হিকমতে মেরাজ!

পোষ্টটি অন্যকে পড়ার সুযোগ করে দিতে শেয়ার করুন প্লিজ।

তিনি দুনিয়াতে তাশরীফ আনলেন। তখনও বাবার ছায়া মাথার ওপর ছিল না। ছয় বছর বয়সে উপনীত হওয়ার পর সবচে বড় সাহারা নিজের মা আমেনা রাদ্বিআল্লাহু আনহা কে হারালেন। নবুয়তের ঘোষণা করলেন তো আপন মানুষ গুলো দূরে সরে গেল। শুধু তাই নয় তাদের কাছ থেকেই আসতে লাগল কষ্টের জোয়ার।

পথে তাঁর কাঁটা বিছানো হতো। কাঁটার আঘাত পা মোবারকে নিয়েও তিনি ছুটে গেছেন দ্বীনের দাওয়াত নিয়ে ঘরে ঘরে। কেন এত কষ্ট তিনাকে দেওয়া হচ্ছে? কি দোষ ছিল তাঁর? আহ! তাদেরকে কে বুঝাতো, যে তাদেরকেই জাহান্নাম থেকে মুক্ত করতে এত কষ্ট সয়ে যাচ্ছেন তিনি।

মক্কার কাফেরদের দেয়া কষ্ট দিন-দিন তীব্র থেকে তীব্রতর হতে লাগল। চাচা আবু তালিব তখনও তাঁর পিছনে ছায়া হয়ে ছিলেন। ‘ভাতিজা যা ইচ্ছে বলো, আমি তোমার সাথে আছি’– এই মায়াভরা কথাগুলো বলা মানুষটাও একসময় বিদায় নিয়ে নেন এই ধরার বুক থেকে। আরেকটা মানুষ ছিল। সকল কষ্ট যার সাথে শেয়ার করতে পারতেন তিনি। সবসময় যার কাছ থেকে শান্তনার বাণী শোনে অন্তরে প্রশান্তি পেতেন তিনি। ওহী নুযুল এর সময় যখন তাঁর শরীর এক অস্বাভাবিক অবস্থার মধ্য দিয়ে যেত, তিনি তখন তাঁকে ভালোবাসা দিয়ে আগলে রাখতেন। শুনাতেন– আপনার রব আপনাকে কখনো একা ছেড়ে দিবেন না। এমন মধুমাখা কথাগুলো প্রিয় আক্বা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে প্রশান্তি পৌঁছাতো। হযরত খাদিজাতুল কুবরা রাদ্বিআল্লাহু আনহা। প্রিয় আক্বার সবচে কাছের মানুষ। সবচে প্রিয় জীবনসঙ্গিনী। তাঁরও ডাক আসল। একদিন তিনিও চলে গেলেন মোস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে রেখে, এই দুনিয়ার মায়া ছেড়ে।

জাহিরিভাবে মাথার ওপরের ছায়াগুলো সরে গিয়েছিল। একা হয়ে গিয়েছিললেন আমার আক্বা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। মক্কার কাফেরদের দেয়া কষ্টের সীমা যখন ছাড়িয়ে গেল, তিনি চললেন যায়েদ বিন হারেছা’কে নিয়ে তায়েফ পানে। আহ! তায়েফবাসী আহ! তারাও চিনল না রবের প্রিয় হাবীবকে। এত কষ্ট দিল তারা যা বর্ণনা করা যায় না। চোখগুলো থেকে অনবরত অশ্রু ঝরতে থাকে। লম্বা ঘটনা। অনেকেরই জানা। নাই বললাম আজ। সেখান থেকেও শত কষ্টের আঘাত সইতে হয়েছে আমার আক্বাকে।

এত কষ্টের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন তিনি, রব কি আর দেখেছেন না? রব কি তাঁর হাবীবকে এভাবেই ছেড়ে দিবেন? নাহ। তিনি তাঁর হাবীব এর জন্য এমন এক আয়োজন করলেন, যা কোনো আম্বিয়া আলাইহিস সালাম এর ভাগ্যে ছিল না। আল্লাহ তায়ালা এমন এক সৌভাগ্য দান করলেন আমার মোস্তফাকে যার খুশিতে আকাশ-বাতাস আজও আন্দোলিত হয়। মূসা আলাইহিস সালাম কতই না আর্জি পেশ করলেন– হে আমার রব! একটা বার দেখতে চাই। রব তায়ালার উত্তর– কখনো দেখতে পারবে না মূসা। কিন্তু কথা আসল যখন তাঁর হাবীবের তখন আসমান জমিনকে সজ্জিত করে স্বয়ং জিবরাঈলকে পাঠিয়ে দিলেন আমার হাবীবকে দুলা বানিয়ে আজ নিয়ে আসো।

আজ আমি আমার কুদরতের নিকাব উঠাব, আমার হাবীবকে আমার দীদারের এমন শরবত পান করাব যার মাধ্যমে আমার হাবীব তাঁর সব কষ্টকে মূহুর্তেই ভুলে যাবেন। আল্লাহ তায়ালার এই একটি হিকমতও ছিল, মোস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে মেরাজে ডাকার পিছনে।

খোদা কি আজমতে কিয়া হে,

মুহাম্মদ মোস্তফা জানে!

মাক্বামে মোস্তফা কিয়া হে,

মুহাম্মদ-কা খোদা জানে

~স্বাধীন আহমেদ আত্তারী

পোষ্টটি ভালো লেগে থাকলে আপনার মূল্যবান মতামত জানান প্লিজ!

Leave a reply

  • Default Comments (0)
  • Facebook Comments