এই যে ২১ ফেব্রুয়ারির ভাষা-শহিদ দিবস, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস, এটাকে একজন সূফি সাধারণত কীভাবে দেখেন?
এটা মানুষের স্বাতন্ত্র্যের আন্দোলন।
সূফিদের কাছে এটা ‘বাংলা ভাষা শ্রেষ্ঠ’ বা ‘বাংলাদেশ শ্রেষ্ঠ’ এই বাণী বহন করে না। বরং সূফিদের কাছে এ ঘটনা বহন করে, ‘মানুষ শ্রেষ্ঠ’, মানুষের আত্মপরিচয়সমূহ শ্রেষ্ঠ’।
সূফিদের কাছে একজন ব্যক্তির ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্য বড় মর্যাদার বিষয়। প্রত্যেক ব্যক্তির বাবা সূফিদের কাছে বড় সম্মানের ব্যক্তি। প্রত্যেক ব্যক্তির মা সূফিদের কাছে বড় সম্মানের কেউ। প্রত্যেক ব্যক্তির পরিবার সূফিদের কাছে বড় সম্মানের পরিবার। প্রত্যেক ব্যক্তির ভাষা সূফিদের কাছে বড় সম্মানের ভাষা। বড় সম্মানের গোত্র। বড় সম্মানের অঞ্চল। বড়ই সম্মানের দেশ। বড়ই সম্মানের মহাদেশ। বড়ই সম্মানের মানবজাতি।
কারণ, সূফিরা নিজ থেকে একজন মানুষকে দেখেন না, নিজ থেকে একজন মানুষকে পর্যবেক্ষণ করেন না, বরং সেই মানুষটার হয়ে সেই মানুষটাকে অনুভব করেন। সেই পরিবারগুলোর হয়ে সেই পরিবারগুলোকে অনুভব করেন। সেই গোত্র/ভাষা/গোষ্ঠীগুলোর হয়ে সেই অঞ্চল/দেশকে অনুভব করেন।
তার মানে এই না, যে, সত্যকে মিথ্যা বলেন বা মিথ্যাকে সত্য বলেন।
সূফিরা ইবনুল ওয়াক্ত।
সময়ের বরপুত্র। সূফিরা যখন যে সময়ে এসেছেন, তখন সে সময়ের আলোকে মেলে দিয়েছেন শান্ত পরিতৃপ্তির ডানা। সেই মেলে দেয়া ডানার ছায়ায় মানুষ একটু শ্বাস নিয়েছে। একটু শান্ত হয়েছে। একটু কষ্ট ভুলেছে। ভুলেছে ভুলগুলো। তাদের কাজ সময়ের আলোকে, কিন্তু সময়হীনতার পক্ষ থেকে।
তার মানে কিন্তু এই না, সূফিরা খুব চতুর মার্কেটার, তারা সময়ে সময়ে রঙ পাল্টায়। নারে ভাই। বরং সূফিরা জগতের সবচে সরল। তারা যে সময়ে আসে, সেই সময়ের বেদনাটা, যন্ত্রণাটা, কষ্টটাকে ফিল করে। তারা সেই একাকীত্ব, নি:সঙ্গতা, ঠক খাওয়া, মাযলুমের অনুভূতি বয়ে চলা প্রতিটা মানুষের মনের ভিতরের এতিমের জন্য সহায় হয়ে ওঠেন।
স্থির চিরকালের পক্ষ থেকে আবহমান মহাকালের পক্ষ থেকে লা মাকাম ও লা জামানের পক্ষ থেকে প্রতিটা জামানায় প্রতিটা মাকামে অসহায়ের সহায় হয়ে যারা আবির্ভূত হন দরদে দিল নিয়ে, তাঁরাই সূফি।





Users Today : 332
Users Yesterday : 767
This Month : 14754
This Year : 186625
Total Users : 302488
Views Today : 34338
Total views : 3611081