আমার প্রিয় ব্যক্তিত্বের মাঝে আল্লামা এম এ জলীল (রঃ) অন্যতম একজন। যার কথা আমাকে চরম ভাবে আন্দলিত করতো। ইশকে মুস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আদব ও তাজিমে মুস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কেমন হওয়া উচিৎ তার কথা ও কাজে এর প্রকাশ চরম ভাবে প্রকাশিত।
আউলিয়া কিরামের প্রতি তার ভক্তি ও ভালবাসা আমাদেরকে আজ ও অনুপ্রাণিত করে। তার কিছু লিখার জন্য বাংলা ভাষী সুন্নি ভাই বোনেরা, বিশেষ করে আমরা যারা সাধারন মানুষ, তার কাছে আমরা চির ঋণী। যে সমস্ত বিষয়াদি নিয়ে বর্তমান সময়ের জুল খুয়াইসেরা তামীমী টাইমের লোকেরা সমাজে রাসুল বিদ্বেষ ছড়িয়ে যাচ্ছে, তাদের কথার উত্তর যেন তার লেখনীর প্রতি পদে পদে প্রকাশিত। বিশেষ করে দেউবন্দি ফেরকার কুফরি ও বেয়াদবী মূলক আক্বাঈদ গুলো আমাদের হয়তো জানাই হতোনা তিনি অগ্রগামী না হলে।
একটি কথা উল্লেখ করা দরকার পাকিস্তান আমলে বি সি এস ক্যাডার এই ভদ্র লোক কর্ম জীবনে ইসলামী ফাউন্ডেশনের ডাইরেক্টর সহ অনেক লাভ ও সুবিধা জনক প্রতিষ্টানে চাকুরী করে ও ঢাকাতে একটি বাসা ও গ্রামের বাড়ীতে একটি মাদ্রাসা ছাড়া কিছুই রেখে যেতে পারেন নি। এটি তাঁকে আউলিয়া আল্লাহ্ ভাবার মুখ্য কারন হিসেবে আমি মনে করি।
মূল কথায় আসি ২০০০ সালে আমার শ্রদ্ধেয় বড় ভাই দেশে যান। সে সময় হবিগঞ্জের চুনারু ঘাটে অবস্থিত হাজী আলীম উল্লাহ সিনিয়র মাদ্রাসায় হুযুরের একটি প্রগ্রাম ছিল। কথা ছিল শায়েস্তাগঞ্জ রেল ষ্টেশন থেকে ভাই তাঁকে রিসিভ করবেন। এরই মধ্যে আমার ২ বছরের ভাতিজা ফুড পয়জনে আক্রান্ত হয়ে খুবই খারাপ অবস্থা। এখন কি করা উচিৎ কারো মাথায় কিছু কাজ করছিল না। পরে ভাই সিদ্ধান্ত নিলেন আগে হুজুরকে পিকাপ করে পরে হাসপাতালে যাবেন।
হুজুর যখন এই পরিস্থিতি বুঝতে পারলেন, বললেন অন্য কাউকে পাঠালেও তো পারতেন। যাই হোক সর্ট টাইম নাস্তা ও অজু সেরে বললেন আমাকে একটু বাচ্চাটির কাছে নিয়ে চলুন। পরিস্থিতি দেখে নিজেও একটু বিব্রতকর অবস্থায় পরে গেলেন। সামান্য একটু তিলাওয়াত ও দরুদ শরীফ পড়ে বললেন- আমার সাথে সবাই হাত তুলুন। দুয়ার মুখ্য আর্জিতে বললেন- ” হায় আল্লাহ্ তোমার কাছে এই বাচ্চার জন্য শিফা চাইতেছি, এই বাচ্চাকে সুস্থ করে দাও। আল্লাহ্ আমরা #গাউসে_পাকের_জুতা_বহন_করি, যদি আমাদের দুয়া কবুল না হয় #তোমার_গাউসে_পাকের_বদনাম_হবে, তুমি কি চাও তোমার ওলীর বদনাম হোক? যদি তা না হয়, এই বাচ্চাটিকে ভাল করে দাও। হায় মালিক তুমি মালিকের কাছে এই গোলামদের দাবী- এই বাচ্চাকে কাল সকালের মধ্যে ভাল করে দিতেই হবে। হে আল্লাহ্ কাল সকালে বাচ্চাটি যেন সুস্থ অবস্থায় ঘুম থেকে উঠে। সংক্ষিপ্ত দরুদ শরীফের মাধ্যমে দুয়া শেষ করেন। আমাদের বলে যান চিন্তা করবেন না। আল্লাহ্ পাক তাঁকে সুস্থ করে দিবেন। অতপর মাহফিলে চলে গেলেন।
আল্লাহ্ পাকের কি মহিমা পড়ের দিন সকালে সে সুস্থ অবস্থায় ঘুম থেকে উঠে #আলহামদুলিল্লাহ ডাঃ ও যেতে হয় নাই। আমরা সকলেই খুব অবাক হয়ে যাই এত সহজে রিলিজ পেয়ে যাব আমাদের কেউ কল্পনা ও করিনি। ১৬ বছর পেরিয়ে গেলেও আমাদের পরিবারের কাছে এটি একটি স্মরণীয় ঘটনা। আমি বলতে চাচ্ছি আমাদের পরিবারের কাছে এটি হুজুরের একটি কারামত। আমি কাউকে জুড় করে বিশ্বাস করাতে চাচ্ছি না, যাষ্ট আমার ভিউটি আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম।
একটি দুঃখ রয়েই গেল, এই যমিনে কিছু সুন্নি ভাইদের চেষ্টায় অনেক সুন্নি আলেম ওলামার কদম পড়েছে যাদের মধ্যে শহীদ আল্লামা ফারুক্বী (রাহ) আল্লামা আবু সুফিয়ান আলকাদেরী, ডঃ আল্লামা সাইয়েদ এরশাদ বুখারী, আল্লামা জালাল উদ্দিন আল কাদেরী, আল্লামা কাউকাব নুরানী, আল্লামা সাইয়েদ হাসিমী মিয়া, আল্লামা তাউসিফ রেযা, আওলাদে রাসুল সৈয়দ মোহাম্মদ তাহের শাহ (মাঃজিঃআঃ) হুজুর কেবলা সহ অনেক দেশী বিদেশী আলেম ওলামা উল্লেখ যোগ্য। কিন্তু পরিতাপের বিষয় আল্লামা জলিল সাহেব (রাহ) কে নিয়ে আসার সুযুগ হয় নাই প্লাস সুন্নিদের সে রকম ব্যবস্থাপনা ও তখন ছিলনা।
পরিশেষে বলতে হয়, রাসুলে পাকের প্রতি নিখুত ভালবাসা যেমন তাঁকে অমর করেছে, তেমনি তার লেখনি তাঁকে বাচিয়ে রাখবে বহু কাল নবীপ্রেমের উজ্জল জ্যুতি হিসেবে। আল্লাহ্ পাক তার এই মাহবুব বান্দার মাকাম কে আলা থেকে আলা নসীব করুন।
আমীন।।
মোহাম্মাদ শাহ আলম
নিউ ইয়র্ক, আমেরিকা।।