আলী রা. তাঁর সৌন্দর্য এবং চরিত্রকে কতই না সুন্দরভাবে বর্ণনা করেছেন। যারা পড়েন নি “হোসনে মোস্তফাﷺ- ০২” পড়ে নিবেন। কতই না উত্তম বর্ণনা। হুজুর ﷺ অসাধারণ হয়েও পৃথিবীতে কত সাধারণ জীবন-যাপন করেছেন। নিজের কাপড়ে তালি লাগিয়ে পরতেন। আর আমাদের আজ এই অবস্থা যে প্রত্যকে অনুষ্ঠানে নতুন নতুন পোশাক চাই! আফসোস, আমরা তাঁর আদর্শ থেকে দূরে সরে গেছি।
নিজের কাজ নিজে করতেন, এতিমকে ভালোবাসতেন। আল্লাহু আকবার কতই না উত্তম চরিত্রের উপমা ছিলেন তিনি।
“মোস্তাফা আপ কে যেছা কোই আয়া হি নেহি, কেসে ভি আতা যাভ আল্লাহ নে বানায়া হি নেহি”
মনে আছে নিশ্চয়ই, আলী রা. বলেছিলেন আমি তাঁর আগে এবং তাঁর পর তাঁর মতো আর কাউকে দেখি নি। এ কথার প্রেক্ষিতে মুফতি আহমাদ ইয়ার খান নঈমি রহ. বলেন, দেখবেনই বা কিভাবে? আল্লাহ তায়ালা তো তাঁর মতো কাউকে সৃষ্টিই করেন নি। [১]
যার চেহারা দেখে সাহাবীরা হাজারো কষ্ট ভুলে যেতেন। ক্ষুধার যন্ত্রণা কমে যেত যার মোবারক চেহারা দেখলে। যাকে দেখে সাহাবীরা তাদের অন্তরকে প্রশান্ত করতেন।
সায়্যিদুনা আবু হুরায়রা রা. বলেন, ‘যখন আমি হুজুর ﷺ কে দেখতাম তখন আমার অন্তর খুশিতে দুলতে থাকত এবং আমার চোখ শীতল হতো।’ [২]
এক ব্যক্তি একবার হুজুর ﷺ এর দরবারে উপস্থিত হয়ে হুজুরকে ﷺ এমনভাবে দেখতে লাগল যে চোখের পলক পর্যন্ত ফেলেছিল না। হুজুর ﷺ জিজ্ঞেস করলেন এভাবে দেখছ কেন? তখন সে জবাব দিল- আমার পিতা-মাতা আপনার কদমে উৎসর্গিত হোক। আপনার চেহারা দেখে আমি অন্তর প্রশান্ত করেছি এবং উৎফুল্লতা অনুভব করছি। [৩]
কি বর্ণনা করব তাঁর শান। আল্লাহু আকবার যার চেহারায় আনোয়ার মানুষের দুঃখ দূর করার জন্য যথেষ্ট হতো। তাঁর নূরানী চেহারায় মুগ্ধ হয়ে কেউ চাঁদের সাথে তুলনা দিত, কেউবা তার চেয়েও বেশি বলত। আবার কেউবা সূর্যের সাথে তুলনা দিত।
সায়্যিদুনা আবু হুরায়রা রা. বলেন, আমি হুজুর ﷺ এর চেয়ে বেশি সুন্দর আরব আর কাউকে দেখি নি যেন মনে হতো সূর্য তাঁর চেহারায় প্রদক্ষিণ করছে। [৪]
কি অপরুপ উপমায় সৌন্দর্যের বর্ণনা! আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহ আমাদেরকে সেই হুজুর ﷺ এর উম্মত বানিয়েছেন বিনা কষ্টে, বিনা চাহিদায়। যার উম্মত হওয়ার জন্য নবী রাসূলরা দোয়া করেছেন।
রেফারেন্সঃ
[১] মিরাতুল মানাযিহ, বাব আসমাইননবী ওয়া সিফাতা, আল ফসলুল সানী ৮/৫৮।
[২] মুসনাদে ইমাম আহমদ, ৩/১৫১, হাদীস নং- ৭৯৩৭।
[৩] শিফা, আল ফসলুছ সানী ফি সাওয়াবী মুহাব্বাতিহী ২/২০।
[৪] মিশকাত, কিতাবুল ফাযায়িল, বাবু ফাযায়ীলে সায়্যিদীল মুরসালিন, ২/৩৬২, হাদীস নং- ৫৭৯৫।
‘হোসনে মোস্তাফা ﷺ -০৩’