‘সালাম’ একটি আরবি শব্দ যার অর্থ- শান্তি, কল্যাণ, শুভ কামনা। সালাম হল পূর্ণ ইসলামিক অভিবাদন। হজরত ইমরান ইবনে হুসাইন (রাদিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত, এক ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর কাছে এসে বলল, আসসালামু আলাইকুম। রাসুলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, ১০ (ভাল)। তখন আরেকজন এসে বলল, আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ। নবী (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, ২০ । তারপর আরেকজন এসে বলল, আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ (Walaikum assalam wa rahmatullahi wa barakatuh)। হুযুরে করিম রউফুর রহীম (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, ৩০ ।
সালাম দেওয়া সুন্নত এবং সালামের জবাব দেওয়া ওয়াজিব। সালামের সঠিক ও সম্পূর্ণ উত্তর হল ওয়া আলাইকুম সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ। নিয়ম হল কথা বলার আগে সালাম দেওয়া। রাসুলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) প্রথমে সালাম ছাড়া কথা বলতে নিষেধ করেছেন। তিনি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ যে প্রথমে সালাম দেয় না তাকে (কথা বলার) অনুমতি দিও না।
WA ALAIKUM AS-SALAM IN ARABIC
Wa ‘alaykum al-salaam:
وعليكم السلام
Wa alaykumu s-salam wa rahmatullah:
وعليكم السلام ورحمة الله
Wa alaykumu s-salam wa rahmatullahi wa barakatuh:
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
দরূদ শরীফের ফযীলত
মদীনার তাজেদার, শাহানশাহে আবরার, হুযুর পুরনূর (ﷺ)ইরশাদ করেছেন: “কিয়ামতের দিন আরশের ছায়া ব্যতীত কোন ছায়া থাকবে না। তিন ধরণের লোক আরশের ছায়ায় থাকবে।” আরয করা হলো: ইয়া রাসূলাল্লাহ্ (ﷺ) ঐ সমস্ত লোক কারা হবে? ইরশাদ করলেন: “ঐ সব লোক,
(১) যারা আমার উম্মতের পেরেশানী দূর করবে,
(২) আমার সুন্নাত জীবিত করবে,
(৩) আমার উপর অধিকহারে দরূদ শরীফ পাঠ করবে।”
(আল বাদুরাস সাফীরাহ আখিরাহ লিস সুয়ুতী, ১৩১ পৃষ্ঠা, হাদীস নং- ৩৬৬)
মদীনার তাজেদার, হুযুরে আনওয়ার (ﷺ)ইরশাদ করেছেন: “যে ব্যক্তি আমার সুন্নাতকে ভালবাসলো, সে (মূলত) আমাকে ভালবাসলো। আর যে আমাকে ভালবাসলো, সে জান্নাতে আমার সাথে থাকবে।”
(মিশকাতুল মাসাবীহ, ১ম খন্ড, ৫৫ পৃষ্ঠা, হাদীস নং- ১৭৫, দারুল কুতুবিল ইলমিয়া, বৈরুত)
সালাম বিষয়ক কিছু কথা
সালামের ১১টি আমল সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক –
(১) কোন মুসলমানের সাথে সাক্ষাতের সময় সালাম করা সুন্নাত।
(২) বাহারে শরীয়াতের ১৬তম খন্ডের ১০২ পৃষ্ঠায় লিখিত অংশের সারমর্ম হচ্ছে: “সালাম করার সময় অন্তরে যেন এ নিয়্যত থাকে যে, আমি যাকে সালাম করছি, তার সম্পদ ও মান সম্মান সবকিছু আমার হিফাযতে এবং আমি এসব কিছুর কোন বিষয়ে হস্তক্ষেপ করাকে হারাম মনে করছি,
(৩) দিনে যতবার সাক্ষাৎ হয়, এক রুম থেকে অন্য রুমে বারবার আসা যাওয়া করার সময় সেখানে উপস্থিত মুসলমানদেরকে সালাম করা সাওয়াবের কাজ,
(৪) আগে সালাম করা সুন্নাত,
(৫) প্রথমে সালামকারী আল্লাহ্ তাআলার নিকটবর্তী ও প্রিয়,
(৬) প্রথমে সালাম দানকারী ব্যক্তি অহংকার থেকে মুক্ত। যেমন- আমাদের প্রিয় নবী, রাসূলে আরবী ইরশাদ করেন: “সর্বপ্রথম সালামকারী অহংকার মুক্ত।” (অনানুগ জমান, ৬ষ্ঠ খন্ড, ৪৩৩ পৃষ্ঠা)
(৭) প্রথমে সালাম প্রদানকারীর উপর ৯০টি রহমত এবং উত্তর প্রদানকারীর উপর ১০টি রহমত অবতীর্ণ হয়। (কিমিয়ায়ে সাআদাত)
(৮) বললে দশটি নেকী অর্জন হয় সাথে বৃদ্ধি করলে ২০টি নেকী অর্জন হয় এবং ৬% বৃদ্ধি করলে ৩০টি নেকীঅর্জন হয়। অনেকেই সালামের সাথে জান্নাতুল মকাম এবং দোযখ হারাম ইত্যাদি শব্দ বৃদ্ধি করে এটা ভুল পদ্ধতি বরং অনেকেই ইচ্ছাকৃতভাবে (আল্লাহর পানাহ! এটা পর্যন্ত বলে আপনার সন্তান আমার গোলাম) ইমামে আহলে সুন্নাত, ইমাম আহমদ রযা খাঁন ফতোওয়ায়ে রয়বীয়া ২২তম খন্ডের ৪০৯ পৃষ্ঠাতে লিখেন: কমপক্ষে আর এর চাইতে উত্তম মিলানো ।
সালামের সঠিক নিয়ম | সালাম এর উত্তর | আসসালামু আলাইকুম এর উত্তর
(১০) সালামের উত্তর সাথে সাথে এতটুকু আওয়াজে দেওয়া ওয়াজীব যেন সালাম প্রদানকারী শুনতে পায়)
(১১) সালাম ও সালামের উত্তরের সঠিক উচ্চারণ মুখস্থ করে নিন। এবার উত্তর পুনরাবৃত্তি করবেন।