দেখিলাম?

সঙ্গীদ্বয় বলিলেন—

১। প্রথম যে লোকটির মস্তক ছেদন করা হইতেছে দেখিয়াছেন, সে লোকটির মিথ্যা বলার। অভ্যাস ছিল। সে যে মিথ্যা বলিত তাহা দুনিয়াময় মশহুর হইয়া যাইত।

২। দ্বিতীয় নম্বর যে লোকটির মস্তক প্রস্তরাঘাতে চূর্ণ-বিচূর্ণ করা হইতেছিল, সে দুনিয়ায় আলেম ছিল। কোরআন হাদীস শিক্ষা করিয়াছিল, কিন্তু তদনুযায়ী নিজেও আমল করে নাই, অন্যকেও শিক্ষা দেয় নাই, যাহাতে এলমে দ্বীন প্রচার হইতে পারিত। রাত্রে শুইয়া আরামে কাটাইত। আলমে বরযখে হাশরের ময়দানে হিসাব-নিকাশ না হওয়া পর্যন্ত তাহার এইরূপ আযাব হইতে থাকিবে।

৩। তৃতীয় নম্বরে আপনি যাহাদের আগুনের তন্দুরের ভিতরে দেখিয়াছেন, তাহারা দুনিয়ায় ছিল ব্যভিচারী পুরুষ ও ব্যভিচারিণী নারী। কিয়ামত পর্যন্ত তাহাদের এইরূপ আযাব হইতে থাকিবে।

৪। চতুর্থ নম্বরে আপনি যে লোকটিকে রক্তের নদীতে হাবুডুবু খাইতে দেখিয়াছেন, সে ঘুষ, সুদ খাইয়া, চুরি করিয়া, এতীমের ও বিধবার মাল আত্মসাৎ করিয়া লোকের রক্ত শোষণ করিয়াছিল। কিয়ামত পর্যন্ত তাহার এইরূপ আযাব হইতে থাকিবে।

৫। (১) তৎপর বৃক্ষের নীচে যে বৃদ্ধ লোকটিকে দেখিয়াছেন, তিনি হযরত ইব্রাহীম (আঃ)। ছেলেপেলেগুলি মুসলমান নাবালেক ছেলেমেয়ে। আর (২) যিনি অগ্নি প্রজ্বলিত করিতেছিলেন তিনি দোযখের দারোগা মালেক ফিরিশতা। বৃক্ষের উপর (৩) প্রথম যে অট্টালিকাটি দেখিয়াছেন উহা সাধারণ ঈমানদারদের বেহেশতের বাড়ীঘর। তৎপর (৪) দ্বিতীয় যে অট্টালিকাটি দেখিয়াছেন, উহা ঐ শহীদানের অট্টালিকা, যাহারা দুনিয়াতে দ্বীন ইসলামের জন্য শহীদ হইয়াছেন। আমি জিব্বায়ীল ফেরেশতা এবং আমার সঙ্গের লোকটি মীকাঈল ফিরিশতা। [ইহার পর জিব্বায়ীল (আঃ) হযরত (দঃ)-কে বলিলেন] আপনি এখন উপরের দিকে দৃকপাত করুন। আমি উপরের দিকে তাকাইয়া এক খণ্ড সাদা মেঘের মত দেখিলাম । জিব্বায়ীল (আঃ) বলিলেন, উহা আপনার অট্টালিকা। বলিলাম, আমাকে ছাড়িয়া দিন, আমি আমার অট্টালিকায় চলিয়া যাই। জিব্বায়ীল (আঃ) বলিলেনঃ এখনও সময় হয় নাই, এখনও দুনিয়ায় আপনার হায়াত বাকী আছে। দুনিয়ার জীবন শেষ হইলে পর তথায় যাইবেন।

শিক্ষা/উপদেশঃ এই হাদীস হইতে কয়েকটি বিষয়ের অবস্থা বুঝাইতেছে। প্রথমতঃ মিথ্যার কি ভয়াবহ সাজা। দ্বিতীয়তঃ বে-আমল আলেমের পরিণতি। তৃতীয়তঃ, যিনার প্রতিফল ও চতুর্থতঃ, সুদখোরের ভীষণ আযাব। আল্লাহ সকল মুসলমানকে এই সকল কাজ হইতে বাঁচাইয়া রাখুন। আমীন !

পোষ্টটি ভালো লেগে থাকলে আপনার মূল্যবান মতামত জানান প্লিজ!

Leave a Comment