♻️প্রশ্নঃ হযরত মুয়াবিয়া রাদ্বি. ও ইমাম হাসান রাদ্বি. এর মধ্যে যে সন্ধি হয়েছিল তিনি কি সেই চুক্তি ভঙ্গ করেছেন?
♻️হযরত ইমাম হাসান রাদ্বি. এর সাথে কৃত সন্ধি চুক্তি ওনার জিবদ্দশায় হযরত মুয়াবিয়া রাদ্বি. ভঙ্গ করেছেন মর্মে দাবীটি সত্য নয়। নির্ভরযোগ্য সূত্র মোতাবেক, হযরত মুয়াবিয়া রাদ্বি. ইন্তেকালের পরে ইমাম হাসান রাদ্বি. এর অনুপস্থিতিতে হযরত ইমাম হুসাইন রাদ্বি. কে খেলাফত দিতে হবে এরূপ শর্তারোপ সন্ধির মধ্যে উল্লেখ ছিল না।
তবে হযরত মুয়াবিয়া রাদ্বি. এর পরে ইমাম হাসান রাদ্বি. কে পুনরায় খেলাফত প্রাপ্তির বিষয়টি উল্লেখ রয়েছে।
📖যেমন ইমাম ইবনু হাজার আসকালানী রহ. অন্যান্য ইমামগণ উল্লেখ করেছেন,
فكره الحسن القتال، وبايع معاوية على أن يجعل العهد له من بعده،
-“ইমাম হাসান রাদ্বি, মুসলমানদের মাঝে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধকে অপছন্দ করলেন ও মুয়াবিয়া রাদ্বি. এর নিকট বায়াত গ্রহণ করলেন এই মর্মে যে, তিনার ওফাতের পরে হযরত হাসান রাদ্বি. কে খলিফা বানানো হয়।”
★আসকালানী: আল-ইসাবা ফি তামিযিস সাহাবা, ১ম খণ্ড, ৪৩৩ পৃঃ।
★ইবনু আব্দিল বার: আল-ইস্তেআব ফি মারিফাতিল আসহাব, ১ম খণ্ড, ৩৮৬ পৃষ্ঠা।
♻️যেহেতু ইমাম হাসান রাদ্বি. হযরত মুয়াবিয়ার ইন্তেকালের পূর্বেই শাহাদাত বরণ করেছেন সেহেতু খেলাফত পুনরায় ফিরিয়ে না দেওয়ার অভিযোগ থাকছে না। অর্থাৎ হযরত মুয়াবিয়া সন্ধির চুক্তি ভঙ্গ কারি প্রমাণিত হয় না।
📖যেমন ছহীহ্ বুখারীতে হযরত হাসান বছরী (রহ.) থেকে বর্ণিত আছে যে,
ইমাম হাসান রাদ্বি. হযরত মুয়াবিয়া (রা.) কে শর্ত দিলেনঃ-
وَلَيْسَ لمعاوية بن أبي سُفْيَان أَن يعْهَد إِلَى أحد من بعده عهدا بل يكون الْأَمر من بعده شُورَى بَين الْمُسلمين.
-“হযরত মুয়াবিয়া (রা.) এ বিষয়ে অনুমতি নেই যে, তিনি তাঁর পর কাউকে খেলাফত দিয়ে যাবেন। বরং তাঁর পরে এ বিষয়টি মুসলমানদের পরামর্শ অনুযায়ী সমাপ্ত হবে।
(ইবনু হাজার: আস সাওয়াইকুল মুহরিকা, ২য় খণ্ড, ৩৯৯ পৃষ্ঠা)
📖হাফিজ ইবনু কাসির রহ. তদীয় কিতাবে বলেন,
فاشترط ان يأخذ من بيت مال الكوفة خمسة آلاف الف درهم، وان يكون خراج دار أبجرد له، وان لا يسب علي وهو يسمع.
হযরত ইমাম হাসান (রাঃ) এই শর্তে খেলাফতের দাবী পরিত্যাগ রাজি হলেন যে, তাকে কুফার বায়তুল মাল থেকে ৫০ লক্ষ দিরহাম দেওয়া হবে। আবজারাদ অঞ্চলের খাজনা তিনি গ্রহণ করবেন এবং হযরত আলী (রাদ্বি.) এর প্রতি কোন নিন্দাবাদ যেন তার কানে না আসে।
(ইবনু কাসির: আল-বেদায়া ওয়ান নেহায়া, ৮ম খণ্ড, ৪০ পৃষ্ঠা)
♻️অতএব, হযরত মুয়াবিয়া রাদ্বি. ইমাম হাসান রাদ্বি. এর সন্ধি চুক্তি ভঙ্গ কারি প্রমাণিত নয়। তাই অহেতুক বিনা কারণে একজন সাহাবীয়ে রসূলকে এই ধরনের মিথ্যা অভিযোগ দেওয়া মোটেও উচিত নয়।
♻️[বিঃদ্রঃ হযরত মুয়াবিয়া রাদ্বি. এর পরে ইমাম হাসান রাদ্বি. এর অবর্তমানে নিঃসন্দেহে ইমাম হুসাইন রাদ্বি. খেলাফতের অধিক হক্বদার ছিলেন। কিন্তু কুখ্যাত ইয়াজিদের চক্রান্তের কারণে আমীরে মুয়াবিয়া রাদ্বি. চুক্তি ভঙ্গকারী প্রমাণিত হয় না।]
♻️মহান আল্লাহ তা’আলা সকলকে বুঝার তৌফিক দান করুন, আমিন।
✍️মুফ্তী মুহাম্মদ আলাউদ্দিন জেহাদী, নারায়ণগঞ্জ।
এর চেয়ে অধিক তথ্য কারো কাছে থাকলে আমাদেরকে জানালে কৃতার্থ থাকবো।