সামর্থ থাকা স্বত্তে¡ও যে ব্যক্তি হজ্ব করলনা
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى القُطَعِيُّ البَصْرِيُّ، قَالَ: حَدَّثَنَا مُسْلِمُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، قَالَ: حَدَّثَنَا هِلاَلُ بْنُ عَبْدِ اللهِ، مَوْلَى رَبِيعَةَ بْنِ عَمْرِو بْنِ مُسْلِمٍ البَاهِلِيِّ، قَالَ: حَدَّثَنَا أَبُو إِسْحَاقَ الهَمْدَانِيُّ، عَنِ الحَارِثِ، عَنْ عَلِيٍّ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: مَنْ مَلَكَ زَادًا وَرَاحِلَةً تُبَلِّغُهُ إِلَى بَيْتِ اللهِ وَلَمْ يَحُجَّ فَلاَ عَلَيْهِ أَنْ يَمُوتَ يَهُودِيًّا، أَوْ نَصْرَانِيًّا،
-“হযরত আলী (رضي الله عنه) বলেন, রাসূলে পাক ( ﷺ) বলেছেন: যে ব্যক্তি বায়তুল্লাহ পৌছার মত পাথেয় ও বাহনের মালিক হল অথচ হজ্জ করলনা, সে ইহুদী অবস্থা বা খ্রিষ্টান অবস্থায় মৃত্যু বরণ করতে কিছুই আসে যায় না।” ২৬২৬, তিরমিজি শরীফ, হাদিস নং ৮১২;
এই হাদিস সম্পর্কে ইমাম তিরমিজি ( رَحْمَةُ الله عليه) নিজেই বলেন,
هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ، لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ هَذَا الوَجْهِ، وَفِي إِسْنَادِهِ مَقَالٌ، وَهِلاَلُ بْنُ عَبْدِ اللهِ مَجْهُولٌ، وَالحَارِثُ يُضَعَّفُ فِي الحَدِيثِ.
-“এই হাদিস গরীব, এই সূত্র ছাড়া অন্য কোন সূত্রে ইহা পাইনি। এর সনদ নিয়ে অনেক সমালোচনা রয়েছে। হেলাল ইবনে আব্দুল্লাহ মাজহুল বা অপরিচিত। হারেছ দুর্বল রাবী।” ২৭২৭, তিরমিজি শরীফ, হাদিস নং ৮১২;
এই হাদিসের রাবী هِلاَلُ بْنُ عَبْدِ اللهِ (হেলাল ইবনে আব্দুল্লাহ) সম্পর্কে ইমাম মিযযী ( رَحْمَةُ الله عليه), ইমাম যাহাবী ( رَحْمَةُ الله عليه), আল্লামা ইবনে কাছির ( رَحْمَةُ الله عليه) ও হাফিজ ইবনু হাজার আসকালানী ( رَحْمَةُ الله عليه) বলেন,
قال الترمذي: مجهول. وقال البخاري: منكر الحديث. وقال أبو أحمد الحاكم: ليس بالقوي عندهم. وقال ابن عدي: هو معروف بهذا الحديث، وليس بالمحفوظ.وقال: لا يتابع عليه.
-“ইমাম তিরমিজি ( رَحْمَةُ الله عليه) বলেন: সে অপরিচিত। ইমাম বুখারী বলেন: সে মুনকার। আবু আহমদ হাকেম বলেন: সে ইমামদের কাছে প্রতিষ্ঠিত নয়। ইবনে আদী বলেন: সে এই সনদের মাধ্যমেই পরিচিত কিন্তু গায়রে মাহফুজ বা অসংরক্ষিত। ইবনে আদী আরো বলেন: তাকে অনুসরণ করা যাবেনা।” ২৮২৮, ইমাম মিযযী: তাহজিবুল কামাল, রাবী নং ৬৬২৫; ইমাম যাহাবী: মিযানুল এ’তেদাল, রাবী নং ৯২৭২; হাফিজ ইবনে কাছির: আত তাকমীল ফি জারহে ওয়া তা’দিল, রাবী নং ৮৮৬; ইমাম আসকালানী: তাহজিবুত তাহজিব, রাবী নং ১৩২;
এই হাদিসের আরেকজন রাবী হল (হারেছ ইবনে আব্দুল্লাহ হামদানী) তার সম্পর্কে ইমামগণের অভিমত লক্ষ্য করুন,
قَالَ ابْن الْمَدِينِيّ كَذَّاب وَقَالَ الدَّارَقُطْنِيّ ضَعِيف وَقَالَ النَّسَائِيّ لَيْسَ بِالْقَوِيّ وَقد كذبه الشّعبِيّ وَقَالَ ابوبكر بن عَيَّاش عَن مُغيرَة قَالَ لم يكن يصدق عَن عَليّ فِي الحَدِيث وقال أبو زرعة لا يحتج بحديثه قال أَبُو حَاتِمٍ: لا يُحْتَجُّ بِهِ. وقال ابن معين: ضعيف
-“আলী ইবনে মাদানী বলেন: সে মিথ্যাবাদী। দারে কুতনী বলেন: সে দ্বায়িফ রাবী। ইমাম নাসাঈ বলেন: সে শক্তিশালী নয়। ইমাম শাবী তাকে মিথ্যাবাদী বলেছেন। আবু বকর ইবনে আইয়াশ মুগিরা থেকে বর্ণনা করেন, সে হযরত আলী (رضي الله عنه) থেকে সত্য হাদিস বর্ণনা করতনা। ইমাম আবু যুরাআ বলেন: তার বর্ণিত রেওয়াতের উপর নির্ভর করা যাবেনা। ইমাম আবু হাতেম বলেন: আমি তার উপর নির্ভর করিনা। ইবনে মাঈন বলেন: সে দুর্বল।” ২৯২৯, ইমাম যাহাবী: আল মুগনী ফিদ দোয়াফা, রাবী নং ১২৩৬; ইমাম আসকালানী: তাহজিবুত তাহজিব, রাবী নং ২৪৮; ইমাম যাহাবী: তারিখুল ইসলামী, রাবী নং ২০; ইমাম যাহাবী: মিযানুল এ’তেদাল, রাবী নং ১৬২৭;
অতএব, হাদিসটি নিতান্তই দুর্বল, রাবীদের উপর মিথ্যার অভিযোগ রয়েছে। ইমাম বুখারীর উস্তাদ আলী ইবনে মাদানী ও বিশিষ্ঠ তাবেঈ হযরত শাবি ( رَحْمَةُ الله عليه) তাকে মিথ্যাবাদী বলেছেন। তবে সতর্কতার জন্য হাদিসটি বয়ান করা যেতে পারে।