হজরত আবু হুরায়রা (رضي الله عنه) বলেছেন, তবুক যুদ্ধের কথা যা ছিলো রসুলেপাক (ﷺ) এর জীবনের শেষ যুদ্ধ। মানুষ ক্ষুধার যন্ত্রণায় অস্থির হয়ে পড়েছিলো, তখন হজরত ওমর ইবনে খাত্তাব (رضي الله عنه) নিবেদন করলেন, ইয়া রসুলাল্লাহ! হুকুম করুন, যার কাছে যেটুকু খাদ্য আছে, সবাই যেনো সেসব একত্রিত করে এবং আপনি মেহেরবানি করে বরকতের জন্য দোয়া করুন।
নবী করীম (ﷺ) বললেন, ঠিক আছে। ঘোষণা শুনে সবাই তাদের অপ্রতুল খাদ্য সামগ্রী এনে একত্রিত করতে লাগলেন। কেউ আনলেন এক মুষ্টি ছাতু, কেউবা এক টুকরা রুটি। এক ব্যক্তি আনলেন এক সা অর্থাৎ পৌণে চার সের খেজুর। দস্তরখানায় এই সামান্য খাদ্যসম্ভার রেখে রসুলেপাক (ﷺ) বরকতের জন্য দোয়া করলেন। তারপর হুকুম কররেন, সকলেই যেনো আপন আপন পাত্র ভরে নেয়। সেনাদলের সকলেই পাত্র পূর্ণ করে নিলেন এবং আহার করলেন পরিতৃপ্তির সাথে। এরপরেও দস্তরখানায় কিছু খাবার অবশিষ্ট থেকে গেলো। সেই তবুক যুদ্ধের সৈন্যসংখ্যা ছিলো সত্তর হাজার। নবী করীম (ﷺ) যখন এই মোজেজা প্রদর্শন কররেন, বর্ণনাকারী বলেন, তখন আমি বললাম, ইয়া রসুলাল্লাহ (ﷺ) আপনি তো এইমাত্র বললেন, ‘আশহাদু আল লা ইলাহা ইল্লাল্লহু ওয়া আন্নী রসুলুল্লাহ’ এর কারণ কি? তিনি (ﷺ) বললেন, এই সাক্ষ্যের সাথে যে আল্লাহ্তায়ালার সাক্ষ্য লাভ করতে পারবে, নিঃসন্দেহে তার বাসস্থান হবে জান্নাত।
বান্দা মিসকীন শায়েখ মুহাক্কেক আবদুল হক মোহাদ্দেছে দেহলবী (رحمة الله) বলেন, মোজেজা দর্শনকালে উম্মতের শাহাদাতের কলেমা উচ্চারণ হয়ে থাকে নবুওয়াতের দাবীর সত্যতার উপর বিশ্বাস ও দৃঢ়প্রত্যয়ের পরিপ্রেক্ষিতেই। কিন্তু এ স্থলে এই শাহাদত দ্বারা উম্মতকে উদ্বুদ্ধ করা ও শিক্ষা প্রদান করাই ছিলো নবী করীম (ﷺ) এর উদ্দেশ্য।
➥[কিতাবঃ মাদারেজুন নবুওয়াত। মূলঃ ইমাম আব্দুল হক মুহাদ্দিসে দেহলভী (رحمة الله)]