পোষ্টটি অন্যকে পড়ার সুযোগ করে দিতে শেয়ার করুন প্লিজ।
হাদীস কি
ও হাদীস এর পরিচয়
হাদিস (আরবিতে الحديث) হলো মূলত ইসলাম ধর্মের শেষ বাণী বাহক হযরত মুহাম্মাদ মুস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বাণী ও জীবনাচরণ। হাদিসের উপদেশ মুসলমানদের জীবনাচরণ ও ব্যবহারবিধির অন্যতম পথনির্দেশ। কুরআন ইসলামের মৌলিক গ্রন্থ এবং হাদিসকে অনেক সময় তার ব্যাখ্যা হিসেবেও অভিহিত করা হয়।
আল্লামা হাফেজ সাখাবী (রহ.) বলেন-
والحديث لغة ضد القد يم واصطلا حامااضيف الى النبى ﷺ قولا له اوفعلا له اوتقرير اوصفة حتى الحركات والسكنات فى اليقظة والمنام –
অর্থ : আভিধানিক অর্থে হাদীস শব্দটি কাদীম তথা অবিনশ্বরের বিপরীত আর পরিভাষায় বলা হয় রাসূলুাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর দিকে সম্বন্ধযুক্ত। চাই তার বক্তব্য হোক বা কর্ম বা অনুমোদন অথবা গুণ এমন কি ঘুমন্ত অবস্থায় বা জাগ্রত অবস্থায় তাঁর গতি ও স্থির সবই হাদীস।
বুখারী শরীফের বিশিষ্ট ব্যাখ্যাগ্রন্থ عمدة القارى এর মধ্যে হাদীস সম্বন্ধে রয়েছে:
علم الحديث هو علم يعرف به اقوال النبى ﷺ وافعاله واخواله –
অর্থ : ইলমে হাদীস এমন বিশেষ জ্ঞান যার সাহায্যে প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কথা, কাজ ও অবস্থা জানতে পারা যায়। আর ফিক্হবিদদের নিকট হাদীস হল:
اقوال رسول الله ﷺ وافعاله –
অর্থ : হাদীস হলো আল্লাহর রাসূলের কথা ও কাজসমূহ।
বিখ্যাত মুহাদ্দিস ও আলিয়া মাদ্রাসার সাবেক প্রধান মাওলানা মুফতী সাইয়্যেদ মুহাম্মাদ আমীমুল ইহসান বারকাতী (রহ.) এর মতে, হাদীস (حديث) এমন একটি বিষয় যা রাসূলুাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বাণী, কর্ম ও নীরবতা এবং সাহাবায়ে কেরাম, তাবিঈনদের কথা, কর্ম ও মৌন সম্মতিকে বুঝায়।
হাদীস সংরক্ষণ করা বর্ণনা করা অত্যন্ত ফযীলতময়।
কারণ এর মাধ্যমে প্রিয়নবী মুহাম্মাদুর রাসূলুাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পবিত্র কালামের হেফাযত করা হয়। আর এরকম ব্যক্তির ব্যাপারে প্রিয়নবী বলেছেন:-
نضرالله امرأسمع مقالتى فوعاهاواداها كماسمع فرب حامل فقه غير فقيه ورب حامل فقه الى من هوافقه منه –
অর্থ : আল্লাহ পাক সেই ব্যক্তিকে সতেজ, ও সমুজ্জ্বল রাখুন, যে আমার কথাগুলো শুনেছে, সংরক্ষণ করেছে এবং অপরজনের নিকট তা পৌঁছে দিয়েছে। (আবু দাউদ)
এই হাদীস আমাদের নিকট তুলে ধরে হাদীস বর্ণনা করার গৌরব ও সম্মান। এজন্যে এই হাদীসের ব্যাখ্যায় কোন কোন মুহাদ্দিস বলেছেন, যে ব্যক্তি মূলত অর্থেই হাদীস সন্ধানী হয় তার চেহারা সজীব বা নূরানী হয়ে ফুটে উঠবে।
শুধু ফযীলত নয়, আল্লাহর রাসূল দোআ করেছেন হাদীস বর্ণনাকারীদের জন্য এবং তাদেরকে নিজের উত্তরসূরী হিসেবে ঘোষণা দিয়ে বলেছেন:
اللهم ارهم خلفائى قالو يارسوالله ومن خلفائك قال الذين يرؤون الاحاديث ويعلمونـها الناس –
অর্থ : হে আল্লাহ, আমার উত্তরসূরীদের প্রতি রহম কর“ন। সাহাবীগণ জিজ্ঞাসা করলেন, ইয়া রাসূলুাল্লাহ! আপনার উত্তরসূরী কারা? তিনি বলেন, তারাই যারা আমার হাদীস বর্ণনা করে ও মানুষের নিকট শিক্ষা দেয়। হাদীস বর্ণনাকারীরা আরো একটি উপায়ে লাভবান হতে পারে। আল্লাহর রাসূল বলেছেন, “নিশ্চয়ই কিয়ামতের দিন তারাই আমার নিকটবর্তী হবে যারা অধিক হারে আমার প্রতি দরূদ ও সালাম পেশ করে।” (তিরমিযী)
এই হাদীসটি ইবনে হিব্বান ও তার হাদীসের গ্রন্থে লিপিবদ্ধ করেছেন এবং বলেছেন এই হাদীস এর ফায়েজ ও বরকত লাভ করবে নিশ্চিতভাবে মুহাদ্দিসানে কেরাম ও হাদীসের শায়খগণ। কারণ তারাই তো অধিক হারে হাদীস পড়ে, লিখে। যতবার হাদীস লিখবে বা পড়বে ততবার তিনি প্রিয়নবীর প্রতি দরূদ সালাম পড়বেন ও লিখবেন। এর ফলে রোজ কিয়ামতে সহজেই তারা প্রিয়নবীর নিকটবর্তী হতে পারবেন।
পোষ্টটি ভালো লেগে থাকলে আপনার মূল্যবান মতামত জানান প্লিজ!